মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫ | ১৭ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান

ততক্ষণে আরব গাড়োয়ান আগুনটা জ্বালিয়ে দিয়েছে। আঙুর গাছের শুকনো লতাপাতা দিয়ে আগুন আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে সে। পেটের উপর হাত দিয়ে লুসি টেবিলটার কাছে দাঁড়িয়ে। লণ্ঠনের দিকে ফেরানো তার সুন্দর মুখখানার এপাশ থেকে ওপাশে ছড়িয়ে পড়ছে ব্যথার ঢেউ। রুমের স্যাঁতস্যাঁতে আবহ কিংবা দারিদ্র আর অবহেলার গন্ধ–কোনোটাই তার নজরে পড়েনি বলেই মনে হয়। তার স্বামী উপরের তলার রুমগুলোতে ব্যস্ত। সিঁড়ির মাথায় এসে আরব গাড়োয়নকে জিজ্ঞেস করে, শোবার রুমে বোধ হয় উনান নেই, না?

–না, অন্য রুমেও নেই।

এদিকে এসো, বলে ডাক দেয় হেনরি। গাড়োয়ান তাকে অনুসরণ করে এবং একটু পরে পেছন ফিরে হাঁটতে হাঁটতে নেমে আসে। তার হাতে ধরা একটা জাজিমের এক প্রান্ত। অন্য প্রান্ত ধরে এগিয়ে আসতে থাকে হেনরি। জাজিমটাকে তারা উনানের পাশে রাখে। হেনরি টেবিলটাকে এক কোণায় রাখে। আর গাড়োয়ান ততক্ষণে ওপরের তলা থেকে একটা কোলবালিশ আর কয়েকটা কম্বল নিয়ে ফিরে আসে। স্ত্রীর হাত ধরে জাজিমের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে যেতে হেনরি বলে, এখানে শুয়ে পড়ো।

স্ত্রী ইতস্তত করে। এবার জাজিমের ভেতর থেকে ভেজা চুলের গন্ধ তাদের নাকে আসে। যেন এই প্রথম রুমের দিকে চোখ বুলাচ্ছে এমন ভয়ার্ত দৃষ্টিতে চারপাশে তাকিয়ে স্ত্রী বলে, আমি এখানে কাপড় খুলতে পারব না।

লোকটা স্ত্রীকে বলে নিচে যেটা পরেছ খুলে ফেলো। একই কথা পুনরায় বলে, অন্তর্বাস খুলে ফেলো। তারপর গাড়োয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে, ধন্যবাদ। একটা ঘোড়া গাড়ির জোত থেকে খুলে দাও। ঘোড়ায় চড়ে আমি গ্রামের দিকে যাব। গাড়োয়ান বের হয়ে যায়। স্ত্রী তার দিকে পেছন ফিরে প্রস্তুত হয়ে নেয়। সেও স্ত্রীর উল্টো দিকে মুখ করে দাঁড়ায়। স্ত্রী বিছানার ওপর হাত পা ছড়িয়ে শুয়ে পড়ে গায়ের ওপর একটা কাপড় টেনে দিয়ে সজোরে একবার চিৎকার ছুড়ে দেয়। ব্যথা বেদনার কারণে তার দেহের মধ্যে যতখানি চিৎকার জমা হয়েছিল তার থেকে মুক্তি পেতে সব যেন একবারে বের করে দিতে চায়। জাজিমের পাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে হেনরি স্ত্রীকে যেন চিৎকার বের করে দিতে সুযোগ দেয়। স্ত্রী চুপ হয়ে গেলে মাথা থেকে হ্যাটটা খুলে এক হাঁটু মেঝেতে মুড়ে স্ত্রীর বুঁজে থাকা চোখের ওপরের সুন্দর ললাটে চুমু দেয়। হ্যাটটা পুনরায় মাথায় দিয়ে বৃষ্টির ভেতর বের হয়ে যায় সে। গাড়ি থেকে ছাড়ানো ঘোড়াটা মুখ ঘুরিয়ে দাঁড়িয়ে আছে; সামনের দুপায়ের খুর রাস্তার ওপর যেন গেঁথে আছে। গাড়োয়ান বলে, আমি গদি নিয়ে আসি।

–না, গদি লাগবে না, লাগামসহ ছেড়ে দাও। ওভাবেই আমি চালিয়ে নিয়ে যাবো। বাক্স-পেটরাসহ আর যা যা আছে ভেতরে নিয়ে রান্নাঘরে রেখে দাও। তোমার স্ত্রী আছে কি?

–না, মারা গেছে; বয়স হয়েছিল।

–মেয়ে আছে?

–না, মেয়ে নেই। তবে খোদাকে ধন্যবাদ–আমার ছেলের বউ আছে।

–তাকে আসতে বলা যায় না?

–হ্যাঁ বলছি। আপনি সহিসালামতে যান। হেনরি আরব গাড়োয়ানকে সুন্দর বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে ভেজা গোঁফের আড়ালে তার দিকে তাকিয়ে হাসতে দেখে। সে নিজে হাসছে না। তবে সোজা দৃষ্টিতে লোকটাকে হাসতে দেখে। তারপর তার দিকে হাত বাড়িয়ে দিলে গাড়োয়ান আরবী কেতায় তার আঙুলের অগ্রভাগ ধরে নিজের ঠোটের কাছে তুলে নেয়। পায়ের তলার কয়লার কুচি কচমচ করে হেনরি লম্বা কদমে ঘোড়ার দিকে এগিয়ে যায়; দুপা ছড়িয়ে গদি ছাড়া ঘোড়ার পিঠে উঠে দুলকি চালে চলতে শুরু করে সে।

কিছুদূর এগিয়ে গেলেই রাস্তার মোড়ে পৌঁছে যায়: ওখান থেকে আসার সময় গ্রামের দিকে আলো দেখতে পেয়েছিল। বৃষ্টি থেমে গেছে; আলোগুলো এখন চোখ ধাঁধানো ঔজ্জ্বল্যে ফুটে উঠেছে। সে দেখতে পায়, ডানে আঙুর ক্ষেতের মাঝখান দিয়ে রাস্তাটা গ্রামের দিকে চলে গেছে। আঙুর ক্ষেতের ভেতরে এখানে সেখানে আঙুরের মাচা চকচক করছে। অর্ধেক পথ পাড়ি দিয়ে ঘোড়াটা হাঁটার মতো ধীর গতিতে চলতে থাকে। সে একটা আয়তাকার কুঁড়েঘরের সামনে চলে আসে। ঘরটার এক অংশে একটা রুম সুরকির তৈরি। আরেকটা বড় অংশ কাঠের তক্তার তৈরি। ক্যান্টিনের মতো একটা অংশ বের হয়ে এসেছে বড় অংশটা থেকে। তার ওপরে একটা বড় মাদুর ঝুলিয়ে দেওয়া আছে। সুরকির তৈরি রুমের ভেতরের দিকের দরজায় লেখা আছে: ম্যাম জ্যাকস ফার্ম ক্যান্টিন। দরজার নিচ থেকে আলো চুইয়ে পড়ছে। দরজার একদম কাছে পৌঁছে ঘোড়া থেকে না নেমেই কড়া নাড়ে সে। সঙ্গে সঙ্গে দৃঢ় অনুনাদী কণ্ঠ ভেসে আসে ভেতর থেকে, কী চাই?

–আমি সেন্ট আপোত্রে প্রপার্টির নতুন ম্যানেজার। আমার স্ত্রীর প্রসব ব্যথা উঠেছে। সাহায্য দরকার।

ভেতর থেকে কেউ উত্তর দেয় না। হুড়কো খুলে যায়, অর্গল তুলে ফেলা হয় এবং দরজাটা অর্ধেক খুলে যায়। মাথাভর্তি কালো কোঁকড়ানো চুল, মাংসল গণ্ডদেশ আর পুরু ঠোটের ওপরে মোটা নাকের একজন ইউরোপীয় মহিলার চেহারা সামনে পরিষ্কার হয়ে ওঠে। সে বলে ওঠে, আমি হেনরি করমারি। আপনি কি আমার স্ত্রীর পাশে থাকতে পারবেন? আমি ডাক্তার আনতে যাচ্ছি।

মানুষ আর দুর্ভাগ্য মাপতে অভ্যস্ত দৃষ্টি নিয়ে মহিলা তার দিকে তাকায়। আর কিছু না বলে সেও মহিলার দিকে কিছুটা সমান্তরালে তাকিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য আর কিছু বলে না। মহিলা বলে, আমি যাচ্ছি। আপনি তাড়াতাড়ি যান।

মহিলাকে ধন্যবাদ দিয়ে সে ঘোড়াকে পা দিয়ে নাড়া দিল এগিয়ে চলার ইঙ্গিত করে। কেল্লা জাতীয় দুটো শুকনো মাটির দেয়াল বরাবর এগিয়ে গিয়ে কয়েক মুহূর্ত পরেই গ্রামে প্রবেশ করল সে। সামনে একমাত্র রাস্তা; তার দুপাশে একই রকমের সব একতলা বাড়ি। রাস্তা ধরে এগিয়ে গিয়ে দেখতে পেল বাধানো একটা ছোট উন্মুক্ত জায়গা। বিস্ময়ের সঙ্গে দেখতে পেল ওখানে ধাতব অবয়বের একটা বাদনমঞ্চ। রাস্তার মতোই উন্মুক্ত জায়গাটাতেও কোনো জনমানব নেই। আরেকটু এগিয়ে গিয়ে ঘোড়াটা থেমে গেলে বুঝতে পারল সামনে একটা বাড়ি। গুরুগম্ভ^ীর রঙের বুনুস পরিহিত একজন আরব অন্ধকার থেকে বের হয়ে তার দিকে এগিয়ে এল। তাকে ভালো করে দেখার পর করমারি বলল, ডাক্তারের বাড়ি খুঁজছি। তাকে ভালো করে নিরীক্ষণ করে লোকটা বলল, আসুন। দুজনে আবার রাস্তায় চলে এল। রাস্তা থেকে উঁচুতে অবস্থিত একটা পাকা বাড়ির নিচতলায় সাদা রং করা সিঁড়ির কাছে লেখা দেখতে পেল, ‘লিবার্টে এগালিটে ফ্রেটার্নিটে’। এর পরই দেখা গেল একটা বাগান; বাগানের চার ধার কোনো রকমে দেয়াল ঘেরা। বাগানের একেবারে শেষ মাথায় একটা ঘর। আরব লোকটা আঙুল তুলে ওই ঘরটা দেখিয়ে বলল, ওইটা। ঘোড়া থেকে লাফ দিয়ে নেমে পড়ল করমারি। অক্লান্ত পদক্ষেপে সে বাগানটা পার হয়ে গেল। বাগানের ঠিক মাঝখানে শুকিয়ে যাওয়া পাতা আর পচে যাওয়া কাণ্ডের একটা বেঁটে তালগাছ। সে দরজায় টোকা দিল। কিন্তু কেউ সাড়া দিল না। কয়েক পা পিছিয়ে এসে পেছনে দেখতে পেল, আরব লোকটা নীরবে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে। করমারি আবার টোকা দিল। এবার পায়ের আওয়াজ পাওয়া গেল। তবে দরজা পর্যন্ত এসে থেমে গেল সে আওয়াজ। দরজাও খুলল না। আরেকবার টোকা দিয়ে সে বলল, আমি ডাক্তার সাহেবের খোঁজে এসেছি।

তখনই হুড়কো খোলার শব্দ হলো এবং দরজা খুলে গেল। একজন লোক বেরিয়ে এলেন। গোলগাল মুখের চেহারায় অল্প বয়সী মনে হলো তবে চুলগুলো প্রায় সাদা। লম্বা লোকটার শরীর বেশ পেটা। পাদুটো ঢেকে আছে তার চাপা চোঙা জাতীয় পাজামায়। গায়ে একটা শিকারে বের হওয়ার জ্যাকেট। মুখের ওপর হালকা হাসি ছড়িয়ে তিনি জানতে চাইলেন, আপনি কোথা থেকে এসেছেন? এদিকে আপনাকে আগে দেখেছি বলে মনে হয় না। করমারি তার পরিচয় এবং আগমন সম্পর্কে খুলে বললে তিনি বললেন, ও আচ্ছা, মেয়র সাহেব বলেছিলেন আপনার কথা। তবে জানেন কি, এদিকটা বাচ্চা জন্মদানের জন্য বড় অনুপযোগী জায়গা। করমারি বলল, বাচ্চার জন্ম হওয়ার কথা ছিল আরো পরে। কোথাও কোনো গোলমাল হয়ে গেছে। তখন তিনি বললেন, ঠিক আছে, ওরকম সবারই হতে পারে। আপনি এগোন; আমি ম্যাটাডরকে জিন পরিয়ে আসছি।

বৃষ্টি আবার শুরু হয়েছে। পেছন পথের মাঝামাঝি এসে ডাক্তার তার ধূসর রঙের চিত্রঘোটকে উঠলেন। করমারি তার বিশাল খামারী ঘোড়ায় সোজা টান টান হয়ে চলেছে। ডাক্তার তার সমান্তরালে চলে এসে বলে উঠলেন, এখানে এসে পৌঁছনো কঠিন। তবে মশা আর ঝোপঝাড়ের আড়ালের ডাকাতের কথা বিবেচনায় না আনলে দেখবেন এখানে অনেক ভালো কিছুও আছে। মশাদের কথা বলতে গেলে, বসন্ত না আসা পর্যন্ত মশা নিয়ে আপনাকে মাথা ঘামাতে হবে না। আর ডাকাতের কথা.... বলেই তিনি হাসতে লাগলেন। তবে করমারি কোনো কথা না বলেই সঙ্গীর সমান্তরালে চলতে লাগল। তার দিকে নিবিড় দৃষ্টিতে তাকিয়ে ডাক্তার আবার বললেন, ভয় করবেন না। সবকিছু ঠিকমতোই চলবে।

করমারি তার দিকে গাঢ়, উষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, আমি ভয় পাচ্ছি না। আঘাত সহ্য করার অভিজ্ঞতা আছে।

–এটাই কি আপনাদের প্রথম সন্তান?

–না, চার বছর বয়সী আরেকটা ছেলে আছে। আলজিয়ার্সে আমার শাশুড়ির কাছে রেখে এসেছি।

রাস্তার মোড়ে এসে তারা ওই বাড়িটার দিকের পথ ধরল। আবারো রাস্তার কয়লার কুচিগুলো ঘোড়া দুটোর খুরের আঘাতে ছিটে ছিটে উঠছে। ঘোড়া দুটো থেমে গেলে আবারো নীরবতা নেমে এল। ঠিক তখনই বাড়ির ভেতর থেকে সজোর একটা চিৎকার ভেসে এল। করমারি এবং ডাক্তার ঘোড়া থেকে নেমে পড়েন।

বৃষ্টির পানি টপটপ করে চুইয়ে পড়ছে একটা লতানো গাছ থেকে। তার নিচে দাঁড়িয়ে দেখা গেল একটা ছায়া শরীর তাদের জন্য অপেক্ষমাণ। আরো কাছে এসে তারা আরব গাড়োয়ানকে চিনতে পারল। তার মাথার ওপরে বস্তা কেটে তৈরি একটা আচ্ছাদন। ডাক্তার বলে উঠলেন, স্বাগতম, কাদদুর। বাড়ির ভেতরের খবর কী?

–ভেতরের খবর ঠিক জানি না। ভেতরে মহিলারা থাকলে সাধারণত ঢুকি না।

ডাক্তার মন্তব্য করলেন, উত্তম নিয়ম, বিশেষ করে মহিলারা যখন চিৎকার করে কাঁদছে।

তবে আর কোনো চিৎকার বা কান্নাকাটির শব্দ শোনা যাচ্ছে না। ডাক্তার ভেতরে ঢুকলেন। তার পেছনে করমারি।

তাদের সামনে উনানে আঙুর গাছের শুকনো লতার আগুন ছাদের মাঝখান থেকে ঝুলানো কেরোসিন লণ্ঠনের চেয়ে বেশি আলো দিচ্ছে। ডান দিকের সিঙ্ক তোয়ালে আর ধাতব বাসন কোসনে ভরা। মাঝখানের টেবিলটা সরিয়ে বামদিকে এবড়ো থেবেড়ো কাঠের তৈরি একটা তক্তার কাছে নিয়ে রাখা হয়েছে। সেটার ওপরে রাখা হয়েছে একটা পুরনো ভ্রমণ ব্যাগ, একটা হ্যাট রাখার বাকসো আর বিভিন্ন ধরনের পোটলা পুটলি। একটা বড় চটার বাকসো, পুরনো ব্যাগপত্র ইত্যাদিতে রুমের বাকি জায়গাটা ভরে আছে। তাতে রুমের শুধু মাঝখানে, আগুনের খুব কাছে একটু ফাঁকা জায়গা রযেছে। ওই ফাঁকা জায়গাটুকুতে আগুনের ডান কোণায় একটা জাজিম বিছানো। সেই জাজিমের ওপর হাত পা ছড়িয়ে শুয়ে আছে প্রসূতি। তার মাথা একটা উদোম বালিশের ওপর আর খোলা চুল এলিয়ে আছে বাইরের দিকে। জাজিমের ওপর বিছানো কম্বলটা জাজিমের শুধু অর্ধেকটা ঢেকে আছে।

জাজিমের খোলা জায়গাটুকু ঢেকে আছে ক্যান্টিনের মালিক মহিলার কারণে। সে হাঁটু মুড়ে বসে পাশের বেসিনে একটা তোয়ালে থেকে লালচে ফোটায় পড়া পানি চিপে ফেলছে। ডান পাশে বোরকাহীন একজন আরব মহিলা আড়াআড়ি পায়ে বসে গির্জায় খাবারের অঞ্জলি দেওয়ার মতো করে ধরে আছে একটা বাষ্প-ওঠা গরম পানির এনামেল বেসিন। প্রসূতির গায়ের নিচে ভাঁজ করে দেওয়া একটা চাদরের দুপাশে দুজন মহিলা। উনানের আলো এবং ছায়া একবার পড়ছে আরেকবার উঠে যাচ্ছে সাদা রং করা দেয়ালের গায়ে, গাদাগাদি করে রাখা ব্যাগের ওপর এবং আরো বেশি ঘন হয়ে পড়ছে এবং উঠছে দুজন সেবিকার মুখের ওপর আর কম্বলের ওপর স্তুপ হয়ে থাকা প্রসূতির উপর।

(চলবে)

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

এসএ/

Header Ad
Header Ad

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকার বাজেট পাস

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের জন্য ৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ইউজিসি থেকে বরাদ্দ পাওয়া যাবে ৬৯ কোটি টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৭ কোটি ১০ লাখ টাকা।

সোমবার (৩০ জুন) প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স রুমে সিন্ডিকেট এর ১০৪তম সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান এই বাজেট উপস্থান করেন। একই সঙ্গে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের সরকারি বরাদ্দের ভিত্তিতে ৭৫ কোটি ৬৯ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেট অনুমোদন করা হয়।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত বাজেট চাহিদা ৯২ কোটি ৭০ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা হলেও প্রায় ১৬ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার বাজেট ঘাটতি নিয়েই পাশ হয়েছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট।

পাশকৃত বাজেটে গবেষণায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে দুই কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা যা মোট বাজেটের ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এই খাতে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে বরাদ্দ ছিল দুই কোটি ৬১ লক্ষ টাকা। এছাড়া মোট বাজেটের ৬২ দশমিক ৭৫ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে বেতন-ভাতা ও পেনশন বাবদ। পণ্য ও সেবা বাবদ সহায়তায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ, গবেষণা অনুদান খাতে ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে মূলধন খাতে।

বাজেট নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, '২০০৭-২০০৮ অর্থ বছরে বাজেট ছিল এক কোটি ১০ লক্ষ টাকা, সেখান হতে আজকের বাজেট বৃদ্ধি পেয়ে দাড়িয়েছে ৭৬ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। আশার কথা হলো গত বছরের তুলনায় নিজস্ব অর্থায়ন হ্রাস করে সরকারি অনুদান বৃদ্ধি করা গেছে। ভবিষ্যৎ-তে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক চাহিদা অনুযায়ী সর্বমোট বাজেট বৃদ্ধি পাবে।'

তিনি আরো বলেন, 'ইউজিসির বরাদ্দ চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত। তবে সংশোধিত বাজেটে ইউজিসির সাথে আলোচনা করে বাজেট আরও বৃদ্ধি করা হবে।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: হায়দার আলী বলেন, 'সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রেখে বাজেট ব্যয় করা হবে।'

Header Ad
Header Ad

সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ খালি

ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ৪ লাখ ৬৮ হাজার ২২০টি পদ খালি রয়েছে। সোমবার (৩০ জুন) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত ২০২৪ সালের সরকারি কর্মচারীদের পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সরকারি চাকরিতে বর্তমানে ১৯ লাখ ১৯ হাজার ১১১টি অনুমোদিত পদ রয়েছে। এর বিপরীতে ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৮৯১ জন কর্মরত আছেন; খালি আছে ৪ লাখ ৬৮ হাজার ২২০টি পদ।

সরকারি চাকরিতে ২০১৮ সালে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৭টি, ২০১৯ সালে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৩৩৮টি, ২০২০ সালে ৩ লাখ ৮০ হাজার ৯৫৫ এবং ২০২১ সালে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১২৫টি, ২০২২ সালে ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৯৭৬টি এবং ২০২৩ সালে ৪ লাখ ৭৩ হাজার একটি পদ ফাঁকা ছিল।

এখন সরকারি চাকরিতে প্রথম থেকে নবম গ্রেডের (আগের প্রথম শ্রেণি) ২ লাখ ৫৯ হাজার ৬৫৭টি অনুমোদিত পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন এক লাখ ৯০ হাজার ৭৭৩ জন। ফাঁকা আছে ৬৮ হাজার ৮৮৪টি পদ।

১০ থেকে ১২তম গ্রেডে (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) ৩ লাখ ৬২ হাজার ২৮৯টি পদের বিপরীতে কাজ করছেন ২ লাখ ৩৩ হাজার ৭২৬ জন। ফাঁকা রয়েছে এক লাখ ২৯ হাজার ১৬৬টি পদ।

১৩ থেকে ১৬তম গ্রেডে (আগের তৃতীয় শ্রেণি) ৭ লাখ ৬০ হাজার ৬৩৪টি পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৬ লাখ ১৩ হাজার ৮৩৫ জন। ফাঁকা আছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৭৯৯টি পদ।

অন্যদিকে ১৭ থেকে ২০তম গ্রেডে (আগের চতুর্থ শ্রেণি) ৫ লাখ ১৯ হাজার ৮১২টি পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৪ লাখ ৪ হাজার ৫৭৭ জন। ফাঁকা রয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার ২৩৫টি পদ।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সরকারি দপ্তরে নির্ধারিত ও অন্যান্য কাজের জন্য ১৬ হাজার ১১৬টি পদ থাকলেও এসব পদের বিপরীতে কাজ করছেন ৭ হাজার ৮৯০ জন। ফাঁকা রয়েছে ৮ হাজার ১৩৬টি পদ।

প্রথম থেকে ১২তম গ্রেডের গেজেটেড পদগুলোতে নিয়োগ দেয় সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। আর ১৩ থেকে ২০তম গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগ দেয় মন্ত্রণালয় ও বিভাগ।

সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ৬ হাজার ৬৪টি এবং অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরে ২ লাখ ৯৬ হাজার ১১২টি পদ ফাঁকা রয়েছে। আর বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ১৫ হাজার ২৯টি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনে ফাঁকা রয়েছে এক লাখ ৫১ হাজার ১৫টি পদ।

Header Ad
Header Ad

পুলিশ পরিচয়ে ব্যবহার করা যাবে না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম: আরপিএমপি কমিশনার

ছবি: সংগৃহীত

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরপিএমপি) সদস্যদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘পুলিশ পরিচয়ে’ ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট পরিচালনায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন কমিশনার মো. মজিদ আলী। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের আচরণ সর্বক্ষেত্রে পেশাদার ও সংবেদনশীল হতে হবে।

সোমবার (৩০ জুন) আরপিএমপির মাসিক কল্যাণ সভায় পুলিশ কমিশনার এই নির্দেশনা দেন।

কমিশনার বলেন, "পুলিশ সদস্যরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের পেশাগত পরিচয় ব্যবহার করতে পারবেন না। এ ধরনের কর্মকাণ্ড বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে।"

তিনি আরও যোগ করেন, সদস্যদের অনলাইন জিডি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে, যাতে জনগণ আরও দ্রুত ও কার্যকর সেবা পায়।

সভায় কমিশনার মজিদ আলী বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, দায়িত্ব পালনে সতর্কতা ও পেশাদারিত্ব বজায় রাখা জরুরি। পুলিশ সদস্যদের পেশাগত উৎকর্ষ সাধনের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, "পুলিশের দায়িত্ব শুধু আইন প্রয়োগ নয়, এটি একটি জনসেবামূলক পেশা।"

সভায় আগের মাসের কল্যাণ সভায় উত্থাপিত বিভিন্ন সমস্যা ও সুপারিশের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। অনেক বিষয় সমাধানের নির্দেশও দেন কমিশনার।

এ সময় সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) নরেশ চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) সফিজুল ইসলাম, উপপুলিশ কমিশনার (সদর দপ্তর) হাবিবুর রহমান, উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ দক্ষিণ) তোফায়েল আহম্মেদ, এবং উপপুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) আব্দুর রশিদ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকার বাজেট পাস
সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ খালি
পুলিশ পরিচয়ে ব্যবহার করা যাবে না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম: আরপিএমপি কমিশনার
ভোলায় চাঁদা না পেয়ে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
টাঙ্গাইলের নির্ধারিত স্থানে মডেল মসজিদ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন (ভিডিও)
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ
চুয়াডাঙ্গায় ট্রেন থেকে ফেলে পাউবো কর্মচারীকে হত্যা, পরিবারের মামলা
দেশে নতুন করে আরও ২১ জনের করোনা শনাক্ত
ঢাকার প্রতিটি ভবনের ছাদে সৌর প্যানেল বসানোর নির্দেশ হাইকোর্টের
লুঙ্গি পরে রিকশায় প্যাডেল মেরে ঢাকা থেকে বিদায় নিলেন জার্মান রাষ্ট্রদূত
ইসরায়েলের ৩১ হাজারেরও বেশি ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইরান (ভিডিও)
ইরানের সাথে আলোচনা করছি না, তাদের কিছু দিচ্ছিও না: ট্রাম্প
আসিফ মাহমুদের অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে প্রশ্ন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বললেন ‘আইনটা দেখিনি’
নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছে চীন: মির্জা ফখরুল
বিপিএলে নোয়াখালীর অভিষেক, আসছে ‘নোয়াখালী রয়্যালস’
হোটেল থেকে সন্তানসহ স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার, ময়নাতদন্তে যা জানা গেল
আমাদের ডিভোর্স হয়নি, হিরো আলম অভিমান করেছিল: রিয়ামনি
সরকারি উদ্যোগেও কমেনি ইলিশের দাম, খালি হাতেই ফিরছেন ক্রেতারা
মঙ্গলবার ব্যাংক হলিডে, বন্ধ থাকবে সব লেনদেন
বিরামপুরে ১৭০তম সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস পালন