শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

শাহ এ এম এস কিবরিয়া: এক নক্ষত্রের অস্বাভাবিক প্রয়াণ

শাহ এ এম এস কিবরিয়া। সাবেক অর্থমন্ত্রী। এটা তাঁর শেষ পরিচয়। তাঁর নামের আগে আরও অনেক পরিচয় আছে। সেগুলো না হয় অন্য এক সময় লিখা যাবে।

তাকে নিয়ে আমার একটা অম্ল-মধুর অভিজ্ঞাতা আছে। আজ শুধু সেই অংশটুকুই স্মৃতির পাতা থেকে তুলে আনতে চাই প্রিয় পাঠকদের জন্য। কিবরিয়া ভক্তদের জন্য।

২০০১ সাল। তখন কাজ করি বিখ্যাত সম্পাদক, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাত চৌধুরী সম্পাদিত সাপ্তাহিক ২০০০-এ। সিলেট প্রতিনিধি হিসেবে চষে বেড়াই বৃহত্তর সিলেটের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত। আজ হবিগঞ্জের বাল্লা সীমান্তে, কাল হয়ত ছুটে যাই মৌলভীবাজারের বটুলি সীমান্তে। কিংবা পরের সপ্তাহেই সুনামগঞ্জের কালনী পাড়ের দুর্গাপাশা গ্রামে। অথবা সিলেট শহর থেকে ৫০-৬০ কিলোমিটার দূরের তামাবিল সীমান্তে, খাসিয়া পল্লীতে। এই ছুটে চলার পিছনে উদ্দেশ্য খবরের পিছনের খবর নিয়ে আসা। এটাই ছিল আমার এক এবং অদ্বিতীয় কাজ।

তুমুল উৎসাহে আর তীব্র গতি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। এর মধ্যেই চলে আসে ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ওই বছরের ১ অক্টোবর জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনকে ঘিরে প্রতি সপ্তাহেই সাপ্তাহিক ২০০০-এ নির্বাচন কেন্দ্রিক রিপোর্ট প্রকাশ হচ্ছে। বৃহত্তর সিলেটের ১৯টি আসন নিয়ে আমিও রিপোর্ট করছি। এরমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আসনগুলোতে যেসব ভিআইপি প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন তাঁদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য সিলেটের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে দৌড়ঝাঁপ করে যাচ্ছি নিয়মিত।

বিশেষ করে হবিগঞ্জ-৩(হবিগঞ্জ সদর-লাখাই), মৌলভীবাজার-১(বড়লেখা), মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া), মৌলভীবাজার-৩(রাজনগর ও মৌলৌভীবাজার সদর), মৌলভীবাজার-৪(শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ), সিলেট-১(সিলেট সদর-কোম্পানিগঞ্জ) এবং সুনামগঞ্জ-৩(জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জ) আসনের প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার কাজ ছিল সবচেয়ে গুরুত্ত্বপূর্ণ।

২০০১ সালের সেই নির্বাচনে হবিগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছিলেন তৎকালীন সদ্য সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া। তার প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন বিএনপি তথা চার দলীয় জোটের আবুল লেইছ মো. মুবিন চৌধুরী। সঙ্গত কারণেই এই আসনটি ভিআইপি আসনের মর্যাদা লাভ করে। যেহেতু কিবরিয়া সাহেব প্রার্থী, সে কারণেই এর গুরুত্ত্ব ছিল অন্যরকম। স্থানীয় ভোটার ও জনসাধারণের কাছে যেমন আসনটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল, তেমনি গণমাধ্যমের কাছে এটি ছিল অধিক গুরুত্ত্বপূর্ণ আসন। সবার চোখ ছিল কিবরিয়ার আসনের দিকে।

১৯৯৬ থেকে-২০০১ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ শাসনামলে দেশের মানুষ স্বল্পমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পেরেছিল। বিশেষ করে মোটা চালের দাম ছিল কেজি প্রতি ৮ থেকে ১০ টাকা। আরও নানান কারণে আওয়ামী লীগের অবস্থান বেশ ভালো ছিল। এর বিপরীতে আওয়ামী লীগের ওই মেয়াদেই দেশের সাত-আটটি জেলায় কিছু নেতার বেপরোয়া আধিপত্য আওয়ামী লীগের শাসনকে বেশ বিতর্কিত করে ফেলে। বলা যেতে পারে ওই নেতারা আওয়ামী লীগের জন্য অনেকটা ফ্রাংকেনস্টাইন হয়ে উঠেছিলেন। এসব কারণে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পুনরায় জয়ের সম্ভাবনা যতটুকু ছিল তার চেয়ে বেশি শংকা ছিল পরাজয়ের। আওয়ামী লীগের ওই সময়ের শাসনামলের ভালো কাজগুলো ঢাকা পড়ে গিয়েছিল এসব কারণে। সে আরেক আলোচনা।

যাক, ২০০১ এর সেই নির্বাচনে ভিআইপি আসন হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠা হবিগঞ্জ সদর আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী শাহ এ এম এস কিবরিয়া এবং বিএনপি প্রার্থী আবুল লেইছ মো. মুবিন চৌধুরী'র সাক্ষাৎকার নেওয়ার অ্যাসাইনমেন্ট দিলেন সাপ্তাহিক ২০০০ এর প্রধান প্রতিবেদক গোলাম মোর্তোজা। সেই অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে গেলাম হবিগঞ্জে।

কনকনে শীতের রাত। হবিগঞ্জের একটি আবাসিক হোটেলে সাময়িক বসতি গাড়লাম। প্রথম দিনেই বিএনপি প্রার্থী আবুল লেইছ মো. মুবিন চৌধুরীর সাক্ষাৎকার নেওয়া শেষ। তারপরই শুরু করলাম কিবরিয়া সাহেবের সাক্ষাৎকার নেয়ার মিশন। কিন্তু কোনভাবেই এই ভিআইপি প্রার্থীকে ধরতে পারছি না।

ওই সময়ে প্রথম আলোর হবিগঞ্জ প্রতিনিধি হাফিজুর রহমান নিয়ন আমাকে যারপরনাই সহযোগিতা করলেন। আশ্বস্ত করে বললেন, কোন সমস্যা নাই। সাক্ষাৎকার নিতে পারবেন। একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে। তার কথায় আশ্বস্ত হলাম। তিনি আমাকে দিনে-রাতে সঙ্গ দিলেন কিবরিয়া সাহেবের নাগাল পর্যন্ত নিয়ে যেতে।

কিবরিয়া সাহেব নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত। ভোর রাত থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চষে বেড়াচ্ছেন হবিগঞ্জ সদর ও লাখাইয়ের গ্রাম থেকে গ্রামে। এক গঞ্জ থেকে আরেক গঞ্জে। উঠান বৈঠক করছেন। মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। গণসংযোগ করছেন দিনে রাতে। নিয়ন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে কিবরিয়া সাহেবের অবস্থান জানার চেষ্টা করছেন। সেই অবস্থানে ছুটে যাচ্ছি নিয়নের মোটরবাইকের পিছনে বসে। কিন্তু যখনই একটা স্থানে যাচ্ছি, গিয়ে জানতে পারছি কিবরিয়া সাহেব কিছুক্ষণ আগে তার বহর নিয়ে আরেক গ্রামে চলে গেছেন কিংবা গঞ্জে গেছেন।

শেষ পর্যন্ত তৃতীয় দিন রাত পৌনে চারটার দিকে কিবরিয়া সাহেবের নির্বাচনী প্রচারবহরকে অনুসরণ করে হাজির হলাম তাঁর শহরের বাসায়। তিনি ঢুকলেন। তার পিছনে শত শত নেতাকর্মী। আছেন অনেক সাধারণ মানুষও। তিনি নিজের ড্রয়িং রুমে ঢুকার পর আমি ও নিয়ন গেলাম সেই কক্ষের দিকে।

লোকে ভর্তি সেই কক্ষ। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে নিয়ন সালাম দিলেন, সঙ্গে আমি। তখনই নিয়ন নিজের পরিচয় দিয়ে আমাকে পরিচয় করে দিয়ে বললেন, বিপুল সাপ্তাহিক ২০০০-এ কাজ করেন। তিনি আপনার একটা সাক্ষাৎকার…

এ কথা শেষ করতে পারেননি নিয়ন। সঙ্গে সঙ্গেই অনেকটা রেগে গিয়ে শাহ এ এম এস কিবরিয়া বললেন, চলে যান আমি সাপ্তাহিক ২০০০ কে কোন সাক্ষাৎকার দেবনা। ওরা আমার বক্তব্য সব সময় বিকৃত করে ছাপে। টুইস্ট করে। আবারও বললেন, চলে যান।

আমি ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকলাম। পাশে থাকা নিয়ন আমাকে ধীরে ধীরে বললেন, চলেন যাই। সাক্ষাৎকার দিবেন না। আমি তাকে বললাম, আমি সাক্ষাৎকার না নিয়ে যাব না। মিনিট কয়েক পর দরজার সামনে থেকেই আমি বিনয়ের সঙ্গে বললাম, স্যার আমি আপনার এই আসনের প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর সাক্ষাৎকার নিয়েছি। আপনার সাক্ষাৎকারটা আমার লাগবে। আপনি যা বলবেন তাই লিখব। একটা শব্দও এদিক সেদিক হবে না। আপনি আমাকে সাক্ষাৎকারটা দেন।

কিছুটা সময় নিরব থেকে এম এস কিবরিয়া বললেন, আমি একটু আগে যা বলেছি সেগুলো ছাপতে পারবেন? যে, 'সাপ্তাহিক ২০০০ কিবরিয়ার বক্তব্য কখনই সঠিকভাবে ছাপে না। সব সময় বিকৃত করে ছাপে।'

কোন কিছু না বুঝেই দায়িত্ব নিয়ে বললাম, জ্বি স্যার, আপনার সাক্ষাৎকারের শুরুতেই এই বক্তব্য ছাপা হবে।

তারপর কিবরিয়া সাহেব তাঁর পাশে বসিয়ে আমাকে দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দিলেন। প্রথমেই বললেন, আপনি অর্থনীতি বুঝেন? বললাম, স্যার আপনি বুঝিয়ে দিলে বুঝব। অত্যন্ত চমৎকার করে প্রাঞ্জল ভাষায় কথা বলতে থাকলেন অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী শাহ এ এম এস কিবরিয়া। আমি মন্ত্রমুগ্ধের মত সেগুলো শুনে গেলাম।

বললেন, জানেন আমি কিভাবে মানুষকে ১০টা কেজি দরে চাল দিতে পারি? কেন মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দিবে? হবিগঞ্জের মানুষ কেন তাকে নির্বাচিত করবে? এরকম আরও অনেক বিষয়।

প্রশ্ন করেছিলাম যদি আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হয় তাহলে হবিগঞ্জে… প্রশ্নটা শেষ করতে পারিনি। কিবরিয়া সাহেব জবাব দিলেন, বৃহত্তর সিলেটের অন্য তিন জেলায় যদি একটি আসনও আওয়ামী লীগ জিততে না পারলেও হবিগঞ্জের চারটি আসন আওয়ামী লীগ জিতবে। তার সেই কথা সত্য হয়েছিল। হবিগঞ্জে চারটি আসনেই জিতেছিল আওয়ামী লীগ।

ফজরের আযান শেষ হতে চলছে। কিবিরয়া সাহেব একের পর এক কথা বলা যাচ্ছেন। যিনি এক ঘণ্টা আগেও সাপ্তাহিক ২০০০ কে সাক্ষাৎকার দিতে চাননি। তিনি দিব্যি কথা বলে যাচ্ছেন। আর আমি সেই কথা শুনে যাচ্ছি গভীর মনযোগের সঙ্গে।

এতো সুন্দর করে, বিনয়ের সঙ্গে একজন মানুষ কথা বলতে পারেন। কিবরিয়া সাহেবের সঙ্গে দেখা না হলে, তার কাছাকাছি না পৌঁছতে পারলে সেই সুন্দর, ও বিনয় থেকে সত্যিই বঞ্চিত হতাম।

গতকাল ছিল শাহ এ এম এস কিবিরয়ার মৃত্যু বার্ষিকী। ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জের বৈদ্যের বাজারে দলীয় এক সমাবেশে যোগ দিতে গেলে গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হন বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব সাবেক এই অর্থমন্ত্রী। তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। কিন্তু রাজধানীতে পৌঁছতে পৌঁছতেই ওপারে পাড়ি জমান দেশের উজ্জ্বল এই নক্ষত্র।

আজও তার হত্যার বিচার শেষ হয়নি। তার এই অস্বাভাবিক প্রয়াণের দিনে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা। একই সঙ্গে শুধু একটাই চাওয়া দ্রুত বিচার সম্পন্ন হোক। প্রকৃত অপরাধীদের সাজা হোক।

লেখক- সাংবাদিক

/এএস

Header Ad
Header Ad

নওগাঁয় দুলাভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে গ্রেপ্তার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে গ্রেপ্তার হলেন রাজশাহীর সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের এপিএস আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটুকে (৪০)। শুক্রবার (৯ মে) ভোর তিনটার দিকে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে উপজেলার চাকরাইল এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় টিটুকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে ওই বাড়ির মালিক আব্দুল ওহাব চৌধুরী সাগরকেও (৪৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

অপরদিকে একই দিনে পৃথক পৃথক অভিযান চালিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের আরও তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটু (৪০) রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের এপিএস এবং রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার রাণীবাজার এলাকার মৃত আব্দুল ওয়াদুদ খানের ছেলে। এছাড়া তিনি রাজশাহী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে।

অপরদিকে গ্রেপ্তার বাড়ির মালিক আব্দুল ওহাব চৌধুরী সাগর (৪৫) চাকরাইল এলাকার মৃত সাব্বির আহমেদ চৌধুরীর ছেলে।

অপর গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার আধাইপুর ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামের মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে এবং উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি ও ওই ইউনিয়নের মেম্বার আমিনুল ইসলাম উজ্জল (৪০), রাজাপুর এলাকার বাবুল হোসেনের ছেলে ও আওয়ামীলীগের সমর্থক মিলন হোসেন (৩৮) এবং বালুভরা ইউনিয়নের চকগোপালপুর গ্রামের মৃত অশোক কুমার সরকারের ছেলে ও আওয়ামীলীগের সমর্থক পুলকেশ সরকার (৫২)।

জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটু বাসার মালিক সাগর চৌধুরীর ভাই টিটুর সম্পর্কে বড় শ্যালক। সেই সুবাদে আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটু গত বুধবার রাতে বেড়াতে আসে। এরপর গোপনে সেখানে লুকিয়ে ছিল। বিষয়টি জানাজানি হলে ওই বাসা ঘেরাও করে রাখে স্থানীয় জনতা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে।

এদিকে গ্রেপ্তারকৃত ৫ জনের মধ্যে ৪ জনকে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তার দেখালেও বাড়ির মালিক সাগর চৌধুরীকে নিয়ে চলছে নাটকীয়তা। তাকে কোন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে তা নিয়ে চলছে আইনগত আলোচনা।

সকলকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, খবর পেয়ে শুক্রবার ভোর রাতে চাকরাইল এলাকায় সাগর চৌধুরীর বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এসময় ওয়াহেদ খান টিটুকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই সাথে বাড়ির মালিককেও গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া একই রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত ৫ জনের মধ্যে ৪ জনকে ঘটে যাওয়া ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আর বাড়ির মালিক সাগর চৌধুরীর ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তাকে নিয়ে আইনগত প্রক্রিয়া চলমান আছে।

উল্লেখ, গত বছরের ৫ নভেম্বর বদলগাছী উপজেলার গোবরচাঁপা হাট এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে (আজ) শুক্রবার তাদেরকে আদালতে পাঠানোর কথা রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

বাংলাদেশ সফরে আসছে না ভারত, অনিশ্চিত এশিয়া কাপ

ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের আগস্টে বাংলাদেশ সফরে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে আসার কথা ছিল ভারতের। পাশাপাশি সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় এশিয়া কাপ নিয়েও ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রত্যাশা ছিল তুঙ্গে। কিন্তু হঠাৎ করে বদলে যাওয়া ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এই সফর এবং এশিয়া কাপ উভয় ইভেন্টেই অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে।

ভারতীয় দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বিসিসিআই স্পষ্টতই জানিয়েছে—ভারত বাংলাদেশ সফর করবে না এবং এশিয়া কাপেও অংশ নেবে না। এ সময়টিতে বরং স্থগিত হয়ে যাওয়া আইপিএলের বাকি ম্যাচ আয়োজন করার পরিকল্পনা করছে তারা।

গতকাল (৮ মে) ধর্মশালায় পাঞ্জাব কিংস ও দিল্লি ক্যাপিটালসের মধ্যকার ম্যাচ চলাকালে হঠাৎ নিরাপত্তাজনিত কারণে ফ্লাডলাইট নিভিয়ে খেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে জানানো হয়, ম্যাচটি স্থগিত করা হয়েছে। এর আগে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সামরিক উত্তেজনা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে। ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বন্দুকধারীদের হামলার জবাবে ভারত পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যার পর পাকিস্তানও পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখায় বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ধর্মশালার ঘটনার পর আইপিএলের সব ক্রিকেটার ও স্টাফরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং ম্যাচ শেষে তারা তড়িঘড়ি করে সেখান থেকে বেরিয়ে যান। বিসিসিআই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাকেই এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

 

ছবি: সংগৃহীত

সূচি অনুযায়ী, আইপিএল চলতি মে মাসেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। এরপর জুনের শুরুতে ইংল্যান্ডে পাঁচ টেস্টের সিরিজ খেলতে যাওয়ার কথা রয়েছে ভারতীয় দলের। কিন্তু ধর্মশালার ঘটনার জেরে বিসিসিআই আইপিএলের অবশিষ্ট ১৬টি ম্যাচ পিছিয়ে দিয়ে পরে আয়োজনের চিন্তা করছে। এর ফলে জুন-সেপ্টেম্বর সময়টায় আন্তর্জাতিক সফর কিংবা এশিয়া কাপ আয়োজন সম্ভব নয় বলেই জানানো হয়েছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, বিসিসিআই এমনকি বাংলাদেশ সফর ও এশিয়া কাপ বাতিলের সিদ্ধান্তে নমনীয় হওয়ার কোনো ইঙ্গিতও দিচ্ছে না।

এ সিদ্ধান্ত দক্ষিণ এশিয়ার ক্রিকেটের জন্য একটি বড় ধাক্কা। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এবং এসিসি (এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল) হয়তো ভারত ছাড়া বিকল্প ব্যবস্থার চিন্তা করতে পারে, কিন্তু টুর্নামেন্টের আকর্ষণ ও বাণিজ্যিক গুরুত্ব ভারত ছাড়া অনেকটাই কমে যাবে।

Header Ad
Header Ad

আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল শাহবাগ, জনস্রোতে ভরপুর রাজপথ

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজপথ। হাজার হাজার ছাত্র, যুবক ও সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণে শুক্রবার (৯ মে) বিকেল থেকে এ অবরোধ শুরু হয়।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর আহ্বানে এ কর্মসূচি শুরু হয়। তিনি সকালে যমুনা ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “বাদ জুমা শাহবাগ ফোয়ারার সামনে জনসমুদ্র গড়ে উঠবে। আজ বোঝা যাবে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চায় কি না।”

বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে মিন্টো রোড থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগে পৌঁছে আন্দোলনকারীরা অবরোধ শুরু করেন। রাস্তার মাঝে বসে পড়ে তারা স্লোগানে স্লোগানে উত্তপ্ত করে তোলে চারদিক।

এ সময় ‘ব্যান ব্যান আওয়ামী লীগ’, ‘একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জেলে ভর’, ‘ফাঁসি চাই শেখ হাসিনার’—এমন নানা স্লোগান দিতে শোনা যায়।

অবরোধে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ছাত্রশিবির, আপ বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ইনকিলাব মঞ্চসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। বিকেল ৫টার দিকে আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদের নেতৃত্বে একটি বড় মিছিল শাহবাগে এসে যোগ দেয়।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বাংলামোটর দিক থেকে ঢাকা মহানগর শিবিরের শত শত নেতাকর্মী মিছিলসহ শাহবাগে এসে যোগ দেন এবং শিবির-শিবির স্লোগানে মুখর করে তোলেন মোড়টি।

এছাড়া কওমি মাদ্রাসার বিভিন্ন স্তরের ছাত্রদের উপস্থিতিও দেখা যায় বিক্ষোভস্থলে। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, “যতক্ষণ না আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকারিভাবে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না।”

অবরোধের কারণে শাহবাগ থেকে সায়েন্সল্যাব, বাংলামোটর, টিএসসি ও মৎস্যভবন অভিমুখে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এতে আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নওগাঁয় দুলাভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে গ্রেপ্তার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা
বাংলাদেশ সফরে আসছে না ভারত, অনিশ্চিত এশিয়া কাপ
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল শাহবাগ, জনস্রোতে ভরপুর রাজপথ
বিএনপি ছাড়া সব রাজনৈতিক দল এখন শাহবাগে: সারজিস আলম
শিক্ষার্থী পারভেজ হত্যায় গ্রেপ্তার টিনা ৩ দিনের রিমান্ডে
চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড ৪১.০২ ডিগ্রি সেলসিয়াস; বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ
কাশ্মীরে ফের বিএসএফের গুলি, ৭ পাকিস্তানি নিহত: দিল্লির দাবি বিচ্ছিন্নতাবাদী
নওগাঁয় ককটেল বিস্ফোরণে উড়ে গেল বাড়ির টিন
ভারত-পাকিস্তান সংঘাত ‘আমাদের বিষয় নয়’: যুক্তরাষ্ট্র
দেশের তীব্র তাপপ্রবাহ নিয়ে যা বলল আবহাওয়া অফিস
আ.লীগ নিষিদ্ধে গুরুত্বের সাথে সরকার বিবেচনা করছে: সরকারের বিবৃতি
টাঙ্গাইলে নাশকতা মামলায় আ.লীগ নেতা রাজ্জাকসহ ২ জন গ্রেফতার
অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত আইপিএল
এবার অপেক্ষা তারেক রহমানের ফেরার, চলছে জোরালো প্রস্তুতি
পদ্মার এক ইলিশের দাম সাড়ে ৮ হাজার টাকা
৫ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে থানায় নেওয়া হলো আইভীকে
জুমার পর যমুনার সামনে বড় জমায়েতের ডাক হাসনাত আব্দুল্লাহর
প্রথম আমেরিকান পোপ হলেন রবার্ট প্রিভোস্ট
একের পর এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল ভারত, সীমান্তজুড়ে ব্ল্যাকআউট
নিষিদ্ধ হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগ