জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংস্কার দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজকের মতো আগামীকাল রবিবার (২৯ জুন) দিনভর ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ এবং ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচিও চলবে বলে ঘোষণা দিয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। শনিবার দুপুরে আন্দোলনরত সংগঠনটির নেতারা এই ঘোষণা দেন।
দিনভর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর’ পালিত হয়। সকাল থেকে এনবিআরের ঢাকাস্থ কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত কর্মকর্তারাও অংশ নেন।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে প্রবেশ গেট বন্ধ করে আন্দোলনকারীদের বাধা দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। তার পরদিন অর্থ উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কর্মসূচি প্রত্যাহারের বার্তা দেওয়া হয়। কিন্তু এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ সেই বিবৃতিকে প্রত্যাখ্যান করে জানায়— ঐক্য পরিষদকে কোনো আলোচনায় আমন্ত্রণ জানানো হয়নি এবং সংশ্লিষ্ট বৈঠকে তাদের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।
পরিস্থিতি বিবেচনায় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ ২৮ জুন থেকে লাগাতার ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। এই কর্মসূচির আওতায় দেশের সব ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট দফতরে রাজস্ব আদায়ের যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সব দফতর থেকে ‘শান্তিপূর্ণ মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচিও পালিত হচ্ছে।
তবে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এই শাটডাউন কর্মসূচির আওতাভুক্ত নয়। সাধারণ যাত্রীসেবা এবং আন্তর্জাতিক চলাচল বিঘ্নিত হবে না।
প্রসঙ্গত, সরকার গত ১২ মে এনবিআরকে দুই ভাগ করে নতুন কাঠামোর একটি অধ্যাদেশ জারি করে। এর পর থেকেই এনবিআরের আওতাধীন কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এর প্রতিবাদে ২১ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয় এবং ২৩ জুন থেকে অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতি শুরু করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এর আগে, গত মে মাসেও একই দাবিতে ২৬ মে পর্যন্ত লাগাতার কর্মসূচি পালন করেন কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা। তারা মনে করছেন, এনবিআরকে বিভক্ত করার উদ্যোগ প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা তৈরি করবে এবং রাজস্ব খাতে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সরকার যদি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে না আসে, তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। শান্তিপূর্ণ উপায়ে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এই কর্মসূচি চলছে এবং আগামীতেও চলবে বলে জানানো হয়।