ভুয়া মামলা ও নির্দোষকে হয়রানি রোধে ফৌজদারি কার্যবিধিতে নতুন বিধান যুক্ত: আসিফ নজরুল

আইন, বিচার ও সংসদ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত
ভুয়া মামলা দায়ের এবং নিরপরাধ ব্যক্তিকে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি বন্ধে ফৌজদারি কার্যবিধিতে নতুন একটি বিধান যুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
রোববার (২৯ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও উপস্থিত ছিলেন।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, “বর্তমান সরকার নিজেদের আমলের কিছু অপব্যবহার নিয়ে বিব্রত এবং সেসব ইস্যু সমাধানে উদ্যোগী। তার মধ্যে অন্যতম হলো ভুয়া মামলা ও নিরপরাধ ব্যক্তিকে মামলায় জড়ানো। বিষয়টি নিয়ে দেশের ক্রিমিনাল ল’ এক্সপার্ট ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩(ক)/১৭৩(অ) নামে একটি নতুন বিধান সংযোজন করা হয়েছে।”
এই বিধানে বলা হয়েছে— কোনো পুলিশ কমিশনার বা জেলা পর্যায়ের পুলিশ সুপার যদি মনে করেন কোনো মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তাকে প্রাথমিক তদন্ত (Preliminary Investigation) করার নির্দেশ দেওয়া প্রয়োজন, তাহলে তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তা নির্দেশ দিতে পারবেন। সেই প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট বিবেচনায় ম্যাজিস্ট্রেট যদি দেখেন অভিযোগপত্রে নির্দোষ ব্যক্তি জড়িত, তাহলে বিচার-পূর্ব পর্যায়ে (pre-trial stage) তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে পারবেন।
আসিফ নজরুল জানান, “এ ব্যবস্থার ফলে বিচার বিভাগ ও পুলিশ প্রশাসন সমন্বিতভাবে কাজ করে ভুয়া মামলা ও মামলা বাণিজ্যের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে। নিরপরাধ ব্যক্তিদের অহেতুক গ্রেপ্তারের সুযোগ কমবে। তবে যারা প্রকৃত অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।”
কুমিল্লার মুরাদনগরের আলোচিত ধর্ষণ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ড. আসিফ নজরুল বলেন, “এই ঘটনায় আমরা মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ। ঘটনাটি ঘটার পরপরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রধান অভিযুক্ত এবং ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “ধর্ষণ সংক্রান্ত আইনে সরকার সময়োপযোগী সংশোধন এনেছে। এর বাস্তব উদাহরণ মাগুরার মামলায় দেখা গেছে। মুরাদনগরের ঘটনাতেও দ্রুত বিচার সম্পন্ন করতে আমরা বদ্ধপরিকর।”
