বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪ | ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

বিনিয়োগ বাড়াতে অনুকূল রাজনৈতিক পরিবেশ দরকার

আমাদের দেশে সম্প্রতি অবকাঠামো খাতে বেশ উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু সেখানেও যথেষ্ট দুর্বলতা আছে। আমাদের এখানে অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে ব্যয়ের হার তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। অধিকাংশ অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প নির্ধারিত সময়ে এবং বরাদ্দ দেওয়া ব্যয়ের মাধ্যমে সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা এখনো বিদ্যমান। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার পরিবেশ লক্ষ করা যাচ্ছে না। এ বছর শেষের দিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের জাতীয় নির্বাচন অত্যন্ত জটিল এবং কঠিন হবে বলেই মনে হচ্ছে। নির্বাচন ভালোভাবে অনুষ্ঠানের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার পরিবেশ প্রয়োজন। কিন্তু এখনো সে রকম কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না। রাজনৈতিক সংঘাত এবং বৈরী পরিবেশ বিনিয়োগের জন্য মোটেও অনুকূল নয়। অনেক দিন ধরেই রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এক ধরনের অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। কোনো বিদেশি বিনিয়োগকারী সংঘাতময় রাজনৈতিক পরিবেশে কোনো দেশে বিনিয়োগের জন্য আগ্রহী হয় না। এমনকি স্থানীয় বিনিয়োগকারীরাও বৈরী রাজনৈতিক পরিবেশে বিনিয়োগে আগ্রহী হয় না। তাই বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য আমাদের রাজনৈতিক পরিবেশ উন্নত এবং অনুকূল করতে হবে।

ব্যাংকিং সেক্টর হচ্ছে একটি দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। ব্যাংকিং সেক্টরকে বলা হয় অর্থনীতির ‘লাইফ লাইন’। আমাদের দেশের ব্যাংকিং সেক্টর ঠিকভাবে কাজ করছে না। ব্যাংকিং সেক্টর নানা রকম সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে ব্যক্তি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি কমে যাচ্ছে। ব্যাংকিং সেক্টরে আমানতের প্রবৃদ্ধি আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। ব্যাংকবহির্ভূত অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে ব্যাংকের বিনিয়োগযোগ্য আমানতের পরিমাণ ক্রমশ কমে যাচ্ছে। ব্যাংক যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ আমানত না পায় তাহলে বিনিয়োগ করবে কীভাবে? ব্যাংক উদ্যোক্তাদের চাহিদামতো অর্থায়ন করতে পারছে না। আমাদের দেশের স্টক মার্কেট এখনো সেভাবে বিকশিত হয়নি। উদ্যোক্তারা তাদের প্রয়োজনীয় অর্থের জন্য ব্যাংকের নিকটই ধরনা দেয়। স্টক মার্কেট যদি সঠিকভাবে বিকশিত হতে পারত তাহলে উদ্যোক্তাদের অর্থায়ন সংগ্রহের জন্য ব্যাংক নির্ভরতা কমে যেত। ব্যাংকিং খাতে অন্যান্য জটিল সমস্যাও রয়েছে। কয়েকটি ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংকে সাম্প্রতিক সময়ে দুর্নীতি আর অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনা ব্যাংকিং সেক্টর সম্পর্কে আমানতকারীদের মধ্যে কিছুটা হলেও আস্থার সংকট সৃষ্টি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাংকিং সেক্টর নিয়ে নানা ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এটা আমানতকারীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। ব্যাংকিং সেক্টরের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে নন-পারফর্মিং লোনের (এনপিএল) ব্যাপক উপস্থিতি। নানাভাবে চেষ্টা করেও খেলাপি ঋণের পরিমাণ কোনোভাবেই কমানো যাচ্ছে না।

খেলাপি ঋণের পরিমাণ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে খেলাপি ঋণের যে হিসাব প্রদর্শন করা হচ্ছে তা বাস্তবসম্মত নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক মামলাধীন প্রকল্পের নিকট পাওনা ঋণ, অবলোপনকৃত প্রকল্পের নিকট পাওনা ঋণ এবং পুনঃতফসিলিকৃত ঋণের হিসাব বাদ দিয়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণ নির্ধারণ করছে। এটা কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। আইএমএফ এবং এ ধরনের সংস্থাগুলো বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণের যে পরিমাণ প্রদর্শন করে প্রকৃত খেলাপি ঋণ তার দ্বিগুণেরও বেশি। খেলাপি ঋণের পরিমাণ কৃত্রিমভাবে কমিয়ে দেখানো হচ্ছে। কিন্তু আদায়ের মাধ্যমে খেলাপি ঋণ কমানোর কোনো উদ্যোগই সফল হচ্ছে না। ঋণ গ্রহণের সময় আবেদনকারী যে সম্পদ বন্ধক প্রদান করে তা বিক্রি করে অর্থ আদায়ের তেমন কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। যে সম্পদ বন্ধক দেওয়া হয় অধিকাংশ সময়ই তার অতিমূল্যায়ন করা হয়। ফলে এসব সম্পদ ব্যাংক বিক্রি করতে গেলে উপযুক্ত মূল্য পায় না। রাজনৈতিক নেতা, ব্যাংকের স্পন্সর এবং ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যে এক ধরনের সমঝোতা লক্ষ করা যায়। তারা ব্যাংকিং সেক্টরের স্বাভাবিক কার্যক্রমকে বিঘ্নিত করছে। এরা পরস্পর যোগসাজশের মাধ্যমে ব্যাংক ঋণ নিয়ে যাচ্ছে। এই ঋণের অর্থ ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা হচ্ছে। ফলে এসব ঋণের অর্থ ব্যাংক চাইলেও পরবর্তীতে আদায় করতে পারছে না। এদের কারণে প্রকৃত উদ্যোক্তারা ব্যাংক ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যায় পতিত হচ্ছেন। ঋণ প্রদানকালে যদি জামানত সঠিকভাবে মূল্যায়ন করে নেওয়া হয়, তাহলে পরবর্তী সময়ে সেই ঋণ হিসাব খেলাপি হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। ব্যক্তিগতভাবে আমি দেখেছি কীভাবে বন্ধকী সম্পদের অতিমূল্যায়ন করে ঋণ গ্রহণ করা হয়। সেই ঋণ পরবর্তীতে আর আদায় হয় না।

খেলাপি ঋণ সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন পর্যায়ের সমস্যা আছে। আমাদের দেশের অধিকাংশ ব্যাংকে একটি প্রকল্প সঠিকভাবে মূল্যায়ন করার মতো দক্ষ লোকবলের অভাব রয়েছে। আবার যেসব ব্যাংকে দক্ষ লোকবল আছে তাদের স্বাধীনভাবে সঠিক পদ্ধতিতে কাজ করতে দেয়া হয় না। অধিকাংশ সময়ই তারা উপরের মহল থেকে নির্দেশিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। এভাবে তাদের কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় ভালো কাজ প্রত্যাশা করা যায় না। ঋণদানের সময় যে সম্পদ বন্ধক রাখা হয় অনেক সময় তার মালিকানা ঠিক থাকে না। সম্পদের অতিমূল্যায়ন করা হয়। এখানে আমরা একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করতে চাই, অত্যন্ত ক্ষমতাবান এবং উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত এমন এক ব্যক্তি ঋণের জন্য আবেদন করেন। তিনি জামানতের জন্য জমি প্রদানের প্রস্তাব করেন। ঋণ দানের আগে আমি ব্যাংক থেকে একটি টিম প্রেরণ করলাম প্রস্তাবিত জমিটি পরিদর্শন ও মূল্যায়নের জন্য।

প্রথমত, প্রস্তাবিত জমির উপর ঋণের জন্য আবেদনকারীর সঠিক মালিকানা নেই। তিনি একটি বায়নানামা সম্পাদন করেছেন মাত্র। কিন্তু বায়নানামার মাধ্যমে তো জমির মালিক হওয়া যায় না। যে জমি বায়নানামা করা হয়েছে সেটিও পানির নিচে। আমি ঋণ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করি। অবশ্য আমার উপর কোনো চাপ সৃষ্টি করা হয়নি। ব্যাংকের পরিচালনা বোর্ড ব্যাপক ক্ষমতার অধিকারী। কিন্তু বোর্ড যদি স্বাধীনভাবে ব্যাংকের স্বার্থে কাজ না করে তাহলে কোনোভাবেই ব্যাংকের স্বার্থ সংরক্ষণ করা সম্ভব নয়।

আমি মনে করি, আগামী অর্থবছরের জন্য যে বাজেট প্রণয়নের কাজ চলছে সেখানে ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও বাড়ানোর কাজটিই সবচেয়ে সমস্যার সৃষ্টি করবে। আমাদের নিজস্ব তহবিল থেকে উন্নয়ন কার্যক্রমে অর্থায়নের জন্য ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও বাড়াতেই হবে। কিন্তু কাজটি মোটেও সহজ নয়। আপনি যদি লক্ষ করেন তাহলে দেখবেন, দেশে টিআইএন ধারীর যে সংখ্যা তার অর্ধেকও আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন না। যারা টিআইএনধারী তারা তো রিটার্ন দেবেই। এটা বাধ্যতামূলক। কিন্তু এখানে মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা তেমন একটা নেই। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উচিত হবে, করের হার না বাড়িয়ে করের আওতা বৃদ্ধি করা। যারা কর প্রদানযোগ্য তাদের যেকোনো মূল্যেই হোক করের নেটওয়ার্কের মধ্যে নিয়ে আসা। যারা নিয়মিত কর প্রদান করছেন, তাদের উপর করের হার না বাড়িয়ে নতুনদের করের আওতায় নিয়ে আসার উদ্যোগ নিতে হবে। মূল্য সংযোজন করের ক্ষেত্রেও সমস্যা রয়েছে। অনেক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান পণ্য বিক্রির বিপরীতে রশিদ দেয় না। তারা গ্রাহকদের নিকট থেকে ট্যাক্স আদায় করলেও তা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেন না। মূল্য সংযোজন কর আদায় ব্যবস্থা অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই প্রচেষ্টা আরও জোরদার করতে হবে। আমদানি শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে প্রায়শই দেখা যায়, এক পণ্য আমদানির ঘোষণা দিয়ে অন্য পণ্য আমদানি করা হচ্ছে। এভাবে শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে। এটা রোধ করতে হবে।

এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম: সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা।

এসএন

 

Header Ad

গণমাধ্যমের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

কর্মশালায় বক্তব্য রাখছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। ছবি: সংগৃহীত

তথ্য অধিকার আইনের আওতায় গণমাধ্যমের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

মঙ্গলবার (৮ মে) রাজধানীর দারুস সালামে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘তথ্য অধিকার আইন ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, তথ্য অধিকার আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন সরকার নিশ্চিত করতে চায়। এ আইন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে পাশ করা হয়। সরকার নিজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য এ আইন করেছে। তবে যেকোনো একটি আইন সমাজে তৈরি হলে, সে আইন বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে। এ আইনে যারা তথ্য নেবেন বা যারা তথ্য দেবেন দুই পক্ষেরই কিছু বোঝাপড়ার অভাব থাকতে পারে। এ আইন শক্তিশালী অস্ত্র হিসেবে গণমাধ্যমকে আরও শক্তিশালী করেছে। কিন্তু সে অস্ত্রের ব্যবহার না অপব্যবহার হবে সেটা বোঝা এবং এ আইনে যাদের কাছে তথ্য চাওয়া হবে তাদের মধ্যে একটি সংস্কৃতিগত রূপান্তর দরকার। তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় জড়তা থাকে। যেগুলো জনসম্পৃক্ত তথ্য, জনগণের যেটা অধিকার সে তথ্য দেয়ার বিষয়টি সরকার নিশ্চিত করতে চায়। গণমাধ্যমের সাংবাদিকদেরও তথ্য চাওয়ার ক্ষেত্রে পেশাদার অ্যাপ্রোচ থাকা প্রয়োজন।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, তথ্য অধিকার আইনের অধীন যে তথ্য চাওয়ার অধিকার আছে সে বিষয় নিয়ে অনেক সময় যারা তথ্য চাইবেন তাদের পক্ষ থেকেও কিছু ভুল বোঝাবুঝি থাকে। কোনো তথ্য সর্বসাধারণের জন্য এবং কোনো তথ্য গোপন তথ্য সেটার পার্থক্য করতে পারা জরুরি। কিছু তথ্য আছে স্পর্শকাতর যেগুলো গোপন আইনের অধীন রক্ষিত আছে, এগুলো সর্বসাধারণের জন্য নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক, বিটিআরসিসহ এ ধরনের অন্যান্য স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হয়। এসব কৌশল বাস্তবায়নের আগপর্যন্ত অনেক সময় গোপন রাখতে হয়। এগুলো প্রকাশ করলে অনেক সময় বৃহত্তর স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এক্ষেত্রে সাংবাদিকতা, তথ্যের অবাধ প্রবাহ, তথ্য মানুষের কাছে পৌঁছানো এবং স্পর্শকাতর তথ্য এসবগুলোর মধ্যে ভারসাম্য করতে হয়। সেখানে প্রশিক্ষণ, যোগাযোগ ও মিথস্ক্রিয়া সব পক্ষের করা প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, তথ্যের অবাধ প্রবাহ, জনগণের কাছে তথ্য পৌঁছানো ও অপতথ্য মোকাবিলা করতে হবে। তবে সর্বসাধারণের জন্য তথ্য এবং জাতীয় স্বার্থে যেগুলোক পৃথিবীর সব দেশে স্পর্শকাতর ও গোপন তথ্য হিসেবে ধরা হয় সেগুলোর মধ্যে পার্থক্য নিরূপণের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। আমরা সরকার ও প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিতে চাই। এটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অঙ্গীকার।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, তথ্য অধিকার আইনকে আমরা আরও প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমরা চাই, সাংবাদিকরা যেন এ আইন ব্যবহার করে আরও ক্ষমতাপ্রাপ্ত হোন, এ আইনের পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারেন এবং তার উপযোগিতা আমরা সমাজে পাই। একইসঙ্গে এ আইনের আমরা দায়িত্বশীল ব্যবহার দেখতে চাই। যাদের এ আইনের অধীনে তথ্য দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে তাদের প্রতি আহ্বান থাকবে যেন তথ্য চাওয়া হলে সেটি দেওয়া হয়। জনগণের পক্ষ থেকে যখন গণমাধ্যম তথ্য চাইবে, সে তথ্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। সঠিক তথ্য যত দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরবরাহ করা হবে, ততো গুজব বা অপপ্রচার হওয়ার সুযোগ কম হবে।

তিনি আরও বলেন, যে তথ্য জনগণের বলে তথ্য অধিকার আইন নিশ্চিত করছে, সেই তথ্য গণমাধ্যমকে দিতে হবে। এ তথ্যগুলো যত দ্রুততার সঙ্গে সহজলভ্য করা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ এ ধরনের অন্যান্য সব প্রতিষ্ঠানের জন্য তত ভালো। আমাদের সবার এ মানসিকতা তৈরি করা দরকার যে, সঠিক তথ্য যত দ্রুত জনগণের কাছে চলে আসবে- এটা আমাদের জন্য মঙ্গল।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, সরকার চায় তথ্য অধিকার আইনের আওতায় যারা তথ্য দেবেন না, তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে যেন কোনো ধরনের জড়তা বা মানসিক বাধা না থাকে। সরকার আরও চায় সরকারি প্রতিটি প্রতিষ্ঠান দ্রুততম সময়ের মধ্যে তথ্য সহজলভ্য করুক। আর যারা তথ্য চাইবেন আমরা চাই তথ্য অধিকার আইন তারা সঠিকভাবে ব্যবহার করবেন। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই আইন ব্যবহারের সক্ষমতা তৈরি হোক সেটাও আমরা চাই; যাতে এ আইনের অপব্যবহার কেউ না করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য দেওয়া প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটি পরিকল্পিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য সহজলভ্য করা হবে।

তিনি আরও যোগ করেন, অপসংবাদিকতা হলে তার সবচেয়ে বড় শিকার হয় পেশাদার সাংবাদিকরা। অপপ্রচার হলে পেশাদার সাংবাদিকতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সব আইনেই কিছু অসৎ ব্যক্তি অপব্যবহারের সুযোগ নিতে চায়। সেটা আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে; কিন্তু সাইবার নিরাপত্তা আইন (সিএসএ) ব্যবহার করে কোনো সাংবাদিকতার চর্চা আটকে দেওয়ার সুযোগ নেই। সিএসএ পেশাদার সাংবাদিকতাকে সুরক্ষা দেবে।

জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সুফী জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য কমিশনের প্রধান তথ্য কমিশনার ডক্টর আবদুল মালেক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. খুরশীদ আলম।

দুই দিনের ঢাকা সফরে এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা দুই দিনের সফরে ঢাকা এসেছেন। বুধবার (৮ মে) সন্ধ্যায় এক বিশেষ ফ্লাইটে তিনি বিমানবন্দরে অবতরণ করেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর এ‌টি দি‌ল্লির কোনো প্রতি‌নি‌ধির প্রথম ঢাকা সফর।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পাঠানো দিল্লি সফরের আমন্ত্রণপত্র তুলে দেবেন। ওই দিন তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা ঢাকা সফরের সময় পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে আলোচনা করবেন।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ও ভারত আগামী জুন মাসের শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের বিষয়টি মোটামুটি চূড়ান্ত করেছিল। এখন প্রধানমন্ত্রীর ওই সফর পিছিয়ে জুলাইয়ে আয়োজন করতে চাইছে ভারত। ঢাকা সফরের সময় বিনয় কোয়াত্রা এটি বাংলাদেশের কাছে তুলে ধরতে পারেন।

ছেলে-পুত্রবধূর অপমান সইতে না পেরে বৃদ্ধ মা-বাবার বিষপান

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ছবি: সংগৃহীত

নাটোরের গুরুদাসপুরে ছেলের ওপর অভিমান করে মা-বাবার এক সঙ্গে বিষ পানের ঘটনা ঘটেছে। স্বজন ও স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন।

বুধবার (৮ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের হামলাইকোল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

বিষপানে গুরুতর অসুস্থ বাবা-মা হলেন- মো. আলম শেখ (৬০) ও নাজমা বেগম (৫০)।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আলম শেখ বলেন, আমার দুই মেয়ে এক ছেলে। ছেলে সবুজ শেখকে সব জমি-জমা লিখে দিয়েছি। ছেলে কথা দিয়েছিল সংসারের সকল দায়িত্ব নেবে এবং আমার সব ঋণ পরিশোধ করবে। কিন্তু জমি লিখে নেওয়ার পর ছেলে কথা রাখেনি। এদিকে ঋণের কারণে পাওনাদারদের অপমান-অপদস্থ সহ্য করতে হচ্ছে। পাশাপাশি ছেলে ও ছেলের বউ এর দুর্ব্যবহার তো রয়েছেই। তাই অতিষ্ঠ হয়ে স্বামী-স্ত্রী এক সঙ্গে বিষপান করেছেন বলে জানান তিনি।

মা-বাবার বিষপানে আত্মহত্যাচেষ্টার বিষয়ে জানতে চাইলে ছেলে সবুজ শেখ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. স্নিগ্ধা আক্তার জানান, বিষপান করে দুজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে আলম শেখের স্ত্রী নাজমা বেগমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

গণমাধ্যমের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
দুই দিনের ঢাকা সফরে এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব
ছেলে-পুত্রবধূর অপমান সইতে না পেরে বৃদ্ধ মা-বাবার বিষপান
৪৬তম বিসিএস প্রিলির ফল প্রকাশ হতে পারে আগামীকাল
জনগণের কষ্ট লাঘবে সরকার সবসময় সচেষ্ট: প্রধানমন্ত্রী
ফের আলিয়া ভাটের আপত্তিকর ভিডিও ফাঁস!
‘কাচ্চি ভাই’ রেস্টুরেন্টের মালিক সিরাজ গ্রেপ্তার, দুই দিনের রিমান্ডে
এক লাফে ডলারের দাম বাড়ল ৭ টাকা
আজ বিশ্ব গাধা দিবস, পালন করা হয় যেভাবে...
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ৩০-৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে: সিইসি
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে জাইকার প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ
প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা
বগুড়ায় ব্যালট পেপার বাইরে দেওয়ায় প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও প্রার্থীর এজেন্ট আটক
জাতীয় দলে ফিরলেন সাকিব-মুস্তাফিজ-সৌম্য
ওমরাহ পালন শেষে দেশে ফিরলেন মির্জা ফখরুল
মাদারীপুরে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, বিস্ফোরণ, আহত ১০
দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে অনুসন্ধান চলছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ভোট কারচুপির অভিযোগে ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির ভোট বর্জন
মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুপক্ষের মারামারি, আহত ৫০
নওগাঁর ভোট কেন্দ্রগুলোতে নেই ভোটার উপস্থিতি