সোমবার, ২০ মে ২০২৪ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Dhaka Prokash

বানানরীতি নিয়ে বিশিষ্টজনদের মুখোমুখি ঢাকাপ্রকাশ

প্রতি বছর যেন অকারণে আমরা বানান না বদলাই

বাংলা বানান নিয়ে বিতর্ক নতুন কিছু না। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মহলে এ নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। তবে সম্প্রতি বানান নিয়ে বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, স্কুলে যে বানান লিখলে শিক্ষক ভুল বলে কেটে দিতেন, এখন সেসব বানানকে শুদ্ধ বলে অভিধানে জায়গা দেওয়া হচ্ছে। আবার বাংলা একাডেমির বিভিন্ন অভিধানে একই শব্দের ভিন্ন বানান দেখা গেছে। এর ফলে অনেকেই বিভ্রান্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগও রয়েছে। আর এ নিয়ে চার বিশেষজ্ঞের মুখোমুখি হয় ঢাকাপ্রকাশ।

সেলিনা হোসেন, কথাসাহিত্যিক ও সভাপতি, বাংলা একাডেমি

ফেব্রুয়ারি আমাদের ভাষার মাস। আমাদের ভাষার একটি গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস আছে। দেশের তরুণরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে মায়ের ভাষাকে রক্ষা করেছে। বিশ্বের কোনো দেশে এমন নজির নেই। ভাষার জন্য এমন ত্যাগ আমরা আগে কখনো দেখিনি। ইউনেস্কো আমাদের তরুণদের সেই অবদানকে সম্মান জানিয়ে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা দান করেছে। প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়। বিশ্বব্যাপী বাংলা একটি গৌরবোজ্জ্বল এবং সুপরিচিত ভাষা হিসেবে আজ বিবেচিত। কাজেই সেই ভাষার সুষ্ঠু চর্চায় আমাদের যত্নশীল হতে হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।

ভাষাচর্চায় শুদ্ধ বানানরীতির প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। শুদ্ধ বানান একটি ভাষাকে অনেক বেশি শ্রুতিমধুর এবং মাধুর্যমণ্ডিত করে থাকে। বাংলা একাডেমিও সেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বানানরীতিতে পরিবর্তন নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। এর উদ্দেশ্য মূলত সহজ-সাবলীল একটি অভিধান তৈরি করা এবং সর্বত্র সেটির বাস্তবায়ন ঘটানো। প্রতিটি ক্ষেত্রে একই অভিধান অনুসরণ করা, যাতে করে বাংলাভাষীদের মধ্যে একটি মতৈক্য তৈরি হয়। মতভেদ-বিভেদ এড়ানো সম্ভব হয়।

আমাদের উচিত সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে পথ চলা। অনেক আগে যেমন সংস্কৃতি ছিল, সাধু ভাষা ছিল, গোত্র ভেদেও ভাষার প্রচলন ভিন্ন রকম ছিল। এখন সেরকমটি আর নেই। বৈশ্বিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আমরাও পরিবর্তনে বিশ্বাসী। তবে হ্যাঁ,এক্ষেত্রে যে কথাটি আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা যেন নিজেদের সংস্কৃতির কথা অর্থাৎ নিজস্বতাটুকু ভুলে না যাই।

অনেক ভাষাবিদ এবং গবেষক যারা আছেন, তারা অনেক বিচার-বিশ্লেষণ করে বাংলা বানানের নানাবিধ পরিবর্ধন পরিমার্জন করছেন। আমি এটিকে সাধুবাদ জানাই। এই যে তাদের অক্লান্ত প্রচেষ্টা, সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না এবং এটি অবশ্যই একটি সুফল বয়ে নিয়ে আসবে বলেই আমি সর্বোতভাবে বিশ্বাস করি।

ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট

বাংলা বানানের একটি অভিধান বাংলা একাডেমি কর্তৃক প্রণীত আছে। সেটি অনুসরণ করলেই চলে। বানান সহজিকরণের চেষ্টা আমি করেছিলাম, কিন্তু কাজ হয়নি। পণ্ডিতেরা সহযোগিতা করেননি। এখন যেমন দীর্ঘ-ঈকার কমে গেছে, হ্রস্ব-ইকার বেশি হয়েছে, যে সমস্ত শব্দের শেষে y আছে, সেগুলোতে হ্রস্ব-ইকার দেওয়া ঠিক নয়।  একাডেমি দীর্ঘ-ঈ কার স্থলে হ্রস্ব-ই কার হয়েছে,তবে ইংরেজিতে লিখতে হলে, y লিখতে হয়। এখন y কি i এর সমান হতে পারে? এজন্য আমার মনে হয়, বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে আরও ভালোভাবে আলোচনা বিবেচনা হওয়া দরকার।

বানানরীতি মানার ক্ষেত্রে শৈথিল্য আমাদের আছে। যে যার খুশিমতো লিখে। ইংরেজি শব্দের বাংলা উচ্চারণ যেমন–মেট্রোপলিটন, এর বানান metropolitan; কিন্তু ইংরেজিতে বানান তো ton নয়। gate এর বাংলা বানান গেইট কেন হবে? Face এর বানান, ফেইস। বানান করতে হয় হ্রস্ব-ই দিয়ে। বলা হয় এক, লেখা হয় আরেকভাবে। অনেক সমস্যা আছে বানানের ক্ষেত্রে।

তবে আমি মনে করি, বানান ভাবার্থ প্রকাশের সঙ্গে সহজ করে লেখা উত্তম। খেয়াল রাখতে হবে যেন সেটি করতে গিয়ে বেশি হ্রস্ব না হয়ে যায়। যেমন–‘শহীদ’ শব্দের বানান ‘শহিদ’ হয়ে গিয়েছে, না হলেও ক্ষতি ছিল না। ‘লক্ষ্য’ হয়েছে ‘লক্ষ’। অযথা সরকারি অর্থ অপচয় না করে বছর বছর রীতি নীতি পরিবর্তন না করে আমি মনে করি গঠনমুলক বিশ্লেষণের মাধ্যমে সকল ক্ষেত্রে একটি সুষ্ঠু সহজ বানান নীতি অনুসরণ করা উচিত যেটি জ্ঞান বিকাশে ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।

ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ

সরকারিভাবে আমাদের কোনো বানানরীতি নেই। বাংলা একাডেমি একটি নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা; যেমন–প্রথম আলোর একটি বানানরীতি আছে। আনন্দবাজার পত্রিকার একটি বানানরীতি আছে। আবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেরও একটি বানানরীতি থাকে। সেগুলো হচ্ছে তাদের কাজের সহায়তার জন্য। তারা যে প্রকাশনাগুলো করেন, তা একইরকম মানসম্পন্ন হওয়ার জন্য। সেখানে বানানে যেন কোনোরকম বিচ্যুতি না ঘটে। একই বানান যদি বিভিন্নভাবে লেখা হয়, তাহলে কিছু অসঙ্গতি তৈরি হয়। সে কারণে যারা একটু বড় প্রতিষ্ঠান, যেমন–বাংলা একাডেমিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, তারাও নিজেদের সুবিধার জন্য একটি বানান রীতি তৈরি করে। এই রীতিটা সর্বত্র প্রযোজ্য নয়।

সবক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যায়, সেরকম কর্তৃত্ব অথবা আইনি অবস্থান সরকারের আওতাধীন থাকে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যখন দায়িত্ব নেয়, তখন প্রতিষ্ঠানের কাজে তার প্রভাব পড়তে পারে। এখন গবেষণার যে বিভিন্ন পদ্ধতি আছে, গবেষণা সংস্থাগুলো দুই-তিন রকমের গবেষণা পদ্ধতি ব্যবহার করে। আমরা সাহিত্যে যারা গবেষণা করি, তাদের এক ধরনের গবেষণা পদ্ধতি, বিজ্ঞানে যারা গবেষণা করেন, তাদের এক ধরণের পদ্ধতি। সেখানেও আবার পার্থক্য দেখা যায়। এখানে ভাষা হচ্ছে প্রতিদিনের ব্যবহারের বিষয়। একই দেশের ভেতর বহুরকম মানুষ ভাষা ব্যবহার করছে এবং ভাষা ব্যবহার করছে আমাদের মিডিয়া। টেলিভিশনের ভাষা একরকম। রেডিওর ভাষা একরকম। সেজন্য ভাষার ভেতরে বানানগত পার্থক্য অথবা তারতম্য থাকবেই। আমাদের উচিত হবে একটি মোটামুটি অবস্থানে নিয়ে আসা, যাতে সমস্যা না হয়।

একই বানান আগে যেটি ছিল ধ্বনি কেন্দ্রিক বানানব্যবস্থা, যেমন–‘তীব্র’ শব্দটিতে ‘ত’-এর উপর জোর দেওয়া বুঝাতে দীর্ঘ ইকার ব্যবহার করা হয়। সে রকম কিছু কিছু বানান ছিল যেখানে চাপটি পড়ছে দীর্ঘ হয়ে,সেক্ষেত্রে দীর্ঘ ইকার। আগে চীন বানান আমরা দীর্ঘ-ঈকার দিয়ে লিখতাম, এখন লিখছি হ্রস্ব-ইকার দিয়ে। আমরা এখন ‘চিন’ বলছি, ‘চীন’ বলছি না। ‘আলী’ লিখতে–এটি যদি আরবিতে লেখা হয় তাহলে, আইন লাম দা, ফলে আলী হওয়ার কথা; কিন্তু আমরা হ্রস্ব-ইকার দিয়ে লিখছি। একাডেমি যে বানান রীতিটা তৈরি করেছিল, এটি নিশ্চয়ই গ্রহণযোগ্য। কারণ এটির পেছনে কিছু না কিছু গবেষণা আছে। আমি মনে করি, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এতটা করতে পারেনি।

বানানের একটি বেখাপ্পা বিষয় হলো–বাংলা ভাষায় লেখার ব্যাপারে এবং বলার ব্যাপারে আমরা যত না যত্নশীল, ইংরেজি ভাষার ক্ষেত্রে তারচেয়ে অনেক বেশি যত্নশীল। আমার আরও একটি আক্ষেপ হলো–আজ আমাকে যে প্রশ্নটি করা হচ্ছে, সেটি ফেব্রুয়ারি মাস বলেই করা হলো। এপ্রিল মাস হলে কেউ বলতো না। এতে প্রমাণিত হয়, আমরা ফেব্রুয়ারি মাসে গা ঝাড়া দিয়ে উঠি, তারপর এভাবে মাসটা পার হয়ে পরবর্তী মাসে চলে যায়। আমি মিডিয়াকে দোষ দেই না। আমি মনে করি, একটি স্ট্যান্ডার্ড বা প্রমিতকরণ এটি আমাদের প্রয়োজন। আমাদের লেখার স্বার্থে, আমাদের পড়ার স্বার্থে, আমাদের ভাষাকে সহজে ব্যবহারের স্বার্থে এটি আমাদের জন্য প্রয়োজন। সেজন্য ভাষার ব্যাকরণের যে নানারকম অসঙ্গতি আমরা লক্ষ্য করছি, সেখান থেকে আমাদের বেরুতে হবে। অকারণে কঠিন না করে বানানটি যেন একটু সহজ হয়, এটিও আমাদের দেখার বিষয়। কিন্তু একেবারে নিজেদের মনগড়া রীতি প্রয়োগ করাও আমাদের জন্য ভয়াবহ। সেজন্য গবেষণা প্রয়োজন। গবেষক, ভাষা তত্ত্ববিদরা ভাষাবিবর্তন পাঠ করেছেন যারা তারা পাঠ করবেন। তারপর যখন বানান রীতিতে দখল তৈরি হবে, তখন আমি মনে করি সেটি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুসরণ করা উচিত। পত্র-পত্রিকাগুলোরও তা অনুসরণ করা উচিত।

আমি এখানে সরকারের হস্তক্ষেপ সমর্থন করব না। কারণ শিল্প-সংস্কৃতির বিষয়গুলোতে আমি সরকারি নিয়ম মেনে চলার বিরুদ্ধে। আমি এটিকে আমাদের বিবেকের উপর ছেড়ে দিই। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির উপর ছেড়ে দিই। আমরা যদি বাংলাকে ভালবাসি তাহলে বাংলা বানানও আমরা সুন্দরভাবে লিখব এবং শিখব এবং মনে রাখব–যেন বানানের বিশৃঙ্খলা আমরা দূর করতে পারি। এটি আমাদের কাজ। সরকারের কাজ নয়। আমাদেরও দায় আছে। আমরা সব সরকারের উপর চাপিয়ে দেই, প্রতিষ্ঠানের উপর চাপিয়ে দেই–আমি তার বিপক্ষে।

বাংলা একাডেমি যে কাজটি করেছে, সেটি খুব ভালো একটি কাজ। তারা একটি গবেষণালব্ধ ফলের উপর নির্ভর করে কাজটি করেছিল। সেটি যথেষ্ট আধুনিক। সময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই তারা কাজটি করেছিল। ভাষার ক্রমাগত পরিবর্তন হচ্ছে। যখন এই অভিধানটি করা হয়েছিল, তখন অনেক কিছুই গোচরীভূত ছিল না। এখন ইন্টারনেটের ফলে নতুন নতুন জ্ঞান অর্জন করছি। সেই নতুন জ্ঞানের মাধ্যমে দুই-তিন বছর পর আমরা যেটুকু পরিবর্তন দরকার, সেটি করব। প্রতি বছর যেন অকারণে আমরা বানান না বদলাই এবং সর্বসম্মতভাবে যদি আমরা বানান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারি, সেটি ভালো দিক বলে আমি মনে করি।

মুহম্মদ নূরুল হুদা, মহাপরিচালক, বাংলা একাডেমি

বাংলা একাডেমি তার কাজ করে যাচ্ছে। বহু ভাষাবিদ এবং গবেষকগণ বছরের পর বছর ধরে তাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এর ফলে বাংলা একাডেমি কর্তৃক প্রণীত আজকের আধুনিক বাংলা অভিধান। অনেকেই এর পক্ষে বিপক্ষে আগেও কথা বলেছেন, এখনো বলে যাচ্ছেন। আমি এত কথায় না গিয়ে শুধু এটুকুই বলবো আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং সেটি ভাষার সহজ ও সুষ্ঠু প্রকাশ বিকাশ ও পরিমার্জনের জন্যই। এটাই মূল কথা।

কে মানছে কে মানছে না অথবা মানার ক্ষেত্রে শিথিলতা পরিলক্ষিত হচ্ছে কি না, এগুলো মতভেদ বাড়ায়। এই পরস্পরবিরোধী কথাবার্তায় না গিয়ে বরং আমরা যদি এভাবে মনে করি যে,বানানরীতি সহজিকরণে বাংলা একাডেমি যে কাজটি করছে, সেটি সব বাংলাভাষীর মঙ্গলার্থেই করছে এবং বাংলা একাডেমির আধুনিক বাংলা অভিধান যদি সর্বোতভাবে অনুসরণ করি,সেটিই সকলের জন্য সমুচিত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

এসএ/

Header Ad

প্রবাসীর স্বর্ণ ছিনতাইকালে আটক পুলিশের এসআই

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে এক প্রবাসীর স্বর্ণ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় আমিনুল ইসলাম নামে পুলিশের এক সাব-ইন্সপেক্টরকে (এসআই) ধাওয়া দিয়ে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় জনতা। একই সময়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তার সাথে থাকা এক পুলিশের সোর্স শহীদুল ইসলাম জাহেদকেও আটক করেছে পুলিশ।

রোববার (১৮ মে) বিকেলে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার থেকে তাদের আটক করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী চট্টগ্রামের লোহাগড়া উপজেলার বাসিন্দা আবদুল খালেক জানান, তার ছোট ভাইয়ের পাঠানো ১৬ ভরি ওজনের ৮টি বালা নিয়ে চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে নিয়ে ফিরছিলেন তিনি। দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে নগরীর টাইগারপাস এলাকায় তাকে পুলিশ পরিচয়ে বাস থেকে নামায় দুই যুবক। পরে তাকে সিএনজিতে উঠিয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়কে ঘুরিয়ে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারে উঠে স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিয়ে নামিয়ে দেয়া হয়। এসময় চিৎকার শুরু করেন ভুক্তভোগী। ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া সাধারণ মানুষেরা দুই ছিনতাইকারীকে ধাওয়া দিয়ে আটক করে।

এসময় পাশ দিয়ে যাচ্ছিল পাঁচলাইশ থানা পুলিশের একটি টহল দল। টহল দল দুই ছিনতাইকারীর মধ্যে একজন খুলশী থানার এস আই আমিনুল ইসলাম বলে নিশ্চিত হয়। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানা গেছে।

নওগাঁয় পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণ গেল ২ শিশুর

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁয় পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রোববার (১৯ মে) দুপুরে জেলার পোরশা ও মহাদেবপুর উপজেলায় পৃথক সময়ে এ দূর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতরা হলো- পোরশা উপজেলার নিতপুর মনোহরপুর গ্রামের রুবেল ইসলামের ছেলে লালচাঁন ইসলাম (৭) এবং মহাদেবপুর উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের বুজরুক বড়াইল গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে সিফাত হোসেন (১২)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়- রোববার দুপুরে রুবেল ইসলাম তার ছেলে লালচাঁনকে সাথে নিয়ে পোরশা উপজেলার কপালী মোড় পোশাকসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্যে আসেন। এসময় রাস্তা পারাপারের সময় মাসুদ বিড়ি বহনকারি একটি অটোরিশার লালচাঁনকে ধাক্কা দেয়। এতে লালচাঁন গুরুত্বর আহত হয়ে রাস্তার ওপর ছিটকে পড়ে যায়। ঘটনাটি দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পোরশা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতিয়ার রহমান জানান, সংবাদ পেয়ে অটোরিকশার চালক আবুল কালামকে আটকসহ অটোরিকশাটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
অপরদিকে, রোববার বিকেল ৫টার দিকে মহাদেবপুর উপজেলার নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের রানীপুকুর মাদ্রাসার অদূরে বাস চাপায় সিফাত হোসেন নামে শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ফয়সাল হোসেন নামের আরেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। নিহত সিফাত হোসেন মহাদেবপুর উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের বুজরুক বড়াইল গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে এবং রানিপুকুর ক্বেরাতুল কুরআন ক্বওমী মাদ্রাসার কিতাব বিভাগের ছাত্র।

মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুহুল আমিন দূর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিএনপি নেতা ইশরাককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ‘ভুয়া উপদেষ্টাকাণ্ডে’র মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনের জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।

রোববার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এই আদেশ দেন।

ইশরাকের আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ বলেন, এ মামলায় ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছিলেন ইশরাক। সেই সময় শেষ হতে চলায় গত ২৩ এপ্রিল তিনি জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন।

ইশরাক হোসেন পল্টন থানাসহ ১২টি মামলায় স্থায়ী জামিন আবেদন করেন। আদালত ১১ মামলায় জামিন মঞ্জুর করেন। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টাকাণ্ডের ঘটনায় পল্টন থানার মামলায় তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

আদেশের প্রতিক্রিয়ায় ইশরাক বলেন, হাই কোর্টথেকে জামিনে থাকলে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও বেশিরভাগ মামলাতেই আদালত জামিন দিয়ে দেন। কিন্তু একটায় আটকানো হল আমাকে। এটা উদ্দেশ্যমূলক। সরকার তো গোটা দেশটাকেই কারাগার বানিয়ে ফেলেছে।

গত ২৯ অক্টোবর মহিউদ্দিন শিকদার নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন থানায় এ মামলা করেন। মামলায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘উপদেষ্টা’ পরিচয় দিয়ে বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা মিঞা জাহিদুল ইসলাম আরেফীর পাশাপাশি অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশ উপলক্ষে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। ওইদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এক পর্যায়ে কাকরাইল মোড় থেকে আরামবাগ মোড় পর্যন্ত সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।

সে সময় বিচারপতির সরকারি বাসভবনসহ সরকারি স্থাপনা ও গাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিএনপিকর্মীরা। তাতে পুলিশের ৪১ সদস্য আহত ও এক সদস্য নিহত হন। এক পর্যায়ে বিকাল ৩টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা মহাসমাবেশ স্থগিত ঘোষণা করেন।

এজাহারে বলা হয়, বিএনপির ওই কর্মকাণ্ডের পর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে আসামি জাহিদুল ইসলাম আরেফী, চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে ২০ জন নেতাকর্মী কিছুসংবাদমাধ্যমের সামনে উপস্থিত হন। মে সময় আরেফী নিজেকে বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেন। বাংলাদেশ পুলিশ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন ও বিচার বিভাগের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তার সরকারের কাছে সুপারিশকরেছেন বলে তিনি বক্তব্য দেন।

এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, মামলার ২ নম্বর আসামি হাসান সারওয়ার্দী এবং ৩ নম্বর আসামি ইশরাক হোসেন আরেফীকে ‘মিথ্যা বক্তব্য দিতে সহযোগিতা’ করেন এবং তার বক্তব্য সমর্থন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিতে ‘উসকানি’ দেন।

সর্বশেষ সংবাদ

প্রবাসীর স্বর্ণ ছিনতাইকালে আটক পুলিশের এসআই
নওগাঁয় পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণ গেল ২ শিশুর
বিএনপি নেতা ইশরাককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ
ঘুষের দর-কষাকষির অডিও ভাইরাল, ফেঁসে যাচ্ছেন এএসআই
দুর্ঘটনার কবলে ইরানের প্রেসিডেন্ট রইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার
১৭ মন্ত্রী-এমপির স্বজন চেয়ারম্যান প্রার্থী: টিআইবি
দ্বিতীয় ধাপে টাঙ্গাইলে ৩ উপজেলায় নির্বাচন, আইন-শৃংখলা রক্ষায় জেলা পুলিশের ব্রিফিং
মিশা-ডিপজল দুজনেই মূর্খ: নিপুণ
পুকুর খননের মাটির ভেতর থেকে মিলল কষ্টি পাথরের লক্ষ্মী-নারায়ন মূর্তি
ভারতে গিয়ে নিখোঁজ ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য
কালশীতে পুলিশ বক্সে আগুন দিল অটোরিকশাচালকরা
‘পৃথিবী থেকে বিদায়,ভালো থাকো সবাই, সব শেষ আমার’ লিখে ফেসবুকে পোষ্ট দিয়ে যুবকের আত্নহত্যা
মেট্রোরেলের উত্তরা-টঙ্গী রুটে হবে পাঁচ স্টেশন
টাঙ্গাইলে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে প্রাণ হারালো রাজমিস্ত্রী
পৃথিবীতে ধেয়ে আসতে পারে আরও ভয়ানক সৌরঝড়
পাকিস্তানে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ১৪ জন নিহত
স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ঈদের আগেই মসলার বাজার গরম, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির অযুহাত ব্যবসায়ীদের
বান্দরবানে সেনাবাহিনীর অভিযানে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত
বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা কংগ্রেসের ভোটব্যাংক : অমিত শাহ