শনিবার, ১০ মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১১

নেই দেশের নাগরিক

“তোমরা শুনলে অবাক হবে, আল্লাহ মুজাহিদকে কত বড় সম্মান দিয়েছেন! মুজাহিদ মৃত্যুবরণ করার সাথে সাথেই জান্নাতের নেয়ামত ভোগ করতে থাকেন! সুরা বাকারা-আয়াত ১৫৩-তে উল্লেখ আছে, কোরআন বলছে, ‘আর যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়, তাদের মৃত বল না। বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা বুঝ না।‘ অন্য একটি আয়াত, সূরা নিসা, আয়াত-৭৪ এ লেখা রয়েছে, ‘যারা আল্লাহর রাহে লড়াই করে এবং অতঃপর মৃত্যুবরণ করে কিংবা বিজয় অর্জন করে, আমি তাদের মহাপুণ্য দান করব।‘ সুতরাং তোমরা আল্লাহকে শুকরিয়া আদায় কর যে, তোমরা মুজাহিদ হতে পেরেছ। জিহাদকে মনের মধ্যে আঁকড়ে নিয়েছ।“ গড়গড় করে বলে গেলেন গাফফার খাঁ।
তাঁর বলার ভঙ্গিমা আর সুর শুনে মনেই হচ্ছে, তিনি জালসা-মজলিসে ভালোই বক্তৃতা করেন। ফতোয়া দেন। হাদিস-কোরআনের মসলা ব্যাখা করেন। প্রায় পৌনে ছ-ফুট লম্বা গাফফার খাঁ আদতে বাংলাদেশের সিলেটের বাসিন্দা। প্রথম দিকে ‘হুজি’র সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেখান থেকে পাঠ গুটিয়ে আইএস-এ ঢুকে পড়া। এখানে টাকাও বেশি, আবার কাজ করার ক্ষেত্রও বড়। মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে তাঁর নিবিড় যোগাযোগ। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার মধ্যপ্রাচ্য ঘুরে এসেছেন। স্বচক্ষে দেখেছেন, আই এস-এর কার্যকলাপ। আর একটু একটু করে নিজেকে আইএস-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করে নিয়েছেন। আইএস-এর স্বপ্নকে তার নিজের স্বপ্ন মনে হয়েছে। আফ্রিকা-এশিয়া-ইউরোপ জুড়ে স্বপ্নের ‘ইসলামিক স্টেট’ বানানো। শরিয়তি আইন প্রতিষ্ঠা করা। এসব ভাবলে, গর্বে তাঁর বুক ফুলে ওঠে।
আতিফ খেয়াল করল, গাফফার খাঁ যখন কোরআন-হাদিসের আয়াত সুর করে তেলাওয়াত করছেন, তখন তাঁর চোখমুখ আসমানি হয়ে উঠছে, ইহকালের কোনো কিছুর সঙ্গেই তাঁর সম্পর্ক নেই, যেন আসমান, নূর, ওহি, ফেরেশতা, জান্নাত তাঁর চোখে এসে ভর করছে! গাফফার খাঁ ধ্যানের মতো আউলিয়ে যাচ্ছেন। আতিফের মনে পড়ছে, তার মা হালেমাও যখন মাথায় ঘোমটা দিয়ে রেহেলে কোরআন রেখে, এভাবে তার চোখের সামনে সুর করে কোরআন তেলাওয়াত করতেন, তখন তিনিও কেমন একটা ঘোরে ডুবে যেতেন। মাকে জিজ্ঞেস করলে, মা বলতেন, একেই তো বলে, ফেরেশতা ভর করা। ঈমান শক্ত হলে, এমনটা হয়।‘
“একটা জিনিস মনে রেখো, আল্লাহর এবাদত করার জন্যেই আমাদের জন্ম হয়েছে। আল্লাহর দ্বীনকে মজবুত করে যাওয়ার জন্যেই, আমাদের এই পথে আসা। একটা আলাদা দেশ, যেখানে আল্লাহর শাসন কায়েম হবে, আল্লাহর কোরআন আর নবী রসুলের হাদিস অনুযায়ী শাসন পরিচালিত হবে, এ কী চাট্টেখানি নেকির কাজ! আলহামদুলিল্লাহ!” ভক্তিভরে আল্লাহর নাম নিলেন গাফফার খাঁ। জেহাদই হোক আর নিজে মুজাহিদই হই, ওসবের জন্যে তো আর আমি এপথে আসিনি। আমি এসেছি, আমার একটা নিজস্ব দেশ পাওয়ার জন্যে। আমার মতো ভিটেমাটি ছাড়া কোটি কোটি রোহিঙ্গাদের এই পৃথিবী নামক গ্রহে একটা দেশ পাওয়ার জন্যে। একটা মানুষের কোনো দেশ থাকবে না? সাড়ে তিন হাত মাটি থাকবে না? যে শিশু এক রোহিঙ্গা মায়ের পেটে বড় হচ্ছে, তার জন্যে একটা দেশ। যে মা তার সন্তানকে দশ মাস দশ দিন পেটে ধরে, এই পৃথিবীকে একটা মানুষ উপহার দিচ্ছেন, সে মায়ের জন্যে একটা দেশ। আমি সেই দেশ পাওয়ার জন্যেই লড়তে এসেছি। জীবনকে বাজি রেখেছি। জান্নাত-বেহেশত, হুরী, নেকি, নূর এসবের জন্যে আমি মুজাহিদ হইনি। আমি মুজাহিদ হয়েছি, সেই পিতার মৃতদেহ দাফনের সাড়ে তিন হাত মাটির জন্যে, যিনি আমাকে জন্ম দিয়েছেন। আমি শহীদ হতে চাই, সেই মায়ের জন্যে, যিনি বুক ফুলিয়ে বলতে পারবেন, আমি যেমন তোকে পেটে ধরেছি, তেমনি দেশও দিতে পেরেছি। মনকে মন দিয়ে খুঁটতে থাকে আতিফ। নিজের আকাশে নিজেই ওড়ায় ঘুড়ি। কাঁধ থেকে এ কে ফরটিসেভেন রাইফেলটা টেবিলের ওপর আলতো করে নামিয়ে রাখল। কাঁধটা অনেকটা হাল্কা হলো। বন্দুকের ভারে কাত হয়ে গেছিল। কোমর ভাঁজ করে পাশের কাঠের চেয়ারটায় ঠেসে বসল। মাথা থেকে জলপাই রঙের উর্দি টুপিটা খুলে রাখল লম্বা টুলটায়। কপালের ছোপ ঘামে লেপ্টে আছে সামনের চুলগুলো। ঘাড়ের কাছে সন সন করে বইছে ব্যাটারিচালিত টেবিল ফ্যান। ফ্যানের উড়ো হাওয়াতে তার চেপে বসে থাকা চুলগুলো ফিনফিন করে উড়তে লাগল। কাঠের দোতলা কুঠুরি ঘর। নিচের তলা ফাঁকা। কাঠের থাম-খুঁটি। তক্তার সিঁড়িটা সাপের মতো এঁকেবেঁকে ওপরে উঠে গেছে। দক্ষিণ দিকে হাট করে খোলা সেগুন কাঠের জানালা। জানালার তক্তাগুলো দুপাশে সমান করে গোটানো। ঝিরঝির করে ঢুকছে বরফ মাখা বাতাস। জানালার ভিউ দিয়ে দেখা যাচ্ছে, চট্টগ্রামের আকাশ। নীল মাখা আকাশের গায়ে ইতস্তত সাদা মেঘের উড়ুঝুড়ু। কে যেন একমুঠো শিমুল তুলো ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে। চায়ের ট্রেটা ‘ঠক’ করে চেয়ারের সামনের ডাইনিং টেবিলটায় রাখল নবী। লাল চা। গোলমুখো চিনামাটির দুটো সাদা আর একটা অ্যাশ কালারের কাপ। কাপগুলোর গায়ে একটা করে পদ্মকলি আঁকা। হাতলগুলো সরু করে প্যাঁচানো। কাপগুলোর মুখ থেকে গরম চায়ের সাদা ভাপ কুণ্ডলি পাকিয়ে উড়ছে। একটা প্লেটে গোটা ছয়েক ক্রিমকেকার বিস্কুট। নবী ট্রেটা রেখেই বলল, “হুজুর চা”।
“চিনি ছাড়া কোনটা?” জিজ্ঞেস করলেন গাফফার খাঁ।
“অ্যাশ কালারেরটা হুজুর।“ বলল নবী। কাপটা হাতে তুলে নিয়েই গাফফার খাঁ বললেন, “পরের সপ্তাহেই তোমাদের নেপাল যেতে হবে।“
“জি, হুজুর।“ ঘাড় নড়াল আতিফ।
“সেখানে আমাদের লোকজন থাকবে। তোমরা কাঠমান্ডু পৌঁছলেই, আমাদের লোকজন তোমাদের নিয়ে যাবে। কোনো অসুবিধা হবে না।“
“আমাদের কি আর সিরিয়া যাওয়ার দরকার আছে?” জানতে চায়ল আতিফ।
“নাহ, আপাতত নেই। তবে প্রয়োজন পড়লে যেতে হতেও পারে। এ সপ্তাহেই সিরিয়া থেকে একটা টিম এখানে আসবে।“ তারপর হুট করে গাফফার খাঁ বললেন, “কায়রাপরীর টংকীর কী খবর আতিফ?”
“আপনি যা ভেবেছিলেন তাই।“
“আমি তো আর এমনি এমনি ভাবিনি আতিফ, গোপন সূত্র থেকে খবরটা এসেছিল। ওখানেও আমাদের লোকজন লাগানো রয়েছে।“
“আমারও সন্দেহটা ছিল, এত বড় হত্যাযজ্ঞের পেছনে, নিশ্চয় বড় কোনো শক্তির হাত রয়েছে।“
“সবই ধর্ম, বুঝলে? জাতে জাতে টান।“
“আমি তো অবাক! পুরো ছড়িটাই ঘোরাচ্ছে ওরা!“
“শুধু কী তাই? অস্ত্র সরবরাহ, সেনাপ্রশিক্ষণ, টাকা জোগান সবই করছে ওরা।“
“ওদের আসল উদ্দেশ্যটা কী বলে আপনি মনে করেন।“
“দখল। উপনিবেশও বলতে পার। ছলে বলে কৌশলে পুরো দেশটাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া। দেখছ না, তিব্বতটা কীভাবে ক্যাপচার করে নিল।“
“এতে তো মায়ানমারের নিজস্ব সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে যাবে! ওরা তো ওদের সংস্কৃতি জোর করে চাপিয়ে দেবে!”
“সে তো দেবেই। আলবাত দেবে। এভাবেই তো ওরা পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াটা নিজের অধীনে আনার চেষ্টা করছে।“
“আমার মনে হয়, ওদের আসল টার্গেট, ভারতকে তাবে রাখা।“
“একদম ঠিক। ওই জন্যেই ওরা ইন্ডিয়ার চারধারে সেনা ক্যাম্প গড়ে তুলছে। ইন্ডিয়ার শত্রু দেশগুলোর সঙ্গে দোস্তি বানাচ্ছে। ওইসব দেশগুলোকে নানাভাবে সহযোগিতা করছে। আর এই পরিকল্পনারই একটা পার্ট হলো, মায়ানমারকে কব্জায় রাখা। নিজেদের ইচ্ছের সরকার বসানো। যে তাদের বশে থাকবে। দেখো, ভৌগলিক কারণেই, ইন্ডিয়াকে তাবে রাখতে হলে, মায়ানমারকে চাই। মায়ানমার নিজেদের কব্জায় থাকলে, খুব সহজেই ইন্ডিয়াকে আক্রমণ করা যাবে। আক্রমণের বেসক্যাম্প বানানো যাবে। অস্ত্র এনে মজুদ করে রাখা যাবে।“
“আচ্ছা, ইন্ডিয়াকে চীনের অত হিংসা কেন? আমরা তো একসময় শুনেছি, ‘ইন্দো-চীনি ভাই ভাই’। তাহলে চীনের এই পুরো একশ আশি ডিগ্রি ঘুরে, ডিগবাজি মারা কেন?”
“দেখো, আতিফ, এ তো সহজ অঙ্ক। অর্থনীতি, বুঝলে অর্থনীতি। চীন জানে, বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে, ইন্ডিয়াকে বশে রাখতে হবে, কোনভাবেই ইন্ডিয়াকে উঠতে দেওয়া যাবে না। চতুর চীনারা জানে, ইন্ডিয়ার অর্থনীতি যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে চীনকে টেক্কা দিতে পারে। সুতরাং এখন থেকেই চারধার ঘিরে ফোঁসফাঁস কর। আরে এখন তো আর জমির জন্যে বিশ্বযুদ্ধ হবে না, বিশ্বযুদ্ধ হবে অর্থনীতির জন্যে। যে যত অর্থনীতিতে বলিয়ান সে তত বিশ্বের দাদা। বিশ্বের নিয়ন্ত্রক।“
“আমার তো মনে হচ্ছে, মায়ানমারের জান্তা সরকার যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে মায়ানমার চীনের একটা অঙ্গরাজ্য না হয়ে যায়!” আশঙ্কা প্রকাশ করল নবী।
“সেদিকেই তো এগোচ্ছে। একদম ঠিক ধরেছ। তারা প্রথমে মায়ানমার সেনা দিয়ে দেশ থেকে সমস্ত মুসলমান মাযহাবকে বিতাড়িত করে একটা বুদ্ধিস্ট উপনিবেশ বানাবে, তারপর আরও কিছু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছোটখাট দেশকে গিলে, একটা পূর্ণাঙ্গ বৌদ্ধস্টেট। এককথায় ‘মহাচীন’ বানাবে।“ চায়ের শেষ চুমুকটা দিলেন গাফফার খাঁ। সুড়ুৎ করে টান মেরে বললেন, “চীনের গুপ্তচর সংস্থা এমএসএস অর্থাৎ মিনিস্ট্রি অব স্টেট সিকিউরিটি, যা চীনের নিজস্ব ভাষায় ‘গওজিয়া অ্যাংকেন বু’, দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা। এরা গুপ্তহত্যা আর কাউন্টার টেররিজম এ সিদ্ধ হস্ত। গোটা মায়ানমার জুড়ে এরা বহুত নিজস্ব লোক সংগ্রহ আর নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে। এদের থেকে খুউব সাবধানে থাকতে হবে। এদের ভোল বোঝা খুবই মুশকিল। বিশেষ করে রাখাইনে এরা মাকড়সার মতো জাল বিছিয়ে রেখেছে। মায়ানমার সেনা এদের অঙ্গুলিহেলনেই উঠবস করছে।“
“এখন তো যুদ্ধের গতিপ্রকৃতির ব্যাপক বদল এসেছে। সম্মুখ সমরে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ কমই হয়। এখন শুধু বুদ্ধির যুদ্ধ। টেকনলেজির যুদ্ধ। মাউসের যুদ্ধ।“ কপালের কাছে ঝুলে থাকা চুলটা সরালো আতিফ।
“চাণক্যর একটা কথা আছে, ‘যা বল প্রয়োগে অর্জন সম্ভব নয় তা ধোঁকা দিয়ে সিদ্ধ করা যায়, বিষাক্ত গোখরো সাপও কাক আর সোনার হারের ফাঁদে পরাজিত হয়।’ সুতরাং যেখানে সোজা আঙ্গুলেই ঘি উঠে যাবে, সেখানে খামোখা আঙুল বাঁকাতে যাবে কেন? শুধু টোপ ফেলে রাখো, শিকার ঠিক আসবেই।“ চায়ের কাপটা টি-টেবিলে আলতো করে রাখলেন গাফফার খাঁ।
“হুজুর, একটা কথা ছিল।“ মাথা চুলকোয় আতিফ।
“কী কথা, আতিফ, বলে ফেলো, মাগরিবের সময় হয়ে এলো।“ দেওয়ালে টাঙ্গানো নকশাটানা ঢাউস ঘড়িটার দিকে চোখ ফেললেন গাফফার খাঁ।
“কায়রাপরীর টংকীর অপারেশনটা আমি নিজে হাতে করতে চাই।“ চোখ লাল করে উঠল আতিফ। তার বুকের সিনা ফুলে উঠল।
“অত উতলা হওয়ার এখনই কিছু হয়নি, আতিফ। এখনও ঢের সময় পড়ে। সামনে বহুত কাজ বাকি। তুমি আমাদের একটা অ্যাসেট। তুমি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া ছেলে। টেকনলজিতে তোমার দক্ষ হাত। তোমাকে ব্রেনের যুদ্ধ করতে হবে আতিফ। ওই যে বলে না, যেখানে মাউসের ক্লিকেই কাজ ফিনিশ, সেখানে বারুদের কী প্রয়োজন। তোমার ব্রেন আমাদের এই জেহাদে একটা শক্তিশালী সম্বল। সেটা হেলাফেলায় এত দ্রুত আমরা হারাতে চাই না, আতিফ। একটা ক্ষুরধার ব্রেন হাজার বন্দুকের থেকেও শক্তিশালী। তুমি আমাদের ‘ব্রেনমিসাইল’, আতিফ।“

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১

এসএন 

Header Ad
Header Ad

শাহবাগে বিক্ষোভে উত্তাল জনতা, খালেদা জিয়ার উপস্থিতি চায় ইনকিলাব মঞ্চ

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে উত্তাল আন্দোলন চলছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হয়ে শুক্রবার সারা দিনব্যাপী এই আন্দোলনে ছাত্র-জনতা ‘ব্যান করো, আওয়ামী লীগ ব্যান করো’ সহ নানা স্লোগানে মুখরিত করে তোলে শাহবাগ চত্বর।

এই প্রেক্ষাপটে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি এক আবেগঘন আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে শাহবাগে আসার জন্য।

হাদি নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে লেখেন— “বাংলাদেশের বেগম জিয়া, শাহবাগে হাজারো শহিদ পরিবার ও সারা বাংলাদেশ আপনার অপেক্ষায়।”

অন্য একটি পোস্টে তিনি আরও লেখেন— “জুলাই যোদ্ধাদের পক্ষ থেকে আপোষহীন নেত্রী বেগম জিয়ার কাছে যেতে চাই আমরা শাহবাগের দাওয়াত নিয়ে। কাইন্ডলি সংশ্লিষ্ট কেউ হেল্প করুন। উনি আমাদের সার্বভৌম অভিভাবক।”

শুক্রবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে। এর আগে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে ফোয়ারার পাশে তৈরি করা মঞ্চ থেকে আন্দোলনের নতুন ধাপ হিসেবে মোড় অবরোধের ঘোষণা দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।

ঘোষণার পরপরই আন্দোলনকারীরা মিছিলসহ শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয় এবং অবরোধ শুরু করে।

Header Ad
Header Ad

১৭ বছর পর দেশে ফিরে মসজিদে জুমার নামাজ পড়লেন জোবাইদা রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান। ছবি: সংগৃহীত

১৭ বছর পর স্বদেশে ফিরে প্রথমবারের মতো মসজিদে গিয়ে জুমার নামাজ আদায় করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান। আজ (শুক্রবার) তিনি রাজধানীর ধানমন্ডির ৭ নম্বর মসজিদে সশরীরে জুমার নামাজে অংশ নেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম। তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জোবাইদা রহমানের নামাজ আদায়ের কিছু ছবি পোস্ট করে লেখেন— "ধানমন্ডি ৭ নম্বর মসজিদে আজ জুমার নামাজ আদায় করেছেন তারেক রহমানের সহধর্মিণী জোবাইদা রহমান।"

এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার নাসির, তার স্ত্রী ব্যারিস্টার মেহনাজ মান্নানসহ আরও কয়েকজন।

২০০৮ সালে দেশ ছেড়ে লন্ডনে পাড়ি জমানো জোবাইদা রহমান চলতি বছরের ৬ মে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফেরেন। ফিরে আসার পর থেকে তিনি গুলশানের ফিরোজা বাসভবনে অবস্থান করছেন। মাঝে মাঝে তিনি বাবার বাড়ি ধানমন্ডির মাহবুব ভবনেও যাতায়াত করছেন।

জোবাইদা রহমানের এই জুমার নামাজে অংশগ্রহণ ও জনসম্মুখে উপস্থিতি বিএনপির রাজনৈতিক পরিসরে তার সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণের একটি বার্তা হিসেবেও দেখা হচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

Header Ad
Header Ad

ভারতে ইউটিউবে বন্ধ যমুনা-বাংলাভিশনসহ ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল

ছবি: সংগৃহীত

ভারত সরকার জাতীয় নিরাপত্তা এবং জনশৃঙ্খলার উদ্বেগের কারণ দেখিয়ে ইউটিউবে বাংলাদেশের অন্তত চারটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার সীমিত করেছে। শুক্রবার (৯ মে) স্থানীয় ডিজিটাল পর্যবেক্ষণ সংস্থা ডিসমিস্ল্যাব বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

বন্ধ হওয়া চ্যানেলগুলো হলো— যমুনা টিভি, একাত্তর টিভি, বাংলাভিশন, এবং মোহনা টেলিভিশন।

ভারতীয় ব্যবহারকারীরা এখন ইউটিউবে এসব চ্যানেলে প্রবেশ করতে গেলে একটি সতর্কবার্তা দেখতে পাচ্ছেন— "এই ভিডিওটি বর্তমানে এই দেশে প্রদর্শনের জন্য অনুমোদিত নয়, কারণ এটি জাতীয় নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার ভিত্তিতে সরকারি নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত।"

ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি আইন, ২০০০-এর ৬৯(ক) ধারা অনুযায়ী, সরকার জাতীয় নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব, জনশৃঙ্খলা বা রাষ্ট্রের অখণ্ডতা বিঘ্নিত হয়—এমন কনটেন্ট বা চ্যানেল বন্ধ করার নির্দেশ দিতে পারে। সেই ধারার অধীনেই ইউটিউবকে টেকডাউন অনুরোধ পাঠানো হয়েছে বলে জানায় ডিসমিস্ল্যাব।

ভারতের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে এখনো বাংলাদেশ সরকার, টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বা ইউটিউব কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক উত্তেজনা ও মিডিয়া কনটেন্টের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ থেকেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে গণমাধ্যম কূটনীতি ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়েও আলোচনা তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

শাহবাগে বিক্ষোভে উত্তাল জনতা, খালেদা জিয়ার উপস্থিতি চায় ইনকিলাব মঞ্চ
১৭ বছর পর দেশে ফিরে মসজিদে জুমার নামাজ পড়লেন জোবাইদা রহমান
ভারতে ইউটিউবে বন্ধ যমুনা-বাংলাভিশনসহ ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল
আটকের পরও যে ফোনে ছেড়ে দেওয়া হয় আবদুল হামিদকে
নওগাঁয় দুলাভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে গ্রেপ্তার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা
বাংলাদেশ সফরে আসছে না ভারত, অনিশ্চিত এশিয়া কাপ
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল শাহবাগ, জনস্রোতে ভরপুর রাজপথ
বিএনপি ছাড়া সব রাজনৈতিক দল এখন শাহবাগে: সারজিস আলম
শিক্ষার্থী পারভেজ হত্যায় গ্রেপ্তার টিনা ৩ দিনের রিমান্ডে
চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড ৪১.০২ ডিগ্রি সেলসিয়াস; বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ
কাশ্মীরে ফের বিএসএফের গুলি, ৭ পাকিস্তানি নিহত: দিল্লির দাবি বিচ্ছিন্নতাবাদী
নওগাঁয় ককটেল বিস্ফোরণে উড়ে গেল বাড়ির টিন
ভারত-পাকিস্তান সংঘাত ‘আমাদের বিষয় নয়’: যুক্তরাষ্ট্র
দেশের তীব্র তাপপ্রবাহ নিয়ে যা বলল আবহাওয়া অফিস
আ.লীগ নিষিদ্ধে গুরুত্বের সাথে সরকার বিবেচনা করছে: সরকারের বিবৃতি
টাঙ্গাইলে নাশকতা মামলায় আ.লীগ নেতা রাজ্জাকসহ ২ জন গ্রেফতার
অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত আইপিএল
এবার অপেক্ষা তারেক রহমানের ফেরার, চলছে জোরালো প্রস্তুতি
পদ্মার এক ইলিশের দাম সাড়ে ৮ হাজার টাকা
৫ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে থানায় নেওয়া হলো আইভীকে