ব্যাংক হলিডে উপলক্ষে আগামীকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) দেশের সব ব্যাংকের লেনদেন বন্ধ থাকবে। একইসঙ্গে বন্ধ থাকবে শেয়ারবাজারের লেনদেনও। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সব ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু শাখা খোলা থাকবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষিত ছুটির তালিকা অনুযায়ী, প্রতিবছর ১ জুলাই ও ৩১ ডিসেম্বর ‘ব্যাংক হলিডে’ হিসেবে পালিত হয়। এ দিনগুলোতে বার্ষিক হিসাব-নিকাশ এবং আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার কাজ সম্পন্ন করতে ব্যাংকের সাধারণ লেনদেন বন্ধ রাখা হয়।

ফলে এদিন কোনো ব্যাংক শাখা থেকে টাকা জমা বা উত্তোলন করা যাবে না। বন্ধ থাকবে চেক নিষ্পত্তি, ডিমান্ড ড্রাফট, পে অর্ডার, এটিএম থেকে নগদ উত্তোলন, এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আন্তঃব্যাংক লেনদেনসহ অন্যান্য সব ধরনের লেনদেন।

দিনাজপুরের বিরামপুরে সিধু-কানু-চাঁদ-ভৈরবের স্মরণে পালিত হলো ১৭০তম সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস। সোমবার (৩০ জুন) সকাল ৯টায় উপজেলা আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির আয়োজনে শ‍্যামপুর আদিবাসী একাডেমি প্রাঙ্গণে এ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি সুশীল হাঁসদা। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিরামপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর এলাহী চৌধুরী রুবেল। আরও বক্তব্য দেন সমিতির সম্পাদক কারলুশ মার্ডী বিজয়, সহ-সভাপতি মুকুল হাঁসদা ও পল্টু হাঁসদা, দিশাম পারগানার কেরোবিন হেমব্রম প্রমুখ।

আলোচনা সভা শেষে আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে নৃত্য ও সংগীতের মধ্য দিয়ে নিজেদের ইতিহাস-সংস্কৃতি তুলে ধরেন আদিবাসী শিল্পীরা।

উল্লেখ্য, ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন সিধু, কানু, চাঁদ ও ভৈরবের নেতৃত্বে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শোষণ, দমন-পীড়ন ও লুণ্ঠনের বিরুদ্ধে সাঁওতাল বিদ্রোহ সংঘটিত হয়, যা ‘হুল’ নামে পরিচিত। সেই ঐতিহাসিক ঘটনার স্মরণে প্রতিবছর ৩০ জুন আদিবাসীরা এই দিবসটি পালন করে আসছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান অপসারণের দাবিতে শুরু হওয়া রাজস্ব কর্মকর্তাদের আন্দোলনের অংশ হিসেবে ‘কমপ্লিট শাটডাউন ও মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর পরই বেনাপোল কাস্টমস হাউসে পুরোদমে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর ফলে আবারও কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে বন্দর এলাকায়, স্বস্তি ফিরেছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে।

সোমবার (৩০ জুন) সকাল থেকেই কাস্টমস ও বন্দরের সব কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চালু হয়। কাস্টমস কর্মকর্তারা সক্রিয়ভাবে পণ্যের পরীক্ষণ, শুল্কায়ন ও খালাস সংক্রান্ত কাজে অংশ নিচ্ছেন। একই সঙ্গে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। বন্দরের পণ্য উঠানো-নামানোর কাজে হ্যান্ডলিং শ্রমিকরা স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশ নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টম বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ জানান, "সকালে কাস্টম হাউসে রাজস্ব কর্মকর্তারা কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন, এতে ব্যবসায়ীরা বেশ সন্তুষ্ট।" তিনি আরও বলেন, “গত এক সপ্তাহ ধরে বন্দরে আটকে থাকা ১৫-২০টি ট্রাকে থাকা বিভিন্ন কাঁচামাল—যেমন আকিজ প্রিন্টিং ইঙ্ক, হোলসিম সিমেন্ট ও বার্জার পেইন্টসের কাঁচামাল—অবশেষে ছাড় করানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এসব ফ্যাক্টরির কাঁচামাল প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল।”

সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, "সকাল থেকেই কাস্টম হাউসে কাজ চলছে। অনেক কাজ জমে আছে, তাই সিএন্ডএফ স্টাফরা স্বতঃস্ফুর্তভাবে কাজে অংশ নিচ্ছে।"

সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন জানান, তিনি কাস্টম হাউসে থেকে তিনটি কনসাইনমেন্টের শুল্ক পরিশোধ করেও পণ্য খালাস করতে পারেননি। বর্তমানে আরও পাঁচটি কনসাইনমেন্টের কাজ চলছে এবং জরুরি ভিত্তিতে এসব পণ্য ফ্যাক্টরিতে পৌঁছানোর প্রয়োজন রয়েছে।

উল্লেখ্য, এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের আহ্বানে ২৩ জুন থেকে রাজস্ব কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময়সূচিতে কলম বিরতি পালন করেন এবং ২৯ জুন রোববার ‘কমপ্লিট শাটডাউন ও মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি পালন করেন। তবে এখন সেই কর্মসূচি প্রত্যাহারের পর পুরোদমে কার্যক্রম শুরু হওয়ায় আবার সচল হয়েছে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দর।