বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

'নারীর প্রতি সহিংসতা কমাতে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে'

আজ শুক্রবার আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস ২০২২। ১৯৬০ সালের ২৫ নভেম্বর ক্যারিবিয়ান দেশ ডোমিনিকান রিপাবলিকের স্বৈরাচারী সরকারবিরোধী মিরাবেল ভগ্নিত্রয়কে সেনা সদস্যরা ধর্ষণ ও হত্যা করেন। এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য ১৯৮১ সালে লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় নারী সম্মেলন এই হত্যাকাণ্ডকে স্মরণ করে ২৫ নভেম্বরকে 'নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিরোধ দিবস' ঘোষণা করে। আর ১৯৯৩ সালে ভিয়েনায় বিশ্ব মানবাধিকার সম্মেলন দিবসটিকে স্বীকৃতি দেয়। জাতিসংঘ দিবসটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয় ১৯৯৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর। বাংলাদেশে অবশ্য ১৯৯৭ সাল থেকেই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) কর্তৃক পরিচালিত ২০১১ সালের জরিপ মতে, শতকরা ৮৭ ভাগ নারী স্বামীর মাধ্যমে কোনো না কোনো ধরনের নির্যাতনের শিকার হন।

জাতিসংঘের বিশেষ রিপোর্ট মতে, বাংলাদেশে ৬০ শতাংশ বিবাহিত নারী জীবনে কোনো না কোনো সময়ে স্বামী কিংবা তার পরিবার বা উভয়ের দ্বারা নির্যাতিত হন। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৮ সালের তুলনায় চলতি বছর ধর্ষণের মামলা ১০ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৮ সালে নারী ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগে ১০ হাজার ৪০৮টি মামলা হয়েছিল। এর মধ্যে ধর্ষণের মামলা ছিল ৩৮ শতাংশ। এ ছাড়া ২০১৯ সালে ৪৩ শতাংশ, ২০২০ সালে প্রায় ৪৮ শতাংশ এবং ২০২১ সালে ৪৯ শতাংশ মামলা ছিল ধর্ষণের। চলতি বছরের প্রথম ৭ মাসে এই হার ৪৮।

পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাব বলছে, এ বছরের জুলাই পর্যন্ত নারী ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগে ৭ হাজার ৩৫০টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের মামলা ৩ হাজার ৫২৩টি।জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর তথ্য অনুযায়ী, নারী ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগে কলের সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়ছে। এ বছরের জুলাই পর্যন্ত নারী ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগে ১১ হাজার ৯৫৯টি কল এসেছে। এর মধ্যে ধর্ষণের ৬১৯, ধর্ষণচেষ্টা ৩১৪, যৌন নির্যাতন ২৬৮, ধর্ষণের হুমকি ৩১ এবং উত্ত্যক্ত ও যৌন হয়রানির ১ হাজার ৯টি অভিযোগ রয়েছে।

একই অভিযোগে ২০২১ সালে ১২ হাজার ১৬৯, ২০২০ সালে ৬ হাজার ৩৩১, ২০১৯ সালে ৩ হাজার ১১৫ এবং ২০১৮ সালে ২ হাজার ২৯২টি কল আসে। এছাড়াও বিশ্বজুড়ে প্রতি ১০০ জনে সাতজন নারী কোনো না কোনোভাবে যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, সাত শতাংশ নারী সরাসরি ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। উন্নত-অনুন্নত সব দেশে নারীর প্রতি সহিংসতার চিত্র আরও অমানবিক। দিবসটি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন সংগঠন আজ নানা কর্মসূচি পালন করবে।

আজকের বিষয় নিয়ে কলাম লিখেছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট গবেষক ও জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ডা.এম এম মাজেদ তার কলামে লিখেন...নারীর প্রতি সহিংসতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। নারী এগিয়ে যাচ্ছে এটি যেমন সত্য, আবার নারী নির্যাতন বেড়েছে সেটিও অস্বীকার করার উপায় নেই। করোনাকালে গত তিন বছরে নারী নির্যাতনের মাত্রা বেড়েছে।গণমাধ্যম ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্যই উঠে এসেছে।আজ এই সভ্য জগতে বাস করেও আমরা আদিমতাকে বজায় রেখে নারীর প্রতি হিংস্রতা চালিয়ে যাই। নারীর প্রতি অবিচার, অনধিকার, অস্বীকার, মারপিট, প্রতিটি কাজে দোষ ধরা ইত্যাদিকে আমরা ছোট করেই দেখি কিংবা কেউ কেউ দেখিই না। নারীর প্রতি নৃশংসতার অন্যতম কারণ হতে পারে ক্ষমতার দাপট, প্রশাসনের উদাসীনতা, স্বাভাবিক বিষয় ভেবে প্রশাসনকে না জানানো, নারীদের চুপ করে থাকা, ভাগ্য বলে মেনে নেয়া প্রভৃতি।নারী নির্যাতন প্রতিরোধে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন দরকার। আমরা সবাই হয়তো নেপোলিয়ন বা নজরুলের মত করে ভাবতে পারি না। তবে আমরা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি, মানসিকতা, চিন্তাধারা বদলাতে পারি।

নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে দেশের তরুণ-যুবসমাজকে সচেতন ও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। বাল্যবিবাহ বন্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে অভিভাবক, শিক্ষকসমাজ ও এলাকার রাজনৈতিক নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের। নারী নির্যাতনের সংস্কৃতিকে সমর্থন করে, এমন পিতৃতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ নিরোধের লক্ষ্যে জাতীয় নীতি ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।আর নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সংবিধানে নারী ও পুরুষের সম-অধিকারের বিধান রয়েছে। নারীর অধিকার রক্ষায় ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধে প্রণীত হয়েছে একের পর এক আইন। তবু বেড়ে চলেছে নারী নির্যাতন। কিন্তু নির্যাতন প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। নির্যাতনের হার ক্রমেই বেড়ে চলেছে।

আইন থাকা সত্ত্বেও ক্রমবর্ধমান হারে নারী নির্যাতন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে প্রণীত আইনগুলোর বাস্তবায়নে সীমাবদ্ধতা ও আইনের প্রয়োগ-পদ্ধতিতে কোনো ত্রুটি। যৌতুকের দাবি ও যৌতুকের জন্য নির্যাতনের মাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকায় ১৯৮০ সালে প্রণীত হয় যৌতুক নিরোধ আইন। পাশাপাশি নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ২০০০ সালে প্রণীত হয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩)।

এই আইন দুটি উদ্দেশ্য পূরণে কতখানি সক্ষম হয়েছে, এর মাধ্যমে নারী ও শিশুরাই বা কতটুকু প্রতিকার পেয়েছে, নির্যাতন প্রতিরোধে আইন দুটির প্রয়োগে প্রতিবন্ধকতা এবং এর উত্তরণের সম্ভাব্য উপায় কী হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন। আর আমাদের দেশে কোনো অপরাধের ঘটনা বেশি ঘটলে বা এ নিয়ে গণমাধ্যমে আলোচনা হলে আইন প্রণয়ন নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়। বিষয়টি যেন এ রকম যে আইনের অভাবেই এত দিন অপরাধটি হয়ে আসছিল বা আইন না থাকার ফলেই অপরাধীদের শাস্তি দেয়া যাচ্ছিল না। তবে বাস্তবে দেখা যায়, প্রায় সব বিষয়েই আমাদের আইন রয়েছে। যুগের প্রয়োজনে কিছু কিছু নতুন আইন করা প্রয়োজন হলেও নির্যাতন বা ধর্ষণের মতো অপরাধ দমনের জন্য নতুন করে আইনের প্রয়োজন নেই।

ধর্ষণের মতো অপরাধ দমনের জন্য ব্রিটিশরা ১৮৬০ সালেই দেশে আইন করে গেছে। ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি আইন অপরাধ বিজ্ঞানের একটি অভিধান। অনেক অপরাধের মৌলিক নীতিই এখানে উল্লেখ আছে। প্রয়োজনে বিশেষ ক্ষেত্রে নতুন নতুন আইন করতে হয়েছে। যেমন- দ্রুত বিচার আইন, নারী ও শিশু নির্যাতন ও দমন আইন ইত্যাদি। এ আইনগুলো মূলত মূল অপরাধের ক্ষেত্রটিকে আরও প্রসারিত করেছে, যাতে অপরাধীদের সাজা নিশ্চিত করা যায় অথবা বিচারপ্রক্রিয়া আরও দ্রুত করা যায়।

আসল কথা হচ্ছে, শুধু আইন করে অপরাধ দমন করা যায় না। যদি তা-ই হতো তবে দ্রুত বিচার আইন বা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মতো কঠিন আইন হওয়ার পরে এ দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন হতো না। আইন করে বা কঠিন দণ্ড আরোপ করা হলেই অপরাধ দমন হয় না। আইন সহজ হতে পারে, দণ্ড লঘুও হতে পারে-মূল কথা হলো আইনের প্রয়োগ ও সব অপরাধীর সাজা নিশ্চিত করা।

একই অপরাধে এক আসামির ফাঁসি আরেক আসামির খালাস ন্যায়বিচারের পরিপন্থি। আইনে যদিও বলা হয় হাজার অপরাধী মুক্তি পাক, কিন্তু একজন নিরপরাধ যেন সাজা না পায়। সেটি ন্যায়বিচারের একটি মৌলিক নীতিও বটে। এর মানে এই নয় যে হাজার অপরাধীকে মুক্তি দিয়ে দুই-একজনকে ফাঁসি দিতে হবে। এই নীতির মানে হলো, স্বচ্ছ বিচারপ্রক্রিয়া নিশ্চিত করা, যেখানে সব অপরাধীকেই আইনের আওতায় আনা হবে এবং কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া হবে না। কিন্তু আমাদের দেশে একদিকে যেমন নিরপরাধ ব্যক্তিদের বিচার হয় আবার অনেক অপরাধীও ছাড়া পায়।

প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবে ও সামাজিক চাপের মুখে অনেক নারীই ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হন। আর আইনের ফাঁক-ফোকর তো আছেই। ‌কিন্তু আবার উল্টো চিত্রও দেখা যায়। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে, পারিবারিক চাপে বা প্রতিশোধ নিতে অনেক ক্ষেত্রে মিথ্যা মামলাও করা হয়। আইনের অপব্যবহার করে অনেকেই মিথ্যা মামলা করেন। ফলে আসামিপক্ষ সাজা এড়াতে মীমাংসা করতে বাধ্য হয়। অনেক সময় মামলার বাদীরা টাকার বিনিময়ে মামলা তুলে নেন। আইনে মিথ্যা মামলার জন্য সাত বছরের কারাদণ্ডের বিধান থাকলেও ভুক্তভোগীরা মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েই সন্তুষ্ট থাকেন (নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৭ (১) ধারা)। এটি হচ্ছে আইনের অপব্যবহার।

আইনের এই অপব্যবহার রোধে মিথ্যা মামলাবাজ নারী বা বাদী বা পরিবারকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এক দিকে অনেক অপরাধী আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বের হয়ে আসে, যার ফলে নির্যাতিতা নারী ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হন আবার অন্যদিকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরপরাধকেও ফাঁসানো হয়।

এ রকম নানা অবিচার ও অনিয়মের বেড়াজালে হারিয়ে যায় এ দেশের অনেক নির্যাতনের কাহিনি। সব ঘটনা গণমাধ্যমে আসে না, মামলাও হয় না। বিভিন্ন কারণে অনেক ভুক্তভোগী মামলাও করতে পারেন না। মামলা করার সাহসও থাকে না। মামলার খরচ মেটানোও তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। উকিলের খরচ, যাতায়াতের খরচ আরও কত কী। এ ছাড়া আইনের জটিল প্রক্রিয়া তো আছেই।

নারীর বিষয়ে সমাজের পুরুষের বিশেষ করে তরুণ সমাজের যে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গি এবং মানসিকতা, তা থেকে আধুনিক যুক্তিযুক্ত দৃষ্টিভঙ্গি অর্জনের জন্য সচেতনতার প্রয়োজন। সমাজের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীসমাজকে সব ক্ষেত্রে সম-অংশগ্রহণের সুযোগ করে না দিলে এবং নারী ও কন্যাশিশুদের বিরুদ্ধে চলমান সহিংসতা বন্ধ না হলে সমাজ ও রাষ্ট্র এগিয়ে যেতে পারবে না। ধর্ষণ, গণধর্ষণ, হত্যা, এসিড নিক্ষেপ, উত্ত্যক্ত, যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন, বে-আইনি ফতোয়ার বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। কিশোরী নির্যাতন বন্ধে নীরবতা ভেঙে এগিয়ে আসতে হবে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও নিমূ‌র্লের কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সচেতনতা মূলক কর্মসূচিতে নারী ও কন্যাশিশুদের যুক্ত করতে হবে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও নিমূ‌র্ল কর্মসূচিতে পুরুষ সমাজকে যুক্ত করে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।

পরিশেষে বলতে চাই, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা আপসযোগ্য নয়। কিন্তু আপস হচ্ছে। যেকোনো কারণেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ হতে পারে। সব ক্ষেত্রেই মামলা করতে হবে, এটা ঠিক না। মামলার বাইরে সামাজিক ও পারিবারিক সহায়তায় কীভাবে সমাধান করা যায়, সেটার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।আরেকটা বিষয় দেখা যায়, বাদী-বিবাদী প্রায় সময়ই অপ্রাসঙ্গিক তথ্য দিয়ে মামলাকে ন্যায়বিচারের পরিবর্তে ক্ষতিগ্রস্ত করেন। ঘটনা যা সেটা দিয়েই মামলা দায়ের করা উচিত। মামলার ভুক্তভোগী ও সাক্ষীর নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ।

একটা মেয়ে কখন মামলা করতে আসে, যখন তার দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়। তাই যেকোনোভাবেই হোক না কেন আমরা আইনি সহায়তা প্রদান করতে চেষ্টা করি, যাতে ভুক্তভোগী নারীকে কিছুটা সহায়তা করা যায়। আর সংসারে নারীর অবদানকে মূল্য দিয়ে দাম্পত্য জীবনে অর্জিত সম্পত্তিতে নারীর অধিকার দিতে হবে। আর যুবসমাজকে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে যুক্ত করা এখন সময়ের দাবি। স্বাভাবিক, সুস্থ ও সমতা ভিত্তিক সমাজ বির্নিমাণে তাই সব প্রতিষ্ঠানকে কাজ করতে হবে। তাহলেই এ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এ ক্ষেত্রে মানুষকে আরও সচেতন করতে হবে। প্রশাসনকে আরও জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে।জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
এএজেড

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ, ডিপজলকে শোকজ

ডিপজল। ছবি: সংগৃহীত

রাত পোহালেই বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এ নিয়ে এফডিসিতে উৎসবের আমেজ বইছে। এরইমধ্যে ডিপজলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন সাদিয়া মির্জা নামে এক অভিনেত্রী।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আমাদেরকে ভিডিও প্রমাণসহ এমন অভিযোগ করেন সাদিয়া মির্জা নামক এক প্রার্থী। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ডিপজলকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে একটি কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছি। এদিকে সঠিক কারণ দর্শাতে না পারলে ডিপজলের প্রার্থিতা বাতিল বলে গণ্য হবে বলে জানান বর্তমান নির্বাচন কমিশনার খসরু।

এছাড়াও যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় ডিপজলের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করার সম্ভাবনা রয়েছে সাধারণ সম্পাদক পদে থাকা নিপুণ আক্তারের।

এ নিয়ে মিশা-ডিপজল প্যানেলের চিত্রনায়ক আলেকজান্ডার বোকে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আমরা এমনটি আভাস পেয়েছি নির্বাচনের আগেই একটি পক্ষ নির্বাচন বাঞ্চালের চেষ্টা করবে। তবে আমরা চাইবো সুষ্ঠ নির্বাচন হোক। এমন অভিযোগ আমরা অন্য প্যানেল থেকেও অনেক পেয়েছি কিন্তু তাতে আমরা গুরুত্ব দেইনি।

তিনি আরও বলেন, ডিপজল ভাই মহৎ মানুষ এমনিতেই দানবীর, সবাইকে টাকা-পয়সা দান করে থাকেন। এটা নিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে বিষয়টি সুখকর হবে না।

তবে এ বিষয় নিয়ে কলি-নিপুণ প্যানেলের কেউ মুখ খোলেননি। কথা বলতে চাননি মিশা-ডিপজল পরিষদের অন্য সদস্যরাও।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৯টায় শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে ভোটগ্রহণ শুরু হবে। দুপুরে বিরতি দিয়ে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চলবে এই ভোট। পরে ভোট গণনা শেষে একইদিন ফলাফল প্রকাশ করা হবে। নির্বাচন উপলেক্ষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশ জোরদার করা হয়েছে।

টাঙ্গাইলে সেরা ওসি হলেন আহসান উল্লাহ্, পেলেন শ্রেষ্ঠ সম্মাননা পুরস্কার

টাঙ্গাইলে সেরা ওসি হলেন আহসান উল্লাহ্। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

মাদক, সন্ত্রাস, বাল্যবিয়ে, ইভটিজিং- জুয়ারোধ, চাঞ্চল্যকর হত্যাকন্ডের দ্রুত সময়ে রহস্য উদ্‌ঘাটন করে আসামিদের গ্রেফতার, অপরাধ দমন এবং সর্বাধিক ওয়ারেন্ট তামিল লক্ষ্য পূরণ করাসহ ভালো কাজের বিশেষ ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ টাঙ্গাইল জেলার মধ্যে আবারও শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মো. আহসান উল্লাহ্। তিনি জেলার ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

এ নিয়ে জেলার মধ্যে চতুর্থবারের মতো সেরা ওসি নির্বাচিত হলেন তিনি। একইসাথে ভূঞাপুর থানাও শ্রেষ্ঠ হয়েছে এবং থানার এসআই, এএসআই ও কনস্টেবলসহ ৯ জন ক্রেস্ট সম্মাননা পেয়েছেন। তার এই অর্জনে উপজেলার সুধীজন, বিভিন্ন সামাজিক সেবামূলক সংগঠনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে জেলা পুলিশের উদ্যোগে পুলিশ লাইন্স মাল্টিপারপাস শেডে আয়োজিত মাসের কল্যাণ সভায় তাকে শ্রেষ্ঠ ওসির সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

এ সময় ওসি আহসান উল্লাহ্’র হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট (পুরস্কার) তুলে দেন জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার (বিপিএম) (অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত)। এতে জেলা পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাসহ জেলার বিভিন্ন থানার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ্ বলেন, জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার মহোদয় (অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) এর দিক-নির্দেশনায় মাদক, সন্ত্রাস, বাল্য বিয়ে, ইভটিজিংরোধ ও চাঞ্চল্যকর হত্যাকন্ডের দ্রুত সময়ে রহস্য উদ্‌ঘাটন ও আসামিদের গ্রেফতারসহ বিশেষ অবদানের জন্য চতুর্থ বার আমাকে শ্রেষ্ঠ ওসি ও ভূঞাপুর থানাকে শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত করা হয়।

ওসি আহসান উল্লাহ্ আরও বলেন- ভূঞাপুর থানার কর্মরত সকল পুলিশ সদস্য এবং উপজেলার সকলের সার্বিক সহযোগিতায় ভূঞাপুর থানার এমন এক সাফল্যময় গৌরব অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এই অর্জন সকলের। তাছাড়া জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি ও থানা নির্বাচিত হওয়ায় আমাদের দায়িত্ববোধ আরও বেড়ে গেল। ভূঞাপুর থানা সকলের জন্য উন্মুক্ত। আগামী দিনগুলোতে আরও ভালো কিছু করতে ভূঞাপুর উপজেলাবাসীর সার্বিক সহযোগিতা সহযোগিতা কামনা করছি।

ক্যাপশন: সম্মাননা ক্রেস্ট গ্রহণ করছেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ্।

দেশে প্রতিদিন সড়কে প্রাণ হারাচ্ছেন ১৬ জনের বেশি

সড়ক দুর্ঘটনা। ফাইল ছবি

দেশে বেড়েই চলেছে সড়ক দুর্ঘটনা। লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। ফরিদপুরে ঈদের পরদিন সড়কে মৃত্যু হয় ১৪ জনের। এই রেশ কাটতে না কাটতেই ঝালকাঠিতে সড়কে প্রাণ ঝরে আরও ১৪ জনের। গত তিন মাসের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রতিদিন সড়কে প্রাণ যাচ্ছে ঝরছে ১৬ জনের বেশি।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ৬৩০টি। এতে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৪৭৭ জনের। আহত হয়েছেন ১ হাজার ৯২০ জন।

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৩৭টি, এতে মৃত্যু হয়েছে ৪০৪ জনের আর আহত হয়েছেন ৫১৪ জন। ফেব্রুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৬৯টি। এতে মারা গেছেন ৫২৩ জন আরও আহত হয়েছেন ৭২২ জন।

মার্চে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে হয় ৬২৪টি। এতে আহত হন ৬৮৪ জন। মারা গেছেন ৫৫০ জন। এপ্রিল মাসের ১৬ দিনে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৬৯টি আর মৃত্যু হয়েছে ২৮৪ জনের। গড়ে প্রতিদিন সড়কে মৃত্যু হচ্ছে ১৬ জনেরও বেশি।

গত ৩ মাসে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেলে, যার সংখ্যা ৫৫৪টি, আর এতে মৃত্যু ৫০৪ জনের। আর সার্বিকভাবে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু চট্টগ্রাম বিভাগে।

বিআরটিএ বলছে, গেল বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় দুর্ঘটনা এবং মৃত্যু দুটোই এবছর প্রথম তিন মাসে বেড়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ, ডিপজলকে শোকজ
টাঙ্গাইলে সেরা ওসি হলেন আহসান উল্লাহ্, পেলেন শ্রেষ্ঠ সম্মাননা পুরস্কার
দেশে প্রতিদিন সড়কে প্রাণ হারাচ্ছেন ১৬ জনের বেশি
টানা তিনদিন চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড, হিট অ্যালার্ট জারি
তীব্র গরমে পশ্চিমবঙ্গে স্কুল ছুটি ঘোষণা
ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘের 'প্রিমিয়াম টিম': সেনাপ্রধান
আগামীকাল ঢাকা মাতাবেন আতিফ আসলাম
এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে আ.লীগের নির্দেশনা
নওগাঁয় শান্ত বাহিনীর শাস্তির দাবিতে ঝাড়ু মিছিল ও মানববন্ধন
বিএনপি এখনও টার্গেটে পৌঁছাতে পারেনি: রিজভী
বিরামপুরে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত
বোতলজাত সয়াবিনের দাম বাড়ল, কমল খোলা তেলের
মুস্তাফিজের বদলে ইংল্যান্ড পেসারকে দলে নিল চেন্নাই!
যে কারণে দুবাইয়ে এমন ভারী বৃষ্টিপাত ও ভয়াবহ বন্যা
গায়েব হয়ে গেল জোভান-মাহির ফেসবুক ফ্যানপেজ!
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরান একাই যথেষ্ট: চীন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ধান শুকানোর জায়গা দখল নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৫০
ইসরায়েলের সঙ্গে গুগলের চুক্তি, প্রতিবাদ করায় চাকরি হারালেন ২৮ কর্মী
আইপিএল থেকে বিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটে ম্যাক্সওয়েল