চট্টগ্রাম নগরীর আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বান্ধবীসহ চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রলীগের এক নেতা নিহত হয়েছেন। সোমবার রাত (২০ আগস্ট) সোয়া দশটার দিকে ফ্লাইওভারের ওয়াসা থেকে জিইসি মোড়ের মধ্যবর্তী এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য আল ইমরান ইফতি (২৩) ও তাঁর বান্ধবী নাহিদা সুলতানা (২১)। এদের মধ্যে আল ইমরান নগরের সদরঘাট থানার মাদার বাড়ির দারোগার হাট এলাকার ইউনুস মোল্লার পুত্র। আর নাহিদা সুলতানা কক্সবাজার জেলার চকরিয়ার রাসেল চৌধুরীর মেয়ে। ইমরান সিটি কলেজের স্নাতক পাস কোর্সের শিক্ষার্থী। নাহিদা সুলতানা নগরীর হালিশহরের মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ডিপ্লোমা শেষ বর্ষের ছাত্রী।
জানা গেছে, নিহত নাহিদা সুলতানা ছাত্রলীগ নেতা ইমরানের বান্ধবী। তারা বাইকার গ্রুপ। বাইক নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতেন। রাত সাড়ে ১০টার সময় খুলশী থানার ওয়াসা এবং জিইসি মোড়ের মধ্যবর্তী স্থানে ফ্লাইওভারে মোটরসাইকেল ও ট্রাকের ধাক্কায় তারা গুরুতর আহত হন। পরে পথচারীরা তাদের উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক নুরুল আশেক গণমাধ্যমকে জানান, জিইসি মোড় ফ্লাইওভারে দুর্ঘটনায় আহত দুই তরুণ-তরুণীকে মুমূর্ষু অবস্থায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
দিনাজপুরের বিরামপুরে বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে তালিম (৪০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় তার সাথে থাকা সাড়ে ৩ বছর বয়সী ছেলে সন্তান আহত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে।
আজ রবিবার(১১মে) দুপুরে বিরামপুর পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের বসুন্ধরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত তালিম হোসেন ময়মনসিংহ জেলার বাসিন্দা।সে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরামপুর শশুর বাড়িতে থাকতেন। পার্বতীপুর জিআরপি থানার এস আই মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়,পঞ্চগড় থেকে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস ট্রেনটি বিরামপুর স্টেশন অতিক্রম করে যাবার সময় বসুন্ধরা এলাকায় পৌঁছালে রেললাইন পার হওয়ার সময় নিহত ব্যক্তি ট্রেনে ধাক্কা লেগে ছিঁটকে গিয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
এসময় তার সাথে থাকা সাড়ে ৩ বছর বয়সী সন্তানটি আহত হয়। আহত শিশুটি বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে পার্বতীপুর জিআরপি থানার এস আই মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এর শহীদ জানান, ট্রেনে কাটা পড়ে তালিম হোসেন (৪০) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এঘটনায় নিহত ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আপত্তি না থাকায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নতুন সংবিধান প্রণয়ন একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া এবং এতে অনেক সময় লাগতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি জানান, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশেও নতুন সংবিধান প্রণয়নে ৮-৯ বছর লেগেছে, তাই বাংলাদেশেও এটি দীর্ঘমেয়াদি একটি কাজ হবে।
আলোচনায় আসিফ নজরুল বলেন, “গণপরিষদ যখন কাজ করবে, তখন তারা নতুন সংবিধান প্রণয়নের কাজ চালিয়ে যাবে। এই প্রক্রিয়া শেষ হতে ২-৩ বছর সময় লাগতে পারে। এই সময়ে কি আমরা ৭২-এর সংবিধান গ্রহণ করব? আমি মনে করি, এই সময়ের জন্য কিছু মৌলিক বিষয় জাতীয় সংসদ পরিবর্তন করে নিতে পারে— যেমন প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা হ্রাস, উচ্চ আদালতের বিকেন্দ্রীকরণ ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ।”
তিনি বলেন, “নতুন সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত সামনে যে সংসদ থাকবে, তা একটি অন্তর্বর্তীকালীন সংসদ হিসেবে কাজ করবে এবং প্রয়োজনে ৭২-এর সংবিধানের সংশোধন করবে।”
জুলাই সনদ প্রসঙ্গে আসিফ নজরুল বলেন, “এ বিষয়ে সবাই একমত হবে এমনটা ধরার সুযোগ নেই। তবে জুলাই সনদের কিছু মৌলিক প্রস্তাব নতুন সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।”
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমাবদ্ধ করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দুই মেয়াদ জনপ্রিয় দাবি, আমারও দাবি। কিন্তু কেবল বললেই হবে না, তা যুক্তিসঙ্গতভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী দুই মেয়াদে সীমিত— এমন ব্যবস্থা পৃথিবীর কোথায় আছে তা খুঁজে বের করতে হবে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমিয়ে আনা।”
বিদেশি অস্ত্র-বোমাসহ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৭ সদস্য গ্রেপ্তার। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি বিদেশি পিস্তল, সাত রাউন্ড গুলি, ৩৬টি ককটেল, একটি প্রাইভেট কার এবং একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস—যা ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল। এ ছাড়া, পরিকল্পিত একটি বড় ধরনের স্বর্ণালংকার ডাকাতির ছকও নস্যাৎ করেছে ডিবি।
গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত সদস্যরা হলেন- মাসুদ রানা চৌকিদার (৩৮), শাকিল (২১), মামুন (৪০), মো. রাব্বি (২৬), মো. আসাদ মিয়া (৪৫), মো. পলাশ শেখ (৩৭) এবং আনোয়ার হোসেন (৪৪)। এদের মধ্যে আনোয়ার হোসেন কিশোরগঞ্জ জেলার এবং পলাশ শেখ বরিশাল জেলার বাসিন্দা। এই দুইজনই এই ডাকাত দলের মূল পরিকল্পনাকারী ও নেতৃত্বে ছিলেন বলে ডিবি নিশ্চিত করেছে।
গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত দলের ৭ সদস্য এবং উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম। ছবি: সংগৃহীত
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (১০ মে) দিবাগত রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যাত্রাবাড়ীর দনিয়া কলেজ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ডিবির একটি দল। প্রথম ধাপে মাসুদ রানা চৌকিদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় একটি বিদেশি ৭.৬২ এমএম পিস্তল ও সাত রাউন্ড গুলি। জিজ্ঞাসাবাদে সে ডাকাতির পরিকল্পনার কথা স্বীকার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার বাসায় অভিযান চালিয়ে ৩৬টি শক্তিশালী ককটেল উদ্ধার করে ডিবি। পরবর্তীতে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট এসে ককটেলগুলো নিষ্ক্রিয় করে এবং প্রমাণ হিসেবে ভিডিও ধারণ করে আদালতে উপস্থাপনের প্রস্তুতি নেয়।
ডিবি কর্মকর্তারা জানান, ডাকাত দলের সদস্যরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে যাত্রাবাড়ীর দনিয়া কলেজের সামনে জড়ো হচ্ছিল। তাদের পরিকল্পনা ছিল গোপালগঞ্জ জেলার বৌলতলী বাজারে অবস্থিত নিউ ডলি জুয়েলার্সে ডাকাতি চালানোর। পরিকল্পনা অনুযায়ী ভোররাতে তারা দনিয়া কলেজে একত্র হয় এবং ডাকাতি করতে রওনা দেওয়ার আগ মুহূর্তেই ডিবির নজরে পড়ে।
সকাল ১০টার দিকে একটি প্রাইভেট কার ও একটি হাইয়েস মাইক্রোবাসে করে ডাকাত দলের আরও সদস্যরা সেখানে আসে। ডিবি তৎক্ষণাৎ অভিযান চালিয়ে গাড়িসহ চারজন—শাকিল, মামুন, মো. রাব্বি ও মো. আসাদ মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দুপুরের দিকে ধোলাইপাড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় ডাকাতি পরিকল্পনার মূল হোতা মো. পলাশ শেখ এবং আনোয়ার হোসেনকে।
ব্রিফ করছেন ডিবির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার হওয়া এই সাতজনের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি ও অস্ত্র মামলার রেকর্ড রয়েছে। ডিবির দাবি, এরা দীর্ঘদিন ধরে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের হয়ে বিভিন্ন জেলায় স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি করে আসছিল। তারা আগে রেকি করত এবং তারপর অস্ত্র ও বিস্ফোরক নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে ডাকাতি করত।
ডিবির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, গত জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ৮৭ জন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকেই রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় সংঘটিত জুয়েলার্স ডাকাতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এর মধ্যে বনশ্রীর ডাকাতি, সীমান্ত সম্ভারের ক্রাউন জুয়েলার্স, ডেমরার ফারদিন জুয়েলার্স এবং শিল্পী জুয়েলার্সের ঘটনায় গ্রেপ্তার ও মালামাল উদ্ধার হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সারা দেশে স্বর্ণালংকারের দোকানগুলো টার্গেট করে কাজ করে এমন কয়েকটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। এই চক্রগুলো রেকি করে, অস্ত্র সংগ্রহ করে এবং গাড়ি ব্যবহার করে বড় ধরনের হামলা চালায়। এই চক্রগুলোর বিরুদ্ধে গোয়েন্দা নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে।
ডিবি জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া সব সদস্যের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে আইনগত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে মামলাও করা হচ্ছে। পুলিশ আশা করছে, এদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসবে।