
নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হলেই নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য বলা যায় না
৩০ মে ২০২৩, ১২:৩৭ পিএম | আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৫:১৬ এএম

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে ঠিকই, তবে গ্রহণযোগ্য হয়নি। নির্বাচনে বিরোধী দল না থাকলে সেই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য বলা যায় না। আর বিএনপিই এখানে প্রথম বিরোধী দল। তাদের কোনো প্রার্থী নির্বাচনে ছিল না।
২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী যেভাবে হয়রানি, নির্যাতন, হামলা, মামলার শিকার হয়েছিলেন, তাতে তারা নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। আর যেখানে বিরোধী দলের প্রার্থী নেই, সেখানে সত্যিকার চয়েস (বেছে নেওয়ার সুযোগ) থাকে না। তাই এ নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বলা যাবে না।
কয়েকটি কারণে গাজীপুরে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে বলা যায়। ২০১৮ সালে বিএনপি প্রার্থীকে মাঠছাড়া করা হয়েছিল, এবার তেমন প্রতিপক্ষ ছিল না। যেহেতু বিরোধী দলের প্রার্থী ছিল না, তাই দলীয়ভাবে অনুগত প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা বোধ করেনি। সরকারি দলের নেতা-কর্মীরাও বাড়াবাড়ি করেনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতিতে পরিবর্তনও নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে বড় ভূমিকা রেখেছে। কারণ, সরকারি দলের নেতা-কর্মী বা যারাই নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন, তাদের মাথার ওপর ভিসানীতির খড়গটা ছিল। নির্বাচনী অপরাধে লিপ্ত হলে তারা নিজেরা ও পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাওয়ার সুযোগ হারাতে পারেন। আর এই ভিসাটা সবার কাছে আকর্ষণীয়।
প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনে ফলাফল যে কারও পক্ষেই যেতে পারে, যা পুরোপুরি প্রার্থীদের ভোটারদের সমর্থন আদায়ের উপর নির্ভর করে। যেসব নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয় সেগুলোতে ভোট পড়ার হারও বেশি হয়। পক্ষান্তরে, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ না হলে বা একতরফা হলে ভোটাররাও ভোট প্রদানে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। একাদশ সংসদ নির্বাচন-পরবর্তী নির্বাচনগুলো যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হলে ভোটারদের সামনে প্রার্থী বেছে নেওয়ার অর্থপূর্ণ বিকল্প থাকে, ফলে ভোটারদের প্রদত্ত ভোট নির্বাচনের ফলাফলের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখতে পারে।
এদিকে জাতীয় নির্বাচনে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার রদবদল হবে। সেখানে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। অর্থাৎ যিনি দলের প্রধান, তিনিই সরকারপ্রধান, তিনিই সংসদের প্রধান এবং তার মন্ত্রিসভার অধীনে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেখানে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে তা কোনোভাবেই বলা যায় না। তবে মার্কিন ভিসানীতি যেহেতু জাতীয় নির্বাচনেও প্রযোজ্য, তাই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হলেও হতে পারে। তবে নিশ্চয়তা দেওয়া যাবে না। বরিশালে সরকারি দলের মধ্যেই বিভক্তি আছে। সেখানে শক্তিশালী বিরোধী প্রার্থী আছে। সেখানেও নির্বাচন শাক্তিপূর্ণ হবে নিশ্চিত করে বলা যাবে না।
মনে রাখতে হবে, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য অনেকগুলো স্টেক হোল্ডার বা অংশীজন থাকে। যার মধ্যে নির্বাচন কমিশন হলো সবচেয়ে বড় অংশীজন। নির্বাচন কমিশনকে অগাধ ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে। বুঝতে হবে এটা সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। কাজেই এই প্রতিষ্ঠানে সঠিক ব্যক্তি নিয়োগ পাওয়াও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা বিশ্বাস করি যে, আইন প্রণয়নের মাধ্যমে, আইনের বিধি-নিষেধের মাধ্যমে একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যদি কয়েকজন ব্যক্তিকে নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ দেওয়া হয় তাহলে নির্বাচন কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরে আসবে। সেক্ষেত্রে আশা করা যায় যে, আগামীতে আমরা একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন পেতে পারি।
বদিউল আলম মজুমদার: সম্পাদক, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)
আরএ/

রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেলেন তিন মার্কিন বিজ্ঞানী
০৪ অক্টোবর ২০২৩, ০৪:২২ পিএম | আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৪২ এএম

২০২৩ সালের জন্য রসায়নে নোবেল বিজয়ী হয়েছেন তিন মার্কিন বিজ্ঞানী। বুধবার (৪ অক্টোবর) এই পুরস্কারের জন্য বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিটে তাদের নাম ঘোষণা করে দ্য রয়েল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস। বিজয়ীরা হলেন, মুঙ্গি জি বাওয়েন্দি, লুইস ই ব্রুস এবং অ্যালেক্সি আই একিমোভ।
নোবেল কমিটি ঘোষণায় বলেছে, কোয়ান্টাম ডটের আবিষ্কার, উন্নয়ন এবং ন্যানো ক্রিস্টাল প্রযুক্তি বা ন্যানোপার্টিকলের আকার ও বৈশিষ্ট্য নির্ধারণে ভূমিকা রাখায় এই সম্মানজনক পুরষ্কারে ভূষিত করা হয়েছে তিন গবেষককে। তারা তিন জনই মার্কিন নাগরিক।
তবে নির্ধারিত সময়ের কয়েক ঘণ্টা আগে এবারের নোবেল বিজয়ীদের নাম ফাঁস হয়ে যায়। এ নিয়ে একাধিক সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। কিন্তু বিষয়টিকে গুজব বলে উড়িয়ে দেয় সংশ্লিষ্ট মহল। কিন্তু পৌনে ৪টায় ঘোষিত বিজয়ীদের নামের তালিকার সঙ্গে ফাঁস হওয়া তালিকা মিলে যায়। এ বিষয়ে নোবেল কমিটির তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
সোমবার থেকে এই বছরের নোবেল পুরস্কার ঘোষণা শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে চিকিৎসা ও পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ীদের নাম।
মঙ্গলবার পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। চলতি বছর পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল জিতেছেন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও সুইডেনের তিন বিজ্ঞানী। ইলেকট্রন গতিবিদ্যার গবেষণায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তাদেরকে এই পুরস্কার দিয়েছে নোবেল কমিটি।
পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কারজয়ী তিন বিজ্ঞানী হলেন- পিয়েরে অ্যাগোস্টিনি (যুক্তরাষ্ট্র), ফেরেঙ্ক ক্রাউস (জার্মানি) এবং অ্যান ল'হুইলিয়ার (সুইডেন)।
এর আগে সোমবার চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেলজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। এবারে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন কাতালিন ক্যারিকো ও ড্রিউ ওয়েইসম্যান। করোনার টিকা তৈরিতে অবদানের জন্য হাঙ্গেরি ও যুক্তরাষ্ট্রের দুই বিজ্ঞানী যৌথভাবে এবারের চিকিৎসাবিজ্ঞানের নোবেল জিতে নিয়েছেন। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তারা।
আগামীকাল ৬ অক্টোবর সাহিত্যে অবদান রাখায় ঘোষণা করা হবে নোবেলজয়ীর নাম। ৬ অক্টোবর শান্তিতে নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে।

কবি রাধাপদের ওপর হামলার মূল আসামি গ্রেপ্তার
০৪ অক্টোবর ২০২৩, ০৪:০৫ পিএম | আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৪১ এএম

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে পূর্বশত্রুতার জেরে রাধাপদ রায় (৮২) নামের চারণকবিকে হামলার ঘটনায় মামলার মূল আসামি রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে কুড়িগ্রাম পৌর শহর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে এবং পারিবারিক পূর্ব শত্রুতার জেরে কবি রাধাপদকে মারধরের ঘটনায় প্রধান আসামি রফিকুল ইসলামকে আমরা গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হবে। অপর আসামি কদুর আলীকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, এই বিষয়টি একান্তই ব্যক্তিগত। আপনারা সবাই জানেন, এটি পারিবারিক ঘটনা। কেউ কেউ এটিকে অন্যভাবে প্রচারণাও চালিয়েছে। ভুয়া তথ্য না ছড়ানোর জন্য সবাইকে বিনতি অনুরোধ করছি। আমরা কবির খোঁজ রাখছি সবসময়।
এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে রাধাপদ রায়ের নিজ গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে। রাধাপদ রায় নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের গোড্ডারপাড় বটতলা গ্রামের বাসিন্দা। ওইদিন চিকিৎসার জন্য কবিকে নেওয়া হয় নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এ ঘটনায় রাধাপদ রায়ের ছেলে শ্রী জুগল রায় পরদিন রোববার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নাগেশ্বরী থানায় মামলা দায়ের করেন।

রাষ্ট্রপতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলে খালেদা জিয়ার স্থায়ী জামিনের সুযোগ আছে: আইনমন্ত্রী
০৪ অক্টোবর ২০২৩, ০৩:৫৬ পিএম | আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৪২ এএম

রাষ্ট্রপতির কাছে নিজের দোষ স্বীকার করে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেই কেবল বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া স্থায়ী জামিন পেতে পারেন বা বিদেশে যেতে পারেন বলে মন্তব্য করছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, ‘যে কেউ সাংবিধানিকভাবে এই আবেদন করতে পারবেন।’
আজ বুধবার দুপুরে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এই মন্তব্য করেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সাজাপ্রাপ্ত যে কোনো আসামি তাঁর দণ্ড মওকুফের জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করতে পারেন।
নির্বাহী আদেশের বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নির্বাহী আদেশে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী শর্ত যুক্তভাবে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন, সেটি দ্বিতীয়বার আর করার কোনো সুযোগ নেই।’
মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলনের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বক্তব্য দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তুলনা করেছেন। শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে নিঃশর্ত জামিনে ছিলেন বলেই বিদেশে চিকিৎসা নিতে পেরেছিলেন। তাকে শর্ত দিয়ে জামিন দেওয়া হয়নি। বেগম খালেদা জিয়া শর্ত সাপেক্ষে জামিনে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘শর্ত সাপেক্ষেই তার দণ্ড স্থগিত করে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। এটা পুনরায় বিবেচনায় রাখার সুযোগ রাখা হয়নি। ফখরুলকে অসত্য মিথ্যা তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত না করার আহ্বান জানিয়েছেন। বেগম জিয়ার রাজনৈতিক কোনো শর্ত দেওয়া হয়নি।’