শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ | ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান

সেইন্ট ব্রিউক

চল্লিশ বছর পার হয়ে গেছে। সেইন্ট ব্রিউক ট্রেনের করিডোরে দাঁড়িয়ে আছে একটা লোক। অননুমোদনের চাহনি নিয়ে সে বসন্ত বিকেলের ফ্যাকাশে আলোয় প্যারিস থেকে চ্যানেল পর্যন্ত বিস্তৃত সমতল আবদ্ধ পল্লী এলাকার গ্রাম-গঞ্জ আর কুৎসিত বাড়ি ঘরগুলোর পেছনের দিকে ধাবিত হওয়া দেখছে। তার দৃষ্টির সামনে দিয়ে পালাক্রমে পার হয়ে যাচ্ছে তৃণভূমি আর শত শত বছর ধরে প্রতি ইঞ্চি কর্ষিত হয়ে আসা আবাদী জমি। ছোট করে ছাঁটা চুলের খালি মাথা, লম্বা মুখাবয়বের কোমল চেহারার লোকটার নীল চোখের দৃষ্টি সোজা সাপটা।

মাঝারি উচ্চতার লোকটার বয়স চল্লিশ হলেও ওভারকোট পরিহিত অবস্থায় তাকে দেখাচ্ছে বেশ পাতলা ছিপছিপে। হাত দুটো রেলিঙের ওপর শক্ত করে ছড়িয়ে দিয়ে শরীরের ভর রেখেছে সে এক পাশের নিতম্বের ওপরে। গোটা কবন্ধ আয়েসী ভঙ্গিতে সোজা হয়ে অছে। চেহারায় ফুটে উঠেছে যোগ্যতা আর ওজস্বিতার ভাব। তারপর ট্রেনটা ধীর লয়ে আস্তে আস্তে একটা মলিন চেহারার স্টেশনে থামল। এক মুহূর্ত পরে অভিজাত চেহারার এক অল্প বয়সী মহিলা তার পাশের জানালার পাশ দিয়ে চলে গেল। তার স্যুটকেস এক হাত থেকে আরেক হাতে বদল করতে ওখানে হঠাৎ থেমে যায় মহিলা। ঠিক তখনই তার নজরে পড়ে লোকটা। মহিলার দিকে তাকিয়ে সে হাসে। মহিলাও না হেসে পারে না। লোকটা জানালা নামিয়ে দেয়। ততক্ষণে ট্রেন চলতে শুরু করেছে। লোকটা বলে ওঠে, খুব খারাপ। মহিলা তখনও তার দিকে তাকিয়ে হাসছে।

লোকটা তার তৃতীয় শ্রেণির কম্পার্টমেন্টে নিজের আসনে বসতে চলে যায়। ওখানে তার আসনটা জানালার পাশে। তার সামনের আসনে আরেকটা লোক, মাথায় গুচ্ছ গুচ্ছ লাগানো চুল। অবশ্য তার ফোলা ফোলা দাগভরা মুখে যতটা বোঝায় তার বয়স তত বেশি নয়। গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে লোকটা। চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে নিঃশ্বাস টানছে। মনে হয় হজমের জন্য তার শক্তি ক্ষয় করতে হয়। থেকে থেকে দ্রুততার চাহনিও ফেলছে লোকটা এই ভ্রমণকারীর ওপরে। একই আসনের করিডোরের পাশটাতে একজন কিষাণী মহিলা তার মতো মানূষের পক্ষে যতটা সম্ভব ভালো পোশাক পরার চেষ্টা করেছে বলে মনে হয়–মোমের তৈরি একগুচ্ছ আঙুর খচিত একটা অদ্ভূত হ্যাট তার মাথায়। পাশে বসা মলিন আর ফ্যাকাশে মুখের একটা বাচ্চা ছেলের নাক মোছাতে ব্যস্ত সে। ভ্রমণকারীর হাসি মিলিয়ে যায়। পকেট থেকে একটা ম্যাগাজিন বের করে পড়া শুরু করে সে। ম্যাগাজিনের লেখাটা পড়তে পড়তে তার হাই উঠছে বার বার।

একটু পরে ট্রেনটা থামল। সেইন্ট ব্রিউক লেখা একটা প্ল্যাকার্ড জানালা পথে চলে এল। সে উঠে পড়ে কোনো রকমের তাড়াহুড়া না করে মাথার ওপরের র‌্যাক থেকে পেটমোটা স্যুটকেসটা তুলে নিল। পাশের যাত্রীদের উদ্দেশে মাথা ঝাঁকি দিয়ে দ্রুত তিন ধাপ নেমে গাড়ির বাইরে চলে এল। বের হওয়ার সময় তার সহযাত্রীরা বিস্ময়ের সঙ্গে হলেও তার মাথা ঝাঁকানির জবাব দিয়েছে একই কায়দায়। প্ল্যাটফর্মে নেমে বাম দিকে তাকিয়ে দেখে একটু আগে যে রেলিংটা ধরেছিল সেখানে কালিঝুলির ময়লা। একটা রুমাল বের করে সযত্নে ময়লা মুছে ফেলল সে। তারপর প্রস্থান পথের দিকে এগিয়ে গেল সে। যেতে যেতে দেখতে পেল, তার মতোই আরো যারা এগিয়ে যাচ্ছে তাদের বেশির ভাগেরই মুখে দাগদাগালি আর পরনে ভাবগম্ভীর পোশাক-আশাক। লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট দেখানোর জন্য নিজের সময় আসা পর্যন্ত চুপচাপ অপেক্ষা করতে লাগল সে। একজন অতি বাকবিমুখ কেরানি টিকেট দেখে ফেরত দিলে সে ওয়েটিং রুম পার হয়ে যাওয়ার সময় দেখতে পেল রুমটার দেয়াল পুরোপুরি নোংরা; এমন কি দেয়ালের একমাত্র পোস্টারে ভূমধ্যসাগরীয় সৈকতের চিত্রও কালিঝুলিতে মাখামাখি। বিকেলের তীর্যক আলোর মধ্য দিয়ে লম্বা লম্বা পা ফেলে সে শহর অভিমুখি রাস্তায় নামল।

হোটেলে গিয়ে আগে থেকে রিজার্ভ করে রাখা রুমের কথা জিজ্ঞেস করতেই পেয়ে গেল। গোল আলু মার্কা মুখের পরিচারিকা তার ব্যাগটা রুম পর্যন্ত পৌঁছে দিতে চাইলে সে রাজি হলো না। বরং রুম দেখিয়ে দেওয়ার জন্য সে পরিচারিকাকে বকশিশ দিল। মহিলার বিস্ময়বোধ হতে লাগল এবং তার চেহারাজুড়ে বন্ধুত্বসুলভ ভাব ফুটে উঠল। আবার হাত ধুয়ে দরজা তালাবদ্ধ না করেই সে নিচে নেমে এল। লবিতে পরিচারিকার সঙ্গে দেখা হলে কবরস্থানের কথা জিজ্ঞেস করল সে। মহিলা অনেক ব্যাখ্যাসহ বিস্তারিত করে সবকিছু বুঝিয়ে বলল তাকে। সেও মনোযোগী শ্রোতা হয়ে শুনল। তরপর পা বাড়াল মহিলার নির্দেশনা অনুযায়ী।

এখন সে রাস্তায় নেমে পড়েছে। রাস্তা খুব চাপা; দুপাশে অতিসাধারণ বাড়িঘর কুৎসিত লাল টালির তৈরি। এখানে সেখানে চোখে পড়ছে পুরনো দিনের কাঠের অযত্নে তৈরি পড়ে থাকা ভাঙা ফলক। দোকানগুলোর খোলা জানালায় দেখা যাচ্ছে কাচ, প্লাস্টিক এবং নাইলনের তৈরি সব জিনিসপত্র এবং পশ্চিমের যে কোনো শহরে পাওয়া যায় এমন সব সিরামিকের তৈরি জিনিসপত্র। তবে পথচারীরা কেউ থামছেই না দোকানগুলোর সামনে। খাবারের দোকানগুলোতে শুধু প্রাচুর্যের লক্ষণ চোখে পড়ছে। কবরস্থানের চারপাশ উঁচু দেয়াল ঘেরা। মূল ফটকের সামনে ফুল আর মর্মর পাথর কাটার দোকান খুলে আছে। দোকানগুলোর একটার সামনে সে দাঁড়ায়। একটা ফুটফুটে বাচ্চা ছেলে সেখানে এক কোণে মর্মর পাথরের একটা বড় খণ্ডের ওপর বসে বাড়ির কাজ করছে। পাথর খণ্ডতে এখনো কিছু খোদাই করা হয়নি। কবরস্থানের ভেতর ঢুকে সে তত্ত্বাবধায়কের ঘরের দিকে গেল। লোকটা সেখানে নেই। অতি সাধারণভাবে সাজানো অফিস রুমটাতে সে অপেক্ষা করতে থাকে। দেয়ালে একটা মানচিত্রের দিকে গভীর মনোযোগের সঙ্গে তাকিয়ে ছিল সে। ঠিক তখনই লোকটা ঢুকল। চেহারায় লম্বা লোকটার শরীর প্যাঁচানো গ্রন্থিযুক্ত, নাক লম্বা। লোকটার উঁচু কলারঅলা জ্যাকেটের ভেতর থেকে ঘামের গন্ধ ভেসে আসছে। ১৯১৪ সালের যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের কবরের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চায় সে।

তত্ত্বাবধায়ক বলল, হ্যাঁ, আছে। তাদের কবরস্থানকে বলা হয় ‘ফরাসি স্মৃতির স্থান’। আপনি কী নাম খুঁজছেন?

–হেনরি করমারি।

তত্ত্বাবধায়ক একটা বাঁধাই খাতা বের করল। নামের একটা তালিকা বরাবর তার নোংরা আঙুল চালাতে লাগল। তার আঙুল একটা নামে এসে থেমে গেল। সে বলল, করমারি হেনরি, মার্নের যুদ্ধক্ষেত্রে আশঙ্কাজনকভাবে আহত হয়েছিলেন, ১৯১৪ সালের ১১ অক্টোবর, সেইন্ট ব্রিউকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

–হ্যাঁ, এই নামই।

খাতাটা বন্ধ করে তত্ত্বাবধায়ক বলল, আসুন। কবর ফলকের প্রথম সারির দিকে পথ দেখিয়ে নিয়ে গেল সে। কয়েকটা সাধারণ; বাকিগুলোর অবস্থা ভগ্ন, কুৎসিত। সবগুলোকে আচ্ছাদন করে রাখা হয়েছে এমন সব মূল্যহীন আবরণে যাতে পৃথিবীর যে কোনো জায়গাকেই সম্মানে না তুলে বরং নিচের দিকে নামিয়ে আনতে পারে।

তত্ত্বাবধায়ক জিজ্ঞেস করল, তিনি কি আপনার আত্মীয় হতেন?

তিনি আমার বাবা।

তাহলে তো খুব কষ্টের কথা।

–না, তেমন নয়। তিনি যখন মারা যান আমার বয়স এক বছরেরও কম। বুঝতেই পারছেন বোধশক্তিই তখন হয়নি আমার।

–তবু কষ্টেরই কথা। কত মানুষ মারা গেছেন।

জ্যাক করমারি কিছুই বলল না। অবশ্যই যারা মারা গেছেন তাদের সংখ্যা বিরাট। তবে মনের মধ্যে বাবার প্রতি সন্তানের যে টান সেটা ফিরিয়ে আনতে পারছে না সে। এতদিন সে ফ্রান্সে ছিল: তার মা অনেক দিন ধরে যে কাজটা করার কথা তাকে বলে আসছেন সেটা করার ব্যাপারে নিজের কাছেই সে বহুবার প্রতিজ্ঞা করেছে। মা আলজেরিয়ায় থাকেন। এত বছর ধরে তিনি জ্যাকের বাবার কবর দেখে আসতে বলেছেন। মা নিজেও দেখতে পারেননি। তার মনে হলো এই কবর দেখতে আসার কোনো মানে হয় না। প্রথমত তার নিজের কথা বলতে গেলে–সে তো বাবাকে কখনও দেখেনি; বাবা দেখতে কেমন ছিলেন সে সম্পর্কে তার কোনোরকম ধারণাই নেই। আর পুরনো দিনের এসব অচল আবেগী ব্যাপার-স্যাপারও তার পছন্দ নয়। আর মায়ের কথা বলতে গেলে–মা তো বাবা সম্পর্কে তেমন কিছু বলেননি, বাবার কী দেখতে যেতে হবে। তার চেহারার কোনো ধারণা নেই। তবে যেহেতু তার পুরনো পরামর্শদাতা সেইন্ট ব্রিউকে অবসর গ্রহণ করেছেন, তাকেও দেখে আসা যেতে পারে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে। একই সঙ্গে তার মৃত অদেখাজনকেও দেখে আসতে পারে। বৃদ্ধ বন্ধুকে দেখতে যাওয়ার আগেই বাবার কবরস্থানে এসেছে যাতে মনের ভেতরে হালকা বোধ হতে পারে।

–এই যে এইটা, তত্ত্বাবধায়ক বলল। তারা একটা উঁচু করে বাঁধানো জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে। ধূসর রঙের ছোট ছোট পাথর দিয়ে জায়গাটা ঘিরে রাখা হয়েছে। পাথরগুলোর সঙ্গে যোগ করা হয়েছে কালো রং করা একটা ভারী শিকল। কবর ফলকগুলো সংখ্যায় অনেক, দেখতে একই রকম; সারি সারি সাধারণ চেহারার নাম খচিত চার কোণাকার ফলক। প্রত্যেকটা কবর একগুচ্ছ করে তাজা ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক বলল, বিগত চল্লিশ বছর ধরে এই কবরগুলো এভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এই যে, দেখুন আপনার বাবার কবর, লোকটা প্রথম সারির একটা কবর দেখিয়ে দিল। কবর থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে পড়ল জ্যাক করমারি। তত্ত্বাবধায়ক বলল, আপনি দেখুন, আমি কাজে ফিরে যাচ্ছি।

জ্যাক কবর ফলকটার দিকে ফাঁকা দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। হ্যাঁ, এটাই তার বাবার নাম। উপরের দিকে চোখ মেলে জ্যাক দেখল, ছোট ছোট সাদা আর ধূসর মেঘ ভেসে যাচ্ছে আকাশময়। আকাশ যেন কিছুটা বেশি ফ্যাকাশে। আকাশ থেকে একবার উজ্জ্বল আরেকবার ছায়াচ্ছন্ন আলো পতিত হচ্ছে। তার চারপাশে মৃতদের জগতে শুধুই নীরবতা বিরাজ করছে। উঁচু দেয়াল পার হয়ে দূরের শহর থেকে মৃদু কোলাহল ভেসে আসছে; এছাড়া আর কোনো সাড়াশব্দ নেই কোথাও। দূর প্রান্তের কবরগুলোর ওপরে মনে হয় ছায়া ছায়া কী যেন থেকে থেকে ভেসে বেড়াচ্ছে। ভেজা ফুলগুলোর গন্ধের বাইরে ওপরের দিকে তাকিয়ে জ্যাক করমারি বাইরের কিছু একটা ধরতে চাইছে কল্পনায়: দূরের নিশ্চল সমুদ্র থেকে লবণাক্ত একটা সুগন্ধ ভেসে আসছে।

ঠিক তখনই পাশের একটা কবর ফলকের সঙ্গে একটা বালতির ঠোকা লাগার শব্দে তার ধ্যানমগ্নতা কেটে যায়। তখন তার বাবার কবর ফলকের ওপর লেখা বাবার জন্ম-মৃত্যুর বছর দেখতে পায়। এতদিন সে জানতেই পারেনি এই তথ্যটা ১৮৮৫–১৯১৪ সালের। সঙ্গে সঙ্গে পাটীগণিতের হিসাব তার পরিষ্কার হয়ে যায়: মৃত্যুর সময় বাবার বয়স হয়েছিল উনত্রিশ বছর। হঠাৎ একটা বিষয় বুঝতে পেরে তার শরীর পর্যন্ত কেঁপে উঠে: তার নিজের বয়স এখন চল্লিশ বছর; কবরে শুয়ে থাকা মানুষটা, তার বাবা, বয়সে তার চেয়ে ছোট।

(চলবে)

এসএ/

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

Header Ad

সদস্যপদ ফিরে পেলেন জায়েদ খান, বাতিল হতে পারে নিপুণের

জায়েদ খান-নিপুণ। ছবি: সংগৃহীত

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্যপদ ফিরে পেয়েছেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান। কার্যকরী সভা শেষে এমনটাই জানিয়েছেন সমিতির সহ-সভাপতি ডি এ তায়েব।

সম্প্রতি এক সাংবাদিক সম্মেলনে কমিটির সহ-সভাপতি ডিএ তায়েব এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, “জায়েদ খান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, তার যথাযথ কারণ তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সহ-সভাপতি ডি এ তায়েব। ছবি: সংগৃহীত

এদিকে কমিটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন পরাজিত সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নাসরিন আক্তার নিপুণ। রিটে তাদের নেতৃত্বাধীন কমিটির দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞাও চাওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, লন্ডন থেকে এক সাক্ষাৎকারে ডিপজলকে ‘অশিক্ষিত’ বলে মন্তব্য করেছেন সাধারণ সম্পাদক পদে হেরে যাওয়া নিপুণ আক্তার।

অভিনেত্রী বলেন, স্যরি টু সে, আমাকে বলতে হচ্ছে- শিল্পী সমিতিতে এমন একজন সেক্রেটারি পদে এসেছেন যার কোনো শিক্ষা নেই। এটা ২০২৪ সাল। আমরা ২০২৪ সালে দাঁড়িয়ে আছি। এটা অশিক্ষিত লোকদের জায়গা না, এটা আনকালচারদের জায়গা না। এটা কাজ করে দেখিয়ে দেওয়া লোকদের জায়গা।

এরপর নিপুণ বলেন, শুধু কাজ করলেই হবে না। জ্ঞান থাকতে হবে, শিক্ষিত হতে হবে। আমি একজন গ্রাজুয়েট। আমার তিন প্রজন্ম গ্রাজুয়েট।

সাংবাদিক সম্মেলনে নিপুণের এমন মন্তব্যের ব্যাপারে কমিটির সহসভাপতি ডি এ তায়েব বলেন, নিপুণের এমন মন্তব্য সত্যিই হতাশাজনক। তিনি শুধু ডিপজলকেই ছোট করেননি বরং সমগ্র চলচ্চিত্র শিল্পীদের হেয় করেছেন। আমরা তার এমন মন্তব্যের জন্য একটি নোটিশ দেবো। যথাযথ উত্তর না পেলে তার সদস্যপদ বাতিল করা হবে।

অস্থির ডিমের বাজার, প্রতি ডজনে বেড়েছে ৩০ টাকা

ছবি: সংগৃহীত

গত কয়েক মাস পর্যন্ত ডিমের বাজারে কিছুটা স্বস্তি থাকলেও দুই সপ্তাহ থেকে আবারও ঊর্ধ্বমুখী ডিমের দাম। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনে বেড়েছে ৩০ টাকা। মুরগীর দামও বাড়তি।

মাত্র দুই সপ্তাহ আগের ১২০ টাকা ডজনের ডিম এখন কিনতে হচ্ছে ১৫০ টাকায়। এতে বিপাকে পড়েছেন ভোক্তারা। কারণ, ডিমই হলো তুলনামূলক কম দামে প্রোটিন পাওয়ার সবচেয়ে ভালো উৎস।

শুক্রবার (১৭ মে) রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। যা মাসখানেক আগেও ৩৮ থেকে ৪০ টাকা হালিতে বিক্রি হয়েছে। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশও (টিসিবি) তাদের বাজারদরের প্রতিবেদনে ডিমের দাম বাড়ার বিষয়টি তুলে ধরেছে।

ডিম ব্যবসায়ীরা বলেছেন, গত কিছু দিনে সারাদেশে তীব্র দাবদাহের কারণে খামারে অনেক মুরগি মরে গেছে। এতে ডিমের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে।

তারা আরও জানান, এক মাস আগে রমজানের সময় ডিমের চাহিদা কমে গিয়েছিল। ফলে তখন দাম কমেছিল। কিন্তু এখন ডিমের চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি ডিমের উত্পাদন কমেছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ডিমের দামের উপর। তবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ডিমের উত্পাদন খরচ হিসেব করে বলছে, একটি ডিমের দাম সর্বোচ্চ ১০ টাকা ৪৯ পয়সা হতে পারে। গত ১৫ মার্চ কৃষি বিপণন অধিদপ্তর যে ২৯টি পণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছিল, তাতে একটি ডিমের খুচরা দাম নির্ধারণ করা হয় ১০ টাকা ৪৯ পয়সা।

এদিকে স্বস্তি নেই মুরগির বাজারেও। ব্রয়লারের কেজি ২২০ টাকা আর সোনালী বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব খন্দকার মো. মোহসিন বলেন, গরমের কারণে ডিমের উত্পাদন ব্যাহত হচ্ছে। যার প্রভাব পড়েছে ডিমের দামের ওপর। রমজানের সময় ডিমের চাহিদা কম থাকায় দাম কমে আসে। কিন্তু এখন বাজারে সবজি ও মাছের দাম বাড়ায় ভোক্তারা ডিমের প্রতি বেশি ঝুঁকেছে। ডিমের দাম বাড়ার এটিও একটি কারণ বলে তিনি মনে করেন।

প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, কিছুদিন আগে ডিমের দাম কম ছিল। তখন এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী কোল্ড স্টোরেজে ডিম সংরক্ষণ করেছে। এখন সেই ডিম তারা বেশি দামে বিক্রি করছে। এ কারণে ডিমের দাম বেড়েছে। তবে ডিমের বাড়তি এই দর এখন খামারিরা পাচ্ছেন বলে তিনি জানান।

মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ গেল কলেজছাত্রের

নিহত কলেজছাত্র মেহেদী হাসান মিশু। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে ট্রাকের ধাক্কায় মেহেদী হাসান মিশু (১৮) নামে এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছেন। শনিবার (১৮ মে) ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

শুক্রবার (১৮ মে) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কষ্টাপাড়া নামক এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন মিশু।

নিহত মেহেদী হাসান মিশু উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কয়েড়া গ্রামের স্কুলশিক্ষক রফিকুল ইসলাম মোল্লার ছেলে। গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কয়েড়া ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রুবেল সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, মেহেদী হাসান শুক্রবার রাতে মোটরসাইকেলযোগে গোবিন্দাসী এলাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে কষ্টাপাড়া এলাকায় পৌঁছালে পেছন দিক থেকে একটি ট্রাক মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে যায় মেহেদী।

এরপর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। পরে তার অবস্থার আরও অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। সে ঘাটাইল ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্র।

ইউপি সদস্য মো. রুবেল সরকার বলেন, গত শুক্রবার রাতে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আজ শনিবার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। বাদ আসর নামাজের পর জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন করা হবে।

এ ঘটনায় ভূঞাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ্ বলেন, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর খবর জানা নেই। কেউ অভিযোগও করেনি।

সর্বশেষ সংবাদ

সদস্যপদ ফিরে পেলেন জায়েদ খান, বাতিল হতে পারে নিপুণের
অস্থির ডিমের বাজার, প্রতি ডজনে বেড়েছে ৩০ টাকা
মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ গেল কলেজছাত্রের
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবল ঝড়ের আঘাতে ৭ জনের মৃত্যু
জিয়াউর রহমান বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন: ওবায়দুল কাদের
মা হারালেন সংগীতশিল্পী মোনালি ঠাকুর
মালয়েশিয়ায় ২ লাখ টাকায় বিক্রি হওয়ার অভিজ্ঞতা জানালেন বাংলাদেশি শ্রমিক
মসজিদে ভোজের আয়োজন করলেন ডিআইজি বাতেন, ইসিতে অভিযোগ
ধোলাইখালে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের আগুন নিয়ন্ত্রণে
টাঙ্গাইলে ধান কাটতে এসে বজ্রপাতে প্রাণ হারালেন দুই ভাই
মেসি-বার্সা চুক্তির সেই ন্যাপকিন বিক্রি হলো ১১ কোটি টাকায়
এবার রাজধানীর ধোলাইখালে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে আগুন
কারওয়ান বাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে
গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি-বাতাসে রাজধানীতে স্বস্তি
সাতক্ষীরায় ট্রাক উল্টে প্রাণ গেল দুই শ্রমিকের, আহত ১১
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট
ভাঙা হাত নিয়েই ‘কান চলচ্চিত্র উৎসব’ মাতালেন ঐশ্বরিয়া
ঢাকাসহ ৬ বিভাগে ঝড়-শিলাবৃষ্টির আভাস, কমবে তাপপ্রবাহ
আচরণবিধি লঙ্ঘন: আ.লীগ নেতাকে জরিমানা, ৭ ডেগ খিচুড়ি জব্দ
সৌদিতে চলতি বছরে প্রথম বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু