মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

বঙ্গবন্ধুর কূটনীতি এবং বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান

ডিসেম্বর মাস। আমাদের মহান বিজয় দিবসের মাস। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাত থেকে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশকে ছিনিয়ে আনার সফলতা ঘটে এই মাসে। এই মাসের ১৬ তারিখে পাকিস্তানী সেনাদের আত্মসমর্পণ পরিসমাপ্তি টানে এদেশে পাকিস্তানী শাসন ও শোষণের। বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হয়। সবুজের মাঝে লাল সূর্যের পতাকা বাংলাদেশের সমগ্র আকাশ ছেয়ে ফেলে। মুক্তিপাগল মানুষের ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে বাংলার আকাশ-বাতাস, সবুজ প্রান্তর আর সাগর-নদীর জলরাশি।

বাংলাদেশ তার স্বাধীন সত্ত্বায় প্রতিষ্ঠিত। বিজয়ের আনন্দে সকলেরই দিশেহারা হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু মুক্তির সেই আনন্দ অনেকটাই নিষ্প্রভ হয়ে আছে। তাদের প্রাণপ্রিয় নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে পাকিস্তানের কারাগারে ফাঁসির অপেক্ষায় প্রহর গুনছে। কি করে তারা বিজয়ের উল্লাস করবে? তাঁর মুক্তি ছাড়া যে মুক্তিযুদ্ধ অসমাপ্ত। তাঁকে যে মুক্ত করে আনতেই হবে।সাড়ে সাত কোটি মানুষের হৃদয়ের আর্তনাদে সৃষ্টিকর্তা সাড়া দিলেন।পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তাঁর প্রিয় জন্মভূমির মাটি স্পর্শ করলেন। দেশের মানুষ তাঁদের প্রিয় নেতাকে পেয়ে ১৬ ডিসেম্বরের জমানো আনন্দে এবার বাংলার মাটিকে কাঁপিয়ে দিলো।

বঙ্গবন্ধুর স্পর্শে একটি ধ্বংসস্তূপের মধ্যে নতুন প্রাণের জাগরণ ঘটলো। যুদ্ধের বিভীষিকা ভুলে তিনি দেশের আপামর জনগণকে নিয়ে নেমে পড়লেন ‘সোনার বাংলা’ গড়ার কাজে। দেশপ্রেমের বজ্র কঠিন শক্তিতে উজ্জীবিত সেই আত্মপ্রত্যয়ী ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মহান নেতা দ্রুততম সময়ে প্রণয়ন করলেন দেশের সংবিধান এবং পররাষ্ট্র নীতি। বাংলাদেশের সংবিধানের ধারা-২৫ অনুযায়ী বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভিত্তি হলো জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও সমতার প্রতি শ্রদ্ধা, অন্যান্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা, আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং আন্তর্জাতিক আইনের ও জাতিসংঘের সনদে বর্ণিত নীতিসমূহের প্রতি শ্রদ্ধা।

বলতে গেলে বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালেই, যদিও তখন দেশের কোনো সংবিধান বা পররাষ্ট্রনীতি তৈরি হয়নি। সেই কূটনৈতিক তৎপরতা মূলত ছিল আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রতি বিভিন্ন দেশের সমর্থন,পাকিস্তানের জেল থেকে বঙ্গবন্ধুর মুক্তি এবং বাংলাদেশকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের স্বীকৃতি প্রদানকে কেন্দ্র করে। সেই প্রয়াসে যুক্ত ছিলেন যেমন রাজনীতিবিদরা, তেমনি বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত বাঙালিরা। এছাড়া ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়নসহ কয়েকটি বন্ধু দেশের তৎপরতাও চলমান ছিল।

বঙ্গবন্ধুর কূটনীতির প্রথম উদাহরণটি ছিল ৭ জানুয়ারি ১৯৭২ তারিখে বঙ্গবন্ধুকে দেয়া পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ভুট্টোর নৈশভোজের সময় জনাব ভুট্টোর বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান মিলে একটি কনফেডারেশনের প্রস্তাবটি, যার উত্তরে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন যে তিনি প্রথমে তাঁর জনগণের সঙ্গে দেখা করবেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করবেন, তারপরেই তিনি বিষয়টি জানাতে সক্ষম হবেন। মুক্তি পেয়েই তিনি পাকিস্তান থেকে ৮ জানুয়ারি লন্ডন পৌঁছেন এবং সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বিশ্ববাসীর কাছে আবেদন রাখেন যেন তারা বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়, বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে এবং দ্রুত জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভে বাংলাদেশকে সমর্থন দেয়। লন্ডনে তিনি প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে হোটেলে দেখা করতে এসেছিলেন ব্রিটেনের বিরোধী দলের নেতা হ্যারল্ড উইলসন এবং কমনয়েলথের মহাসচিব আরনল্ড স্মিথ। সেদিনই তিনি মিঃ স্মিথকে কমনওয়েলথে বাংলাদেশের সদস্য হওয়ার ইচ্ছাটি জানিয়ে দিয়েছিলেন। এভাবেই শুরু হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর কূটনৈতিক তৎপরতা।

বঙ্গবন্ধুর অনুরোধে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ব্রিটিশ বিমান বাহিনীর একটি কমেট বিমানে ১০ জানুয়ারি তিনি লন্ডন থেকে দিল্লিতে যাত্রা বিরতি করে ঢাকা ফেরেন। দিল্লিতে তাঁর ওই যাত্রা বিরতি ছিল ভারত সরকার এবং জনগণকে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উদ্দেশ্যে। দিল্লি থেকে ঢাকা ফেরার পথে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গীরা ভেবেছিলেন ব্রিটিশ বিমানের পরিবর্তে ভারতের বিমানে ফিরবেন এবং সেমতে সকল লাগেজ ব্রিটিশ বিমান থেকে নামিয়ে নেয়া হয়েছিল। খবরটি বঙ্গবন্ধুর কানে আসা মাত্রই তিনি জানিয়ে দেন যে তিনি ব্রিটিশ বিমানেই ঢাকা ফিরবেন। সেদিন ওই সিদ্ধান্তে, যথা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতাকে আঘাত না করা এবং ভারতকে নিয়ে অযথা সমালোচনার সুযোগ না দেয়া,বঙ্গবন্ধুর কূটনৈতিক দূরদর্শিতাই প্রকাশ পেয়েছিল।

৬ফেব্রুয়ারি ১৯৭২ তারিখে বঙ্গবন্ধুর কোলকাতা সফরটি ছিল তাঁর প্রথম বিদেশ সফর। ওই সফরে বাংলাদেশ থেকে মার্চের মধ্যে সকল ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয় এবং সে মোতাবেক ১৫ মার্চের মধ্যেই প্রত্যাহার সমাপ্ত হয়। মার্চের প্রথম সপ্তাহে তিনি মস্কো সফর করেন। ১৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশ সফরে আসেন। সেসময় দুদেশের মধ্যে ২৫ বছর মেয়াদী বন্ধুত্ব, সহযোগিতা এবং শান্তি বিষয়ক চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। লন্ডনে চিকিৎসা শেষে কয়েকদিন জেনেভা সরকারের অতিথি হয়ে বিশ্রামের পর ১৩ সেপ্টেম্বর সেখান থেকে দেশে ফেরার পথে দিল্লীতে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করার জন্য যাত্রা বিরতি করেন। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ আইএমএফ, আইএলও, আন্তঃসংসদীয় ইউনিয়ন, ইউনেস্কো, কলম্বো প্ল্যান এবং গ্যাট –এর সদস্য লাভ করে। ওই বছর বঙ্গবন্ধুকে জুলিও কুরি এবং প্যাট্রিস লুমুম্বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি পদক প্রদানের ঘোষণা দেয়া হয়।

১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ সফরে আসেন জাতিসংঘের মহাসচিব এবং যুগোস্লাভিয়ার প্রধানমন্ত্রী।প্রেসিডেন্ট টিটোর আমন্ত্রণে যুগোস্লাভিয়া সফর করা ছাড়াও তিনি আগস্টে অটোয়ায় অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের সম্মেলনে এবং সেপ্টেম্বরে আলজিয়ার্সে অনুষ্ঠিত চতুর্থ ন্যাম শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন। ন্যাম সম্মেলনের সময় তিনি বাদশাহ ফয়সাল, প্রেসিডেন্ট টিটো, প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাদ, প্রেসিডেন্ট ইদি আমিন, প্রেসিডেন্ট গাদ্দাফি এবং প্রধানমন্ত্রী তাকেদ্দিন স্লথ প্রমুখ ব্যাক্তিদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। বাদশাহ ফয়সালের সঙ্গে বৈঠকের সময় বাংলাদেশের নামের সাথে 'ইসলামিক' শব্দ যুক্ত করার বাদশাহের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু কূটনৈতিকভাবে উল্লেখ করেন যে সৌদি আরবের নামের সাথে 'কিংডম' রয়েছে, কোনো 'ইসলামিক' শব্দ নেই। বঙ্গবন্ধু অক্টোবর মাসে জাপান সফরে যান। ওই বছর তিনি স্বল্প সময়ের জন্য মালয়েশিয়ায় যাত্রা বিরতি করেছিলেন।

পাকিস্তানে আটকে পড়া বাঙালিদেরকে প্রত্যাবাসনের জন্য বঙ্গবন্ধু জাতিসংঘ মহাসচিব এবং জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরের প্রেক্ষিতে ১৯ সেপ্টেম্বর ১৬৮ জন বাঙ্গালির দলটি বাংলাদেশে ফিরে আসার মাধ্যমে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হয়। ওই বছর বাংলাদেশ এডিবি, আইসিএও, ইকাফ এবং ফাও –এর সদস্য পদ লাভ করে।   

১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে আসেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী, যুগোস্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট, ওআইসি মহাসচিব, মিসরের প্রেসিডেন্ট, আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট, মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট, সেনেগালের প্রেসিডেন্ট, ভারতের রাষ্ট্রপতি, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, দক্ষিণ ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট, পূর্ব জার্মানির প্রধানমন্ত্রী, মালয়েশিয়ার রাজা এবং ভুটানের রাজা। বঙ্গবন্ধু লাহোরে অনুষ্ঠিত ইসলামী শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান ছাড়াও পাঁচ দিনের সফরে ভারত যান এবং সীমানা চিহ্নিতকরণ চুক্তি স্বাক্ষর করেন। ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করার প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেন। ওই সময় তিনি প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। এছাড়া তিনি ওই বছর ইরাক, মিসর, কুয়েত এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে যান। বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হয়।

 

১৯৭৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী, জাপানের যুবরাজ এবং আফগানিস্তনের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফর করেন। বঙ্গবন্ধু এপ্রিল মাসে জ্যামাইকা যান কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য।বাংলাদেশ বিশ্ব পর্যটন সংস্থা এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যপদ লাভ করে। 

 

জানুয়ারি ১৯৭২ থেকে জুলাই ১৯৭৫, মাত্র সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধ বিধ্বস্ত সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে পঞ্চাশটির মতো রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানদের সফরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শতাধিক সফর অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময়ে বাংলাদেশ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে সহযোগিতার নানা বিষয়ে সত্তরটির বেশি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে।

বঙ্গবন্ধু একদিকে যেমন ধনতান্ত্রিক বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছেন, তেমনি সমাজতান্ত্রিক বিশ্বকেও বন্ধুত্বের বন্ধনে বেঁধেছিলেন। মুসলিম বিশ্বের সঙ্গেও তিনি গভীর ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন । এসবের মূলে কাজ করেছে তাঁর পররাষ্ট্রনীতির মৌলিক কথা- সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয় এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সহাবস্থান। বঙ্গবন্ধু হৃদয় দিয়ে অনুভব করতেন সারা বিশ্বের নির্যাতিত, নিষ্পেষিত মানুষের দুঃখ-দুর্দশা। বিশ্বের যে কোনো প্রান্তের, উত্তর বা দক্ষিণের, যে কোনো ধর্ম বা বর্ণের মানুষের উপর শোষণ বা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে তিনি দ্বিধা করেননি। বঙ্গবন্ধু ছিলেন এমন একজন বিশ্ব নেতা যিনি সবসময়ই পরাধীন জাতি ও শোষিতদের মুক্তির জন্য কথা বলতেন। তিনি যেমন আফ্রিকায় বর্ণবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন, অবসান চেয়েছেন এশিয়া, আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকায় বিদেশি শাসনের, তেমনি ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন,গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সাইপ্রাস সরকারকে উৎখাতের নিন্দা করেছেন।   

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কূটনৈতিক ক্ষেত্রে যে আকাশচুম্বী সাফল্য রেখে গেছেন তা বাংলাদেশের ইতিহাসে অদ্বিতীয় উদাহরণ হয়েই রইবে। তিনি পাকিস্তানের স্বীকৃতিও আদায় করে ছেড়েছেন। তিনি ধনতান্ত্রিক, গণতান্ত্রিক এবং সমাজতান্ত্রিক- এই ত্রিধারার বিশ্বের সকল প্রান্তের ছোটবড় সব দেশের সঙ্গেই কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিত স্থাপন করে গেছেন। শুধু নেতৃত্বই নয়,আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ও কূটনৈতিক নিপুনতা বাংলাদেশকে বিশ্ব সমাজে প্রতিষ্ঠিত করে রেখে গেছে।বঙ্গবন্ধু শুধু একজন নেতা,রাষ্ট্রনায়ক বা শোষিত মানুষের কণ্ঠস্বরই ছিলেন না, তিনি ছিলেন এক বিরল কূটনৈতিক প্রতিভার অধিকারী।

 

লেখক: সাবেক রাষ্ট্রদূত

Header Ad
Header Ad

নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁয় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৩ সক্রিয় সদস্যসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এদের মধ্যে বাকি ৫ জন চোরাই মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ১টি অটো চার্জার ভ্যান এবং ১৯টি অটো চার্জার ভ্যানের ব্যাটারিসহ ১৫০ কেজি খুচরা যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়েছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) নওগাঁ এবং রাজশাহীর জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে নওগাঁ জেলা পুলিশ কর্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) ফারজানা হোসেন এসব তথ্য জানান।

গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত দলের সদস্যরা হলেন, জেলার পোরশা উপজেলার সোভাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে আব্দুল জব্বার (৪০) চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার পাথরপূজার গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে নুরুজ্জামান (৪০) এবং নওগাঁর সাপাহার উপজেলার ধবলডাঙ্গা গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে মোহাম্মদ সেলিম (৩০)।

গ্রেপ্তারকৃত চোরাই মালামাল ক্রয়-বিক্রয় চক্রের সদস্যরা হলেন, জেলার মান্দা উপজেলার উত্তর কাঞ্চন গ্রামের আলম খানের ছেলে শহিদ খান (৩৪) একই গ্রামের পরেশ আলী মৃধার ছেলে কাওছার আলী মৃধা (২৪), উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের তমিজউদদীন মোল্লার ছেলে আব্দুল মতিন মোল্লা (৫০), কামারকুড়ি গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে জিয়াউর রহমান (৪২) এবং শ্রীরামপুর গ্রামের মৃত সোলায়মান মন্ডলের ছেলে আজিজুল মন্ডল(৬৪)।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা হোসেন বলেন, বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাত অনুমানিক ৮ টার দিকে সাপাহার থানার নোচনাহার বাজার থেকে সাদিকুল ইসলাম (৩২) নামে এক অটো চার্জার ভ্যান চালক তার নিজের অটো চার্জার ভ্যান চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। ফেরার পথে সাপাহার থানাধীন ইলিমপুর মোড় হইতে হরিপুর বাজারগামী রোডে ইলিমপুর ব্রীজের নিকট পৌছাতেই রাস্তার পাশে ওৎপেতে থাকা ০৪ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তার অটো চার্জার ভ্যান থামিয়ে তাকে ভ্যান থেকে টেনে নামায় এবং তার গলার চাকু ধরে হত্যার ভয় দেখিয়ে পাশের আম বাগানে নিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে মারপিট করে।

পরবর্তীতে তারা সাদিকুলের অটো চার্জার ভ্যানটি ছিনতাই করে নিয়ে যায়। অপর আরো একটি ঘটনায় একই ডাকাত দল গত শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩ টার দিকে পোরশা থানার সরাইগাছি - আড্ডা আঞ্চলিক মহাসড়কের মশিদপুর এলাকায় এক অটো চার্জার ভ্যান চালককে আটক করে। তাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে হত্যার ভয় দেখিয়ে তার অটো চার্জার ভ্যান ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, এই দুই ঘটনায় পোরশা এবং সাপাহার থানায় আলাদা দুইটি মমলা হয়। মামলার পর থেকেই পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবির) একটি বিশেষ টিম অভিযান অব্যাহত রাখে। গতকাল (২৭ এপ্রিল) নওগাঁ এবং রাজশাহী জেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৩ জন ডাকাত এবং চোরাই ভ্যানের মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত এমন ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ফারজানা হোসেন আরও বলেন, গ্রেফাতারকৃত ডাকাতদের মধ্যে মোহাম্মদ সেলিম (৩০) বহুল আলোচিত সাপাহার উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ হিল কাফি হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামী। সেলিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৮টি চুরি এবং ডাকাতির মামলা রয়েছে। এছাড়াও ডাকাত আব্দুল জব্বারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১০ টি এবং ডাকাত নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৪ টি চুরি এবং ডাকাতির মামলা রয়েছে। আসামীদের বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) সুমন রঞ্জন সরকার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি ডিবি) আব্দুল মান্নানসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল

বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা পরেশ রাওয়াল সম্প্রতি এক বিস্ময়কর অভিজ্ঞতার কথা প্রকাশ করেছেন। ‘ঘাতক’ ছবির শুটিং চলাকালে হাঁটুর মারাত্মক আঘাতের পর দ্রুত সেরে ওঠার জন্য তিনি নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলে জানিয়েছেন।

রাকেশ পান্ডের সঙ্গে একটি দৃশ্যের শুটিং চলাকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আঘাতের পর পরিচালক তিন্নু আনন্দ ও অভিনেতা ড্যানি দেনজোংপা তাকে দ্রুত মুম্বাইয়ের নানাবতী হাসপাতালে নিয়ে যান।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে গভীর উদ্বেগে ছিলেন পরেশ রাওয়াল। তখনই প্রয়াত অ্যাকশন ডিরেক্টর বীরু দেবগণ তাকে পরামর্শ দেন প্রতিদিন সকালে নিজের মূত্র পান করার জন্য। বীরু দেবগণের যুক্তি ছিল, বহু যোদ্ধা শরীরের দ্রুত আরোগ্যের জন্য এমন পদ্ধতি অনুসরণ করতেন। পরেশ রাওয়াল সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি তখন এমন এক মানসিক অবস্থায় ছিলেন যে সুস্থতার জন্য যেকোনো কিছু করতে রাজি ছিলেন।

 

বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে টানা ৩০ দিন নিজের মূত্র পান করেন পরেশ। পরে চিকিৎসকরা তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে চমকপ্রদ ফলাফল পান। চিকিৎসকদের মতে, তার চোট সারাতে যেখানে আড়াই মাস সময় লাগার কথা ছিল, সেখানে তিনি মাত্র দেড় মাসেই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন।

বর্তমানে পেশাগত জীবনেও ব্যস্ত সময় পার করছেন পরেশ রাওয়াল। শিগগিরই তিনি প্রিয়দর্শনের পরিচালনায় নির্মিত হরর-কমেডি 'ভূত বাংলা' ছবিতে অক্ষয়কুমার ও টাবুর সঙ্গে অভিনয় করবেন। পাশাপাশি ‘হেরা ফেরি ৩’-তেও পুরনো সহ-অভিনেতা অক্ষয়কুমার ও সুনীল শেঠির সঙ্গে আবার পর্দা ভাগ করবেন।

 

Header Ad
Header Ad

নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করেছেন এনসিপির মূখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে নাহিদ ইসলামের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ লেখেন, "শুভ জন্মদিন। বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী নাহিদ ইসলাম।" তার এই মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল
নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল
নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
গণপিটুনির পর কারাগারে ইমামের মৃত্যু, গাজীপুরের পূবাইলে চাঞ্চল্য
ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়াতে লিগ্যাল নোটিশ
পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে ৭টি অস্ত্রবাহী বিমান পাঠালো তুরস্ক
বিএনপির ৩ সংগঠনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু
জামিন পেলেন মডেল মেঘনা আলম
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠন করলো সরকার
নিরীহ কাউকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা যাবে না: আইজিপি
পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস
ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ