রবিবার, ৫ মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

‘টুইয়া’ ভ্রমণ তরীর রেস্টুরেন্ট একেবারে নিচের তলায়, বেশ বড় হল ঘর জুড়ে চারটি সারিতে টেবিল চেয়ার পাতা। একসাথে অন্তত দেড়শজনের লাঞ্চ বা ডিনারের ব্যবস্থা এখানে। দেড়টার দিকে রেস্তোরাঁয় ঢুকতে গেলে সুকুমার রায়ের চণ্ডীদাসের খুড়োর মতো কালো স্যুটপরা বেঁটে খাটো টেকো রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার কান পর্যন্ত হাসি বিস্তৃত করে রুম নাম্বার জানতে চাইলেন, তারপরে যে কোনো একটা টেবিল বেছে নিতে বললেন। তখন পর্যন্ত বেশিরভাগ টেবিলই খালি, কাজেই আমরা দেখে শুনে কোণের দিকের জানালার কাছে একটা জায়গা বেছে নিলাম।

প্রবেশ পথের উল্টো দিকের পুরোটা জুড়ে বুফে ডিশ সাজানো। ডান দিকে একেবারে শুরুতে পশ্চিমা ধরনের রুটির সমাবেশ এর সাথে বালাদি এবং মাহলাব নামের মিশরীয় রুটি। এরপর সেদ্ধ অথবা আধসেদ্ধ সবজি, টমেটো, গাজর, শশা, লেটুস পাতা, পেয়াঁজের সালাদ এবং সবজির বিভিন্ন আইটেম। এরপর মাছ, মাংস, ডিমের নানা পরিবেশনা। গ্রিল, ফ্রাই, গ্রেভি এবং লম্বা ঝোলে চুবানো হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল–একদিক থেকে নিশ্চিন্ত, এখানে কোনো নিষিদ্ধ মাংস নেই। নুডুলস, পাস্তা এবং মিশরীয ফালাফেল এবং কোশারি ছাড়াও নাম না জানা কিছু আইটেম আর সবশেষে মিষ্টান্ন। বিভিন্ন ধরনের কেক-পেস্ট্রি, পুডিং-পায়েশ ছাড়াও বুফেতে বিস্কট কুকিজ দেখে অবাক হই। উদর পূর্তি করে বুফে লাঞ্চের পরে কারা যে বিস্কুট চানাচুর খায়! হতে পারে কেউ কেউ এ সব দিয়েই লাঞ্চ বা ডিনার শুরু করে।

লাঞ্চে এত সব আয়োজন থাকলেও চা-কফি ছাড়া আর কোনো পানীয়ের ব্যবস্থা নেই। তবে নেই মানে একেবারে নেই বললে ভুল হবে। ‘ফেলো কড়ি মাখো তেল’ কথাটার উৎপত্তি কেন হয়েছিল জানি না, কিন্তু ‘ফেলো পাউন্ড খাও পানি’ এখানকার নিয়ম। অতএব ঊনচল্লিশ পাউন্ড দামের দেড় লিটার পানির বোতল নিয়ে টেবিলে বসেছিলাম।

এশিয়া ইওরোপের বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়াবার অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের জানা ছিল অনেক দেশেই রেস্তোরাঁয় বুফের সাথে খাবার পানি থাকে না। সেক্ষেত্রে চীনের শিয়ানে, সুইজারল্যান্ডের জুরিখে কিংবা বাড়ির কাছে শ্রীলঙ্কার ক্যান্ডিতে একই ব্যবস্থা। দলে ভারি থাকলে একসাথে গোটাকয় পাঁচ লিটারের বোতল কিনে ফেলেছি। এখানে জাহাজে থাকতে হবে তিনরাত, কাজেই আগেইভাগেই সতর্ক হয়ে রায়ান ডিপার্টমেন্ট স্টোর থেকে দেড় লিটারের পাঁচটা বোতল নিয়ে ঘরে ফিরেছি। রায়ানে দেড় লিটার সাড়ে তিন পাউন্ড এবং এক লিটার আড়াই পাউন্ড মাত্র। অর্থাৎ ‘টুইয়া’ শুধ পানি বিক্রি করেই যাত্রীদের পকেট ‘ধুইয়া’ দেবার যে ব্যবস্থা করে রেখেছে তা থেকে আপাতত বাঁচা গেল।



দোকান থেকে দেড় লিটারের পাঁচটা বোতল হাতে জাহাজে ফেরাও ছিল একটা বিড়ম্বনা। মোহামেদ ‘ঐ যে ঘাট দেখা যায়’ বলে কেটে পড়লে ঘাটে যাবার সময় আমার পুরোনো ঢাকার সেই রসিকতার কথা মনে পড়লো। রিকশাওয়ালা ভাড়া একটু বেশি দাবী করায় যাত্রী বলেছিল ‘ঐ যে সদর ঘাট দেখা যায়। এত ভাড়া চাও কেন?’ তখন রিশাওয়ালার জবাব ছিল ‘আসমানের চাঁদ ভি দেখা যায়, গিয়া দ্যাখেন হালায়, কেমুন লাগে!’

আমাদের ঘাটও চোখে দেখা যাচ্ছিল, ঠিকই কিন্তু পানির বোতল ছাড়াও রানাভাই পপকর্ন, চিপস আরো কতো কীযে কিনেছিলেন সব কিছু নিয়ে হাঁটতে শুরু করার পরে বুঝলাম জাহাজের দূরত্ব চোখে দেখা দূরত্বের চেয়ে কিছুটা হলেও বেশি।

রাতে ডিনারের সময় দেখা দিল আরেক সমস্যা। চণ্ডীদাসের খুড়ো যথারীতি প্রবেশ পথে দাঁড়িয়ে বিনয়ে বিগলিত হয়ে বললেন, ‘স্যার বাইরে থেকে কোনো খাবার বা পানীয় কিছুই নেওয়া যাবে না।’

এদের এই ব্যবসায়ী চালাকিতে প্রথম রাতে খুব মেজাজ খারাপ করে কয়েক বাটি স্যুপ এবং পরদিন সকালে কয়েক গ্লাস ফলের রস খেয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু পরদিন দুপুর থেকে দেখা গেল অনেকইে পানির বোতল হাতে ঢুকে পড়েছেন। বোঝা গেল চণ্ডীদাসের খুড়ো শেষপর্যন্ত যাত্রীদের সম্মিলিত আক্রমণ ঠেকাতে না পেরে হাল ছেড়ে দিয়েছেন।

আমার ধারণা ছিল, সন্ধ্যায় আমাদের ভ্রমণতরী নোঙর তুলে উত্তরে যাত্রা শুরু করবে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেল আগামীকাল দুপুরের আগে আসোয়ান ছাড়ছে না টুইয়া। এখান থেকেই অতি ভোরে আমরা বেরিয়ে পড়বো আবু সিম্বেলের উদ্দেশ্যে। ভোর চারটায় রিসেপশান থেকে ওয়েক-আপ কল দেয়ার আগেই উঠে পড়েছি। বাড়তি সতর্কতা হিসাবে মোবাইল ফোনে এ্যালার্ম দেওয়া ছিল, কিন্তু ঘুম ভেঙেছে তারও আগে। তৈরি হয়ে বেরোতে বেশি দেরি হয়নি। এত সকালে ভ্রমণ ব্যবস্থাপক ইয়াসিরের সাথে দেখা হবে ভাবিনি। আমরা তিনজন যেহেতু ব্রেকফাস্টের সময় জাহাজে থাকতে পারবো না সেই কারণে সৌরভ বলে দিয়েছিল টেক্অ্যাওয়ে ব্রেকফাস্টের কথা যেন আগের রাতেই বলে রাখি। আমরা ভুলে গেলও ইয়াসির নিজে উপস্থিত থেকে চারজনের নাস্তার প্যাকেটসহ গাইড ওসামার সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে দিয়েছে। আমি বোধহয় নিজের অজান্তেই উচ্চারণ করে বলে ফেলেছিলাম, ‘ওসামা বিন লাদেন!’ ওসামা নিজেকে বাঁচাতে দ্রুত বলে উঠলেন, ‘আমি একজন নিরিহ স্কুল মাস্টার।’ ওসামার বিস্তৃত পরিচয় নেবার আগেই মাইক্রোবাসে উঠে পড়তে হলো। টুইয়া থেকে নেমে ঘাটে অন্তত গোটা তিনেক মাইক্রোবাস দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছি। প্রথমটাতে আমাদের জাহাজের কয়েকজন যাত্রী দেখে আমি সেটাতে প্রায় উঠে পড়েছিলাম। ইয়াসির জানালো আমাদের গাড়ি পেছনে এবং যাত্রী আমরা তিনজন।

এই প্রথম জানতে পারলাম ‘টুইয়া’ জাহাজের সাথে আমাদের ফিলাই কিংবা আবু সিম্বেল ভ্রমণের তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। এখানে দাঁড়ানো গোটা চার পাঁচেক বাহন তাদের নিজস্ব টুরিস্টদের নিয়ে ভোরে যাত্রা করে বেলা দেড়টার মধ্যে আবার জাহাজে তুলে দেবে, তারপরেই জাহাজ নোঙর তুলে যাত্রা করবে লাক্সরের পথে। মাত্র গোটা কুড়ি প্রকৃত পর্যটক যখন ভোরের সুখনিদ্রার সময় শয্যা ত্যাগ করে আবু সিম্বেলে দ্বিতীয় রামেসেস এবং নেফারতিতির মূর্তি দেখতে যাচ্ছে, তখন জাহাজ শুদ্ধো শ’তিনেক মানুষ বেঘোরে ঘুমাচ্ছে।

চালকের আসনে বসে আয়মান যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব আসোয়ান শহর থেকে বেরিয়ে যেতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু রাত না পোহাতেই রাস্তায় ‘উন্নয়ন কাজ’ শুরু হয়ে যাওয়ায় মাঝে মাঝেই একদিকের চলাচল বন্ধ রেখে শুধু অন্যদিকের গাড়িগুলো চলছিল। শহর পেরোবার আগেই বেশ কয়েকটা পথের মোড়ে, চৌরাস্তায় কিংবা কোনো চত্বরে আলোকোজ্জ্বল পাথরের ভাস্কর্য চোখে পড়ে। খুব শৈল্পিক বা কুশলী কোনো নির্মাণ নয়, পাথর কেটে বা খোদাই করে এক ধরনের অবয়ব বা কাঠামো নির্মাণ! ওসামা জানালেন, এখানে বিভিন্ন ধরনের পাথরের সহজলভ্যতার জন্য সারা দেশ থেকে ভাস্কর্যের শিক্ষার্থীসহ শিল্পীরা আসোয়ানে এসে পাথর খোদাই শিল্পের শিক্ষালাভ করে। সেইসব শিক্ষানবীশ শিল্পীদের কিছু কাজ শহরের বিভিন্ন জায়গায় স্থাপন করা হয়েছে। পথে ওসামা ডাইনে বাঁয়ের দুই একটা দ্রষ্টব্যের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে ধারা বিবরণী দিচ্ছিলেন, ‘হাতের বামে ওই যে দূরে ফিলাই টেম্পলে বাতি জ্বলছে।’ একটা বেশ চওড়া খালের উপর দিয়ে পার হচ্ছি, জানলাম লেক নাসের থেকে এই লেকের উৎপত্তি, মিলেছে নীল নদে।

আসোয়ান থেকে আবু সিম্বেলের দূরত্ব ২৯০ কিলোমিটার। শহর ছাড়ার ঘণ্টাখানেক পরে মরুভূমির শেষ প্রান্তে আকাশ লাল হতে আরম্ভ করলো, তারপরেই একটু একটু করে উঁকি দিয়ে চোখ মেলে দেখা দিলো ভোরের প্রথম সূর্য। সোয়া পাঁচটার দিকে সূর্যোদয় দেখতে দেখতেই আমরা আরো কয়েক কিলোমিটার এগিয়ে গেলে সকালের রোদে ঝলমল করে উঠলো পূবের মরুপ্রান্তর। কিছুক্ষণ পরে আয়মার গাড়ির গতি কমাতে শুরু করলে হাতের ডাইনে পথে পাশে চোখে পড়লো বিভিন্ন দিকে স্বল্প দূরত্বের মধ্যে পাঁচ ছয়টি মন্দিরের নাম লেখা দিক নির্দেশক ফলক। এই ধু ধু মরুভূমির আশেপাশেই যদি একাধিক মন্দিরের অস্তিত্ব থাকে, সাড়ে তিন হাজার বছর আগের প্রত্নতাত্ত্বিক অবশেষ যদি এখনো খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে ফারাওদের রাজত্বে এই অঞ্চলে আরো কতো যে মন্দির, কতো উপাসনালয়, কতো প্রাসাদ গড়ে উঠেছিল তার হিসাব হয়তো আর কখনোই পাওয়া যাবে না।

ইউনেস্কো ঐতিহ্যের অংশ আবু সিম্বেলের মন্দির দুটির বিশেষত্ব হলো–দুটি স্থাপনার কোনোটিই পাথর, কাদামাটি, সিমেন্ট বা অন্য কোনো পদার্থ দিয়ে গড়ে পিটে তৈরি নয়, বরং পাহাড়ের বিশাল পাথরের শরীর কেটে কুঁদে নির্মাণ করা হয়েছে। আসোয়ানের বিপুলায়তন বাঁধ নির্মাণের সময় তিন হাজার দুশ বছর আগের মন্দির দুটি সম্পূর্ণ জলমগ্ন হয়ে চিরদিনের জন্য বিলুপ্ত হতে চলেছিল। মিশর সরকার মন্দির দুটি রক্ষার জন্যে ইউনেস্কোর কাছে আবেদন জানায়। এই অনুরোধের প্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী তহবিল সংগ্রহের কাজ শুরু হয় ১৯৬০ সালে। প্রধানত একটি সুইডিশ প্রতিষ্ঠানের তত্ত্ববধানে বিশ্বের অনেকগুলো দেশের অভিজ্ঞ পরামর্শক, স্থপতি এবং প্রকৌশলী মন্দির দুটি স্থানান্তরের কাজ শুরু করে। প্রায় পাঁচ বছর ধরে তিন হাজার মানুষ দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে সফল ভাবে বর্তমান জায়গায় স্থানান্তর করেছে রামসেস নেফারতিতিকে।

আবু সিম্বেল টেম্পল স্থানান্তরের সময় প্রথমেই এর ছাদসহ পাহাড়ের উপরের অংশ সরিয়ে ফেলা হয়। এরপর ছাদ, দেয়াল, পিলার এবং মূল মূর্তিগুলো ছোট ছোট ব্লকের আকারে কেটে ফেলা হয়েছে। তবে পাথরের এ সব ছোট ব্লকের এক একটির ওজনও তিন টন থেকে ত্রিশ টন পর্যন্ত। পাথর কাটার জন্যে কোনো বিস্ফোরক বা ভারি হ্যামার ব্যবহার করা হয়নি। বৈদ্যুতিক করাত এবং অনেক ক্ষেত্রে ড্রিল মেশিন ও হ্যান্ড স’ব্যবহার করে সতর্কতার সাথে বিশাল এক একটি ব্লক সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। নতুন জায়গায় বসাবার সময়ে সর্বোচ্চ পাঁচ মিলিমিটারের বেশি এদিক সেদিক হয়নি। ওসামা যখন বলছিলেন আবু সিম্বেল স্থানান্তরের কাজে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, তখন ভাবছিলাম আফগানিস্তানে মোল্লা ওমর তার রাজত্বকালে কতো কম খরচে বামিয়ান বুদ্ধমূর্তি বিস্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। আফগান জাতীয় জাদুঘরের সকল প্রাক-ইসলামিক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ধ্বংস করে তালেবানরা ইসলামের ঝাণ্ডা উড়িয়ে দিয়েছে।

চালকের আসনের পাশেই বসেছিলেন রানা ভাই এবং ওসামা বসেছিলেন ঠিক আমাদের আসনের সামনে। মাঝে একবার পথে গাড়ি থামিয়ে আরো একজনকে তুলে নিয়ে ওসামা বললেন ওর নাম সাঈদ, আমাদের বদলি ড্রাইভার। অর্থাৎ পর্যটক তিনজন এবং গাইড ও চালক মিলিয়ে তিনজন। এ ভাবে এখন কেমন চলছে মিশরের পর্যটন শিল্প? ওসামাকে জিজ্ঞেস করতেই উত্তর পেলাম, ‘আসলে কোভিড আমাদের সবকিছু শেষ করে দিয়েছে। পর্যটন, শিক্ষা, শিল্প-বাণিজ্য কিছুই বাদ নেই।’

চমৎকার ইংরেজি বলেন ওসামা। রানা ভাইয়ের প্রশ্নের উত্তরে জানা গেল ভয়ংকর ওসামা নামের আড়ালে আমাদের ওসামা স্কুলের অংকের শিক্ষক, কোভিডে চাকরি হারিয়ে এখন টুর গাইডের কাজ নিয়েছেন। তবে এখনো টুরিস্টের সংখ্যা কম, শুধু গাইডের কাজ করে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

আমাদের গাড়ির গতি কমতে কমতে এক সময় ডান দিকে নেমে গেল। প্রান্তরের ভেতরে অস্থায়ী সরাইখানায় যাত্রা বিরতি। অনেকগুলো টুরিস্ট বাস আগে থেকেই দাঁড়িয়ে ছিল। ছোট বড় আরো কিছু বাহনের ফাঁকে দেখা গেল বড় একটা বাসের গায়ে লেখা আওয়ামি ট্রাভেলস। নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, মালয়েশিয়া বা কানাডায় ব্যবসা বাণিজ্য করলেও আমাদের কোনো দেশিভাই মিশরে এসে ট্রাভেল এ্যান্ড টুরিজম ব্যবসা শুরু করেননি। অতএব আওয়ামি বাসকে পাশ কাটিয়ে রেস্তোরাঁর ভেতরে ঢুকে গেলাম। ভেতরে বসার জন্যে জায়গা যথেষ্ট খালি থাকলেও প্রক্ষালণ কক্ষের সামনে লাইন বেশ দীর্ঘ। নারী পুরুষের দুটি ভিন্ন কক্ষের দরজার কাছে টোল আদায়কারীর মতো বসে থাকা দ্বাররক্ষকের কাছে পাঁচ পাউন্ড পরিশোধ করে ঢুকতে হবে। আমি প্রথম সুযোগে ভেতরে ঢুকে গেলে রানা ভাই একটা গদি আঁটা চেয়ারে বসে আয়েশ করে একটা সিগারেট ধরালেন।

(চলবে)

এসএ/

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

Header Ad

মিল্টন সমাদ্দারের মানবিকতার আড়ালে প্রতারণা, যা বললেন ব্যারিস্টার সুমন

ছবি: সংগৃহীত

হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা অনিয়মের প্রতিবাদ ও মানবিক স্টোরি তুলে ধরে ব্যাপক আলোচনায় আসেন এই সংসদ সদস্য।

বর্তমানে এমপি হলেও আগের মতো নানা ইস্যুতে আওয়াজ তুলেন ব্যারিস্টার সুমন। সেই ধারাবাহিকতায় মানবিকতার আড়ালে ভয়ংকর প্রতারক মিল্টন সমাদ্দারকে নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন তিনি।

মিল্টন সমাদ্দার মানবিক কাজ দিয়ে জনপ্রিয় হয়েছিলেন। বর্তমানে তার মানবিক কাজগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, এ বিষয়ে কী বলবেন? জবাবে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, একটা বিষয় আমাদের মনে রাখা উচিৎ, যারা মানবিক কাজ করে মুখ দিয়ে নয়, হৃদয় দিয়ে করে। মুখ দিয়ে মানবিক কাজ করলে নানা প্রশ্নবিদ্ধ হবে কিন্তু হৃদয় থেকে করলে তাকে কেউ আটকাতে পারবে না।

মানবিক কাজগুলো প্রশ্নবিদ্ধ হলে সমাজে কী নীতিবাচক প্রভাব ফেলে না? এমন প্রশ্নের জবাবে এই সংসদ সদস্য বলেন, সমাজে নীতিবাচক প্রভাব ফেলতে ফেলতে এই পর্যায়ে আমরা দাঁড়িয়েছি। আর পেছনের যাওয়ার সুযোগ নেই, সামনের দিকে যেতে হবে। আমরা নষ্ট হওয়ার শেষ পেরিয়ে গেছি। এর থেকে বেশি নষ্ট হওয়ার সুযোগ নেই।

প্রসঙ্গত, দুস্থ, অসহায় ব্যক্তিদের আশ্রয় ও সাহায্যের মতো মানবিক কাজের কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচিত পান মিল্টন সমাদ্দার।

সম্প্রতি গণমাধ্যমে এসব কাজের আড়ালে তার নানা অন্যায়-অনিয়মের অভিযোগ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এরপর বুধবার এই মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

তার বিরুদ্ধে ডেথ সার্টিফিকেট জালিয়াতি, মানবপাচার, আশ্রয় দেওয়া অসহায়, দুস্থ ব্যক্তিদের মৃত্যুর পর তাদের কিডনি বিক্রি, জমি দখলসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে: ইরান

ছবি: সংগৃহীত

চলমান ছাত্র বিক্ষোভে দমন-পীড়ন ও ধরপাকড়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের মুখ থেকে ভণ্ডামির মুখোশ সরে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি। শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স বার্তায় এই মন্তব্য করেন তিনি। খবর ইরানি গণমাধ্যম ইরনার

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ দমন প্রসঙ্গে কানানি বলেছেন, বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকারের মিথ্যা রক্ষকদের মুখ থেকে ভণ্ডামির মুখোশ সরে গেছে। তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনপন্থি ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ঠেকাতে দমন-পীড়নকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য সত্যকে বিকৃত করে শিক্ষার্থী ও একাডেমিক কর্মীদের প্রকৃত ক্ষোভ ও তাদের প্রতিবাদকে ইহুদিবিদ্বেষ হিসাবে বর্ণনা করছে মার্কিন সরকার।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের হামলার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক ডজন বিশ্ববিদ্যালয় উত্তাল। বিভিন্ন কর্মসূচির পাশাপাশি ক্যাম্পাসে তাঁবু টানিয়ে অবস্থান করছেন শিক্ষার্থীরা। এর জেরে ক্লাস-পরীক্ষা বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ। সে সঙ্গে ক্যাম্পাসে পুলিশ ডাকতেও বিন্দুমাত্র পিছপা হননি তারা।

এমনকি পুলিশ এসে শান্তিপূর্ণ শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়েছে। গ্রেফতার করেছে দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে। তবে এতকিছু করেও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমাতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা পুলিশ প্রশাসন। উলটো তা আরও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি মার্কিন শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ছাড়িয়ে এখন বৈশ্বিক রূপ ধারণ করেছে।

নিজের মান ইজ্জত রক্ষা করুন, মন্ত্রী-এমপিদের প্রতি ইসি রাশেদা

ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, যেকোন মূল্যে উপজেলা নির্বাচন হবে প্রভাবমুক্ত। সরকারের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রভাবশালীরা এই নির্বাচনে প্রভাব খাটালে কমিশন প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে বিধিবিধান অন্যুায়ী ব্যবস্থা নিবে।

শনিবার দুপুরে রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে রাজশাহীর চার জেলার প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাশেদা সুলতানা একথা বলেন।

রাশেদা সুলতানা বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি পছন্দের প্রার্থী পক্ষে নেক দৃষ্টি দিয়ে সরকারের অতি সুবিধাভোগি কিছু ব্যক্তিরা (মন্ত্রী-এমপি) এ নির্বাচনে প্রভাব খানাটোর চেষ্টা করছেন। ওই সমস্ত পদে যারা আছেন তাদের প্রতি অনুরোধ করবো- দয়া করে আপনারা আপনাদের জায়গায় থাকেন। আপনি এলাকার ভোটার আপনি আসবেন ভোট দিবেন চলে যাবেন। আপনি যে পর্যায়ে আছেন- আপনি আপনার মান ইজ্জত রক্ষা করবেন। আপনার ইজ্জত আপনি যদি রক্ষা না করেন তাহলে কিন্তু যে কোন মুহুর্তে বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে। এর দায় কিন্তু আমরা নিব না। আপনাই সেটা বহন করবেন। আপনারা নিজের মর্যাদায় আসিন থেকে দ্বায়ীত্ব পালন করবেন।

প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে ইসি রাশেদা সুলতানা আরও বলেন, ভোটারবিহীন নির্বাচনের সৌন্দর্য নেই, গ্রহনযোগ্যতা নেই, আনন্দও নেই। ১০ শতাংশ ভোট পেয়ে যেতা আর ৮০ শতাংশ ভোট পেয়ে জেতার মধ্যে প্রার্থক্য আপনারাই বুঝতে পারবেন। তাই আপনার চিন্ত করেন, পরিবেশ নষ্ট করে ১০ শতাংশ ভোটে জিততে চান ভোটার না এনে; ৮০ শতাংশ ভোটে জিততে চান। আপনাদের উপর এই ভারটা ছেড়ে দিলাম সিদ্ধান্ত নেয়ার।

ইসি বলেন, ভোটের দিন কোন রকম উশৃঙখলতা, বিশৃঙখলাতা, সহিংস আচরণ, ভোট কেন্দ্র দখল করার মত কোন দুঃসাহস করবেন না। আপনার অবৈধভাবে যে ব্যালটই রাখেন না কেন আমাদের কাছে তথ্য গেলে প্রমান পেলে সেই ভোট বাতিল করে দিব যেকোন মুহুর্তে। আর অসাধুচারণ করেন, আচরন বিধি ভঙ্গ করেন আমরা কিন্তু নির্বাচনের মুহুর্তেও প্রার্থীতা বাতিল করে দিব। ভোটের দিন যে কোন নৈরাজ্য মূলক আচরণ করলে আমরা কিন্তু নির্বাচন স্থগিত করবো, নির্বাচন বাতিল করবো, প্রার্থীতা বাতিল করবো।

তিনি আরও বলেন, গনতন্ত্রের মূল ভিত্তি হচ্ছে নির্বাচন। তাই নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয় সেজন্য নির্বাচন কমিশন কাজ করে যাচ্ছে। জনগনের মনে যেন গেঁথে থাকে এমন একটি নির্বাচন হবে এবার। তাই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কমিশন চায় না।

নির্বাচনে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের উদেশ্যে রাশেদা সুলতানা বলেন, কোন প্রার্থী জিতল কোন প্রার্থী জিতল না এ নিয়ে ইসির কোন মাথা বেথা নেই। নির্বাচন কমিশনের একটি নির্দেশনা, আপনার সব প্রার্থীকে সমান চোখে দেখবেন, নিরপেক্ষতার সাথে দেখবেন, যে হাঙ্গামা করবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন। তবে কমিশনার নির্দেশনা যিনি প্রতি পালন করবেন না তার দায়দায়িত্বও তিনি নিবেন। আপনাদের কৃতকর্মের দায় কমিশন বহন করবে না।

রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও জয়পুরহাটের উপজেলার প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী ও কর্মকর্তাদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আনিসুর রহমান, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর।

সর্বশেষ সংবাদ

মিল্টন সমাদ্দারের মানবিকতার আড়ালে প্রতারণা, যা বললেন ব্যারিস্টার সুমন
যুক্তরাষ্ট্রের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে: ইরান
নিজের মান ইজ্জত রক্ষা করুন, মন্ত্রী-এমপিদের প্রতি ইসি রাশেদা
উদ্যোক্তারাই দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক অগ্রগতির কাণ্ডারী : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
টানা ৬ দিন হতে পারে ঝড়বৃষ্টি জানাল আবহাওয়া অফিস
সেই ভাইরাল নেতা পাকিস্তান জামায়াতের আমির নির্বাচিত
টানা ৮ দফা কমার পর বাড়ল স্বর্ণের দাম
দিয়াবাড়ির লেক থেকে ২ শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
রাজধানীবাসীর জন্য সুখবর দিল আবহাওয়া অফিস
মক্কায় প্রবেশে আজ থেকে কঠোর বিধি-নিষেধ
‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরস্কার জিতলেন মিথিলা
ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো বগুড়ার আলু ঘাঁটি উৎসব
টাঙ্গাইলে পাগলা কুকুরের কামড়ে শিশুসহ ২২ জন আহত
১৭ রোগীকে হত্যার দায়ে মার্কিন নার্সের ৭৬০ বছর কারাদণ্ড
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে ছাত্রলীগের কর্মসূচি ঘোষণা
দুবাইয়ের ‘গোল্ডেন ভিসা’ পেলেন শাকিব খান
সুন্দরবনের গহীনে ভয়াবহ আগুন, ছড়িয়েছে দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে
স্কুলে দেরি করে আসায় শিক্ষিকাকে ঘুষি মারলেন অধ্যক্ষ
আইপিএলের প্লে অফের দৌড়ে এগিয়ে কারা?
আবারও বাংলাদেশে প্রবেশ করল মিয়ানমারের ৪০ বিজিপি সদস্য