মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫ | ১৭ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

মুফতী শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী

জুমার দিনের ফজিলত ও আমল

জুমা শব্দটি আরবি জমা শব্দ থেকে উৎপক্তি। জমা অর্থ হলো একত্রিত হওয়া বা একত্র করা। জমা শব্দের আরেক অর্থ হলো বহু জুমুআহ মানে হলো একত্রিত হওয়ার স্থান বা সময়। ইসলামে শুক্রবারকে ইয়াওমুল জুমুআহ বা জুমা দিবস বলা হয়। জুমার দিনে মুসলিমরা নির্দিষ্ট মসজিদে একত্রিত হন। শুক্রবারে জুমা অনুষ্ঠিত হয় বলে শুক্রবারকে জুমাবার বলা হয়। যেই মসজিদে জুমা অনুষ্ঠিত হয় তাকে মসজিদুল জামে তথা জামে মসজিদ বা জুমা মসজিদ বলা হয়। যে সকল মসজিদে জুমা অনুষ্ঠিত হয় না, সেগুলোকে পাঞ্জেগানা মসজিদ বা ওয়াক্তিয়া মসজিদ বলা হয়। জুমা শব্দটির সাথে জমাআহ বা জমাআত শব্দের স্পর্ক রয়েছে; কারণ জমাআত ছাড়া জুমা হয় না।


কুরআন মজিদে সূরা জুমা নামে একটি সূরা বা অধ্যায় রয়েছে। এতে বলা হয়েছে: “হে মুমিনগণ! জুমুআর দিনে যখন নামাজের জন্য আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণ পানে ত্বরা করো (দ্রুত দৌড়াও) এবং বেচাকেনা বন্ধ করো। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝো। অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ করো ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও।” (সূরা৬২ জুমুআহ, আয়াত: ৯-১)।

জুমার দিনের তাৎপর্য:

তাফসীরবিদগণ বলেন, সূরা জুমার পূর্বের সূরার নাম হলো সূরা ‘সফ’। সফ অর্থ কাতার বা সারি। জুমার নামাজ সারিবদ্ধভাবে আদায় করা হয় এবং এতে ঐক্য ও শৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় এতে এই ইঙ্গিত রয়েছে। সূরা জুমার পরের সূরা হলো সূরা ‘মুনাফিক‚ন’। এতে এই ইঙ্গিত বিদ্যমান যে, জুমার তরক করা মুনাফিকের লক্ষণ। জুমার নামাজে প্রথম রাকআতে সূরা জুমা ও দ্বিতীয় রাকআতে সূরা মুনাফিক‚ন পড়া সুন্নাত।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, নবী কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘যে ব্যক্তি বিনা কারণে জুমা পরিত্যাগ করলো, তাকে মুনাফি হিসেবে তালিকাভুক্ত ও লিপিবদ্ধ করা হয়।’ (ইমাম শাফিয়ী, মিশকাত: ১২১, ফয়জুল কালাম: ৪৬৮, পৃষ্ঠা: ৩৩৩)।

হজরত উমর (রা.) ও হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, আমরা শুনেছি রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন মিম্বরে দাঁড়িয়ে বলেছেন: ‘যারা কয়েকটি জুমা ধারাবাহিবভাবে পরিত্যাগ করবে, আল্লাহ তাদের তাদের অন্তরে সীল মোহর করে দিবেন; অতঃপর তারা গাফিলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। (মুসলিম শরীফ)। হজরত আবু জাআদ (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: যে ব্যক্তি অবজ্ঞা বা অবহেলা করে তিন জুমুআহ পরিত্যাগ করলো, আল্লাহ তার অন্তরে সীল মোহর করে দিবেন। (তিরমিযী, নাসায়ী, আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ)।

মসজিদে নিরবতা প্রসঙ্গ:

হজরত মুআজ ইবনে আনাস জুহানী (র.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘যে ব্যক্তি জুমুআর দিনে মানুষের ঘাঁড়ের উপর দিয়ে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করলো, কিয়ামতের দিন তাকে জাহান্নামের পুল বানানো হবে। (তিরমিযী, মিশকাত: ১২২, ফয়জুল কালাম: ৪৭৩, পৃষ্ঠা: ৩৩৬)। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘জুমুআর দিনে ইমামের খুৎবাহ প্রদানের সময় যে কথা বললো, সে যেন গাধার মতো যে বোঝা উঠায়। যে তাকে বললো চুপ করো, তারও জুমুআহ নেই।’ (মুসনাদে আহমাদ, মিশকাত: ১২৩, ফয়জুল কালাম: ১৭৪, পৃষ্ঠা: ৩৩৬-৩৩৭)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘জুমুআর দিনে ইমাম খুৎবাহ দেওয়ার সময় যখন তুমি তোমার ভাইকে বললে, চুপ করো; তখন তুমিও বেহুদা কথা বললে।’ (বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত: ১২২/ ফয়জুল কালাম: ৪৭১, পৃষ্ঠা: ৩৩৫)।

জুমার নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত:

‘হজরত তারেক ইবনে শিহাব (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘জুমা জমাতের সাথে আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ফরজ কর্তব্য; চার প্রকার লোক ছাড়া। কৃতদাস, নারী, শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তি।’ (আবু দাউদ)। হজরত সালমান (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘জুমার দিনে যে গোসল করলো, সাধ্য মতো পবিত্রতা অর্জন করলো, তেল ব্যবহার করলো, সুগন্ধি ব্যবহার কলো এবং মজিদে গিয়ে কাউকে না ডিঙ্গিয়ে বসলো, নিরবে ইমামের খুৎবাহ শুনলো, অতঃপর নির্ধারিত নামাজ আদায় করলো; আল্লাহ তাআলা তার দুই জুমুআর মধ্যবর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দিবেন।’ (বুখারী শরীফ)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘যে ব্যক্তি জুমুআর দিনে ভালোভাবে অজু করলো, অতঃপর জুমায় আসলো, মনযোগ দিয়ে খুৎবাহ শুনলো ও চুপচাপ থাকলো, তার এক জুমুআহ থেকে আরেক জুমাহ পর্যন্ত
গুনাহসমূহ ক্ষমা করা হবে, অধিকন্তু আরো তিন দিনের। আর যে খুৎকার সময় অকারণ নড়াচড়া করলো, সেও কথা বললো। (মুসলিম, মিশকাত: ১২২, ফয়জুল কালাম: ৪৭২, পৃষ্ঠা: ৩৩৬)।

জুমার দিনে প্রতি কদমে এক বছরের নামাজ ও রোজার সওয়াব:

হজরত আউস ইবনে আউস (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: যে ব্যক্তি জুমার দিন জামা কাপড় ধূয়ে গোসল করে, সকাল সকাল মসজিদে গেলো, পায়ে হেঁটে মসজিদে গমনাগমন করলোবাহনে আরোহন করলো না, ইমামের নিকটে বসলো, মনযোগ দিয়ে খুৎবাহ শুনলো, অযথা কাজ করলো না, তার প্রতিটি পদক্ষেপে এক বছরের রোজা ও এক বছরের নামাজের সওয়াব প্রাপ্ত হবে।’ (তিরমিযী, নাসায়ী, আবূ দাঊদ, ইবনে মাজাহ; মিশকাত: ১২২/ ফয়ুল কালাম: ১৭০, পৃষ্ঠা: ৩৩৪-৩৩৫)।

জুমাহ ও খুৎবাহ:

জুমার অন্যতম প্রধান বিষয় হলো খুৎবাহ বা ভাষণ। হাদীস শরীফে আছে, হজরত জাবির ইবনে সামুরা (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুটি খুৎবাহ দিতেন, দুই খুৎবার মাঝে বসতেন; খুৎবাহ ও নামাজ উভয়ই হতো সমান। (মুসলিম শরীফ)। প্রথম যুগে জুমুআর নামাজের পরে খুৎবাহ দেওয়া হতো। একদা নবীজি (স.) খুৎবাহ দিচ্ছিলেন এমন সময় বাণিজ্য কাফেলা আসলে অনেকে উঠে চলে যান। ৭ জন মহিলাসহ ১৯ জন বসে থাকেন, এই ১৯ জনের মধ্যে আশারা মুবাশশারা বা ১০ জন বেহেশতের সুসংবাদ প্রাপ্তর ছিলেন। তখন সূরা জুমুআহ এর শেষ আয়াত নাজিল হয়। “তারা যখন কোন ব্যবসায়ের সুযোগ অথবা ক্রীড়াকৌতুক দেখে তখন আপনাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে তারা সেদিকে ছুটে যায়। বলুন, আল্লাহর কাছে যা আছে, তা ক্রীড়াকৌতুক ও ব্যবসায় অপেক্ষা উৎকৃষ্ট। আল্লাহ সর্বোত্তম রিযিকদাতা।” (সূরা-৬২ জুমুআহ, রুক‚: ২, আয়াত: ১১)। এর পর থেকে নবীজি (স.) খুৎবাহ পূর্বেই প্রদান করেন। (তাফসীরে জালালাঈন ও মাআরিফুল কুরআন)।

জুমার দিনের নামাজসমূহ:

জুমার মূল নামায ২ রাকআত। জুমার দিনে জুহর ওয়াক্তে জুহরের নামাজের পরিবর্তে দুই রাকআত জুমার নামাজ আদায় করা ফরজ। এর পূর্বে ৪ রাকআত (কাবলাল জুমুআহ) ও পরে ৪ রাকআত (বাদাল জুমুআহ) পড়া সুন্নাত। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুমার পূর্বে (কাবলাল জুমুআহ) চার রাকাত নামাজ আদায় করতেন এবং জুমুআর পরে (বাদাল জুমুআহ) চার রাকআত নামাজ আদায় করতেন। (তাবরানী/আলফিয়াহ: ৪৩০)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘তোমরা যখন জুমুআর নামাজ আদায় করবে, তার পরে (বাদাল জুমুআহ) চার রাকআত নামাজ আদায় করবে। (মুসলিম শরীফ/ আলফিয়াহ, পৃষ্ঠা: ১০০-১০২)। অজুর সাথে সম্পৃক্ত ২ রাকআত (তাহিয়্যাতুল অজু) ও মসজিদে প্রবেশের সাথে সম্পর্কিত ২ রাকআত (তাহিয়্যাতুল মসজিদ বা দুখূলুল মসজিদ) জুমুআর দিনে বেশি পড়া হয়। 
জুমার ফরজের শর্ত পূর্ণ হয়েছে কি না? এই সংশয়ে অনেকে ৪ রাকআত ওয়াক্তিয়া জুহর এবং ২ রাকআত আখেরী
জুহরও আদায় করেন। ২ রাকাত নফল পড়েন আবার শোকরিয়া নামায ২ রাকাতও পড়েন অনেকে। সলাতুত তাসবীহ ৪
রাকাতও কেউ কেউ পড়ে থাকেন শুক্রবারে।

জুমার দিনের সুন্নাত আমলসমূহ:

জুমার দিনের সুন্নাত আমলসমূহ হলো: (১) শবে জুমুআহ বা বৃহস্পতিবার দিবাগত শুক্রবার রাতে ঘুমানোর পূর্বে সুরমা ব্যবহার করা, (২) শুক্রবার খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠা, (৩) তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা, (৪) ফজরের নামাজ জমাআতের সাথে আদায় করা, (৫) কুরআন তিলাওয়াত করা, বিশেষ করে সূরা কাহাফ ও সূরা জুমুআহ তিলাওয়াত করা, (৬) যিকির আযকার বেশি করা, (৭) দুরূদ শরীফ বেশি বেশি পাঠ করা, (৮) নফল ইবাদাত বেশি করা, (৯) শারীরিক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হয়া ও ক্ষৌর কর্ম করা, (১০) গোঁফ কেটে ছোট করা, (১১) নখ কাটা, (১২) সকালে জুমুআর জন্য গোসল করা, (১৩) গায়ে ও মাথায় তেল ব্যবহার করা, (১৪) নতুন কাপড় বা উত্তম কাপড় পরিধান করা, (১৫) টুপি ও পাগড়ি পরিধান করা, (১৬) সুগন্ধি ব্যবহার করা, (১৭) সকাল সকাল মসজিদে যাওয়া, (১৮) যেখানে জায়গা পাওয়া যায় সেখানে বসা, (১৯) সম্ভব হলে ইমামের কাছাকাছি বসা, (২০) নিরবে খুৎবাহ শোনা, (২১) বেহুদা কথাবার্তা না বলা, (২২) অযথা নড়াচড়া না করা, (২৩) সকল মুসলমানের জন্য দোয়া করা, (২৪) দান খয়রাত করা,
(২৫) সদুপদেশ দেওয়া, (২৬) কবর যিয়ারত করা, (২৭) আত্মীয়-স্বজনের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করা, (২৮) পাড়া
প্রতিবেশিদের খোঁজ খবর নেওয়া।

Header Ad
Header Ad

ফাঁস হওয়া ফোনালাপের জেরে থাই প্রধানমন্ত্রী বরখাস্ত

থাই প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা। ছবি: সংগৃহীত

থাইল্যান্ডে রাজনৈতিক উত্তেজনা নতুন মোড় নিয়েছে। ফাঁস হওয়া এক ফোনালাপের জেরে দেশটির সংবিধানিক আদালত প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে। কম্বোডিয়ার সাবেক নেতা হুন সেনের সঙ্গে আলোচিত ওই কথোপকথনে পেতংতার্ন তাকে “চাচা” বলে সম্বোধন করেন এবং থাই সেনাবাহিনীর এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সমালোচনা করেন।

এই ফোনালাপ সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে জনমনে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ফলে তার অপসারণ দাবিতে একটি পিটিশন দায়ের করা হয়, যার প্রেক্ষিতে আদালত তার পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে। আদালতের নয়জন বিচারকের মধ্যে সাতজন বরখাস্তের পক্ষে রায় দেন। একই সঙ্গে তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে উপ-প্রধানমন্ত্রী সুরিয়া জুংরুংরুয়াংকিত ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।

এ ঘটনার মাধ্যমে থাই রাজনীতিতে প্রভাবশালী সিনাওয়াত্রা পরিবারের আরেক সদস্য ক্ষমতা হারানোর মুখে পড়লেন। পেতংতার্ন হতে যাচ্ছেন এই পরিবারের তৃতীয় সদস্য যিনি পূর্ণ মেয়াদ শেষ করার আগেই ক্ষমতা হারাবেন। এর আগে তার পিতা থাকসিন এবং ফুফু ইংলাক সিনাওয়াত্রা সামরিক হস্তক্ষেপে ক্ষমতা হারিয়েছিলেন।

পেতংতার্নের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ইতোমধ্যেই টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ রক্ষণশীল মিত্র দল জোট ত্যাগ করেছে, ফলে সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর মুখে পড়েছে।

এই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে, কারণ একই দিনে পেতংতার্নের পিতা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার বিরুদ্ধেও শুরু হয় রাজকীয় অবমাননার মামলা। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি নয় বছর আগে একটি দক্ষিণ কোরিয়ান সংবাদপত্রে রাজপরিবার সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন। বর্তমানে তিনি “লেসে মাজেস্তে” আইনের আওতায় বিচারাধীন।

থাকসিন থাইল্যান্ডের সবচেয়ে আলোচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের একজন। ১৫ বছর নির্বাসনে থাকার পর তিনি ২০২৩ সালে দেশে ফেরেন। তার ফেরার পেছনে রাজনৈতিক সমঝোতা কাজ করেছিল, যা হয়েছিল তার দল পিউ থাই পার্টি এবং সেনাবাহিনী ও রাজপরিবার ঘনিষ্ঠ রক্ষণশীল গোষ্ঠীর সঙ্গে।

 

থাই প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা। ছবি: সংগৃহীত

৩৮ বছর বয়সী পেতংতার্ন থাইল্যান্ডের ইতিহাসে দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী এবং সবচেয়ে কমবয়সী প্রধান নির্বাহী। স্রেত্তা থাভিসিন বরখাস্ত হওয়ার পর তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। তবে দায়িত্ব নেওয়ার শুরু থেকেই তিনি চাপে ছিলেন। দেশের দুর্বল অর্থনীতি চাঙ্গা করতে না পারায় জনপ্রিয়তা দ্রুত হ্রাস পায়—যেখানে মার্চে তার জনপ্রিয়তা ছিল ৩০.৯ শতাংশ, তা গত সপ্তাহে কমে দাঁড়ায় মাত্র ৯.২ শতাংশে।

ফাঁস হওয়া ফোনালাপের দায় স্বীকার করে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং বলেন, এটি ছিল সাম্প্রতিক সীমান্ত সমস্যা নিয়ে “কৌশলগত আলোচনা”। কিন্তু রক্ষণশীল রাজনীতিবিদরা বলছেন, এতে থাই সেনাবাহিনীর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে এবং এটি ছিল কম্বোডিয়ার প্রতি অযথা নমনীয়তা।

সব মিলিয়ে থাইল্যান্ড এখন রাজনৈতিকভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। পেতংতার্নের ভাগ্য নির্ধারণ করবে সংবিধানিক আদালতের চূড়ান্ত রায়, যা রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ ও উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে।

Header Ad
Header Ad

স্বৈরাচার পতনে ১৬ বছর অপেক্ষা নয়, তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষার লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "জুলাই শুধু একটি মাস নয়, এটি গণজাগরণ, ঐক্য ও গণতান্ত্রিক চেতনার প্রতীক। চলুন, সবাই মিলে এই জুলাইকে পরিণত করি গণজাগরণ এবং জাতীয় ঐক্যের মাসে।"

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে মাসব্যাপী ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ স্মরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয় বাংলাদেশ টেলিভিশনে।

ড. ইউনূস আরো বলেন, স্বৈরাচার পতনের জন্য যেন ১৬ বছর অপেক্ষা করতে না হয়—এই লক্ষ্যেই কাজ চলছে। তিনি শক্ত কণ্ঠে বলেন, "আগামী দিনে কেউ যদি স্বৈরাচার হবার চেষ্টা করে, তাহলে জনগণ যেন সঙ্গে সঙ্গে তাদের পতন ঘটায়। কারণ যখন জনগণ রাস্তায় নামে, তখন কোনো শক্তিই তা থামাতে পারে না।"

তিনি জানান, আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করছি যে, পথ যতই কঠিন হোক না কেন, জনগণের ঐক্য এবং গণজাগরণই শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হয়। জুলাই আন্দোলনের মূল বিষয় ছিল—ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার রুখে দিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা। বর্তমান সরকারও সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে, যাতে আর কখনো স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।

ড. ইউনূস স্মরণ করিয়ে দেন, ১৬ বছর আগে একটি ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল। "আমরা তাৎক্ষণিকভাবে টার্গেট পূরণ করেছিলাম, কিন্তু মূল লক্ষ্য ছিল একটি নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তি নির্মাণ। আমাদের প্রত্যাশা, প্রতি বছর এই মাসটিকে স্মরণ করা হোক এবং স্বৈরাচারের ছায়া পড়লেই তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা হোক।"

তিনি জুলাই আন্দোলনের সকল শহীদ ও অংশগ্রহণকারীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, "মাসব্যাপী এই কর্মসূচি কেবল স্মৃতিচারণ নয়, এটি একটি নতুন শপথ—গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি জনগণকে সচেতন করা, রাজনৈতিক দায়িত্ববোধ জাগানো এবং মুক্তির জন্য ত্যাগের স্মৃতি অমলিন রাখা।"

ড. ইউনূস আরও উল্লেখ করেন, "গত বছরের জুলাইয়ে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই ঐক্য পুনরায় গড়ে তোলার সময় এসেছে। শিক্ষার্থীদের সাহসিক আন্দোলন আমাদের পথ দেখিয়েছে। চলুন এই জুলাইকে গণতন্ত্র রক্ষার নতুন প্রত্যয়ের মাস হিসেবে গড়ে তুলি।"

Header Ad
Header Ad

ক্লাব বিশ্বকাপে ম্যানসিটিকে কাঁদিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে আল হিলাল

ছবি: সংগৃহীত

ক্লাব বিশ্বকাপে এবার সবচেয়ে নাটকীয় ও রোমাঞ্চকর ম্যাচ উপহার দিল সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল। সাত গোলের টান টান উত্তেজনার লড়াইয়ে ইংলিশ জায়ান্ট ম্যানচেস্টার সিটিকে ৪-৩ ব্যবধানে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট কেটেছে দলটি। মার্কোস লিওনার্দোর অতিরিক্ত সময়ের ১১২তম মিনিটে করা জয়সূচক গোলই সৌদি ক্লাবটিকে এনে দিয়েছে এই ঐতিহাসিক জয়।

ম্যাচের শুরুতে অবশ্য এগিয়ে গিয়েছিল সিটি। প্রথমার্ধে বার্নার্ডো সিলভার গোলে ১-০ ব্যবধানে লিড নেয় তারা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে নাটকীয়ভাবে ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। আল হিলালের হয়ে মার্কোস লিওনার্দো ও ম্যালকম এবং সিটির পক্ষে এরলিং হালান্ডের গোলে ম্যাচ ২-২ সমতায় পৌঁছায়। এতে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

অতিরিক্ত সময়ের ৯৪তম মিনিটে হেডার থেকে গোল করে আল হিলালকে আবারও এগিয়ে দেন কালিদু কুলিবালি। কিন্তু ১০৪ মিনিটে ফিল ফোডেন গোল করে আবারও সিটিকে সমতায় ফেরান। তবে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেন সেই মার্কোস লিওনার্দোই, যিনি ১১২ মিনিটে রিবাউন্ড থেকে গোল করে ৪-৩ ব্যবধানে আল হিলালকে এনে দেন অবিশ্বাস্য এক জয়।

ম্যাচ শেষে হতাশ সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা বলেন, “আমরা অনেক সুযোগ তৈরি করেছিলাম, কিন্তু আজকের রাতটি ছিল আল হিলালের।” অন্যদিকে ম্যাচসেরা লিওনার্দো বলেন, “এটা আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা মুহূর্ত।”

এই জয়ের ফলে আল হিলাল এখন কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হবে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লুমিনেন্সের। ক্লাব বিশ্বকাপে সৌদি আরবের প্রতিনিধি হিসেবে তাদের এমন সাফল্য দেশটির ফুটবলের জন্য একটি নতুন ইতিহাস রচনা করেছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ফাঁস হওয়া ফোনালাপের জেরে থাই প্রধানমন্ত্রী বরখাস্ত
স্বৈরাচার পতনে ১৬ বছর অপেক্ষা নয়, তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
ক্লাব বিশ্বকাপে ম্যানসিটিকে কাঁদিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে আল হিলাল
যে বিশেষ গুণেই তাপসের হৃদয়ে জায়গা করে নেন বুবলী!
আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ড. ইউনূস
বিসিবি সভাপতির উপদেষ্টা পদে থাকছেন না সামি, জানালেন কারণ
বছর ঘুরে ফিরল গণঅভ্যুত্থানের জুলাই
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকার বাজেট পাস
সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ খালি
পুলিশ পরিচয়ে ব্যবহার করা যাবে না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম: আরপিএমপি কমিশনার
ভোলায় চাঁদা না পেয়ে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
টাঙ্গাইলের নির্ধারিত স্থানে মডেল মসজিদ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন (ভিডিও)
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ
চুয়াডাঙ্গায় ট্রেন থেকে ফেলে পাউবো কর্মচারীকে হত্যা, পরিবারের মামলা
দেশে নতুন করে আরও ২১ জনের করোনা শনাক্ত
ঢাকার প্রতিটি ভবনের ছাদে সৌর প্যানেল বসানোর নির্দেশ হাইকোর্টের
লুঙ্গি পরে রিকশায় প্যাডেল মেরে ঢাকা থেকে বিদায় নিলেন জার্মান রাষ্ট্রদূত
ইসরায়েলের ৩১ হাজারেরও বেশি ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইরান (ভিডিও)
ইরানের সাথে আলোচনা করছি না, তাদের কিছু দিচ্ছিও না: ট্রাম্প
আসিফ মাহমুদের অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে প্রশ্ন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বললেন ‘আইনটা দেখিনি’