প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, দেশে নতুন মামলার চেয়ে নিষ্পত্তি হচ্ছে বেশি মামলা, দ্রুতমামলা জট কমাতে কাজ করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে শেরপুর জেলা দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে বিচারপ্রার্থীদের জন্য বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, দীর্ঘ ৫০ বছরের মধ্যে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে মামলার জট অনেকটা কমেছে। বর্তমান সময়ে দেশ গতিশীল, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিচারাধীন মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হচ্ছে। এই সময়ে নতুন মামলা থেকে নিষ্পত্তি হওয়া মামলার সংখ্যা বেশি। যেসব মামলা ঝুলে আছে সেগুলোও দ্রুত সময়ে শেষ করা হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান, আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. সাইফুর রহমান এবং শেরপুর জেলা ও দায়রা জজ মো. তৌফিক আজিজসহ স্থানীয় আইনজীবীরা।
বাংলাদেশের কৃষি ও মাৎস্য গবেষণায় আরও একটি সফলতা যুক্ত হয়েছে এবার। প্রথমবারের মতো দেশীয় শিং মাছের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন ও পুরুষ-স্ত্রী মাছের লিঙ্গ নির্ধারণকারী সম্ভাব্য জিন শনাক্তকরণে সফলতা পেয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক।
গবেষণার ফল ব্যবহার করে মনোসেক্স শিং মাছ উৎপাদন করা সম্ভব হবে যা এই মাছের বাণিজ্যিক চাষে বিপ্লব ঘটাবে। ফলে মাছের এই প্রজাতিকে টিকিয়ে রেখে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা বজায় রাখবে, অন্যদিকে স্বল্প সময়ে অধিক স্ত্রী শিং মাছ উৎপাদন সম্ভব হবে।
বুধবার (১৫ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশীয় শিং মাছের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন এবং পুরুষ ও স্ত্রী মাছ নির্ধারণকারী সম্ভাব্য জিন শনাক্তকরণ গবেষণা ও এটির ফলাফল তুলে ধরেন প্রধান গবেষক ড. তাসলিমা খানম। গবেষক দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন- একই বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী নিত্যানন্দ, স্বর্ণা, হালিমা, জেসমিন, কানিজ এবং সারা।
সংবাদ সম্মেলনে ড. তাসলিমা খানম বলেন, দেশীয় শিং মাছ বাংলাদেশ একটি জনপ্রিয় ও বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ মাছের প্রজাতি। জলবায়ু পরিবর্তন, বন্যা, অতিরিক্ত আহরণ ও প্রাকৃতিক আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে দেশীয় এ মাছটি বর্তমানে হুমকির মুখে। স্ত্রী শিং মাছের বৃদ্ধি পুরুষ শিং মাছ অপেক্ষা ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ বেশি হয়ে থাকে। তাই এই মাছের বাণিজ্যিক উৎপাদন বাড়ানোর জন্য মনোসেক্স শিং মাছ উৎপাদন অন্যতম একটি উপায়। সফলভাবে মনোসেক্স শিং মাছ উৎপাদনের জন্য লিঙ্গ নির্ধারণকারী জিন শনাক্তকরণ অত্যন্ত জরুরি। তাই ২০২০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে শিং মাছের জিন নিয়ে গবেষণা শুরু করি। ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে সংগৃহীত দেশীয় শিং মাছের নমুনা নিয়ে শুরু হয় কাজ।
গবেষণার ফলাফল সম্পর্কে প্রধান গবেষক বলেন, গবেষণায় উদ্ভাবিত ড্রাফট জিনোম (প্রথমবার শনাক্ত করা জিনোম) দিয়ে পুরুষ ও স্ত্রী শিং মাছ শনাক্ত করা সম্ভব, যা যেকোনো দেশীয় সব প্রজাতির মাছের ক্ষেত্রে এই প্রথম। এর মাধ্যমে শুধু স্ত্রী শিং মাছ উৎপাদন করা সম্ভব হবে। এতে করে প্রাকৃতিক জলাশয় ছাড়াও কৃত্রিম পদ্ধতিতে অধিক ফলনশীল স্ত্রী শিং মাছ চাষ করা সম্ভব হবে। শিং মাছের জিনোম থেকে শুধুমাত্র পুরুষ ও স্ত্রী শিং মাছ নির্ধারণকারী জিন ছাড়াও অন্যান্য বৈশিষ্ট্য যেমন বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার জন্য দায়ী জিন শনাক্তকরণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রচলিত হরমোন প্রয়োগ পদ্ধতির পরিবর্তে মার্কার অ্যাসিসটেড সিলেকশন (এমএএস) পদ্ধতির মাধ্যমে স্বল্প সময়ে স্ত্রী শিং মাছ উৎপাদন করা সম্ভব হবে যা অনেক বেশি স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিবেশবান্ধব।
ড. তাসলিমা দাবি করে আরও বলেন, গবেষণা কাজের ফলাফল চলতি বছরের মার্চে জাপানিজ সোসাইটি অফ ফিশারিজ সায়েন্স আয়োজিত একটি আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয়েছে এবং ওই বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে কনফারেন্স পেপার হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণাটির উপাত্ত ওই বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে উপস্থিত আন্তজার্তিক মানের ৩০০ বিজ্ঞানীর সামনে উপস্থাপিত হয়। এছাড়া এ গবেষণার ফলাফল বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ হিসেবে প্রকাশের জন্যে বর্তমানে সম্পাদনা পর্যায়ে রয়েছে।
ড. তাসলিমা আরও বলেন, পর্যাপ্ত অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা ও গবেষণা সহায়তা পেলে এ ফলাফলকে কাজে লাগিয়ে মনোসেক্স শিং মাছ উৎপাদনে মৎস্য উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তায় যুগান্তকারী ভূমিকা রাখা যাবে। এই গবেষণার ফলাফল বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা চলছে।
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তারিখ ১০৮ বার পেছাল। আগামী ৩০ জুন প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন মামলার তদন্ত সংস্থা র্যাব প্রতিবেদন দাখিল করেনি। এজন্য ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল হকের আদালত প্রতিবেদন দাখিলের নতুন এ তারিখ ঠিক করেন।
আলোচিত এ হত্যা মামলায় রুনির বন্ধু তানভীর রহমানসহ মোট আসামি আটজন। অন্য আসামিরা হলেন-বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল ও আবু সাঈদ। আসামিদের প্রত্যেককে একাধিকবার রিমান্ডে নেওয়া হলেও তাদের কেউই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি নিজেদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়।
এরপর নিহত রুনির ভাই নওশের আলম রোমান রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। প্রথমে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন ওই থানার এক এসআই। চার দিন পর চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয় ডিবি। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে একই বছরের ১৮ এপ্রিল হত্যা মামলাটির তদন্তভার র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেই থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি সংস্থাটি।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ১৯০ মিলিয়ন পাউন্ড দুর্নীতি মামলায় জামিন পেয়েছেন। স্থানীয় সময় বুধবার (১৫ মে) ইসলামাবাদ হাইকোর্টের (আইএইচসি) প্রধান বিচারপতি আমির ফারুক ও বিচারপতি তারিক মেহমুদ জাহাঙ্গিরি এ রায় দেন। খবর দ্য ডনের।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন একজন আবাসন ব্যবসায়ীকে অবৈধ উপায়ে সহায়তা করায়, তার কাছ থেকে জমিটি উপহার স্বরূপ পান ইমরান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবি। যদিও বরাবরই এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছেন ইমরান। পরে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের কাছে জামিনের আবেদন করেন তিনি।
ইমরানের দলের আইনজীবী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ জামিন মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, আরও দুটি মামলার শাস্তি ভোগের কারণে ভূমি দূর্নীতিতে জামিন পেলেও দ্রুতই কারাগার থেকে ছাড়া পাচ্ছেন না ইমরান।
২০২২ সালের এপ্রিলে বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান। এরপর দুর্নীতি থেকে শুরু করে সন্ত্রাসবাদের বেশ কয়েকটি অভিযোগের মুখোমুখি হচ্ছেন।
তোশাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর গত বছরের আগস্ট থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন এবং পরবর্তীতে সাইফার ও অবৈধ বিয়ের মামলাসহ অন্যান্য মামলায়ও দোষী সাব্যস্ত হন।