শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫ | ১৪ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

আন্তর্জাতিক ও কূটনীতিক মহলে বাড়ছে তারেক রহমানের গুরুত্ব

বিএন‌পির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ও তার সরকারের পতনের পর দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন বিভিন্ন প্রভাবশালী দেশ ও কূটনীতিকরা।

গত কয়েকদিনে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথেরিন কুকসহ বেশ কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পৃথক এসব বৈঠকে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা বিএনপির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও দলটির অবস্থান জানার চেষ্টা করছেন।

এসব বৈঠকে অংশ নেওয়া বিএনপির সংশ্লিষ্ট নেতারা বলেন, দল ঘোষিত ৩১ দফার ওপর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে বিএনপির বর্তমান অবস্থান জানানো হয়েছে। বিশেষ করে বিএনপি আগামীতে সরকার গঠন করলে জাতীয় সরকার ব্যবস্থায় দেশ পরিচালনা এবং দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট ব্যবস্থা সংবিধানে সংযুক্ত করাসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা স্থান পায়। অনেক দেশই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্পর্কে জানার আগ্রহ দেখিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা দেখিয়ে তার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নসহ একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহের কথাও জানিয়েছে।

সংবিধান ও রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কার এবং অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে গত বছরের ১৩ জুলাই ৩১ দফা রূপরেখা ঘোষণা করে বিএনপি, যা ঘোষণার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার পাশাপাশি প্রশংসাও পায়। ফের নতুনভাবে আলোচনায় এসেছে বিএনপির রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের বিষয়টি। এখন রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের সেই ৩১ দফা শুধু মুখের কথায় সীমাবদ্ধ না রেখে তার অর্থবহ বাস্তবায়নও চায় বিএনপি। এ লক্ষ্যে দলের বিভিন্ন ফোরামে কথা বলছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। পাশাপাশি নানাভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছেও রাষ্ট্র সংস্কারে এই রূপরেখার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। বিএনপি আগামীতে সরকার গঠন করলে সেই ৩১ দফা বাস্তবায়নই হবে মূল লক্ষ্য। কয়েকদিন ধরে দলের ধারাবাহিক মতবিনিময় সভায় জনগণের সমর্থন নিয়ে জাতীয় সরকার ব্যবস্থায় দেশ পরিচালনা ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট সংবিধানে সংযুক্ত, একজন ব্যক্তি দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়াসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বিষয়ে ইতিবাচক বক্তব্য দিচ্ছেন তারেক রহমান।

রাষ্ট্র মেরামতে ঘোষিত ৩১ দফা শুধু কথার কথা নয়; এর বাস্তবায়ন চায় বিএনপি। এ লক্ষ্যে দলীয় বিভিন্ন ফোরামে দলের নীতিনির্ধারকরা বিষয়টির পক্ষে ব্যাখ্যা প্রদানসহ দলের অবস্থান তুলে ধরছেন। গত কয়েক দিন ধরে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময় সভায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও এ বিষয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা তারেক রহমানের বক্তব্যের পর বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন।

দলটির নেতাকর্মীরা মনে করছেন, তারেক রহমান একজন ডায়নামিক ও আইকনিক নেতা, যা গত ১৬ বছরে তিনি প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছেন।

সম্প্রতি রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তার বক্তব্য, কথা বলার ধরন ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞা বিএনপিকে বিশ্বদরবারে উঁচু স্থানে নিয়ে গেছে।

সর্বশেষ গত বুধবার ঢাকা বিভাগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন তারেক রহমান। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে গত বছর আন্দোলন চলাকালে রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে প্রথমে ২৭ দফা এবং পরবর্তী সময়ে ৩১ দফা ঘোষণা করা হয়। তখন অনেকেরই ধারণা ছিল, এটা কথার কথা। কিন্তু গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পর এক নতুন তারেক রহমানকে দেখতে পাচ্ছি। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তার বক্তব্যে নেতাকর্মীরা মুহূর্তের মধ্যেই শান্ত হয়েছেন। আর কোনো ফ্যাসিবাদ যেন রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে দখল করতে না পারে, সেজন্য রাষ্ট্র সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করে বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন।

২০২৩ সালের ১৩ জুলাই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখা ঘোষণা করেন। যার ৬নং দফায় বলা আছে, বিদ্যমান সংসদীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের সমন্বয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার লক্ষ্যে দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী ও প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে সংসদে ‘উচ্চ-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভা’ (আপার হাউস অব দ্য লেজিসলেচার) প্রবর্তন করা হবে। মূলত দেশের জনগণের হাতেই দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে জয়লাভের পর বর্তমান সরকার (আওয়ামী লীগ) হটানোর আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে একটি ‘জনকল্যাণমূলক জাতীয় ঐকমত্যের সরকার’ প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে বিএনপি জানায়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. নূরুল আমীন বেপারি বলেন, বিএনপি ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র সংস্কারে ৩১ দফা অত্যন্ত সময়োপযোগী ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন, যা বিদেশিদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। এটি বাস্তবায়নের জন্য দলের ভেতরেও গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে। এ কথা সত্য যে, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপি জনগণের বিপুল ভোটে ক্ষমতায় আসবে। সুতরাং সেভাবেই এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত একতরফা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। একপর্যায়ে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখা নিয়ে ব্যাপকভাবে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে চায় দলটির হাইকমান্ড। রূপরেখাটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তুলে ধরতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৩১ দফার প্রতিটি দফা নিয়ে সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম আয়োজন করার পরিকল্পনা হয়। পাশাপাশি রাষ্ট্র মেরামতের এ রূপরেখায় কিছু সংযোজন-বিয়োজনের প্রয়োজন আছে কি না, সে বিষয়ে পেশাজীবী ও সুধী সমাজের মতামত নেওয়ার চিন্তা করা হয়। যার মুখ্য ভূমিকায় থাকবে দলের মিডিয়া সেল। এসব পরিকল্পনা নিয়ে একাধিকবার মিডিয়া সেলের সদস্যদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন তারেক রহমান।

জানতে চাইলে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান গণমাধ্যমকে বলেন, দেশের মালিকানা দেশের জনগণের হাতেই ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সবার মতামতের ভিত্তিতে ৩১ দফা রূপরেখা ঘোষণা দিয়েছেন। যেমনটি দেশ ও জনগণের প্রয়োজনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯ দফা ঘোষণা করেছিলেন। সবমিলিয়ে ৩১ দফাকে সামনে রেখে এগোলে বাংলাদেশ হবে একটি দৃষ্টান্ত। বিএনপি জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সরকার গঠন করলে সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ।

 

বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফা 

১. সকল মত ও পথের সমন্বয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, বৈষম্যহীন ও সম্প্রীতিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। এজন্য আলোচনা, মতবিনিময় ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে ভবিষ্যৎমুখী একটি নতুন ধারার সামাজিক চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে। এজন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে।  

২. গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে একটি  ‘নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে।

৩. সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী সভার নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা হবে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের ক্ষমতা, দায়িত্ব ও কর্তব্যের সমন্বয় করা হবে।

৪. পরপর দুই টার্মের অতিরিক্ত কেউ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবে না।

৫. বিদ্যমান সংসদীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের সমন্বয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার লক্ষ্যে দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী ও প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে সংসদে ‘উচ্চকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা’ প্রবর্তন করা হবে।

৬. আস্থাভোট, অর্থবিল, সংবিধান সংশোধনী বিল ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত এমন বিষয় ছাড়া অন্য সব বিষয়ে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে মতামত প্রদানের সুযোগ নিশ্চিতের লক্ষ্যে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করার বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে। 

৭. রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত ও বিশিষ্টজনের মতের ভিত্তিতে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে বর্তমান ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ সংশোধন করা হবে। ইভিএম নয়, সকল কেন্দ্রে পেপার-ব্যালটের মাধ্যমে ভোট প্রদান নিশ্চিত করা হবে। রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন সংস্কার করা হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার বাতিল করা হবে।

৮. রাষ্ট্রীয়, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এসব প্রতিষ্ঠান আইনি সংস্কারের মাধ্যমে পুনঃগঠন করা হবে। শুনানির মাধ্যমে সংসদীয় কমিটির ভেটিং সাপেক্ষে প্রতিষ্ঠানের সাংবিধানিক ও গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেওয়া হবে।    

৯. বাংলাদেশের সংবিধান ও মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে বিচার বিভাগের কার্যকর স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। বর্তমান বিচার ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য একটি ‘জুডিশিয়াল কমিশন’ গঠন করা হবে। অধঃস্থন আদালতগুলোর নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা বিধানের কর্তৃত্ব সুপ্রিম কোর্টের কাছে ন্যস্ত হবে। বিচার বিভাগের জন্য সুপ্রিমকোর্টের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি পৃথক সচিবালয় থাকবে। সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের অভিশংসন প্রশ্নে সংবিধানে বর্ণিত ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল’ ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন করা হবে। এজন্য সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে। দলীয় বিবেচনার ঊর্ধ্বে বিচারক নিয়োগ করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগের লক্ষ্যে সংবিধানের ৯৫ (গ) ধারা অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট যোগ্যতা ও মানদণ্ড সংবলিত ‘বিচারপতি নিয়োগ আইন’ প্রণয়ন করা হবে।

১০. যোগ্য, অভিজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি ‘প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন’ গঠন করে প্রশাসন সংস্কার ও পুনঃগঠন করা হবে। বেসামরিক ও সামরিক প্রশাসনে নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিতে যোগ্যতা একমাত্র মাপকাঠি হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

১১. গণমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতার নিশ্চয়তা ও সার্বিক সংস্কারের লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি, মিডিয়া সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী এবং অভিজ্ঞ ও গ্রহণযোগ্য মিডিয়া ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি ‘মিডিয়া কমিশন’ গঠন করা হবে। স্বাধীন সাংবাদিকতার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সাগর-রুনি হত্যাসহ সকল সাংবাদিক নির্যাতন ও হত্যার বিচার নিশ্চিত করা হবে।  

১২. গত দেড় দশকে অর্থপাচার ও দুর্নীতির অনুসন্ধান করে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ এবং চিহ্নিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন ও দুর্নীতি দমন আইন সংস্কারের পাশাপাশি পদ্ধতিগত সংস্কারের মাধ্যমে 'দুদকের' স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। সংবিধান অনুযায়ী ‘ন্যায়পাল’ নিয়োগ করা হবে।

১৩. সর্বস্তরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অবসান ঘটানো হবে। সুনির্দিষ্ট মানদণ্ডের ভিত্তিতে মানবাধিকার কমিশনে নিয়োগ প্রদান করা হবে। 

১৪. অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার নিশ্চিতের লক্ষ্যে ‘অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন’ গঠন করা হবে। প্রবৃদ্ধির সুফল সুষম বণ্টনের মাধ্যমে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূর করা হবে।  

১৫. দলমত ও জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পাহাড়ি ও সমতলের ক্ষুদ্র-বৃহৎ সব জাতি-গোষ্ঠীর সংবিধান প্রদত্ত অধিকার ও পূর্ণ নিরাপত্তা বিধান করা হবে। 

১৬. মুদ্রাস্ফীতির আলোকে শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা হইবে। শিশু-শ্রম বন্ধ করে তাদের জীবন বিকাশের উপযোগী পরিবেশ ও ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হইবে। নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও গণতান্ত্রিক ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করা হবে। পাটকল, বস্ত্রকল, চিনিকলসহ সব বন্ধ শিল্প কারখানা আবার চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রবাসী শ্রমিকদের নিরাপত্তা, দেশে বিমানবন্দরসহ সব ক্ষেত্রে হয়রানি মুক্ত সেবা ও ভোটাধিকার নিশ্চিতের ব্যবস্থা করা হবে। চা-বাগান, বস্তি, চরাঞ্চল, হাওড়-বাওর ও মঙ্গাপীড়িত ও উপকূলীয় অঞ্চলের বৈষম্য দূরীকরণ ও সুষম উন্নয়নে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে।  

১৭. বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ খাতে দায়মুক্তি বাতিল করা হবে। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে বিদ্যুৎ কেনা বন্ধ করা হবে। আমদানি নির্ভরতা পরিহার করে নবায়নযোগ্য ও মিশ্র এনার্জিনির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং উপেক্ষিত গ্যাস ও খনিজ সম্পদ আবিষ্কার ও আহরণে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

১৮. বৈদেশিক সম্পর্কের সর্বক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ভূ-খণ্ডের মধ্যে কোনো সন্ত্রাসী তৎপরতা বরদাশত করা হবে না। সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

১৯. স্বকীয় মর্যাদা বহাল রেখে প্রতিরক্ষা বাহিণীকে সব ধরনের বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখা হবে।

২০. ক্ষমতার ব্যাপক বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীন ও শক্তিশালী করা হবে। স্থানীয় প্রশাসন ও অন্য কোনো জনপ্রতিনিধির খবরদারি মুক্ত স্বাধীন স্থানীয় সরকার নিশ্চিত করা হবে। মৃত্যুজনিত কারণ কিংবা আদালতের আদেশে পদ শূন্য না হলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে সরকারি প্রশাসক নিয়োগ করা হবে না। আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নির্বাহী আদেশবলে বরখাস্ত করা হবে না।

২১. স্বাধীনতা যুদ্ধে যার যার অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির ব্যবস্থা করা হবে। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের তালিকা হবে এবং তাদের যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও স্বীকৃতি দেওয়া হবে। এই তালিকার ভিত্তিতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কল্যাণে নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হবে।

২২. যুবসমাজের ভিশন, চিন্তা ও আকাঙ্খাকে ধারণ করে আধুনিক ও যুগোপযোগী যুব উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। এক বছরব্যাপী অথবা কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত যেটাই আগে হবে, শিক্ষিত বেকারদের বেকার ভাতা প্রদান করা হবে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

২৩. নারী ও শিশুদের জীবনমান বিকাশে যুগোপযোগী উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হবে। জাতীয় সংসদে মনোনয়নের ক্ষেত্রে নীতিগতভাবে নারীদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

২৪. শিক্ষাক্ষেত্রে নিম্ন ও মধ্য পর্যায়ে চাহিদাভিত্তিক শিক্ষা এবং উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। গবেষণায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। একই মানের শিক্ষা ও মাতৃভাষায় শিক্ষা অগ্রাধিকার পাবে। ভবিষ্যতের নেতৃত্ব গড়ে তুলতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে। জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করা হবে। 

২৬. স্বাস্থ্যসেবা প্রবর্তন করে সবার জন্য স্বাস্থ্য কার্ড চালু হবে। জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করা হবে। দারিদ্র্য বিমোচন না হওয়া পর্যন্ত সুবিধাবঞ্চিত হতদরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী আরও সম্প্রসারিত করা হবে।

২৭. কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা হবে। পর্যায়ক্রমে সব ইউনিয়নে কৃষিপণ্যের জন্য সরকারি ক্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। প্রয়োজনে ভর্তুকি দিয়ে হলেও শস্যবীমা, পশুবীমা, মৎস্য বীমা ও পোল্ট্রি বীমা চালু করা হবে। কৃষি জমির অকৃষি ব্যবহার নিরুৎসাহিত করা হবে। রপ্তানিমুখী কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প খাতকে প্রণোদনা দেওয়া হবে।

২৮. সারা দেশে সমন্বিত বহুমাত্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। দেশের সমুদ্র বন্দর ও নৌবন্দরগুলোর আধুনিকায়ন, উন্নয়ন ও দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা হবে।

২৯. জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট ও ক্ষতি মোকাবিলায় টেকসই ও কার্যকর কর্মকৌশল গ্রহণ করা হবে। বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় ও ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সর্বাধুনিক ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ করে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে। বন্যা ও খরা প্রতিরোধে খাল-নদী খনন পুনঃখনন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। 

৩০. তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তিখাতকে বৈশ্বিক মানে উন্নীত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সর্বক্ষেত্রে এর প্রয়োগকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। মহাকাশ গবেষণা এবং আনবিক শক্তি কমিশনের কার্যক্রমের প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রায়োগিক সুযোগ সমৃদ্ধ করা হবে।

৩১. একটি জাতীয় মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে শহরে ও গ্রামে কৃষি জমি নষ্ট না করে এবং নগরে জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান চাপ কমিয়ে পরিকল্পিত আবাসন ও নগরায়নের নীতিমালা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে। পর্যায়ক্রমে দেশের সকল দরিদ্র জনগোষ্ঠির আবাসন নিশ্চিত করা হবে।

Header Ad
Header Ad

পশ্চিমবঙ্গে পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগে তোলপাড়

পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত সন্ন্যাসী কার্তিক মহারাজ। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদ জেলায় এক নারী শিক্ষিকার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত সন্ন্যাসী কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, জোর করে সহবাসে বাধ্য করা, গর্ভপাত ঘটানো এবং প্রতারণার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনা শুধু স্থানীয় পর্যায়ে নয়, রাজ্য রাজনীতিতেও ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।

অভিযোগকারী শিক্ষিকা জানান, ২০১৩ সালে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কার্তিক মহারাজ তাঁকে নবগ্রাম থানার চাণক্য এলাকার একটি আশ্রম পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং একই আশ্রমে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, আশ্রমে থাকার সুবাদে একপর্যায়ে কার্তিক মহারাজ তাঁকে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন। প্রথমে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করলেও, পরবর্তীতে নানা চাপ ও পরিস্থিতির কারণে বাধ্য হয়ে সম্পর্ক স্থাপন করতে হয়।

নারী শিক্ষিকার দাবি, একাধিকবার তাঁর উপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে এবং একপর্যায়ে গর্ভবতী হলে জোর করে গর্ভপাত করানো হয়। দীর্ঘদিন এসব ঘটনা সহ্য করার পর অবশেষে আইনের আশ্রয় নেন তিনি।

ভুক্তভোগী শিক্ষিকা বৃহস্পতিবার রাতে নবগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানায়, ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগকারিণীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হচ্ছে এবং ঘটনার অন্যান্য দিকও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কার্তিক মহারাজ বলেন, “আমার বিরুদ্ধে কে কী বলেছে, আমি কিছুই জানি না। আমার আইনজীবী বিষয়টি দেখবেন।” তিনি জানান, অভিযোগ নিয়ে তিনি মোটেই বিচলিত নন।

এই ঘটনায় নবগ্রাম ও আশপাশের এলাকায় জনমত স্পষ্টভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। মহারাজের অনেক অনুসারী অভিযোগকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করছেন। অপরদিকে, অনেকে ঘটনাটিকে অত্যন্ত গুরুতর বলে উল্লেখ করে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তুলেছেন।

কার্তিক মহারাজ ২০২২ সালে ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে পদ্মশ্রী সম্মাননা পান। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে এই সম্মাননা দেওয়া হয়েছিল। ফলে এই ঘটনার পর তাঁর ভাবমূর্তি ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তদন্ত চলছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।

 

Header Ad
Header Ad

দুধ আমদানি করা লজ্জার বিষয়: উপদেষ্টা ফরিদা

ছবি: সংগৃহীত

বিদেশ থেকে গুড়া দুধ আমদানি করাকে লজ্জার বিষয় বলে আখ্যা দিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। শনিবার সকালে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জয়নগর স্কুল মাঠে গবাদি পশুর রোগ প্রতিরোধে টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা যেই টাকা দিয়ে গুড়া দুধ আমদানি করি সেই টাকা দিয়ে আমরা অনেকগুলো চিলিং সেন্টার করতে পারি। কেন আমরা সেই চিলিং সেন্টার করছি না। এটা আমরা সরকারিভাবে করার চেষ্টা করব। পাশাপাশি বেসরকারি খাতেও আমরা উৎসাহ দেব যাতে তারা সেটা করে।’

ফরিদা আখতার বলেন, ‘রপ্তানি করার জন্য ক্ষুরা রোগের (এফএমডি ভাইরাস) টিকা দেওয়া হচ্ছে বিষয়টা এমন নয়। আমরা যদি গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি পালন করি সেগুলো কিন্তু একটি প্রাণ। কোনো রোগ হলে তারও কষ্ট হয়। কোনো রোগেই যেন প্রাণীর কষ্ট না হয় এ জন্যই আমরা ভ্যাকসিনটা দেব। শুধুমাত্র মাংস ভালো পাওয়ার জন্য কিংবা শুধু রপ্তানি করার জন্য না।’

তিনি আরও বলেন, ‘যে সব দেশ থেকে আমরা মাংস আমদানি করি ওই সকল দেশে প্রাণীর দুরারোগ্য রোগ নির্মূল করা হচ্ছে। আমরা চাই, প্রাণী সম্পদেরও কোনো রোগ না থাকুক। সরকার অনেক চেষ্টা করছে। এফএমডি ভ্যাকসিন আনার জন্য মন্ত্রণালয় অব্যাহত প্রচেষ্টা করে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত আমরা এমন একটা ভ্যাকসিন এনেছি যেটি প্রাণীদেহে কাজ করে। আর্জেন্টিনাতে গিয়ে এটা অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই আনা হচ্ছে।’

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৩ সেনা নিহত

ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৩ জন সেনা নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ২৯ জন। শনিবার দুপুরে প্রদেশের উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলায় ঘটেছে এই ঘটনা।

উত্তর ওয়াজিরিস্তানের একজন সরকারি কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, “সেনাবাহিনীর গাড়িবহরের মধ্যে একটি বিস্ফোরকবাহী গাড়ি ঢুকে পড়েছিল এবং ঢোকার প্রায় পরপরই ঘটে বিস্ফোরণ। এতে ১৩ জন নিহত এবং ২৯ জন আহত হয়েছেন। নিতহদের সবাই সেনাবাহিনীর। আহতদের মধ্যে ১০ জন সামরিক বাকে ১০ জন বেসামরিক।”

এছাড়া বিস্ফোরনে ঘটনাস্থলের নিকটবর্তী দু’টি বাড়ির ছাদ উড়ে গেছে এবং এতে ৬ জন শিশু আহত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।

আহত দশ জন সেনার মধ্যে চার জনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে হাসপাতালসূত্রে।

পাকিস্তানভিত্তিক তালেবানগোষ্ঠী তেহরিক-ই তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর উপশাখা হাফিজ গুল বাহাদুর আর্মড গ্রুপ ইতোমধ্যে হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের চার প্রদেশ ও তিন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তান— এ দু’টি প্রদেশে গত কয়েক বছরে সন্ত্রাসী তৎপরতা ও হামলার নাটকীয় উল্লম্ফন ঘটেছে। খাইবার পাখতুনখোয়া মূলত পাকিস্তানপন্থি তালেবানগোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) ঘাঁটি অঞ্চল। অন্যদিকে বেলুচিস্তানে ব্যাপকভাবে তৎপর বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। দুই গোষ্ঠীরই চূড়ান্ত লক্ষ্য খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তানকে পাকিস্তানের মানচিত্র থেকে বিচ্ছিন্ন করা।

২০২১ সালে তালেবানগোষ্ঠী কাবুলে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে সন্ত্রাসী হামলার উল্লম্ফন ঘটেছে হচ্ছে পাকিস্তানে। গত বছর ২০২৪ সাল ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ বছর। ২০২৪ সালের বছরজুড়ে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা ৪৪টি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। শতকরা হিসেবে গত এক দশকের মধ্যে ২০২৪ সালে দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলার হার ছিল ৪০ শতাংশ বেশি।

এসব হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬৮৫ জন সেনা এবং ৯২৭ জন বেসমরিক মানুষ। বিপরীতে গত বছর সেনা-পুলিশ যৌথ অভিযানে নিহত হয়েছে ৯৩৪ জন সন্ত্রাসী।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পশ্চিমবঙ্গে পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগে তোলপাড়
দুধ আমদানি করা লজ্জার বিষয়: উপদেষ্টা ফরিদা
পাকিস্তানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৩ সেনা নিহত
ছায়ানটের সভাপতি হলেন ডা. সারওয়ার আলী, কার্যনির্বাহী কমিটিতে নতুন মুখ
জুলাই যোদ্ধাদের যথাযথ মর্যাদা দিতে চাই: রিজভী
৮ অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস, নদীবন্দরে সতর্কতা
সিন্ধু পানি চুক্তি নিয়ে হেগে পাকিস্তানের আইনি জয়, রায় প্রত্যাখ্যান করল ভারত
আগস্টে ঢাকার ৩ এলাকায় চালু হবে ই-রিকশা
বিনিয়োগকারীদের জন্য বিডার নতুন ওয়েবসাইট চালু
টাঙ্গাইলে যৌনপল্লীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, ১২টি ঘর পুড়ে ছাই
আবাসিক হোটেল থেকে আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার
মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসাধারীদের খুশির খবর দিল সৌদি আরব
চীন সফর অত্যন্ত ‘সফল’ ও ‘ফলপ্রসূ’ হয়েছে: মির্জা ফখরুল
ইরানে আবারও বোমা হামলার হুমকি দিলেন ট্রাম্প
ইনিংস ব্যবধানে হারের পরই টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়লেন শান্ত
৩ হাজারের বেশি কবর খোঁড়া সেই মনু মিয়া মারা গেছেন (ভিডিও)
কলম্বো টেস্ট: ইনিংস ব্যবধানে হারল বাংলাদেশ
গাজায় আবারও রক্তক্ষয়, একদিনেই প্রাণ হারালেন ৭২ জন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ালেন উমামা ফাতেমা
আল নাসরে রোনালদোর নতুন চুক্তি: ঘণ্টায় পাচ্ছেন ৬৫ লাখ টাকা, বছরে কত?