রবিবার, ৫ মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

আন্তর্জাতিক সুখ দিবসের প্রত্যাশা

২০১৩ সাল থেকে প্রতি বছর ২০ মার্চ সারাবিশ্বে ‘আন্তর্জাতিক সুখ দিবস’ পালিত হয়ে আসছে। ২০১২ সালে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভুটানের উপস্থাপিত প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২০ মার্চ ‘আন্তর্জাতিক সুখ দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। মানুষের জীবনে সুখের গুরুত্ব এবং সুখ প্রাপ্তিতে বাধার কারণগুলো তুলে ধরার জন্য দিবসটি পালন করা হয়। মূলত দিনটি উদযাপনের উদ্দেশ্যই হলো অসুখী মানুষদের সুখের সন্ধান দেওয়া, পথ দেখানো।

আন্তর্জাতিক সুখ দিবস একটি বৈশ্বিক অনুষ্ঠান হওয়ায় বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়। সরকার, সুশীল সমাজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি সংস্থাসমূহ এই দিনে সম্মেলন, জনসমাবেশ, আলোচনা সভা, ইত্যাদির আয়োজন করে যাতে জনগণকে সচেতন করা যায় যে সুখী হওয়া একটি মানবাধিকার। জাতিসংঘের পক্ষ থেকেও দিবসটি পালনের জন্য নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। তবে বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারির কারণে গত বছরের মতো এবারও কম জনসমাগম এবং ন্যূনতম কর্মসূচিতে সীমাবদ্ধ রেখে দিবসটি উদযাপিত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

এবারের সুখ দিবসের প্রতিপাদ্য হলো–শান্ত থাকুন, বিচক্ষন হোন, দয়ালু হোন। অর্থাৎ প্রতিপাদ্যটিতে সুখ অর্জনের জন্য তিনটি মৌলিক বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতিতে নিজেকে শান্ত রাখতে পারলে আমরা সর্বোচ্চ তৃপ্তি ও সুখ পেতে পারি। শান্ত থাকলে শান্তির পরিবেশ বজায় থাকে। আর শান্তি সুখ সৃষ্টির জন্য অত্যন্ত সহায়ক। বিচক্ষণতার সঙ্গে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করলে তা আমাদেরকে সাফল্যের দিকে নিয়ে যেতে পারে। সফলতা মনের প্রসন্নতাকে উজ্জীবিত করে সুখের অনুভূতি দেয়। দয়া হলো একজন মানুষের সেরা মানবিক গুণাবলীর একটি এবং অন্যের প্রতি সদয় হওয়া তাকে অপার সুখের জগতে নিয়ে যায়। দয়া-দাক্ষিণ্য অনুশীলনের মাধ্যমে মনে যে আনন্দানুভূতির সৃষ্টি হয় তার তুলনা হয় না। বিদ্যমান কোভিড-১৯ মহামারি পরিস্থিতিতে এ বিষয়গুলো আমাদের সকলের জীবনের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই প্রেক্ষিতে এই প্রতিপাদ্যটি নির্ধারণ যথাযথ হয়েছে বলে মনে করি।

পৃথিবীতে কে না সুখী হতে চায়? একজন মানুষের জীবনে সুখের চেয়ে মূল্যবান আর কিছুই হতে পারে না। এই যে আমরা এতো পরিশ্রম করছি সেতো সুখের জন্যই। জীবন তখনই অর্থবহ হয়ে ওঠে যখন সুখের আলোয় কারো জীবন আলোকিত হয়। সুখী মানুষের জীবনের সবকিছুই সুন্দর, প্রাণময় এবং গতিশীল। অসুখী মানুষের জীবনে কোনো কিছুরই মূল্য নেই, সবই যেন শূন্যতায় ভরা। জন্মই তার কাছে অসহনীয় হয়ে ওঠে। সে যেন এক অভিশপ্ত জীবন, কোনো দিন শেষ হবে না। তাইতো সুখের সন্ধানে মানুষের প্রচেষ্টার অন্ত নেই। সবাই সুখের পেছনে হন্যে হয়ে ছুটছে, দিনের পর দিন চলে যায় সুখের দেখা মিলে না।

সুখকে মানুষের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় মৌলিক চাহিদাগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সে পরিপ্রেক্ষিতে জনগণ যাতে একটি সুখী পরিবেশে শ্বাস নিতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা দেওয়া বিশ্ব নেতৃত্বের বাধ্যবাধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। উন্নত দেশগুলোর মানুষ তাদের জীবনে সুখ এবং এর গুরুত্ব সম্পর্কে অনেক বেশি পরিচিত, কিন্তু উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোর মানুষের সুখ উপভোগের সুযোগ সবচেয়ে কম। প্রকৃতপক্ষে, দারিদ্র্য, বৈষম্য এবং বৈশ্বিক উষ্ণতার মতো বিষয়গুলো তাদের সুখ উপভোগ করতে বাধা দিচ্ছে। এই বাধাগুলো অতিক্রম করার জন্য, জাতিসংঘ ২০১৫ সালে, দারিদ্র্য হ্রাস, বৈষম্য হ্রাস এবং পৃথিবীকে রক্ষাসহ ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য চালু করে এবং বিশ্ব সম্প্রদায় ২০৩০ সালের মধ্যে সেই লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্য কাজ করছে।

একজন ব্যক্তি যে জন্য খুশি হতে পারে, অন্য ব্যক্তি তাতে খুশি নাও হতে পারে। সুখের উৎস যেমন ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন ভিন্ন, তেমনি সুখের সংজ্ঞাও একেক জনের কাছে একেক রকম। সুখের অনুভব একেক জনে একেক ভাবে করে থাকে। তবে সুখের অর্থ এই নয় যে আমরা সুখী হওয়ার জন্য যখন যা খুশি তাই করে বেড়াব। সুখের অন্বেষণ বলতে অন্য কোন ব্যক্তির অধিকার লঙ্ঘন না করে নিজের জন্য সুখ খোঁজা বা অর্জিত সুখকে উপভোগ করার স্বাধীনতাকে বোঝায়। আমার সুখ ভোগের কারণে অন্যজনের সুখ নষ্ট হবে বা দুঃখের কারণ হবে, তা কখনোই কাম্য হতে পারে না।

লোভ আমাদের সুখ লাভের পথে বড় অন্তরায়। লোভ হচ্ছে সকল অসুখের বীজ। জীবন থেকে লোভ দূর করতে না পারলে কখনও সুখের দেখা পাওয়া যায় না। যে আত্ম-হাহাকার মনকে লোভের বিষে ভরে রাখে তার থেকে না বেরুতে পারলে সুখের আলো আঁধারেই ঢেকে থাকে। লোভকে জীবন থেকে বিসর্জন দেওয়া গেলে জীবন অনেক সহজ ও সুন্দর হয়ে ওঠে। তখন সুখ এসে এভাবেই ধরা দেয়। আমাদের যা আছে তাতেই যদি আমরা সন্তুষ্ট থাকি তবেই সুখ আমাদের জীবনকে প্লাবিত করে দিতে পারে। এ বিশ্বাস ধারণ করতে পারলে প্রতিটি ব্যক্তিই সুখের অকৃত্রিম ছোঁয়ায় জীবনকে রাঙিয়ে তুলতে সক্ষম হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, বর্তমানে ৩০০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ বিষণ্নতায় ভুগছে, যেখানে আরও অসংখ্য মানুষ তাদের জীবনে সুখের বিন্দুমাত্র ছোঁয়াও পাচ্ছে না। পরিবর্তনশীল সামাজিক ব্যবস্থা, পারিবারিক বন্ধনে শৈথিল্য, কাজের সন্তুষ্টির অভাব এবং নানা ধরণের বৈষম্যের মতো কারণ রয়েছে যা একজন ব্যক্তির হতাশাগ্রস্ত হওয়ার এবং একটি অসুখী জীবনযাপনের ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। আরও বলা হয় যে সুখ, যা একটি মানসিক বিষয়, শুধুমাত্র একটি পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থার উপরই নির্ভর করে না, এ ক্ষেত্রে সামাজিক কাঠামো ও রীতিনীতি এবং পারিবারিক পরিবেশ অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

ভুটান দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের একটি ছোট দেশ হওয়া সত্ত্বেও জাতিসংঘে সুখ বিষয়ক একটি প্রস্তাব উত্থাপনের পেছনে কি কোনো দর্শন কাজ করেছে? এর উত্তরে উল্লেখ করতে হয় যে, ভুটান ছাড়া বিশ্বের অন্য কোনো দেশে ‘গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস (জিএনএইচ)’ নামক ‘উন্নয়ন মাপকাঠি’র কোনো অস্তিত্ব আছে বলে মনে হয় না। তবে অন্যরা বিশ্বাস না করলেও জিএনএইচ হচ্ছে ভুটানের উন্নয়ন মতাদর্শের অন্যতম স্তম্ভ। ভুটানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে আমি ভুটানিদের জীবনধারা খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। তাই ভুটানের মানুষ সুখ বলতে কি বুঝে থাকে সে ব্যাপারে কিছু কথা বলতে চাই, যা আমাদের সুখী হওয়ার উপায়গুলো অনুসরণ করতে অনুপ্রাণিত করতে পারে।

ভুটানে ‘গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস’ নামে দেশের উন্নয়ন সূচক নির্ধারণের একটি অনন্য পদ্ধতির প্রচলন ছিল, যা শেষ পর্যন্ত ১৯৭২ সালে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের দর্শন হিসাবে জারি করা হয়। ভুটান সরকার জিএনএইচের চারটি স্তম্ভের কঠোর অনুসরণের মাধ্যমে নীতিগুলো বাস্তবায়ন করে থাকে, যার মধ্যে রয়েছে–ন্যায়সঙ্গত এবং টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, ভুটানের সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও উন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং সুশাসনের প্রবর্ধন। তারা দেশের জিডিপি নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামায় না। জিএনএইচ নিয়েই তাদের ওঠাবসা।

জিএনএইচের প্রবর্তক এবং অনুসারী হিসেবে, ভুটানিরা বিশ্বাস করে যে মানব সমাজের প্রকৃত বিকাশ হলো বস্তুগত এবং আধ্যাত্মিক উৎকর্ষতার ফলাফল। অর্থনৈতিক অর্জন যদি মানুষের আধ্যাত্মিক ও মানসিক সুস্থতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, তবে সুখের দ্বার উন্মুক্ত হতে পারে। অর্থনৈতিক, সামাজিক, মানসিক, আধ্যাত্মিক এবং সাংস্কৃতিক চাহিদার মধ্যে একটি টেকসই ভারসাম্য শুধুমাত্র ব্যক্তি এবং সমাজ উভয় স্তরেই একটি সামগ্রিক উন্নয়ন সাধন করতে পারে। পরিবার ও সমাজের মতো প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রেও নৈতিক কাঠামো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো আসলে ভুটানের লোকেরা তাদের জীবিকার ক্ষেত্রে নানা প্রাকৃতিক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও অনুশীলন করে থাকে। মনে হয়, বিশ্বের অনেক দেশের মানুষের মতো তারা ততটা লোভী নয়। এ কারণেও তারা অন্যদের চেয়ে বেশি সুখী। আমরা, দক্ষিণ এশিয়ার একটি দেশের মানুষ হওয়ায়, কীভাবে আমাদের জীবনে সুখ আনতে হয় সে সম্পর্কে ভুটানিদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার রয়েছে।

কয়েকদিন আগের এক জরিপে দেখা গেছে যে, সামাজিক সম্পর্ক যেসব দেশের মানুষের সুখের মাত্রা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সেসব দেশ করোনা মহামারির কারণে সুখী দেশের তালিকায় আগের চেয়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। তবে যেসব দেশের মানুষ পারস্পরিক আস্থাকে সুখের ভিত্তি হিসাবে মনে করে সেসব দেশ তালিকায় এগিয়েছে। ওই জরিপ মতে, যেহেতু ভারত, লাতিন অঞ্চল ও মেক্সিকোর মতো দেশগুলোতে সামাজিক মেলামেশা ও সম্পর্ককে সুখের ভিত্তি ধরা হয় এবং এই মহামারিতে এসব সামাজিক ক্রিয়াকলাপ ব্যাহত হয়েছে, তাই ওই দেশগুলো সুখী দেশের তালিকায় নিচের দিকে চলে গেছে। অন্যদিকে, চীন, জাপান বা নরডিক দেশগুলোতে আইন ও প্রশাসনের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস সুখের মাত্রা নির্ধারণে মূল ভূমিকা পালন করে বিধায় ওই দেশগুলো করোনাকালেও পূর্বের তুলনায় বেশি সুখী হয়েছে এবং সুখী দেশের তালিকায় তাদের উন্নতি ঘটেছে।

করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত বিশ্ব যখন কিছুটা স্বস্তির দিকে যাচ্ছে, সেই সময় আন্তর্জাতিক সুখ দিবসটি উদযাপনের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। করোনা বিশ্বের অধিকাংশ মানুষের জীবন থেকে সুখ কেড়ে নিয়েছে। আমাদের অবশ্যই শান্ত থাকতে হবে এবং ইতিমধ্যে যে ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে আমরা পতিত হয়েছি, সেই অবস্থা থেকে স্থায়ীভাবে কাটিয়ে উঠতে আমাদের বিচক্ষণতার সঙ্গে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। যে মানুষগুলো অপরিসীম দুঃখ-কষ্টের মধ্যে দিনযাপন করছে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে, তাদের মুখে সুখের হাসি ফোটাতে হবে। কথায় বলে–‘সুখের ভাগী কেউ যদি হয়, সুখ যে তখন দিগুণ হবে; দুঃখ যদি ভাগ করে নেই, দুঃখ তবে আধেক রবে।’ আমাদের সবার মন-মানসিকতায় সেই অনুভূতি জাগ্রত হোক–এই প্রত্যাশা নিয়ে আন্তর্জাতিক সুখ দিবস উদযাপনের সফলতা কামনা করি।

লেখক: সাবেক রাষ্ট্রদূত

এসএ/

Header Ad

সুন্দরবনে আগুন নেভানোর কাজ শুরু

ছবি: সংগৃহীত

বাগেরহাটের সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়া টহল ফাঁড়ি-সংলগ্ন লতিফের ছিলা নামক এলাকায় আগুন লাগার প্রায় ১৫ ঘন্টা নির্বপণে কাজ শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিস। আজ সকালে (রোববার ৫ মে) সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তারা আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। তবে এই আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে কত সময় লাগবে তা জানাতে পারেননি ফায়ার সার্ভিস।

এর আগে শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পূর্ব সুন্দরবনের এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তবে গতকাল আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।

ফায়ার সার্ভিস বলছে, ফায়ার ফাইটিংয়ের মেশিন ও যন্ত্রপাতি নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছানো যায়নি। এ ছাড়া যেখানে আগুন লেগেছে, সেখান থেকে পানির দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার। যে কারণে আগুন নির্বাপণের কাজ শুরু করতে পারেনি তারা।

ফায়ার সার্ভিসের মোংলার স্টেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ কায়মুজ্জামান জানান, রোববার সকালে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করা হয়েছে।

এদিকে আগুন লাগার কারণ, কী পরিমাণ এলাকায় আগুন লেগেছে ও ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বনবিভাগ। চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক রানা দেবকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

 

ঢাকা সফরে আসছেন আইওএম মহাপরিচালক অ্যামি পোপ

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সাথে জাতিসংঘের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ঢাকা সফরে আসছেন জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালক অ্যামি পোপকে দিয়ে শুরু হতে হচ্ছে এ সফর।

আইওএম মহাপরিচালক আজ রোববার (৫ মে) বাংলাদেশ সফরে আসছেন। অ্যামির সফরে অভিবাসন এবং রোহিঙ্গা ইস্যু গুরুত্ব পাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আইওএম মহাপরিচালক ৫-৯ মে পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করবেন। অ্যামি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে তার সফরের কর্মসূচী শুরু করবেন।

ঢাকার এক কূটনীতিক জানান, জাতিসংঘের সঙ্গে আমরা কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করছি। তারই অংশ হিসেবে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রধানকে বাংলাদেশে যতটা সম্ভব আনা যায় সেই প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। সংস্থাটির সব প্রধানকে হয়তো আনা সম্ভব হবে না। তবে যতটা আনা যায় বা তারা বাংলাদেশ সফর করেন (সেই চেষ্টা করা হচ্ছে)। আইওএম ডিজি (মহাপরিচালক) দিয়ে সফরটা শুরু হচ্ছে। এ মাসের মাঝামাঝি এবং শেষের দিকেও কারও কারও আসার কথা রয়েছে। আমরা চেষ্টা করব, সারা বছর কাউকে না কাউকে আনতে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, চলতি মাসের মাঝামাঝিতে ঢাকা সফরে আসবেন জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) নির্বাহী পরিচালক ড. নাতালিয়া কানেম। এছাড়া এ মাসের শেষের দিকে ঢাকায় আসার কথা রয়েছে আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) সেক্রেটারি জেনারেল আর্সেনিও ডমিঙ্গুয়েজের।

আইওএম মহাপরিচালকের সফরে কোন বিষয়গুলো গুরত্ব পাবে জানতে চাইলে এক জ্যৈষ্ঠ কূটনীতিক বলেন, অভিবাসন নিয়ে তারা কাজ করেন। তার মানে (সফরে) অভিবাসন ইস্যুতে ফোকাস থাকবে। আমাদের সঙ্গে তারা মূলত কাজ করছে, রিটার্ন এবং ইন্টিগ্রেশানের ওপর। এক্ষেত্রে এখানে ওদের কাজের ফোকাসটা হয়ে গেছে আমাদের লিবিয়া বা বিভিন্ন জায়গায় যেসব লোকজন আটকা পড়ছে তাদের ফিরিয়ে আনা। আইওএম বলকান থেকেও বাংলাদেশিদের আনার চেষ্টা করছে। তাদের কাজ হচ্ছে বাংলাদেশিদের ফেরাতে সহায়তা করা, এ বিষয়টাতে তারা বেশি এনগেজ। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠকে অভিবাসন ইস্যুতে আলোচনার সুযোগ রয়েছে।

অভিবাসনের বাইরে অ্যামির সফরে রোহিঙ্গাদের অর্থায়ন প্রসঙ্গটি গুরত্ব পাবে জানিয়ে এ কূটনীতিক বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু তো তাদের ফোকাসে থাকবে। আইওএম ডিজি কক্সবাজার যাবেন। উনি আসলে সঙ্গে করে কিছু দাতা নিয়ে আসার কথা রয়েছে। রোহিঙ্গাদের তহবিলের ব্যাপারটা আছে।

বাংলাদেশ যে ডায়াসপোরা নীতি নিয়ে কাজ করছে তাতে সহায়তা করছে আইওএম। অ্যামির সফরে ডায়াসপোরা ইস্যু নিয়ে আলোচনা আসতে পারে। এছাড়া এবারের ওয়ার্ল্ড মাইগ্রেশন রিপোর্ট ঢাকা থেকে প্রকাশ করার পরিকল্পনা আছে আইওএম প্রধানের।

জানা গেছে, ঢাকা সফরকালে আইওএম মহাপরিচালক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। অ্যামি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরীর সঙ্গেও বৈঠক করবেন।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর আইওএম মহাপরিচালকের দায়িত্ব পান অ্যামি পোপ। সংস্থাটির ৭৩ বছরের ইতিহাসে প্রথম নারী মহাপরিচালক হন তিনি। অ্যামি আইওএমে যোগ দেওয়ার আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অভিবাসনবিষয়ক জ্যৈষ্ঠ উপদেষ্টা ছিলেন।

এর আগে, তি‌নি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ডেপুটি হোমল্যান্ড সিকিউরিটিবিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার তৎকালীন মহাপরিচালক উইলিয়াম ল্যাসি সুইং বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।

কেমন থাকবে আজকের আবহাওয়া, যা জানাল আবহাওয়া অফিস

ছবি: সংগৃহীত

গোটা এপ্রিল জুড়ে তীব্র দাবদাহের পর দেশের ৮ বিভাগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। এছাড়া দেশের পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে বিরাজমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া রোববারের পূর্বাভাসে এসব কথা জানানো হয়।

পূর্বাভাসে বলা হয়, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

দেশের পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে বিরাজমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমে যেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে।

এর আগে শনিবার (৪ মে) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার জন্য দেশে আবারও ২৪ ঘণ্টার ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি করে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এসময়ের মধ্যে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের আরও কিছু অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে।

আবহাওয়াবিদ খোন্দকার হাফিজুর রহমানের সই করা ওই সতর্ক বার্তায় বলা হয়, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে চলমান মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। একইসঙ্গে জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিও অব্যাহত থাকতে পারে।

সোমবার যেমন থাকবে আবহাওয়া পরিস্থিতি

ওইদিন ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এর ফলে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে যেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আগামী চারদিনের মধ্যে সারাদেশে বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে পারে।

প্রসঙ্গত, গত ১৯ এপ্রিল দেশজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে প্রথমবারের মতো তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করেছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর। এরপর কয়েক ধাপে তা বাড়ানো হয়। সবশেষ গত বৃহস্পতিবার (২ মে) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার তাপপ্রবাহের সতর্কতা বা হিট অ্যালার্ট জারি করেছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর।

 

সর্বশেষ সংবাদ

সুন্দরবনে আগুন নেভানোর কাজ শুরু
ঢাকা সফরে আসছেন আইওএম মহাপরিচালক অ্যামি পোপ
কেমন থাকবে আজকের আবহাওয়া, যা জানাল আবহাওয়া অফিস
আজ থেকে খুলছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
মিল্টন সমাদ্দারের মানবিকতার আড়ালে প্রতারণা, যা বললেন ব্যারিস্টার সুমন
যুক্তরাষ্ট্রের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে: ইরান
নিজের মান ইজ্জত রক্ষা করুন, মন্ত্রী-এমপিদের প্রতি ইসি রাশেদা
উদ্যোক্তারাই দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক অগ্রগতির কাণ্ডারী : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
টানা ৬ দিন হতে পারে ঝড়বৃষ্টি জানাল আবহাওয়া অফিস
সেই ভাইরাল নেতা পাকিস্তান জামায়াতের আমির নির্বাচিত
টানা ৮ দফা কমার পর বাড়ল স্বর্ণের দাম
দিয়াবাড়ির লেক থেকে ২ শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
রাজধানীবাসীর জন্য সুখবর দিল আবহাওয়া অফিস
মক্কায় প্রবেশে আজ থেকে কঠোর বিধি-নিষেধ
‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরস্কার জিতলেন মিথিলা
ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো বগুড়ার আলু ঘাঁটি উৎসব
টাঙ্গাইলে পাগলা কুকুরের কামড়ে শিশুসহ ২২ জন আহত
১৭ রোগীকে হত্যার দায়ে মার্কিন নার্সের ৭৬০ বছর কারাদণ্ড
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে ছাত্রলীগের কর্মসূচি ঘোষণা
দুবাইয়ের ‘গোল্ডেন ভিসা’ পেলেন শাকিব খান