শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-১১

নেই দেশের নাগরিক

“তোমরা শুনলে অবাক হবে, আল্লাহ মুজাহিদকে কত বড় সম্মান দিয়েছেন! মুজাহিদ মৃত্যুবরণ করার সাথে সাথেই জান্নাতের নেয়ামত ভোগ করতে থাকেন! সুরা বাকারা-আয়াত ১৫৩-তে উল্লেখ আছে, কোরআন বলছে, ‘আর যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়, তাদের মৃত বল না। বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা বুঝ না।‘ অন্য একটি আয়াত, সূরা নিসা, আয়াত-৭৪ এ লেখা রয়েছে, ‘যারা আল্লাহর রাহে লড়াই করে এবং অতঃপর মৃত্যুবরণ করে কিংবা বিজয় অর্জন করে, আমি তাদের মহাপুণ্য দান করব।‘ সুতরাং তোমরা আল্লাহকে শুকরিয়া আদায় কর যে, তোমরা মুজাহিদ হতে পেরেছ। জিহাদকে মনের মধ্যে আঁকড়ে নিয়েছ।“ গড়গড় করে বলে গেলেন গাফফার খাঁ।
তাঁর বলার ভঙ্গিমা আর সুর শুনে মনেই হচ্ছে, তিনি জালসা-মজলিসে ভালোই বক্তৃতা করেন। ফতোয়া দেন। হাদিস-কোরআনের মসলা ব্যাখা করেন। প্রায় পৌনে ছ-ফুট লম্বা গাফফার খাঁ আদতে বাংলাদেশের সিলেটের বাসিন্দা। প্রথম দিকে ‘হুজি’র সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেখান থেকে পাঠ গুটিয়ে আইএস-এ ঢুকে পড়া। এখানে টাকাও বেশি, আবার কাজ করার ক্ষেত্রও বড়। মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে তাঁর নিবিড় যোগাযোগ। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার মধ্যপ্রাচ্য ঘুরে এসেছেন। স্বচক্ষে দেখেছেন, আই এস-এর কার্যকলাপ। আর একটু একটু করে নিজেকে আইএস-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করে নিয়েছেন। আইএস-এর স্বপ্নকে তার নিজের স্বপ্ন মনে হয়েছে। আফ্রিকা-এশিয়া-ইউরোপ জুড়ে স্বপ্নের ‘ইসলামিক স্টেট’ বানানো। শরিয়তি আইন প্রতিষ্ঠা করা। এসব ভাবলে, গর্বে তাঁর বুক ফুলে ওঠে।
আতিফ খেয়াল করল, গাফফার খাঁ যখন কোরআন-হাদিসের আয়াত সুর করে তেলাওয়াত করছেন, তখন তাঁর চোখমুখ আসমানি হয়ে উঠছে, ইহকালের কোনো কিছুর সঙ্গেই তাঁর সম্পর্ক নেই, যেন আসমান, নূর, ওহি, ফেরেশতা, জান্নাত তাঁর চোখে এসে ভর করছে! গাফফার খাঁ ধ্যানের মতো আউলিয়ে যাচ্ছেন। আতিফের মনে পড়ছে, তার মা হালেমাও যখন মাথায় ঘোমটা দিয়ে রেহেলে কোরআন রেখে, এভাবে তার চোখের সামনে সুর করে কোরআন তেলাওয়াত করতেন, তখন তিনিও কেমন একটা ঘোরে ডুবে যেতেন। মাকে জিজ্ঞেস করলে, মা বলতেন, একেই তো বলে, ফেরেশতা ভর করা। ঈমান শক্ত হলে, এমনটা হয়।‘
“একটা জিনিস মনে রেখো, আল্লাহর এবাদত করার জন্যেই আমাদের জন্ম হয়েছে। আল্লাহর দ্বীনকে মজবুত করে যাওয়ার জন্যেই, আমাদের এই পথে আসা। একটা আলাদা দেশ, যেখানে আল্লাহর শাসন কায়েম হবে, আল্লাহর কোরআন আর নবী রসুলের হাদিস অনুযায়ী শাসন পরিচালিত হবে, এ কী চাট্টেখানি নেকির কাজ! আলহামদুলিল্লাহ!” ভক্তিভরে আল্লাহর নাম নিলেন গাফফার খাঁ। জেহাদই হোক আর নিজে মুজাহিদই হই, ওসবের জন্যে তো আর আমি এপথে আসিনি। আমি এসেছি, আমার একটা নিজস্ব দেশ পাওয়ার জন্যে। আমার মতো ভিটেমাটি ছাড়া কোটি কোটি রোহিঙ্গাদের এই পৃথিবী নামক গ্রহে একটা দেশ পাওয়ার জন্যে। একটা মানুষের কোনো দেশ থাকবে না? সাড়ে তিন হাত মাটি থাকবে না? যে শিশু এক রোহিঙ্গা মায়ের পেটে বড় হচ্ছে, তার জন্যে একটা দেশ। যে মা তার সন্তানকে দশ মাস দশ দিন পেটে ধরে, এই পৃথিবীকে একটা মানুষ উপহার দিচ্ছেন, সে মায়ের জন্যে একটা দেশ। আমি সেই দেশ পাওয়ার জন্যেই লড়তে এসেছি। জীবনকে বাজি রেখেছি। জান্নাত-বেহেশত, হুরী, নেকি, নূর এসবের জন্যে আমি মুজাহিদ হইনি। আমি মুজাহিদ হয়েছি, সেই পিতার মৃতদেহ দাফনের সাড়ে তিন হাত মাটির জন্যে, যিনি আমাকে জন্ম দিয়েছেন। আমি শহীদ হতে চাই, সেই মায়ের জন্যে, যিনি বুক ফুলিয়ে বলতে পারবেন, আমি যেমন তোকে পেটে ধরেছি, তেমনি দেশও দিতে পেরেছি। মনকে মন দিয়ে খুঁটতে থাকে আতিফ। নিজের আকাশে নিজেই ওড়ায় ঘুড়ি। কাঁধ থেকে এ কে ফরটিসেভেন রাইফেলটা টেবিলের ওপর আলতো করে নামিয়ে রাখল। কাঁধটা অনেকটা হাল্কা হলো। বন্দুকের ভারে কাত হয়ে গেছিল। কোমর ভাঁজ করে পাশের কাঠের চেয়ারটায় ঠেসে বসল। মাথা থেকে জলপাই রঙের উর্দি টুপিটা খুলে রাখল লম্বা টুলটায়। কপালের ছোপ ঘামে লেপ্টে আছে সামনের চুলগুলো। ঘাড়ের কাছে সন সন করে বইছে ব্যাটারিচালিত টেবিল ফ্যান। ফ্যানের উড়ো হাওয়াতে তার চেপে বসে থাকা চুলগুলো ফিনফিন করে উড়তে লাগল। কাঠের দোতলা কুঠুরি ঘর। নিচের তলা ফাঁকা। কাঠের থাম-খুঁটি। তক্তার সিঁড়িটা সাপের মতো এঁকেবেঁকে ওপরে উঠে গেছে। দক্ষিণ দিকে হাট করে খোলা সেগুন কাঠের জানালা। জানালার তক্তাগুলো দুপাশে সমান করে গোটানো। ঝিরঝির করে ঢুকছে বরফ মাখা বাতাস। জানালার ভিউ দিয়ে দেখা যাচ্ছে, চট্টগ্রামের আকাশ। নীল মাখা আকাশের গায়ে ইতস্তত সাদা মেঘের উড়ুঝুড়ু। কে যেন একমুঠো শিমুল তুলো ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে। চায়ের ট্রেটা ‘ঠক’ করে চেয়ারের সামনের ডাইনিং টেবিলটায় রাখল নবী। লাল চা। গোলমুখো চিনামাটির দুটো সাদা আর একটা অ্যাশ কালারের কাপ। কাপগুলোর গায়ে একটা করে পদ্মকলি আঁকা। হাতলগুলো সরু করে প্যাঁচানো। কাপগুলোর মুখ থেকে গরম চায়ের সাদা ভাপ কুণ্ডলি পাকিয়ে উড়ছে। একটা প্লেটে গোটা ছয়েক ক্রিমকেকার বিস্কুট। নবী ট্রেটা রেখেই বলল, “হুজুর চা”।
“চিনি ছাড়া কোনটা?” জিজ্ঞেস করলেন গাফফার খাঁ।
“অ্যাশ কালারেরটা হুজুর।“ বলল নবী। কাপটা হাতে তুলে নিয়েই গাফফার খাঁ বললেন, “পরের সপ্তাহেই তোমাদের নেপাল যেতে হবে।“
“জি, হুজুর।“ ঘাড় নড়াল আতিফ।
“সেখানে আমাদের লোকজন থাকবে। তোমরা কাঠমান্ডু পৌঁছলেই, আমাদের লোকজন তোমাদের নিয়ে যাবে। কোনো অসুবিধা হবে না।“
“আমাদের কি আর সিরিয়া যাওয়ার দরকার আছে?” জানতে চায়ল আতিফ।
“নাহ, আপাতত নেই। তবে প্রয়োজন পড়লে যেতে হতেও পারে। এ সপ্তাহেই সিরিয়া থেকে একটা টিম এখানে আসবে।“ তারপর হুট করে গাফফার খাঁ বললেন, “কায়রাপরীর টংকীর কী খবর আতিফ?”
“আপনি যা ভেবেছিলেন তাই।“
“আমি তো আর এমনি এমনি ভাবিনি আতিফ, গোপন সূত্র থেকে খবরটা এসেছিল। ওখানেও আমাদের লোকজন লাগানো রয়েছে।“
“আমারও সন্দেহটা ছিল, এত বড় হত্যাযজ্ঞের পেছনে, নিশ্চয় বড় কোনো শক্তির হাত রয়েছে।“
“সবই ধর্ম, বুঝলে? জাতে জাতে টান।“
“আমি তো অবাক! পুরো ছড়িটাই ঘোরাচ্ছে ওরা!“
“শুধু কী তাই? অস্ত্র সরবরাহ, সেনাপ্রশিক্ষণ, টাকা জোগান সবই করছে ওরা।“
“ওদের আসল উদ্দেশ্যটা কী বলে আপনি মনে করেন।“
“দখল। উপনিবেশও বলতে পার। ছলে বলে কৌশলে পুরো দেশটাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া। দেখছ না, তিব্বতটা কীভাবে ক্যাপচার করে নিল।“
“এতে তো মায়ানমারের নিজস্ব সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে যাবে! ওরা তো ওদের সংস্কৃতি জোর করে চাপিয়ে দেবে!”
“সে তো দেবেই। আলবাত দেবে। এভাবেই তো ওরা পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াটা নিজের অধীনে আনার চেষ্টা করছে।“
“আমার মনে হয়, ওদের আসল টার্গেট, ভারতকে তাবে রাখা।“
“একদম ঠিক। ওই জন্যেই ওরা ইন্ডিয়ার চারধারে সেনা ক্যাম্প গড়ে তুলছে। ইন্ডিয়ার শত্রু দেশগুলোর সঙ্গে দোস্তি বানাচ্ছে। ওইসব দেশগুলোকে নানাভাবে সহযোগিতা করছে। আর এই পরিকল্পনারই একটা পার্ট হলো, মায়ানমারকে কব্জায় রাখা। নিজেদের ইচ্ছের সরকার বসানো। যে তাদের বশে থাকবে। দেখো, ভৌগলিক কারণেই, ইন্ডিয়াকে তাবে রাখতে হলে, মায়ানমারকে চাই। মায়ানমার নিজেদের কব্জায় থাকলে, খুব সহজেই ইন্ডিয়াকে আক্রমণ করা যাবে। আক্রমণের বেসক্যাম্প বানানো যাবে। অস্ত্র এনে মজুদ করে রাখা যাবে।“
“আচ্ছা, ইন্ডিয়াকে চীনের অত হিংসা কেন? আমরা তো একসময় শুনেছি, ‘ইন্দো-চীনি ভাই ভাই’। তাহলে চীনের এই পুরো একশ আশি ডিগ্রি ঘুরে, ডিগবাজি মারা কেন?”
“দেখো, আতিফ, এ তো সহজ অঙ্ক। অর্থনীতি, বুঝলে অর্থনীতি। চীন জানে, বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে, ইন্ডিয়াকে বশে রাখতে হবে, কোনভাবেই ইন্ডিয়াকে উঠতে দেওয়া যাবে না। চতুর চীনারা জানে, ইন্ডিয়ার অর্থনীতি যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে চীনকে টেক্কা দিতে পারে। সুতরাং এখন থেকেই চারধার ঘিরে ফোঁসফাঁস কর। আরে এখন তো আর জমির জন্যে বিশ্বযুদ্ধ হবে না, বিশ্বযুদ্ধ হবে অর্থনীতির জন্যে। যে যত অর্থনীতিতে বলিয়ান সে তত বিশ্বের দাদা। বিশ্বের নিয়ন্ত্রক।“
“আমার তো মনে হচ্ছে, মায়ানমারের জান্তা সরকার যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে মায়ানমার চীনের একটা অঙ্গরাজ্য না হয়ে যায়!” আশঙ্কা প্রকাশ করল নবী।
“সেদিকেই তো এগোচ্ছে। একদম ঠিক ধরেছ। তারা প্রথমে মায়ানমার সেনা দিয়ে দেশ থেকে সমস্ত মুসলমান মাযহাবকে বিতাড়িত করে একটা বুদ্ধিস্ট উপনিবেশ বানাবে, তারপর আরও কিছু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছোটখাট দেশকে গিলে, একটা পূর্ণাঙ্গ বৌদ্ধস্টেট। এককথায় ‘মহাচীন’ বানাবে।“ চায়ের শেষ চুমুকটা দিলেন গাফফার খাঁ। সুড়ুৎ করে টান মেরে বললেন, “চীনের গুপ্তচর সংস্থা এমএসএস অর্থাৎ মিনিস্ট্রি অব স্টেট সিকিউরিটি, যা চীনের নিজস্ব ভাষায় ‘গওজিয়া অ্যাংকেন বু’, দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা। এরা গুপ্তহত্যা আর কাউন্টার টেররিজম এ সিদ্ধ হস্ত। গোটা মায়ানমার জুড়ে এরা বহুত নিজস্ব লোক সংগ্রহ আর নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে। এদের থেকে খুউব সাবধানে থাকতে হবে। এদের ভোল বোঝা খুবই মুশকিল। বিশেষ করে রাখাইনে এরা মাকড়সার মতো জাল বিছিয়ে রেখেছে। মায়ানমার সেনা এদের অঙ্গুলিহেলনেই উঠবস করছে।“
“এখন তো যুদ্ধের গতিপ্রকৃতির ব্যাপক বদল এসেছে। সম্মুখ সমরে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ কমই হয়। এখন শুধু বুদ্ধির যুদ্ধ। টেকনলেজির যুদ্ধ। মাউসের যুদ্ধ।“ কপালের কাছে ঝুলে থাকা চুলটা সরালো আতিফ।
“চাণক্যর একটা কথা আছে, ‘যা বল প্রয়োগে অর্জন সম্ভব নয় তা ধোঁকা দিয়ে সিদ্ধ করা যায়, বিষাক্ত গোখরো সাপও কাক আর সোনার হারের ফাঁদে পরাজিত হয়।’ সুতরাং যেখানে সোজা আঙ্গুলেই ঘি উঠে যাবে, সেখানে খামোখা আঙুল বাঁকাতে যাবে কেন? শুধু টোপ ফেলে রাখো, শিকার ঠিক আসবেই।“ চায়ের কাপটা টি-টেবিলে আলতো করে রাখলেন গাফফার খাঁ।
“হুজুর, একটা কথা ছিল।“ মাথা চুলকোয় আতিফ।
“কী কথা, আতিফ, বলে ফেলো, মাগরিবের সময় হয়ে এলো।“ দেওয়ালে টাঙ্গানো নকশাটানা ঢাউস ঘড়িটার দিকে চোখ ফেললেন গাফফার খাঁ।
“কায়রাপরীর টংকীর অপারেশনটা আমি নিজে হাতে করতে চাই।“ চোখ লাল করে উঠল আতিফ। তার বুকের সিনা ফুলে উঠল।
“অত উতলা হওয়ার এখনই কিছু হয়নি, আতিফ। এখনও ঢের সময় পড়ে। সামনে বহুত কাজ বাকি। তুমি আমাদের একটা অ্যাসেট। তুমি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া ছেলে। টেকনলজিতে তোমার দক্ষ হাত। তোমাকে ব্রেনের যুদ্ধ করতে হবে আতিফ। ওই যে বলে না, যেখানে মাউসের ক্লিকেই কাজ ফিনিশ, সেখানে বারুদের কী প্রয়োজন। তোমার ব্রেন আমাদের এই জেহাদে একটা শক্তিশালী সম্বল। সেটা হেলাফেলায় এত দ্রুত আমরা হারাতে চাই না, আতিফ। একটা ক্ষুরধার ব্রেন হাজার বন্দুকের থেকেও শক্তিশালী। তুমি আমাদের ‘ব্রেনমিসাইল’, আতিফ।“

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১

এসএন 

Header Ad

থাই প্রধানমন্ত্রীর গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে শেখ হাসিনা

ছবি: সংগৃহীত

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকালে থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গভর্নমেন্ট হাউসে যান তিনি। এ সময় থাই প্রধানমন্ত্রী জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

শুরুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সেখানে থাই কুহ ফাহ বিল্ডিংয়ের সামনের লনে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। এসময় থাইল্যান্ডের সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল কর্তৃক প্রদত্ত গার্ড অব অনার পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে স্রেথা থাভিসিন তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের শেখ হাসিনার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। শেখ হাসিনা পরে সরকারী ভবনের অতিথি বইয়ে স্বাক্ষর করেন।

এ বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করতে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক নথিতে স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে।

সরকারি বাসভবন ত্যাগের আগে শেখ হাসিনা সেখানে আনুষ্ঠানিক মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তার থাই প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে থাইল্যান্ডে ছয় দিনের সরকারি সফর করছেন।

আগুন নেভাতে দেরি হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, ২ ফায়ারম্যান আহত

ছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুরের কাহারোলে পেট্রোল পাম্পে আগুন নেভাতে দেরি হওয়ায় জনতার হামলায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের দুই সদস্য আহত হয়েছেন এবং পানিবাহী একটি ট্রাক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আহতরা হলেন- দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের রেজাউল করিম ও গাড়িচালক মোতালেব হোসেন। আহতদের দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৮টার দিকে দিনাজপুর-পঞ্চগড় মহাসড়কের কাহারোল উপজেলার দশমাইল এলাকায় আরিফ ফিলিং স্টেশনে লরি থেকে রিজার্ভ ট্যাংকে পেট্রোল নামানোর সময় আগুন লাগে। দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়।

আগুন ছড়িয়ে পড়ায় আরও ২টি ট্যাংকে আগুন লেগে পুড়ে যায়। খবর পেয়ে কাহারোল উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে গেলেও মহাসড়কে প্রচণ্ড যানজটে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসতে দেরি করে। তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে সেখানে থাকা ২৫ থেকে ৩০ জন ব্যক্তি লোহার অ্যাঙ্গেল ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে পানি বহনকারী ট্রাকের ইন্সপেক্টর ও চালকসহ দুই সদস্য মারাত্মকভাবে আহত হয়।

খবর পেয়ে কাহারোলের ইউএনও আমিনুল ইসলাম ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তিনি জানান, লরি থেকে পেট্রোল নামানোর সময় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ফায়ারম্যানদের ওপর হামলা চালানোয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

 

পাবনায় অগ্রণী ব্যাংকের ভল্ট থেকে ১০ কোটি টাকা আত্নসাৎ, গ্রেপ্তার ৩

ছবি: সংগৃহীত

পাবনার সাঁথিয়ায় অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার ভল্ট থেকে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে ব্যাংকের প্রধান তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। দিনভর নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে তাদেরকে সাঁথিয়া থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর এলাকার মৃত জান বক্সের ছেলে ও অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার আবু জাফর, সুজানগর দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপক হারুন বিন সালাম এবং বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা গ্রামের মৃত শুশীল চক্রবতীর্র ছেলে ব্যাংকের ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবতী। ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন।

গ্রেপ্তার প্রিন্সিপাল অফিসার আবু জাফর ও ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবতী 

সাঁথিয়া থানা ও অগ্রণী ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে অগ্রণী ব্যাংক রাজশাহী বিভাগীয় ও পাবনা আঞ্চলিক শাখা থেকে পাঁচজন কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে আকস্মিক অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখায় অডিটে আসেন। অডিট শেষে সেখানে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকার আর্থিক অনিয়ম দেখতে পান। পরে ওই অডিট কর্মকর্তারা সাঁথিয়া থানায় অবহিত করলে পুলিশ অভিযুক্ত ওই তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংক পাবনা আঞ্চলিক শাখার উপমহাব্যবস্থাপক রেজাউল শরীফ বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাঁথিয়া থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ব্যাংকের তিন কর্মকর্তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) আদালতে প্রেরণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, অর্থ আত্মসাৎ ও অন্যান্য বিষয়ে দুদক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

সর্বশেষ সংবাদ

থাই প্রধানমন্ত্রীর গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে শেখ হাসিনা
আগুন নেভাতে দেরি হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, ২ ফায়ারম্যান আহত
পাবনায় অগ্রণী ব্যাংকের ভল্ট থেকে ১০ কোটি টাকা আত্নসাৎ, গ্রেপ্তার ৩
মৃত্যুর দু’বছর পর ব্রুনাই থেকে দেশে ফিরছে দুই প্রবাসীর লাশ
৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা চলছে
পরিবারের অমতে বিয়ে, স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
সৌদির যেকোনো ভিসা থাকলেই ওমরাহ পালন করা যাবে
নাটোরে বোনের বৌভাতে গিয়ে একে একে তিন ভাইয়ের মৃত্যু
জনপ্রতি ১২-১৪ লাখ চুক্তিতে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্রশ্নফাঁস, গ্রেপ্তার ৫
কুড়িগ্রামে হিট স্ট্রোকে নারীর মৃত্যু
রবিবার খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শনিবারও চলবে ক্লাস
বাংলাদেশের উন্নতি দেখে এখন লজ্জিত হই: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী
মৌসুমের সর্বোচ্চ ৩৯.২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পুড়ছে নওগাঁ
চেন্নাইয়ের হয়ে খেলা সবসময় স্বপ্ন ছিল: মোস্তাফিজ
বৃষ্টি কামনায় টাঙ্গাইলে ইস্তিস্কার নামাজ আদায়
মোবাইল ইন্টারনেট গতিতে আরও ৬ ধাপ পেছালো বাংলাদেশ
বৃষ্টি কবে হবে, জানাল আবহাওয়া অফিস
এফডিসিতে ইউটিউবার প্রবেশ নিষিদ্ধ চাইলেন অঞ্জনা
অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট বন্ধ ঘোষণা, ক্ষোভে বাসে আগুন দিল শিক্ষার্থীরা
থাইল্যান্ডে হিট স্ট্রোকে ৩০ জনের মৃত্যু