শনিবার, ১০ মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

আসোয়ান হাই ড্যাম থেকে আগলিকা দ্বীপের দূরত্ব পঁচিশ কিলোমিটারের মতো। পথে মোহামেদ তার মিশ্র আরবি-ইংরেজি ধারা বিবরণীতে ফিলাইয়ের আদি-অন্ত ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করছিল। অতীতকালে নীল নদে বড় ধরনের বন্যার সময় ফিলাই দ্বীপে প্রেমের দেবতা আইসিসের মন্দিরটি এমনিতেই মাঝে মাঝে জলমগ্ন হয়ে পড়তো। ষাটের দশকে আসোয়ানের নতুন বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হলে দ্বীপটি পুরোপুরি প্লাবিত হয়ে ফিলাইয়ের মন্দির চিরদিনের জন্য জলের তলায় চলে যাবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল।

এ পর্যন্ত শুনে আমার মনে হলো, ভাগ্যিস ষাট দশকে মিশরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের সরকার মন্দির ডুবিয়ে দেয়াকে ইসলামের বিজয় মনে করে হাইড্যামের স্লুইসগেট খুলে দেয়নি। বরং ইওনেস্কোর সহযোগিতায় মন্দির কমপ্লেক্সের আসল রূপ এবং বিন্যাস অনুসরণ করে আগের অবস্থান থেকে ফিলাই টেম্পল নতুন দ্বীপটিতে সরিয়ে এনেছে। এই পুনর্বিন্যাসের ক্ষেত্রে সকল জ্যামিতিক মাপজোক, পিলার ও প্রাচীর, অভ্যন্তরের দেয়ালচিত্র এবং শিলালিপিসহ সকল স্থাপনা এতটা যত্নের সাথে নিখুঁতভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে যে আগে থেকে জানা না থাকলে স্থানান্তরের বিষয়টি কারো পক্ষেই বুঝতে পারা সম্ভব নয়।

আমরা যখন ফিলাই টেম্পল এনকোরেজে এসে পাহাড়ের গায়ে পার্কিং এলাকায় গাড়ি থেকে নামলাম তখন সূর্য কিছুটা পশ্চিম আকাশে আকাশে হেলে পড়েছে। দুপুরের রোদের কড়া তাপ আর নেই। দ্বীপে পৌঁছাতে হলে প্রবেশপথে যথারীতি পারের কড়ি পরিশোধ করেই নৌযানে উঠতে হবে। খুব দ্রুত মোহামেদের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে মেটাল ডিটেকটরের ছাঁকনি পেরিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়লাম। ঘাটের পাথর বাধানো পথে এগিয়ে যাবার সময় দেখা গেল, দুপাশেই পসরা সাজিয়ে বসেছে মিনিয়েচার প্রত্নতত্ত্বের পসারি। তাদের আন্তরিক আহবান উপেক্ষা করেই আমরা একটা ইঞ্জিনচালিত নৌকায় উঠে বসলাম। নৌকাটি ছোট হলেও সহজেই পনের কুড়িজনের জায়গা হতে পারে। গাইড এবং মাঝি মাল্লাসহ আমরা মাত্র দশজন। ইঞ্জিনে গর্জন এবং নীলের জলে ঢেউ তুলে আগলিকা দ্বীপের উদ্দেশ্যে ছোট্ তরী ভেসে চললো। দ্বীপের নাম আগলিকা হলেও পুরো মন্দির কমপ্লেক্স এখনো ফিলাই নামেই পরিচিত, পুরোনো জায়গা ছেড়ে এলেও পুরোনো নাম একে ছেড়ে যায়নি।

মিনিট দশেকের এই জলপথের বাঁ দিকে কোথাও পাহাড়ের খাঁজের ভেতরে আবার কোথাও পাহাড়ের পায়ে ছোট বড় সুন্দর সব স্থাপনা, বাইরে রেলিং দিয়ে ঘেরা। ঘাটে ঘাটে স্পিডবোট অথবা ট্রলারের মতো ছোট নৌযান বাধা। ফিলাইকে কেন্দ্র করে এখানকার চমৎকার উপত্যকা জুড়ে গড়ে উঠেছে বিলাসি পর্যটকদের জন্য ব্যয়বহুল রিসর্ট কিংবা আয়েশী আমিরদের জন্য বিলাসবহুল ভিলা। পাহাড়গুলো দেখে মনে হয় লাইম স্টোন বা গ্রানাইট পাথরের টুকরো কেটে বিভিন্ন উচ্চতায় সাজিয়ে রাখা হয়েছে। তেমনি অনেকগুলো পাথুরে পাহাড় পেরিয়ে নীলের দ্বীপের কাছাকাছি গতি শ্লথ হতে হতে দেখলাম দ্বীপের পাড়ে পাথরের বড় বড় চাঁই এবং ছোট ছোট ঝোপের মতো সবুজ গাছের বেষ্টনী। সম্ভবত দ্বীপের ভূমিক্ষয় রোধ করতেই এই ব্যবস্থা।

নৌকা থেকে ঘাটে নেমে একটা লোহার সেতু পেরিয়ে বাঁ দিকে খানিকটা হেঁটে পৌঁছে গেলাম ফিলাইয়ের মন্দির চত্বরে। সামনে দেবী আইসিসের বিশাল মন্দির আর দু পাশে দীর্ঘ কলামের সারি। প্রায় অক্ষত স্তম্ভগুলোতে খোদাই করা দৃশ্যচিত্র এবং নকশার কারুকাজ কয়েক হাজার বছর পরে এখনও টিকে আছে। আইসিসের মন্দিরের উঁচু দেয়ালে বড় আকারের দৃশ্যপট তার উচ্চতা ও নির্মাণশৈলীর কারণে বিস্ময় জাগায়।

ফারাও যুগের মিশরের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলোর মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে আকর্ষণীয় ফিলাই টেম্পল চারিদিকে জলপরিবেষ্টিত ছোট্ট সুন্দর দৃষ্টি নন্দন একটি দ্বীপ। এর চৌহদ্দি মাত্র সাড়ে চারশ মিটার দীর্ঘ এবং দেড়শ মিটার চওড়া। স্বল্প পরিসরের গ্রানাইট পাথরের ভিত্তিভূমিতে পলি মাটির স্তর জমে জেগে ওঠা ঊর্বর ভূখণ্ডে দিগন্ত রেখায় অপূর্ব দৃশ্য সৃষ্টি করে করে প্রাচীনযুগ থেকে গ্রেকো রোমান সাম্রাজ্যের সাতশ বছর এবং মধ্যযুগে মিশরে আরবের মুসলিম শাসনের প্রায় হাজার বছর পেরিয়ে আজ পর্যন্ত দেশি বিদেশি পর্যটকের কৌতূহলের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভাই শেথের হাতে নিহত স্বামী ওরেসিসের জীবন ফিরিয়ে আনার জন্যে আইসিসের পূজায় নিবেদিত সর্বশেষ মন্দিরগুলোর একটি ফিলাই। আইসিস এবং ওরেসিসের পুত্র সন্তান হোরাস মিশরিয়দের গুরুত্বপূর্ণ দেবতা। সেই কারণেই আইসিস ‘মাদার অফ গডস’ নামেও নামেও পরিচিতি লাভ করেছিলেন। আজকাল ‘মাদার অফ চ্যারিটি’ বা ‘মাদার অফ ডেমোক্রেসি’ বলে যেসব পদক, পুরস্কারের কথা শোনা যায় তা বোধহয় ফিলাই থেকেই এসেছে।

মোহামেদ যখন বাঁ দিকের কলামগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের চারজন সহযাত্রীকে ইতিকথা শোনাচ্ছেন তখন রানাভাই মূল মন্দিরে ঢুকে পড়েছেন। আমি ছবি তুলতে তুলতেই দেখছিলাম, আইসিসের মন্দিরের সামনে দুজন তরুণ তরুণী নানা ঢংয়ে সেলফি তোলার কসরৎ করছে। হঠাৎ তরুণটি সামনে এগিয়ে এসে তার ভাঙা ইংরেজির সাথে যথেষ্ট বিনয় যুক্ত করে যুগলের দুই একটি ছবি তুলে দেয়ার অনুরোধ জানালো। মোবাইল ফোনে ছবি তুলতে আমি সাচ্ছন্দ্যবোধ করি না, তারপরেও বিদেশি তরুণের অনুরোধ উপেক্ষা না করে দু তিনটি ছবি তুলে মোবাইল ফোন ফিরিয়ে দেবার সময় জিজ্ঞেস করে জানলাম যুগলের আগমন রাশিয়া থেকে।

মন্দিরের ভেতরে ঢুকে পাথরের প্রশস্ত দেয়াল, ভারি কলাম ও বিমসহ পুরো কাঠামো দেখে এর হাজার হাজার বছর টিকে যাবার মজবুত নির্মাণ সম্পর্কে ধারণা করা যায়। বোঝা যায় সে সময়ের স্থাপত্যের শক্তি ও স্থায়ীত্বের রহস্য। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় মন্দিরের দেয়ালের গায়ে রিলিফের কাজ এবং হায়রোগ্লাফিক লিপিতে উৎকীর্ণ কথা কাহিনি কিংবা কোনো তথ্য পরিচয়। শিল্প সুষমায় সমৃদ্ধ প্রতিটি ছবিতে প্রকাশ পেয়েছে জীবনযাত্রার নানা প্রসঙ্গ। অভ্যন্তরের কক্ষগুলোতে আলোর পরিকল্পিত বিন্যাসের ফলে রিলিফের দৃশ্যাবলী দর্শনার্থীদের সামনে ফুটে উঠেছে তার পূর্ণ রূপ বৈচিত্র্য নিয়ে। ভেতরের একটি কক্ষে পাথরের বেদী আছে কিন্তু কক্ষের দেয়ালচিত্র ছাড়া এই বেদীতে অথবা অন্য কোনোখানে কোনো মূর্তি নেই। প্রাচীন দেব দেবী মূর্তির বিকৃতি অথবা পুরোপুরি ধ্বংসের কাজটি সম্পন্ন করেছে আদিযুগের খ্রিস্টান ধর্মধারী এবং তাদের অনুসারিরা। খ্রিস্টান শাসনামলেও দীর্ঘকাল সনাতন ধর্মের চর্চা টিকে ছিল ফিলাইয়ের মন্দিরকে কেন্দ্র করে এবং এটিই ছিল শেষ সনাতন মন্দির। দেশ থেকে পৌত্তলিকতার চিহ্ন মুছে দিয়ে যিশুর রাজত্ব কায়েম করার পবিত্র কর্ম সম্পাদন করে স্বর্গ লাভের অভিপ্রায়ে ৫৫০ খ্রিস্টাব্দে প্রাচীন মন্দির এবং মন্দিরর পূজা পাট আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়। ফিলাইয়ের মূল মন্দিরটি তখন ব্যবহৃত হতো গির্জা হিসাবে। তবে শেষপর্যন্ত ফারাওদের দেব-দেবী অপসারণ করে মা মেরি বা স্বয়ং যিশুখ্রিস্টের মূর্তি কেন স্থায়ীভাবে স্থাপন করা সম্ভব হয়নি মোহামেদের কাছে সে প্রশ্নের কোনো উত্তর ছিল না।

প্রথম মন্দির পার হয়ে ভেতরের আয়তকার চত্বরে প্রবেশের পরেও দুপাশের দীর্ঘ কলামের সারি এবং সামনে আরো একটি বিপুলায়তন ভবন স্থাপত্যের চিরায়ত শৈল্পিক নির্মাণরীতির কথাই মনে করিয়ে দেয়। দ্বিতীয় ভবনের বাইরের চত্বরে ঠিক নদীর ধার ঘেঁষে আরো একটি ছোট আকারের স্থাপনা। সন্দেহ নেই এটিও কোনো নির্ধারিত দেবতার উপাসনালয়। বর্তমানে এর স্তম্ভ এবং কার্নিশ থেকে কিছু অংশ খসে পড়েছে, কিন্তু তাতে কোনো সৌন্দর্য হানি হয়নি, বরং বেশ একটা প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক গাম্ভীর্য সৃষ্টি করেছে। কয়েকটি খেজুর গাছ পাথরের তৈরি ছোট কয়েকটি বেদী এবং নদীর বুকে কিছুটা দূরে এবড়ো থেবড়ো পাথরে সাজানো পাহাড়ের চুড়া মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। এই স্থাপনাটির নিচেই নদীতে চলছে জলযান আর মন্দির ঘিরে নানা দেশের বিভিন্ন বয়সের পর্যটকের ভিড়।

পশ্চিম আকাশে পাহাড়ের আড়ালে সূর্য অস্তাচলে গেলেও নদীর জলে ছড়িয়ে দিয়ে গেছে লাল রঙ। আমরা দুজন ছোট মন্দিরটি থেকে বাঁ দিকে ঘুরে নদীর পাড় ঘেঁষে পুরো পশ্চিম চত্বর ঘুরে এলাম। বন্যার পানি এবং নদীর ভাঙন ঠেকাতে এদিকে বেশ খানিটা অংশে পাথরের স্ল্যাব বসানো। ফিলাই মন্দির ঘুরে দেখার নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে এসেছিল। ঘড়ির সময় অনুসারে আমরা ইতিমধ্যেই পাঁচ মিনিট দেরি করে ফেলেছি। পেছন দিকের সংকীর্ণ পথ দিয়ে আমরা আবার প্রথম আইসিসের মন্দির চত্বরে এসে পড়লাম। এদিকে দলের অন্য পাঁচজনের কারো দেখা নেই। আমাদের ভরসা ছিল রানা ভাই যখন আছেন, সেক্ষেত্রে মোহামেদ তার দলবল নিয়ে নিশ্চয়ই এই প্রাচীন মন্দিরের প্রত্নতাত্ত্বিক ধ্বংসাবশেষে আমাদের ফেলে রেখে চলে যেতে পারবে না।

তাড়াহুড়ো করে ঘাটে পৌঁছে কারোরই দেখা পেলাম না। গোটা দশ বারো নৌকা ভাসছে, কিন্তু দুই একজন নাবিক বা তাদের সহকারি ছাড়া কোনো নৌকাতেই যাত্রী নেই। তাহলে আমাদের নৌকা কি এরই মধ্যে ছেড়ে চলে গেছে! পারের কড়ি দিয়ে নৌকায় উঠলেও মাঝি-মাল্লার নাম বা নৌকার নম্বর কোনোটাই তো জেনে নিইনি। তারপরেও দ্রুতই নিজেদের নৌকা খুঁজে পেলাম। আগলিকা দ্বীপে আসার সময়েই লক্ষ করেছিলাম, নৌকার পাটাতনে যে মলিন কার্পেট পাতা, তাতে ডোরাকাটা বাঘের ছাপ। আমি বোধহয় কাউকে বলেও ছিলাম, আসোয়ানের মরুভূমিতে রয়েল বেঙ্গল টাইগার এলো কোথায় থেকে! সেই বাঘের ছাপওয়ালা নৌকা ছোট ছোট ঢেউ তুলে জলে ভাসছে, কিন্তু চালক বা যাত্রী কারোরই ফিরে যাবার তাড়া আছে বলে মনে হলো না।

ঘাটে পৌঁছাবার সংযোগ সেতু পার না হয়ে আমরা নৌকা থেকে নেমে ডকের উপরে দাঁড়িয়ে সহযাত্রীদের খুঁজতে যাবো কিনা ভাবছিলাম। বিস্তৃত পাটাতনে বিচিত্র স্যুভেনিয়ার ছড়িয়ে বসা ফেরওিয়ালাদের একজন আমাদের ধরে বসলো। প্রথমেই ‘হ্যালো ইন্ডিয়া’ বলে খাতির জমাতে চেষ্টা করতেই বললাম ‘নো ইন্ডিয়া।’ এরপরের প্রশ্ন ‘হোয়াট কান্ট্রি?’ বললাম, ‘বংলাদেশ’! প্রথমে বিড়বিড় করে নিজের মনে কয়েকবার আউড়ে নিল বাংলাদেশ। তারপর থেকে প্রতি এক দুই মিনিট পরপরই সে চিৎকার করে বলতে শুরু করলো ‘বাংলাদেশ’ ‘বাংলাদেশ’! সে কি প্রথমবার আমাদের দেশের নাম শুনে তা মুখস্ত করার চেষ্টা করছিল, নাকি বাংলাদেশ শব্দের দ্যোতনায় মুগ্ধ হয়ে বারবার ‘বাংলাদেশ বলে স্লোগান দিচ্ছিল জানি না, তবে সে তার জিনিসপত্র বিক্রির চেষ্টা না বাংলাদেশের নাম গানে মগ্ন থাকায় আমরা বেশ মজা পেয়েছিলাম।

আমরা যখন সেতু পার হয়ে উপরে উঠতে যাচ্ছি তখন মোহামেদ তার তার সঙ্গী সাথীদের নিয়ে ফিরে আসছে। রানা ভাই তখনও বেশ কিছুটা দূরে। একে একে সকলে উঠে পড়লে এবারে ফিলাই মন্দির হাতের বাঁয়ে রেখে দু পাশের পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে পথ করে নৌকা চলতে শুরু করলে রানা ভাই বাহরাইন এবং দুবাই থেকে আসা দুই সহযাত্রীর সাথে আলাপ জুড়ে দিলেন। আমি দেখছিলাম সন্ধ্যার ম্লান আলোয় পশ্চিমের লাল আকাশের পটভূমিতে ফিলাই মন্দিরের পিলারগুলো কী অসাধারণ সুন্দর দৃশ্য রচনা করেছে! ‘মিশরের মুক্তা’ নামে খ্যাত এই মনোরম দ্বীপে না এলে কখনোই এই দৃশ্যের সাথে পরিচয় ঘটতো না।

ফিলাই এনকোরেজ থেকে আসোয়ান শহরে পৌঁছাতে আধা ঘণ্টার বেশি সময় লাগেনি। এরই মধ্যে সড়কের বাতিগুলো জ্বলে উঠেছে। আগেই কথা ছিল আমরা কোনো একটা ডিপার্টমেন্ট স্টোরে নেমে যাবো। নির্দেশনা অনুসারে মোহামেদ আমাদের আল রায়াহ ডিপার্টমেন্ট স্টোরের সামনে নামিয়ে দিয়ে বাকি চারজনকে ঘাটে পৌঁছে দিতে যাবার সময় বলে গেল তোমাদের ক্রুইজ শিপ ওই যে দেখা যায়, এখান থেকে পায়ে হাঁটা দূরত্বে। আমাদের যে কোনো মাঝারি ধরনের ডিপার্টমেন্ট স্টোরের মতো ডাল-ডাল, মাছ-মাংস, শাক-সবজির মতো খাদ্য পানীয় থেকে শুরু করে প্রসাধন সামগ্রী, রান্নার সরঞ্জাম, বাসন-কোসন, প্রয়োজনীয় সব কিছুই এখানে বিভিন্ন অংশে নির্দিষ্ট তাকে সাজানো। আমরা আসলে নির্ভেজাল বোতলজাত পানি অর্থাৎ ড্রিংকিংওয়াটার কিনতে এসেছিলাম।

(চলবে)

এসএ/

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

Header Ad
Header Ad

শাহবাগে বিক্ষোভে উত্তাল জনতা, খালেদা জিয়ার উপস্থিতি চায় ইনকিলাব মঞ্চ

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে উত্তাল আন্দোলন চলছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হয়ে শুক্রবার সারা দিনব্যাপী এই আন্দোলনে ছাত্র-জনতা ‘ব্যান করো, আওয়ামী লীগ ব্যান করো’ সহ নানা স্লোগানে মুখরিত করে তোলে শাহবাগ চত্বর।

এই প্রেক্ষাপটে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি এক আবেগঘন আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে শাহবাগে আসার জন্য।

হাদি নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে লেখেন— “বাংলাদেশের বেগম জিয়া, শাহবাগে হাজারো শহিদ পরিবার ও সারা বাংলাদেশ আপনার অপেক্ষায়।”

অন্য একটি পোস্টে তিনি আরও লেখেন— “জুলাই যোদ্ধাদের পক্ষ থেকে আপোষহীন নেত্রী বেগম জিয়ার কাছে যেতে চাই আমরা শাহবাগের দাওয়াত নিয়ে। কাইন্ডলি সংশ্লিষ্ট কেউ হেল্প করুন। উনি আমাদের সার্বভৌম অভিভাবক।”

শুক্রবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে। এর আগে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে ফোয়ারার পাশে তৈরি করা মঞ্চ থেকে আন্দোলনের নতুন ধাপ হিসেবে মোড় অবরোধের ঘোষণা দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।

ঘোষণার পরপরই আন্দোলনকারীরা মিছিলসহ শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয় এবং অবরোধ শুরু করে।

Header Ad
Header Ad

১৭ বছর পর দেশে ফিরে মসজিদে জুমার নামাজ পড়লেন জোবাইদা রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান। ছবি: সংগৃহীত

১৭ বছর পর স্বদেশে ফিরে প্রথমবারের মতো মসজিদে গিয়ে জুমার নামাজ আদায় করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান। আজ (শুক্রবার) তিনি রাজধানীর ধানমন্ডির ৭ নম্বর মসজিদে সশরীরে জুমার নামাজে অংশ নেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম। তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জোবাইদা রহমানের নামাজ আদায়ের কিছু ছবি পোস্ট করে লেখেন— "ধানমন্ডি ৭ নম্বর মসজিদে আজ জুমার নামাজ আদায় করেছেন তারেক রহমানের সহধর্মিণী জোবাইদা রহমান।"

এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার নাসির, তার স্ত্রী ব্যারিস্টার মেহনাজ মান্নানসহ আরও কয়েকজন।

২০০৮ সালে দেশ ছেড়ে লন্ডনে পাড়ি জমানো জোবাইদা রহমান চলতি বছরের ৬ মে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফেরেন। ফিরে আসার পর থেকে তিনি গুলশানের ফিরোজা বাসভবনে অবস্থান করছেন। মাঝে মাঝে তিনি বাবার বাড়ি ধানমন্ডির মাহবুব ভবনেও যাতায়াত করছেন।

জোবাইদা রহমানের এই জুমার নামাজে অংশগ্রহণ ও জনসম্মুখে উপস্থিতি বিএনপির রাজনৈতিক পরিসরে তার সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণের একটি বার্তা হিসেবেও দেখা হচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

Header Ad
Header Ad

ভারতে ইউটিউবে বন্ধ যমুনা-বাংলাভিশনসহ ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল

ছবি: সংগৃহীত

ভারত সরকার জাতীয় নিরাপত্তা এবং জনশৃঙ্খলার উদ্বেগের কারণ দেখিয়ে ইউটিউবে বাংলাদেশের অন্তত চারটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার সীমিত করেছে। শুক্রবার (৯ মে) স্থানীয় ডিজিটাল পর্যবেক্ষণ সংস্থা ডিসমিস্ল্যাব বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

বন্ধ হওয়া চ্যানেলগুলো হলো— যমুনা টিভি, একাত্তর টিভি, বাংলাভিশন, এবং মোহনা টেলিভিশন।

ভারতীয় ব্যবহারকারীরা এখন ইউটিউবে এসব চ্যানেলে প্রবেশ করতে গেলে একটি সতর্কবার্তা দেখতে পাচ্ছেন— "এই ভিডিওটি বর্তমানে এই দেশে প্রদর্শনের জন্য অনুমোদিত নয়, কারণ এটি জাতীয় নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার ভিত্তিতে সরকারি নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত।"

ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি আইন, ২০০০-এর ৬৯(ক) ধারা অনুযায়ী, সরকার জাতীয় নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব, জনশৃঙ্খলা বা রাষ্ট্রের অখণ্ডতা বিঘ্নিত হয়—এমন কনটেন্ট বা চ্যানেল বন্ধ করার নির্দেশ দিতে পারে। সেই ধারার অধীনেই ইউটিউবকে টেকডাউন অনুরোধ পাঠানো হয়েছে বলে জানায় ডিসমিস্ল্যাব।

ভারতের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে এখনো বাংলাদেশ সরকার, টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বা ইউটিউব কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক উত্তেজনা ও মিডিয়া কনটেন্টের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ থেকেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে গণমাধ্যম কূটনীতি ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়েও আলোচনা তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

শাহবাগে বিক্ষোভে উত্তাল জনতা, খালেদা জিয়ার উপস্থিতি চায় ইনকিলাব মঞ্চ
১৭ বছর পর দেশে ফিরে মসজিদে জুমার নামাজ পড়লেন জোবাইদা রহমান
ভারতে ইউটিউবে বন্ধ যমুনা-বাংলাভিশনসহ ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল
আটকের পরও যে ফোনে ছেড়ে দেওয়া হয় আবদুল হামিদকে
নওগাঁয় দুলাভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে গ্রেপ্তার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা
বাংলাদেশ সফরে আসছে না ভারত, অনিশ্চিত এশিয়া কাপ
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল শাহবাগ, জনস্রোতে ভরপুর রাজপথ
বিএনপি ছাড়া সব রাজনৈতিক দল এখন শাহবাগে: সারজিস আলম
শিক্ষার্থী পারভেজ হত্যায় গ্রেপ্তার টিনা ৩ দিনের রিমান্ডে
চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড ৪১.০২ ডিগ্রি সেলসিয়াস; বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ
কাশ্মীরে ফের বিএসএফের গুলি, ৭ পাকিস্তানি নিহত: দিল্লির দাবি বিচ্ছিন্নতাবাদী
নওগাঁয় ককটেল বিস্ফোরণে উড়ে গেল বাড়ির টিন
ভারত-পাকিস্তান সংঘাত ‘আমাদের বিষয় নয়’: যুক্তরাষ্ট্র
দেশের তীব্র তাপপ্রবাহ নিয়ে যা বলল আবহাওয়া অফিস
আ.লীগ নিষিদ্ধে গুরুত্বের সাথে সরকার বিবেচনা করছে: সরকারের বিবৃতি
টাঙ্গাইলে নাশকতা মামলায় আ.লীগ নেতা রাজ্জাকসহ ২ জন গ্রেফতার
অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত আইপিএল
এবার অপেক্ষা তারেক রহমানের ফেরার, চলছে জোরালো প্রস্তুতি
পদ্মার এক ইলিশের দাম সাড়ে ৮ হাজার টাকা
৫ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে থানায় নেওয়া হলো আইভীকে