বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১০

বিষাদ বসুধা

আরেফিনের মন বড় অস্থির; বড় উচাটন। স্বস্তিতে কোথাও দম নিতে পারছেন না। এই বসছেন। আবার উঠে হাঁটাহাঁটি করছেন। কখনো কখনো বিছানায় শুয়ে বিড় বিড় করে কি যেন বলছেন তিনি। হোটেল কক্ষে তিনি রীতিমতো ছটফট করছেন। জলের মাছ ডাঙায় উঠলে যে রকম অবস্থা হয় সে রকম অবস্থা হয়েছে তার। এর অনেকগুলো কারণ অবশ্য আছে। একটি কারণ হচ্ছে, একা হোটেল কক্ষে বসে থাকা। হোটেল কক্ষে একা কতক্ষণ বসে থাকা যায়! তিনি নিজেকে অসহায় বোধ করেন। অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যত নিয়ে ভাবেন। অতীতটা কেমন ছিল? দুঃখ কষ্ট বেদনার সেই অতীতের দিনগুলোর কথা মনে করতে চান না তিনি। তিনি মনে মনে বলেন, এমন অতীত যেন কারো জীবনে না আসে। সে বর্তমান এবং ভবিষ্যতের কথা ভাবে। বর্তমান সময়টা তার কেমন যাচ্ছে? তার ভবিষ্যত কি, কোথায় যাবে সে, কি হবে তার জীবনে এসব নিয়ে ভাবে। কিন্তু ভবিষ্যটাও যেন অতীতের মতো শূন্য মরুদ্যান।

নানারকম হতাশা আরেফিনকে চারদিক থেকে জেঁকে ধরে। হতাশা কাটানোর জন্য তিনি পত্রিকা পড়েন, টিভি দেখেন। তাতেও তিনি হতাশা দূর করতে পারেন না। কারো সঙ্গে যে গল্প করে সময় কাটাবে তাও পারছেন না। অধিকাংশ মানুষই ইংরেজি জানে না। তারা জানার চেষ্টাও করে না। জানলেও কেউ একটি শব্দ মুখ থেকে বের করে না। যে ভাষা তাদের জীবনে কোনো প্রয়োজন নেই, সেই ভাষা তারা শিখবে কোন দুঃখে। কেউ কেউ মনে করেন, চীনা ভাষাই একদিন সারা বিশ্বকে ডোমিনেট করবে। একদিন আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।
চীনারা এও মনে করেন, চীন এমন একটা দেশ; বিশ্বের প্রয়োজনেই এই দেশকে গুরুত্ব দেবে। এই দেশের ভাষা অন্য ভাষাভাষিরা শিখতে বাধ্য হবে। নিজেদের স্বার্থেই তারা চীনের দ্বারস্থ হবে। চীন নিজেদের প্রয়োজনে অন্য দেশের মুখাপেক্ষী হবে না। বিগত পঞ্চাশ বছরে চীন নিজের অপরিহার্যতা প্রমাণ করেছে। এজন্য চীনের অন্য ভাষা, অন্য দেশ, অন্য দেশের কৃষ্টি-সংস্কৃতির ওপর নির্ভর করতে হয়নি। বরং চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে যাবে। কারণ চীনা সভ্যতা পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতা। দিনে দিনে এই সভ্যতা আরো বিকাশ লাভ করেছে। বিশ্ব যতদিন টিকে থাকবে ততদিন এই সভ্যতাও টিকে থাকবে।

দেড়শ’ কোটি মানুষের দেশে ধর্মীয় সংস্কৃতি নেই অর্ধেকের বেশি মানুষের মধ্যে। তারা কোনো ধর্মকর্ম করে না। ধর্ম বিশ্বাসই করে না। তাদের কাছে মানবধর্ম অনেক বড়। চীনারা মনে করে, ধর্ম মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে। ধর্মে ধর্মে হিংসা হানাহানি বাড়ায়। পৃথিবীতে যতগুলো সংঘাত হয়েছে তার বেশির ভাগই ধর্মকে কেন্দ্র করে। কিন্তু মানবধর্ম মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্য সম্প্রীতির সেতুবন্ধন তৈরি করে। চীন যে একটি সুসৃঙ্খল জাতি হিসেবে বিেশ্বর কাজে স্বীকৃত, তার অন্যতম কারণ হচ্ছে মানবধর্ম।

আরেফিন বিষয়গুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করেন। চীনারা অনেক আগেই ভাবে। বিশ^ ভাবে অনেক পড়ে। যদিও এই নিয়ে সুনামটা বাঙালির। বাঙালি নাকি অনেক আগে ভাবে। ভারত ভাবে তার পরে। এটা কখনো কখনো আরেফিনের কাছে ‘বাকওয়াজ বুলি’ মনে হয়। তিনি মনে মনে প্রশ্ন করেন, বাঙালি আগে আগে কি এমন ভেবেছে? বড় কোনো উদাহরণ কি আছে? আমি তো কোনো কিছু খুঁজে পাই না।

এই চিন্তাও আরেফিন বেশিক্ষণ মাথায় নিতে পারে না। তিনি মনে মনে উহানে কোনো বাঙালি পরিবার আছে কি না তা খুঁজে বেড়ান। কতদিন বাংলায় কারো সঙ্গে মন খুলে কথা বলতে পারছেন না! বোবা-কালাদের মতো বসে থাকা-এও কি কারো ভালো লাগে! তিনি যতই বকবক করুন তার কথা কেউ বোঝে না। তিনিও কারো কথা বোঝেন না। এ রকম দমবন্ধকর পরিস্থিতিতে আগে কখনো পড়েননি তিনি। বিদেশ-বিভুঁইয়ে গেলে মানুষের মনের দরজা খুলে যায়। বাইরের পৃথিবী দেখার আনন্দে বিভোর থাকে সে। অথচ চীনে এসে আরেফিন নিজেই একটা এলিয়েনে পরিণত হয়েছেন।

উহানে অনেক বাঙালি বসবাস করে। কিন্তু লকডাউনের কারণে কেউ ঘর থেকেও বের হতে পারছে না। আসলে চীনা ভাষা না জানলে চীনে চলাফেরা করা কঠিন। অন্যান্য দেশে অল্পবিস্তার ইংরেজি সবাই জানে। যানবাহনে চেপে যে কোনো জায়গায় যাওয়া যায় সহজেই। চীনে ঘুরতে ঘুরতে দিন শেষ হয়ে যাবে তারপরও গন্তব্যে পৌছা যাবে না। আরেফিনের এই তীক্ত অভিজ্ঞতার কারণে বাইরে বের হতেও ভয় পায়।

দেশটাকে আরফিনের কাছে আজব দেশ মনে হয়। পুরো বিশ্ব থেকে আলাদা। চীনই যেন ওদের কাছে আরেক পৃথিবী। আরেক গ্রহ। আরেক জগত। বিশ্বের কোথায় কি ঘটল তা নিয়ে ওদের মাথা ব্যথা নেই। ওরা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। চীনের পত্রিকাগুলোও নিজেদের সব খবর তো নয়ই; বহির্বিশ্বের খবরও খুব একটা দেয় না। অন্য কাউকে নিয়ে তারা ভাবে না। সবাই ভাবে নিজেকে নিয়ে। নিজের সুখ-শান্তি, নিজের বাড়ি, নিজের শহর নিজের দেশ। চীনারা রোবটের মতো সারাক্ষণ কাজ করে। আবেগ-অনুভূতি নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু তার প্রকাশ খুব কম।

আরেফিন নানাভাবে মোহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেন। কিন্তু কিছুতেই তাকে ধরতে পারলেন না। কেন তাকে ধরতে পারছেন না? মোহিনীই কি তাহলে আরেফিনের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখতে চায় না? তিনি গ্রামের বাড়িতে তার মা বাবাকে ফোনে তো ঠিকই পাচ্ছেন। তাদের সঙ্গে কথাবার্তাও বলেছেন অনেকবার। অথচ মোহিনীকে পাচ্ছেন না। কেন? কেন পাওয়া যাচ্ছে না তাকে? সে কি তাকে ব্লক করে রেখেছে?

আরেফিনের মা বাবা ওর কাছে অনেকবার মোহিনীর কথা জানতে চেয়েছেন। কিন্তু আরেফিন সঠিক কোনো জবাব দিতে পারেননি। তিনি আমতা আমতা করে এটা সেটা বলে এড়িয়ে গেছেন। তারা অশিক্ষিত গ্রামের মানুষ হলেও ছেলের কথা বুঝতে কি আর বাকি আছে? মা বাবাকে কি আর ছেলে ফাঁকি দিতে পারে?

নানা প্রশ্ন আরেফিনের মনে দানা বাঁধে। তিনি মনে মনে বলেন, মোহিনী কি আমাকে নিয়ে একটুও ভাবে! আমার কথা মনে করে! আগের মতো সে কি আমাকে ভালোবাসে! নিশ্চয়ই মনে করে; নিশ্চয়ই ভালোবাসে। তা না হলে মোহিনীর কথা আমার এতোবেশি মনে পড়বে কেন! তা ছাড়া মোহিনীর প্রতি আমার ভালোবাসার তো কোনো কমতি নেই।

মোহিনীর সঙ্গে আরেফিনের কত স্মৃতি। সেই সব স্মৃতি তার মনের আয়নায় ভেসে ওঠে। কখনো ক্যাম্পাসে, কখনো পার্কে আবার কখনো লাইব্রেরিতে বসে পড়ার ফাঁকে গল্প আড্ডায় মেতে থাকার স্মৃতি তাকে আচ্ছন্ন করে। তিনি মনে মনে ভাবেন, ইস! কোথায় হারিয়ে গেলো সেই সময়গুলো! আবার কি কখনো ফিরে আসবে! সেই সময় যদি আবার ফিরে আসতো! কিন্তু যে সময় যায় তা নাকি আর ফিরে আসে না। শুধু স্মৃতিপটে আঁকা থাকে।

এ মুহূর্তে দেশে ফেরাও সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিদিনই করোনার প্রকোপ বাড়ছে। উহান থেকে চীনের অন্যান্য অঞ্চলে খুব বেশি না ছড়ালেও বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে। সবচেয়ে দ্রুত ছড়াচ্ছে ইউরোপ-আমেরিকায়। সেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। সঙ্গত কারণেই বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এক দেশ থেকে আরেক দেশে মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। আরেফিন কবে দেশে ফিরতে পারবে তার কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই। হঠাৎ করেই দেশের প্রতি তার টান ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। হোটেল কক্ষের বিছানায় শুয়ে সে অস্থির কণ্ঠে বলে, আমার এমন লাগছে কেন! সবকিছু এমন এলোমেলো হয়ে গেল কেন!

আরেফিন সারারাত ঘুমাতে পারেননি। নানারকম দুশ্চিন্তা ঘূর্ণিঝড়ের মতো তার মাথায় ঘুরপাক খেয়েছে। উথাল পাতাল অবস্থা হয়েছে তার। মনের সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন তিনি। ভয়ঙ্কর সেই যুদ্ধ! সেই যুদ্ধে তিনি হেরে গেছেন। ঝড়ে পড়া পাখির মতো বিধ্বস্ত হয়ে মরার মতো বিছানায় পড়ে আছে। এক পর্যায়ে রাজ্যের ঘুম তার ওপর জেঁকে বসে। তিনি সকালের নাশতা ধরার জন্য সাধারণত ঘড়িতে এ্যালার্ম দিয়ে রাখেন। মনের বিধ্বস্ত অবস্থার কারণে সেটাও তিনি ভুলে যান। সকালের নাশতার সময় পেরিয়ে গেছে। রুম কিপার সকালে কয়েকবার কলিং বেল বাজায়। তারপর দরজা ধাক্কাধাক্কি করে। তাতেও আরেফিনের কোনো সাড়া মেলে না। বেহুঁশের মতো তিনি ঘুমান। কোনো শব্দই তার কানে পৌছায় না। লয়-প্রলয় হলেও তিনি হয়তো কোনো কিছুই টের পাবেন না।

রুম কিপার আবার আরেফিনের কক্ষের সামনে আসে। আবারও সে কলিং বেল চাপে। তারপর দরজা ধাক্কায়। এরপরও যখন দরজা খুলছে না দেখে তার মনে সন্দেহ হয়। সে মনে মনে ভাবে, নিশ্চয়ই কোনো সমস্যা হয়েছে। সে নিজের চাবি দিয়ে দরজা খোলে। একপা দুইপা করে কক্ষের ভেতরে ঢোকে। বিছানার দিকে তাকাতেই সে দেখে, আরেফিন একেবারে মরা লাশের মতো পড়ে আছেন। সে কক্ষটাকে ভালো করে দেখে। কোনো ড্রিঙ্কস করেছে কি না তা বোঝার চেষ্টা করে। না। সে রকম কোনো আলামত চোখে পড়েনি। কক্ষের কোনো কিছুই এলোমেলো হয়নি।
রুম কিপার বিড়ালের মতো গুটি গুটি পা ফেলে আরেফিনের কাছে এগিয়ে যায়। খুব সাবধানে নাকের কাছে হাত দিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস নিচ্ছে কি না তা ভালো করে দেখে। তার ভেতরে এক ধরনের ভয়, শঙ্কা কাজ করে।

আরেফিন শ্বাস নিচ্ছেন টের পেয়ে রুম কিপার এক রকম লাফিয়ে ওঠে। স্বস্তির নিশ্বাস ছেড়ে বলে, না না! কিছু হয়নি। জীবিতই আছে। সুস্থই আছে। সে সত্যিই ঘুমের ঘোরে ডুবে আছে। এটা নিশ্চিত হওয়ার পর রুম কিপার বের হয়। তবে তার মনের মধ্যে নানা প্রশ্ন বার বার উঁকি দেয়, মানুষ এমন বেঘোরে ঘুমাতে পারে! কি করে সম্ভব! সব মানুষই কি এমনভাবে ঘুমায়! ঘুমাতে পারে! তবে এটা ঠিক, একজন ঘুমন্ত মানুষ আর মরা লাশের মধ্যে কোনো তফাৎ নেই। কিন্তু আরেফিনকে মনে হচ্ছে যেন একটা জিন্দা লাশ!

চলবে...

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৯

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৮

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১

আজকের সেহরির শেষ সময় (ঢাকা)

0

ঘণ্টা

0

মিনিট

0

সেকেন্ড

নওগাঁয় পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনার্স চতুর্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তনের দাবিতে নওগাঁয় মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।

বৃহষ্পতিবার (২৮ মার্চ) বেলা ১১টায় নওগাঁ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা শহরের মুক্তির মোড়ে এ মানববন্ধন করে।

মানববন্ধনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সিফাত হোসেন, আরমান মন্ডল, বরকত মোল্লা, শাকিল, আরিফ, রিয়া, তামান্নাসহ অন্যান্যরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন- ১৯ মে থেকে শুরু হবে অনার্স চতুর্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা। যেখানে রুটিনে প্রত্যেক পরীক্ষার মাঝে একদিন করে ছুটি রয়েছে। অথচ যেকোনো পরীক্ষা নিতে দেড় থেকে দুই মাস সময় বরাদ্দ থাকে। কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দ্রুত পরীক্ষা শেষ করতে চাচ্ছে। সেশনজট কমানোর নামে শিক্ষার্থীদের জীবন হুমকির মুখে ফেলে দিতে চায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাই দ্রুত পরীক্ষার প্রকাশিত রুটিন পেছানোসহ প্রত্যেক পরীক্ষার মাঝে কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ দিন করে ছুটির দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

গুলি করে মারা হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেই সাপটিকে

বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেই সাপ। ছবি: সংগৃহীত

ব্রাজিলের রেইনফরেস্টে পাঁচ সপ্তাহ আগে ২৬ ফুট লম্বা ভয়ংকর এক সাপের সন্ধান পান বিজ্ঞানীরা। যার মাথা ছিল মানুষের মত। আর দেহ ছিল বড় বাসের টায়ারের মত। এই সাপটিকে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাপ বলে উল্লেখ করেন বিজ্ঞানীরা।

বিজ্ঞানীদের একটি দল ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ডিজনি+ সিরিজ ‘পোল টু পোল উইথ উইল স্মিথ’-এর দৃশ্য ধারণ করার সময় আমাজনের ভেতর দৈত্যাকার সাপটিকে খুঁজে পেয়েছিলেন। আনা জুলিয়া নামের প্রায় ২০০ কেজি ওজনের এই সাপটিকে ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলের দুর্গম ফোরমোসো নদীতে সাঁতার কাটতে দেখা যায়। সাপটি এতটাই বড় ছিল যে এটি মাথা মানুষের মাথার সমান ছিল।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেই সাপগ্রিন অ্যানাকোন্ডা। ছবি: সংগৃহীত

 

একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাপটিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তবে ডাচ বিজ্ঞানী প্রফেসর ফ্রিক ভঙ্ক, যিনি সাপটিকে খুঁজে পেতে সহায়তা করেছিলেন, তিনি জানিয়েছেন, সাপটির মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করতে এখনো তদন্ত চলছে।

সাপটির মৃত্যুর কথা ইন্সটাগ্রামে নিজেই জানিয়েছেন প্রফেসর ফ্রিক ভঙ্ক। তিনি ইন্সটাগ্রামে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) লিখেছেন, অন্তত দুঃখ ও ভারাক্রান্ত মন নিয়ে জানাচ্ছি বিশালাকৃতির গ্রিন অ্যানাকোন্ডা, যেটির সঙ্গে আমি সাঁতার কেটেছিলাম, এ সপ্তাহের শেষ দিকে সেটিকে নদীতে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। খুবই শক্তিশালী প্রাণী, একটি লড়াকু, যেটি নদীতে কয়েক দশক সাঁতার কেটেছে।

প্রফেসর ভাঙ্ক আরও লিখেছেন, যতদূর আমরা জানি, সাপটি খুবই সুস্থ ছিল এবং জীবনের সবচেয়ে ভালো সময়ে ছিল। সামনের বছরগুলোতে সাপটি নিজের বংশধরের খুব ভালো যত্ন নিতে পারত। যেহেতু এ ধরনের সাপ খুব বেশি নেই ফলে তার মৃত্যুটি জীববৈচিত্র্যের জন্য একটি বড় ধাক্কা।

গুলির মাধ্যমে সাপটিকে হত্যার যে গুঞ্জন উঠেছে সেটি নিয়েও কথা বলেছেন প্রফেসর ভাঙ্ক। তিনি জানিয়েছেন, এখনো মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যায়নি। ডাচ বিজ্ঞানী বলেছেন, মৃত্যুর কারণ এখন তদন্ত করা হচ্ছে। সবকিছুই বিবেচনা করা হচ্ছে। সাপটির মৃত্যু প্রাকৃতিক কারণেও হতে পারে। সূত্র: ইন্ডিপেনডেন্ট

 

দুঃসময় অতিক্রম করছি, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: মির্জা ফখরুল

ইফতার মাহফিলে বক্তব্য রাখছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

দেশের মানুষ দুঃসময় অতিক্রম করছে উল্লেখ করে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আমরা একটা কঠিন সময় অতিক্রম করছি। একটা দুঃসময় অতিক্রম করছি। এসময়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর লেডিস ক্লাবে এক ইফতার মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রাজনৈতিক নেতাদের সম্মানে এ ইফতালের আয়োজন করা হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা একটা কঠিন সময় অতিক্রম করছি। একটা দুঃসময় অতিক্রম করছি। ফ্যাসিবাদী শক্তি সমস্ত জাতির ওপর চেপে ধরে বসে আছে। আমাদের সকল আশা আকাঙ্ক্ষাগুলো ব্যর্থ করে দিয়ে এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করেছি।

সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এক দফার আন্দোলনে সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে সম্মিলিত করে। আমরা চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য কাজ করছি। সে আন্দোলনে বিজয় আমাদের হবেই, ইনশাআল্লাহ্।

অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেন, ১৮ কোটি মানুষের দেশে মানুষ আজ মজলুম। পুরো দেশের মানুষ আজ জুলুমের শিকার। লড়াই আমাদের চালিয়ে যেতে হবে। বিজয় আমাদের হবেই, ইনশাআল্লাহ্।

এতে জামায়াত নেতাদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া মো. গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, নায়েবে আমীর সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, বিএফইউজের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, এবি পার্টির আহ্বায়ক এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী, এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত সেলিম, জাগপা একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ।

উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ মাহমুদ চৌধুরী, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকন, গণঅধিকার পরিষদ একাংশের আহ্বায়ক মশিউজ্জামান, জাগপার জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব মুহাম্মদ আবু হানিফ, গণঅধিকার পরিষদ একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আযম খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জাতীয় সংসদের সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবদিন ফারুক, যুগ্ম-মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য ফজলুর রহমান খোকন, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির প্রমুখ।

সর্বশেষ সংবাদ

নওগাঁয় পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
গুলি করে মারা হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেই সাপটিকে
দুঃসময় অতিক্রম করছি, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: মির্জা ফখরুল
মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় শিক্ষক কারাগারে
বাংলাদেশ থেকে আম-কাঁঠাল-আলু নিতে চায় চীন
ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় চার ইউনিটে প্রথম হলেন যারা
বাংলাদেশে আসছেন সংগীতশিল্পী আতিফ আসলাম
চট্টগ্রামে ফিশিং বোটে আগুন, দগ্ধ ৪
ঢাবি ভর্তি পরীক্ষার ৪ ইউনিটের ফল প্রকাশ, ৮৯ শতাংশই ফেল
ভারত থেকে ১ হাজার ৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে শুক্রবার!
৮ বছর পর বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা
‘নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, এটা তুলব, এটুক অন্যায় করবোই’
প্রথম বাংলাদেশি আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে শরফুদ্দৌলা
পাঁচ বছর আগে নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া ভারতীয় নাগরিককে হস্তান্তর
কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা ওয়াংচুক
শিগগিরই ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়ানো হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
রেলমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
একনেকে ৮ হাজার কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন
বিএনপি নেতাদের স্ত্রীরা ভারতীয় শাড়িতে কাঁথাও বানায় না: রিজভী
ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা