সোমবার, ৬ মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

নারী জাগরণের অবিস্মরণীয় চরিত্র বিদ্রোহী জমিদার প্যারীসুন্দরী

[আজীবন লড়েছেন মাটি ও মানুষের পক্ষে, দেশমাতৃকার স্বার্থে। অত্যাচারী নীলকরের বিরুদ্ধে গ্রামের সাধারণ মানুষ ও লাঠিয়ালদের নিয়ে তাঁর সংগ্রাম কিংবদন্তিতুল্য। প্রতিপক্ষ ছিল নীলকর টমাস আইভান কেণী, সংক্ষেপে টি আই কেণী। বাংলার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাসে ঐতিহাসিক নীল বিদ্রোহী প্যারীর ভূমিকাকে ‘জোয়ান অব আর্ক’ এর সঙ্গে তুলনা করা যায়। ড. আবুল আহসান চৌধুরী ‘প্যারীসুন্দরী নীলবিদ্রোহের বিস্মৃত নায়িকা’ শিরোনামে এক লেখায় উল্লেখ করেছেন: ‘জমিদার প্যারীসুন্দরী প্রজাদরদি, স্বদেশপ্রাণ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় লালিত এক অসামান্য জননেত্রী।’ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ইতিহাস বিভিন্ন সময়ে লেখা হয়েছে। অত্যাচারী নীলকর, নীলচাষ, নীলবিদ্রোহ এ শব্দগুলো আজও আমাদের মনে বিভীষিকাময় দিনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। ইতিহাস শুধু অতীতের ফেলে আসা হাসি-কান্না, সুখ-দু:খ, আনন্দ-বেদনার বহি:প্রকাশ ঘটায় না- সাথে সাথে অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যৎ চলার পথের প্রেরণার উৎস ও সঠিক দিশা দিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। কুষ্টিয়ার ইতিহাস যেমন দীর্ঘ তেমনি গৌরবময়।]

 

প্যারীসুন্দরী নীল বিদ্রোহের অবিস্মরণীয় চরিত্র। স্বদেশ প্রেমের অনির্বান শিখাসম এক নাম। জন্ম আনুমানিক ১৮০০ সালে। অবিভক্ত বাংলার নদীয়া জেলার (বর্তমান কুষ্টিয়ার) মিরপুর উপজেলার সদরপুরের জমিদার রামানন্দ সিংহের কনিষ্ঠ কন্যা। মাতা তারা সুন্দরী। অষ্টাদশ শতকের শেষাংশ থেকে ঊনবিংশ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত এই স্বাধীনচেতা ব্যক্তিত্বসম্পন্ন নারী জীবিত ছিলেন বলে অনুমান করা যায়। পুত্রহীন রামানন্দের দুই কন্যার মধ্যে গোপী বড় (কেউ কেউ বলে থাকেন ব্রজ সুন্দরী) এবং প্যারীসুন্দরী ছোট ও অবিবাহিত। কুমারখালীর রেশম কুঠিতে কাজ করে রামানন্দ সম্পদ করেন এবং নদীয়ার (কুষ্টিয়া) মিরপুর থানার ইসলামপুর ও বেগমাবাদ পরগনা কিনে জমিদার হয়ে বসেন। উত্তরাধিকার সূত্রে গোপী ও প্যারী তাঁরই অধিকার পান। অর্থাৎ মিরপুর উপজেলার সদরপুর এ যে মহিলা জমিদার ছিলেন, তিনিই প্যারীসুন্দরী। তিনিই কুষ্টিয়া অঞ্চলের নীলবিদ্রোহের নেত্রী ছিলেন। প্রতিপক্ষ ছিল নীলকর টমাস আইভান কেণী, সংক্ষেপে টি আই কেণী। ফার্গুসন, শেলি ক্রফোর্ড, স্টিফেনসন, সিম্পসন প্রমুখ অত্যাচারী নীলকরের মধ্যে সর্বাপেক্ষা ভয়ংকর নাম তারই। ১৮৬০ সালে যে নীল বিদ্রোহ দেখা দেয় তা প্রকৃতপক্ষে কুষ্টিয়াতেই শুরু হয়।

 

নীল কমিশনের বারাসাতের ম্যাজিস্ট্রেট অ্যাসলি ইডেন বলেছিলেন, ‘খুন, জখম, দাঙ্গা, ডাকাতি, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ প্রভৃতি এমন কোনো অপরাধ নেই, যা নীলকরেরা করেনি।’ কেণী’র অত্যাচার ছিল এদের চেয়েও মাত্রাতিরিক্ত। যার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান প্যারীসুন্দরী। কেণী’র কাছারি ছিল কুষ্টিয়া শহরের বেকী দালানে, কুঠি ছিল অনতিদূর শালঘর মধুয়ায়। প্যারীসুন্দরীর দেশপ্রেম, প্রজাহিতৈষণার বিপরীতে কেণী’র অন্যায়, অত্যাচার ও নির্যাতনের কাহিনি ঐতিহাসিক গ্রন্থসমূহে দেখা যায়। হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘দ্য হিন্দু পেট্রিয়ট পত্রিকায়’ও এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হয়েছে। সবিশেষ রয়েছে সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের ‘উদাসীন পথিকের মনের কথা’ ও রাইচরণ দাসের ‘মনের কথা অনেক কথা’ সবিস্তারে জানার জন্য। প্যারীসুন্দরীর সাহস, বুদ্ধিমত্তা ও দেশপ্রেমের দৃষ্টান্ত গ্রন্থে উদ্ধৃত হয়েছে এভাবে: ‘আমার লাঠিয়াল কুঠি লুট করিয়াছে, দশজনের মুখে এ কথা শুনিয়া আমার সুখবোধ হইতেছে। আমি বাঙালির মেয়ে, সাহেবের কুঠি লুটিয়া আনিয়াছি, ইহা অপেক্ষা সুখের বিষয় আর কি আছে।’ নীলকর কেণী ও জমিদার কন্যা প্যারীসুন্দরীর লড়াই ছিল নাটকীয়তায় পূর্ণ, যা কল্পনার-গল্প-উপন্যাস-নাটকের কাহিনীকেও হার মানায়। ধূর্ততা, শঠতার ফাঁদের বিপরীতে বীরোচিত প্রজ্ঞা ও নৈপুণ্যে মাথা উঁচু করে দেশের জন্য সর্বস্ব দিয়ে নিজেকে উৎসর্গ করার ব্রত বাংলার নীলবিদ্রোহের ইতিহাসে স্বদেশ প্রেমের অনির্বান শিখার মর্যাদা পেয়েছে। প্রজাবান্ধব প্যারীসুন্দরীর জীবন ও কর্ম দেশপ্রেমে উজ্জীবিত করার মতো, অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষিত হওয়ার মতো। যেমন, প্যারী’র দুর্বার বক্তব্য:  ‘যে ব্যক্তি যে কোন কৌশলে কেণীর মাথা আমার নিকট আনিয়া দিবে, এই হাজার টাকার তোড়া আমি তাঁহার জন্য বাঁধিয়া রাখিলাম। ...দুরন্ত নীলকরের হস্ত হইতে প্রজাকে রক্ষা করিতে জীবন যায়, সেও আমার পণ। আমি আমার জীবনের জন্য একটুকুও ভাবি না। দেশের দুর্দ্দশা নিরীহ প্রজার দুরবস্থার কথা শুনিয়া আমার প্রাণ ফাটিয়া যাইতেছে।’ প্যারীসুন্দরীর সঙ্গে সর্বস্ব হারানো জনগণের সর্বাত্মক অংশগ্রহণ ছিল। প্রতি বিঘা জমিতে নীলচাষে খরচ হতো ১০ টাকা, অথচ নীলকরেরা মূল্য দিত সাড়ে তিন টাকা। নদীয়ায় ১৭ হাজার ৬০০ বিঘা জমিতে ৭০০ মণ নীল উৎপন্ন হতো। এর মধ্যে কুষ্টিয়া ছিল প্রথম, যার নেপথ্য ক্রীড়নক ছিল অত্যাচারী নীলকর টি আই কেণী। কেণী ও প্যারীসুন্দরীর বিরোধের সূত্রপাত ‘ভাঁড়ল-পোড়াদহ’ অঞ্চলের ধানের জমিতে জোরপূর্বক নীলচাষ করা নিয়ে। অত্যাচারে অতিষ্ঠ কৃষক, প্রজা, চাষিরা প্যারীসুন্দরীর কাছে দিনের পর দিন প্রতিকারের জন্য নালিশ জানায়। তিনি নায়েব রামলোচনকে লাঠিয়াল বাহিনী নিয়োগ ও আক্রমণের পরামর্শ দেন। কেণীর বাহিনীর কাছে তারা পরাজিত হয়। ভাঁড়ল কুঠি লুণ্ঠিত হয়। কেণীর অত্যাচার বৃদ্ধি পায়। প্যারীসুন্দরী নতুন অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে কেণীর কুঠিতে আক্রমণ করেন। কেণী কুঠিতে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যান। মিসেস কেণী অজস্র কাঁচা টাকা ছড়িয়ে দিয়ে প্যারীসুন্দরীর লাঠিয়ালদের হাত থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করেন। কেণী প্যারীসুন্দরীর বিরুদ্ধে কুঠি লুটের মামলা করেন। ভীত না হয়ে উল্টো গর্ববোধ করেন প্যারীসুন্দরী। কেণীর মাথার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেন এবং মিসেস কেণীকে বালা পরিয়ে বাঙালি বধূ সাজানোর অঙ্গীকার করেন, ক্ষিপ্ত হয়ে কেণী ঘোষণা করেন- যে প্যারীসুন্দরীকে তাঁর কাছে এনে দিতে পারবে তাকে তিনি এক হাজার টাকা পুরস্কার দেবেন এবং প্যারীসুন্দরীকে গাউন পড়িয়ে মেম সাজিয়ে তাঁর কুঠিতে রাখবেন।

শুরু হয় পাল্টাপাল্টি পুরস্কার ঘোষণা ও আক্রমণ। আবারও কেণীর কুঠিতে আক্রমণ করে প্যারী বাহিনী। চতুর কেণী পালিয়ে বাঁচেন। পাহাড়াদার ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশও প্রাণে রক্ষা পায়। দারোগা মোহাম্মদ বক্স খুন হলে তাঁর লাশ প্যারীর লোকেরা খণ্ড-বিখণ্ড করে প্রায় ৫০টি সড়কির মাথায় গেঁথে তা চাঁপাইগাছির বিলে ফেলে দেয়। আবারও প্যারীসুন্দরীর বিরুদ্ধে মামলা হয়। প্রহসনের বিচারে যাবতীয় জমিদারি ইংরেজ সরকার অধিকার করে। গরিব কৃষক, চাষি ও প্রজা নিয়ে অকূলে পড়েন প্যারীসুন্দরী। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জমিদারি ফেরত পান। কিন্তু ততদিনে তিনি ঋণের ভারে জর্জরিত হয়ে পড়েন, ফলে জমিদারির বিরাট অংশ পত্তনি বন্দোবস্ত করে দেন। গবেষক ড. আবুল আহসান চৌধুরী ‘প্যারীসুন্দরী নীলবিদ্রোহের বিস্মৃত নায়িকা’ শিরোনামে এক লেখায় উল্লেখ করেছেন, ‘প্যারীসুন্দরী প্রজাদরদি, স্বদেশপ্রাণ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় লালিত এক অসামান্য জননেত্রী।’

 

যোগ্যতার বিচারে একসময় অত্যাচারী কেণী নিজেই স্বীকার করেছেন, প্যারীসুন্দরী সব দিক থেকেই তাঁর চেয়ে অগ্রগামী ছিলেন। তাঁর সাহস ও দেশপ্রেমের কাছে তিনি ভীতসন্ত্রস্ত ও শঙ্কিত ছিলেন। তাঁর বক্তব্যে প্রকাশ পেয়েছিল: ‘স্ত্রী লোকের মধ্যে প্যারীসুন্দরীর নাম করিতেও ভয় হয়।’ প্রজাদরদি, মানবহিতৈষী, দেশপ্রেমিক প্যারীসুন্দরী সমকালে বিস্মৃত এক নাম। বিপরীতে টি আই কেণী বর্বর অত্যাচারের প্রতিভূ। কুষ্টিয়া শহরের বেকী দালানের (ক্রিসেন্ট বিল্ডিং) রাস্তাটি লোকমুখে ক্রিসেন্ট রোড এবং কোর্ট স্টেশন মুখী রাস্তাটি এখনও কেণী রোড নামে পরিচিত। প্যারীসুন্দরী নীলবিদ্রোহের ইতিহাসে সংযোজন করেছেন স্বদেশপ্রেমের অনির্বান শিখা। যে ইতিহাসের ব্যপ্তিকাল ১৮৪৯ থেকে ১৮৬০ সাল পর্যন্ত। এই সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ধানের জমিতে জোরপূর্বক নীলচাষে বাধ্য করার নীতি থেকে সরে দাঁড়ায় ইংরেজ সরকার। বিদ্রোহী জমিদার প্যারীসুন্দরী ১৮৭০ সালে মৃত্যুবরণ করেন। নি:সন্তান প্যারীর জমিদারি অংশ চলে যায় তাঁরই জ্ঞাতি তারিণীচরণ সিংহের হাতে। পরের বছর কুষ্টিয়াকে দেয়া হয় মহকুমার মর্যাদা। শুধু নামে নয়, চিরকুমারী প্যারীসুন্দরী জীবন ও কর্মেও ছিলেন দেশপ্রেমের এক অনন্য প্রতীক।

 

বিস্তারিত জানতে: 

ড. মুহম্মদ এমদাদ হাসনায়েন ও ড. সারিয়া সুলতানা, ‘কুষ্টিয়ার ইতিহাস’, দ্বিতীয় সংস্করণ, কণ্ঠধ্বনি প্রকাশনী, কুষ্টিয়া, একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০

 

খুজতে হলে https://www.rokomari.com/search?term=কণ্ঠধ্বনি+প্রকাশনী

লেখক : ইতিহাস গবেষক ও প্রাবন্ধিক ড. মুহম্মদ এমদাদ হাসনায়েন

ই-মেইল: dr.hasnayen@gmail.com

 

Header Ad

অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টে রিট

ছবি: সংগৃহীত

তীব্র দাবদাহের মধ্যেও দেশে গাছ কাটা অব্যাহত থাকায় প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছে একটি পরিবেশবাদী সংগঠন। আগামীকাল সোমবার ওই আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ-এইচআরপিবির পক্ষে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ রোববার (৫ মে) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন।

আবেদনে পাঁচটি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এগুলো হল-

১. গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়কে ৭ দিনের মধ্যে পরিবেশবাদী, পরিবেশবিজ্ঞানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপকের সমন্বয়ে সাত সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন, যারা প্রয়োজনে ঢাকা শহরে গাছ কাটার অনুমতি দেবেন।

২. গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৭ দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার জারি করে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা পরিবেশ অফিসার, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি/সেক্রেটারি এবং সিভিল সার্জনের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করবেন, যাদের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না।

৩. গাছ কাটা বন্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৭ দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার জারি করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে; কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, সমাজকল্যাণ অফিসার, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অব ল্যান্ড এবং এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদান করবে, যাদের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না।

৪. কমিটি গঠন হওয়ার আগে পর্যন্ত সকল বিবাদী নিজ নিজ এলাকায় যাতে কোনো গাছ কাটা না হয় সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

৫. গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, ঢাকা শহরসহ অন্যান্য জেলা এবং উপজেলা শহরে গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং সামাজিক বনায়ন বিধিমালা-২০০৪ এর বিধানে গাছ লাগানোর চুক্তিভুক্ত পক্ষকে অর্থ প্রদানের বিধান সংযুক্ত করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না-সে মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে।

এইচআরপিবির পক্ষে রিট আবেদনকারীরা হলেন-অ্যাডভোকেট ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া এবং অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব, পরিবেশ বিভাগ মহাপরিচালক, ঢাকা উত্তর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মেয়র, ঢাকা উত্তরা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান বন সংরক্ষক, সড়ক মহাসড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী ও বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শককে রিট আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মনজিল মোরসেদ বলেন, ‌‘সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য ঢাকা শহরে যে পরিমাণ গাছপালা থাকা দরকার, তা দিন দিন কমছে এবং সম্প্রতিকালে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে মানুষের জীবনযাত্রা আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। এ কারণে সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।’

ওবায়দুল কাদেরের ভাইসহ ৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর ৩টি উপজেলার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ও দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল। অপরদিকে, তিনটি উপজেলায় ৩৭ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধতা পেয়েছে।

রোববার (৫ মে) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠিত হয়।

মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা হলেন: কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী শাহাদাত হোসেন ও বেগমগঞ্জের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী এ এস এম সেলিম। শাহাদাত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, হলফনামায় মামলা সংক্রান্ত তথ্য সঠিকভাবে উল্লেখ না করে তথ্য গোপনের অভিযোগে বেগমগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী এ এস এম সেলিমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। অপরদিকে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের হলফনামায় চারটি মামলার তথ্য গোপন করায় তার মনোনয়নপত্র বাতিলে ঘোষিত হয়। মামলার তথ্য গোপনের অভিযোগে বেগমগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. নুর হোসেন মাসুদ ও মো. মনির হোসেনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখ্য, মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা আগামী ৬মে থেকে ৮মে জেলা প্রশাসক বরাবর প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করার সুযোগ পাবেন। আগামী ২৯ মে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর সদর উপজেলা, বেগমগঞ্জ উপজেলা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না, সংসদে ক্ষোভ চুন্নুর

ছবি: সংগৃহীত

গ্রামে এখন ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না উল্লেখ করে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক বলেছেন, ‘সরকার বলেছে ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সক্ষমতা আছে, তাহলে বিদ্যুৎ গেল কোথায়?’

আজ রবিবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক আরও বলেন, এখন দেশের মানুষ অনেক সমস্যায় আছে। এর মধ্যে দুটি সমস্যা গুরুতর। একটি হলো বিদ্যুৎ, আরেকটি সড়ক দুর্ঘটনা।

জাপা মহাসচিব বলেন, এখন গ্রামে-গঞ্জে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোথাও ১২ ঘণ্টা, কোথাও আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। আমার এলাকায় পাঁচ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। সরকার বলছে, ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আছে। তাহলে সেই বিদ্যুৎ গেল কোথায়?
এ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যদের কেউ কেউ আপত্তি করলে চুন্নু বলেন, লোডশেডিং হয় না গ্রামে? চ্যালেঞ্জ করলাম। আমার এলাকার মানুষ আমাকে বলেছে, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে দাওয়াত দিতে, আমার এলাকায় একটা দিন থাকতে, লোডশেডিং হয় কি না তা দেখার জন্য।

তিনি বলেন, আমার প্রশ্ন আরেক জায়গায়। ভাড়ায় যেসব বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র আছে, তাদের ৪১ শতাংশ সক্ষমতা থাকার পরও বসে আছে। ২২-২৩ আর্থিক বছরে বসে থাকার পরও ভাড়া বাবদ তাদের ২৬ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

চুন্নু বলেন, এর আগে সংসদে বলেছিলাম, আমার এলাকায় বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আমাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, আমি আজ চ্যালেঞ্জ চাই না। আমি চাই, তিনি সশরীরে আমার এলাকায় যাবেন দুই-চার দিনের মধ্যে। দেখে আসবেন কয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে।

তিনি বলেন, দায়মুক্তি দিয়ে যেসব চুক্তি আমরা করেছি, সেগুলো দয়া করে প্রত্যাহার করুন। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে বসে বসে জরিমানা দেওয়া হবে, এ চুক্তি বাতিল করুন। সেসব কোম্পানি বিদ্যুৎ দিলে বিল পরিশোধ করবেন। বসিয়ে রেখে এভাবে এক বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা দেবেন, তারপর আবার লোডশেডিংও থাকবে! ঢাকায় থেকে অসহনীয় অবস্থা আপনারা বুঝবেন না।

তিনি বলেন, বিদ্যুতের অপচয় বন্ধ করুন। বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছেন। মন্ত্রী একটি সুন্দর কথা বলেন, সমন্বয়। সমন্বয়ের মানে মূল্যবৃদ্ধি। এ সমন্বয় আগামী তিন বছর বারবার করবেন। ভর্তুকি তুলে নিলে বিদ্যুতের দাম দ্বিগুণ হয়ে যাবে দুই-তিন বছর পর। মানুষ কিনতে পারবে কি না, আমি জানি না। আমি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে বলব, শুধুমাত্র দাম না বাড়িয়ে এমন কিছু পদক্ষেপ নিন, যাতে জনগণের ওপর চাপ না পড়ে, একটি সহনীয় অবস্থায় আপনারা সরকারেও থাকতে পারেন, আর বিদ্যুৎও যাতে পাওয়া যায়।

সড়ক দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১৫ জন মারা গেছেন ঈদের আগে ও পরে। প্রতিদিন এখন ১৪ জন মারা যান। বছরে পাঁচ হাজারের মতো লোক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এটি সরকারের সংস্থার হিসাব। ১৭ এপ্রিল ঝালকাঠিতে সিমেন্টবাহী ট্রাকের চাপায় ১৪ জন মারা যান। সেই ট্রাকের চালকের ভারি যানবাহন চালানোর কোনো লাইসেন্সই ছিল না।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ২২ এপ্রিল যে বাসের ধাক্কায় একজন শিক্ষার্থী মারা যান, সেটির ফিটনেসই ছিল না। ৪৩ বছরের পুরোনো গাড়ি। এ গাড়ি তো দুর্ঘটনা ঘটাবেই। সড়কে বেশির ভাগ দুর্ঘটনা হয় পুরোনো, ফিটনেসবিহীন গাড়িতে। সড়ক পরিবহনমন্ত্রী, আপনি একটু শক্ত হোন। এসব গাড়ি-অটো যদি রাস্তায় চলাচল না করে, তাহলে এভাবে মানুষ মারা যাবে না। দয়া করে আপনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিন।

সর্বশেষ সংবাদ

অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা বন্ধে হাইকোর্টে রিট
ওবায়দুল কাদেরের ভাইসহ ৪ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল
গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না, সংসদে ক্ষোভ চুন্নুর
আটকে গেল এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি
৩০ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে সুন্দরবনের আগুন
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
এবার মানবপাচার মামলায় ৪ দিনের রিমান্ডে মিল্টন সমাদ্দার
দ্বিতীয় বিয়েতে বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে তালাকের অভিযোগ
দেশে ফেরা হলো না প্রবাসীর, বিমানে ওঠার আগে মৃত্যু
বজ্রপাত থেকে বাঁচার ‘কৌশল’ জানাল আবহাওয়া অফিস
নওগাঁয় ঔষধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে দুই যুবককে পিটিয়ে হত্যা করল জনতা
সত্য বলায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে আঘাত লাগলে কিছু করার নেই: ওবায়দুল কাদের
সেনাবাহিনীকে আরও আধুনিক ও দক্ষ করে তোলা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
উপজেলা নির্বাচন বর্জনে রিজভীর লিফলেট বিতরণ
টাঙ্গাইলে বজ্রপাতে বাবুর্চির মৃত্যু
জিম্বাবুয়ে-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজের ফলাফল কোনো কাজে আসবে না : সাকিব
১৫ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সুন্দরবনের আগুন নেভাতে যোগ দিয়েছে নৌ ও বিমান বাহিনী
গাজায় দেড় লাখের বেশি অন্তঃসত্ত্বা নারী পানিশূন্যতায় ভুগছেন