শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৮

নেই দেশের নাগরিক

“এই আরাকানে বহু বছর ধরে নানান ভাষা, নানান ধর্মের মানুষ একসঙ্গে বসবাস করে আসছেন। একসময় সৌভ্রাতৃত্ব আর সম্প্রীতির পীঠস্থান ছিল এই আরাকান। পদ্মাবতী মহাকাব্যে মহাকবি আলাওল বলেছেন, ‘নানা দেশি নানা লোক শুনিয়া রোসাং ভোগ আইসন্ত নৃপ ছায়াতলে। আরবি, মিশরি, সামি, তুর্কি, হাবসি ও রুমি, খোরসানি, উজবেগি সব। লাহোরি, মুলতানি, সিন্ধি, কাশ্মিরি, দক্ষিণী, হিন্দি, কামরূপী আর বঙ্গদেশি। বহু শেখ, সৈয়দজাদা, মোগল, পাঠান যুদ্ধা, রাজপুত হিন্দু নানাজাতি।‘ এটাই ছিল আরাকানের ভিত। আজ বর্বররা এসে এসব ধারণাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে!” গড়গড় করে এক নিশ্বাসে টানা ঠুটস্থ বলে আফসোসও করলেন ইয়াসিন মাস্টার। ইতিহাসের পাঠ যে তার গুলে খাওয়া আছে তার কিছুটা আঁচ পেল নুহু মতিরা।

“আমাদের দংখালী থেকে তো আগে কত রোহিঙ্গা মন্ত্রীটন্ত্রী হয়েছেন, তাহলে আজ কেন আমরা ব্রাত্য?” প্রশ্ন করল মতি।
“শুধু কী মন্ত্রী, মিয়ানমারের স্বাধীনতা আন্দোলনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল রোহিঙ্গাদের। বার্মার জাতির পিতা আং সানের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক সহযোগী ছিলেন আব্দুল রাজ্জাক। রাজ্জাক তখন বার্মা মুসলিম লিগের সভাপতি ছিলেন। জেনারেল আং সানের গঠিত বার্মার স্বাধীনতা পূর্ববর্তী অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রীসভার শিক্ষা ও পরিকল্পনামন্ত্রী ছিলেন রাজ্জাক। ১৯৪৭ সালের ১৯ জুলাই জেনারেল আং সানের সঙ্গে যে ছয়জন মন্ত্রী খুন হয়েছিলেন, তাদের অন্যতম ছিলেন রাজ্জাক।“
“এই ১৯ জুলাই-ই তো শহীদ দিবস হিসেবে পালিত হয়?”

“হ্যাঁ।“ মাথা হেলালেন ইয়াসিন মাস্টার। তারপর আরও আবেগী হয়ে বললেন, “শুধু কী তাই? ব্রিটিশ অধীনতার সময় বার্মার জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রভূমি ছিল রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়। সে সময় রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করত অল বার্মা স্টুডেন্ট ইউনিয়ন আর রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রছাত্রী সংসদ যাকে সংক্ষেপে বলা হতো আর ইউ এস ইউ। আর ইউ এস ইউ প্রতিষ্ঠার বছরই সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এম এ রাশিদ। ওই সময় আং সানের প্রধান রাজনৈতিক সহযোদ্ধা হয়ে ওঠেন এম এ রাশিদ আর উ নু। রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ে রাশিদ, আং সান ও উ নু ছিলেন তিন প্রাণের বন্ধু। এম এ রাশিদকে আং সান বলতেন ‘রাশিদভাই’।“
“শুনেছি, তিনি নাকি দেশের আইন লিখেছিলেন?”
“হ্যাঁ, তিনি একজন বিচক্ষণ পণ্ডিত ছিলেন। ১৯৪৭ সালে বার্মার সংবিধানের অন্যতম খসড়াকারী ছিলেন এই রাশিদ। পরবর্তীকালে তিনি দেশের শ্রমমন্ত্রী হয়েছিলেন। আং সান, উ নু, রাজ্জাক, রাশিদ প্রমুখের বন্ধুত্ব স্বাধীনতার ঊষালগ্নে বার্মায় ‘বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য’র যে সম্ভাবনা তৈরি করেছিল, তার ভিত্তিতেই ১৯৪৭-এর ফেব্রুয়ারিতে শান স্টেইটের পাংলংয়ে ঐতিহাসিক জাতি সম্মেলন আহুত হয়েছিল এবং সেখানে আং সান বলেছিলেন, ‘বার্মা হবে সব জাতির একটি ইউনিয়ন, যেখানে বর্মণরা এক কায়েত পেলে অন্যরাও এক কায়েত পাবে।’“

“সেসব আজ কোথায় গেল!”
“এই ইতিহাসকে সেনার বুলডোজারে পিষে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে।“
“আরে আমরাই তো সেদিন ভোট দিয়ে এমপি বানালাম। আমাদের বাপ-দাদারা সেই স্বাধীনতার পর থেকে ভোট দিয়ে আসছে, সেটা কোন জাতিসত্তার পরিচয়ে? এসব কী করে ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে দেবেন?”
“১৯৪৮ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত সুলতান মাহমুদ, আবুল বাশার, আব্দুল গাফফার, জোহরা বেগম প্রমুখ আরাকানের মুসলিম প্রধান এলাকাগুলো থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে দেশের পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্ব করেছেন বছরের পর বছর, মন্ত্রীও হয়েছেন, সেটা কী করে সম্ভব হলো? এঁরা যদি বহিরাগতই হবেন, এঁরা যদি এদেশের নাগরিক নাই-ই হবেন, তাহলে মন্ত্রী-এমপি হলেন কীভাবে?”
“নব্বইয়ের ভোটও তো আমরা দিলাম।“
“হ্যাঁ, সে ভোট তো আমিও দিয়েছি। সারা দুনিয়া জানে, ১৯৯০ এ যখন সামরিক বাহিনীর অধীনেই বার্মায় বহুদিন পর প্রথমবারের মতো বহুদলীয় নির্বাচন হলো, যে নির্বাচনে আং সান সু কি-র দল নির্বাচিত হয়েও সরকার গঠন করতে পারেনি, তখন বুথিডং-১ আসন থেকে শামসুল আনোয়ার, বুথিডং-২ থেকে মোহম্মদ নুর আহমেদ, মংডু-১ থেকে ইব্রাহিম, মংডু-২ থেকে ফজল আহমেদ প্রমুখ রোহিঙ্গারা কীভাবে উত্তর আরাকান থেকে পার্লামেন্টে নির্বাচিত হতে পারলেন? কীভাবে তখন আরাকানের রোহিঙ্গারা আটটি আসনে নিজস্ব রাজনৈতিক দল ‘ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস পার্টি’ থেকেই প্রার্থী হতে অনুমতি পেয়েছিলেন? আইন অনুযায়ী এই নির্বাচনে ‘বিদেশি’ ছাড়া সবাইকেই ভোট দিতে দেওয়া হয়েছিল। তাহলে বুথিডং আর মংডুর এই রোহিঙ্গারা কাদের ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন? নিশ্চয় আমাদের ভোটে। তাহলে আমরা কী করে হুট করে ভিনদেশি হয়ে গেলাম?”

চোখমুখ লাল হয়ে উঠল ইয়াসিন মাস্টারের। তিনি এমন করে খুঁটিয়ে ইতিহাস বলছেন, যেন দেশের শেকড় থেকে শেকড়ে তাদের জাতিসত্তার যে জড় পোঁতা রয়েছে, সেকথা এই আকাশ এই বাতাস এই নদীকে চিৎকার করে শোনাচ্ছেন। যেন বুক চিরে দেখাতে চাইছেন, হে দেশ এই দ্যাখো, আমরা তোমারই সন্তান, তোমারই বীজ। তবু কেন আমাদের গলাধাক্কা দিচ্ছ? জোড়া নৌকাদুটো ধিকধিক করে এগিয়ে চলেছে। ক্রমশ পাতলা হচ্ছে রাত। পুব আকাশ তোড়জোড় করছে, আবারও একটা নতুন দিন প্রসব করার জন্য। সে ইঙ্গিত পেয়েই দিগন্ত আনন্দে রঙ মাখার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে রাতের পোশাক খুলছে উথাল নদী।

“আচ্ছা, বলতে পারেন, ‘আরাকান’ নাম হুট করে বদলে দিয়ে ‘রাখাইন’ রাখা হলো কেন? ‘আরাকান’ নামটা তো ভালোই ছিল?” জানতে চাইল নুহু। ইয়াসিন মাস্টার এবার কণ্ঠ ভারী করে বললেন, “এসবই তো সত্য ইতিহাসকে কবর দেওয়ার চেষ্টা। যেন সত্যিকারের ইতিহাসের নামগন্ধ না থাকে। ১৯৮১ সালে আমাদের দেশের সামরিক শাসনকর্তারা এই নাম বদল করেন। এর পেছনে তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল, এটা বৌদ্ধ রাখাইন সম্প্রদায়ের দেশ, রোহিঙ্গা মুসলমানদের নয়। ছিঃ কী জঘন্য চক্রান্ত!”

নদীতে এখন মৃদুমন্দ স্রোত। সেরকম কোনো উথালপাথাল নেই। যেন নদীর মুখ ভার। রাগে অভিমানে মুক ও বধির হয়ে গেছে। ভোরের ঝুঝকি একটু একটু করে কাটছে। যেন গেঁড়ে বসে থাকা ঝুঝকি নতুন দিন কে আস্তে আস্তে কোল ছেড়ে দিচ্ছে। নতুনকে স্বাগত জানানোর জন্যে পুরাতনের গর্ভে লীন হয়ে যাচ্ছে। ইয়াসিন মাস্টার খাড়া হয়ে দাঁড়ালেন। ভারী পা টিপে টিপে নৌকার মাথার দিকে এগিয়ে গেলেন। একেবারে কাণায় গিয়ে থির হয়ে দাঁড়ালেন। পরনের হাফ হাতা নীলচে পাঞ্জাবিটা বাতাসে ফিনফিন করে উড়ছে।
পাতলা পাঞ্জাবিটার ভেতরে মৃত্যভয়ে শুকিয়ে যাওয়া চামড়াটা শরীরটা নড়বড়ে সরু বাঁশের খুঁটির মতো ল্যাকপ্যাক করছে। ঝুঝকি ফুঁড়ে তাকালেন। ফেলে আসা দেশ দেখা যাচ্ছে না। অনেক চেষ্টা করলেন, জন্মভিটের এক চিলতে মুখ দেখার, কিন্তু নাহ, বহুদূর চলে গেছে সে ভিটেমাটি! দৃষ্টির নাগালের বাইরে। ভেতরটা ফুঁপিয়ে উঠল ইয়াসিন মাস্টারের, আমার সাধের জন্মভিটে এভাবেই পর হয়ে গেল! আর কী কোনোদিনও সেখানে আমাদের শিশুরা কিতকিত খেলবে না! আর কী কোনোদিনও ফাতাংজার হাটে লুইংভাইয়ের চায়ের দোকানে বসে সিগারেট ফুঁকব না! খ মিং আমাদের বাড়িতে পাটা খুঁটতে শীলখুঁটনি নিয়ে আসবে না! আমাদের ধানিজমিটা চুঁইয়ে উ খন দের ভুঁইয়ে নামবে না বাতালের জল! তবে কী পাঠ্যবইয়ে পড়া কথাটা আজ মিথ্যে, এক আকাশ হবে সব মানুষের ছাদ। মানুষমাত্রই পৃথিবীর সন্তান! হে পৃথিবী, বলো, আমাদের জন্যে কী তোমার এতটুকুও কোল ফাঁকা নেই? চোখ ভিজে আসে ইয়াসিন মাস্টারের।

“ও গো, এদিকে এসো, সাকিবের দাদো কেমন করছে!” ডুকরে উঠল আরিফা। বৈঠা রেখে খড়মড় করে বাঁশের মাঁচার ওপর দিয়ে ছুটে এল নুহু। মতিও ধড়ফড় করে দৌড়ে এল। পেছন থেকে ইয়াসিন মাস্টার জিজ্ঞেস করলেন, “কী হলো?”
“আমার আব্বা মরণাপন্ন! যায় যায় অবস্থা!” ভারী কণ্ঠে জানাল মতি। আরিফা আর হালেমা জাফর আলিকে ধরাধরি করে ছইয়ের ভেতর থেকে কিছুটা সরিয়ে এনে নৌকার কানার কাছে শুইয়ে, মাথায় জল ঢালছে। জ্ঞান নেই। মতি হাতের কব্জি ধরে হৃদস্পন্দন মাপল। নাকের কাছে আঙুল নিয়ে গিয়ে আঁচ করল শ্বাস-প্রশ্বাসের আনাগোনা।
“কী বুঝছ ভাই!” চোখ ছল ছল নুহুর।
“জ্ঞান কি আছে?” প্রশ্ন করলেন ইয়াসিন মাস্টার। তিনিও কথাটা শোনার সঙ্গে সঙ্গে নৌকার খোল ডিঙিয়ে নুহুদের নৌকোয় চলে এসেছেন।
“ঠিক বুঝতে পারছি না। তবে ধুকধুক করছে মনে হচ্ছে!” মতির গলা খোনা হয়ে উঠল। “কই, দেখি, আমাকে দেখতে দিন”। পিঠ কুঁজো করে ঘাড় নিচু করলেন ইয়াসিন মাস্টার। ডান দিককার কানটা খাড়া করে জাফরের খোলা বুকে পেতে দিলেন। ইয়াসিন মাস্টারের চোখ ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠছে! কুঁচকে যাচ্ছে ভ্রূ! তার কায়দা দেখে, সকলে ‘থ’! কারও কোনো চোখের পাতা পড়ছে না। মুখে আঁচল পুরে, মিনমিন করে ফোঁপাচ্ছেন হালেমা। একটা মাছরাঙা ঝপাং করে একটা ছোট্ট মাছ ধরল। থির নদী আচমকা দুলে উঠল। “নাহ, জ্ঞান নেই। অজ্ঞান হয়ে গেছেন!” জাফরের বুকের সাদা চুলের ঝোপ থেকে কান তুলে আফসোস করলেন ইয়াসিন মাস্টার। “তবে জান এখনো যায়নি।” জিইয়ে রাখলেন ক্ষীণ আশা। তারপর ইয়াসিন মাস্টার শূন্য আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন, “কী আর করা যাবে! আল্লাহকে ডাকুন। হেদায়েত দেওয়ার মালিক তো তিনিই।“
“তুমি আমাকে একলা ফেলে কেন চলে যাচ্ছ!” মুখের আঁচল আলগা হয়ে গেল হালেমার। হাউমাউ করে উঠলেন।
“মা, কেঁদে কী হবে, আল্লাহকে ডাক।“ বলেই মতি দুহাত তুলে মোনাজাত ধরল। তার দেখাদেখি বাকিরাও আল্লাহর কাছে হাত তুলল। শূন্য আকাশের নিচে এক চিলতে নৌকার ওপর দুহাত তুলে ঘরছাড়া কতকগুলি মানুষের কাতর আর্তি কি আরশের ওপর বসে থাকা আল্লাহ শুনতে পাচ্ছেন? বান্দার কাঁদনে তার কি হৃদয় কেঁদে উঠছে? তিনিও কি মানুষের এই কষ্টে দু ফোটা চোখের জল ফেলছেন? ডুকরে উঠল মতি, “হে আল্লাহ, তুমি আমাদের পানিতে আগুনে যেখানে ইচ্ছে মিশিয়ে দাও, কিন্তু আমাদের আব্বার জন্যে সাড়ে তিন হাত মাটি রেখ, আব্বার শেষ ইচ্ছে যেন আমরা পূরণ করতে পারি। যতক্ষণ না কোথাও কোনো মাটির খোঁজ পাচ্ছি, আমাদের আব্বাকে তুমি নিও না। তুমি রহম করো। এই ভিটেমাটিহীন নিঃস্ব বান্দাদের দোয়া তুমি কবুল কর।“
“আমিন।“ সমস্বরে বলে উঠলেন ইয়াসিন মাস্টার। হালেমা এবার গলা ছাড়লেন, “ও আল্লাহ গো!”
“হে আল্লাহ, আর কত জান নেবে? এত জান নিয়েও কি তোমার পেট ভরছে না?” ফুঁসে উঠল নুহু। চোখে এতটুকুও জল নেই। শক্ত কাঠ চোখজোড়াতে অভিমানের আস্ফালন। নুহু এই সাতচল্লিশ বছরের জীবনে ঢের মৃত্যু দেখেছে। চোখের সামনে দেখেছে, কীভাবে নরখাদক জল্লাদরা নেকড়ের মতো তার একমাত্র বেটাটাকে দলে পিষে মেরেছে! কীভাবে হিংস্র জানোয়ারের মতো তার বৌটাকে ধর্ষণ করে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেয়েছে! মৃত্যু নুহুর সয়ে গেছে। যন্ত্রণা ঘর বাঁধার জন্যে তার শরীরে আর এতটুকুও জায়গা ফাঁকা নেই। সব যেন বিষিয়ে বিষিয়ে ইট-কাঠ-পাথর হয়ে গেছে! রগ-রক্তহীন একটা খোল! এই খোলই এবার রাগে অভিমানে বেজে উঠল।
“তোমার আজরাইলের চোখ কি আর কাউকে দেখতে পায় না? ঘুরে ফিরে এই জাফর আলিকেই পায়? জাফরের জান কি এতই মিষ্টি? জাফরকে না নিলে কি তোমার জানে শকুন মিলছে না? নাও না, আমাকে নাও, বেটা, বৌ সবাইকেই তো নিয়ে নিয়েছ, আমাকে আর বাকি কেন?”
চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১

এসএন 

 

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ, ডিপজলকে শোকজ

ডিপজল। ছবি: সংগৃহীত

রাত পোহালেই বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এ নিয়ে এফডিসিতে উৎসবের আমেজ বইছে। এরইমধ্যে ডিপজলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন সাদিয়া মির্জা নামে এক অভিনেত্রী।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আমাদেরকে ভিডিও প্রমাণসহ এমন অভিযোগ করেন সাদিয়া মির্জা নামক এক প্রার্থী। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ডিপজলকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে একটি কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছি। এদিকে সঠিক কারণ দর্শাতে না পারলে ডিপজলের প্রার্থিতা বাতিল বলে গণ্য হবে বলে জানান বর্তমান নির্বাচন কমিশনার খসরু।

এছাড়াও যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় ডিপজলের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করার সম্ভাবনা রয়েছে সাধারণ সম্পাদক পদে থাকা নিপুণ আক্তারের।

এ নিয়ে মিশা-ডিপজল প্যানেলের চিত্রনায়ক আলেকজান্ডার বোকে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আমরা এমনটি আভাস পেয়েছি নির্বাচনের আগেই একটি পক্ষ নির্বাচন বাঞ্চালের চেষ্টা করবে। তবে আমরা চাইবো সুষ্ঠ নির্বাচন হোক। এমন অভিযোগ আমরা অন্য প্যানেল থেকেও অনেক পেয়েছি কিন্তু তাতে আমরা গুরুত্ব দেইনি।

তিনি আরও বলেন, ডিপজল ভাই মহৎ মানুষ এমনিতেই দানবীর, সবাইকে টাকা-পয়সা দান করে থাকেন। এটা নিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে বিষয়টি সুখকর হবে না।

তবে এ বিষয় নিয়ে কলি-নিপুণ প্যানেলের কেউ মুখ খোলেননি। কথা বলতে চাননি মিশা-ডিপজল পরিষদের অন্য সদস্যরাও।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৯টায় শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে ভোটগ্রহণ শুরু হবে। দুপুরে বিরতি দিয়ে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চলবে এই ভোট। পরে ভোট গণনা শেষে একইদিন ফলাফল প্রকাশ করা হবে। নির্বাচন উপলেক্ষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশ জোরদার করা হয়েছে।

টাঙ্গাইলে সেরা ওসি হলেন আহসান উল্লাহ্, পেলেন শ্রেষ্ঠ সম্মাননা পুরস্কার

টাঙ্গাইলে সেরা ওসি হলেন আহসান উল্লাহ্। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

মাদক, সন্ত্রাস, বাল্যবিয়ে, ইভটিজিং- জুয়ারোধ, চাঞ্চল্যকর হত্যাকন্ডের দ্রুত সময়ে রহস্য উদ্‌ঘাটন করে আসামিদের গ্রেফতার, অপরাধ দমন এবং সর্বাধিক ওয়ারেন্ট তামিল লক্ষ্য পূরণ করাসহ ভালো কাজের বিশেষ ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ টাঙ্গাইল জেলার মধ্যে আবারও শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মো. আহসান উল্লাহ্। তিনি জেলার ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

এ নিয়ে জেলার মধ্যে চতুর্থবারের মতো সেরা ওসি নির্বাচিত হলেন তিনি। একইসাথে ভূঞাপুর থানাও শ্রেষ্ঠ হয়েছে এবং থানার এসআই, এএসআই ও কনস্টেবলসহ ৯ জন ক্রেস্ট সম্মাননা পেয়েছেন। তার এই অর্জনে উপজেলার সুধীজন, বিভিন্ন সামাজিক সেবামূলক সংগঠনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে জেলা পুলিশের উদ্যোগে পুলিশ লাইন্স মাল্টিপারপাস শেডে আয়োজিত মাসের কল্যাণ সভায় তাকে শ্রেষ্ঠ ওসির সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

এ সময় ওসি আহসান উল্লাহ্’র হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট (পুরস্কার) তুলে দেন জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার (বিপিএম) (অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত)। এতে জেলা পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাসহ জেলার বিভিন্ন থানার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ্ বলেন, জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার মহোদয় (অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) এর দিক-নির্দেশনায় মাদক, সন্ত্রাস, বাল্য বিয়ে, ইভটিজিংরোধ ও চাঞ্চল্যকর হত্যাকন্ডের দ্রুত সময়ে রহস্য উদ্‌ঘাটন ও আসামিদের গ্রেফতারসহ বিশেষ অবদানের জন্য চতুর্থ বার আমাকে শ্রেষ্ঠ ওসি ও ভূঞাপুর থানাকে শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত করা হয়।

ওসি আহসান উল্লাহ্ আরও বলেন- ভূঞাপুর থানার কর্মরত সকল পুলিশ সদস্য এবং উপজেলার সকলের সার্বিক সহযোগিতায় ভূঞাপুর থানার এমন এক সাফল্যময় গৌরব অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এই অর্জন সকলের। তাছাড়া জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি ও থানা নির্বাচিত হওয়ায় আমাদের দায়িত্ববোধ আরও বেড়ে গেল। ভূঞাপুর থানা সকলের জন্য উন্মুক্ত। আগামী দিনগুলোতে আরও ভালো কিছু করতে ভূঞাপুর উপজেলাবাসীর সার্বিক সহযোগিতা সহযোগিতা কামনা করছি।

ক্যাপশন: সম্মাননা ক্রেস্ট গ্রহণ করছেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ্।

দেশে প্রতিদিন সড়কে প্রাণ হারাচ্ছেন ১৬ জনের বেশি

সড়ক দুর্ঘটনা। ফাইল ছবি

দেশে বেড়েই চলেছে সড়ক দুর্ঘটনা। লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। ফরিদপুরে ঈদের পরদিন সড়কে মৃত্যু হয় ১৪ জনের। এই রেশ কাটতে না কাটতেই ঝালকাঠিতে সড়কে প্রাণ ঝরে আরও ১৪ জনের। গত তিন মাসের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রতিদিন সড়কে প্রাণ যাচ্ছে ঝরছে ১৬ জনের বেশি।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ৬৩০টি। এতে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৪৭৭ জনের। আহত হয়েছেন ১ হাজার ৯২০ জন।

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৩৭টি, এতে মৃত্যু হয়েছে ৪০৪ জনের আর আহত হয়েছেন ৫১৪ জন। ফেব্রুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৬৯টি। এতে মারা গেছেন ৫২৩ জন আরও আহত হয়েছেন ৭২২ জন।

মার্চে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে হয় ৬২৪টি। এতে আহত হন ৬৮৪ জন। মারা গেছেন ৫৫০ জন। এপ্রিল মাসের ১৬ দিনে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৬৯টি আর মৃত্যু হয়েছে ২৮৪ জনের। গড়ে প্রতিদিন সড়কে মৃত্যু হচ্ছে ১৬ জনেরও বেশি।

গত ৩ মাসে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেলে, যার সংখ্যা ৫৫৪টি, আর এতে মৃত্যু ৫০৪ জনের। আর সার্বিকভাবে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু চট্টগ্রাম বিভাগে।

বিআরটিএ বলছে, গেল বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় দুর্ঘটনা এবং মৃত্যু দুটোই এবছর প্রথম তিন মাসে বেড়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ, ডিপজলকে শোকজ
টাঙ্গাইলে সেরা ওসি হলেন আহসান উল্লাহ্, পেলেন শ্রেষ্ঠ সম্মাননা পুরস্কার
দেশে প্রতিদিন সড়কে প্রাণ হারাচ্ছেন ১৬ জনের বেশি
টানা তিনদিন চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড, হিট অ্যালার্ট জারি
তীব্র গরমে পশ্চিমবঙ্গে স্কুল ছুটি ঘোষণা
ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘের 'প্রিমিয়াম টিম': সেনাপ্রধান
আগামীকাল ঢাকা মাতাবেন আতিফ আসলাম
এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে আ.লীগের নির্দেশনা
নওগাঁয় শান্ত বাহিনীর শাস্তির দাবিতে ঝাড়ু মিছিল ও মানববন্ধন
বিএনপি এখনও টার্গেটে পৌঁছাতে পারেনি: রিজভী
বিরামপুরে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত
বোতলজাত সয়াবিনের দাম বাড়ল, কমল খোলা তেলের
মুস্তাফিজের বদলে ইংল্যান্ড পেসারকে দলে নিল চেন্নাই!
যে কারণে দুবাইয়ে এমন ভারী বৃষ্টিপাত ও ভয়াবহ বন্যা
গায়েব হয়ে গেল জোভান-মাহির ফেসবুক ফ্যানপেজ!
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরান একাই যথেষ্ট: চীন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ধান শুকানোর জায়গা দখল নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৫০
ইসরায়েলের সঙ্গে গুগলের চুক্তি, প্রতিবাদ করায় চাকরি হারালেন ২৮ কর্মী
আইপিএল থেকে বিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটে ম্যাক্সওয়েল