দুই সপ্তাহের মধ্যে সোনার দাম সর্বনিম্ন, ভবিষ্যতে বাড়ার ইঙ্গিত বিশ্লেষকদের

ছবি: সংগৃহীত
বিশ্ববাজারে সাম্প্রতিক সময়ে সোনার দামে বড় ধরনের পতন লক্ষ্য করা গেছে। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে মূল্যবান ধাতুটি সর্বনিম্ন অবস্থানে পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে বৃহস্পতিবার (১ মে) প্রতি আউন্স সোনা প্রায় ২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২২২ দশমিক ৬৬ ডলারে, যা গত ১৫ এপ্রিলের পর সর্বনিম্ন। একই সময়ে মার্কিন সোনার ফিউচার ২ দশমিক ৭ শতাংশ কমে হয়েছে ৩ হাজার ২৩০ দশমিক ৮০ ডলার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন প্রশাসনের কাছ থেকে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের প্রত্যাশা ও ডলারের শক্তিশালী অবস্থান এই পতনের মূল কারণ। ইউবিএস বিশ্লেষক জিওভান্নি স্টাউনোভো বলেন, “বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাবনা এবং শক্তিশালী ডলার সোনার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।”
ডলার ইনডেক্স বৃহস্পতিবার ০.৩ শতাংশ বেড়েছে, যা ডলারে লেনদেন হওয়া সোনাকে অন্যান্য মুদ্রার ক্রেতাদের কাছে আরও ব্যয়বহুল করে তুলেছে।
এদিকে অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর দামেও পতন দেখা গেছে। স্পট সিলভার ১.৮ শতাংশ কমে হয়েছে ৩১.৯৯ ডলার, প্লাটিনাম ১ শতাংশ কমে ৯৫৬.৬৩ ডলার, তবে প্যালাডিয়াম ০.৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৪১.১০ ডলারে।
বিশ্ব অর্থনীতি ও মুদ্রানীতি ঘিরে আরও কয়েকটি বিষয় বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং চীনের সঙ্গে সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন। তার এই মন্তব্যে বাজারে আশাবাদ সৃষ্টি হলেও, প্রথম ত্রৈমাসিকের অর্থনৈতিক সংকোচন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগও তৈরি করেছে।
ফেডারেল রিজার্ভের নীতিনির্ধারকরা জানিয়েছেন, মুদ্রাস্ফীতি বা শ্রমবাজারে বড় সংকট দেখা না দিলে সুদের হার অপরিবর্তিত থাকবে। তবে বিনিয়োগকারীরা এখন অপেক্ষা করছেন ২ মে প্রকাশিতব্য ননফার্ম পেরোলস (চাকরির হার) রিপোর্টের জন্য, যা ফেডের সিদ্ধান্তে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি ওই রিপোর্ট দুর্বল আসে, তাহলে ফেড সুদের হার কমানোর দিকে যেতে পারে, যার ফলে স্বর্ণের দাম পুনরায় ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে।
রয়টার্সের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, ২০২৫ সালে প্রথমবারের মতো সোনার বার্ষিক গড় মূল্য ৩ হাজার ডলার ছাড়াতে পারে। অনেকে আশা করছেন, যদি বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় এবং ফেড মুদ্রানীতিতে নমনীয়তা দেখায়, তাহলে সোনা আবারও ৩ হাজার ৫০০ ডলারে পৌঁছাতে পারে।
সামগ্রিকভাবে, বর্তমান পতন সত্ত্বেও বিশ্লেষকরা স্বর্ণের ভবিষ্যৎ মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনায় আশাবাদী।
