শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫ | ১৩ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

যেভাবে উত্থান ৪০০ কোটি টাকার মালিক পিয়ন জাহাঙ্গীরের

জাহাঙ্গীর আলম। ছবি: সংগৃহীত

৪০০ কোটি টাকার মালিক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম। বর্তমান সময়ে 'টক অব দ্য কান্ট্রি'তে পরিণত হয়েছে যার নাম। সম্প্রতি দুর্নীতিবিরোধী চলমান অভিযানের মধ্যে নিজের পিওনের ৪০০ কোটি টাকা সম্পদ করায় তাকে বের করে দেওয়া হয়েছে- এমন বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পরই তোলপাড় শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, অবৈধভাবে ভাবে ৪০০ কোটি টাকা বানানো কে সেই পিওন? এখন তিনি কোথায় আছেন? কীইবা করছেন? কীভাবে এতো অঢেল সম্পদের মালিক হলেন এক পিওন?

চলুন জেনে নেওয়া যাক কে এই জাহাঙ্গীর? আর কিভাবে ঘটলো তার উত্থান...

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী জাহাঙ্গীর আলম। বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের নাহারখিল গ্রামে। পাঁচ ভাই তিন বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। সংসারে ছিল অভাব-অনটন। তিন বেলা খাবারও ঠিকমতো খাবার জুটতো না। জীবিকার তাগিদে চলে আসেন ঢাকায়। দীর্ঘদিন ঘুরে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে হয়ে যান চিত্রনায়িকার গাড়িচালক। এর তিন বছর পর মামার হাত ধরে হয়ে যান শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সহকারী। এরপর অনিয়ম-দুর্নীতি করে ৪০০ কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।

জাহাঙ্গীর আলম বিয়ে করেছেন দুটি। প্রথম স্ত্রীর ঘরে এক সন্তান আর দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে রয়েছে তিন সন্তান। প্রথম স্ত্রী দেশে আছেন, তবে তার সঙ্গে জাহাঙ্গীরের কোনো যোগাযোগ নেই। দ্বিতীয় স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন।

জানা গেছে, শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সহকারী হওয়ার পর নিজের এলাকায় অন্তত ২০ কোটি টাকার জমি কিনেছেন। এছাড়াও তিনি ঢাকায় একাধিক প্লট-ফ্ল্যাটের মালিক। এর মধ্যে ধানমণ্ডিতে নিজের নামে একটি ফ্ল্যাট, স্ত্রী-শাশুড়ির নামে কিনেছেন ৫৫০০ বর্গফুটের আরেকটি ফ্ল্যাট। মোহাম্মদপুর ও নিউমার্কেটে চারটি দোকান, মিরপুরে একটি সাত তলা ভবন ও দুটি ফ্ল্যাট।

জাহাঙ্গীর আলম। ছবি: সংগৃহীত

নোয়াখালীর মাইজদী শহরের হরিনারায়ণপুরে “যারিয়াত ভিলা” নামে আছে আটতলা রাজকীয় বাড়ি, নিজ গ্রাম নাহারখিলে রয়েছে “ক্ষণিকের নীড়” নামে চারতলা আলিশান বাড়ি। এই বাড়ির সামনে দুই কোটি টাকা খরচ করে বাবার নামে গড়ে তুলেছেন মসজিদ। নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আছে বিশাল অ্যাগ্রো খামার। সুবর্ণচর উপজেলায় রয়েছে দুটি খামার।

এছাড়াও তার ব্যাংকে আছে সোয়া কোটি টাকা। ডিপিএস আছে পৌনে তিন লাখ টাকার, এফিডিআর আছে সোয়া এক কোটি টাকার। স্ত্রীর নামে কিনেছেন দামি গাড়ি। বিভিন্ন কোম্পানিতে আছে কোটি টাকার শেয়ার। একটি অংশীদারি প্রতিষ্ঠানে রয়েছে ছয় কোটি টাকার বিনিয়োগ। স্ত্রী, শাশুড়ি, ভাই ও ভাগিনার নামে আছে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ।

স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে গণমাধ্যম জানিয়েছে, জাহাঙ্গীর প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মচারী হিসেবে কাজ করলেও ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে পরিচয় দিতেন। এ পরিচয় দিয়ে তিনি নানা তদবির করে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন। একইসঙ্গে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের কাছে নানা তদবির করে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। তদবির, টেন্ডারবাজি ও নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অপকর্ম করেছেন। গাজীপুরের ইপিজেড এলাকার ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। চট্টগ্রাম বন্দরেও ছিল আধিপত্য। কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। হেলিকপ্টার ছাড়া চলতেন না। রেখেছেন একাধিক বডিগার্ড।

নিজের এক ভাইকে বানিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। ভাগিনাকে দিয়ে এলাকায় গড়ে তুলেছেন “মামা বাহিনী”। স্বপ্ন দেখতেন সংসদ সদস্য হওয়ার। আর সেই স্বপ্ন পূরণে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে নোয়াখালী-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। কিন্তু এটি কাল হয়ে দাঁড়াবে, বুঝতে পারেননি।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচয় ব্যবহার করে প্রশাসন দিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী এইচ এম ইব্রাহীমের অনুসারীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। পরে ইব্রাহীম বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে জানালে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে গত ২৩ ডিসেম্বর একটি বিশেষ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।

সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিজেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অনৈতিক কাজ করে বেড়াচ্ছেন। তার সঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে নিকটস্থ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তা নিন।

এ অবস্থায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। গত রবিবার (১৪ জুলাই) বিকেলে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তার বাসার সাবেক এক পিয়নের অর্থসম্পদের বিষয়টি সামনে আনেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার বাসায় কাজ করেছে, পিয়ন ছিল সে, এখন ৪০০ কোটি টাকার মালিক। হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না। বাস্তব কথা। কী করে বানালো এত টাকা? জানতে পেরেছি, পরেই ব্যবস্থা নিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরই জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেইসঙ্গে তাদের হিসাব খোলার ফরমসহ যাবতীয় তথ্য আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে। রবিবার বিকেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) সব ব্যাংকে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছে।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, জাহাঙ্গীর সব ধরনের তদবির বাণিজ্যে জড়িত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত বিশেষ সহকারী পরিচয়ে তদবির বাণিজ্য করতেন। সচিবালয়ে বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ, টেন্ডার পাইয়ে দেওয়াসহ সব তদবির করতেন। এসব তদবিরের বিপরীতে মোটা অংকের কমিশন নিতেন। এক ভাইকে বানিয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। আরেক ভাইকে বানিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। ভাগিনা মাকছুদুর রহমান শিপনকে বানিয়েছেন জেলা পরিষদের সদস্য। রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য গড়েছেন বাহিনী।

প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সন্মেলনের পর সোমবার জাহাঙ্গীরের নাহারখিলের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, চারতলা বাড়ির তিনতলা পর্যন্ত ফাঁকা পড়ে আছে। নিচতলায় তার বড় ভাই মীর হোসেন ও স্ত্রীকে পাওয়া যায়। অন্য কেউ বাড়িতে নেই।

মীর হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের আট ভাই-বোনের মধ্যে জাহাঙ্গীর দ্বিতীয়। একসময় দুবাই ও সৌদি আরবে ছিলাম আমি। বিদেশে কাটিয়েছি ২০ বছর। বর্তমানে এই বাড়িতে থাকি। এটি জাহাঙ্গীরের বাড়ি। খিলপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে আছি। তৃতীয় ভাই আলমগীর হোসেন খিলপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান। চতুর্থ ভাই ফেয়ার হোসেন সপরিবারে সুইডেনে থাকে। ছোট ভাই মনির হোসেন ঢাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য করে। বোনদের বিয়ে দিয়েছি। সবাই শ্বশুরবাড়িতে থাকে। তাদের সন্তানরা বড় হয়েছে। পড়াশোনা করছে। সবাই ভালো আছে।

বাবা ইউনিয়ন পরিষদের কেরানি ছিলেন উল্লেখ করে মীর হোসেন বলেন, ১৮ বছর সেখানে কাজ করেছেন তিনি। তারপর আবুধাবির বিমানবন্দরে কাজ করেছেন ২০ বছর। কয়েক বছর আগে মারা গেছেন।

তিনি বলেন, আমাদের সংসারে অভাব–অনটন ছিল। অর্থের অভাবে জাহাঙ্গীর বেশি দূর পড়ালেখা করতে পারেনি। ফলে জীবিকার তাগিদে জাহাঙ্গীর ঢাকায় চলে যায়। এক আত্মীয়ের মাধ্যমে চিত্রনায়িকা দোয়েলের ব্যক্তিগত গাড়িচালক হিসেবে কাজ নেয়। তখন আমার মামা আবুল কাশেম পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে চাকরি করতেন। ফলে শেখ হাসিনার সঙ্গে মামার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর কথা বলে ১৯৮৮ সালের শেষের দিকে শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত কর্মচারী হিসেবে কাজ দেন মামা।

মীর হোসেন আরও বলেন, জাহাঙ্গীর দুই বিয়ে করেছে। তবে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ নেই। দ্বিতীয় স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে থাকে। রবিবার রাতে তার কাছে (যুক্তরাষ্ট্রে) চলে গেছে জাহাঙ্গীর। এলাকায় আসলে গরিব-অসহায় মানুষকে দুই হাত ভরে দান করতো। কমবেশি সবার উপকার করেছে সবসময়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে নাহারখিল গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীরের এক প্রতিবেশী গণমাধ্যমকে জানান, পরিবারটি খুবই দরিদ্র ছিল। গত কয়েক বছরে জাহাঙ্গীরের বদৌলতে পরিবারের সদস্যরা কোটিপতি বনে গেছেন। এত সম্পদ ও আলিশান বাড়ি দেখে আমরা অবাক হয়েছি। মানুষের কাছে শুনতাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের লোক। কীভাবে এত সম্পদ বানিয়েছেন, জানি না। এলাকায় মাঝেমধ্যে আসতেন। জাহাঙ্গীরের সঙ্গে সবসময় পিস্তলসহ বডিগার্ড থাকতে দেখেছি। তবে এলাকার কারও কোনও ক্ষতি করেননি কখনও।

একই গ্রামের আরেক বাসিন্দা ও স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন, জাহাঙ্গীরের প্রভাব দেখিয়ে ভাগিনা শিপন ও তার সহকারী স্বপন কোটিপতি হয়েছেন। শিপনের কিশোর গ্যাংয়ের নাম মামা বাহিনী। গ্যাংয়ের সদস্যরা বিভিন্ন সময় কারণে-অকারণে মানুষের ওপর নির্যাতন চালায়। ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পায় না। শিপন সবসময় মদ্যপ অবস্থায় থাকেন। জাহাঙ্গীরের নাম ব্যবহার করে তার সহকারী স্বপন জেলার বিভিন্ন দফতরে তদবির বাণিজ্য করেন। কাজ না হলে হুমকি দিয়ে আদায় করেন। শিপন আর স্বপনের কাছে ব্যবসায়ীরা জিম্মি।

নাহারখিল গ্রামের সাধুরখিল বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, জাহাঙ্গীর প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত বিশেষ সহকারী পরিচয় দিয়ে জেলার নেতাদের সবসময় চাপে রাখতেন। তাদের থেকে কমিটিসহ বিভিন্ন তদবির করে কোটি টাকা কমিশন নিতেন। তার কাছে সবাই ছিল জিম্মি।

নোয়াখালী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হরিনারায়ণপুরে গিয়ে দেখা যায়, মাইজদী প্রধান সড়ক থেকে স্টেশন সড়কে যেতে হাতের ডান পাশে দেখা যাচ্ছে নজরকাড়া আটতলা বাড়ি। ১ নম্বর রোডে ১১০ নম্বর বাড়িটির নাম যারিয়াত ভিলা। এটি মালিক জাহাঙ্গীর। বাড়িতে ঢুকতেই চোখে পড়ে বিশাল পার্কিং। অত্যাধুনিক লিফট আর স্বয়ংক্রিয় জেনারেটরের ব্যবস্থা রয়েছে বাড়িতে। ফ্লোরের টাইলস থেকে শুরু করে দরজা-জানালা সব কিছুই উন্নতমানের। স্যানিটেশন ও প্লাম্বিংয়ে ব্যবহার করা হয়েছে আধুনিক সরঞ্জাম। বাড়িটির দেখভালের দায়িত্বে আছেন তত্ত্বাবধায়ক মো. আমিনুল ইসলাম।

বাড়িটির মালিকের নাম জানতে চাইলে আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, এটি জাহাঙ্গীর সাহেবের বাড়ি। আটতলার বাড়িটিতে ১৯টি ফ্ল্যাট আছে। নিচতলা গাড়ি পার্কিংয়ের কাজে ব্যবহার হয়। ১৯ ফ্ল্যাটের মধ্যে ১৮টি বিভিন্ন জনের কাছে ভাড়া দেওয়া। তিনতলায় একটি ফ্ল্যাট নিজের থাকার জন্য রেখেছেন জাহাঙ্গীর। সেখানে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মাঝেমধ্যে থাকতেন। সর্বশেষ আড়াই মাস আগে এই বাসায় এসেছিলেন। এরপর আর আসেননি।

এদিকে, আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই রবিবার রাতে জাহাঙ্গীর আলম যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছেন। সোমবার বিকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তার বড় ভাই মীর হোসেন।

এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে জাহাঙ্গীর আলমের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। মোবাইলে এসএমএস ও হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা দিলেও কোনো উত্তর দেননি।

জাহাঙ্গীরের যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালী-১ আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহীম বলেন, আমি এ বিষয়ে শুনেছি। তবে এটি সত্য নাকি মিথ্যা, তা আমার জানা নেই। তার এত সম্পদের কথা জানতেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে ইব্রাহীম বলেন, আসলে এত সম্পদের কথা জানতাম না। এ নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না। প্রধানমন্ত্রী তো সংবাদ সম্মেলনে সব কিছু বলেই দিয়েছেন। কারণ নেত্রীর কাছে সবার সব তথ্য আছে। দুর্নীতি করলে কারও পার পাওয়ার সুযোগ নেই।

Header Ad
Header Ad

প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে জীবন দিলেন কলেজছাত্রী

ছবি: সংগৃহীত

প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে ইশরাত জাহান হাসি এক কলেজছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার করেছেন। তিনি রাজশাহী কলেজের অর্থনীতি বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শুক্রবার (২৭ জুন) সকালে নগরীর হেতমখাঁ কাস্টমস অফিস মোড়ের একটি মেস থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এসময় তার প্রেমিক (নাহিদ) মেসের নিচে উপস্থিত ছিলেন এবং পুলিশ তাকে আটক করেন।

নিহতের বাড়ি নাটোর জেলার বনপাড়া থানায়। রাজশাহী মেডিকেল কলেজে মিডিয়া মুখপাত্র শংক কে বিশ্বাস তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করে বলেন, মেডিকেলে তাকে মৃত অবস্থান নিয়ে আসা হয় এবং পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটা ছেলের সঙ্গে হাসির দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। তার সঙ্গে হয়ত হাসির কোনো মনোমালিন্য হয়েছে যেটা থেকে সে আত্মহত্যা করতে পারে।

এ বিষয় রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার গ্রহণের জন্য অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানকে নির্দেশনা দিয়েছেন।

বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মোস্তাক আহমেদ বলেন, প্রেমিকের সঙ্গে ব্রেকআপ হওয়ায় এমন ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি এবং নিহতের পরিবার থানায় এসেছে। ছেলেকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে সে শিকার করেছে মেয়েটির সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। রাতে ছেলেটি মেয়ের মেসের সামনে গিয়েছিল এবং তাকে ভিডিও কলে রেখে মেয়েটি আত্মহত্যা করে।

Header Ad
Header Ad

সাবেক সিইসি নূরুল হুদা আরও ৪ দিনের রিমান্ডে

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। ছবি: সংগৃহীত

তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে 'প্রহসনের নির্বাচন' হিসেবে আয়োজনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার রিমান্ড আরও ৪ দিন বৃদ্ধি করেছে আদালত।

শুক্রবার (২৭ জুন) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

এর আগে, প্রথম দফার ৪ দিনের রিমান্ড শেষ হলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, শেরেবাংলা নগর থানার এসআই শামসুজ্জোহা সরকার আরও ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। তবে আদালত শুনানি শেষে ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে, গত সোমবারও নূরুল হুদার বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। সেদিন আদালত ৪ দিনের রিমান্ড অনুমোদন করেন।

উল্লেখ্য, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন খান গত রোববার শেরেবাংলা নগর থানায় এই মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় সাবেক তিন সিইসি ছাড়াও আরও ২৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।

অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার, জাবেদ পাটোয়ারী এবং এ কে এম শহীদুল হক।

মামলার পরদিনই স্থানীয় জনগণের সহায়তায় কে এম নূরুল হুদাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

Header Ad
Header Ad

মিরপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকে উঠে গেল বাস, নিহত ১

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মিরপুরের টেকনিক্যাল মোড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকে উঠে যাওয়া একটি বাসের ধাক্কায় একজন পথচারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন সরকারি বাঙলা কলেজের এক শিক্ষার্থী।

শুক্রবার (২৭ জুন) দুপুরে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তি ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। তবে হতাহতদের নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের মাঝে থাকা বিভাজকে উঠে পড়ে। এ সময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক পথচারী চাপা পড়ে নিহত হন এবং কলেজ শিক্ষার্থী আহত হন।

তিনি আরও জানান, ঘাতক বাসচালককে আটক করা হয়েছে এবং দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত বাসটি সরানোর কাজ চলছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে জীবন দিলেন কলেজছাত্রী
সাবেক সিইসি নূরুল হুদা আরও ৪ দিনের রিমান্ডে
মিরপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকে উঠে গেল বাস, নিহত ১
খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল: স্বীকার করলেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী
জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে মালয়েশিয়ায় ৩৬ বাংলাদেশি আটক
বন্ধুর বাড়িতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে হিরো আলমের আত্মহত্যার চেষ্টা
বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে আলোচনায় ভারত প্রস্তুত: রণধীর জয়সওয়ালম  
সুন্দর বিশ্ব তৈরি করতে চায় বাংলাদেশ: ড. ইউনূস
উড্ডয়নের পর ইঞ্জিনে ত্রুটি, ঢাকায় ফিরল বিমানের ফ্লাইট
সেই পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন
দেশজুড়ে রথযাত্রা উৎসব শুরু আজ
ইরানকে যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ বিলিয়ন ডলারের গোপন প্রস্তাব
প্রত্যেক জেলায় হাসপাতালের মত সিনেমা হলও দরকার: জাহিদ হাসান
দেশে ফিরতে ইরান থেকে পাকিস্তান পৌঁছেছেন ২৮ বাংলাদেশি
যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির সাক্ষাৎ
খুলনায় বিএনপির নেতার বাড়ি ভাঙচুর, এসআই সুকান্ত চুয়াডাঙ্গায় গ্রেপ্তার
বিশেষ সুবিধা: ১ জুলাই থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের কার কত বেতন বাড়ছে
হানিয়া আমিরের সঙ্গে সিনেমায় অভিনয়, ভারতে দিলজিৎকে নিষিদ্ধের দাবি
আমি যদি ভবিষ্যতে শেখ হাসিনার মতো করি, আমারও পতন হবে: কাদের সিদ্দিকী
চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে জোট গড়ছে না বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা