রাফাল ভূপাতিতের ঘটনায় ভারত-ফ্রান্স দ্বন্দ্বে উত্তেজনা

ছবি: সংগৃহীত
কাশ্মীরের পেহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শুরু হওয়া সংঘাত এবার আরও জটিল মোড় নিয়েছে। পাকিস্তানের দাবি, তারা ভারতের ছয়টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে কমপক্ষে তিনটি ছিল বহুল আলোচিত ফ্রান্সের তৈরি রাফাল। এই দাবি ঘিরে এবার উত্তেজনা ছড়িয়েছে ভারত ও রাফাল প্রস্তুতকারী দেশ ফ্রান্সের মধ্যে।
রাফাল হলো ভারতের কাছে থাকা অন্যতম অত্যাধুনিক এবং ব্যয়বহুল যুদ্ধবিমান, যা মূলত ফ্রান্সের ডাসাল্ট অ্যাভিয়েশনের তৈরি। এই যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ভারত পাকিস্তানের ভূখণ্ডে হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে। তবে পরবর্তীতে এসব যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার দাবি সামনে আসার পর, রাফালের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। অনেক সামরিক বিশ্লেষক রাফালের কার্যকারিতা নিয়েই সংশয় প্রকাশ করেন, যা ফ্রান্সের প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ডাসাল্টের ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ডাসাল্টের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, যুদ্ধক্ষেত্রে রাফাল ভূপাতিত হওয়ার ঘটনা একান্তই ভারতীয় বিমান বাহিনীর কৌশলগত ভুল এবং পাইলটের ত্রুটির ফল। তারা এটাও আশঙ্কা করছে, রক্ষণাবেক্ষণে ঘাটতি বা অপব্যবহার হতে পারে এই ক্ষতির অন্যতম কারণ। এর প্রেক্ষিতে ডাসাল্ট তাদের অডিট টিমকে ভারতীয় রাফাল বহর পরিদর্শনের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু নয়াদিল্লি সেই পরিদর্শনের অনুমতি না দেওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।
পশ্চিমা এবং আঞ্চলিক গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, পাকিস্তানের জে-১০সি স্কোয়াড্রনের হামলায় ভারতের একটি এসইউ-৩০ এমকেআই, একটি মিগ-২৯, একটি মিরাজ ২০০০ এবং তিনটি রাফাল ভূপাতিত হয়েছে। ভারতের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ অনিল চৌহান সম্প্রতি ব্লুমবার্গ টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুদ্ধবিমান হারানোর বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে তিনি বলেন, “বিমান হারানো নয়, বরং কেন সেগুলো ভূপাতিত হলো এবং কোথায় ভুল হয়েছিল তা জানা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”
ফ্রান্সের উদ্বেগ আরও বেড়েছে, কারণ তারা আশঙ্কা করছে—যদি রাফালের পারফরম্যান্স দুর্বল প্রমাণিত হয়, তবে ভারতের পক্ষ থেকে এর দায় ফ্রান্সের কাঁধে চাপানো হতে পারে। এ কারণেই ডাসাল্ট সরাসরি ভারতের কাছে থাকা রাফাল বহরের নিরীক্ষা করতে চায়। অপরদিকে, ভারতের ভেতরে জোর গুঞ্জন চলছে যে, সরকার চায় না বিমান হারানোর প্রকৃত কারণ বা যান্ত্রিক ত্রুটি আন্তর্জাতিকভাবে প্রকাশ্যে আসুক।
এই ঘটনার ফলে শুধু ভারত-ফ্রান্স প্রতিরক্ষা সম্পর্কেই নয়, দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতেও নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের ঘটনা সামরিক প্রযুক্তি আমদানি ও ব্যবহারে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার প্রশ্নও নতুন করে সামনে নিয়ে আসছে।
তথ্যসূত্র: জিও নিউজ
