শনিবার, ৪ মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

মহীয়সী বঙ্গমাতা: বিশ্বনারীর অনুপ্রেরণা

আজ ৮ আগস্ট মহীয়সী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এর ৯২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন হচ্ছে দেশব্যাপী। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জন্মবার্ষিকী উদযাপন সেই সঙ্গে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পদক প্রদান অনুষ্ঠান ২০২২ আরেক আনন্দের বার্তার পালক নাড়ছে।

আমরা নারী সমাজ গর্বের সঙ্গে এই মহীয়সী নারীকে স্যালুট জানাই। তিনি প্রতিটি মুহূর্তে দেশের কথা দশের কথা ভেবেছেন, দেশসেবায় বঙ্গবন্ধুকে আগলে রেখেছেন। ৮ আগস্ট ২০২২ বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এর ৯২তম জন্মবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য নিম্নরূপ-

           মহীয়সী বঙ্গমাতার চেতনা
           অদম্য বাংলাদেশের প্রেরণা
    ‘The spirit of glorious Bangamata
     The inspiration of indomitable Bangladesh’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জীবনে ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এক অসাধারণ আত্মপ্রত্যয়ী নারীর নাম। গৃহ থেকে রাষ্ট্র সর্বক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর জীবনের এক আলোকবর্তিকা রুপে হাজির হয়েছেন তিনি। ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাকনাম ছিল রেণু। ১৯৩৪ সনে দাদা আব্দুল হামিদের আদেশে শেখ মুজিবের বাবা ১৪ বছর বয়সে তার সঙ্গে তার বাবার সম্পর্কের আত্মীয় বেগম ফজিলাতুন্নেছার বিয়ে দেন। বিয়ের ৯ বছর পর ১৯৪২ সালে তারা দাম্পত্যজীবন শুরু করেন। এক বালিকা বধূ শেখ মুজিবের জীবনের বড় কর্মপ্রেরণা ও পরিপূরক হয়ে উঠেছিলেন। মুজিবের পরিবারটি বাঙালি পারিবারিক জীবনের ঐতিহ্য বহন করে। পরিবারটি ছিল যৌথ ও বর্ধিত কাঠামোর বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত ও ঐক্যবদ্ধ। রাষ্ট্রীয় জনগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে এই মহীয়সী নারীর অবদানও কম নয়। বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে ছোট জীবনতরী সঠিকভাবে পরিচালনায় তার ছিল অভাবনীয় ক্ষমতা।

একজন নেতা হয়ে উঠা এবং জেল জুলুমের মধ্যে আদর্শকে সমুন্নত রাখা ও সর্বোপরি মুজিবের জীবনে সুখ সমৃদ্ধি ও পারিবারিক ঐক্য বজায় রেখে দায়িত্ব পালনে বেগম মুজিব ছিলেন অতুলনীয়। তাইতো তিনি মহীয়সী, তিনি বঙ্গমাতা। বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের প্রচেষ্টায় বীরাঙ্গনা বা বীরকন্যা নারীদের পারিবারিক ও সামাজিকভাবে মর্যাদা প্রদান এবং দশজন বীরাঙ্গনা বা বীরকন্যা নারীর বিয়ের ব্যবস্থা করেন।

অসমাপ্ত আত্মজীবনী, পৃষ্ঠা ২১, শেখ মুজিবুর রহমান লিখেছেন-
রেণু কয়েকদিন আমাকে খুব সেবা করল। যদিও আমাদের বিবাহ হয়েছে ছোটবেলায়। ১৯৪২ সালে আমাদের ফুলশয্যা হয়। পতিভক্তি বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জীবন জুড়ে রয়েছে।

অসমাপ্ত আত্মজীবনী, পৃ. ২০৫ স্ত্রীর প্রতি বঙ্গবন্ধুর অগাধ ভালোবাসার কথা জানিয়ে তিনি লিখেছেন- ‘রেণুর দশা কি হবে? তার তো কেউ নাই দুনিয়ায়। ছোট ছেলেমেয়ে দুইটার অবস্থাই বা কি হবে? তবে আমার আব্বা ও ছোটভাই ওদের ফেলবে না, এ বিশ্বাস আমার ছিল। চিন্তাশক্তিও হারিয়ে ফেলছিলাম। হাসিনা, কামালকে একবার দেখতেও পারলাম না। বাড়ির কেউ খবর পায় নাই, পেলে নিশ্চয়ই আসত।’

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছিলেন বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের নেপথ্য কারিগর ও অসাধারণ মানবিক গুণাবলি সম্পন্ন একজন মহীয়সী নারী। দেশ ও জাতির জন্য অপরিসীম ত্যাগ, সহমর্মিতা, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতা তাকে বঙ্গমাতায় অভিষিক্ত করেছে। ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, ৭১র মহান স্বাধীনতা অর্জনসহ প্রতিটি পদক্ষেপ ও কার্যক্রম বাস্তবায়নের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেপথ্য শক্তি, সাহস ও বিচক্ষণ পরামর্শক ছিলেন ফজিলাতুন্নেছা। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন গঠিত মুজিবনগর সরকারের পক্ষে জনমত গঠন এবং বিশ্বব্যাপী স্বাধীন বাংলাদেশের স্বীকৃতি আদায়ে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন।

বঙ্গমাতা রাজনীতির আদর্শ দার্শনিক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তিনি সঠিক সময়ে কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণে পিছপা হননি। তার দূরদর্শী চিন্তা-চেতনা ও সাহসিকতার পরিচয় বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে দেখতে পাই। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তিনিও আত্মনিয়োগ করেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগী ও লাঞ্চিত মা বোনদের নানাভাবে সহযোগিতা করেন। ভারত, ব্রিটেন ও জার্মানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ডাক্তার এনে গোপনীয়তা রক্ষা করে তাদের চিকিৎসাসহ সামাজিকভাবে পুনর্বাসন করেন।

তোফায়েল আহমেদ বঙ্গমাতাকে নিয়ে লিখেছেন তার এক নিবন্ধ- শ্রদ্ধেয়া বঙ্গমাতার কাছে শুনেছি, ৭১ এর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক বক্তৃতার আগে ৬ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু অস্থিরভাবে পায়চারি করেছেন এবং ভেবেছেন কী বলবেন! বঙ্গমাতা বলেছিলেন, তুমি এত চিন্তা কর কেন? সারাজীবন একটা লক্ষ্য নিয়ে সংগ্রাম করেছ, কারাগারে গিয়েছ, জেল খেটেছ, ফাঁসির মঞ্চে গিয়েছ। তোমার বিশ্বাসী অন্তর থেকে যা ভালো মনে করো এই মিটিংয়ে তুমি তাই বলবা, দেখবা মানুষ সেটাই গ্রহণ করবে, তুমি এখন ঘুমাও।

বঙ্গবন্ধুকে অনুপ্রেরণা দিয়ে তিনি ছায়ার মতো বঙ্গবন্ধুর নিত্যসঙ্গী ছিলেন। কারাগারের রোজনামচা, অসমাপ্ত আত্মজীবনী বই দুটো লেখার পেছনেও রয়েছে বঙ্গমাতার অবদান। বঙ্গবন্ধুর জীবনের সুখ দুঃখের সঙ্গী ছিলেন বঙ্গমাতা। তারা ছিলেন আদর্শ দম্পতি, আদর্শ যুগল।

মহীয়সী বঙ্গমাতা সব বাঙালি নারীর অনুপ্রেরণার উৎস। তার দেশপ্রেম, রাজনৈতিক দক্ষতা, দূরদর্শিতা, মহানুভবতা, মানবকল্যাণ বিশ্বের সব নারীর কাছে পাথেয় হয়ে থাকবে। বঙ্গমাতার এ সব অবদানকে চিরস্মরণীয় করতে সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের অবদানকে স্বীকৃতি প্রদানের‘ জন্য বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব’ শীর্ষক ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক প্রবর্তন করেছে। নিঃসন্দেহে এটি বাংলাদেশের নারীদের জন্য নারীর ক্ষমতায়নের একটি মাইলফলক হবে। তিনি নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য কুটিরশিল্পসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। মেধাবী দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের লেখাপড়ার সামগ্রিক কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করলে আমরা বলতে পারি বঙ্গমাতা ছিলেন স্বাধীন দেশে নারীর অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক উন্নয়ন এবং ক্ষমতায়নের প্রকৃত নীরব পথ প্রদর্শক। আমৃত্যু নেপথ্যে থেকে জীবন সঙ্গী হিসেবে পরম মমতায় বঙ্গবন্ধুকে আগলে রেখেছিলেন এই মহীয়সী নারী।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রিয় সহধর্মিনী মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯২তম শুভ জন্মদিনে তার অমর স্মৃতির প্রতি রইলো বিনম্র শ্রদ্ধা।

লেখক: সহকারী সম্পাদক, ঢাকাপ্রকাশ; লেখক ও গবেষক

আরএ/

Header Ad

রাজশাহীতে আগুনে পুড়ল শত বিঘা জমির পান বরজ

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর বাগমারায় ৫৩টি পান বরজ ভস্মীভূত হয়েছে। এতে নিঃস্ব হয়েছেন অন্তত অর্ধশত পান চাষি। তাদের প্রায় ১০০ বিঘা জমির পানের বরজ পুড়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ হিসেবে পান চাষিরা বলছেন- সিগারেটের আগুন থেকে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে।

শুক্রবার দুপুরে বাগমারা উপজেলার গনিপুর ইউনিয়নের পোড়াকয়া গ্রামের মাঠে হঠাৎ করেই ইসাহাকের পান বরজে আগুন লেগে যায়। আগুন মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের পান বরজে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আক্তার হামিদ খান বলেন, রাজশাহী, বাগমারা, মোহনপুর ও আত্রাইয়ের চারটি ইউনিট ঘণ্টা খানেক চেষ্টায় পান বরজের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে শতাধিক কৃষকের ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান এবং কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা জানা যায়নি। তদন্তের পর সেটি জানা যাবে।

গনিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান রঞ্জু বলেন, কতজন কৃষক ও কত বিঘা জমির মান বরজ পুড়ে গেছে তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারবো না। মাত্র পাঁচ থেকে সাত মিনিটের মধ্যে চাষিদের কোটি টাকার পান পুড়ে গেছে। আমরা চাষিদের তালিকা করতে বলেছি। শনিবার তালিকাটা হাতে পাব।

তিনি বলেন, তালিকা পাওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যামে তা জেলা প্রশাসককে কাছে পাঠানো হবে। সরকারিভাবে কিছু টাকা পেলে এই চাষিদের উপকার হবে। এ ঘটনায় অনেক চাষি একবারে নিঃস্ব হয়ে গেছে।

পান বরজ চাষি আসাদুল ইসলাম বলেন, প্রথমে আগুন লাগে ইসাহাকের বরজে। এরপরে মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে একের পর এক পানের বরজে। এই আগুনে অনেক চাষির এক বিঘা থেকে দেড় বিঘা করে পানের বরজ পুড়ে ছায় হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, আগুনে এমনভাবে পুড়েছে তাতে পানের বরজের কোনো কিছু অবশিষ্ট নেই। সব বরজ নতুন করে তৈরি করতে হবে। আমার আড়াই বিঘা জমির পান বরজ পুড়ে গেছে।

আসাদুল বলেন, বছরের এই সময়ে পানের দাম সবচেয়ে বেশি থাকে। এখন বাজারে নতুন পান বিক্রি হচ্ছে চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা পোয়া। আর পুরোনো পান বিক্রি হচ্ছে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা পোয়া দরে। এই সময় পানের বরজ পুড়ে যাওয়া মানে চোখের সামনে টাকা পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া।

পানচাষি রেজাউল ইসলাম বলেন, তার এক বিঘার বেশি জমির পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এই বরজ তৈরি করতে আবার শীত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কারণ এখন জমিতে পান বপনের সময় না। তাই আমরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলাম।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের নিয়ে পুড়ে যাওয়া পানের বরজ পরিদর্শন করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক ও ক্ষতির পরিমানের তালিকা করতে কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে সিগারেটের আগুন থেকে এ ঘটনা ঘটতে পারে।

জিম্বাবুয়েকে হেসে-খেলে হারাল টাইগাররা

ছবি: সংগৃহীত

পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সহজ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

শুক্রবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১২৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২৮ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ দল।

১২৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৫ রান তুলতেই লিটনের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৩ বলে ১ রান করে সাজঘরে ফিরেন টাইগার ওপেনার লিটন কুমার দাস। এরপর ধীর গতির ব্যাট করেন নাজমুল শান্ত। আউট হওয়ার আগে তিনি ২৪ বলে ২১ রান করেন। এরপর তানজিদ তামিম ও তাওহীদ হৃদয় ঝড়ো ব্যাটিং করে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। অভিষিক্ত তানজিদ তামিম ৪৭ বলে ৬৭ রান করেন ও তাওহীদ হৃদয় ১৮ বলে করেন ৩৩ রান।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। মাহেদী নিজের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই সরাসরি বোল্ড করে ফেরান জিম্বাবুয়ের ওপেনার ক্রেইগ আরভিনকে (০)। এরপর শরিফুল ইসলাম এক ওভারে তিন বাউন্ডারি সহ হজম করেন ১৩ রান। কিন্তু তাসকিন আহমেদ এসে রানের চাকায় লাগাম টানেন। যার ফল তুলে নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। প্রথমবার বল হাতে নিয়ে দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন সাইফউদ্দিন।

ওভারের শেষ বলে তিনি জিম্বাবুয়ের অভিষিক্ত ব্যাটার জয়লর্ড গাম্বিকে (১৪) বিদায় করেন। উইকেট পতনের মিছিল এরপর চলতেই থাকে। ষষ্ঠ ওভারে ফের বল হাতে নেন মাহেদী। এবার প্রথম বলেই রান আউটের শিকার হন একপ্রান্ত আগলে রাখা ব্রায়ান বেনেট (১৬)।

পরের বলে এসেই ডাক মারেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। মাহেদীর লেন্থ বলে প্যাডেল সুইপ খেলতে গিয়ে ফার্স্ট স্লিপে থাকা লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দেন রাজা। ১ উইকেটে ৩৬ রান করা জিম্বাবুয়ে আর কোনো রান যোগ করার আগেই হারায় আরও ৩ উইকেট।

এখানেই শেষ নয়। তাসকিন পরের ওভারে তুলে নেন জোড়া উইকেট। ওভারের প্রথম দুই বলেই তিনি বিদায় করেন শন উইলিয়ামস ও রায়ান বার্লকে। দু’জনেই বিদায় নিয়েছেন রানের খাতা খোলার আগেই। এরপর অষ্টম ওভারে লুক জঙওয়ে (২) বিদায় নেন সাইফউদ্দিনের বলে।

৪১ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে সঙ্গে নিয়ে ক্লিভে মাদানদে ইনিংস গড়ার দায়িত্ব নেন। শুরুতে তারা ধীরস্থিরভাবেই খেলছিলেন। কিন্তু শেষদিকে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন তারা।

শরিফুলের করা ১৭তম ওভারে ১১ ও রিশাদ হোসেনের করা পরের ওভারে ১৬ রান নেন মাসাকাদজা ও মাদানদে। এরপর ১৮তম ওভারের প্রথম বলে তাসকিনকেও ছক্কা হাঁকান মাসাকাদজা। এক বল পরই অবশ্য তার সঙ্গী মাদানদেকে বোল্ড করেন তাসকিন।

তার ইয়র্কার মাদানদের দুই পায়ের মাঝখান দিয়ে স্টাম্পে আঘাত করে। অষ্টম উইকেটে জিম্বাবুয়ের রেকর্ড ৬৫ বলে ৭৫ রানের জুটি ভেঙে যায় এতে। ৬ চারে ৩৯ বলে ৪৩ রান করে আউট হন মাদানদে। তার বিদায়ের পর জিম্বাবুয়ের রান হয়নি খুব একটা। শেষ বলে রান আউট হওয়ার আগে ৩৮ বলে ৩৪ রান করেন মাসাকাদজা।

বাংলাদেশের হয়ে ৪ ওভারে ১৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তাসকিন। সমান ওভারে ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট পান সাইফউদ্দিনও।

চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করল তুরস্ক

ছবি: সংগৃহীত

গত ছয়মাস ধরে দখলদার ইসরাইল অবরুদ্ধ গাজায় নির্বিচারে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৩৮ হাজারের বেশি ফলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। আহত হয়েছেন লাখ লাখ। বাস্তহারা করেছে ২০ লাখের বেশি মানুষকে। এই হত্যার বিরুদ্ধে সারাবিশ্বে চলছে প্রতিবাদ। তুরস্কে লাগাতার বিক্ষোভ মুখে ইসরাইলের সঙ্গে সব ধরণের যোগাযোগ ও বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার তুরস্ক জানিয়ে দিয়েছে, গাজার পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় তারা ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ রাখছে।

বলা হয়েছে, গাজায় যতদিন পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন মানবিক ত্রাণ দিতে না দেয়া হচ্ছে, ততদিন বাণিজ্য বন্ধ রাখবে তুরস্ক।

তুরস্কের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ''ইসরায়েলের সঙ্গে সব পণ্যের আমদানি ও রপ্তানি বন্ধ থাকছে।''

দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ বাংলাদেশি টাকায় ৭৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি।

এর আগে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ান সমঝোতা ভেঙে ইসরায়েলের সঙ্গে আমদানি ও রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছেন।

সামাজিক মাধ্যমে তিনি বলেছেন, ''এভাবেই একজন ডিক্টেটর কাজ করেন। তুরস্কের মানুষ, ব্যবসায়ীদের স্বার্থ তিনি দেখলেন না। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তিও অবহেলা করলেন।''

তিনি বলেছেন, ''ইসরায়েল বিকল্প খুঁজে নেবে। অন্য দেশের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাড়াবে।''

তুরস্ক গতমাসে জানিয়েছিল, তারা ইসরায়েল থেকে বাণিজ্যে কাটছাঁট করছে। সেসময় তুরস্কের অভিযোগ ছিল, তাদের বিমান গাজায় মানবিক ত্রাণ দিতে গিয়েছিল। ইসরায়েল তা করতে দেয়নি। তুরস্কে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ হচ্ছে।

গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানকে কঠোর ভাষায় নিন্দা করেছে তুরস্ক। এর্দোয়ান তো ইসরায়েলকে 'সন্ত্রাসী রাষ্ট্র' পর্যন্ত বলেছেন।

অন্যদিকে এক বিবৃতিতে তুরস্ক জানিয়েছে, এই বাণিজ্য স্থগিত করার সিদ্ধান্ত সব ধরনের পণ্যের ক্ষেত্রেই কার্যকর হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘তুরস্ক কঠোরভাবে ও সন্দেহাতীতভাবেই নতুন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে যতদিন পর্যন্ত ইসরাইল সরকার গাজায় বাধাহীন ও পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রবাহের অনুমোদন না দেয়।’

১৯৪৯ সালে প্রথম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয় তুরস্ক। তবে সাম্প্রতিক দশকগুলোতে দেশ দু’টির মধ্যকার সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।

২০১০ সালে গাজায় তুরস্ক মালিকানাধীন জাহাজ ইসরাইলের সমুদ্রসীমা লঙ্ঘন করার সময় ইসরাইলি কমান্ডোদের সাথে সংঘর্ষে ১০ জন ফিলিস্তিনপন্থী তুর্কি কর্মকর্তা নিহত হওয়ার ঘটনায় তুরস্ক কূটনৈতিক সম্পর্কও ছিন্ন করেছিল।

পরে ২০১৬ সালে আবার দেশ দু’টির মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনস্থাপন হয়। কিন্তু এর দু’বছরের মাথায় উভয় দেশ একে অন্যের শীর্ষ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে গাজা সীমান্তে ইসরাইল কর্তৃক ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার ঘটনায়।

এরদোগান গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার পর ইসরাইলের তীব্র সমালোচনা করে আসছেন।

গত জানুয়ারিতে তিনি বলেন, ‘হামাসের হামলার জবাবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যে সামরিক অভিযান চালিয়েছেন তা হিটলার যা করেছিল তার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।’

জবাবে নেতানিয়াহু বলেন, ‘এরদোগান, যিনি কুর্দিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা সঙ্ঘটিত করেন এবং যিনি তার শাসনের বিরোধিতা করায় সাংবাদিক বন্দীর ক্ষেত্রে বিশ্বরেকর্ড করেন, তিনিই হলেন শেষ ব্যক্তি যিনি আমাদের নৈতিকতা শেখাচ্ছেন।’

গাজা উপত্যকার পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে সমালোচনা বাড়ছে। জাতিসঙ্ঘ সমর্থিত এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে গত মাসে ১১ লাখ মানুষ তীব্র ক্ষুধায় জর্জরিত ছিল এবং এ মাসের মধ্যে গাজার উত্তরাঞ্চলে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউস বলেছে, গাজা উপকূলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী যে বন্দর নির্মাণ করেছে ত্রাণ প্রবাহ বাড়ানোর জন্য সেটি কয়েক দিনের মধ্যেই উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

ভাসমান ওই বন্দরে নৌযান ও লোকজনের কাজের ছবিও প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তার কাছেই নৌবাহিনীর জাহাজ ছিল।

যদিও জাতিসঙ্ঘ বলেন, সামুদ্রিক করিডোর কখনো স্থলপথে ত্রাণ সরবরাহের বিকল্প হতে পারে না। আর সড়কপথ হলো একমাত্র উপায় যেখানে একসাথে অনেক পরিমাণ ত্রাণ নেয়া যায়।

এর আগে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর বারবার অনুরোধের প্রেক্ষাপটে চলতি সপ্তাহে গাজার উত্তরাঞ্চলে ত্রাণ সরবরাহের জন্য ইসরাইল ইরেয ক্রসিং আবার খুলে দিয়েছে।

তবে জর্ডান বলেছে, তাদের কিছু ত্রানবাহী লরি ওই ক্রসিং পার হওয়ার সময় ইসরাইলি বাহিনীর হামলার শিকার হয়েছে।

জাতিসঙ্ঘের রিপোর্ট বলছে, গাজার মানবিক বিপর্যয় একটি মানব সৃষ্ট দুর্ভিক্ষে রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে।

জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক সিনিয়র কর্মকর্তা ভলকার তুর্ক বলেন, এটা এখন ‘বিশ্বাসযোগ্য’ যে ইসরাইল ক্ষুধাকে গাজা যুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

ইসরাইল ত্রাণ সরবরাহ সীমিত করার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশটি গাজায় যাদের প্রয়োজন তাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণে ব্যর্থতার অভিযোগ এনেছে জাতিসঙ্ঘের বিরুদ্ধে।

৭ অক্টোবরের হামলার প্রতিক্রিয়ায় হামাসকে ধ্বংস করতে গাজায় ইসরাইল যে সামরিক অভিযান চালিয়েছে তাতে ৩৪ হাজার ৫০০ মানুষের মৃত্যুর খবর দিয়েছে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর আগে, হামাসের হামলায় ইসরাইলে এক হাজার ২০০ মানুষ নিহত হয়েছিল এবং তারা আরো ২৫৩ জনকে পণবন্দী করেছিল।

মধ্যস্থতাকারীরা এখন যুদ্ধবিরতি নিয়ে সবশেষ আসা প্রস্তাবের বিষয়ে হামাসের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।

খবর অনুযায়ী, এবারের প্রস্তাবে ৪০ দিনের যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে এবং এর বিনিময়ে ইসরাইলি বন্দী ও ফিলিস্তিনি কিছু বন্দী মুক্তি পাবে। সূত্র : বিবিসি

সর্বশেষ সংবাদ

রাজশাহীতে আগুনে পুড়ল শত বিঘা জমির পান বরজ
জিম্বাবুয়েকে হেসে-খেলে হারাল টাইগাররা
চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করল তুরস্ক
বাংলাদেশের কোনো ভাষাকেই হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না: প্রধান বিচারপতি
বৃষ্টি হতে পারে যেসব বিভাগে, যে তথ্য দিল আবহাওয়া অফিস
ভূমধ্যসাগরে নিহত ৮ বাংলাদেশির মরদেহ হস্তান্তর
কাল থেকে বাড়তি ভাড়ায় চড়তে হবে ট্রেনে, কোন রুটে ভাড়া কত
সবসময় আস্থা রাখায় ধোনিকে ধন্যবাদ জানালেন মোস্তাফিজ
সুষ্ঠু ভোটের আয়োজনে প্রার্থীদেরও ভূমিকা রয়েছে : ইসি রাশেদা
টাঙ্গাইলে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে গণমাধ্যমকর্মীদের সমাবেশ
গণতন্ত্রের জন্য লড়াইকারীদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে : রিজভী
সরকারকে যারা চাপে রাখতে চেয়েছিল তারা নিজেরাই চাপে আছে : ওবায়দুল কাদের
যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ, গ্রেপ্তার ২ হাজার
ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন পুলিশ কর্মকর্তা
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভা শনিবার
যেসব অভিযোগে ১১১০ দিন কারাগারে ছিলেন মামুনুল হক
শনিবার যেসব জেলার স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা বন্ধ থাকবে
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছে বিবিসি!
নওগাঁয় আ.লীগ নেতার প্রচারে যাওয়া ছাত্রদলের ২ নেতাকে শোকজ
বলিউডের ছবিতে গাইলেন আসিফ আকবর