বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩

নেই দেশের নাগরিক

নদীর হলহলে বাতাসে গায়ের সঙ্গে এঁটে পরা তার পরনের শাড়িটা কাশফুলের মতো ফিনফিন করে নড়ছে। পায়ের কাছে গোল হয়ে থাকা পাড়টার তলা দিয়ে নদীর বেহুদ্দে বাতাস ঠেলা দিচ্ছে। অন্ধকার এখনো মাঝরাতে গড়া দেয়নি। চরাচর জুড়ে ঝেঁপে বসে থাকা অন্ধকার এই লোনাজলের নাফ নদীকে যেন দাঁত খুঁচিয়ে খাচ্ছে। নদীও যেন অন্ধকার ফুঁড়ে তার বুকের থলথলে জল আকাশকে দেখাতে পারছে না। অন্ধকারে ঢেকে আছে তার মুখ। যেন জলের নদী নয়, অন্ধকারের নদী। আর সেই অন্ধকারের কালো বুকে শরীর থেকে যাতে রুহু না চলে যেতে পারে, তার জন্যে ছ-জন মানুষ নিজেই আজরাইল হয়ে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন। আসলে যখন বাঁচার আর কিছুই বাকি থাকে না তখন এভাবেই খড়কুটোকে আঁকড়ে বেঁচে থাকতে হয়। তখন শরীরের মুরোদ না থাকলেও, শরীরকে এভাবেই তলোয়ার হতে হয়। মৃত্যুর সামনে ঝাঁপিয়ে পড়ে মরণকে রুখে দিতে হয়।

আরিফা সেই ভয়ংকর রাতেও এভাবে হাঁসুয়া হাতে ঝাঁপিয়ে পড়তে চেয়েছিল, বলেছিল, ‘আমাকে যেতে দাও, আমি একটা খবিষ সেনাকেও তো কোপাতে পারব।’ ঘর থেকে বের হতে দেয়নি মতি। বাইরে থেকে শেকল তুলে দিয়েছিল। কিন্তু আরিফাকে আজ রোখার কেউ নেই। সে মনে জিদ ধরেছে, মাথায় ঘোমটা দিয়ে আর বসে থাকব না। বিপদের মুখে স্বামীকে একা ফেলে, ঘরে ঘোমটা টেনে বসে থাকা মেয়ে সে আজ নয়।

‘একটুও নড়ছে না কেন?’ জলে চোখের ছিপ ফেলে ফিসফিস করল মতি।
‘ব্যাটা চালাক মাল। ঘাপটি মেরে আছে।’ ঠোঁট মিহি করে নড়ে উঠল নুহুর।
‘তাই বলে, শ্বাস নেওয়ার জন্যে পেটও নড়বে না!’
‘পানির কুমির হল পানির বাঘ, ব্যাটা চালাক ঘাগু, দোম মেরে থাকতে পারে।’
‘মরা কুমির না তো?’
‘তুমি কি যে বল না মতিভাই, কুমির শিকার দেখলে অমন ভোল করে।’ কুমির বিশেষজ্ঞের মতো বলল নুহু।
বলতে বলতে ‘ঘক’ করে নৌকোর কাণায় এসে একটা জোর গুঁতো খেল কালো জিনিসটা। ‘কচ’ করে বল্লমটা ভেঙে দিল মতি। ‘ভুষ’ করে ঢুকে গেল সূচালো আগাটা। যেন গোবড়ের সারের গাদায় বল্লম মারল মতি। এত নরম! পচা কিছু নাকি! মাথা ঠক করল মতির।
‘লাশ গো!’ হাফ ছেড়ে উঠল নুহু। ভাবল, এ ফাড়া বাঁচা গেল। তাজা কুমির তো নয়। মড়া কিছু একটা।
‘একটা না এক গাদা!’ চোখ কপালে উঠল মতির। ‘এক গাদা!’ ভ্রূ টান হয়ে গেল নুহুরও। আরিফা চোখে মুখে আতঙ্ক নিয়ে বলল, ‘ফুলে একেবারে ঢোল হয়ে গেছ গো!’ ততক্ষণে সে তার খড়গ হাতটা কোমরের কাছে নামিয়ে এনেছে। রণংদেহী ভাবটা আবারও হাতা-কুন্তির গৃহিণী হয়ে এসেছে।

‘দেখো, দেখো, লাশও কীভাবে একে অপরকে আঁকড়ে ধরে আছে!’ নুহুর চোখে তখন দুনিয়ার বিস্ময়। তারপর মতিকে গলা লম্বা করে মুখ বাড়িয়ে লাশগুলোকে দেখতে দেখে, নুহু জিজ্ঞেস করল, ‘কাউকে চিনতে পারছ?’
‘না, অন্ধকারে কিচ্ছু বোঝা যাচ্ছে না। তবে গোটা চারেক লাশ আছে বলে মনে হচ্ছে।’ অন্ধকারে টিপ্পির মতো মতির চোখের মণিদুটো জ্বলজ্বল করে উঠল।
‘লতিফারা কেউ আছে আবা?’ ছইএর ভেতর থেকে কথাটা পটবাড়ি খেয়ে ভেসে এল। শুধু কথা নয়, মনের আকুতি হালেমার। একটা খোঁজ। একটা হদিশ। একটা আপনজনের বেঁচে থাকা না বেঁচে থাকার খবর। নুহুরা কেউই মা’র কথা কান করল না। মতি বল্লমের গুঁতো দিয়ে লাশগুলোকে একবার ওলটানোর চেষ্টা করল। লাশগুলো যেই উল্টে গেল, অমনি ‘ভক’ করে একটা বিটকেল গন্ধ নাকে এসে লাগল। ‘ওয়াক’ করে উঠল আরিফা। তারপর আচানক সে স্বামীর ওপর খচে উঠল, ‘অ কী করছ? লাশকে আঘাত করলে গুনাহ হবে। জানো না?’
‘আমি কি জানি, এগুলো লাশ? আমি কুমির বলেই বল্লম ছুড়েছি।’ চোখ গরম করল মতি। চারটে মৃত দেহ জড়িয়ে পেঁচিয়ে লাশের একটা গাঁট বাঁধা। মনে হয়, একই পরিবারের লোক। মেরে লাশগুলোকে দড়ি দিয়ে বেঁধে এই নাফ নদীতে ফেলে দিয়েছে শত্রুরা। নাফ নদী যেন লাশের নদী। রক্ত মাখা ফোরাত নদী। এত সুন্দর নীল রঙের নদীটা রক্তে লাল হয়ে উঠেছে! নদী কি এ যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছে? নদী তো জীবন গড়ে। জীবন বানায়। অথচ আজ নাফ নদী যেন রাক্ষুসে মানুষ খেকো নদী। মানুষের মরা দেহ বয়ে নিয়ে বেড়ানো নদী। এই নদীতেই ডালা ডালা লাশ ভেসে বেড়াতে দেখে মানুষে গাল পাড়ে, ‘খাইকুন্নি নদীর কি এত মানুষ খেয়ে পেট ভরে না?’ নদীর কি বা দোষ। নদীকে ভিলেন বানায় মানুষ। মানুষ খেকো বানায় মানুষ। এই নাফ নদী আছে বলেই তো এতদিন জাফররা পুরুষানুক্রমে আবাদ করে এসেছেন? নদীর উপকূলের পলিজমিতে ফলিয়ে এসেছেন ফসল। লকলক করে উঠেছে ধান। পাট। আবাদি জমি জুড়ে ফসলের ঘ্রাণ। মাটির সোঁদা গন্ধ। রূপালি বাতাস। নদীর জলে কোছা ভরে ধরেছেন মাছ। নদী শুধু নদী থাকেনি, সংসারের হেঁসেলের রগ রক্ত হয়ে উঠেছে। বুকে দিয়েছে বেঁচে থাকার শ্বাস। সেই নদীই যেন আজ তাদের গিলে খাওয়ার জন্যে ছো মেরে আছে! সাপের মতো এঁকেবেঁকে গেছে নদীটা। তাদের ফেলে আসা আরাকান পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারের কাছে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। ঊনচল্লিশ মাইল দীর্ঘ এই নাফ নদীটা আজ জাফর-হালেমাদের মতো হাজার হাজার রোহিঙ্গাদের ‘উঠ বললে চট বগলে’র দেশ। তাদের বসতভিটে। হেঁসেলবাড়ি। ইহকালের ঠিকানা। যদিও এ দেশ যেকোনো সময় মৃত্যু উপত্যকা হয়ে উঠতে পারে! সবদিকেই ওত পেতে আছে বিপদ। অথচ এ নদী সৌন্দর্যে টইটম্বুর। হালেমার যুবতী বয়সের নিটোল শরীরের মতো তার গড়ন। নদী যেখান থেকে উৎপন্ন হয়েছে, সেই আরাকান পাহাড়ের বুকে রয়েছে কুলকুল ঝর্ণা। সে ঝর্ণার ডাক বড়ই মায়াবী। যেন বেহেশতের ‘কাফুর’ ঝর্ণা। এর জলও সুঘ্রাণ আর সুশীতল। অরণ্যের নিস্তব্ধতায় এই কুলকুল শব্দ যেন কোনো অরণ্য-পরির হৃদয়ের ডাক। তার সামনে মন খুলে দাঁড়ালে এক অনাবিল আহ্লাদে হৃদয় ভরে যায়। বাদামী রঙের ক্ষয়াটে পাহাড়টাকে ছেয়ে আছে অসংখ্য গাছ গাছালি। পাইন, দেবদারু। ইউক্যালিপটাসের জঙ্গল। এখান থেকেই, পাহাড়ের ঝুঁটি থেকে ঝিরঝির করে উৎপন্ন হয়ে বয়ে এসেছে নাফ নদী। নদীর মাথায় মায়ানমার আর পায়ে বাংলাদেশ। জাফর বলতেন, ‘নদী আমাদের মাথায় করে রেখেছ গো।‘

দাঁড় টেনে নৌকোটাকে আলতো করে ডানে কাত করে পাশ কাটিয়ে নিল নুহু। পচা লাশের গাদাটা জলের ঠেলা খেতে খেতে ছিপ ছিপ করে বঙ্গোপসাগরের দিকে চলে গেল। নুহু চোখ ফেড়ে দেখল, লাশগুলো বুঁদবুঁদ তুলতে তুলতে ভেসে যাচ্ছে। আচানক তার ভেতরটা ধড়াক করে উঠল! লতিফা আর রফিকও কি এভাবেই জলে ভেসে ভেসে চলে গেছে! তাদের মরা গায়ে কি এভাবেই পোকা বাসা বেঁধেছিল! মা বেটার শরীরে কি এভাবেই জলের বুঁদবুঁদ ফেনা পাকিয়ে উঠেছিল! বউ ছেলের কথা মনে হতেই হাউমাউ করে উঠল নুহু। অন্ধকার নদীর বুকে এক তাগড়া পুরুষের বুক ফাটা আর্তনাদ অন্ধকার ফুঁড়ে যেন আসমানের আরশে নিশ্চিন্তে বসে থাকা মহান আল্লাহপাককে নাড়িয়ে দিচ্ছে। কান্নার আর্তচিৎকার যেন বলছে, হে আল্লাহ, আর সহ্য করতে পারছি নে। এবার আমাকেও তুলে নাও। তোমার দেওয়া এই রক্ত-মাংস, হাড়-কলিজা তুমি ফিরিয়ে নাও। তোমার আজরাইলকে বলো, যেন এখনি এসে এই হাড়-মাংসের খোল থেকে রুহুটা কবুজ করে নিয়ে যায়। তোমার জান-মাল তুমি ফিরিয়ে নাও খোদা। যেদিন লতিফা আর রফিককে ওরা দংখালীর হাট থেকে তুলে নিয়ে গেল, সেদিন থেকেই নুহু আধখানা মরে গেছে। সে কেমন যেন মনমরা আর খটখটে মেজাজের হয়ে থাকে। কাদামাটির মনটা এখন পোড়া পিতল। আতিপাতি কোনো কিছু একটা সহ্য না হলেই হুট করে তেতে ওঠে। অল্পেই মাথা বিগড়ে যায়। আপনজন ছেড়ে চলে গেলে, মানুষের হৃদয় যে এভাবেই কাঁচের মতো ভেঙে তছনছ হয়ে যায়। সে হৃদয়ে শুধু দলা পাকিয়ে থাকে কষ্ট আর যন্ত্রণা। আপনজন মরার ঘা কখনই শুকোই না। এট্টুআট্টু কষ্টের ছোঁয়া পেলেই মুহূর্তে দ্গদ্গে হয়ে ওঠে। নুহুর এখন এক ঠেঙে জীবন। তার ক্ষতবিক্ষত জীবনটা আধমরে একটা ‘ঘাটবাড়ি কৌশা’ নৌকার ওপর টিমটিম করছে। কান্নার স্বর আচমকা আকাশ ফাটিয়ে নুহু ভেসে যাওয়া লাশের গাদাটার দিকে হাত নেড়ে গেংড়িয়ে উঠল, ‘রফিক, ওই রফিক, তোর বাপটাকে একা ফেলে কোথায় যাচ্ছিস? ফিরে আয় খোকা, ফিরে আয় আমার কোলে, তোদেরকে ছাড়া আমি আর একদণ্ডও থাকতে পারছি না। রফিক রফিক………!’

খড়বড় করে নৌকোর পাটার ওপর দৌড়তে লাগল নুহু। আরিফা খপ করে তার হাত খামচে ধরল। তা নাহলে, পা হড়কে নুহু নদীতে পড়ে যেত। নুহু ভুশভুশে মাটির মূর্তির মতো হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল। তার শরীরের সব কলকব্জা যেন আলগা হয়ে গেল। সে মাঝ নৌকোয় ভাবি আরিফার কোলে বাচ্চাশিশুর মতো হাউমাউ করে কেঁদে উঠল, ‘ও ভাবি গ, আমার রফিক………!’ নুহুর গোঙানি শুনে জাফর আধোস্বরে বলে উঠলেন, ‘ম আ ট ই’। অমনি খ্যাঁক উঠলেন হালেমা, ‘হু, মাটিই তো? সব মাটি হয়ে গেল! জানজীবন, ঘরদোর, হেঁসেল-গোহাল সব মাটিই তো হয়ে গেল! এখন শুধু এই অনাহারের শরীরটার হাড় মাংস কটা মাটি হলেই বাঁচি।’ জাফর কি তার বিহেতি বউর কথা শুনতে পেলেন? শুনতে পেলে নিশ্চয় বলতেন, ‘মাটি আর পেলাম কই, সবই তো পানি। পানি আর পানি। মরে সব পানি হয়ে যাবে।‘ জাফর আবারও ‘ম আ ট ই’ করে উঠলেন। হালেমা এবার তিড়বিড় করে উঠলেন, ‘চুপ করো তো। মাটি! তোমার স্বাদ তো বড় কম নয়, মাটিতে শুবা? মাটি মাঙনা বুঝি? মাটিতে মাথা রেখে শোয়ার খোয়াইস আর পূরণ হবে না। জান থেকে মাটির ভরসা ছেড়ে দাও। পানি নাও। পানি। জান ভরে পানি নাও। এজন্মে আমাদের কপালে আল্লা আর মাটি লিখে থয়নি। পানিতেই আমাদের পচে পচে মরতে হবে। পানিই হবে আমাদের কবর।’

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১

আরএ/

ব্যাংককের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী

ফাইল ছবি

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে ব্যাংককের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১০টার পর বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তিনি রওনা হন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব গুলশাহানা ঊর্মি ও স্পিচরাইটার মো. নজরুল ইসলাম।

মো. নজরুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেছে। স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে ব্যাংককের ডন মুয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানটি অবতরণের কথা।

প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারিতে বর্তমান সরকার গঠনের পর এটিই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর। ব্যাংককে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানাবেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিন। বিমানবন্দরে বাংলাদেশের সরকার প্রধানকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হবে। ওইদিন থাইল্যান্ডের গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে দুই প্রধানমন্ত্রীর।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছয়দিনের এ সফর উপলক্ষে গত সোমবার সংবাদ সম্মেলন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সেখানে তিনি বলেন, এই সফর উভয় পক্ষের জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, এতে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের (বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড) মধ্যে সহযোগিতার নতুন জানালা উন্মোচিত হবে।

সফরকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করবেন এবং জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেবেন।

এফডিসিতে সাংবাদিক-শিল্পীদের মারামারি, কী ঘটেছিল?

ছবি: সংগৃহীত

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (এফডিসি) সাংবাদিকদের সঙ্গে চলচ্চিত্র শিল্পীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে । এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন।

চলচ্চিত্র শিল্পী ও সাংবাদিকরা একে অপরের পরিপূরক। কিন্তু এফডিসিতে ঘটে যাওয়া ঘটনায় যেন সেই বিষয়টা একেবারেই হারিয়ে গেছে। ইতোমধ্যে সাংবাদিকদের ওপর শিল্পীদের এমন হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন সবাই। পাশাপাশি অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তিরও দাবি জানান অনেকে। তবে সেদিন আসলে কী ঘটেছিল এফডিসিতে?

জানা গেছে, একজন ইউটিউবারের সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল অভিনেতা শিবা শানুর। শপথগ্রহণ শেষ হলে ইউটিউবারকে ডেকে নেন তিনি। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে সাংবাদিকরা হাজির হলে তাদের সঙ্গেও শুরু হয় বাগবিতণ্ডা।

পরে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে অনেকেই জানান, হামলার মূলহোতা খল অভিনেতা শিবা শানু। এরপর জয় চৌধুরী ও আলেকজান্ডার বো হামলা চালান। হামলার একপর্যায়ে এফডিসির ফাইট ডিরেক্টরেরাও হামলায় অংশ নেন।

এ ঘটনায় জয় চৌধুরী জানান, মূলত একসময়ের চিত্রনায়িকা ময়ূরীর মেয়ের সাক্ষাৎকার চাওয়াতেই এই মারামারির সূত্রপাত ঘটেছে। শপথ শেষে কার্যকরী পরিষদের মিটিং ছিল। আমরা সবাই তখন মিটিং করছি। এ মুহূর্তে ময়ূরী আপু তার মেয়েকে নিয়ে এফডিসিতে আসেন। কিন্তু বাইরে লোকজনের জন্য ভেতরে ঢুকতে পারছিলেন না তিনি।

এমন সময় দু-তিনজন ইউটিউবার ময়ূরী আপুর মেয়ের হাত ধরে টান দিয়ে বলেন, তুমি একটা ইন্টারভিউ দিয়ে যাও। বারবার তারা এই আবদার করছিলেন। এতে ময়ূরী আপু রেগে গিয়ে বলেন, ও তো সেলিব্রিটি না, ওর ইন্টারভিউ দিয়ে কী করবেন?

পরে এটা দেখে শিবা শানু ভাই ইউটিউবারদের স্টাডি রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। এই কথার একপর্যায়ে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। রীতিমতো হাতাহাতি হয়। তারা শিবা শানু ভাইয়ের গায়ে হাত তুলেছেন। এবং তারা বাইরে দৌড়ে গিয়ে বলছেন, টিভি চ্যানেলের সবার গায়ে হাত দিয়েছে। পরে গণ্ডগোলটা সৃষ্টি হয়েছে। আর এতেই এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।

এদিন বিকেলে ২০২৪-২৬ এর শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত কমিটি শপথ গ্রহণ করে। সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগরকে শপথ বাক্য পাঠ করান প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু। এরপর বাকি সদস্যরা মিশা সওদাগরের নেতৃত্বে শপথ গ্রহণ করেন।

শিল্পী সমিতির ২০২৪-২০২৬ মেয়াদের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে মিশা-ডিপজল পরিষদ। সভাপতি পদে মিশা সওদাগর পেয়েছেন ২৬৫ ভোট। নিকটতম প্রার্থী মাহমুদ কলি পেয়েছেন ১৭০ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে মনোয়ার হোসেন ডিপজল পেয়েছেন ২২৫ ভোট। একই পদে ২০৯ ভোট পেয়েছেন নিপুণ আক্তার। মাত্র ১৭ ভোটে পরাজিত হয়েছেন গতবারের এই সাধারণ সম্পাদক।

 

তীব্র গরমের মধ্যে ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়াল লোডশেডিং

ফাইল ছবি

তীব্র দাবদাহে পুড়ছে গোটা দেশ। আর এর মধ্যে ক্রমবর্ধমান চাহিদার বিপরীতে বিদ্যুৎ সরবরাহে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দেশে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ১ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে এবারই প্রথম বিদ্যুতের ঘাটতি এত বেশি দেখা দিয়েছে। সোমবার সর্বোচ্চ ৯৬৬ মেগাওয়াট লোডশেডিং রেকর্ড করা হয়। অথচ এদিন ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে নতুন রেকর্ড গড়ে।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ন্যাশনাল লোড ডিসপ্যাচ সেন্টারের (এনএলডিসি) তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় দেশে চাহিদা ছিল ১৫ হাজার ২০০ মেগাওয়াট, তখন লোডশেডিং ছিল ১ হাজার ৪৯ মেগাওয়াট।

অন্যদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চাহিদার পূর্বাভাস ছিল ১৬ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট এবং সরবরাহের পূর্বাভাস ছিল ১৬ হাজার ৫৩০ মেগাওয়াট।

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য বড় শহরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট এড়াতে গিয়ে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে।

বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া সংবাদে জানা যায়, এই গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লোডশেডিংয়ের মাত্রা গ্রামীণ মানুষের দুর্দশা আরও বাড়িয়ে তুলছে।

এদিকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোবাংলার সরকারি তথ্যে দেখা যায়, ৩ হাজার ৭৬০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে দেশে গ্যাস উৎপাদন হয়েছে দৈনিক ৩ হাজার ৫৬ মিলিয়ন ঘনফুট।

এতে দেখা যায়, বেশ কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র, বিশেষ করে যেগুলো প্রাথমিক জ্বালানি হিসেবে গ্যাস ব্যবহার করে, গ্যাস সংকটের কারণে সেগুলোতে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।

বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ২ হাজার ৩১৬ দশমিক ৯ এমএমসিএফডি চাহিদার বিপরীতে ১ হাজার ৩৪৯ দশমিক ৯ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ পেয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

ব্যাংককের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী
এফডিসিতে সাংবাদিক-শিল্পীদের মারামারি, কী ঘটেছিল?
তীব্র গরমের মধ্যে ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়াল লোডশেডিং
নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় বিএনপির আরও এক নেতা বহিষ্কার
যেসব এলাকায় গ্যাস থাকবে না আজ
ছয় দিনের সফরে আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
কাতার ও বাংলাদেশের মধ্যে সামুদ্রিক পরিবহন সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর
পুলিশ সদস্যদের পদমর্যাদাভিত্তিক প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন
গোবিন্দগঞ্জে ১৪ জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা
রাজধানীতে ছাদ থেকে লাফিয়ে ট্রান্সজেন্ডার নারীর আত্মহত্যা
ভাড়া বাড়াইনি, শুধু ভর্তুকি প্রত্যাহার করেছি: রেলমন্ত্রী
নবাবগঞ্জে জাল দলিলে জমি দখলের চেষ্টা, সাবেক ও বতর্মান চেয়ারম্যান জেলহাজতে
ঢাকা ছাড়লেন কাতারের আমির, গেলেন নেপাল
নওগাঁর মান্দায় বিদ্যুতের আগুনে পুড়ল ৮ বসতবাড়ি
ইন্টারনেটের ধীরগতি নিয়ে দুঃসংবাদ, এক মাস চলতে পারে ভোগান্তি
উপজেলা নির্বাচন: প্রথম ধাপে বিনা ভোটে ২৬ প্রার্থী নির্বাচিত
'রূপান্তর' বিতর্ক: জোভান-মাহিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই চুয়েট শিক্ষার্থীর পরিবার পাবে ১০ লাখ টাকা
সাঘাটায় নির্বাচনের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন টিটু
এফডিসিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, চরম উত্তেজনা