শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

কায়রো শহর দেরিতে ঘুমায় দেরিতে জাগে। এই প্রচলিত ধারণাকে অগ্রাহ্য করে পাঁচটায় আসার কথা থাকলেও করিৎকর্মা  বাসাম তার লাল গাড়িটা নিয়ে সাড়ে চারটায় হাজির! ঘুম থেকে উঠে গেছি আগেই। আসোয়ান যাবার ফ্লাইট সকাল সাড়ে সাতটায়। সে হিসাবে ঘণ্টাখানেক আগে এয়ারপোর্টে পৌঁছালেই চলে। রাতেই সব গোছানো ছিল, গাড়ি চলে আসায় একটু তাড়াতাড়িই বেরিয়ে গেলাম। রাস্তায় দুচারটা যানবাহন দেখা গেলেও কোথাও কোনো মানুষের চলাচল নেই। সারি সারি সড়ক বাতি জ্বলছে রাস্তার দুপাশে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আলোকোজ্জ্বল বড় বড় ভবনের দেয়ালে প্রবেশপথে এবং জ্বলতে থাকা রঙিন নিয়ন সাইনে বেশিরভাগ আরবি থাকলেও মাঝে মাঝে ইংরেজি উঁকি দিয়ে যায়। হাতের বাঁ দিকে লাল আলোয় সাজানো সিটাডেল মসজিদ পার হয়ে আমরা এগিয়ে যাই।

ঈজিপ্ট এয়ারের ফ্লাইট আকাশে উড়াল দিল যথাসময়ে। আসোয়ান পৌঁছাবে সকাল নয়টায়। সকালে নাস্তা না করেই বেরিয়েছি। অভ্যন্তরীন ফ্লাইট ঈজিপ্ট এয়ার তো বাজেট এয়ার নয়, অতএব দেড় ঘণ্টার আকাশ যাত্রায় ব্রেকফাস্ট পাওয়া যাবে, সে ব্যাপারে প্রায় নিশ্চিত ছিলাম। বোর্ডিং-এর পরপরই বিভিন্ন নিরাপত্তা সম্পর্কিত  ঘোষণার সাথে সাথে অ্যারাবিশ ইংরেজিতে রিফ্রেশমেন্টেরও একটা ঘোষণাও শুনেছিলাম। কিন্তু সিটবেল্ট বাধা থেকে শুরু করে টেক-অফের পরে তেত্রিশ হাজার ফুট উপরে থিতু হবার পরেও দানাপানি যোগান দেয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। মিনিট চল্লিশেক পরে ট্রলিসহ কেবিনক্রুদের নড়াচড়া দেখে একটু ভরসা পেলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হা হোতস্মি! হাতে হাতে একটা করে পাঁচশ মিলি লিটারের নির্ভেজাল বোতল ধরিয়ে দিয়ে আসোয়ানে ল্যান্ড করার ঘোষণা দেবার আগে পর্যন্ত তাদের আর কোনো হদিস পাওয়া গেল না। বুঝলাম, যাত্রাটা যাতে একেবারে নির্জলা উপবাস না হয়, সেজন্যেই এই বোতলজাত পানির ব্য্রবস্থা। 

আসোয়ানের ছোট্ট এয়াপোর্টে লাগেজ নিজে বেরিয়ে যেতে বেশি সময় লাগেনি। সফর পরিকল্পনা অনুসারে আমাদের জানা ছিলএয়ারপোর্টের বাইরে আমাদের জন্য অপেক্ষা করবে ইয়াসির। নামফলক নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ‘তরুণ ইয়াসির’ আমাদের দুজনের লাগেজ অবলীলায় দুহাতে তুলে নিয়ে এবং গাড়িতে তুলে দিয়ে বিদায় নিল। গাড়ি চলতে শুরু করলে একই সাথে বাজতে শুরু করলো আরবি গান।  ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করে জানলাম যে ছেলেটি আমাদের গাড়িতে তুলে দিয়েছে তার নাম ইয়াসির নয়। বুঝলাম চালক নিজেই ইয়াসির এবং সে সম্ভবত ভ্রমণ তরী ‘টুইয়া’র প্রতিনিধি!তবে তখনও অনেক কিছুই জানা বাকি ছিল।ড্রাইভারকে পথের দূরত্ব বা নদীর ঘাটে পৌঁছাতে কতক্ষণ লাগতে পারে ইংরেজিতে ইত্যাদি  নানা প্রশ্ন করেও রানা ভাই কোনো সঠিক উত্তর বের করতে পারলেন না। তবে পথের ডান পাশে আসোয়ান বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেশ কয়েকটি পাথরের তৈরি মনুমেন্ট ও বিমূর্ত ভাস্কর্য ইত্যাদি পেছনে ফেলে আধাঘণ্টারও কম সময়ে আমরা শহরে ঢুকে গেলাম। বাঁ পাশে তখন কিছুটা দূরে নীল নদ সাথে সাথেই চলছে। মিনিট কুড়ি পঁচিশ পরে সীমানা দেয়াল দিয়ে ঘেরা নীল নদেরঘাটেআমাদের নামিয়ে অন্য আরেকজনের হাতে তুলে দিয়ে গাড়িচালক চলে গেলে লম্বামতো  লোকটি এসে নিজের পরিচয় দিয়ে ইংরেজিতে বলেন, ‘আই এ্যাম ইয়াসির! ইয়োর ট্যুর ম্যানেজার।’ 


যাক  এতোক্ষণে তাহলে আসল ইয়াসিরকে পাওয়া গেল। আমার মনে হলো স্বয়ং ইয়াসির আরাফাতও তাঁর জীবদ্দশায়  এতোগুলো ডামি ব্যবহার করেননি। যাই হোক, এই নতুন ইয়াসির ট্যুর ম্যানেজার হলেও তার সাথে আমাদের ভ্রমণ তরীর কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি ঘাট থেকে নৌযান পর্যন্ত বিছানো পাটাতনের উপর দিয়ে ট্যুইয়ার লবিতে নিয়ে এলেন। একপাশে অসংখ্য ব্যাগ বাক্স স্যুটকেস স্তূপ করে রাখা। আমরা ঠিক বুঝতে পারছিলাম না, এই বিপুল সংখ্যক লাগেজ কী চেক-ইনের প্রতীক্ষায়, না চেক আউট হয়ে গেছে এখন শুধু নিষ্ক্রান্ত হবার অপেক্ষায়! আমরা বাঁ দিকের লাউঞ্জে ঢুকে গেলাম। সেখানে নরম কার্পেটে ঢাকাবিস্তৃত লাউঞ্জে বড় বড় গোল টেবিল ঘিরে চেয়ার পাতা। একপাশের দেয়াল জোড়া  কাচের জানালার পাশে বসে বাইরে তাকাতেই রোদ ঝলমলে একটা সকাল চোখের সামনে বিস্ময় ছড়িয়ে দেয়। আহ! এই সেই নীল নদ!


আমি অবাক হয়ে দেখি নিস্তরঙ্গ নীল নদের নীল জলে ভেসে যাচ্ছে পাল তোলা জলযান ফেলুকা। আরবিতে আন-নীল বাংলা ভাষায় কেমন করে নীল হয়ে গেল জানি না, কিন্তুএর চেয়ে অর্থবহ নাম এ নদীর জন্যে আর কিছুই হতে পারে না। ‘নাইল’ শব্দের অর্থ কোথাও ঔজ্জ্বল্য, কোথাও আলো আবার কোথাও শুধুই নদী কিন্তু নীল নয়। অথচ সামনে প্রবহমান নদী, ওপারে ঘন সবুজ গাছপালা এবং তারও ওপারে ধূসর পাহাড়ের ওপরও মনে হয় ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে খানিকটা নীল রঙ। একটু লক্ষ করলে দেখা যায় নৌকাগুলো নীল জলে সাদা পাল তুলে জল কেটে এগিয়ে গেলেও আসলে সবই ইঞ্জিনবোট। তাহলেও যান্ত্রিক নৌকায় সাদা পাল টাঙিয়ে যে নান্দনিক দৃশ্য তৈরি হয়েছেআমরা অনেকটা সময় বাইরে তাকিয়ে সেই ভাসমান জলযানগুলোরচলাচল দেখতে থাকি। 

সাড়ে দশটা বেজে গেছে, আমরা তখনও নাস্তা করিনি, ভুলেই গিয়েছিলাম। সাক্ষাৎ ইয়াসিরকে ডেকে নাস্তার ব্যবস্থা করতে বললাম। জাহাজের অতিথিরা ব্রেকফাস্ট করে পশ্চিম তীর ভ্রমণে বেরিয়ে গেছেন। আমাদের চেক-ইন শুরু হবার কথা দুপুর বারোটায়, অতএব ‘অন-বোর্ড’ সার্ভিসও শুরু হবে লাঞ্চ থেকে। তারপরেও লাউঞ্জের শেষ প্রান্তের কফিশপ থেকে স্যান্ডউইচ এবং কফি তৈরি হয়ে এলো। স্যান্ডউইচের আকার আকৃতি এবং পরিবেশিত খাবারের পরিমান দেখে আমাদের চক্ষু চড়ক গাছ। তিনজনের ব্রেকফাস্ট দিব্যি আমাদের মতো নয় জনকে খাইয়ে দেয়া যায়! এইবেলা মূল্য পরিশোধ করেই খেতে হবে,কিন্তুসাথে পাঠানো বিলটা দেখে আমরা আবারো বিভ্রান্ত! মাত্র সাড়ে সাত পাউন্ড? আমরা কি বাদশাহ ফারুকের জামানায় ফিরে গেছি! দশমিকের একটা বিন্দুর কারণে যা সাড়ে সাত পাউন্ড ভেবেছিলাম তা আসলে পঁচাত্তর পাউন্ড। টাকার হিসাবে প্রত্যেকের জন্য চারশ চল্লিশ টাকাও একটি ভ্রমণ তরীতে দেয়া ব্রেকফাস্টের জন্যে খুব বেশি বলে মনে হলো না। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ফ্রন্টডেস্ক পাসপোর্টের ফটোকপি করে নিয়ে সম্ভবত আমাদের পরিচিতি নিশ্চিত হয়েই ঘরের চাবি হাতে তুলে দিল। কার্পেট বিছানো প্যাঁচানো সিঁড়ি বেয়ে তিন তলায় উঠে নিজেদের ঘরে পৌঁছে প্রথমেই বিছানায় পড়ে একটু ঘুমিয়ে নেবার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু জানালার ভারি পর্দা সরিয়ে দিতেই আবার চোখে পড়ে পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী নীলের নীল পানিতে নৌকা বিহারের অসাধারণ সুন্দর দৃশ্য।   


সেই শৈশব থেকে শুনে আসছি মিশর নীল নদের দান। তবে শুধু মিশর নয় উগান্ডা, সুদান এবং ইথিওপিয়ার জনজীবনের জন্যেও গুরুত্বপূর্ণ এই বহমান নদী। উগান্ডার লেক ভিক্টোরিয়া থেকে ‘হোয়াইট নাইল’ সুদানের খার্তুমের কাছাকাছি ইথিওপিয়ার ‘ব্লু-নাইল’ এর সাথে একত্রিত হয়ে নাইল নামে মিশরে উপর দিয়ে বয়ে যাবার পথে দু পাশের গাছপালা এবং সবুজ ক্ষেত খামারের সকল বৃক্ষলতায় জলের যোগান দিয়ে যাচ্ছে এই নদী। নীলের তীর থেকে দূরের সারাটা দেশই ঊসর মরুভূমি।আলেক্সান্দ্রিয়ার কাছে ভূমধ্য সাগরে মিশে যাবার আগে পর্যন্ত নীলের দুপাশেই গড়ে উঠেছে আসোয়ান, এসনা, এডফু, লাক্সর, কোমওম্বো এবং কায়রোসহ সকল ছোটবড় শহর। দূর অতীতে পিরামিড এবং প্রত্মতাত্তি¡ক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোও গড়ে উঠেছে নাইলের আশে পাশেই। 

লাঞ্চের কিছু পরেই আমাদের তৈরি থাকতে বলে ইয়াসির তার দায়িত্ব শেষ করে বিদায় নিয়েছে। এবারে গাইডের দায়িত্বে মোহামেদ নামে যাকে পাওয়া গেল  সে যে আসলেই ট্যুর গাইড তা তার আচার আচরণে বোঝার উপায় নেই। মুন্ডিত  মস্তক ল্যাকপ্যাকা লোকটিকে আমি প্রথমে মাইক্রোবাসের হেল্পার মনে করেছিলাম।তার ইংরেজি ভাষা জ্ঞান নিয়ে আমার কোনো প্রশ্ন নেই, বিদেশি ভাষায় সবার কাছে থেকে বিশুদ্ধ উচ্চারণ কেউ আশাও করে না। মাইক্রোবাসে মাত্র সাতজন যাত্রী। আমাদের তিনজনকে বাদ দিলে বাকি চারজনই আরবি ভাষাভাষি। সেদিক থেকে মোহামেদের সুবিধাই হয়েছিল। আমাদের জন্যে তেমন কিছু ব্যাখ্যা করতে হয়নি বলে দুবাই আবুধাবির ভ্রাতা ভগ্নিদের আরবি ভাষায় ইতিহাস ভূগোলের পাঠ দান করে সে বেশ স্ফূর্তিতেই ছিল।


আমাদের গন্তব্য আসোয়ান হাইড্যাম।আসোয়ানের প্রথম বাঁধ তৈরি হয়েছিল ১৯০২ সালে। অনেকটা সেই বাঁধের সাফল্য থেকে উৎসাহিত হয়েই  ১৯৫২ সালে বিপ্লব পরবর্তী গামাল আবদুল নাসের সরকারের একটা প্রধান লক্ষ ছিল এই বাঁধ নির্মাণ। চাষাবাদের জন্য পানি ধরে রাখা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং জল-বিদ্যুৎ উৎপাদন করে মিশরের সামগ্রিক অর্থনীতির উন্নয়নের জন্যই বাঁধ তৈরি করে নীল নদের পানির সবচেয়ে বেশি এবং সবচেয়ে ভালো ব্যবহার নিশ্চিত করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল। নাসেরের মিশরের সাথে সোভিয়েত ইউনিয়নের শক্ত গাঁটছড়া বাধার এই সময়টা ছিল মিশরের সামগ্রিক অগ্রগতির কাল। আসোয়ান বাঁধ নির্মাণের এক পর্যায়ে নীল নদের জলপ্রবাহ ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার আনুষ্ঠানিকতার সময় আবদুল নাসেরের উপস্থিতিতে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট নিকিতা ক্রুশ্চেভ নাকি বলেছিলেন আসোয়ান বাঁধ হচ্ছে পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য! 

পিরামিড এবং আলেক্সান্দ্রিয়ার বাতিঘরের মতো দুটি আশ্চর্যের দেশে আরেকটি আশ্চর্য স্থাপনা দেখতে আমরা আসোয়ান হাইড্যাম এলাকায় এসে নামলাম। মূল বাঁধ এলাকায় প্রবেশের আগে বিশাল অক্ষরে লেখা ‘ওয়েলকাম’। তবে এই একটি শব্দ ছাড়া বাদবাকি সকল তথ্য এবং নির্দেশনা আরবিতে লেখা। আমরা নিরাপত্তা চৌকি, ওয়াচ-টাওয়ার এবং দীর্ঘ সুদৃশ্য দেয়াল পার হয়ে হাইড্যামের কৌশলগত এলাকায় ঢুকে পড়ি। আমাদের গাইড আরবিতে যা ব্যাখ্যা করছিলেন তা বোঝার সাধ্য না থাকলেও বার দুয়েক  ‘সোভিয়েত রাশিয়া’  বঙ্গ সন্তানের কানে আসে। বুঝলাম হয় বাঁধ নির্মাণে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকার কথা বলা হচ্ছে অথবা রাশিয়া এদেশের কী ক্ষতি করে গেছে তার ধারাবিবরণী চলছে।


বাঁধের এলাকাটা একটা উদ্যানের মতো করে সবুজ ঘাস, গাছপালা এবং রঙিন ফুলের ছোট ছোট ঝোপঝাড় দিয়ে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখা হয়েছে। উপর দিয়ে চলে গেছে রাস্তা, মাঝখানের সড়ক দ্বীপে যাত্রী ছাউনি ছাড়াওকয়েকটি প্রায় পত্রপুষ্পহীন গাছ এবংএক প্রান্তে একটি ছোট্ট ক্যান্টিন। অনেকগুলো ট্যুরিস্টবাস একদিকে দাঁড়ানো। বাঁধের উপর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে একটা সাইন বোর্ডে আরবির সাথে ইংরেজিতে নিষেধাজ্ঞা ‘ছবি তোলা নিষেধ!’ নিষেধাজ্ঞা চোখে পড়ার আগেই বেশ কিছু ছবি তোলা হয়ে গেছে। এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার জন্যে ধারে কাছে কাউকে দেখা না গেলেও নিজের নিরাপত্তার স্বার্থেই ক্যামেরায় লেন্সক্যাপ লাগিয়ে ফেললাম। বাঁধের উপরে দাঁড়ালে যতোদূর দেখা যায় একদিকে পাহাড়ে ঘেরা বিস্তৃত এলাকায় আটকে রাখা হয়েছে নীল জল। অপর পারের পানির রঙ কিছুটা হালকা। রানা ভাই অবশ্য বলছিলেন, ‘আসোয়ান হাই ড্যাম উন্নয়নের ক্ষেত্রে অবদান যা রেখেছে তার তুলনায় ক্ষতিও কম করেনি। এরপরে যদি ইথিওপিয়া উজানে তাদের হাইড্যাম তৈরি করে তাহলে ক্ষতির পরিমান আরো বাড়বে।’


আমি বাঁধের প্রকৌশলগত বিষয়ে একেবারেই অজ্ঞ। শুধু জানি প্রথম আসোয়ান বাঁধের কারণে ফাইলির প্রত্মতাত্তিক নিদর্শন প্রায় ডুবতে বসেছিল, তখন মূল টেম্পল কমপ্লেক্সটি বর্তমানের ছোট্ট দ্বীপভূমি আগিলকিয়াতে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। দ্বিতীয়বার পূর্বের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আসোয়ান হাইড্যাম নির্মাণের সময় দ্বিতীয় রামেসেস আমলের দুটি প্রকাণ্ড প্রস্তর মন্দির সম্পূর্ণ তুলে এনে নতুন করে বসানো  হয়েছে লেক নাসেরের পশ্চিম তীরে আবু সিম্বেল গ্রামে। আবু সিম্বেলে না গেলে মিশর ভ্রমণ অস্পূর্ণ থেকে যাবে। পরদিন ভোরে ত্রয়োদশ শতকের এই অভাবিত নির্মাণ এবং তার পুনস্থাপনের কীর্তি দেখতে যাবার কথা আছে। তবে তার আগে যেতে হবে ফাইলি। আসলে আসোয়ান হাইড্যামের উপরে দাঁড়িয়ে বেশি কিছু দেখার নেই। আমরা গাড়িতে উঠে বসলাম আগিলকিয়াদ্বীপের উদ্দেশ্যে। 

 


চলবে...

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

আজকের সেহরির শেষ সময় (ঢাকা)

0

ঘণ্টা

0

মিনিট

0

সেকেন্ড

যত জঙ্গি গ্রেপ্তার করেছি, একজনও মাদরাসার ছাত্র নন : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, জঙ্গিবিরোধী অভিযানে আমরা যত জঙ্গি গ্রেপ্তার করেছি, তার মধ্যে একজনও মাদরাসার ছাত্র নন।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে এক আলোচনা সভা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার জঙ্গিদের একজনও মাদরাসার ছাত্র নন। তারা সম্ভ্রান্ত পরিবারের ও অন্য ব্যাকগ্রাউন্ডের মানুষ। সে সময় আমরা সব ধর্মের ধর্মগুরুদের নিয়ে প্রতি বিভাগে সভা করলাম। খুব অল্প দিনের মধ্যে আমরা দেশকে সে জায়গা থেকে বাঁচিয়ে এনেছি। এখন পৃথিবীর যেখানে যাই, সবাই বলে তোমরা অসম্ভবকে সম্ভব করেছ।

তিনি বলেন, দেশে জঙ্গি উত্থান হয়েছিল। আমরা দেখলাম অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো। সবারই কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যাওয়ার অবস্থা। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পেরেছিলাম।

আসাদুজ্জামান খান বলেন, ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান সে সময় আপনাদের নিয়ে কাজ করেন। ইসলামে যে মানুষ হত্যার স্থান নেই, এ বিষয়ে তিনি আপনাদের দিয়ে জায়গায় জায়গায় সভা করেছেন। তখন আমরা সবাই এক হয়ে গিয়েছিলাম।

তিনি আরও বলেন, মুসলিমদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস আছে। এতে জ্ঞানে-বিজ্ঞানে মুসলিমরা ছিলেন অনন্য। আর আজ আমরা একে অপরের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করি। আপনারা এখন বিষয়টি নিয়ে কথা বলুন, যাতে আমরা আবার সেই জায়গাটাতে পৌঁছাতে পারি। আমরা সবাই যদি একত্রে থাকি, তাহলে আমরা নিশ্চয়ই আমাদের গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে পারব।

ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশে (আইডিইবি) আদর্শ সমাজ গঠনে সামাজিক সংগঠনের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দ্বীনি সেবা ফাউন্ডেশন। মুফতি মুহাম্মাদ আবুল বাশার নোমানির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান ও সরকারি প্রতিষ্ঠানবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার বিরোধিতা করায় সাংবাদিকের কারাদণ্ড

ফাইল ছবি

ইউক্রেন যুদ্ধের বিরোধিতা করায় রাশিয়ার এক সাংবাদিককে ২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত। রাশিয়া-ইউক্রেনের দন্দ্বে পূর্ণ-মাত্রার রুশ সামরিক আক্রমণের নিন্দা করেছিলেন তিনি। এই অপরাধেই বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাশিয়ার একটি আদালত তাকে এই কারাদণ্ড দেয়।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার একটি রাশিয়ান আদালত ইউক্রেনে মস্কোর পূর্ণ-মাত্রার সামরিক আক্রমণের নিন্দা করার জন্য একজন সাংবাদিককে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। অন্যদিকে মস্কোর পুলিশ ২৪ ঘণ্টা সময়কালে আরও পাঁচজন সাংবাদিককে আটক করেছে।

দুই বছরেরও বেশি সময় আগে ইউক্রেনে সৈন্য পাঠিয়ে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। এরপর থেকে রাশিয়া অন-দ্য গ্রাউন্ড রিপোর্টিংকে ক্রমবর্ধমানভাবে বিপজ্জনক এবং অবৈধ করে তুলেছে এবং এই অপরাধে ক্রেমলিনের সুরের সঙ্গে সুর মেলাতে ব্যর্থ হওয়া ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও জরিমানাও করা হয়েছে।

এএফপি বলছে, ইউক্রেন যুদ্ধের বিরোধিতা করায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত রুশ ওই সাংবাদিকের নাম মিখাইল ফেল্ডম্যান। পশ্চিমাঞ্চলীয় কালিনিনগ্রাদের একটি আদালত বলেছে, এই সাংবাদিক ভিকন্টাক্টে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে একাধিক পোস্টে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীকে অসম্মান করেছেন।

মূলত রুশ ওই সাংবাদিকের আইনজীবীর বরাত দিয়ে একথা জানিয়েছে পর্যবেক্ষক সংস্থা ওভিডি-ইনফো। সংস্থাটি বলেছে, ‘প্রসিকিউশন তার বিরুদ্ধে ঠিক এই শাস্তিই চেয়েছিল। কারাবাসের পাশাপাশি ফেল্ডম্যানকে দুই বছরের জন্য ওয়েবসাইট পরিচালনা থেকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’

বার্তাসংস্থা বলছে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে অভিযানের বিরোধিতাকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রাশিয়ায় শত শত ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সামরিক সেন্সরশিপ আইনের অধীনে, রাশিয়ানদের যারা অনলাইনে আক্রমণাত্মক সমালোচনা করেন বা যে সাংবাদিকরা রাশিয়ান কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য ব্যতীত অন্য কোনও তথ্য ব্যবহার করেন তাদের বছরের পর বছর জেল হতে পারে।

এদিকে বৃহস্পতিবার ওভিডি-ইনফো জানিয়েছে, মস্কোর পুলিশ গত ২৪ ঘণ্টায় পাঁচজন সাংবাদিককে আটক করেছে। যাদের মধ্যে একজন বলেছেন, তাকে মারধরও করা হয়েছে।

এএফপি বলছে, রাশিয়ায় আটককৃত পাঁচজন সাংবাদিকের একজন হচ্ছেন আন্তোনিনা ফাভরস্কায়া। প্রয়াত বিরোধী রুশ রাজনীতিক আলেক্সি নাভালনির সমাধিতে ফুল দেওয়ার জন্য তিনি সম্প্রতি ১০ দিনের জন্য জেল খাটেন। বুধবার গভীর রাতে এই সোটাভিশন (SOTAvision) সাংবাদিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

সোটাভিশন জানিয়েছে, ফাভরস্কায়ার সহকর্মী আলেকজান্দ্রা আস্তাখোভা এবং আনাস্তাসিয়া মুসাতোভা আটক কেন্দ্রে তার সাথে দেখা করতে আসলে তাদেরও পুলিশ আটক করে।

এরপর বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশ সোটাভিশন থেকে সাংবাদিক একেতেরিনা অ্যানিকিয়েভিচ এবং রুসনিউজ থেকে কনস্ট্যান্টিন ঝারভকে গ্রেপ্তার করে। তারা ফাভরস্কায়ার বাড়ির কাছে চিত্রগ্রহণ করেছিলেন।

কনস্ট্যান্টিন ঝারভ বলেন, ‘তারা আমাকে লাথি মেরেছে, আমার মাথায় পা রেখেছে, আমার আঙ্গুলগুলোকে পেঁচিয়ে রেখেছিল এবং আমি যখন উঠার চেষ্টা করি তখন আমাকে উপহাসও করেছিল। পরে তারা আমার ব্যাগও দেখতে চেয়েছিল, যেন এতে বিস্ফোরক থাকতে পারে।’

এএফপি বলছে, ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করার পর থেকে দেশে পরিচালিত প্রায় সমস্ত স্বাধীন মিডিয়া সংস্থাকে নিষিদ্ধ না হয় অবরুদ্ধ বা সেন্সর করার চেষ্টা করেছে রাশিয়া। আর এই দমনপীড়নের পরিপ্রেক্ষিতে অনেক স্বাধীন সাংবাদিক রাশিয়া ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।

আর যারা এখনও দেশটিতে রয়ে গেছের তারা ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছেন।

এছাড়া মার্কিন সাংবাদিক ইভান গারশকোভিচ এবং আলসু কুরমাশেভা বর্তমানে বিচারের অপেক্ষায় রাশিয়ার কারাগারে রয়েছেন।

বাতিঘরের শ্যুটিংয়ে হিমাচলে শিরোনামহীন ব্যান্ড

ছবি: সংগৃহীত

ভক্ত-অনুরাগীদের জন্য নিজেদের ৮ম অষ্টম অ্যালবাম উন্মুক্ত করতে যাচ্ছে দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড শিরোনামহীন। 'বাতিঘর' নামের এ অ্যালবামে থাকবে ১০টি গান। মিউজিক ভিডিও আকারে আসবে গানগুলো। এরইমধ্যে অ্যালবামের গান বাতিঘরের টিজারও প্রকাশিত হয়েছে। বাকি গানগুলোর ভিডিওর শুটিং চলছে।

বাতিঘর ও 'এই অবেলায় ২' ছাড়াও এ অ্যালবামের উল্লেখযোগ্য দুটি গান 'জানে না কেউ' ও 'প্রিয়তমা'। গান দুটির শুটিং করতে ইতিমধ্যে ভারতে পৌঁছে গেছে শিরোনামহীন। তুষারাবৃত পর্বত প্রদেশ হিমাচলে চলছে শুটিং।

জানা গেছে, দুই গানের শুটিং করতে সেখানে ১২ দিন অবস্থান করবেন শিরোনামহীনের সদস্যরা। জানে না কেউ ও প্রিয়তমা গানে মডেল হিসেবে দেখা যাবে সিফাত আমিন ও জান্নাতুল বিস্মিকে। ঈদের পর প্রকাশ পাবে গান দুটি।

সর্বশেষ সংবাদ

যত জঙ্গি গ্রেপ্তার করেছি, একজনও মাদরাসার ছাত্র নন : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার বিরোধিতা করায় সাংবাদিকের কারাদণ্ড
বাতিঘরের শ্যুটিংয়ে হিমাচলে শিরোনামহীন ব্যান্ড
যৌনস্বাস্থ্য ভালো রাখতে প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় রাখুন এ সব
গাজায় নিহত আরও অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি
৮ এপ্রিলের ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু আজ
ডিজিটাল হুন্ডির মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা পাচার, গ্রেপ্তার ৫
দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু: বিশ্বব্যাংক
বরিশালে নামাজ চলাকালে মসজিদে এসি বিস্ফোরণ
নওগাঁয় পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
গুলি করে মারা হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেই সাপটিকে
দুঃসময় অতিক্রম করছি, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: মির্জা ফখরুল
মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় শিক্ষক কারাগারে
বাংলাদেশ থেকে আম-কাঁঠাল-আলু নিতে চায় চীন
ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় চার ইউনিটে প্রথম হলেন যারা
বাংলাদেশে আসছেন সংগীতশিল্পী আতিফ আসলাম
চট্টগ্রামে ফিশিং বোটে আগুন, দগ্ধ ৪
ঢাবি ভর্তি পরীক্ষার ৪ ইউনিটের ফল প্রকাশ, ৮৯ শতাংশই ফেল
ভারত থেকে ১ হাজার ৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে শুক্রবার!
৮ বছর পর বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা