রবিবার, ৫ মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

লটারির মাধ্যমে ভর্তির যৌক্তিকতা

আমাদের দেশে সরকারি ও বেসরকারি সব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির প্রক্রিয়ায় লটারি পদ্ধতি চালু হয়েছে ২০২০ সাল থেকে। বিদ্যালয়ে ভর্তির লটারি পদ্ধতিটি এভাবে শুরু হয় করোনা মহামারির সময়ে। তখন এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকার পর এই ব্যবস্থাতেই নতুন ক্লাসে ভর্তি নেওয়া হয় শিশুদের। এর আগ পর্যন্ত ভর্তি-যুদ্ধ নামে এক ভয়াবহ যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যেতে হতো কোমলমতি শিশুদের।

চার থেকে ছয় বছর বয়সী শিশুদেরও সারা বছর ধরে ভর্তি কোচিংয়ের নামে অমানুষিক চাপ দিয়ে এই সমাজ তাদের ভর্তি যুদ্ধে নামিয়ে দিত। তাই শিক্ষার্থীদের ওপর শারীরিক ও মানসিক চাপ কমাতে এবং ভর্তির তদবির বন্ধে এই সিদ্ধান্ত। যদিও আগে বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে লটারি ও অন্যান্য শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হতো। এতে মেধা যাচাই করার সুযোগ ছিল বলে অনেকে মনে করেন, আসলেই কি তাই? মেধ্যা যাচাইয়ের পরীক্ষা হয় নাকি কে কতটা তথ্য মুখস্থ করে ধরে রাখতে পারে এবং ভর্তি পরীক্ষার খাতায় সেগুলো উগরে দিতে পারে তার পরীক্ষা হয়? ঢাকা সিটির নামকরা কিছু বিদ্যালয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন এসেছিল--বাংলাদেশে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার যাত্রা কবে শুরু হয়।

এটি দ্বিতীয় শ্রেণির জন্য কি ধরনের প্রশ্ন? অতি সৃজনশীল না বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্ন? দেশের মহানগর পর্যায়ের পরে ২০২১ সাল থেকে জেলা পর্যায়েও চালু হয় লটারি পদ্ধতি। তথাকথিত ভালো স্কুল নামে যেগুলো পরিচিত সেগেুলোতে আসন সংখ্যা যত, তাতে এই সব খুদে যোদ্ধাদের সবার সংকুলান হতো না স্বাভাবিকভাবেই, ফলে যুদ্ধের মাঠে মারা যেত তাদের উৎসাহ, উদ্দীপনা ও ভেতরকার মানসিক শক্তি। নিজেদের আকঙ্ক্ষা অনুযায়ী সন্তান ভর্তি করাতে না পারার শোকে অভিভাবকগন তাদের সন্তানদের মানসিক অবস্থার খবার রাখার সময় পান না। তাই অভিভাবকদের কেউ কেউ এই যুদ্ধের বিরোধী ছিলেন, লটারি ব্যবস্থা তাদের জন্য আর্শীবাদ হয়ে এসেছে। কোচিং, ভর্তি বাণিজ্য, শিশুদের অন্যায্য প্রতিযোগিতার চাপ থেকে রক্ষা করতে এই ব্যবস্থা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলছেন শিক্ষামন্ত্রী।

গত ২৫ নভেম্বর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লটারির মাধ্যমে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। এ বছর ক্যাচমেন্ট এরিয়া ৪০ শতাংশের পরিবর্তে ৫০শতাংশ করার কথাও তিনি বলেছেন। ক্লাস্টারভিত্তিক ভর্তির ক্ষেত্রে লটারিতে পাঁচটি স্কুলের চয়েস দেওয়া যাবে।

এতে মেধা দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও অনেক শিক্ষার্থী আশানুরূপ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা লাভের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে বলে অনেকেই মনে করছেন। তবে এ বছর লটারি ব্যবস্থার বেশ কিছু দুর্বলতা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। পত্রপত্রিকায় খবর এসেছে যে, একই তালিকায় এক শিশুর নাম বার বার এসেছে। লটারি ব্যবস্থার ফাঁকফোঁকর খুঁজে বের করে অনিয়ম শুরু করেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অসৎ শিক্ষক-কর্মচারী থেকে শুরু করে কিছু অভিভাবকরাও। একই শিশুর নামে অবৈধভাবে একাধিক জন্মসনদ তৈরি করে প্রাণপনে তারা পছন্দের স্কুলে সন্তানকে ভর্তির চেষ্টা চালাচ্ছন। ভর্তি লটারিতে অনেক শিক্ষার্থীর নাম ৬-১০বার আসার অভিযোগও উঠেছে, সংবাদপত্রে সংবাদ এসেছে যে, একজন শিক্ষার্থীর নাম দশবার মেধা তালিকায় ও চারবার অপেক্ষমান তালিকায় এসেছে। এ কেমন খবর? এসব কারণে প্রশ্নের মুখে পড়ছে পুরো পদ্ধতি। ভাগ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়া অভিভাবকদের অসন্তোষ তো রয়েছেই। অনেকে বলছেন, লটারির কারণে অনেক মেধাবী শিশু ভালো স্কুলে ভর্তি হতে পারছে না। জীবনের সব পর্যায়েই যেহেতু পরীক্ষা দিতেই হয়, শৈশব থেকেই তার অভ্যাস করাতে হবে, এমন যুক্তিও দিচ্ছেন কেই কেউ। লটারিতে সুযোগ না পেয়ে শিশুদের মানসিক যন্ত্রণার কথাও বলছেন অনেক অভিভাবক।

এবার সরকারি ও বেসরকারি মিলে মোট তিন হাজার ৩৯২ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৫৪০টি সরকারি বিদ্যালয় এবং মহানগর ও জেলার সদর উপজেলা পর্যায়ে অবস্থিত ২ হাজার ৮৫২টি বেসরকারি বিদ্যালয় এ ভর্তি কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে। মোট ৯ লাখ ১২ হাজার ৬৪৪টি আবেদন গ্রহন করা হয়েছে। এবার বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোতে আসন আছে ৯ লাখ ২৫ হাজার ৬৬টি। অর্থাৎ রাজধানী, বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এ লটারি পদ্ধতি চালু রয়েছে। বাকি গ্রামীণ বিদ্যালয়গুলোতে এ ধরনের প্রতিযোগিতা নেই। প্রতিটি শিশুই কোনো না কোনোভাবে মেধাবী। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় সেই মেধা কীভাবে প্রস্ফূটিত করতে হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সেটি কীভাবে বের করবে তার সঠিক কৌশল নেই। শিক্ষার্থীদেরও সামর্থ্য, আগ্রহ এসব কিছুই খেয়াল না করে শুধু তথ্য গিলানো হয় এবং খাতায় যার উদগিরণ বলে দেয় একজন শিক্ষার্থী কতটা মেধাবী।

ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা অনেক কিছু জানতে পারে, ব্যস্ত থাকে কিন্তু লটারির মাধ্যমে ভর্তির প্রক্রিয়ায় এ বিষয় দুটোতে ছেদ পড়ে বলেও বলছেন কেউ কেউ। বিষয়টি অমূলকও নয়, কিন্তু শিশুদের যে আনন্দের মাধ্যমে শেখানো, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাদের জন্য আনন্দের ব্যবস্থা করা সে বিষয়গুলো কিন্তু উপেক্ষিত থেকে যায় যদি তথাকথিক ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের ভর্তি করা হয়। ভর্তি পরীক্ষার ফলে তাতে আরও ছেদ পড়ে। স্কুল সমাপনী পরীক্ষা, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে হয় যে বয়সে, সে বয়সে হয়তো এই চাপ নেওয়া যায়, কিন্তু স্কুলপড়ুয়া ছোট ছোট শিশুদের সেই চাপ দেওয়া কোনোভাবেই বিজ্ঞানসম্মত নয় এবং তাদের প্রতি এটি সঠিক মানবিক আচরণও নয়। শিশুরা তাদের বাড়ির পাশে নিজ ক্যাচমেন্ট এরিয়ার বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করবে, এটি আদর্শিক কথা, যুক্তির কথা একং হওয়ার কথাও তাই। তাহলে ট্রাফিক জ্যাম কম হবে, শিশুর শারীরিক ও মানসিক কষ্ট লাঘব হবে, অভিভাবকদের অর্থ, সময় এবং টেনশন কমবে আর দেশের বিদ্যালয়গুলো সমতা অর্জনের দিকে আগাবে,অসুস্থ প্রতিযোগিতা দূর হবে যদি তথাকথিত ভর্তি পরীক্ষা না নেওয়া হয়। কিন্তু লটারির মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়ায় যেসব খবর এসেছে সেগুলোও সুখকর নয়।

এ ছাড়া, আমাদের সরকারি প্রাথমিকের শিক্ষা দু’ চারটে ব্যতিক্রম ছাড়া এখনো আনন্দময় তো নয়ই, মানসম্মত শিক্ষা থেকেও অনেক দূরে। ফলে একটু সচ্ছল অভিভাবক হলেই তার সন্তানকে আর সরকারি প্রাথমিকে দিতে চান না অন্তত যেখানে কিন্ডারগার্টেন আছে। তবে, মাধ্যমিকে প্রায় ৯৮ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বেসরকারি। আর এই বেসরকারি হওয়ার কারণে কোনো ধরনের সমতা কিংবা সাধারণ বৈশিষ্ট্য নেই বিদ্যালয়গুলোতে। নেই প্রয়োজনীয় সংখ্যক কিংবা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বা মানসম্মত ও বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক। যেসব বিদ্যালয়ের নাম ডাক আমরা শুনি সেগুলো বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কমিটির বদৌলতে হয়েছে।

সেসব প্রতিষ্ঠানে রাষ্ট্রীয় আনুকূল্যে মানসম্মত শিক্ষা আসেনি। অতএব, তাদের অধিকার আছে তাদের পছন্দমতো শিক্ষার্থী ভর্তি করানার। তারা শিক্ষকদের সেভাবে তৈরি করেন, প্রতিষ্ঠানের সার্বিক পরিবেশ বহু ত্যাগ তিতিক্ষার মাধ্যমে, বহু অবাঞ্জিত অবস্থা মোকাবিলা করে ধরে রেখেছেন। এসব প্রতিষ্ঠানে একটি নির্দিষ্ট মানের শিক্ষার্থী ভর্তি করার অধিকার তাদের আছে। তা না হলে মানসম্মত শিক্ষার কোনো উদাহরণই থাকত না। লটারির মাধ্যমে ভর্তির ফলে এ বিষয়টিতে বড় ধরনের এক ধাক্কা লেগে যাবে। কারণ মানসস্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকরা এখনো সেভাবে প্রস্তুত নয় যে, একই শ্রেণিতে বহু ধরনের শিক্ষার্থীদের সমাহার ঘটানো এবং সে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে পাঠদান করা। তবে, সমাজ যেভাবেই চিন্তা করুক না কেন, শিক্ষার্থীদের অর্থাৎ দেশের ভবিষ্যত নাগরিকদের অধিকার আছে দেশের ভালো প্রতিষ্ঠানে, তাদের বাড়ির কাছে প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করার।

জন্মসনদ তোলায় অনিয়ম, স্কুলে দুর্নীতি, এই ঘটনাগুলো দেশের সব পর্যায়ে অনিয়ম-দুর্নীতি সংক্রামক ব্যাধির মতো ছড়িয়ে পড়ছে। এটি রাষ্ট্রকে দেখতে হবে। তা না হলে অসদুপায় যারা অবলম্বন করেন, তারা ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রেও একই ধারা বজায় রাখবেন। আমাদের শিক্ষাব্যব্যবস্থার সংকট নিযে গোটা একটা গ্রিক ট্রাজেডি লেখা ফেলা সম্ভব বলে একজন মন্তব্য করেছেন। কথাটি অমূলক নয়। আমরা শিক্ষার সাথে যারা সরাসরি সংযুক্ত তারা সহজেই বলতে পারি। তারপরেও বলতে হচেছ ভর্তিযুদ্ধ নামে শিশুদের উপর যে নির্যাতন চালানো হয়েছে তা আবার ফিরে আসুক তা কারোরই কাম্য নয়। কভিড পরবর্তী সময়ে ২০২১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষা বাতিল করে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করার কথা ঘোষণা করা হলে এর সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে তখন থেকেই অভিভাবক ও শিক্ষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। কেউ বলেছিলেন ভাল পড়ালেখা করলেও ভাল স্কুলে ভর্তি হওয়ার নিশ্চয়তা নেই। তাই প্রস্তুতি থাকলেও পছন্দের বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া থেকে অনেক শিক্ষার্থী বঞ্চিত হয় এবং হবে। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, এ পদ্ধতিতে ভর্তি নেওয়া হলে সমাজে ধনী ও গরীবের বৈষম্য কমতে পারে।

আবার কোনো কোনো অভিভাবক মনে করেন, মেধা দক্ষতা ও সৃজনশীলতার ভিত্তিতে শিক্ষার্থী নির্বাচন করা দরকার। ভর্তি পরীক্ষা হলে নিজের যোগ্যতায় শিক্ষার্থীর পছন্দের বিদ্যালয়ে ভর্তি নিশ্চিত করতে পারে। লটারিতে সে সুযোগ থাকে না। আবার লটারির পক্ষের কেউ কেউ মনে করেন যে, কারও সন্তান তুলনামূলক কম মেধাবী হলে তাকে একটি বেনামি প্রতিষ্ঠানেই পড়তে হয়। যার মেধা ভালো সে সবসময় নামীদামী প্রতিষ্ঠানে পড়বে। এটি চলতে থাকলে ধনী আরও ধনী, গরিব আরও গরিব হওয়ার মতো অবস্থা চলতে থাকবে, যা চলতে দেওয়া উচিত নয়। এতে সমাজে বৈষম্য আরও প্রকট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এটিও ফেলে দেওয়ার মতো কথা নয়। তবে, শিক্ষা ও সমাজের পাহাড়সম বৈষম্যের বিষয়ে আর নীরব থাকাও ঠিক নয়। কোনো এক জায়গা থেকে শুরু করা উচিত, তাতে সমস্যা একটু হবে। তারপরেও শুরু করা উচিত। লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি তেমনই হয়তো একটি পদক্ষেপ। কিন্তু এখানকার ঘটে যাওয়া অনিয়মগুলোও কোনোভাবে উপেক্ষা করার মতো নয়।

মাসুম বিল্লাহ: প্রেসিডেন্ট. ইংলিশ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইট্যাব)

 

 

Header Ad

টাঙ্গাইলে বজ্রপাতে বাবুর্চির মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে হোটেলের কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে ওয়াজেদ আলী খান (৫০) নামে এক হোটেল বাবুর্চির মৃত্যু হয়েছে। ওয়াজেদ আলী খান উপজেলার ২নং ঘাটাইল ইউনিয়নের খিলপাড়া এলাকার মৃত সোনা খার ছেলে।

রবিবার (০৫ মে) সকালে উপজেলার ঝাইকা রাস্তায় নদীর পাড় থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে শনিবার (০৪ মে) রাত ১১টায় উপজেলায় ফতেরপাড়া-খিলপাড়া রোড এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রায়হান খান ও নিহতের পরিবার জানিয়েছেন, শনিবার রাতে হোটেলে কাজ শেষ করে ঘাটাইল থেকে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন।

এ সময় আকাশে ঘনঘন বজ্রপাত হচ্ছিল। রাত ১১ টায় ফতেরপাড়া-খিলপাড়া রোডে একটি বজ্রপাত ওয়াজেদ আলীর ওপর পড়লে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

রবিবার সকালে স্থানীয়রা তার মরদেহ দেখতে পেয়ে পরিবারকে খবর দেয়। পরে ঝাইকা রাস্তায় নদীর পাড় থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওয়াজেদ আলী একজন হোটেল বাবুর্চি ছিলেন।

এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঘাটাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া জানান, শনিবার রাতে বজ্রপাতে এক হোটেল শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন অংশ বজ্রপাতে ঝলসে গেছে।

জিম্বাবুয়ে-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজের ফলাফল কোনো কাজে আসবে না : সাকিব

ফাইল ছবি

জিম্বাবুয়ে সিরিজ এবং তার পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজের ফলাফল আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের জন্য কোনো কাজেই আসবে না বলে জানিয়েছেন সাকিব আল হাসান।

গতকাল বিকালে সাবেক জাতীয় দলের সতীর্থ পেসার রুবেল হোসেনের বাইকের শো রুম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে একথা জানান তিনি। সেই সাথে এই গরমে ডিপিএলের সুপার লিগ পর্বের খেলা চালানোকে অমানবিক বলেও আখ্যা দেন সাকিব।

নবম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে টাইগারদের প্রস্তুতির প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সাকিব বলেন, ‘দেখুন জিম্বাবুয়ে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খেলা বিবেচনা করে আমরা যদি বিশ্বকাপ চিন্তা করি, সেটা আমার কাছে মনে হয় ভুল হবে। বিশ্বকাপ সম্পূণ ভিন্ন একটা জায়গা। সেখানে আমরা যতবেশী চাপ নিতে পারব তত বেশি ভালো খেলার সম্ভাবনা থাকবে। সর্বশেষ আমরা যখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলেছি, আমার কাছে মনে হয় আমরা মোটামুটি একটা পারফরম্যান্স করেছিলাম। সেটা খুব ভালো না হলেও কেউ বলবে না যে খুব একটা খারাপ ছিল। আমি আশা করব সেখান থেকে যদি আমাদের শুরু হয় তাহলে এই বিশ্বকাপটা হবে আমাদের সেটাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার। সেটা যদি করতে হয় তাহলে আমাদের অবশ্যই প্রথম রাউন্ডের (বিশ্বকাপে) তিনটা ম্যাচে জিততে হবে, তা যদি করতে পারি তাহলে সেটা আমাদের জন্য মোটামোটি ভালো একটা অর্জন হবে সেখান থেকে পরবর্তীতে চিন্তা করলে আমার মনে হয় ভালো হবে।’

জিম্বাবুয়ে সিরিজ শেষেই চলতি মাসেই বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে যাবেন টাইগাররা। বিশ্বকাপের আগে এই সিরিজ খেলার প্রসঙ্গে সাকিব বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে আমাদের খেলার বড় কারণ হলো কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো। সেইসঙ্গে সেই জায়গাটা সম্পর্কে জানা। আমাদের খুব বেশি খেলোয়াড় নেই যারা সেখানে খেলেছে। ফ্লোরিডাতে হয়তো আমাদের কয়েক জন খেলোয়াড়ের খেলার অভিজ্ঞতা আছে। আমাদের ঐ জিনিসটা কাজে লাগবে যে আমরা কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারব। তবে অবশ্যই এটা আদর্শ প্রস্তুতি না। আমি আগে যেটা বললাম যে আপনি যখন একটা কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলে যাবেন... যখন নিউজিল্যান্ড এবং পাকিস্তানের মতো দলের সঙ্গে খেলে বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েছিলাম স্বাভাবিকভাবে আমরা ভালো একটি প্রস্তুতি নিয়ে খেলতে গিয়েছিলাম। সেই দিক দিয়ে চিন্তা করলে অবশ্যই এটা আদর্শ নয় তবে মনে হয় এটাই আমাদের কাছে সেরা সুযোগ ছিল প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য।’

১৫ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত

গত ১৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি। তিনি বলেন, ‌‌‌‌‌‌‌ এই অর্জনকে ধরে রাখতে হবে। মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মিত হচ্ছে, চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শীঘ্রই শুরু হবে।

আজ (রবিবার, ০৫ মে) চট্টগ্রামে ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউটে চট্টগ্রামের স্পেশাল ব্যাচ-২০২৩ এর শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নৌ-সংস্থায় (আইএমও)-তে 'সি' ক্যাটাগরির সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। পায়রা বন্দর নির্মিত হচ্ছে, মংলা বন্দর, চট্টগ্রাম বন্দরের আপগ্রেডেশন হচ্ছে। বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ছয়টি জাহাজ সংগ্রহ করেছে। আরো জাহাজ সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে। বাংলাদেশে একটি মাত্র মেরিন একাডেমি ছিল। শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে চারটি নতুন মেরিন একাডেমী প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আরো তিনটি মেরিন একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হবে। বিশ্বের অন্যতম মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়' শেখ হাসিনার সরকারের সময় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউটের (এনএমআই) প্রশিক্ষণের গুণগতমান, আন্তর্জাতিক নৌ-সংস্থা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মেরিটাইম সেফটি এজেন্সী কর্তৃক স্বীকৃতি প্রাপ্ত। এ গুণগতমান অব্যাহত রাখতে হবে। চট্টগ্রামের ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট এর পর মাদারীপুরে ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, রাজশাহী এবং মেহেরপুর স্থাপনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ডিজিটালাইজেশনের কারণে বিশ্বনৌবহর দ্রুতগতিতে উন্নত থেকে উন্নতর হচ্ছে। সে সাথে তাল মিলিয়ে জাহাজী অফিসার ও নাবিকদেরকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। আমাদের ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট আন্তর্জাতিক নৌ-সংস্থার এসটিসিডব্লিউ কনভেনশন যথাযথভাবে অনুসরণ করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে আসছে। দিনবদলের পালায় বর্তমান সরকারের ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার নিমিত্তে দেশের সকল সেক্টর একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। সে প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ নিম্নমধ্য আয়ের দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল (ডেভেলপিং) দেশে এবং উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার পথে এগিয়ে চলছে। আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট দেশে পরিণত হবে। এরই অংশীদার হিসাবে শিপিং সেক্টরও জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সরকারের নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে। শিপিং সেক্টরে দক্ষ মানব সম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে ট্রেনিং ইন্সটিটিউটসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তোমরা দেশপ্রেমকে বুকে ধারণ করে সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে তোমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে যাতে করে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি সমুজ্জল থাকে। তোমরা দেশের এম্বাসেডর হিসেবে কাজ করবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ দিয়ে গেছেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। আমরা বঙ্গবন্ধুর রক্তের ঋণ পরিশোধ করতে পারবোনা। কিন্তু তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারবো। দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারলেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে।

এবারের স্পেশাল ব্যাচে ১৭৭ জন প্রশিক্ষণার্থী প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এর মধ্যে ডেক- ৮৮, ইঞ্জিন- ৭৯ এবং স্টুয়ার্ড- ১০। তাদের মধ্যে কেউ কেউ এস.এস.সি পাশ। আবার কেউ বহি:নোঙ্গরে মার্চেন্ট জাহাজে ক্যাজুয়েল বেসিসে কাজ করছেন। কেউ শোর রিপেয়ার টিমের সাথে, কেউ শিপ রিপেয়ার ওয়ার্কশপ/শিপইয়ার্ড/ড্রাইডকে ক্যাজুয়েল অথবা স্থায়ীভাবে কাজ করছেন। কেউ পানামা সিডিসিধারী, কেউ দেশে/বিদেশে নন কনভেনশনাল জাহাজে টাগ বোট/সাপ্লাই বোট/বার্জ ইত্যাদিতে চাকরি করছেন। কারো কারো অভ্যন্তরীণ জাহাজে নাবিক হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা আছে। প্রতিমন্ত্রী প্রশিক্ষণার্থীদের মার্চপাস্ট পরিদর্শন করেন এবং শ্রেষ্ঠ প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।

অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ মোস্তফা কামাল, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের চিফ নটিক্যাল সার্ভিয়ার মোঃ গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, ন্যাশনাল মেরিটাইম ইন্সটিটিউট চট্টগ্রামের অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন আতাউর রহমান বক্তব্য রাখেন। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল এসময় উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ সংবাদ

টাঙ্গাইলে বজ্রপাতে বাবুর্চির মৃত্যু
জিম্বাবুয়ে-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজের ফলাফল কোনো কাজে আসবে না : সাকিব
১৫ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
সুন্দরবনের আগুন নেভাতে যোগ দিয়েছে নৌ ও বিমান বাহিনী
গাজায় দেড় লাখের বেশি অন্তঃসত্ত্বা নারী পানিশূন্যতায় ভুগছেন
স্বামীর সঙ্গে অভিমানে নববধূর আত্মহত্যা
নারী এমপিকে মাদক খাইয়ে যৌন হেনস্তা
নীলক্ষেতে দুই রেস্টুরেন্টে আগুন
খাগড়াছড়িতে টিনের চালে বজ্রপাত, ঘরসহ পুড়ে ছাই মা-ছেলে
যুদ্ধে বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রকেও পাত্তা দিচ্ছে না দখলদার ইসরায়েল
সুন্দরবনে আগুন নেভানোর কাজ শুরু
ঢাকা সফরে আসছেন আইওএম মহাপরিচালক অ্যামি পোপ
কেমন থাকবে আজকের আবহাওয়া, যা জানাল আবহাওয়া অফিস
আজ থেকে খুলছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
মিল্টন সমাদ্দারের মানবিকতার আড়ালে প্রতারণা, যা বললেন ব্যারিস্টার সুমন
যুক্তরাষ্ট্রের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে: ইরান
নিজের মান ইজ্জত রক্ষা করুন, মন্ত্রী-এমপিদের প্রতি ইসি রাশেদা
উদ্যোক্তারাই দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক অগ্রগতির কাণ্ডারী : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
টানা ৬ দিন হতে পারে ঝড়বৃষ্টি জানাল আবহাওয়া অফিস
সেই ভাইরাল নেতা পাকিস্তান জামায়াতের আমির নির্বাচিত