শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০
Dhaka Prokash

ঋণখেলাপি এবং আইএমএফের ঋণ

দেশের অভ্যন্তরে ঋণ দেওয়া আর বাইরে থেকে ঋণ নেওয়া এই দুই সংকট মোকাবিলা করছে বাংলাদেশ। টাকা তো খরচ করার জন্যই। টাকা নাকি চাকার মতো। যত ঘোরে তত পথ অতিক্রম করে। কিন্তু যদি আটকে যায় কোথাও তাহলে সংকট তৈরি হয়। তখন কাগজের হিসেবে থাকে কিন্তু বাস্তবে পকেটে থাকে না। ঋণখেলাপিদের কাছে টাকা থাকলেও তেমনি হয়। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুয়ায়ী খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। যা ব্যাংক খাতে মোট ঋণের ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এ যাবত কালের এটাই সর্বোচ্চ হারে খেলাপি ঋণ।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ মইনুল ইসলামের মতে খেলাপি ঋণ ৪ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। তিনি বলেছেন খেলাপি ঋণকে কার্পেটের নিচে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেছেন, খেলাপি ঋণের যে চিত্র বেরিয়ে এসেছে বলতে গেলে এটা কিছুই নয়। প্রকৃত চিত্র আরও ভয়াবহ হবে। কারণ, একদিকে ঋণ আদায় হচ্ছে না অন্যদিকে ঋণ বিতরণ চলছে।

আর বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, যারা ঋণ পরিশোধ করছেন না তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি অ্যাকশনে যেতে হবে। এর সঙ্গে কোনো ব্যাংকার, পরিচালক জড়িত আছেন কি না তা দেখে তাদের বিরুদ্ধে আগে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নিতে হবে। এই তিন অর্থনীতিবিদের কথায় সংকটের চিত্র এবং করণীয় ফুটে উঠেছে। এখন দেখতে হবে সরকার কী করে? কারণ, আলোচনা যতই হোক না কেন পদক্ষেপ তো নিতে হবে সরকারকেই। এরই মধ্যে খবর হলো, গত জুন থেকে সেপ্টেম্বর এই তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৯ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা।

আমদানি রপ্তানির পার্থক্য বেড়েই চলছে ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে প্রতি মাসে ১.৩ বিলিয়ন ডলার করে। চলতি বছরে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ কমেছে ১১ বিলিয়ন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান উৎস রপ্তানি আয় ও প্রবাসী আয়ের গতি কমেছে। আর বৈদেশিক মুদ্রা খরচের প্রধান খাত আমদানি ব্যয় বাড়ছে। বৈদেশিক মুদ্রা আয় কম বলে লেনদেনের ঘাটতি বেড়ে যাচ্ছে। আর বাংলাদেশ ব্যাংক কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে ডলার সংকট নিয়ে।

বাংলাদেশ ব্যাংক টাকার মূল্যমান কৃত্রিমভাবে ধরে রেখে সমস্যা নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করছিল। কিন্তু আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক মুদ্রার আয় কমে গেলে অল্প অল্প করে টাকার অবমূল্যায়ন শুরু করতে বাধ্য হয়। এরপর ডলারের দর আর তেমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। বাজারে ডলারের দর ১১২ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। বাজারে সরবরাহ ঠিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করা শুরু করে। এতে ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের রিজার্ভ এখন কমে হয়েছে ৩ হাজার ৪৩৩ কোটি ডলারে, যদিও আইএমএফ প্রতিনিধি দলের মতে, হিসাবটি পূর্ণাঙ্গ নয়। কারণ, নানা কারণে ৭২০ কোটি ডলার ব্যবহার করা হয়েছে, সেই হিসাবে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ এখন ২ হাজার ৭০০ ডলারের কিছু বেশি।

বৈদেশিক মুদ্রার উৎস রপ্তানি, প্রবাসী আয় এবং বিদেশী বিনিয়োগ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সুত্রে জানা যায়, অক্টোবরে রপ্তানি আয় গত বছর একই মাসের তুলনায় কমেছে প্রায় ৮ শতাংশ। গত সেপ্টেম্বর মাসে কমেছিল সোয়া ৬ শতাংশ। অথচ এর আগে টানা ১৩ মাস রপ্তানি আয় বেড়েছিল। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২২ দশমিক ৬২ শতাংশ। রপ্তানিকারকদের আশঙ্কা, সামনে এই আয় আরও কমবে। আবার গত অক্টোবরে আসা প্রবাসী আয় গত আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। সব মিলিয়ে গত চার মাসে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি সামান্য, মাত্র ২ শতাংশ। আশার কথা এই যে, চলতি অর্থবছরে ৯ লাখের বেশি শ্রমিক দেশের বাইরে গেছেন। তারা আয় পাঠানো শুরু করলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। তবে এ জন্য বাজারদর মেনে বিনিময় হার ঠিক করাটা জরুরি। নইলে হুন্ডি আরও বাড়বে। অর্থ পাচার ঠেকানোর কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ সরকারের নেই বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। আবার ডলারের উচ্চ দর সামলাতে গলদঘর্ম হচ্ছে সরকার। বিদেশি বিনিয়োগ স্বাগত জানাতে সব ধরনের প্রস্তাব দিতে চাইছে।

বিশ্ব অর্থনীতির সংকট সহসাই কি নিরসন হবে? উত্তর হচ্ছে, না। আর বাংলাদেশের সংকট তো বহুমাত্রিক। কারণ, জ্বালানি তেল, কয়লা ও এলএনজি আমদানির উপর নির্ভরশীল দেশে আমদানির জন্য ডলার পাবে কোথায়? এরকম অবস্থায় ঋণ নিয়ে আলোচনার জন্য আইএমএফ প্রতিনিধিদল এসেছিল। তারা ফিরে গিয়ে কী প্রতিবেদন দেবে তার উপরই নির্ভর করছে ঋণের ভবিষ্যৎ। আইএমএফ ঋণ দিলে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা এগিয়ে আসবে এই ভরসা করছে সরকার।

ঋণ শোধ দেওয়ার ক্ষমতা আছে বলে সাত মাসে ৪২ কিস্তিতে ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব আছে আইএমএফ এর। এর পরিমাণ প্রতি কিস্তিতে ৬৪ কোটি ডলার অর্থাৎ মাসে ১১ কোটি ডলারের কম। অন্যদিকে, গড়ে প্রতি মাসে বাংলাদেশের আমদানি খরচ ৭৫০ কোটি ডলার। তারপরও আইএমএফ এর শর্তে সরকার যদি আমদানি শুল্ক কমায় তাহলে দেশীয় শিল্প হুমকির মধ্যে পড়বে।

জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুতের দাম যদি বাড়ায় তাহলে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়বে, বেশি সুদের হারে (২ দশমিক ২০ শতাংশ) ঋণ নিলে পরিশোধের দায় বাড়বে। পাশাপাশি স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বব্যাংকের কাছে ঋণের আশ্বাস পেয়েছিল ৩৭ বিলিয়ন ডলার আর ঋণ ছাড় হয়েছে ২৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। সুদাসল মিলে বাংলাদেশ শোধ করেছে ৬ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার। দুর্নীতি, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বৃদ্ধি, ডলার পাচার বন্ধ না করে, ঋণখেলাপিদের টাকা উদ্ধার না করে এবং কৃষিতে বরাদ্দ না বাড়িয়ে যদি অনৈতিক ও অসম শর্তে ঋণ নেওয়া হয় তাহলে বর্তমান সংকট সামাল দেওয়া গেলেও ভবিষ্যতের ঋণের ফাঁদ আরও কঠিনভাবে চেপে বসবে।

লেখক: সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)

আজকের ইফতারের সময় (ঢাকা)

0

ঘণ্টা

0

মিনিট

0

সেকেন্ড

পছন্দের শীর্ষে ভারতীয় নায়ক-নায়িকাদের নামে দেশে তৈরি পোশাক

জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁয় ঈদের কেনাকাটা জমে উঠেছে। রমজানের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বাজারে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেলেও কার্যত ১৫ রোজার পর থেকে ফুটপাত থেকে শুরু করে বহুতল বিপণিবিতানগুলোতে জমে উঠেছে কেনাবেচা। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে কেনাকাটা।

এবারও ছেলেদের চাহিদা অনুযায়ী পাঞ্জাবি-পাজামা, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শার্ট, প্যান্ট, মেয়েদের জন্য থ্রি-পিস, ফ্রক, স্কার্ট ও শিশুদের শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি-পাজামাসহ নানা নজরকাড়া পোশাক পাওয়া যাচ্ছে বিপণিবিতানগুলোতে। এ বছর বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে বাজারে এসেছে মেয়েদের জন্য ‘আলিয়া কাট গাউন’, ‘মাসাকাল্লি’, ‘নায়রাকাট’, ‘কালামকারি’ ও ‘নবাবি’ নামের থ্রি-পিস।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, অন্য বছরগুলোর তুলনায় এবার বিক্রি বেশি। দেশের তৈরি পোশাকের চাহিদাই বেশি। তবে ভারতীয় সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক-নায়িকাদের নামে দেশে তৈরি পোশাকের প্রতি তরুণ-তরুণীদের আকর্ষণ বেশি। এবার প্রতিটি পোশাকের মূল্য কিছুটা বেশি হলেও বিক্রি হচ্ছে ভালো।

সরেজমিনে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার দেখা যায়, শহরের দেওয়ান বাজার, গিতাঞ্জলী শপিং কমপ্লেক্স, বসাক শপিং কমপ্লেক্স, শুভ প্লাজা, ঠাকুর ম্যানশন, পোরশা মার্কেট, মাজেদা সুপার মার্কেট, ক্রিসেন্ট মার্কেট, বিসমিল্লাহ টাওয়ার, মদিনা মার্কেটসহ বিভিন্ন বিপণিবিতানে জমে উঠেছে ঈদের বাজার।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত কেনাবেচা চলছে। শিশু তরুণীদের জন্য ফ্রক, গাউন, জিপসি, ফ্লোর টাচ, লাচা, অর্গান্ডি থ্রি-পিস, লেহেঙ্গা, চাইনিজ পার্টি ড্রেস, ইন্ডিয়ান অরগানজা জামা বিক্রি হচ্ছে দেদার। তবে সব কিছু পিছনে ফেলে এ বছর কিশোরী ও তরুণীদের পছন্দের শীর্ষে আছে আলিয়া কাট নামের জামা। সব বয়সীদের জন্য আলিয়া কাট নামের এই গাউন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬০০ টাকা থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত। এরপরই ‘মাসাকাল্লি’, ‘নায়রাকাট’, ‘কালামকারি’ ও ‘নবাবি’ নামের থ্রি-পিস চাহিদা রয়েছে। এগুলো ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া জিপসি, ফ্লোর টাচ ও চাইনিজ পার্টি ড্রেসের চাহিদাও রয়েছে বেশ। এগুলো ২ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ছেলেরা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্যান্ট, শার্ট ও পাঞ্জাবি কিনছে। স্কুল কলেজপড়ুয়াদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে ‘পাঠান’ ও ‘বাহুবলী-২’ নামের পাঞ্জাবি। বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। কেউ কেউ সুতি কাপড়ের পাজামা-পাঞ্জাবিও কিনছে। এগুলো ১ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

শহরের কাপড়পট্টি এলাকার বিণাপাণি বস্ত্রালয়, গণেশ বস্ত্রালয়, লক্ষ্মী বস্ত্রালয়, পাবনা বস্ত্রালয়, শিলামনিসহ বিভিন্ন অভিজাত শাড়ীর দোকানগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতাদের ভিড়। এসব দোকানে বিভিন্ন ধরণের সিল্ক শাড়ি, সুতিকাতান, স্বর্ণকাতান, বেনারসী, হাফসিল্ক, জামদানি শাড়ির বিক্রি ভালো। ২ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব শাড়ি। নি¤œ আয়ের ক্রেতারা কিনছেন ৮০০ থেকে ১ হাজার ৬ হাজার টাকার শাহজাদপুর ও টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি।

দেওয়ান বাজার শপিং কমপ্লেক্সের আসমান বিগবাজার বিপণিবিতানের স্বত্বাধিকারী শহিদুল ইসলাম ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘রোজার শুরুতে ক্রেতা কিছুটা কম হলেও ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে দোকানে ক্রেতাদের ভিড় ততই বাড়ছে। আমাদের দোকানে পোশাকের পাশাপাশি জুতা ও প্রসাধনী বিক্রি হলেও এখন পর্যন্ত পোশাকের বিক্রিই বেশি। এ বছর দাম বেশি হলেও পোশাকের মান ভালো হওয়ায় ক্রেতারা সন্তুষ্ট হচ্ছেন।’

শহরের সুপারপট্টি এলাকায় অবস্থিত বিশাল ক্লথ স্টোরের বিক্রেতা এম এম মজিদ ঢাকাপ্রকাশকে জানান, ‘আমাদের এখানে মেয়েদের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের থ্রি-পিসের পাশাপাশি, ছেলেদের পাজামা, পাঞ্জাবি ও শার্টের সিট কাপড়ের কালেকশন রয়েছে। তৈরি পোশাকের তুলনায় এবার সিট কাপড়ের দাম খুব একটা বাড়েনি। রমজানের শুরু থেকেই সিট কাপড়ের বেচাবিক্রি বেশ ভালো। আগামী কয়েক দিনে আরও ভিড় বাড়বে বলে মনে হচ্ছে।’

শহরের দেওয়ান বাজারে গত বৃহস্পতিবার কথা হয় শহরের পার নওগাঁ থেকে আসা জাকিয়া জেসমিন নামের এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘শেষমূহূর্তে ভিড়ের কারণে এ বছর ঈদের কেনাকাটা একটু আগেই সেরে ফেলার ইচ্ছা ছিল। এই উদ্দেশ্যে (বৃহস্পতিবার) ১৭ রমজানের দিন ইফতারের পর রাতে বাজারে এসে দেখি উপচেপড়া ভিড়। ক্রেতার সঙ্গে কথা বলার সময়ই নেই বিক্রেতার। দাম চাইছে গলাকাটা। এর মধ্যেই মেয়ের জন্য পোশাক কিনলাম। এখনও আমার কেনাকাটা বাকি।’

‘জিম্মি নাবিকদের মুক্তিপণের বিষয়ে এখনো কথা হয়নি’

ছবি: সংগৃহীত

ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি ২৩ বাংলাদেশি নাবিকসহ জাহাজের বিষয়ে মুক্তিপণ নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন জাহাজটির মালিক পক্ষ।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে একটি গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম। এর আগে দেশের কয়েকটি গণমাধ্যম ‘মুক্তিপণ চূড়ান্ত হয়েছে’ বলে খবর প্রচার করেছে।

মিজানুল ইসলাম বলেন, জলদস্যুরা যে তৃতীয়পক্ষ নিয়োগ করেছে, তাদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। তবে আমাদের (কবির গ্রুপ) সঙ্গে দর কষাকষি করে মুক্তিপণ চূড়ান্ত হয়নি। যেহেতু মালিক পক্ষের হয়ে আমি গণমাধ্যমে কথা বলছি, তাই দৃঢ়ভাবে বলতে পারি আমি এমন কিছু জানায়নি। আসলে এখনো তারা মুক্তিপণের বিষয়টি সামনে আনেনি। তবে আমরা এমন কিছু হতে পারে ধরে নিয়ে অগ্রিম কিছু পদক্ষেপ নিয়ে রেখেছি।

তিনি বলেন, ১৩ বছর আগে এমভি জাহান মনিকে যেভাবে দস্যুদের কবল থেকে মুক্ত করা হয়েছিল, সেই অভিজ্ঞতার আলোকেই তারা এগোচ্ছেন। নাবিকরা মুক্তি পেলে তাদের বিমানযোগে দেশে আনা হবে। এছাড়া জাহাজ ফিরিয়ে আনার জন্য অপর একটি দলকে পাঠানো হবে, সেটিও আগেভাগে ঠিক করে রাখা হয়েছে।

পূর্ব অভিজ্ঞতা অনুযায়ী এবং পরামর্শক প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্দেশনা অনুসারে কাজ করছে জানিয়ে প্রতিষ্ঠানটি বলে, অনেকের মতো আমরাও আশা করছি, ঈদের আগে নাবিকদের ফিরিয়ে আনা যাবে। তবে এটা সম্পূর্ণ জলদস্যুদের হাতে, ওরা না চাইলে আমরা নিজের থেকে কিছু করতে পারবো না।

এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরে অনেকের সঙ্গে আলোচনা চলছে। একই সঙ্গে বিমাকারী প্রতিষ্ঠান প্রোটেকশন অ্যান্ড ইনডেমনিটি (পিঅ্যান্ডআই) এবং ক্রাইসিস টোয়েন্টিফোর জিম্মি জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারে কাজ করছে। তবে ঠিক কার সঙ্গে কোথায়, আলোচনা হয়েছে বা হচ্ছে, তা নির্দিষ্ট করে বলেননি মিজানুল।

তিনি আস্বস্থ্য করেন যে, জলদস্যুরা এখন জাহাজের খাবার তেমন একটা ব্যবহার করছেন না। তারা বাইরে থেকে খাবার নিয়ে আসছেন।

এর আগে, জাহাজে জিম্মি ওয়েলার মোহাম্মদ শামসুদ্দিন তার পরিবারের কাছে ফোন করে জানান, তারা সুস্থ আছেন। তবে, কিছুদিন ধরে জাহাজে এক ইংরেজি জানা লোক যুক্ত হয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তার মাধ্যমে দস্যুরা জাহাজ মালিক পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে মুক্তিপণ দাবি করেছে।

গত ৪ মার্চ আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে এমভি আবদুল্লাহ। জাহাজটি কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১২ মার্চ দুপুরে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে জাহাজটি।

২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর আরবসাগরে একই প্রতিষ্ঠানের জাহাজ ‘এমভি জাহান মণি’ জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল। পরে ওই জাহাজের ২৫ নাবিক ও প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রীকে জিম্মি করে দস্যুরা। পরে নানাভাবে দেনদরবার ও দরকষাকষি শেষে দস্যুদের সঙ্গে সমঝোতা করে ২০১১ সালের ১৪ মার্চ তাদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়।

প্রাথমিকের শেষ ধাপের পরীক্ষা আজ

ফাইল ছবি

সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম দুই ধাপে ছয় বিভাগের ৪০ জেলায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (২৯ মার্চ) ঢাকা-চট্টগ্রাম বিভাগের ২৪ জেলার ৪১৪টি কেন্দ্রে শেষ ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এতে তিন লাখ ৪৯ হাজার ৪৩৮ জন চাকরিপ্রার্থী আবেদন করেছেন।

সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় ২০২৩ সালের ১৮ জুন।

জানা গেছে, প্রার্থীকে অবশ্যই রঙিন প্রিন্ট করা প্রবেশপত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে কেন্দ্রে আসতে হবে। কেন্দ্রের সব প্রবেশপথ তালাবদ্ধ থাকবে এজন্য পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে দেড় ঘণ্টা আগে প্রার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে সতর্কীকরণ ঘণ্টা বাজিয়ে কেন্দ্রের সব প্রবেশপথ বন্ধ করে তালাবদ্ধ করা হবে। এরপর কোনো প্রার্থীকে প্রবেশ বা বের হতে দেওয়া হবে না। দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়া আর কাউকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে বা বের হতেও দেওয়া হবে না।

পরীক্ষা কেন্দ্রে কোনো বই, উত্তরপত্র, নোট বা অন্য কোনো কাগজপত্র, ক্যালকুলেটর, মোবাইল ফোন, ভ্যানিটি ব্যাগ, পার্স, হাতঘড়ি বা ঘড়িজাতীয় বস্তু, ইলেকট্রনিক হাতঘড়ি বা যে কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস, কমিউনিকেটিভ ডিভাইস বা এ জাতীয় বস্তু সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করা বা সঙ্গে রাখা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কোনো পরীক্ষার্থী এসব দ্রব্য সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করলে তাৎক্ষণিক তাকে বহিষ্কারসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পরীক্ষার কক্ষে নিজ আসনে কান খোলা রেখে বসতে হবে প্রার্থীদের। কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে প্রার্থীরা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। তা নিশ্চিত করতে পরীক্ষা কেন্দ্রের ফটকে প্রার্থীদের দেহতল্লাশি করা হবে। নারী প্রার্থীদের নারী পুলিশ ও পুরুষ প্রার্থীদের পুরুষ পুলিশ সদস্যরা তল্লাশি করবেন। প্রার্থীর কাছে কোনো ডিভাইস আছে কি না, তা মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে শনাক্ত করা হবে।

এদিকে পরীক্ষা ঘিরে শিক্ষা অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতেই চাকরি হবে। অর্থ লেনদেন বা অন্য কোনো অনৈতিক উপায়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

এতে আরও বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম নিয়োগ বিধিবিধান অনুসরণ করে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়। প্রার্থীদের রোল নম্বর, আসনবিন্যাস, প্রশ্নপত্র পাঠানো ও মুদ্রণ, উত্তরপত্র মূল্যায়ন, ফলাফল প্রস্তুতসহ যাবতীয় কাজ সফটওয়্যারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে করা হয়।

এ ছাড়া জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় পরীক্ষাকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার রয়েছে। কোনো ধরনের অবৈধ হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।

এমতাবস্থায়, দালাল বা প্রতারকচক্রের প্রলোভনে প্রলুব্ধ হয়ে কোনো ধরনের অর্থ লেনদেন না করা এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে কোনো প্রকার অসদুপায় অবলম্বনের জন্য কোনো দালালচক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক করাসহ অনুরোধ করা হলো।

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি হবে। কেউ অর্থের বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখালে তাকে নিকটবর্তী থানায় সোপর্দ করা অথবা থানা বা গোয়েন্দা সংস্থাকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করেছে অধিদপ্তর।

সর্বশেষ সংবাদ

পছন্দের শীর্ষে ভারতীয় নায়ক-নায়িকাদের নামে দেশে তৈরি পোশাক
‘জিম্মি নাবিকদের মুক্তিপণের বিষয়ে এখনো কথা হয়নি’
প্রাথমিকের শেষ ধাপের পরীক্ষা আজ
সেতু থেকে খাদে পড়ে ৪৫ বাসযাত্রী নিহত, অলৌকিকভাবে বেঁচে গেল শিশু
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি স্থগিত
ফিলিস্তিনি নারীদের অন্তর্বাস নিয়ে অশ্লীল খেলায় মেতেছে ইসরায়েলি সেনারা
যত জঙ্গি গ্রেপ্তার করেছি, একজনও মাদরাসার ছাত্র নন : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার বিরোধিতা করায় সাংবাদিকের কারাদণ্ড
বাতিঘরের শ্যুটিংয়ে হিমাচলে শিরোনামহীন ব্যান্ড
যৌনস্বাস্থ্য ভালো রাখতে প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় রাখুন এ সব
গাজায় নিহত আরও অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি
৮ এপ্রিলের ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু আজ
ডিজিটাল হুন্ডির মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা পাচার, গ্রেপ্তার ৫
দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু: বিশ্বব্যাংক
বরিশালে নামাজ চলাকালে মসজিদে এসি বিস্ফোরণ
নওগাঁয় পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
গুলি করে মারা হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেই সাপটিকে
দুঃসময় অতিক্রম করছি, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: মির্জা ফখরুল
মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় শিক্ষক কারাগারে
বাংলাদেশ থেকে আম-কাঁঠাল-আলু নিতে চায় চীন