রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Dhaka Prokash

শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করে দিয়েছে: খসরু

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগ আজকে কোন রাজনৈতিক দল নেই, এরা বিক্রি হয়ে গেছে অফিসারদের কাছে, পুলিশের কাছে, দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীর কাছে। এদের কোন রাজনৈতিক ভবিষ্যত নেই। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে ধ্বংস করে দিয়েছে। আমাদের নেতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান আমাদেরকে বলীয়ান করেছে, শক্তিশালী করেছে, ইমানদার করেছে। এই জন্যই আমাদের আগামী নির্বাচনে জয় হবে। তাদের পরাজয় হতে বাধ্য। অপশক্তি, দুর্নীতিবাজ, কর্তৃত্বপরায়ণ কোন দিন জনগণের সামনে দাঁড়াতে পারেনা।

শনিবার (২৭ মে) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে উচ্চ আদালতের নির্দেশনাকে অধীনস্থ আদালত ও সরকারের অবজ্ঞা, গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলা ও পুলিশী হয়রানি, আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে নোয়াখালী প্রেসক্লাব সড়কে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবদুর রহমানের সঞ্চালনায় ও জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি এর সভাপতিত্বে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

খসরু বলেন, আমেরিকার ভিসা নীতিমালা এসেছে। তারা বারবার বলার পরও সরকার তাদের কথা শুনছেনা। সরকার বিরোধী দলের নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করছে, নিপীড়ন নির্যাতন চালাচ্ছে। গুম, খুন, মিথ্যা মামলা বন্ধ হচ্ছেনা। সুতরাং ভালো হয়ে যাওয়ার জন্য সাত মাস আগে স্যাংশন দিয়েছে আমেরিকা। যাতে করে বাংলাদেশের মানুষ নির্দ্বিধায় নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারে। তারা যাতে নির্বিঘ্নে সভা সমাবেশ করতে পারে। সরকার যেন বাক স্বাধীনতা বন্ধ করতে না পারে। গণমাধ্যমের বাক স্বাধীনতা, সুশীল সমাজের বাক স্বাধীনতা, বিরোধী দলের বাক স্বাধীনতা বন্ধ করতে না পারে। যাতে করে প্রত্যেকটি ভোটার মুক্ত পরিবেশে রাস্তায় থেকে তার নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারে।

আমির খসরু আরও বলেন, আমেরিকার স্যাংশন প্রকাশের পর প্রধানমন্ত্রী আবোল তাবোল বকাবকি করছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ইঙ্গিত করে বলেন, আপনাদের এলাকার কিছু মন্ত্রীও আছে। এ সমস্ত নাম আমি মুখে আনিনা। আপনারাও আনবেননা। আমাদের সময়ের দাম আছে, সময় নষ্ট করবেননা। আমাদের হাতে অনেক কাজ আছে। বাংলাদেশে নির্বাচন হবে। শেখ হাসিনার পতনের পরে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যে নির্বাচন হবে,শুধু বিএনপি নয়, এ দেশের ১৮ কোটি মানুষ ওই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে। অংশ গ্রহণ করে অনির্বাচিত শেখ হাসিনা সরকারের পতন করে ১৮ কোটি মানুষ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে। এ অনির্বাচিত সরকারকে সাগরের ঢেউয়ের মত ভাসিয়ে নিয়ে যাবে জনগণ।

আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ওরা জানে এ জন্য তলে তলে কাজ করছে যেন তাদের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে। এ খেলা চলবেনা। সরকারের কিছু দালাল গণমাধ্যমে আছে, রাজনীতির মাঠে কিছু দালাল আছে, পেশাজীবীদের মধ্যে কিছু দালাল আছে, তথা কথিত বুদ্ধিজীবী আছে। এরা শুধু কোন মতে বিএনপিকে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে নিয়ে যাওয়ার জন্য তালবাহানা করছে। পরিষ্কার করে বলতে চাই, শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশের কোন নির্বাচনে বিএনপি যাবেনা। বিএনপি না গেলে তারা নির্বাচন করুক।

এ সময় তিনি আরও বলেন, আমাদের সাথে বাংলাদেশের জনগণ আছে। তাদের সাথে আছে আওয়ামী পুলিশ, আওয়ামী সরকারি কর্মকর্তা, আওয়ামী দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী, আওয়ামী দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবীদ। যে দেশের মানুষ নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য সিন্ধান্ত নিয়ে ফেলে সে দেশের মানুষের সামনে কেউ দাঁড়াতে পারেনা। বাংলাদেশের মানুষ সিন্ধান্ত নিয়েছে শেখ হাসিনার অনির্বাচিত সরকারকে বিদায় দেওয়ার জন্য। আমরা কেন জিতব জানেন। বিএনপির নেতাকর্মীরা জ্বলে পুড়ে খাটি সোনায় পরিণত হয়েছে। আর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা লুটপাট করে পেট বড় হয়ে গেছে। পেটের ওজনে তারা হাঁটতে পারছেনা। আর আমরা সবাই ফিট। ফিট পর ফাইট।

আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশের প্রসঙ্গ টেনে এ নেতা বলেন, তাদের শান্তি সমাবেশে আছে কেউ। শান্তি সমাবেশে যতজন আওয়ামী লীগের লোক তার থেকে পুলিশ বেশি। কি একটা অবস্থা, কি দূর অবস্থা, কি অসহায় অবস্থা। আগামী দিনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সৃষ্টি করতে হবে। গণতান্ত্রিক অর্ডার, নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। তারপর থেকে শুরু হবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া। আমি আগেও বলেছি বিএনপি অবশ্যই নির্বাচনে যাবে। তবে আমরা অবশ্যই জয়ী হব। যারা জিতবেনা তারা নির্বাচনে ভোট চুরির প্রকল্প করেছে। এসব প্রকল্প ভেঙ্গে দিতে হবে, স্বমূলে ধ্বংস করে দিতে হবে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। বিএনপি ওই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করবে। লেভল প্লেয়িং করার জন্য অবশ্যই খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। যত কারাবান্দি আছে সবাইকে মুক্তি দিতে হবে।

অবৈধ অস্ত্রের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, অবৈধ অস্ত্র যাদের আছে তারা এমনিতেই পালিয়ে যাবে। যারা অস্ত্র বহন তারা সব চেয়ে বড় ভিতু। আমাদের অস্ত্র হচ্ছে মনোবল। আপনারা মনোবল নিয়ে এগিয়ে যাবেন অস্ত্রবাজ পালিয়ে যাবে। যারা এই ন্যায় নীতির আন্দোলনকে বাধা গ্রস্থ করবে তারাও পালিয়ে যাবে।

দ্রব্যমূল্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ আজকে দু'বেলা খেতে পারছেনা। ৩০ শতাংশ লোক দু'বেলা খেতে পারছেনা, ৬০ শতাংশ লোক ধারদেনা করে চলছে। অনেকে দু'বেলার মধ্যে এক বেলা মাছ খেতে পারে। অনেকে সপ্তাহে একবার মাছ খেতে পারে। এ পয়সা কোথায় যাচ্ছে। আওয়ামী সিন্ডিকেটের পকেটে, ব্যাংক, শেয়ার বাজার, লুটপাটের টাকা যাচ্ছে আওয়ামী সিন্ডিকেটের পকেটে। এই সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিতে হবে। আজকে তারেক রহমানের নেতৃত্বে লক্ষ জনতা রাস্তায় নেমেছে। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হচ্ছে, আমাদের ১৭জন নেতাকর্মীকে মেরে ফেলা হয়েছে। এসব কর্মের সাথে যারা জড়িত তাদের তালিকা করুন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য জয়নাল আবেদিন ফারুক, বিএনপি যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, নোয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য মোহাম্মদ গোলাম মোমিত ফয়সাল প্রমূখ।

/এএস

Header Ad

নওগাঁয় পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণ গেল ২ শিশুর

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁয় পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রোববার (১৯ মে) দুপুরে জেলার পোরশা ও মহাদেবপুর উপজেলায় পৃথক সময়ে এ দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতরা হলো- পোরশা উপজেলার নিতপুর মনোহরপুর গ্রামের রুবেল ইসলামের ছেলে লালচাঁন ইসলাম (৭) এবং মহাদেবপুর উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের বুজরুক বড়াইল গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে সিফাত হোসেন (১২)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়- রোববার দুপুরে রুবেল ইসলাম তার ছেলে লালচাঁনকে সাথে নিয়ে পোরশা উপজেলার কপালী মোড় পোশাকসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্যে আসেন। এসময় রাস্তা পারাপারের সময় মাসুদ বিড়ি বহনকারি একটি অটোরিশার লালচাঁনকে ধাক্কা দেয়। এতে লালচাঁন গুরুত্বর আহত হয়ে রাস্তার ওপর ছিটকে পড়ে যায়। ঘটনাটি দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পোরশা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতিয়ার রহমান জানান, সংবাদ পেয়ে অটোরিকশার চালক আবুল কালামকে আটকসহ অটোরিকশাটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
অপরদিকে, রোববার বিকেল ৫টার দিকে মহাদেবপুর উপজেলার নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের রানীপুকুর মাদ্রাসার অদূরে বাস চাপায় সিফাত হোসেন নামে শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ফয়সাল হোসেন নামের আরেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। নিহত সিফাত হোসেন মহাদেবপুর উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের বুজরুক বড়াইল গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে এবং রানিপুকুর ক্বেরাতুল কুরআন ক্বওমী মাদ্রাসার কিতাব বিভাগের ছাত্র।

মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুহুল আমিন দূর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিএনপি নেতা ইশরাককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ‘ভুয়া উপদেষ্টাকাণ্ডে’র মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনের জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।

রোববার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এই আদেশ দেন।

ইশরাকের আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ বলেন, এ মামলায় ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছিলেন ইশরাক। সেই সময় শেষ হতে চলায় গত ২৩ এপ্রিল তিনি জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন।

ইশরাক হোসেন পল্টন থানাসহ ১২টি মামলায় স্থায়ী জামিন আবেদন করেন। আদালত ১১ মামলায় জামিন মঞ্জুর করেন। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টাকাণ্ডের ঘটনায় পল্টন থানার মামলায় তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

আদেশের প্রতিক্রিয়ায় ইশরাক বলেন, হাই কোর্টথেকে জামিনে থাকলে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও বেশিরভাগ মামলাতেই আদালত জামিন দিয়ে দেন। কিন্তু একটায় আটকানো হল আমাকে। এটা উদ্দেশ্যমূলক। সরকার তো গোটা দেশটাকেই কারাগার বানিয়ে ফেলেছে।

গত ২৯ অক্টোবর মহিউদ্দিন শিকদার নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন থানায় এ মামলা করেন। মামলায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘উপদেষ্টা’ পরিচয় দিয়ে বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা মিঞা জাহিদুল ইসলাম আরেফীর পাশাপাশি অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশ উপলক্ষে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। ওইদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে কাকরাইল মোড় থেকে আরামবাগ মোড় পর্যন্ত সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।

সে সময় বিচারপতির সরকারি বাসভবনসহ সরকারি স্থাপনা ও গাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিএনপিকর্মীরা। তাতে পুলিশের ৪১ সদস্য আহত ও এক সদস্য নিহত হন। এক পর্যায়ে বিকাল ৩টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা মহাসমাবেশ স্থগিত ঘোষণা করেন।

এজাহারে বলা হয়, বিএনপির ওই কর্মকাণ্ডের পর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে আসামি জাহিদুল ইসলাম আরেফী, চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে ২০ জন নেতাকর্মী কিছুসংবাদমাধ্যমের সামনে উপস্থিত হন। মে সময় আরেফী নিজেকে বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেন। বাংলাদেশ পুলিশ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন ও বিচার বিভাগের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তার সরকারের কাছে সুপারিশকরেছেন বলে তিনি বক্তব্য দেন।

এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, মামলার ২ নম্বর আসামি হাসান সারওয়ার্দী এবং ৩ নম্বর আসামি ইশরাক হোসেন আরেফীকে ‘মিথ্যা বক্তব্য দিতে সহযোগিতা’ করেন এবং তার বক্তব্য সমর্থন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিতে ‘উসকানি’ দেন।

ঘুষের দর-কষাকষির অডিও ভাইরাল, ফেঁসে যাচ্ছেন এএসআই

ছবি: সংগৃহীত

বাদীপক্ষের কাছে টাকা দাবি ও বিবাদীদের কাছ থেকে ঘুষ আদায়ে দরকষাকষির অডিও ক্লিপ ভাইরালের পর ফেঁসে যাচ্ছেন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার আসমানখালী পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আলতাফ হোসেন। এ ঘটনার একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ইতোমধ্যে ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নাজিম উদ্দিন আল আজাদ। 

এর আগে গত ১৩ মে এএসআই আলতাফ হোসেনের বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপারের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দেন আলমডাঙ্গা উপজেলার শালিকা গ্রামের আফরোজা খাতুন নামে এক ভুক্তভোগী নারী। এরপরই পুলিশ সুপার অভিযোগটি আমলে নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নাজিম উদ্দিন আল আজাদকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

ভুক্তভোগী নারী আফরোজা খাতুন বলেন, দীর্ঘ ৫ বছর যাবত আমার স্বামী আতিয়ার হোসেন অসুস্থতার জন্য কোনো কাজকর্ম করতে পারেন না। তিন ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে আমাকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। কখনো দর্জির কাজ ও পাড়া-মহল্লার বাড়ির কাঁথা সেলাই করে সংসার চালিয়েছি। গত ১০ মাস যাবত স্থানীয় একটি বেসরকারি এনজিওতে (বীজ) রান্নার কাজ করছি। এ কাজ করি বিধায় আমার দেবর আক্তার আলী ও মেজো ভাশুর হাশেম আলী আমাকে নিয়ে স্বামীকে বিভিন্নভাবে ভুল বোঝাতে থাকেন। তারা আমার স্বামীকে বলেন, আফরোজার জন্য আমাদের মানসম্মান চলে গেল, সে খারাপ কাজ করে বেড়ায়। তাদের কথা শুনে আমার স্বামীও আমাকে অশালীন কথাবার্তা বলতে থাকেন। এ ঘটনার জের ধরে গত ৯ মে আমার দেবর ও মেজো ভাশুর হত্যার উদ্দেশ্যে বাড়িতে আসেন। প্রাণ রক্ষার্থে আমিসহ দুই নাবালক সন্তান আরেফিন রহমান (১৭) ও আল মেরাজকে (১২) নিয়ে ঘরের দরজা আটকে দিই। পরে ঘরে ঢুকতে না পেরে চাইনিজ কুড়াল ও হাঁসুয়া দিয়ে টিনের বেড়া এলোপাতাড়ি কুপিয়ে চলে যান তারা। 

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার পরদিন অর্থাৎ ১০ মে আমার বড় ছেলে আরেফিন বাড়িতে এসে তার বাবাকে বিষয়টি নিয়ে বলছিল। আমিসহ আমার অপর দুই সন্তান উপস্থিত ছিলাম। এ সময় আমার দেবর ও মেজো ভাশুর লোহার রড, লোহার পাইপ নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করেন। আমাকেসহ আমার তিন সন্তানকে বেধড়ক মারপিট করেন। পরবর্তীতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে মেজো ছেলেকে ভর্তি করি এবং আমার বড় ছেলেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। ঘটনার দিন ১০ মে আমার স্বামী, দেবর ও মেজো ভাসুরের বিরুদ্ধে আসমানখালী ক্যাম্পে একটি অভিযোগ দায়ের করি। ক্যাম্পের পুলিশ উভয় পক্ষকে ডেকে আপস-মীমাংসা করে দেয়। এরপর আমি আমার সন্তানদের নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিবাদীরা আমাদেরকে ঢুকতে দেননি। দুই নাবালক সন্তানকে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় খেয়ে না খেয়ে দুইদিন ঘুরেছি। আমার বড় ছেলে ২০২২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিল। সামনে তার এইচএসসি পরীক্ষা। এমন অবস্থায় তার লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

আফরোজা খাতুন বলেন, গত ১৩ মে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আসানখালী ক্যাম্পের এএসআই আলতাফ হোসেন আমার বাড়িতে এসে আমাকে না পেয়ে আমার বড় জা, তার পুত্রবধূ ও তার মেয়ের সঙ্গে আমার নামে অশালীন ভাষায় কথাবার্তা বলেন এবং নগদ ২০ হাজার টাকা নিয়ে আসমানখালী ক্যাম্পে দেখা করার জন্য বলেন। আমি একজন অসহায় গরিব মানুষ, আমার পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব না। সে কারণে সঠিক বিচারের আশায় বড় স্যারের (পুলিশ সুপার) নিকট অভিযোগ করেছি।

এদিকে এ ঘটনার একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অডিও ক্লিপটিতে এএসআই আলতাফ হোসেন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ কয়েকজনের কণ্ঠ শোনা যায়। এএসআই আলতাফ হোসেনকে বলতে শোনা যায়, ‘এই মানুষই ভালো করে, আবার এই মানুষই খারাপ করে। আমি যেভাবে বলব সেভাবে হবে।’ এমন কথা বলার পর ৫০ হাজার টাকা দাবি করতে শোনা যায় এএসআই আলতাফ হোসেনকে। এ নিয়ে দর-কষাকষি হতে থাকে। 

এএসআই আলতাফ হোসেন বলেন, ‘আমার একটা পাওয়ার আছে, সার্কেল স্যার আমার কাছের লোক (চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান)। তাকে আমি বুঝ দিতে পারব। আমার ব্যাকআপ কিন্তু সে।’   

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে এএসআই আলতাফ হোসেন ঢ বলেন, ঘটনাটি সত্য নয়। এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। 

চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নাজিম উদ্দিন আল আজাদ বলেন, পুলিশ সুপারের নির্দেশে অভিযোগটির তদন্ত চলছে। ভাইরাল অডিও ক্লিপটিতে থাকা ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তারা প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। অভিযুক্ত এএসআই আলতাফ হোসেন বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তার দাবি অডিও ক্লিপটি এডিট করা। প্রয়োজন হলে আমরা অডিও ক্লিপটি ফরেনসিকে পাঠাব। দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন পুলিশ সুপারের নিকট জমা দেওয়া হবে।

সর্বশেষ সংবাদ

নওগাঁয় পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণ গেল ২ শিশুর
বিএনপি নেতা ইশরাককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
ঘুষের দর-কষাকষির অডিও ভাইরাল, ফেঁসে যাচ্ছেন এএসআই
দুর্ঘটনার কবলে ইরানের প্রেসিডেন্ট রইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার
১৭ মন্ত্রী-এমপির স্বজন চেয়ারম্যান প্রার্থী: টিআইবি
দ্বিতীয় ধাপে টাঙ্গাইলে ৩ উপজেলায় নির্বাচন, আইন-শৃংখলা রক্ষায় জেলা পুলিশের ব্রিফিং
মিশা-ডিপজল দুজনেই মূর্খ: নিপুণ
পুকুর খননের মাটির ভেতর থেকে মিলল কষ্টি পাথরের লক্ষ্মী-নারায়ন মূর্তি
ভারতে গিয়ে নিখোঁজ ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য
কালশীতে পুলিশ বক্সে আগুন দিল অটোরিকশাচালকরা
‘পৃথিবী থেকে বিদায়,ভালো থাকো সবাই, সব শেষ আমার’ লিখে ফেসবুকে পোষ্ট দিয়ে যুবকের আত্নহত্যা
মেট্রোরেলের উত্তরা-টঙ্গী রুটে হবে পাঁচ স্টেশন
টাঙ্গাইলে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে প্রাণ হারালো রাজমিস্ত্রী
পৃথিবীতে ধেয়ে আসতে পারে আরও ভয়ানক সৌরঝড়
পাকিস্তানে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ১৪ জন নিহত
স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ঈদের আগেই মসলার বাজার গরম, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির অযুহাত ব্যবসায়ীদের
বান্দরবানে সেনাবাহিনীর অভিযানে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত
বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা কংগ্রেসের ভোটব্যাংক : অমিত শাহ
কারও কাছে ভিক্ষা করে দেশের মানুষ চলবে না : প্রধানমন্ত্রী