নওগাঁয় যুবদল নেতা আব্দুল মজিদ (৪৮) হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় নওগাঁ সদর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের সাহাপুর এলাকায় নওগাঁ-সান্তাহার সড়কে বোয়ালিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠন ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
২ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে শহরের ইয়াদ আলীর মোড় এলাকায় নওগাঁ সদর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি আবদুল মজিদকে গুলি করা হয়। এ সময় মজিদের দুই ভাই কাবিল হোসেন, শফিকুল ইসলাম ও স্থানীয় সুবিদ আলী হামলাকারীদের বাধা দিতে গেলে সন্ত্রাসীরা তাঁদের কুপিয়ে জখম করে। ২৬ নভেম্বর বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুল মজিদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে নওগাঁ সদর থানা পুলিশ। তবে মামলার প্রধান আসামি আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী এখনও গ্রেপ্তার হননি।
বোয়াালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোশতাক আহমেদের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও নওগাঁ পৌরসভার সাবেক মেয়র নজমুল হক, জেলা বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক মামুনুর রহমান ও শফিউল আজম রানা, জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান, পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন, নওগাঁ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সারওয়ার কামাল চঞ্চল, আব্দুস সালাম পিন্টু ও নিহত যুবদল নেতা আব্দুল মজিদের বড় ভাই মোকসেদুল ইসলাম প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ২ নভেম্বর রাত ১০টার দিে শহরের ইয়াদ আলীর মোড় এলাকায় যুবদল নেতা আব্দুল মজিদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা তিনটি মোটরসাইকেলে এসে আব্দুল মজিদের ওপর গুলি চালায়। এই হামলার নেতৃত্বে ছিলেন বোয়ালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ আলী, তাঁর সহযোগী আব্দুল্লাহ, রফিক ও মিলন। ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলীর দখলে থাকা জমি উদ্ধারকে কেন্দ্র করে মজিদের সঙ্গে তাঁর বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরই জেরে ২ নভেম্বর আব্দুল মজিদের ওপর মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। হামলার ঘটনার পর এক মাস পেরিয়ে গেলেও থানা পুলিশ এখনও মামলার প্রধান আসামি মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। মোহাম্মদ আলীকে দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন বক্তারা।
মজিদের বড় ভাই মোকসেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ভাই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। কিন্তু কোনো দিন কোনো অন্যায় কোনো কাজ করেনি। মানুষের উপকার করে বেড়াত। এলাকার কোথায় কার কি সমস্যা হচ্ছে সেখানে চলে যেত, সমাধানের চেষ্টা করতো। সেই মানুষটাকে গুলি করে হত্যা করা হলো। অথচ পুলিশ এখনও হত্যাকারী মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করতে পারলো না। আমি মোহাম্মদ আলীসহ সকল আসামিকে গ্রেপ্তার দেখতে চাই, তাদের বিচার আওতায় আনা হয়েছে দেখতে চাই।’
এ ব্যাপারে নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, এ পর্যন্ত পাঁচজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মোহাম্মদ আলীসহ বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছে। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। দ্রুতই তাঁদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।