বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২ আশ্বিন ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

রাজধানীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর এত দুরবস্থা কেন?

আমরা যখন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ি তখন একটি সিনেমার গান খুব হিট করেছিল, সিনেমার নামটি সম্ভবত ‘অশিক্ষিত’। নায়িকা গ্রাম থেকে ঢাকার সৌন্দর্য দেখে অভিভূত হয়েছে। গানটি ছিল ‘ঢাকা শহর আইসা আমার আশা ফুরাইছে, লাল লাল নীল নীল বাতি দেইখা পড়ান জুড়াইছে, মাটি ফাইটা বৃষ্টির পানি ঝরঝড়াইয়া পড়ে, আজব এই শহরে।’

আজব এই শহর! একবার একজন এনজিও নেতা বলেছিলেন নারী পল্লীতে অপুষ্টিতে ভোগা মেয়েরা ঠোঁটে লাল লিপস্টিক লাগিয়ে পুরুষ আকর্ষণের চেষ্টা করে কিন্তু তাদের শরীরে রয়েছে অপুষ্টির ছাপ। ঢাকা সিটির সেই সময়কার সাজানোকে অপুষ্টিতে ভোগা মেয়েদের ঠোঁটের লাল লিপস্টিকের সাথে তুলনা করেছিলেন উক্ত এনজিও কর্মী। আমরা তখন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সবেমাত্র বেরিয়েছি। এ সব কিছুই এখন পুরনো কথা। ঢাকায় শুধু লাল লাল নীল নীল বাতি নয়, এখানে রয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকার ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল। নির্মাণ করা হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, সিটির অনেক রাস্তাই এখন অর্ধ পশ্চিমা দেশের মতো, রয়েছে শত শত মাল্টিস্টোরেজ বিল্ডিং। গ্রামের অবস্থাও আগের মতো নেই। অনেক পরিবর্তন হয়েছে। পরিবহন ব্যবস্থাও উন্নত হয়েছে অনেক। এসব পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে একটি জায়গায় কিন্তু সেভাবে পরিবর্তন আসেনি আর সেটি হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষাক্ষেত্রে সুষম উন্নয়ন হয়নি।

অনেক উদাহরণের মধ্যে একটি উদাহরণ যদি আমরা লক্ষ্য করি তাহলে আবার সেই লিপস্টিকের কথা মনে পড়ে। এই ঢাকা সিটিতে ৩৪২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তার মধ্যে অনেকগুলোই টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি ছোট্ট ঘর, যেখানে ১০ থেকে ১২টি বেঞ্চ বসিয়ে পাঠদান কার্যক্রম চলে। অনেক বিদ্যালয়ে নেই খেলার মাঠ যা শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধির জন্য একান্ত জরুরি। অনেক বিদ্যালয়ে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নেই। নেই শৌচাগার এবং বর্ষাকালে মেঝেতে স্যাঁতসেঁতে হয়ে যায়। অনেক বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা নিজ উদ্যোগে এলাকাবাসীর সহায়তায় শৌচাগার নির্মাণ করেছেন। সমস্যা শুধু জরাজীর্ণ ভবনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, শিক্ষার সার্বিক আয়োজনেই অবহেলার ছাপ ষ্পষ্ট। শিক্ষানীতি অনুসারে বিদ্যালয়গুলোয় প্রতি ৩০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক থাকার কথা। কিন্তু গড়ে এই সংখ্যা ৪৫ জন, কোথাও কোথাও আরও বেশি।

বিদ্যালয়গুলোতে সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত দপ্তরি, নিরাপত্তা প্রহরী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও আয়া নেই। ব্যবস্থাপনা কমিটির বা স্থানীয় মানুষের অনুদানে সামান্য বেতনে কোনো কোনো বিদ্যালয়ে এ ধরনের কর্মী রাখা হয়েছে। বিদ্যালয়গুলো জরাজীর্ণ, মলিন ও অপরিচ্ছন্ন। মানে সর্বত্রই দারিদ্র আর অবহলোর ছাপ। বেশ কিছু বিদ্যালয়ের জমি ও অবকাঠামো বেদখল হয়ে গেছে। স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখল করে নিয়েছে। এভাবে শিক্ষার সব আয়োজনেই অবহেলার ছাপ বিদ্যমান। আর তাই্ সহজেই অনুমেয় এখানে কী ধরনের লেখাপড়া হয়, আর কোনো ধরনের সহশিক্ষা কার্যক্রম যে অনুষ্ঠিত হয় না— তাতো বুঝাই যাচ্ছে। আলো ঝিলমিল ঢাকা সিটিতে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য শিক্ষার এই ধরনের আয়োজন আমাদের অনেকটাই অবাক করে দেয়।

আমাদের সারাদেশে বর্তমানে ৬৫ হাজার ৬২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছে। এর মধ্যে রাজধানীতে রয়েছে ৩৪২টি। এর মধ্যে ২১টি বিদ্যালয়ের জমি ও চারটির ভবন বেদখল হয়ে যাওয়ার খবর পত্রিকায় দেখলাম। সংবাদটি আমাদের বিস্মিত করেছে, ছোট বাচ্চাদের বিদ্যালয় বেদখল অথচ কোনো উচ্চবাচ্য নেই!

বিষয়টি আমাদের অজানা নয় যে, ক্ষমতার ছত্রছায়ায় এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরাই দখলের কাজটি করে থাকেন। রাজধানীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে দৃষ্টিনন্দন ভবন নির্মাণের জন্য ১ হাজার ১৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার— যেটি একটি প্রশংসনীয় কাজ এবং এই প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু ২০২৩ সাল পর্যন্ত মাত্র ১০টি বিদ্যালয়ে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে, যা খুবই হতাশাব্যঞ্জক। পাশাপাশি এটিও বলতে হয় যে, বিশাল এক জনসংখ্যার শহর রাজধানী ঢাকা, এখানে মাত্র ৩৪২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কি যথেষ্ট? তার মানে কি আমরা বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষাকে উৎসাহিত করছি? যদি তাই করে থাকি, সেটি করলেও ভালোভাবে করতে হবে। পুরো শিক্ষার দায়িত্ব ও দেখভাল করা সরকারের একার পক্ষে যে সম্ভব নয় তা বহুবার এবং প্রতিদিনই প্রমাণিত হচ্ছে। অথচ বেসরকারি ব্যবস্থাপনা কিংবা সরকারি বেসরকারি যৌথ ব্যবস্থাপনায় শিক্ষা পরিচালনা করার উদাহরণ তৈরি করা প্রয়োজন। সেটি মুখের কথায় নয় বরং কাজে প্রমাণ করতে হবে। বেসরকারি সংস্থাগুলো যখন এসব কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে যায় তখন দেখা যায় সরকারি বাধা। বিষয়টিকে স্পষ্ট করা দরকার এবং রাষ্ট্রীয় একটি সঠিক নীতি থাকা দরকার যে, মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে বেসরকারি সংস্থাগুলো কী কী করতে পারে, কীভাবে করতে পারে। ছোট শিশুদের ঠকানোর অধিকার আমাদের নেই। উপযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষা পাওয়া তাদের অধিকার, আমরা তাদের এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারি না। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এ দুরবস্থায় প্রতীয়মান হয় দেশের অন্যান্য এলাকা, বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের বেশির ভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থাও ভালো নয়।

১৯৭৩ সালে প্রায় ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করার মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা হয়। ২০১৩ সালের দিকেও আবারও প্রায় ৩৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করা হয়। এগুলো অত্যন্ত প্রশংসনীয় পদক্ষেপ কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষক্ষেত্রে বৈষম্য বৃদ্ধি ও মানের উন্নয়নে আমরা এগুতে পারিনি। বিত্তবান ও সামর্থ্যবান মানুষ বিপুল অর্থ খরচ করে সন্তানদের বেসরকারি বিদ্যালয়ে পড়াচ্ছেন, সেটি কেবল ঢাকা সিটিতে কিংবা বড় বড় শহর ও জেলা শহরেই নয়, এটি গ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত। বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষাকেও আমরা পুরোপুরি অস্বীকার করতে পারব না, তা ছাড়া তুলনা করার জন্যও সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে শিক্ষা থাকাটা একেবারে অর্বাচীন কোনো সিদ্ধান্ত নয়। কিন্তু রাষ্ট্রীয় নীতি এখানে যাই থাকুক আমাদের শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে নিম্নআয়ের পরিবারের শিক্ষার্থীরা কিন্তু পিছিয়ে পড়ছে। কেউ কেউ বলছেন, রাজধানীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শোচনীয় অবস্থা হয়েছে মূলত দুটি কারণে।

প্রথমত, এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েরা পড়ে, তাই এগুলোর দিকে তেমন রাষ্ট্রীয় নজর নেই। দ্বিতীয়ত, স্থানীয় প্রভাবশালীরা চান না সেখানে সরকারি প্রাথমিকগুলো ভালোভাবে চলুক। সরকারি বিদ্যালয় উঠে গেলে তারা জামি ও ভবন অনায়াসে দখলে নিতে পারবে।

শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খেলার মাঠ, খেলাধুলা ও শরীরচর্চার আয়োজন জরুরি হলেও রাজধানীর ৩৪২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৫২টিতেই কোনো খেলার মাঠ নেই। সব মিলিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর এতোই দুরবস্থা যে সেখানে সন্তানদের ভর্তি করানোকে নিজেদের সম্মানহানি হিসেবে গণ্য করেন সচ্ছল অভিভাবকরা।

সেদিন একজন রিকশাচালকের সাথে কথা বলছিলাম। তার দুটো সন্তানই বেসরকারি বিদ্যালয়ে পড়ছে। আমি বললাম সরকারিতে পড়ালে তো কোনো টাকা লাগত না, তারপরও সেখানে পাঠাচ্ছেন না কেন? উত্তরে বললেন, ওইসব জায়গায় পাঠিয়ে ধরা খেয়েছি। কোনো পড়ালেখা নেই। আসলে এটিই তো বাস্তব কথা।

দিল্লির সরকারি বিদ্যালয়গুলোও একসময় জরাজীর্ণ ছিল। সংকট ছিল শিক্ষকের, শ্রেণিকক্ষ ও প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণের, শিক্ষার মান ছিল নিম্ন। ঢাকার মতো এ সব সরকারি বিদ্যালয়েও দরিদ্র ও নিম্নবিত্তরা ছাড়া আর কেউ তাদের সন্তানদের পাঠাতে চাইতেন না। কিন্তু পরিস্থিতির পরিবর্তন শুরু হয় ২০১৫ সালে আম আদমি পার্টি ক্ষমতায় আসার পর। তারা স্বাস্থ্য,পানি, বিদ্যুৎ ইত্যাদি পাবলিক সেক্টরগুলোর মতো শিক্ষা খাতেও যথাযথ গুরুত্ব প্রদান করতে থাকে। আম আদমি পার্টির লক্ষ্য ছিল দিল্লির সরকারি বিদ্যালয়গুলোকে এমনভাবে সংস্কার করা যেন সেখানে পড়তে আসা শিশুদের মধ্যে গরিবের বিদ্যালয়ে পড়ার হীনম্মন্যতা না থাকে। তারা জানে, ভারতের তীব্র প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনী ব্যবস্থায় জনগণের মন জয় করেই তাদের ক্ষমতায় থাকতে হবে। এ কারণেই স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিদ্যুৎ ও পানির মতো পাবলিক সার্ভিস বা সর্বজন খাতের উন্নয়নের গুরুত্ব তাদের কাছে অপরিসীম।

আমাদের দেশেও বিভিন্ন সেক্টরে প্রচুর উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে কিন্তু স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিদ্যুৎ ও পানির মতো সর্বজন খাতে সুলভে মানসম্পন্ন সেবা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা তৈরি হচ্ছে না। ফলে ক্রমাগত বাণিজ্যিকীকরণে এ সব খাত থেকে সুলভে মানসম্পন্ন সেবা পাওয়ার অধিকার থেকে জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে। এ ঘটনা ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও দিল্লির শিক্ষা মডেল বিষয়ে যেমন আগ্রহ তৈরি করেছে, ভারতের বাইরেও সরকারি বিদ্যালয়ের এই ঘুরে দাঁড়ানো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। ২০২২ সালের আগস্টে নিউইয়র্ক টাইমস এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন করেছে। শিরোনাম’ ক্লিন টয়লেটস’ ইন্সপায়র্ড টিচাস: হাউ ইন্ডিয়া’স ক্যাপিটাল ইজ ফিক্সিং ইটস স্কুল’।

সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমরা জানি থাকে না কোন টয়লেট, থাকলেও দুর্গন্ধে সেগুলোতে ঢোকা যায় না। পানির ব্যবস্থা থাকে না, সর্বত্রই থাকে অব্যবস্থাপনার ছাপ। যেগুলোর দিকে দিল্লি সরকার সঠিক নজর দিয়ে পরিবর্তন এনেছে যা থেকে আমাদের শিক্ষণীয় রয়েছে অনেক। যদি আমরা সেটি করতে ব্যর্থ হই তাহলে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপের মাধ্যমে কিংবা স্থানভেদে শুধু প্রাইভেট শিক্ষাকে কীভাবে মানসম্পন্ন করা যায় তার জন্য একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। এখন যে অবস্থায় চলছে এটিকে আমরা কোনোক্রমেই একটি সুষ্ঠু ও সার্বজনীন ব্যবস্থানা বলতে পারি না।

শিক্ষাব্যবস্থা এমন হওয়া প্রয়োজন যেন ভৌগলিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণে কাউকে যথাযথ শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে না হয়। জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এ সাংবিধানের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশে গণমুখী, সুলভ, সুষম, সর্বজনীন, সুপরিকল্পিত, বিজ্ঞানমনস্ক ও মানসম্পন্ন শিক্ষাদানে সক্ষম শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলা হলেও দেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা সেই লক্ষ্য থেকে বহু দূরে। এমনকি শিক্ষানীতিতে যে প্রাথমিক শিক্ষাকে সার্বজনীন, বাধ্যতামূলক, অবৈতনিক এবং সবার জন্য একই মানের করার কথা বলা হয়েছে, সেই প্রাথমিক শিক্ষাই অর্থনৈতিক, আঞ্চলিক ও ভৌগলিক বৈষম্যমুক্ত নয়। সরকারি, বেসরকারি এবং ইংরেজি মাধ্যমের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার খরচ ও মানে রয়েছে ব্যাপক তারতম্য, এমনকি শহরের সরকারি স্কুলের সঙ্গে গ্রামাঞ্চলের স্কুলগুলোর শিক্ষার আয়েজনেও রয়েছে বৈষম্য। জাতীয় বৃহত্তর স্বার্থে এই বৈষম্য দূর করা প্রয়োজন।

মাছুম বিল্লাহ: শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গবেষক

আরএ/

Header Ad

দুই মাসের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা পেল সেনাবাহিনী

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীসহ সারা দেশে দুই মাসের জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা পেয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রেষণ-২ শাখা থেকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হয়। প্রজ্ঞাপনে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সই করেন সিনিয়র সচিব জেতা প্রু।

এতে বলা হয়, দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮ এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী বর্ণিত অধিক্ষেত্রে ও সময়কালে সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো।

এতে উল্লেখ করা হয়, সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা কার্যকর করতে পারবেন। আর এই ক্ষমতা কার্যকর থাকবে প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত।

এদিকে রাজধানীসহ সারা দেশে দুই মাসের জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ঢাকাসহ সারা দেশে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে গত ১৯ জুলাই রাতে সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন ও কারফিউ জারি করে তৎকালীন সরকার। এরপর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। একপর্যায়ে ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এখনো সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।

শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল, চালু হচ্ছে কাজীপাড়া স্টেশন

ছবি: সংগৃহীত

আগামী সপ্তাহে আবারও চালু হচ্ছে মেট্রোরেলের কাজীপাড়া স্টেশন। সেই সঙ্গে আসছে শুক্রবারও (২০ সেপ্টেম্বর) মেট্রো চালু রাখার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। একইদিন থেকে কাজীপাড়া স্টেশনটি চালু করা হবে।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পর চলতি সপ্তাহ থেকে শুক্রবারও (২০ সেপ্টেম্বর) থেকে মেট্রোরেল চালানোর চেষ্টা চলছে। এই শুক্রবার থেকে মেট্রোরেল কাজীপাড়া স্টেশনটি পরিচালনার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার সময় গত ১৯ জুলাই মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে হামলা করে দুর্বৃত্তরা।

এরপর গত ২৫ আগস্ট মেট্রোরেলের কার্যক্রম পুনরায় শুরু হলেও এই দুটি স্টেশনে কোনো ট্রেন থামতে পারছে না। ৫ আগস্টের আগে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার জানিয়েছিল এ দুটি স্টেশন চালু হতে এক বছরের মতো সময় লাগবে।

মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, “যাত্রীদের জন্য দুটি স্টেশন প্রস্তুত করতে কর্তৃপক্ষ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।”

গতিশীল প্রবাসী আয় রিজার্ভের পতন ঠেকাচ্ছে: বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি: সংগৃহীত

প্রবাসী আয়ের (রেমিট্যান্স) প্রবৃদ্ধির কল্যাণে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চিতি বা রিজার্ভের ক্ষয়রোধ (পতন ঠেকানো) করা সম্ভব হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

হুসনে আরা শিখা বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) হিসাবায়ন পদ্ধতি অনুসারে, রিজার্ভ এখন ২০ বিলিয়নের (বিপিএম৬) কাছাকাছি এবং বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত বিভিন্ন তহবিলসহ বা গ্রস রিজার্ভ ২৪ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার।

‘প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধি বেশি হওয়ার কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্ষয় রোধ সম্ভব হচ্ছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের চেয়ে এটি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ৬০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আর চলতি বছরে জুলাইয়ের চেয়ে আগস্টে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ। ’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, আন্তঃব্যাংকিং ফরেন এক্সচেঞ্জ সক্রিয় করা হয়েছে। এখন ব্যাংকগুলো নিজেরা কেনা-বেচা করতে পারছে। এক্ষেত্রে ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করা হয়েছে। ডলারের দাম এখন ১১৮ থকে ১২০ টাকার বেশি হবে না। আর খোলা বাজারে ডলারে দাম ব্যাংকিং চ্যানেলের চেয়ে ১ শতাংশের বেশি হতে পারবে না।

আন্তঃব্যাংক লেনদেন সক্রিয় থাকার কারণে ফরেন এক্সচেঞ্জ স্থিতিশীল থাকবে বলেও জানান মুখপাত্র হুসনে আরা।

সর্বশেষ সংবাদ

দুই মাসের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা পেল সেনাবাহিনী
শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল, চালু হচ্ছে কাজীপাড়া স্টেশন
গতিশীল প্রবাসী আয় রিজার্ভের পতন ঠেকাচ্ছে: বাংলাদেশ ব্যাংক
রংধনু গ্রুপের পরিচালক মিজান গ্রেপ্তার
‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে’ প্রধান উপদেষ্টার ১০০ কোটি টাকার অনুদান
অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না: তারেক রহমান
দুবাইফেরত যাত্রীর সাবান-শ্যাম্পু হাতিয়ে বরখাস্ত ৩ কর্মকর্তা
সাবেক রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলামের রিমান্ড স্থগিত
ভাইরাল হওয়া মালা খানের স্বামী ও দুই মেয়ে থাকেন কানাডায়, ঢাকায় আছে গরু-ছাগলের খামার!
পদত্যাগ করলেন ভারতের দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল
যে গ্রামের নাম শুনলেই ভেঙে যায় বিয়ে, মেলে না চাকরি!
এখনই রাজনৈতিক দল খোলার কোনো অভিপ্রায় আমাদের নেই : উপদেষ্টা আসিফ
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে ভারত আগ্রহী: জয়শঙ্কর
আইসিসির লেভেল ৩ কোচ হলেন মোহাম্মদ আশরাফুল
নেতাকর্মীদের প্রতি আওয়ামী লীগের দুই নির্দেশনা
ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে সরকারের সহায়তা চায় এস আলম গ্রুপ
ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে মধুমিতা, দুমড়েমুচড়ে গেছে গাড়ি
মিস সুইজারল্যান্ডকে হত্যার পর দেহ টুকরো টুকরো করে মিক্সারে ব্লেন্ড করলেন স্বামী
আশুলিয়ায় পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সংঘর্ষ, নিহত ১
২৬ সেপ্টেম্বর কী ঘটবে, কেন এত আলোচনা!