সোমবার, ২০ মে ২০২৪ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

মার্চ মার্সেই পূর্ব পাকিস্তানে যুদ্ধ শুরু হয়েছে। আর এই মাসেই সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ভারতে। ইন্দিরা গান্ধী বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে ভারতে ক্ষমতায় আসেন। পরদিন নির্মল, যাদব, অসীম ওদের শরণার্থী কার্ড দিতে এসে এসব কথা মারুফকে বলে।

অসীম বলে, পূর্ব পাকিস্তানের ঘটনার ওপর আমাদের প্রধানমন্ত্রী ভালোই নজর রাখছেন। তিনি জেনেছেন পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরায় অসংখ্য শরণার্থী ঢুকেছে। সেজন্য তিনি ২৫ মার্চ আদেশ জারী করেন যে, যেসব সীমান্ত দিয়ে শরণার্থী আসবে তা খোলা রাখার জন্য। সবাই যেন নিরাপদে ভারতে ঢুকতে পারে। ৩০ মার্চ তিনি সংসদের উভয় কক্ষে পূর্ব পাকিস্তানের ঘটনা নিয়ে

ভারত সরকারের মনোভাব প্রকাশ করেন। ভারত পূর্ব বাংলার পাশে থাকবে। সব ধরণের সহযোগিতা দেবে।
মারুফ দুহাত উপরে তুলে বলে, আল্লাহর রহমত। আমাদের সৌভাগ্য। ভারতের সহযোগিতা পেলে যুদ্ধে জিততে আমাদের সময় লাগবে না। আমিও যুদ্ধ করব। ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা আছে?

- আছে, আমরা তোমাকে সেখানে পৌঁছে দেব।
মারুফ ওদের তিনজনেরই হাত জাড়িয়ে বলে, তোমরা আমার আজীবনের বন্ধু হলে। এই জোয়ান বয়সে যুদ্ধ না করে দেশের জন্য কিছু করবনা, তা আমি ভাবতে পারিনা।
-আমরা আশীর্বাদ করি তুমি একজন বীরযোদ্ধা হও।
-তোমাদের প্রধানমন্ত্রী অন্য দেশের জন্য একজন সাহসী মানুষ। মানবিক বিবেচনায় একজন জ্ঞানী মানুষ। আর আমরা নিজেদের দেশের জন্য সাহসী হতে পারবনা!
-কেন পারবেনা, একশোবার পারবে। তোমার মুক্তিযুদ্ধে নাম লেখাতে হবে। আওয়ামী লীগ অফিসে গিয়ে বললে নেতারা তোমাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তালিকাভুক্ত করবে। এটাই নিয়ম বলে আমরা শুনেছি।
-ঠিক আছে নিয়মমাফিক যা করতে হয় আমি তা করব। তোমরা একটু সহযোগিতা কর।
-আমরা দু’একদিনের মধ্যে খবর নিয়ে তোমার এখানে আসব। তুমি অন্য কোথাও যেওনা।
ওদের কথা শেষ হতেই একজন দ্রুতপায়ে ওদের ছাড়িয়ে সামনে এগিয়ে যায়।
অসীম বলে, আরে রঘু রাই কোথায় যাচ্ছে?
মারুফ জিজ্ঞেস করে, উনি কে?
- উনি একজন বিখ্যাত ফটোগ্রাফার। শরণার্থীদের অনেক ছবি তুলেছেন।
মারুফ বলে, ঐ যে লোকজন আসছে সেজন্যই তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন।
- ভালোই হলো আমাদের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। তাঁর কাজ শেষ হলে আমরা কথা বলব।


দারুণ ছবি তোলে রঘু রাই। যশোর রোডে শরণার্থীদের আসার একটা ছবি তুলেছে। মানুষজন পোটলা মাথায় করে হাঁটছে, ছোট বাচ্চাদের ঘাড়ে নিয়ে হাঁটছে। এক হাতে পোটলা ধরে রেখেছে অন্য হাতে হেঁটে যাওয়া শিশুদের হাত ধরে রেখেছে। নারীদের ঘাড়-মাথায় ছোট-বড় পোটলার বোঝা। চমৎকার ছবিটা। সময়ের নিখুঁত চিত্র। স্বাধীন দেশের মানুষেরা এই ছবি থেকে পাবে শরণার্থীদের বেঁচে থাকার খোঁজ। মৃত্যুকে পেছনে রেখে চলছে তারা, সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। কোথায় গিয়ে ঠাঁই মিলবে সেই নিশ্চয়তা তাদের বুকের ভেতর নেই। তারপরও যেতে হচ্ছে ভারতে।
মারুফ বলে, আমরাওতো এভাবে ছুটে এলাম। আমাদের ভাগ্য যে আমরা নিশ্চয়তা পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মানবিক বোধের তুলনা হয়না। তিনি সীমান্ত খুলে রাখতে বলেছেন। আমাদের খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার দায়িত্ব নিয়েছেন। তাঁর কাছে আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। কোনোদিন যদি আমি সামনে পাই তাঁকে তাহলে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করব।

- বাহ, তোমার কৃতজ্ঞতার কথা শুনে আমরা খুবই খুশি হলাম।
ওরা তিনজন একসঙ্গে ওর পিঠ চাপড়ে দিয়ে চলে যায়। মারুফ ওদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। এই রাস্তায় কলকাতা পর্যন্ত যাওয়া যাবে। দেখা যাক ভবিষ্যতে কি হয়। এমন সময় ও দেখতে পায় রঘু রাই ফিরে আসছে। তাকে দেখে কথা বলার জন্য উৎফুল্ল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে মারুফ। রঘু রাই কাছে আসতেই বলে, আমি আপনার জন্য দাঁড়িয়ে আছি। কি ছবি তুলেছেন?

-অনেক ছবি তুলেছি। শরণার্থীদের জীবন আমার কাছে একদম অন্যরকম। এমন জীবন আমি দেখিনি।
-আপনার ছবি ইতিহাসের ছবি হবে।
-হ্যাঁ, তা হবে। বাংলাদেশ যেদিন স্বাধীন হবে তারপরতো শরণার্থীরা দেশে ফিরে যাবে।
-অবশ্যই। আমি যুদ্ধ করে দেশে যাব। শুধু শরণার্থী হব না।
-তাই, দাঁড়ান আপনার একটা ছবি তুলি।


মারুফ নিজেরদের তাবুর দিকে পিঠ ঘুরিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ায়। রঘু রাই তাবুসহ চারপাশের লোকজন নিয়ে ছবি ওঠায়। পুরো শরণার্থী শিবিরের চমৎকার একটি ছবি ওঠে। দেখে খুশি হয় রঘু রাই। মারুফকে বলে, আজকে আমি যাচ্ছি। এরপরে কখনো-কোথাও দেখা হতে পারে। আমিতো বিভিন্ন জায়গায় ঘুরি। বেশ অনেক শরণার্থী শিবির আমার দেখা হয়েছে। যশোর রোডে আমি আবার আসব। আমার জন্য গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। গাড়িটা ছাড়তে হবে সেজন্য চলে যাচ্ছি। ছবিগুলো বিভিন্ন কাগজে ছাপা হবে।


-আপনাকে সালাম জানাই যে আপনি আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস সজীব রাখছেন।
রঘু রাই হেসে মাথা নাড়ে। মারুফের হাত ধরে বলে, গুড বাই। ভালো থাকুন, বীর যোদ্ধা হন। স্বাধীন দেশের মানুষ হন। যাচ্ছি।
মারুফের হাত ছেড়ে গাড়িতে গিয়ে ওঠে রঘু রাই। গাড়ি ছেড়ে যায়। মারুফ তাকিয়ে থাকে। নিজেকে বলে, ও আমার শরণার্থী জীবনের বড় অভিজ্ঞতা। রঘু রাই তোমাকে আমি ভুলবনা কোনোদিন।
মারুফ নিজের তাঁবুতে এসে ঢোকে। আসমানী ঘাসের ওপর বিছিয়ে দেয়া একটি শাড়ির উপর শুয়ে আছে। মাথার নিচে বালিশ নেই। শুকনো মুখে তাকায় মারুফের দিকে। মারুফ ওর মাথার কাছে গিয়ে বসে কপালে হাত রাখে। পাশে বসে আছে দুলাল।
-মা কৈ রে দুলাল?
-বাইরে গেছে। আমাকে বলেছে আপুর কাছে বসে থাকে। একটু পরে লোক এসে আমাদেরকে খাবার দিয়ে যাবে। সেজন্য বলে গেছে সবাই যেন তাঁবু থেকে বেরিয়ে না যায়।
-তোর খিদে পেয়েছে দুলাল?
-না, পায়নি। মায়ের কাছে যেটুকু ভাত ছিল তাতো আমরা সবাই খেলাম দুলাভাই। আপনার খিদে পেয়েছে?
-হ্যাঁ, আমার খুব খিদে পেয়েছে। আসমানী তোমার খিদে পেয়েছে?
-না, আমার খুব খিদে পায়নি। আমিও মায়ের কাছ থেকে দুই মুঠো ভাত খেয়েছি।
-শরীর ভালো বোধ করছ?
-আগের চেয়ে একটু বেশি ভালোলাগছে। বিশ্বাস পাওয়ার পরে। কিন্তু ছেলে হারানোর কষ্ট আমাকে ছাড়ছে না।
-কিছু করার নেই গো। আমাকেও ছাড়ছে না।
দুলাল কাঁদতে কাঁদতে বলে, আমাকেও ছাড়ছে না, দুলাভাই। এই ছোট্ট মানুষটি থাকলে এই তাঁবুটা আমার কাছে ফুলের বাগান হয়ে থাকত।
-কাঁদিস না রে ছোট্ট সোনা।

মারুফ নিজেও কাঁদতে কাঁদতে বলে। কাঁদতে শুরু করে আসমানীও। সবাই দুহাতে মুখ ঢেকে রেখেছে। কেউ কারো দিকে তাকায়না।
তখন তাঁবুতে ঢুকে আকাশী। ওদের অবস্থা দেখে বুঝতে পারে কি হয়েছে ওদের। সন্তানের জন্য কাঁদছে মারুফ। আকাশী আসমানীর পায়ের দিকে বসে পড়ে। আসমানী চোখ খুলে বলে, মা, মাগো।
-তোকে সব কষ্ট থেকে বেরিয়ে আসতে হবে মা। কষ্ট ধরে রাখলে শরণার্থী শিবিরের কষ্টও বেড়ে যাবে।
আসমানী কথা বলেনা। চুপ করে থাকে। মারুফ দু’হাতে চোখ মুছে শাশুড়ির দিকে তাকায়।
-চারপাশে একটু হেঁটে দেখলাম এখানকার সবার কি অবস্থা।
-আমাদেরকে নাকি ভাত দেয়া হবে?
-হ্যাঁ, বলে গেছে। একটু পরে আসবে।
-আমি ইন্দিরা গান্ধীর পায়ে মাথা ঠেকিয়ে সালাম করতে চাই বাবা। শুনতে পেলাম অনেকের মুখে যে, লক্ষ লক্ষ মানুষ ঢুকছে ভারতে। তিনি তাঁদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করছেন। হায় আল্লাহ, এমন একজন মানুষকে চোখে না দেখলে আমার কষ্ট ফুরাবেনা।


কথা শেষ করে আকাশী হাঁটুর উপর মাথা রাখে। অন্যরাও নিশ্চুপ থাকে। শরণার্থী জীবনের এমন একটি সময় গ্রাম ছেড়ে আসা কয়েকজন ভাবে, স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়ে গেলে প্রাণপ্রিয় ইন্দিরা গান্ধীকে নিজের দেশে নিয়ে অনেক সম্মান দেখাব। বলব, আপনি আমাদের মা। আকাশী নিজের ভাবনায় অন্যদের কথার সঙ্গে নিজেকে এক করে। ভাবনা গেঁথে থাকে মাথায়।

তখন তাঁবুর সামনে এসে দাঁড়ায় একজন। মারুফ উঠে সামনে যায়। লোকটি খাবারের পোটলা দিয়ে বলে, আপনাদের খাবার।

-আপনারা কয়জন আছেন তাঁবুতে?
-পাঁচজন।
-হয়ে যাবে। সবাই পেট ভরে খেতে পারবেন।
-খাবারের পোটলাটি হাতে নিয়ে মারুফ ভাবে, লোকটি সান্ত¡নার কথা বলে গেল। কোনোরকম খাওয়া হবে। পেট ভরানো নয়। কারণ পোটলার ওজন তেমন নয়। যাহোক, তবুতো কিছু খাবার পাওয়া গেছে। লোকটিকে জিজ্ঞেস করে, আপনার নাম কি দাদা?

-হরিহর। দু’একদিনের মধ্যে আমি আবার আসব। আপনাদেরকে শরণার্থী কার্ড দেয়া হবে। এই কার্ডের প্রমাণে আপনাদের চাল, ডাল, আলু, তেল ইত্যাদি রিলিফ দেয়া হবে। আপনাদের থালা, গ্লাস, হাঁড়ি, বালতি ইত্যাদি দেয়া হবে। নিজেরা রান্না করে খাবেন। আমি যাচ্ছি এখন।

লোকটি চলে যায়। মারুফ তাঁবুর বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে। দেখে হাজার হাজার মানুষ সীমান্ত পার হয়ে যশোর রোডে ঢুকছে। ও চারদিকে তাকিয়ে নিজের শ্বশুর রবিউলকে খোঁজে। তিনি কোনদিকে গেছেন এখনো জানতে পারেনি। মারুফ হঠাৎ করে দেখতে পায় তার শ্বশুর আসছে। ও দ্রæত পা চালিয়ে তার কাছে যায়।
- আব্বা আপনি কোথায় ছিলেন?
-খানিকটা দূরে ওই পাশে ছিলাম। আমার এক চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হলো। সেজন্য কিছু সময় কাটালাম ওর সঙ্গে। ওর এখানে আসার অভিজ্ঞতা খারাপ।
-কি হয়েছিল আব্বা?

 

(চলবে)

 

 

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

 

Header Ad

প্রবাসীর স্বর্ণ ছিনতাইকালে আটক পুলিশের এসআই

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে এক প্রবাসীর স্বর্ণ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় আমিনুল ইসলাম নামে পুলিশের এক সাব-ইন্সপেক্টরকে (এসআই) ধাওয়া দিয়ে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় জনতা। একই সময়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তার সাথে থাকা এক পুলিশের সোর্স শহীদুল ইসলাম জাহেদকেও আটক করেছে পুলিশ।

রোববার (১৮ মে) বিকেলে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার থেকে তাদের আটক করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী চট্টগ্রামের লোহাগড়া উপজেলার বাসিন্দা আবদুল খালেক জানান, তার ছোট ভাইয়ের পাঠানো ১৬ ভরি ওজনের ৮টি বালা নিয়ে চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে নিয়ে ফিরছিলেন তিনি। দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে নগরীর টাইগারপাস এলাকায় তাকে পুলিশ পরিচয়ে বাস থেকে নামায় দুই যুবক। পরে তাকে সিএনজিতে উঠিয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়কে ঘুরিয়ে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারে উঠে স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিয়ে নামিয়ে দেয়া হয়। এসময় চিৎকার শুরু করেন ভুক্তভোগী। ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া সাধারণ মানুষেরা দুই ছিনতাইকারীকে ধাওয়া দিয়ে আটক করে।

এসময় পাশ দিয়ে যাচ্ছিল পাঁচলাইশ থানা পুলিশের একটি টহল দল। টহল দল দুই ছিনতাইকারীর মধ্যে একজন খুলশী থানার এস আই আমিনুল ইসলাম বলে নিশ্চিত হয়। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানা গেছে।

নওগাঁয় পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণ গেল ২ শিশুর

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁয় পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রোববার (১৯ মে) দুপুরে জেলার পোরশা ও মহাদেবপুর উপজেলায় পৃথক সময়ে এ দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতরা হলো- পোরশা উপজেলার নিতপুর মনোহরপুর গ্রামের রুবেল ইসলামের ছেলে লালচাঁন ইসলাম (৭) এবং মহাদেবপুর উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের বুজরুক বড়াইল গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে সিফাত হোসেন (১২)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়- রোববার দুপুরে রুবেল ইসলাম তার ছেলে লালচাঁনকে সাথে নিয়ে পোরশা উপজেলার কপালী মোড় পোশাকসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্যে আসেন। এসময় রাস্তা পারাপারের সময় মাসুদ বিড়ি বহনকারি একটি অটোরিশার লালচাঁনকে ধাক্কা দেয়। এতে লালচাঁন গুরুত্বর আহত হয়ে রাস্তার ওপর ছিটকে পড়ে যায়। ঘটনাটি দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পোরশা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতিয়ার রহমান জানান, সংবাদ পেয়ে অটোরিকশার চালক আবুল কালামকে আটকসহ অটোরিকশাটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
অপরদিকে, রোববার বিকেল ৫টার দিকে মহাদেবপুর উপজেলার নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের রানীপুকুর মাদ্রাসার অদূরে বাস চাপায় সিফাত হোসেন নামে শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ফয়সাল হোসেন নামের আরেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। নিহত সিফাত হোসেন মহাদেবপুর উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের বুজরুক বড়াইল গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে এবং রানিপুকুর ক্বেরাতুল কুরআন ক্বওমী মাদ্রাসার কিতাব বিভাগের ছাত্র।

মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুহুল আমিন দূর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিএনপি নেতা ইশরাককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ‘ভুয়া উপদেষ্টাকাণ্ডে’র মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনের জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।

রোববার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এই আদেশ দেন।

ইশরাকের আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ বলেন, এ মামলায় ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছিলেন ইশরাক। সেই সময় শেষ হতে চলায় গত ২৩ এপ্রিল তিনি জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন।

ইশরাক হোসেন পল্টন থানাসহ ১২টি মামলায় স্থায়ী জামিন আবেদন করেন। আদালত ১১ মামলায় জামিন মঞ্জুর করেন। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টাকাণ্ডের ঘটনায় পল্টন থানার মামলায় তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

আদেশের প্রতিক্রিয়ায় ইশরাক বলেন, হাই কোর্টথেকে জামিনে থাকলে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও বেশিরভাগ মামলাতেই আদালত জামিন দিয়ে দেন। কিন্তু একটায় আটকানো হল আমাকে। এটা উদ্দেশ্যমূলক। সরকার তো গোটা দেশটাকেই কারাগার বানিয়ে ফেলেছে।

গত ২৯ অক্টোবর মহিউদ্দিন শিকদার নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন থানায় এ মামলা করেন। মামলায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘উপদেষ্টা’ পরিচয় দিয়ে বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা মিঞা জাহিদুল ইসলাম আরেফীর পাশাপাশি অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশ উপলক্ষে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। ওইদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে কাকরাইল মোড় থেকে আরামবাগ মোড় পর্যন্ত সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।

সে সময় বিচারপতির সরকারি বাসভবনসহ সরকারি স্থাপনা ও গাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিএনপিকর্মীরা। তাতে পুলিশের ৪১ সদস্য আহত ও এক সদস্য নিহত হন। এক পর্যায়ে বিকাল ৩টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা মহাসমাবেশ স্থগিত ঘোষণা করেন।

এজাহারে বলা হয়, বিএনপির ওই কর্মকাণ্ডের পর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে আসামি জাহিদুল ইসলাম আরেফী, চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে ২০ জন নেতাকর্মী কিছুসংবাদমাধ্যমের সামনে উপস্থিত হন। মে সময় আরেফী নিজেকে বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেন। বাংলাদেশ পুলিশ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন ও বিচার বিভাগের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তার সরকারের কাছে সুপারিশকরেছেন বলে তিনি বক্তব্য দেন।

এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, মামলার ২ নম্বর আসামি হাসান সারওয়ার্দী এবং ৩ নম্বর আসামি ইশরাক হোসেন আরেফীকে ‘মিথ্যা বক্তব্য দিতে সহযোগিতা’ করেন এবং তার বক্তব্য সমর্থন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিতে ‘উসকানি’ দেন।

সর্বশেষ সংবাদ

প্রবাসীর স্বর্ণ ছিনতাইকালে আটক পুলিশের এসআই
নওগাঁয় পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণ গেল ২ শিশুর
বিএনপি নেতা ইশরাককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
ঘুষের দর-কষাকষির অডিও ভাইরাল, ফেঁসে যাচ্ছেন এএসআই
দুর্ঘটনার কবলে ইরানের প্রেসিডেন্ট রইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার
১৭ মন্ত্রী-এমপির স্বজন চেয়ারম্যান প্রার্থী: টিআইবি
দ্বিতীয় ধাপে টাঙ্গাইলে ৩ উপজেলায় নির্বাচন, আইন-শৃংখলা রক্ষায় জেলা পুলিশের ব্রিফিং
মিশা-ডিপজল দুজনেই মূর্খ: নিপুণ
পুকুর খননের মাটির ভেতর থেকে মিলল কষ্টি পাথরের লক্ষ্মী-নারায়ন মূর্তি
ভারতে গিয়ে নিখোঁজ ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য
কালশীতে পুলিশ বক্সে আগুন দিল অটোরিকশাচালকরা
‘পৃথিবী থেকে বিদায়,ভালো থাকো সবাই, সব শেষ আমার’ লিখে ফেসবুকে পোষ্ট দিয়ে যুবকের আত্নহত্যা
মেট্রোরেলের উত্তরা-টঙ্গী রুটে হবে পাঁচ স্টেশন
টাঙ্গাইলে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে প্রাণ হারালো রাজমিস্ত্রী
পৃথিবীতে ধেয়ে আসতে পারে আরও ভয়ানক সৌরঝড়
পাকিস্তানে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ১৪ জন নিহত
স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ঈদের আগেই মসলার বাজার গরম, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির অযুহাত ব্যবসায়ীদের
বান্দরবানে সেনাবাহিনীর অভিযানে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত
বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা কংগ্রেসের ভোটব্যাংক : অমিত শাহ