বুধবার, ১৫ মে ২০২৪ | ৩১ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

আমার পদ্মা আমার জয় বাংলা

আর দুদিন পরেই প্রমত্তা পদ্মার উপরে স্বপ্নের সেতু উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে নতুন ইতিহাসের যে সূত্রপাত হতে যাচ্ছে-যথারীতি এই স্বপ্নের সারথি হচ্ছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পর থেকেই তিনি একের পর এক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও সার্থক করে তোলার জন্যে উদয়স্ত পরিশ্রম করে চলেছেন। এমন একটা সময় পদ্মা সেতুর সূচনা হতে যাচ্ছে যখন একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন ও উদযাপন শুরু হয়েছে। এখন থেকে ৭৩ বছর আগে যখন আওয়ামী লীগের স্বপ্ন দেখা শুরু হয়েছিল, সে সময় ভেতরে ভেতরে একটা মৌলিক রাজনৈতিক শক্তির জন্ম দেওয়ার ভাবনাটি ছিল আমাদের দেশের প্রগতিশীল সমাজের মধ্যে এবং মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে। আওয়ামী লীগ হলো সেই রাজনৈতিক দল যে দলটি সর্বদা বাংলাদেশের মানুষের কথাই বলে এসেছে। মধ্যবিত্ত মানুষের চিন্তা-ভাবনা, আপামর জনসাধারণের আশা-আকাঙ্ক্ষা, এদেশের মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তা ও অন্তরের কথাগুলো দলটির জন্মের পর থেকেই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে নানাভাবে তা প্রতিফলিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ অবিনশ্বর একটা স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশের মাটিতে তার নিজের যে অস্তিত্বের ঘোষণা করেছিল; তা আজও স্বগৌরবে বহমান।

আওয়ামী লীগ ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন রোজ গার্ডেনে যখন প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করল সেই সময় পর্যন্ত দেশের রাজনীতি ছিল ভূস্বামী-ধনবান এবং সামন্ত শ্রেণির হাতে কব্জাগত। আওয়ামী লীগ হলো সেই রাজনৈতিক দল যে প্রথম রাজনীতিতে মধ্যবিত্ত, বুদ্ধিজীবী শ্রেণি ও গণমানুষের প্রবেশ ঘটিয়েছে এবং মানুষের চিন্তা-ভাবনার জগতটাকে প্রসারিত করার জন্যে প্রতি মুহূর্তে তাঁর নিজের অবস্থানকে প্রমাণ করেছে এবং মানুষের কাছে সুদৃঢ় করেছে। এই সুদীর্ঘ পথপরিক্রমা দলটির জন্য কোনোভাবেই সহজ ছিল না; নানা ঝড়-ঝঞ্ঝা, বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও কণ্টকাকীর্ণ ছিল পুরো সময়টিই। পাকিস্তানের তৈরি কাঠামোর ভেতর দিয়েই পাকিস্তানকে অস্বীকার করার ঐতিহাসিক ও সাহসী কাজটিই করেছিল আওয়ামী লীগ। বাঙালির নিজস্ব জাতিসত্তাকে রক্ষা করার বিষয়টি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম থেকেই খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বুজতে পেরেছিলেন এবং সেই অনুযায়ী তার লড়াই-সংগ্রামের পথে সেটিকে মৌলিক পাথেয় হিসেবে সর্বদা সম্মুখে রেখেছিলেন। আমরা যদি ইতিহাসের দিকে তাকাই তাহলে এই বিষয়টি পরিস্কার হয়ে ওঠে যে রাজনীতিতে পদার্পণের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর কলকাতার জীবন এবং পরবর্তী সময়েও তার রাজনৈতিক দর্শনের এটিই ছিল একটি অন্যতম মন্ত্র।

১৯৫৭ সালে বামেরা সরে গেলে আওয়ামী লীগ বিভক্ত হলো; তখন অনেকেই ভেবেছিলেন আওয়ামী লীগ দুর্বল হয়ে গেল; অনেকে আবার দলটির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার শেষও দেখে ফেলল। কিন্ত না, আমরা দেখলাম-আওয়ামী লীগ তার নিজস্ব মহিয়ায়, নিজস্ব আদর্শ ও বিশ্বাসের ভেতর দিয়ে আরো দুর্বার গতিতে ধাবিত হতে লাগলো এবং নিজেকে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করল। প্রকৃতপক্ষে, সাতান্নতে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের পুনর্জন্মই হলো।

আমরা যদি একাত্তরপূর্ব ইতিহাসের দিকে লক্ষ্য করি, এটা স্পষ্ট হয়ে উঠবে যে বাঙালি জাতির রয়েছে দীর্ঘ শোষণ-বঞ্চনার ইতিহাস, রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের ইতিহাস। ’৪৭-এর দেশ ভাগের পর ২৩ বছর বৈষম্যে জর্জরিত হয় পূর্ব পাকিস্তান নামের এই ভূখণ্ডটি। আমরা দেখতে পাই, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার যে বীজ প্রোথিত হয়েছিল, দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে একাত্তরের ২৬ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে তা পূর্ণতা পায়। তারই নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনায় হিংস্র পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে সুদীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে অর্জিত হয় বহু-কাঙ্ক্ষিত বিজয়। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৪৮ সাল থেকে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের পথ ধরে আসে একাত্তর। ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে দাঁড়িয়ে জাতির পিতার সেই উদ্দাত্ত কণ্ঠের উচ্চারণই ছিল বাঙালি জাতির স্বাধীনতা ও মুক্তির চূড়ান্ত উচ্চারণ, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

যাকে ছাড়া অধরাই থেকে যেত বাঙালি জাতির স্বাধীনতার স্বপ্ন, মুক্তির স্বপ্ন; তিনি হলেন বাঙালি জাতির কা-ারি হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালি বিশ্বের চির বিস্ময় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান; যার পুরোটা জীবন নিবেদন করেছিলেন এদেশের মানুষের মুক্তি ও স্বাধীনতার জন্যে; বিনিময়ে সমস্ত প্রকারের অত্যাচার-নির্যাতন-জেল-জুলুম সহ্য করে তিনি হয়েছিলেন নীলকণ্ঠ। লড়াই-সংগ্রামের এই সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে জাতির জনককে তার রাজনৈতিক জীবনে ৪ হাজার ৬৮২ দিনই কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে অতিবাহিত করতে হয়েছে! যার মধ্যে ব্রিটিশ আমলে সাত দিন ছাড়া বাকি ৪ হাজার ৬৭৫ দিনই পাকিস্তান সরকারের আমলে। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু তার জীবনের ১৪টি বছরই ছিলেন কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে!

১৯৫৪ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পরও বঙ্গবন্ধুকে কারাগারে যেতে হয়; আইয়ুব খানের সামরিক আইন জারি করলে তাঁকে হতে গ্রেপ্তার হয়। ১৯৬২, ১৯৬৪ ও ১৯৬৫ সালে তাকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়। ছয় দফা উত্থাপনের পর জাতির পিতা যেখানে সমাবেশ করতে গেছেন, সেখানেই গ্রেপ্তার হয়েছেন। এরপর ৬৬-তে আবার গ্রেপ্তার হয়ে ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মুক্তি পান। শেষবার ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার পরপরই পাকিস্তান সরকার তাকে গ্রেপ্তার করে এবং পাকিস্তানের কারাগারে তাঁকে হত্যা করার সকল পরিকল্পনাই শেষে ভেস্তে যায়। কিন্ত ৭৫-এ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার ষড়যন্ত্রে সফল হয়।
ষড়যন্ত্রকারীরা ভেবেছিল বাংলাদেশের হৃদয় থেকে তার নাম চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেবে; ৭১-এ পরাজিত শক্তির করতলে আবার দেশটাকে নিপতিত করবে। কিন্তু বাস্তবতা তো এটাই যে, যতই সময় অতিক্রান্ত হচ্ছে ততই তিনি অধিকতর ঔজ্জল্য নিয়ে পরিব্যাপ্ত হচ্ছেন। তার দেশপ্রেম, তার দূরদর্শিতা, তার জাদুকরী সাংগঠনিক ক্ষমতা, তার মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি, মানুষের স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্যে সারা জীবনের সংগ্রাম ও ত্যাগের মধ্য দিয়ে একটি জাতিকে শোষণের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করে একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন, সেই ইতিহাস, সেই অমর কীর্তিকে ঘাতকেরা কি মুছে দিতে পেরেছে? বরং, সেই দেশটিই আজ পৃথিবীর বিস্ময়, বহু চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজ পুরো বিশ্বকে সম্মোহিত করে এগিয়ে চলেছে দোর্দ- প্রতাপে। যে দেশটির জন্যে বঙ্গবন্ধু তার সমগ্র জীবনকেই নিয়োগ করেছিলেন এবং যেই স্বপ্নগুলো তার অসম্পূর্ণ ছিল –সেই স্বপ্নগুলো আজ পর্যন্ত তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সমস্ত বাধা-বিপত্তিকে পদদলিত করে একটি একটি করে দৃঢ়তার সঙ্গে বাস্তবায়ন করে চলেছেন। ঘাতকেরা তাকেও বারংবার খুন করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। কিন্ত জাতীয় চার নেতাকে আমরা নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে দেখেছি। এ ছাড়াও, দলটির অসংখ্য নেতা-কর্মীর জীবন দিতে হয়েছে। সুতরাং, এই আওয়ামী লীগ যে আজ অবধি মানুষের প্রাণের সংগঠনে পরিণত হতে পেরেছে তার পেছনের কারগুলোর মধ্যে অন্যতম কারণ হলো মানুষের জন্যে দলটির বহু ত্যাগ স্বীকার।

 

বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এ স্বাধীনতা আমার ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি আমার বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না খায়। এই স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়।’ মুক্তিযুদ্ধেরও লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি অর্থনৈতিক মুক্তি। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে সদ্যস্বাধীন দেশে ফিরে জাতির পিতা সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অর্থনীতি ও অবকাঠামো পুনর্গঠনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম শুরু করেছিলেন। ডাক দিয়েছিলেন কৃষি বিপ্লবের। আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন দুর্নীতি, কালোবাজারি, মুনাফাখোরী, লুটেরাদের বিরুদ্ধে। তাকে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের ফলে উন্নয়নের সেই গতি থমকে দাঁড়ায়। রুদ্ধ হয় গণতন্ত্র ও উন্নয়নের অগ্রযাত্রা। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজকে পরিপূর্ণতা দানের লক্ষ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনা ‘ভিশন- ২০২১’, ‘ভিশন ২০৪১’ এবং শতবর্ষ মেয়াদি ‘ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ গ্রহণ করেছেন। এসব পরিকল্পনার অন্যতম লক্ষ্য হলো জাতিসংঘ ‘টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট ২০৩০’ অর্জনসহ ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা। কিন্ত কুচক্রীরা কি আর থেমে আছে? তারা নানা কথা বলে চলেছেন, নানা রকমের ষড়যন্ত্র করে চলেছেন; কিন্ত আওয়ামী লীগ তার পথে অবিচল থেকেছে। আওয়ামী লীগ তার নীতিতে অবিচল, তার আদর্শে অবিচল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অবিচল, অসাম্প্রদায়িক চিন্তায় অবচল। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের পথে এবং একটি অর্থনৈতিকভাবে বৈষম্য-বঞ্চনাহীন সমাজ গঠনে নিরন্তর ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলছে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে যে রাজনৈতিক দল সেই দলটিই হলো আওয়ামী লীগ। এই দলের নেতৃত্বেই আজ জাতির জনকের আশংকা দূরীভূত হয়েছে তারই কন্যার হাতে। আজ দেশে মানুষের খাওয়ার চিন্তা নেই, কাপড়ের অভাব নেই। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো এক বিস্ময়কর স্বপ্নের প্রকল্পের সফলতার মুখ দেখছে জাতি এবং সেই অর্জন বিশ্বের মানুষের কাছে এক বিস্ময়ের নাম। যদি সপ্তম আশ্চর্যের পর পৃথিবীতে অষ্টম আশ্চর্যের কোনো কিছুকে বিবেচনা করা হয় সেটা হলো -এই পদ্মা সেতু; যার আয়ুষ্কাল ধরা হয়েছে ১২০ বছর। এই পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের অপেক্ষায় সারা দেশের মানুষ তো বটেই; পৃথিবীর বহু দেশের মানুষ ও বিশেষজ্ঞরা অধীর অপেক্ষায় রয়েছেন। তারা অবাক বিস্ময়ে ভাবছেন- এই দলটির কাণ্ডারি যেই মানুষটি তিনি কিভাবে সমস্ত অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারলেন!

১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যে নৌকা প্রতীক ছিল সেই প্রতীককে আওয়ামী লীগ নিজের করে নিয়েছে। এখন পর্যন্ত সেই প্রতীক আওয়ামী লীগ বহন করে চলেছে; যেই প্রতীক নদীমাতৃক বাংলাদেশেরই এক চিরন্তন প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বস্তুত, এটি সম্ভব হয়েছে দলটির গণমানুষের কল্যাণে রাজনীতির চর্চা, গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী ও নৈতিক আদর্শের প্রতি অটল অবস্থানের কারণেই। সুতরাং, বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করেন এবং ভালোবাসেন।

বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাচীন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনায় ঋদ্ধ একটা সংগঠন হলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। তার গৌরবময় ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন এবং বাংলাদেশের এযাবত কালের শ্রেষ্ঠ অর্জন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন যেন একই যাত্রার সহযাত্রী, একে অপরের পরিপূরক, একই বৃন্তে দুটি ফুল। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে এই প্রত্যাশা করি যেন বাংলাদেশকে স্বনির্ভর জাতি হিসেবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার গৌরবময় অভিযাত্রায় আওয়ামী লীগের আগামীর দিনগুলো মঙ্গলময় হয়; বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। জয় বাংলা।

লেখক: সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক জাগরণ

Header Ad

বিদেশে বসে জঙ্গিবাদ উসকে দেওয়া হয় : দীপু মনি

ছবি: সংগৃহীত

বিদেশে বসে রিমোট কন্ট্রোলে করে বাংলাদেশে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদকে উসকে দেওয়া হয় বলে মন্তব্য করেছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, অসাম্প্রদায়িক দেশ চাইলে রাজনীতিকে বেছে নিতে হবে। দেশে রাজনীতি ঠিক হলে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।

মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘ঋষি সম্প্রদায়ের অধিকার ও টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে পলিসি এ্যাডভোকেসি রোডম্যাপ’ শীর্ষক জাতীয় গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। গ্রাম বিকাশ সহায়ক সংস্থা-জিবিএসএস আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সংস্থার চেয়ারপার্সন প্রফেসর সাজেদা বানু। আলোচনায় অংশ নেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. খায়রুল আলম শেখ, কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর কেটি ক্রোক, ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তফা আলমগীর রতন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান যুব ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিষ্টার তাপস কান্তি পাল, কাপের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রেবেকা সানইয়াত জিবিএসএস’র নির্বাহী পরিচালক মাসুদা ফারুক রতান প্রমুখ।

আলোচনায় অংশ নিয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, যেখানে কেউ পিছিয়ে পড়ে থাকবে না। আইন, নীতিমালা প্রণয়ন থেকে বাস্তবায়ন সকল পর্যায়ে সকলের অংশগ্রহণ হওয়া জরুরি। দেশে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ সমান মৌলিক অধিকার নিয়ে বসবাস করতে পারে সেই লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। কোন নীতিমালা সংবিধানের উপরে নয়। নীতিমালায় থাকুক না থাকুক সেটা বিষয় নয়। এই রাষ্ট্রে সবাই সমান অধিকার পাবে। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে বেড়ানো দলকে দেশ থেকে তাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

ঋষি সম্প্রদায়ের লোকেরা প্রত্যাশা অনুযায়ী যথাযথ জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি মন্তব্য করে ডা. দীপু মনি বলেন, অসাম্প্রদায়িকতা, সাম্য ও সমতার ভিত্তিতে এই দেশ সৃষ্টি হয়েছে। সংবিধান আমাদের সমান অধিকার দিলেও স্বাধীনতার পর একটা লম্বা সময় দেশের ক্ষমতায় ছিলো, যারা স্বাধীনতা ও সংবিধানে বিশ্বাস করে না। সেই কারণে আমাদের যতোটা এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিলো সেটা হয়নি। তবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সরকার কাউকে পিছনে ফেলে নয়, সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার, উন্নত দেশগড়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এই কাজে বেসরকারি সংগঠনগুলোকেও রাজনৈতিক সচেতনতা নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

সভায় সচিব মো. খায়রুল আলম শেখ বলেন, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী হিসেবে ঋষি সম্প্রদায়ের মানুষদের বিশেষ সহযোগিতা দিয়ে এগিয়ে নেওয়া দরকার। ঋষি সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েরা চাইলে ট্যানারি শিল্প কিংবা জুতা কারখানায় নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতা অনুসারে অগ্রাধিকার বা সুযোগ করে দিতে হবে। এছাড়া বিশেষ পেশায় যারা আছেন তাদের উৎপাদিত বিশেষায়িত পণ্য উচ্চমূল্যে দেশে-বিদেশে বিক্রি হতে পারে।

সভায় ঋষি সম্প্রদায়ের অধিকার ও টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে পাঁচ দফা পলিসি এ্যাভোকেসি রোডম্যাপ সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়। সুপারিশে ঋষি সম্প্রদায়ের মৌলিক অধিকার রক্ষায় নীতিমালা সংশোধন ও একটি সংসদীয় ককাসের গঠনের প্রস্তাব করা হয়। এছাড়া বিগত মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত বৈষম্যবিরোধী আইন দ্রুত প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার তাগিদ দেওয়া হয়।

ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর একাধিক হামলার দাবি কাসসাম ব্রিগেডের

ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর একাধিক হামলার দাবি করেছে হামাসের সশস্ত্র কাসসাম ব্রিগেড। টেলিগ্রাম চ্যানেলে তারা হামলার বিষয়ে জানিয়েছে।

কাসসাম ব্রিগেড বলেছে, রাফাহর পূর্বাঞ্চলীয় আল-সালাম এলাকায় ইয়াসিন-১০৫ রকেট দিয়ে একটি ইসরায়েলি সেনাবাহী রণতরী ধ্বংস করা হয়েছে। এতে কয়েকজন ক্রু সদস্য নিহত এবং অন্যরা আহত হয়েছেন। এছাড়া রাফার পূর্বাঞ্চলে ইসরায়েলি সামরিক বুলডোজার উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

টেলিগ্রাম চ্যানেলে আরও বলা হয়েছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে জাবালিয়ার পূর্বাঞ্চলে একদল ইসরায়েলি সেনা ও সামরিক যানে গোলাবর্ষণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে জাবালিয়ার উত্তর-পূর্বে ইয়াসিন-১০৫ রকেট দিয়ে মারকাভা ট্যাংক লক্ষ্য করে হামলা চালায়। পাশাপাশি জাবালিয়ার পূর্বাঞ্চলে স্নাইপারের গুলিতে এক ইসরায়েলি সেনা আহত হয়েছেন।
হামাসের হামলা নিয়ে ইসরায়েল কোনো মন্তব্য করেনি।

এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ৩০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটির মধ্যাঞ্চলীয় নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের একটি ভবনে ইসরায়েল হামলা চালালে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে। সূত্র : আল জাজিরা

ইরানের সাথে চাবাহার চুক্তি, ভারতকে নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের

ছবি: সংগৃহীত

ইরানের চাবাহার বন্দর পরিচালনার জন্য ভারত ১০ বছরের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

ওয়াশিংটন বলেছে, কোনো দেশ যদি ইরানের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখে, তাহলে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো হতে পারে।

পাকিস্তান লাগোয়া ইরানের সীমান্তের কাছের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ চাবাহার বন্দরের উন্নয়নের জন্য তেহরান-নয়াদিল্লির মাঝে ২০১৬ সালে একটি প্রাথমিক চুক্তি হয়। সোমবার এই বন্দরের উন্নয়ন ও পরিচালনার জন্য ইরানের সাথে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ভারত। ভারতের নৌপরিবহন মন্ত্রী এই চুক্তিকে ‘‘ভারত-ইরান সম্পর্কের ঐতিহাসিক মুহূর্ত’’ বলে অভিহিত করেছেন।

তবে ইরানের সাথে ভারতের চুক্তির বিষয়টিকে ভালোভাবে নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। ইরান-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে গত তিন বছরে ছয় শতাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন।

মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই চুক্তির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এখনও বহাল রয়েছে এবং ওয়াশিংটন সেগুলোর প্রয়োগ অব্যাহত রাখবে।

তিনি বলেন, ‘‘যেকোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান— যারাই ইরানের সাথে বাণিজ্যিক কার্যক্রমের বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে; তাদের সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে হবে যে, তারা নিষেধাজ্ঞার সম্ভাব্য ঝুঁকির মাঝে নিজেদেরই উন্মুক্ত করে দিচ্ছে।’’

তবে ওয়াশিংটনের এই বিবৃতির বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

২০১৮ সালের শেষের দিকে ইরানের চাবাহার বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে ভারত। বন্দরটি পাকিস্তানের স্থলপথ এড়িয়ে আফগানিস্তান এবং মধ্য-এশিয়ায় ভারতীয় পণ্য পরিবহন ও সরবরাহের একটি নতুন ট্রানজিট রুট খুলে দেয়। কর্মকর্তারা বলছেন, এখন পর্যন্ত চাবাহার বন্দরের মাধ্যমে ভারত থেকে আফগানিস্তানে ২৫ লাখ টন গম ও ২ হাজার টন ডাল পাঠানো হয়েছে।

ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান পোর্টস গ্লোবাল লিমিটেড (আইপিজিএল) এবং ইরানের পোর্ট অ্যান্ড মেরিটাইম অর্গানাইজেশন চাবাহার বন্দরের উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী এক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে বলে সোমবার ভারতের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

ইরানের সড়ক ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী মেহরদাদ বজরপাশ বলেছেন, চুক্তি অনুযায়ী— চাবাহার বন্দরের উন্নয়নে আইপিজিএল অতিরিক্ত ২৫০ মিলিয়ন ডলার অর্থায়নের পাশাপাশি আরও প্রায় ১২০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। এর ফলে এই বন্দরে ভারতের মোট বিনিয়োগ দাঁড়াবে ৩৭০ মিলিয়ন ডলারে।

আর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, চুক্তিটি চাবাহার বন্দরে বড় বিনিয়োগের পথ পরিষ্কার করবে। সূত্র: বিবিসি

সর্বশেষ সংবাদ

বিদেশে বসে জঙ্গিবাদ উসকে দেওয়া হয় : দীপু মনি
ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর একাধিক হামলার দাবি কাসসাম ব্রিগেডের
ইরানের সাথে চাবাহার চুক্তি, ভারতকে নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের
মোটরসাইকেলের গতি সীমা নিয়ে যা বললেন ডিএমপি কমিশনার
গলায় লিচুর বিচি আটকে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু
টাঙ্গাইলে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ গেল এক কলেজছাত্রের
খারকিভে হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া
নিজের পদ্ধতিতে মস্তিষ্কের ক্যানসার মুক্ত হলেন চিকিৎসক
মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে নগদ টাকাসহ ১৯ ভরি স্বর্ণ লুট
স্বজনদের কাছে ফিরলেন এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিক
পাকিস্তানি বলে গুলিস্তানের ড্রেস বিক্রি করতো গুলশানের ‘সানভীস বাই তনি’
ইলিয়াস হোসাইনের বিরুদ্ধে তিনটি মামলাই খারিজ করে দিয়েছে আদালত
মার্কিন স্যাংশন, ভিসা নীতিকে পাত্তা দেই না: ওবায়দুল কাদের
ইসরায়েলের সঙ্গে মিলে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৫ কোম্পানির ইলেকট্রোলাইট ড্রিংকস নিষিদ্ধ চেয়ে মামলা
তাসকিনকে নিয়ে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা, বাদ সাইফউদ্দিন
ঢাকায় ডোনাল্ড লু
টঙ্গীতে নারী আইনজীবীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
৭ জেলায় বইছে মৃদু তাপপ্রবাহ
এম ভি আবদুল্লাহ থেকে পণ্য খালাস শুরু