শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ | ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
Dhaka Prokash

বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা ‘আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন 

ছাব্বিশে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের ঐতিহাসিক এই দিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধাবনত মস্তকে স্মরণ করি। তিনি শুধু বাংলাদেশের নন, আন্তর্জাতিক বিশ্বের মহান নেতা ছিলেন। তিনি প্রথমে নিজকে পরে আওয়ামী লীগকে তারপরে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার লক্ষ্যে তৈরি করেছেন। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর তিনি উপলব্ধি করেন এই পাকিস্তান বাঙালিদের জন্য হয়নি। একদিন বাংলার ভাগ্যনিয়ন্তা বাঙালিদেরই হতে হবে। সেই লক্ষ্য সামনে নিয়ে ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়ে ১৩টি মূল্যবান বছর কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে কাটিয়েছেন। মহান ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের এক পর্যায়ে স্বাধিকারের দাবীতে ৬ দফা কর্মসূচি প্রণয়ন করলে তার কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার লক্ষ্যে ‘রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিব ও অন্যান্য’ অর্থাৎ আগরতলা মামলার আসামি হিসেবে ফাঁসি দেবার চেষ্টা করে স্বৈরশাসক আইয়ুব খান। তখন বাংলার জাগ্রত ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশব্যাপী গণআন্দোলন গড়ে তুলে সর্বাত্মক গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে আসাদ-মতিউর-মকবুল-রুস্তম-আলমগীর-আনোয়ারা-সার্জেন্ট জহুরুল হক-ড.সামসুজ্জোহাসহ অসংখ্য শহীদের রক্তের বিনিময়ে ১৯৬৯-এর ২২ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে কারামুক্ত করে ২৩ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ১০ লক্ষাধিক লোকের জনসমুদ্রে কৃতজ্ঞ বাঙালি জাতি কৃতজ্ঞ চিত্তে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করে। 

১৯৭১-এর ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করতে স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে দীর্ঘকাল ধরে স্বার্থান্বেষী মহল কুতর্ক জারি রেখেছে। ’৭০-এর নির্বাচনে যদি বঙ্গবন্ধু অংশগ্রহণ না করতেন বা যদি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেতেন, তাহলে স্বাধীনতা ঘোষণা করার সুযোগ পেতেন না, অথবা হয়তো পেতেন তবে অনেক পরে। বঙ্গবন্ধুকে অনেকেই বলেছিলেন, ‘এলএফও’র (লিগাল ফ্রেম ওয়ার্ক অর্ডার) অধীনে ’৭০-এর নির্বাচনে গিয়ে কোনো লাভ হবে না।’ তাদের উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এলএফও! এই নির্বাচনকে গণভোট হিসেবে আখ্যায়িত করে আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব এবং প্রমাণ করব কে এই দেশের নেতা। আর নির্বাচনের পর আমি এলএফও টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেলব।’ জেনারেল নিয়াজির জনসংযোগ কর্মকর্তা সিদ্দিক সালিক তার ‘উইটনেস টু সারেন্ডার’ গ্রন্থে লিখেছেন, The Legal Feamework Order irked Mujib sorely. He was particularly irritated at Sections 25 and 27 which vested powers of authentication of the future constitution in the President. It implied that Mujib would not be free to implement his six points, even if he obtained majority seats in the National Assembly (Parliament) unless his Constitution Bill received the President’s approval. It is on the issue that Mujib said, I shall tear the LFO in the pieces after the election. (পৃষ্ঠা-১৬-১৭) এলএফও-তে প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটাধিকার এবং জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতিনিধিত্ব মেনে নেওয়া হয়। জাতীয় পরিষদে ৩১৩টি (সংরক্ষিত নারী আসনসহ) আসনের মধ্যে জনসংখ্যার অনুপাতে আমরা পেলাম ১৬৯টি আসন। কিন্তু ইয়াহিয়া খান ভবিষ্যতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েও যাতে বঙ্গবন্ধু ৬ দফা ও ১১ দফার ভিত্তিতে শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করতে না পারেন সেজন্য এলএফও-তে বিতর্কিত ২৫ ও ২৭ নং দু’টি অনুচ্ছেদ সন্নিবেশিত করেন। এলএফও-তে সন্নিবেশিত দু’টি ধারাই ছিল আসন্ন নির্বাচনে বিজয়ী দলকে ঠেকানোর অপপ্রয়াস। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সত্যিকার অর্থেই নির্বাচনকে গণভোটে রূপান্তরিত করে বিজয়ী হন। নির্বাচনের পরপরই ’৭১-এর ৩ জানুয়ারি তিনি আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত এমএনএ ও এমপিএকে নিয়ে শপথ অনুষ্ঠান করে বলেছিলেন, ‘এই গণভোটের মাধ্যমে ৬ দফা আজ আমার না, আমার দলেরও না, ৬ দফা আজ জনগণের সম্পত্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে। যদি কেউ ৬ দফার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে তবে তাকে জ্যান্ত কবর দেওয়া হবে। এমনকি আমি যদি করি আমাকেও।’ এভাবে তিনি ৬ দফাকে আপসহীন অবস্থায় নিয়ে গিয়েছিলেন।

বঙ্গবন্ধু জানতেন ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা হস্তান্তর করবে না এবং তাঁকে বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে চিহ্নিত করবে। সেজন্য বঙ্গবন্ধু নিয়মতান্ত্রিকভাবে এগিয়েছেন। এই নির্বাচনে সারা দেশ সফর করে তিনি বাংলার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেন। পয়লা মার্চ যখন ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করেন, মানুষ রাজপথে নেমে আসে। সাতই মার্চ বঙ্গবন্ধু জীবনের শ্রেষ্ঠ ভাষণের মধ্য দিয়ে বাংলার মানুষকে স্বাধীনতার এক মোহনায় দাঁড় করিয়ে নিরস্ত্র বাঙালি জাতিকে সশস্ত্র বাঙালি জাতিতে রূপান্তরিত করেন। নির্বাচনের পরপরই ১৮ ফেব্রুয়ারি ধানমন্ডির ৩২ নং-এ ডেকে চার জাতীয় নেতার সামনে আমাদের চারজনকে-মণি ভাই, সিরাজ ভাই, রাজ্জাক ভাই ও আমাকে-একটি ঠিকানা মুখস্থ করিয়েছিলেন। ভারতে গেলে আমরা কোথায় আশ্রয় পাব, থাকব, সেজন্য আমাদের চার টুকরা কাগজ দিয়ে বলেছিলেন মুখস্ত করো। কাগজে ঠিকানা লেখা ছিল, ‘সানি ভিলা, ২১ নং রাজেন্দ্র রোড, নর্দার্ন পার্ক, ভবানীপুর, কলকাতা।’ 

মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর এই ঠিকানায় আমরা আশ্রয় গ্রহণ করি। অর্থাৎ বহু আগে থেকেই বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীনের পরিকল্পনা করেন। সেই ১৯৬২ সালে তিনি দেশ স্বাধীনের পরিকল্পনা নিয়ে আগরতলা গিয়েছিলেন। আগরতলা মামলা তো মিথ্যা ছিল না। কিন্তু পরিকল্পনা মতো কাজ হয়নি। আগরতলা মামলায় যারা অভিযুক্ত তারা তো আসলেই স্বাধীনতার জন্য একটি সশস্ত্র পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। এটা সত্য। যার জন্য ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা’ বললে যারা অভিযুক্ত তারা অসন্তুষ্ট হন। তারা বলেন, ‘আমরা তো ষড়যন্ত্র করিনি। আমরা তো দেশের স্বাধীনতার জন্যই একটি পরিকল্পনা করেছিলাম।’

বঙ্গবন্ধুর হৃদয়ে ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। তার বড় প্রমাণ ৬ দফা। তিনি বিচক্ষণ নেতা ছিলেন। ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের কারণে উপকূলীয় অঞ্চলে নির্বাচন পেছালে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে থাকার সুযোগ পাই। নির্বাচনের দিন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিলাম। সেদিন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, ‘আপনি কয়টি আসন পাবেন?’ বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমি অবাক হবো যদি আমি দুটি আসন হারাই।’ বিস্ময়ের ব্যাপার দুটি আসনই আমরা হারিয়েছিলাম। একটিতে নুরুল আমিন অন্যটিতে রাজা ত্রিদিব রায় জয়ী হন। নির্বাচনের পরই তিনি পূর্ণ স্বাধীনতার পরিকল্পনা করেন। এই পরিকল্পনার ছক এঁকেছিলেন যখন তিনি ’৬৯-এর অক্টোবরে লন্ডন সফরে যান। সেখানে ভারতীয় প্রতিনিধি ফনীন্দ্র নাথ মুখার্জী, তথা পিএন মুখার্জী-যাকে আমরা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ‘মিস্টার নাথ’ বলে সম্বোধন করতাম-বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে লন্ডনে দেখা করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ভারত সরকারের ভূমিকা বঙ্গবন্ধুকে অবহিত করেন। যেগুলি পরবর্তীকালে বাস্তবায়িত হয়। বঙ্গবন্ধু একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে তবেই স্বাধীনতা ঘোষণা করার রাজনৈতিক বৈধতা অর্জন করেন। সাতই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণেও তিনি বিচক্ষণতার সাথে বক্তব্য পেশ করেছেন। বঙ্গবন্ধু সবসময় চেয়েছেন তিনি আক্রান্ত হবেন, কিন্তু আক্রমণকারী হবেন না। সেজন্যই ২৫ মার্চ জিরো আওয়ারে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক গণহত্যা শুরু হলে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে পূর্ব প্রস্তুতি অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। যেটা সিদ্দিক সালিক তার বইতে লিখেছেন, “When the first shot had been fired, ‘the voice of Sheikh Mujibur Rahman came faintly through on a wavelength close to that of the official Pakistan Radio. In what must have been, and sounded like, a pre-recorded message, the Sheikh proclaimed East Pakistan to be the ‘People’s Republic of Bangladesh.’ It said, ‘This may be my last message. From today Bangladesh is independent. I call upon the people of Bangladesh, wherever you are and with whatever you have, to resist the army of occupation to the last. Your fight must go on until the last soldier of the Pakistan occupation army is expelled from the soil of Bangladesh and final victory is achieved.’ (প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-৭৫) প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য এরকম একটি চূড়ান্ত ঘোষণায় পৌঁছতে বঙ্গবন্ধুকে দীর্ঘ ২৪টি বছর বাঙালি জাতিকে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচির ভিত্তিতে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে লক্ষ্য স্থির করে, ধাপে ধাপে জাতীয় মুক্তিসংগ্রাম পরিচালনা করে, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে, শাসকগোষ্ঠীর সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে, জেল-জুলুম-হুলিয়া-ফাঁসির মঞ্চকে উপেক্ষা করে মৃত্যুঞ্জয়ী শক্তি নিয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হয়েছে। একদিনে হয়নি। বহু বছর ধরে, অগণিত মানুষের আত্মদানের মধ্য দিয়ে সমগ্র বাঙালি জাতি প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বাধীনতার ঘোষণাকে শিরোধার্য জ্ঞান করেছে। ’৭১-এর ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু ঘোষিত এই ঘোষণাটিই ’৭১-এর ১০ এপ্রিল মুজিবনগরে প্রতিষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ গণপরিষদ’ কর্তৃক গৃহীত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের ৬ নং প্যারায় অনুমোদিত হয়ে সাংবিধানিক বৈধতা অর্জন করেছে। বঙ্গবন্ধুর এই স্বাধীনতার ঘোষণাই ২৬ মার্চ দুপুর দেড়টায় চট্টগ্রাম বেতার থেকে এমএ হান্নানের কণ্ঠে বারবার প্রচারিত হয়েছে। ২৬ মার্চ জিয়াউর রহমানের ঘোষণার কোন রেকর্ড নেই। এমনকি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ‘প্রামাণ্যকরণ কমিটি’র চেয়ারম্যান মফিজউল্লাহ কবীর ও হাসান হাফিজুর রহমানের সম্পাদনায় ১৫ খণ্ডে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র’ সংকলনের ৩ নং খণ্ডে আছে, ‘জিয়াউর রহমান মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে ২৭ মার্চ ঘোষণা দেন।’ কিন্তু ২৬ তারিখ তো যুদ্ধ শুরু হয়েছে। জেনারেল শফিউল্লাহ, খালেদ মোশাররফ, মেজর রফিক ইতিমধ্যে ডিফেক্ট করে যুদ্ধ শুরু করেছেন। সুতরাং, ২৬ মার্চ জিয়াউর রহমানের ঘোষণার কথা মোটেও সত্য না। যারা ২৬ মার্চ জিয়ার ঘোষণার কথা বলে, তারা অসত্য কথা বলে। বাস্তবের সাথে যার কোনো মিল নেই। ইয়াহিয়া খান ২৬ মার্চের ভাষণে রাজনৈতিক তৎপরতা নিষিদ্ধ করে একজন ব্যক্তির কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘সপ্তাহ খানেক আগেই আমার উচিত ছিল শেখ মুজিবুর রহমান ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা...। ...কেননা কয়েকটি শর্ত দিয়ে সে আমাকে ট্র্যাপে ফেলতে চেয়েছিল। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সে আক্রমণ করেছে-এই অপরাধ বিনা শাস্তিতে যেতে দেওয়া হবে না।’ এবং এই একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধেই রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগ এনে সামরিক আদালতে বিচার হয়। সামরিক শাসক কতটা প্রতিহিংসা পরায়ণ ছিল যে, আমার মতো একজন ক্ষুদ্রকর্মীকেও আমার অনুপস্থিতিতে সামরিক আদালতে বিচার করল। ’৭১-এর ২০ এপ্রিল সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, আবদুল মান্নান, আবিদুর রহমান ও আমাকে মার্শাল ল কোর্টে হাজির হওয়ার নির্দেশ জারি করা হয়। পরে ২৭ এপ্রিল আমাদের অনুপস্থিতিতে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, অর্ধেক সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। আজকাল বিভিন্নজন বিভিন্নরকম দাবি করেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ ছাড়া আমরা ছাত্রলীগের কেউ কিছু করতে পারিনি। বঙ্গবন্ধু জাতীয় নেতা হিসেবে যা করতে পারতেন না, আওয়ামী লীগের অগ্রগামী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে তা পালন করত। কোনোটাই বঙ্গবন্ধুর অনুমোদন ছাড়া হয়নি।

’৭১-এর শহীদ দিবস ছিল বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এদিন মধ্য রাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘এই বাংলার স্বাধিকার-বাংলার ন্যায্য দাবিকে বানচাল করার ষড়যন্ত্র চলছে। এখনো চলছে, ভবিষ্যতেও চলবে। কিন্তু বাংলার সাত কোটি মানুষ আর বঞ্চিত হতে রাজী নয়। আমরা আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য প্রয়োজন হলে আরও রক্ত দেব। আর শহীদ নয়, এবার গাজী হয়ে ঘরে ফিরব। বাংলার ঘরে ঘরে আজ দুর্গ গড়ে তুলতে হবে। ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে হবে আমাদের সংগ্রাম। মানুষ জন্ম নেয় মৃত্যুর জন্য; আমি আপনাদের কাছে বলছি এই বাংলার মানুষ রক্ত দিয়ে আমাকে আগরতলা মামলা থেকে মুক্ত করে এনেছে, আমিও আপনাদের জন্য নিজের রক্ত দিতে দ্বিধা করব না। বাংলার সম্পদ আর লুট হতে দেব না।’ 

’৭১-এর ২২ ফেব্রুয়ারি জেনারেল ইয়াহিয়া খান তার মন্ত্রীসভা বাতিল করেন এবং পিন্ডিতে গভর্নর ও সামরিক প্রশাসকদের নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে, লারকানা ও রাওয়ালপিন্ডি বৈঠকে গৃহীত গণহত্যার নীলনকশা ‘অপারেশন সার্চলাইট’ বাস্তবায়নের ব্যবস্থাদি চূড়ান্ত করা হয়। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে ২৪ ফেব্রুয়ারি এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘...গত সপ্তাহে জাতি যে ধরনের নাট্যাভিনয় প্রত্যক্ষ করেছে, তা বন্ধ হওয়া দরকার। জনসাধারণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের শাসনতন্ত্র প্রণয়ন ও তাদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর বানচালের উদ্দেশে  ইচ্ছাকৃতভাবে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে। ...পাকিস্তানে যখনই জনসাধারণ গণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতা গ্রহণে উদ্যত হয়েছে তখনই এই তামস শক্তি সক্রিয় হয়ে ওঠে। এই গণবিরোধী শক্তি ১৯৫৪ সনে পূর্ব বাংলার নির্বাচিত শক্তিকে ক্ষমতাচ্যুত করে, ১৯৫৬ সনের আইন পরিষদ ভেঙে দেয়, ১৯৫৮ সনে দেশে সামরিক আইন জারি করে এবং তারপর প্রতিটি গণআন্দোলন ব্যর্থ করার জন্য হস্তক্ষেপ করে। এই ষড়যন্ত্রকারী শক্তি যে আবার আঘাত হানার জন্য তৈরি হচ্ছে, জাতীয় পরিষদের তারিখ ঘোষণার পর যেসব ঘটনা ঘটছে সেগুলো থেকেই এটা প্রতীয়মান হয়। জনাব জেড এ ভুট্টো ও পিপল্স পার্টি আকস্মিকভাবে এমন সব ভঙ্গিমা ও উক্তি করতে শুরু করেছে যা জাতীয় পরিষদের স্বাভাবিক কাজে বাধা সৃষ্টি করে শাসনতান্ত্রিক পদ্ধতি বানচালের প্রবণতাই উদঘাটন করে। এভাবে জনসাধারণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর বানচালেরও চেষ্টা করা হচ্ছে।...বাংলাদেশের জাগ্রত জনতাকে, কৃষক-শ্রমিক-ছাত্র ও জনগণকে বিজয় বানচালের ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। ...আমরা যে ক্ষমতাকে স্বীকার করি, তা হচ্ছে জনগণের ক্ষমতা। জনগণ সকল সৈরাচারীকেই নতি স্বীকারে বাধ্য করেছে। কারণ, স্বৈরাচারীর ক্ষমতার দম্ভ জাগ্রত জনগণের সংকল্পবদ্ধ আঘাতের কাছে টিকে থাকতে পারেনি।...আমরা আজ প্রয়োজন হলে আমাদের জীবন বিসর্জন করারও প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি-যাতে আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের একটি কলোনিতে বাস করতে না হয়। যাতে তারা একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে সম্মানের সঙ্গে মুক্ত জীবন যাপন করতে পারে, সে প্রচেষ্টাই আমরা চালাব।’ 

এই দীর্ঘ ও তাৎপর্যপূর্ণ বিবৃতিতে বঙ্গবন্ধু ভবিষ্যৎ বংশধরদের যাতে একটি কলোনিতে তথা উপনিবেশে বসবাস করতে না হয় তার অংশ হিসেবে ‘একটি স্বাধীন দেশের’ কথা বলছেন। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার জন্য আওয়ামী লীগকে প্রস্তুত করতে সাতই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে সার্বিক দিকনির্দেশনা প্রদান করে বলেছিলেন, ‘প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায়, প্রত্যেক সাব-ডিভিশনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোল’ এবং বাংলার মানুষ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তুলে আসন্ন মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল। 

’৭১-এর ১ মার্চ দুপুর ১টা ৫ মিনিটে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান বেতার ভাষণে ৩ মার্চ তারিখে ঢাকায় আহূত জাতীয় পরিষদের অধিবেশন একতরফাভাবে স্থগিত করেন। পূর্ব প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা বক্তব্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাকা নগরীসহ সমগ্র বাংলাদেশ। এদিন হোটেল পূর্বাণীতে আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারি পার্টির সভায় ৬ দফা ভিত্তিক শাসনতন্ত্রের খসড়া প্রণয়নের কাজ চলছিল। অধিবেশন স্থগিত ঘোষণায় বিক্ষুব্ধ মানুষ হোটেল পূর্বাণীর সামনে এসে সমবেত হয় এবং ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর’ ও ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে চারদিক প্রকম্পিত করে তোলে। বঙ্গবন্ধু হোটেলের সামনে এসে সবাইকে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘অধিবেশন বন্ধ করার ঘোষণায় সারা দেশের জনগণ ক্ষুব্ধ। আমি মর্মাহত। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া তার ওয়াদা ভঙ্গ করেছেন। আমি সংগ্রাম করে এ পর্যন্ত এসেছি। সংগ্রাম করেই মুক্তি আনব। আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকুন।’ এরপর আসে বাঙালির ইতিহাসের পরমাকাঙ্ক্ষিত দিন সাতই মার্চ। সেদিন ছিল রবিবার। সংগ্রামী বাংলা সেদিন অগ্নিগর্ভ, দুর্বিনীত। বঙ্গবন্ধু যখন ‘ভাইয়েরা আমার’ বলে বক্তৃতা শুরু করেন জনসমুদ্র পিনপতন নিস্তব্ধতার মধ্যে ডুবে যায়। সেদিন নেতার বক্তৃতার শেষাংশ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’-বস্তুত এটাই ছিল বীর বাঙালির জন্য স্বাধীনতার ঘোষণা।

তোফায়েল আহমেদ: আওয়ামী লীগ নেতা; সংসদ সদস্য; সভাপতি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি

 

Header Ad

অলিম্পিক ইতিহাসে ভিন্নধর্মী উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপহার দিল ফ্রান্স

ছবি: সংগৃহীত

সকাল থেকেই প্যারিসের আকাশে বৃষ্টির দাপট। কখনো ঝিরি, কখনো বা ভারী। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে কোনো ভুল করেনি প্যারিস। সত্যিকার অর্থেই অলিম্পিক ইতিহাসে ভিন্নধর্মী এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপহার দিয়েছে ভালোবাসার শহরটি।

আগেই জানানো হয়েছিল, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান কোনো স্টেডিয়াম নয় বরং আয়োজিত হবে প্যারিসের প্রাণকেন্দ্র সেন নদীতে। ৪ ঘণ্টা ব্যাপী অনুষ্ঠানের শুরুটা হয় মশালের ভিডিও দিয়ে। যেখানে দেখা যায় ফ্রান্স ফুটবল কিংবদন্তি জিনেদিন জিদানকে।

ভিডিওর পর শুরু হয় মার্চপাস্ট। সেন নদীতে ৬ কিলোমিটারের ভাসমান প্যারেডে প্রায় ৭ হাজার অ্যাথলেটকে বহন করেছে ৮৫ টি নৌকা। সবগুলোই নৌকাতেই লাগানো থাকবে ক্যামেরা। যাতে করে নদীর তীরে থাকা দর্শকরা ক্লোজ-আপ ভিউ পেতে পারেন।

অস্তারলিজ ব্রিজ থেকে শুরু করে লুভরে জাদুঘর, পন্ত দে আর্টস ব্রিজ সহ অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থাপনা পেরিয়ে আইফেল টাওয়ারের কাছে এসে থামে অ্যাথলেটদের প্যারেড।

মার্চপাস্টে বাংলাদেশের পতাকা বহন করেন আর্চার সাগর ইসলাম। এবারের আসরে তিনিসহ অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশের পাঁচ অ্যাথলেট।

মার্চপাস্টের ফাঁকে ফাঁকেই ফ্রান্সের ঐতিহ্য, বিপ্লব, ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়। ছিল নাচগানের আয়োজনও। যার শুরুটা করেন পপ গায়িকা লেডি গাগা। এরপর একে একে সুরে মাতোয়ারা করে রাখেন র‍্যাপার রিম কে, মেটাল ব্যান্ড গজিরা ও আয়া নাকামুরা।

আধার নেমে এলে আরও জমতে থাকে অনুষ্ঠান। মার্চপাস্ট শেষে প্যারিস অলিম্পিক কমিটি প্রধান ও আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি প্রধানের ভাষণের পর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি এমানুয়েল ম্যাক্রো। এরপর আইফেল টাওয়ারে শুরু হয় জমকালো লেজার শো। আলোর জলকানি বারবারই মুগ্ধতা ছড়িয়েছে। ৩ লাখেরও বেশি দর্শক বৃষ্টি উপেক্ষা করে কেবল তাকিয়ে ছিলেন সেদিকে।

মশালের আগুন থেকে কলড্রনের আলো জ্বালিয়ে অলিম্পিক শুরুর সংকেত দেন ফ্রান্সের সাবেক স্প্রিন্টার মেরি জোসে পেরেচ ও জুদোকা তেদি রিনার। কলড্রনটি দেখতে উষ্ণ বায়ু বেলুনের মতোই ছিল। ১৭৮৩ সালে প্রথমবারের মতো মানুষ বহনকারী উষ্ণ বায়ু বেলুনকে উড়তে দেখা যায়। যা আবিষ্কার করেন ফ্রান্সের মন্তগলফিয়ার সহোদর।

অনুষ্ঠানের শেষটা হয় বিখ্যাত মার্কিন গায়িকা সেলিন ডিওনের পারফরম্যান্সের মধ্য দিয়ে। দারুণ এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর কাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া মহাযজ্ঞ।

ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে কারাগারে আশ্রয় ফিলিস্তিনিদের

ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে কারাগারে আশ্রয় ফিলিস্তিনিদের। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলি সেনাদের বোমার আঘাত থেকে বাঁচতে পরিত্যক্ত কারাগারে আশ্রয় নিয়েছেন কয়েকশ ফিলিস্তিনি। ইয়াসমিন আল-দারদেশি নামে এক নারী এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। খবর বার্তাসংস্থা রয়টার্সের।

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিসের একটি জেলা থেকে বাস্তচ্যুত হওয়ার পর কারাগারে আশ্রয় নেয় ইয়াসমিন আল দারদাসির পরিবার। দারদাসি জানান, তার পরিবার তিন দিন একটি গাছের নিচে কাটিয়েছেন। এখন তারা খান ইউনিসের কেন্দ্রীয় সংশোধন ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের মসজিদে থাকেন। এখানে তারা সূর্যের প্রখর রোদ থেকে রক্ষা পাচ্ছে। এর চেয়ে বেশি আর তেমন সুবিধা পাচ্ছে না।

ইয়াসমিনের স্বামীর কিডনি ও ফুসফুসের সমস্যা রয়েছে। অসুস্থ এ মানুষটি কোনো ধরনের লেপ ও তোষক ছাড়াই থাকছেন।

এই ফিলিস্তিনি নারী রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা এখানেও বসতি স্থাপন করছি না। এই নারীর শঙ্কা এখান থেকেও তাদের সরিয়ে দেওয়া হবে।’

ইসরায়েলের দাবি বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তারা গাজায় অভিযান চালাচ্ছে। কিন্তু ফিলিস্তিনিরা বলছেন ইসরায়েলি হামলায় তারা সব হারিয়েছেন। এখন তাদের যাওয়ার আর কোনো নিরাপদ জায়গা নেই।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

ইসরায়েল নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত যুক্তরাজ্যের, চাপে নেতানিয়াহু

নেতানিয়াহু। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুসহ সেদেশের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেফতারি পরোয়ানা জারিতে আপত্তি তুলে নিয়েছে যুক্তরাজ্য।

মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ে দেশটির নীতি ঢেলে সাজানোর অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নিল ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি, যা ইসরায়েল বিষয়ে এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ দেশটির।

এ ধরনের সিদ্ধান্ত না নেওয়ার ব্যাপারে ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের চাপকে উপেক্ষা করেও এই পদক্ষেপ নিয়েছে ব্রিটেনের লেবার পার্টি সরকার।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট শুক্রবার জানায়, আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম খান ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আদালতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন। এ বিষয়ে ওই আদালতের এখতিয়ার নিয়ে যুক্তরাজ্যের সরকার কোনও চ্যালেঞ্জ জানাবে না।

যুক্তরাজ্যের এ পদক্ষেপে এখন করিম খানের আবেদন আইসিসির গ্রহণ করার ক্ষেত্রে আরও বেশি সম্ভাবনা তৈরি হল। আদালত এ আবেদন গ্রহণ করলে তা হবে গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলের জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সবচেয়ে বড় তিরস্কারের ঘটনা। সেই সঙ্গে দেশের বাইরে ভ্রমণে গ্রেফতার হওয়ার ঝুঁকিতেও পড়বেন নেতানিয়াহু।

যুক্তরাজ্যের ওই সিদ্ধান্ত ইসরায়েল নিয়ে দেশটির গত কয়েক মাস ধরে গ্রহণ করে চলা নীতির একেবারে বিপরীত। কেননা, আগের কনজারভেটিভ সরকার দেশটির প্রতি তার সমর্থনের ব্যাপারে ছিল অনমনীয়; যা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানেরই অনুরূপ।

আগামী কয়েক দিনের মধ্যে যুক্তরাজ্যের নতুন সরকারের মন্ত্রীরা ইসরায়েলকে নিয়ে নতুন আরও কিছু সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যার মধ্যে থাকবে, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মানবিক আইন কতটুকু প্রতিপালন করছে সে বিষয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের অনুরোধে শুরু হওয়া পর্যালোচনার ফলাফলও। ইতোমধ্যে, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিও ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইসরায়েলে কিছু অস্ত্র বিক্রি নিষিদ্ধ করার কথা বিবেচনা করছেন তিনি। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

সর্বশেষ সংবাদ

অলিম্পিক ইতিহাসে ভিন্নধর্মী উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপহার দিল ফ্রান্স
ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে কারাগারে আশ্রয় ফিলিস্তিনিদের
ইসরায়েল নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত যুক্তরাজ্যের, চাপে নেতানিয়াহু
সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৪তম জন্মদিন আজ
বাংলাদেশে নতুন নির্বাচনের দাবি ড. ইউনূসের
জালিমদের ব্যাপারে ইসলাম যা বলে
ডিবি হেফাজতে নাহিদসহ কোটা আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক
আগামীকাল চালু হতে পারে মোবাইল ইন্টারনেট
'আমাকে নিয়ম শেখানোর দরকার নেই, ওরাই শিখে নিক'
‘দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে এ সহিংসতা’
দুর্নীতির দায়ে রাশিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রী গ্রেপ্তার
আজও ঢাকাসহ চার জেলায় কারফিউ শিথিল
আবু সাঈদের পরিবারকে সাড়ে ৭ লাখ টাকা দিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন
সহিংসতার অভিযোগে ঢাকায় ২০৯ মামলায় গ্রেপ্তার ২৩৫৭
‘মুক্তিযোদ্ধা কোটার বাইরে বাকি ৯৫ শতাংশ নিয়ে আদালতে বোঝাপড়া করব’
কোটা আন্দোলনে নিহত রুদ্রের নামে শাবিপ্রবির প্রধান ফটকের নামকরণ
সহিংসতায় আহতদের চিকিৎসা-রোজগারের ব্যবস্থা করবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
এক সপ্তাহে বঙ্গবন্ধু সেতুতে ৬ কোটি টাকা লোকসান
পাকিস্তানের ইসলামাবাদ-পাঞ্জাবে ১৪৪ ধারা জারি
রিমান্ড শেষে কারাগারে নুরুল হক নুর