মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

আসোয়ান হাই ড্যাম থেকে আগলিকা দ্বীপের দূরত্ব পঁচিশ কিলোমিটারের মতো। পথে মোহামেদ তার মিশ্র আরবি-ইংরেজি ধারা বিবরণীতে ফিলাইয়ের আদি-অন্ত ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করছিল। অতীতকালে নীল নদে বড় ধরনের বন্যার সময় ফিলাই দ্বীপে প্রেমের দেবতা আইসিসের মন্দিরটি এমনিতেই মাঝে মাঝে জলমগ্ন হয়ে পড়তো। ষাটের দশকে আসোয়ানের নতুন বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হলে দ্বীপটি পুরোপুরি প্লাবিত হয়ে ফিলাইয়ের মন্দির চিরদিনের জন্য জলের তলায় চলে যাবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল।

এ পর্যন্ত শুনে আমার মনে হলো, ভাগ্যিস ষাট দশকে মিশরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের সরকার মন্দির ডুবিয়ে দেয়াকে ইসলামের বিজয় মনে করে হাইড্যামের স্লুইসগেট খুলে দেয়নি। বরং ইওনেস্কোর সহযোগিতায় মন্দির কমপ্লেক্সের আসল রূপ এবং বিন্যাস অনুসরণ করে আগের অবস্থান থেকে ফিলাই টেম্পল নতুন দ্বীপটিতে সরিয়ে এনেছে। এই পুনর্বিন্যাসের ক্ষেত্রে সকল জ্যামিতিক মাপজোক, পিলার ও প্রাচীর, অভ্যন্তরের দেয়ালচিত্র এবং শিলালিপিসহ সকল স্থাপনা এতটা যত্নের সাথে নিখুঁতভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে যে আগে থেকে জানা না থাকলে স্থানান্তরের বিষয়টি কারো পক্ষেই বুঝতে পারা সম্ভব নয়।

আমরা যখন ফিলাই টেম্পল এনকোরেজে এসে পাহাড়ের গায়ে পার্কিং এলাকায় গাড়ি থেকে নামলাম তখন সূর্য কিছুটা পশ্চিম আকাশে আকাশে হেলে পড়েছে। দুপুরের রোদের কড়া তাপ আর নেই। দ্বীপে পৌঁছাতে হলে প্রবেশপথে যথারীতি পারের কড়ি পরিশোধ করেই নৌযানে উঠতে হবে। খুব দ্রুত মোহামেদের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে মেটাল ডিটেকটরের ছাঁকনি পেরিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়লাম। ঘাটের পাথর বাধানো পথে এগিয়ে যাবার সময় দেখা গেল, দুপাশেই পসরা সাজিয়ে বসেছে মিনিয়েচার প্রত্নতত্ত্বের পসারি। তাদের আন্তরিক আহবান উপেক্ষা করেই আমরা একটা ইঞ্জিনচালিত নৌকায় উঠে বসলাম। নৌকাটি ছোট হলেও সহজেই পনের কুড়িজনের জায়গা হতে পারে। গাইড এবং মাঝি মাল্লাসহ আমরা মাত্র দশজন। ইঞ্জিনে গর্জন এবং নীলের জলে ঢেউ তুলে আগলিকা দ্বীপের উদ্দেশ্যে ছোট্ তরী ভেসে চললো। দ্বীপের নাম আগলিকা হলেও পুরো মন্দির কমপ্লেক্স এখনো ফিলাই নামেই পরিচিত, পুরোনো জায়গা ছেড়ে এলেও পুরোনো নাম একে ছেড়ে যায়নি।

মিনিট দশেকের এই জলপথের বাঁ দিকে কোথাও পাহাড়ের খাঁজের ভেতরে আবার কোথাও পাহাড়ের পায়ে ছোট বড় সুন্দর সব স্থাপনা, বাইরে রেলিং দিয়ে ঘেরা। ঘাটে ঘাটে স্পিডবোট অথবা ট্রলারের মতো ছোট নৌযান বাধা। ফিলাইকে কেন্দ্র করে এখানকার চমৎকার উপত্যকা জুড়ে গড়ে উঠেছে বিলাসি পর্যটকদের জন্য ব্যয়বহুল রিসর্ট কিংবা আয়েশী আমিরদের জন্য বিলাসবহুল ভিলা। পাহাড়গুলো দেখে মনে হয় লাইম স্টোন বা গ্রানাইট পাথরের টুকরো কেটে বিভিন্ন উচ্চতায় সাজিয়ে রাখা হয়েছে। তেমনি অনেকগুলো পাথুরে পাহাড় পেরিয়ে নীলের দ্বীপের কাছাকাছি গতি শ্লথ হতে হতে দেখলাম দ্বীপের পাড়ে পাথরের বড় বড় চাঁই এবং ছোট ছোট ঝোপের মতো সবুজ গাছের বেষ্টনী। সম্ভবত দ্বীপের ভূমিক্ষয় রোধ করতেই এই ব্যবস্থা।

নৌকা থেকে ঘাটে নেমে একটা লোহার সেতু পেরিয়ে বাঁ দিকে খানিকটা হেঁটে পৌঁছে গেলাম ফিলাইয়ের মন্দির চত্বরে। সামনে দেবী আইসিসের বিশাল মন্দির আর দু পাশে দীর্ঘ কলামের সারি। প্রায় অক্ষত স্তম্ভগুলোতে খোদাই করা দৃশ্যচিত্র এবং নকশার কারুকাজ কয়েক হাজার বছর পরে এখনও টিকে আছে। আইসিসের মন্দিরের উঁচু দেয়ালে বড় আকারের দৃশ্যপট তার উচ্চতা ও নির্মাণশৈলীর কারণে বিস্ময় জাগায়।

ফারাও যুগের মিশরের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলোর মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে আকর্ষণীয় ফিলাই টেম্পল চারিদিকে জলপরিবেষ্টিত ছোট্ট সুন্দর দৃষ্টি নন্দন একটি দ্বীপ। এর চৌহদ্দি মাত্র সাড়ে চারশ মিটার দীর্ঘ এবং দেড়শ মিটার চওড়া। স্বল্প পরিসরের গ্রানাইট পাথরের ভিত্তিভূমিতে পলি মাটির স্তর জমে জেগে ওঠা ঊর্বর ভূখণ্ডে দিগন্ত রেখায় অপূর্ব দৃশ্য সৃষ্টি করে করে প্রাচীনযুগ থেকে গ্রেকো রোমান সাম্রাজ্যের সাতশ বছর এবং মধ্যযুগে মিশরে আরবের মুসলিম শাসনের প্রায় হাজার বছর পেরিয়ে আজ পর্যন্ত দেশি বিদেশি পর্যটকের কৌতূহলের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভাই শেথের হাতে নিহত স্বামী ওরেসিসের জীবন ফিরিয়ে আনার জন্যে আইসিসের পূজায় নিবেদিত সর্বশেষ মন্দিরগুলোর একটি ফিলাই। আইসিস এবং ওরেসিসের পুত্র সন্তান হোরাস মিশরিয়দের গুরুত্বপূর্ণ দেবতা। সেই কারণেই আইসিস ‘মাদার অফ গডস’ নামেও নামেও পরিচিতি লাভ করেছিলেন। আজকাল ‘মাদার অফ চ্যারিটি’ বা ‘মাদার অফ ডেমোক্রেসি’ বলে যেসব পদক, পুরস্কারের কথা শোনা যায় তা বোধহয় ফিলাই থেকেই এসেছে।

মোহামেদ যখন বাঁ দিকের কলামগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের চারজন সহযাত্রীকে ইতিকথা শোনাচ্ছেন তখন রানাভাই মূল মন্দিরে ঢুকে পড়েছেন। আমি ছবি তুলতে তুলতেই দেখছিলাম, আইসিসের মন্দিরের সামনে দুজন তরুণ তরুণী নানা ঢংয়ে সেলফি তোলার কসরৎ করছে। হঠাৎ তরুণটি সামনে এগিয়ে এসে তার ভাঙা ইংরেজির সাথে যথেষ্ট বিনয় যুক্ত করে যুগলের দুই একটি ছবি তুলে দেয়ার অনুরোধ জানালো। মোবাইল ফোনে ছবি তুলতে আমি সাচ্ছন্দ্যবোধ করি না, তারপরেও বিদেশি তরুণের অনুরোধ উপেক্ষা না করে দু তিনটি ছবি তুলে মোবাইল ফোন ফিরিয়ে দেবার সময় জিজ্ঞেস করে জানলাম যুগলের আগমন রাশিয়া থেকে।

মন্দিরের ভেতরে ঢুকে পাথরের প্রশস্ত দেয়াল, ভারি কলাম ও বিমসহ পুরো কাঠামো দেখে এর হাজার হাজার বছর টিকে যাবার মজবুত নির্মাণ সম্পর্কে ধারণা করা যায়। বোঝা যায় সে সময়ের স্থাপত্যের শক্তি ও স্থায়ীত্বের রহস্য। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় মন্দিরের দেয়ালের গায়ে রিলিফের কাজ এবং হায়রোগ্লাফিক লিপিতে উৎকীর্ণ কথা কাহিনি কিংবা কোনো তথ্য পরিচয়। শিল্প সুষমায় সমৃদ্ধ প্রতিটি ছবিতে প্রকাশ পেয়েছে জীবনযাত্রার নানা প্রসঙ্গ। অভ্যন্তরের কক্ষগুলোতে আলোর পরিকল্পিত বিন্যাসের ফলে রিলিফের দৃশ্যাবলী দর্শনার্থীদের সামনে ফুটে উঠেছে তার পূর্ণ রূপ বৈচিত্র্য নিয়ে। ভেতরের একটি কক্ষে পাথরের বেদী আছে কিন্তু কক্ষের দেয়ালচিত্র ছাড়া এই বেদীতে অথবা অন্য কোনোখানে কোনো মূর্তি নেই। প্রাচীন দেব দেবী মূর্তির বিকৃতি অথবা পুরোপুরি ধ্বংসের কাজটি সম্পন্ন করেছে আদিযুগের খ্রিস্টান ধর্মধারী এবং তাদের অনুসারিরা। খ্রিস্টান শাসনামলেও দীর্ঘকাল সনাতন ধর্মের চর্চা টিকে ছিল ফিলাইয়ের মন্দিরকে কেন্দ্র করে এবং এটিই ছিল শেষ সনাতন মন্দির। দেশ থেকে পৌত্তলিকতার চিহ্ন মুছে দিয়ে যিশুর রাজত্ব কায়েম করার পবিত্র কর্ম সম্পাদন করে স্বর্গ লাভের অভিপ্রায়ে ৫৫০ খ্রিস্টাব্দে প্রাচীন মন্দির এবং মন্দিরর পূজা পাট আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়। ফিলাইয়ের মূল মন্দিরটি তখন ব্যবহৃত হতো গির্জা হিসাবে। তবে শেষপর্যন্ত ফারাওদের দেব-দেবী অপসারণ করে মা মেরি বা স্বয়ং যিশুখ্রিস্টের মূর্তি কেন স্থায়ীভাবে স্থাপন করা সম্ভব হয়নি মোহামেদের কাছে সে প্রশ্নের কোনো উত্তর ছিল না।

প্রথম মন্দির পার হয়ে ভেতরের আয়তকার চত্বরে প্রবেশের পরেও দুপাশের দীর্ঘ কলামের সারি এবং সামনে আরো একটি বিপুলায়তন ভবন স্থাপত্যের চিরায়ত শৈল্পিক নির্মাণরীতির কথাই মনে করিয়ে দেয়। দ্বিতীয় ভবনের বাইরের চত্বরে ঠিক নদীর ধার ঘেঁষে আরো একটি ছোট আকারের স্থাপনা। সন্দেহ নেই এটিও কোনো নির্ধারিত দেবতার উপাসনালয়। বর্তমানে এর স্তম্ভ এবং কার্নিশ থেকে কিছু অংশ খসে পড়েছে, কিন্তু তাতে কোনো সৌন্দর্য হানি হয়নি, বরং বেশ একটা প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক গাম্ভীর্য সৃষ্টি করেছে। কয়েকটি খেজুর গাছ পাথরের তৈরি ছোট কয়েকটি বেদী এবং নদীর বুকে কিছুটা দূরে এবড়ো থেবড়ো পাথরে সাজানো পাহাড়ের চুড়া মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। এই স্থাপনাটির নিচেই নদীতে চলছে জলযান আর মন্দির ঘিরে নানা দেশের বিভিন্ন বয়সের পর্যটকের ভিড়।

পশ্চিম আকাশে পাহাড়ের আড়ালে সূর্য অস্তাচলে গেলেও নদীর জলে ছড়িয়ে দিয়ে গেছে লাল রঙ। আমরা দুজন ছোট মন্দিরটি থেকে বাঁ দিকে ঘুরে নদীর পাড় ঘেঁষে পুরো পশ্চিম চত্বর ঘুরে এলাম। বন্যার পানি এবং নদীর ভাঙন ঠেকাতে এদিকে বেশ খানিটা অংশে পাথরের স্ল্যাব বসানো। ফিলাই মন্দির ঘুরে দেখার নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে এসেছিল। ঘড়ির সময় অনুসারে আমরা ইতিমধ্যেই পাঁচ মিনিট দেরি করে ফেলেছি। পেছন দিকের সংকীর্ণ পথ দিয়ে আমরা আবার প্রথম আইসিসের মন্দির চত্বরে এসে পড়লাম। এদিকে দলের অন্য পাঁচজনের কারো দেখা নেই। আমাদের ভরসা ছিল রানা ভাই যখন আছেন, সেক্ষেত্রে মোহামেদ তার দলবল নিয়ে নিশ্চয়ই এই প্রাচীন মন্দিরের প্রত্নতাত্ত্বিক ধ্বংসাবশেষে আমাদের ফেলে রেখে চলে যেতে পারবে না।

তাড়াহুড়ো করে ঘাটে পৌঁছে কারোরই দেখা পেলাম না। গোটা দশ বারো নৌকা ভাসছে, কিন্তু দুই একজন নাবিক বা তাদের সহকারি ছাড়া কোনো নৌকাতেই যাত্রী নেই। তাহলে আমাদের নৌকা কি এরই মধ্যে ছেড়ে চলে গেছে! পারের কড়ি দিয়ে নৌকায় উঠলেও মাঝি-মাল্লার নাম বা নৌকার নম্বর কোনোটাই তো জেনে নিইনি। তারপরেও দ্রুতই নিজেদের নৌকা খুঁজে পেলাম। আগলিকা দ্বীপে আসার সময়েই লক্ষ করেছিলাম, নৌকার পাটাতনে যে মলিন কার্পেট পাতা, তাতে ডোরাকাটা বাঘের ছাপ। আমি বোধহয় কাউকে বলেও ছিলাম, আসোয়ানের মরুভূমিতে রয়েল বেঙ্গল টাইগার এলো কোথায় থেকে! সেই বাঘের ছাপওয়ালা নৌকা ছোট ছোট ঢেউ তুলে জলে ভাসছে, কিন্তু চালক বা যাত্রী কারোরই ফিরে যাবার তাড়া আছে বলে মনে হলো না।

ঘাটে পৌঁছাবার সংযোগ সেতু পার না হয়ে আমরা নৌকা থেকে নেমে ডকের উপরে দাঁড়িয়ে সহযাত্রীদের খুঁজতে যাবো কিনা ভাবছিলাম। বিস্তৃত পাটাতনে বিচিত্র স্যুভেনিয়ার ছড়িয়ে বসা ফেরওিয়ালাদের একজন আমাদের ধরে বসলো। প্রথমেই ‘হ্যালো ইন্ডিয়া’ বলে খাতির জমাতে চেষ্টা করতেই বললাম ‘নো ইন্ডিয়া।’ এরপরের প্রশ্ন ‘হোয়াট কান্ট্রি?’ বললাম, ‘বংলাদেশ’! প্রথমে বিড়বিড় করে নিজের মনে কয়েকবার আউড়ে নিল বাংলাদেশ। তারপর থেকে প্রতি এক দুই মিনিট পরপরই সে চিৎকার করে বলতে শুরু করলো ‘বাংলাদেশ’ ‘বাংলাদেশ’! সে কি প্রথমবার আমাদের দেশের নাম শুনে তা মুখস্ত করার চেষ্টা করছিল, নাকি বাংলাদেশ শব্দের দ্যোতনায় মুগ্ধ হয়ে বারবার ‘বাংলাদেশ বলে স্লোগান দিচ্ছিল জানি না, তবে সে তার জিনিসপত্র বিক্রির চেষ্টা না বাংলাদেশের নাম গানে মগ্ন থাকায় আমরা বেশ মজা পেয়েছিলাম।

আমরা যখন সেতু পার হয়ে উপরে উঠতে যাচ্ছি তখন মোহামেদ তার তার সঙ্গী সাথীদের নিয়ে ফিরে আসছে। রানা ভাই তখনও বেশ কিছুটা দূরে। একে একে সকলে উঠে পড়লে এবারে ফিলাই মন্দির হাতের বাঁয়ে রেখে দু পাশের পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে পথ করে নৌকা চলতে শুরু করলে রানা ভাই বাহরাইন এবং দুবাই থেকে আসা দুই সহযাত্রীর সাথে আলাপ জুড়ে দিলেন। আমি দেখছিলাম সন্ধ্যার ম্লান আলোয় পশ্চিমের লাল আকাশের পটভূমিতে ফিলাই মন্দিরের পিলারগুলো কী অসাধারণ সুন্দর দৃশ্য রচনা করেছে! ‘মিশরের মুক্তা’ নামে খ্যাত এই মনোরম দ্বীপে না এলে কখনোই এই দৃশ্যের সাথে পরিচয় ঘটতো না।

ফিলাই এনকোরেজ থেকে আসোয়ান শহরে পৌঁছাতে আধা ঘণ্টার বেশি সময় লাগেনি। এরই মধ্যে সড়কের বাতিগুলো জ্বলে উঠেছে। আগেই কথা ছিল আমরা কোনো একটা ডিপার্টমেন্ট স্টোরে নেমে যাবো। নির্দেশনা অনুসারে মোহামেদ আমাদের আল রায়াহ ডিপার্টমেন্ট স্টোরের সামনে নামিয়ে দিয়ে বাকি চারজনকে ঘাটে পৌঁছে দিতে যাবার সময় বলে গেল তোমাদের ক্রুইজ শিপ ওই যে দেখা যায়, এখান থেকে পায়ে হাঁটা দূরত্বে। আমাদের যে কোনো মাঝারি ধরনের ডিপার্টমেন্ট স্টোরের মতো ডাল-ডাল, মাছ-মাংস, শাক-সবজির মতো খাদ্য পানীয় থেকে শুরু করে প্রসাধন সামগ্রী, রান্নার সরঞ্জাম, বাসন-কোসন, প্রয়োজনীয় সব কিছুই এখানে বিভিন্ন অংশে নির্দিষ্ট তাকে সাজানো। আমরা আসলে নির্ভেজাল বোতলজাত পানি অর্থাৎ ড্রিংকিংওয়াটার কিনতে এসেছিলাম।

(চলবে)

এসএ/

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

গাজা ইস্যু

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো

ছবি সংগৃহীত

গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদে শুরু হওয়া শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ও ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ।

ক্রমবর্ধমান এই বিক্ষোভ সামাল দিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্মকর্তারা রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন।

বিক্ষোভ থামাতে সোমবার ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক ডজন শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদিকে, ইহুদিবিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যায় ক্যাম্পাসে সশরীরে ক্লাস নেওয়া আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।

ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলেসহ অন্যান্য কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও বিক্ষোভ-প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে।

এদিকে, বিক্ষোভ বন্ধ করে ক্যাম্পাসকে শান্ত রাখার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তাদের উপর দিন দিন চাপ বাড়ছে বলে জানা গেছে।

গত বছরের সাতই অক্টোবর হামাসের হামলার জের ধরে ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ শুরু হয়। এরপর থেকেই যুদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষে বিক্ষোভ এবং তর্ক-বিতর্কের চর্চা বাড়তে থাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে।

উভয়পক্ষের শিক্ষার্থীরাই দাবি করেছেন যে, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইহুদি-বিদ্বেষ এবং ইসলামভীতি দু’টোই বেড়েছে।

বিক্ষোভ সামাল দিতে গত সপ্তাহে নিউইয়র্ক সিটি পুলিশকে ক্যাম্পাসে ঢোকার অনুমতি দেয় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেখানে গিয়ে বিক্ষোভকারী কয়েক ডজন শিক্ষার্থীকে পুলিশ গ্রেফতার করে, যা সারা বিশ্বেই বেশ আলোচিত হয়।

অন্যদিকে, শিক্ষার্থীদের গ্রেফতারের ঘটনার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে সোমবার ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভকারী প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয়টির কয়েকশ শিক্ষার্থী গত কয়েক দিন ধরেই ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চালিয়ে আসছে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, ক্যাম্পাসকে শান্ত রাখার জন্য বিক্ষোভকারীদের “একাধিকবার অনুরোধ” জানালেও তারা সেটি উপেক্ষা করে। সেকারণে অনেকটা বাধ্য হয়েই তারা পুলিশে খবর দিয়েছেন।

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা চেয়ারম্যান হলেন সেই দেলোয়ার

দেলোয়ার হোসেন পাশা। ছবি: সংগৃহীত

নাটোরের সিংড়া উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন দেলোয়ার হোসেন পাশা।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ শেখ এই ঘোষণা দেন।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ শেখ জানান, আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে নাটোরের সদর, নলডাঙ্গা ও সিংড়া উপজেলা পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সিংড়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আর কোনো প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন দেলোয়ার হোসেন। তবে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

আব্দুল লতিফ শেখ জানান, নির্বাচনে নাটোর সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন প্রার্থী রয়েছেন। নলডাঙ্গা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৮ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী নির্বাচন করবেন।

উল্লেখ্য, গত ১৫ এপ্রিল সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করায় দেলোয়ার হোসেন পাশা ও তার দুই ভাইকে অপহরণ ও মারধর করে বাড়ির কাছাকাছি ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় দেলোয়ারের ভাই মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে নাটোর সদর থানায় একটি মামলা করেন।

সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবিব রুবেলের সহযোগীরা অপহরণ ও মারধরের ঘটনার সঙ্গে জড়িত। অপহরণের কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটির মালিক রুবেল। সেই সঙ্গে গ্রেপ্তার দুজন আসামির একজন ১৬৪ ধারার জবানবন্দীতে স্বীকার করেন যে, রুবেলের নির্দেশেই তারা এ কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছিলেন।

এ নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে লুৎফুল হাবিব রুবেল চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

দেশের বাজারে দাম কমলো স্বর্ণের

ছবি সংগৃহীত

নতুন দাম নির্ধারণের তিন দিন না যেতেই এবার আবার স্বর্ণের দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। বাজুস চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম আরও ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা। স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম কমানো হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল ২০২৪) বিকেল ৪টা থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে বলে বাজুস। এদিন বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের দাম কমেছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশন সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে, যা মঙ্গলবার বিকেল ৪টা থেকে কার্যকর হবে।

নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম তিন হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা। আর ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম তিন হাজার ৯ টাকা কমিয়ে এক লাখ ১০ হাজার ৯৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম দুই হাজার ৫৬৬ টাকা কমিয়ে ৯৫ হাজার ১৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম দুই হাজার ৭৬ টাকা কমিয়ে ৭৬ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

অবশ্য স্বর্ণের অলঙ্কার কিনতে এর থেকে বেশি অর্থ গুনতে হবে ক্রেতাদের। কারণ বাজুসের নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে স্বর্ণের অলঙ্কার বিক্রি করা হয়। সেইসঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম তিন হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে মঙ্গলবার থেকে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের অলঙ্কার কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হবে এক লাখ ২৫ হাজার ৬০৪ টাকা।

সর্বশেষ সংবাদ

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা চেয়ারম্যান হলেন সেই দেলোয়ার
দেশের বাজারে দাম কমলো স্বর্ণের
থানচি, রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলায় ভোট স্থগিত করা হয়েছে
বৃষ্টির জন্য রাজধানীতে ইসতিসকার নামাজ আদায়
পদ্মায় গোসল করতে নেমে ৩ কিশোরের মৃত্যু
চুয়াডাঙ্গায় বিনামূল্যে বীজ ও রাসায়নিক সার পেলেন ১৪ হাজার ৫৫০ জন কৃষক
কাতারের আমিরের নামে ঢাকায় সড়ক ও পার্কের নামকরণ
ইসলাম গ্রহণ করেছেন বিখ্যাত ডাচ অভিনেতা ডনি রোয়েলভিঙ্ক
আপাতত বিয়ের প্ল্যান নেই, এনজয় করছি : জয়া আহসান
চুয়াডাঙ্গায় বৃষ্টির জন্য ইস্তিস্কার নামাজ আদায়
ছুটিতে বাড়ি গিয়ে হিটস্ট্রোকে পুলিশ সদস্যের মৃত্যু
ভারতের রাষ্ট্রপতির হাত থেকে ‘পদ্মশ্রী’ নিলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা
বাংলাদেশ-কাতারের মধ্যে ১০ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই
চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচনের তফসিল হতে পারে মঙ্গলবার
বুড়িচং সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক আহত
বোরকা পরে বালিকা মাদরাসায় ফাহিম, ধরা পড়ে খেলেন গণপিটুনি
তাইওয়ানে কয়েক ঘন্টায় ৮০ বার ভূমিকম্প অনুভূত
এবার ইরাকে মার্কিন বাহিনীকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা
ঢাকায় পৌঁছেছেন টাইগারদের নতুন কোচ