মানবিক সংকট মোকাবিলা সহায়তা অপ্রতুল: রিপোর্ট
ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের বিপরীতে অপ্রতুল সহায়তায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশিষ্টজনরা। মানবিক সহায়তার স্থানীয়করণের সুপারিশও তুলে ধরেন তারা। স্টেট অফ দ্য হিউম্যানিটারিয়ান সিস্টেম রিপোর্ট ২০২২: বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট শীর্ষক সেমিনারে এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা।
শনিবার (২০ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত সেমিনারটি আয়োজন করে কোস্ট ফাউন্ডেশন। সহযোগিতায় ছিল লন্ডনভিত্তিক সংস্থা এএনএলএপি।
লন্ডন ভিত্তিক এএনএলএপির জেনিফার ডোহার্টি বলেন, বিশ্বব্যাপী সংঘাত, বিপর্যয় এবং স্থানচ্যুতি বেড়েছে, মহামারির কারণে ক্ষয়ক্ষতিও বেড়েছে। জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি ২০২১ সালে দ্বিগুণ হয়ে ৮৯ দশমিক ৩ মিলিয়ন হয়েছে, ১৬১ মিলিয়ন মানুষ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখি।
তিনি বলেন, ২০২১ সালে মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫৫ মিলিয়ন ডলার এবং ২০২৩ সালে তা ৩৩৯ মিলিয়নে চলে যেতে পারে। ২০২১ সালে যে অর্থ সহায়তা পাওয়া গেছে, তা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।
অন্যদিকে, মানবিক কর্মীদের উপর আক্রমণ ৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈশ্বিক মানবিক সহায়তার পুরো ব্যবস্থাপনাতেই কিছু দুর্বলতা প্রকট।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান ঘূর্ণিঝড়-সম্পর্কিত মৃত্যুরসংখ্যায় উল্লেখযোগ্য হ্রাসের বিষয়টি তুলে ধরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। পাশাপাশি তিনি ভূমিকম্প ও ভূমিধ্বস মোকাবেলায় সক্ষমতার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখার গুরুত্ব দিতে হবে।
গোয়েন লুইস রোহিঙ্গা কর্মসূচিতে সীমিত অর্থায়নের প্রভাব মোকাবিলায় কম খরচে যথাসম্ভব উত্তম সেবা প্রদানের উপর জোর দেন।
সাইমন লিভার বলেন, সঠিক সময়ে সঠিক মানুষের কাছে সহায়তা পৌঁছানো নিশ্চিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ নিতে হবে।
কোস্ট ফাউন্ডেশনের রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লন্ডনভিত্তিক সংগঠন এএনএলএপি-এর প্রতিনিধি জেনিফার ডোহার্টি। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিজ গোয়েন লুইস, ব্রিটিশ হাই কমিশনের কাউন্সিলর সাইমন লিভার এবং আইওএম বাংলাদেশে ডিপুটি চিফ অব মিশন নুসরাত গাজ্জালি। অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন, ব্র্যাকের সিনিয়র ডিরেক্টর-অ্যাডভোকেসি ফর সোশ্যাল চেঞ্জ কেএএম মোরশেদ, দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ গওহর নঈম ওয়ারা, টিয়ারফান্ডের আঞ্চলিক পরিালক সঞ্জীব বানজা, স্টার্ট ফান্ড বাংলাদেশের সাজিদ রহমান এবং এ আইডিম-ইন্ডিয়ার মিহির ভাট।
অন্যান্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন এফএও-এর রাফায়েল স্টার্লিং, এনআরসি’র ওয়েন্ডি ম্যাকক্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি’র শাবিরা নূপুর, এমএপি বাংলাদেশ-বরিশাল’র শুভঙ্কর চক্রবর্তী, রংপুর প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন’র আকবর হোসেন, এনজিও প্লাটফরম’র আহসান উদ্দিন, জিবিএসএস’র মাসুদা ফারুক জিবিএসএস থেকে, হেল্প-কক্সবাজার’র আবুল কাশেম এবং পালস বাংলাদেশ’র মো। সাইফুল ইসলাম কলিম।
এ ছাড়া, স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিও এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গ সংস্থার প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।
এনএইচবি/এমএমএ/