বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

রোহিঙ্গা ক্যাম্প সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য হতে দেওয়া হবে না

নতুন বছরের শুরু থেকেই রাখাইনে আপাতত শান্তি বিরাজ করছে। এর আগের কয়েক মাস রাখাইন ও চীন রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রচণ্ড সংঘর্ষ চলায় সেখানে মানবিক বিপর্যয় দেখা দেয়। নিপ্পন ফাউন্ডেশনের মধ্যস্থতায় আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মধ্যে অনানুষ্ঠানিক যুদ্ধ বিরতির ফলে বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

কিছুদিন পর রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে আসছেন মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা। ঠিক এই সময়ে গত ১৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তে শূন্যরেখার ওপারে রোহিঙ্গা শিবিরে দুটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা স্যালভেশন অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে সংঘর্ষের পর শূন্যরেখার ওপারে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শিবির জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে এলাকাটি আরএসওর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। রাখাইনের পরিস্থিতি একটু শান্ত হলে এবং প্রত্যাবাসন উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি হলেই সাধারণত মিয়ানমার বাংলাদেশ সীমান্তে ও ক্যাম্পগুলোতে এ ধরনের উত্তেজনা তৈরি হয়।

বর্তমানে রোহিঙ্গাদের একটি অংশ সন্ত্রাসবাদ, মানবপাচার, মাদক চোরাচালানের মতো অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে ও নিরাপত্তার প্রতি হুমকি সৃষ্টি করছে। রোহিঙ্গা শিবিরগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এবং তাদের ভূমিকা ও আত্মত্যাগকে অবমূল্যায়ন করে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এপিবিএনের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা শিবিরে নির্যাতন, হয়রানিসহ নানা অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলেছে।

রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার ও শক্তি প্রদর্শনের জন্য রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী দলগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে, আশ্রয়শিবিরে আত্মগোপনকারী রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহার শুরু করেছে যা আশঙ্কাজনক। এ সব অস্ত্র ব্যবহার করে সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালাতে পারে। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের কাছে অত্যাধুনিক অস্ত্র থাকার থাকার কারণে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী তাদের নিয়ন্ত্রণে নতুন করে পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। সীমান্তের ওপারে এ সব অস্ত্র থাকায় বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করে অভিযান চালিয়ে এগুলো উদ্ধার করতে পারছে না।

প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় যে মাদক ও মানবপাচারের জন্য পরিচিত মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের সীমান্তবর্তী অঞ্চল দিয়ে এ সব অস্ত্রের চালান আসে। আরাকান আর্মিও থাইল্যান্ড-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকার অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ কেনে, তাদের কাছে চীনের তৈরি অস্ত্র এবং গোলাবারুদও আছে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে নবী হোসেনের দল প্রভাবশালী সন্ত্রাসীদল। বলা হয়ে থাকে, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে এবং তাদের সহযোগিতায় সে এই সন্ত্রাসীদল গঠন করেছে। মাদক চোরাচালানের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে নবী হোসেন। বাংলাদেশের বেশির ভাগ মাদকের চালান আসে নবী হোসেনের দলের মাধ্যমে, তারা মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে গড়ে ওঠা অনেক ইয়াবা ও আইসের কারখানাও নিয়ন্ত্রণ করে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রায় ৯৬ শতাংশ ইয়াবা টেকনাফ দিয়ে বাংলাদেশে আসে এবং বহু রোহিঙ্গা এই কাজে জড়িত।

বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো মাদকপাচারের পাশাপাশি নিরাপত্তাঝুঁকি ও নানা ধরনের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আরসা ও আল-ইয়াকিন বাহিনীর সদস্যরা রোহিঙ্গাসহ স্থানীয় বাংলাদেশিদের মধ্যে ত্রাস সৃষ্টি করছে। এ সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর নেতারা ক্যাম্পগুলোতে বিলাসী জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। এই দলগুলো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিরোধী এবং তাদের নেতারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায় না। এজন্য রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পক্ষে কাজ করা সংগঠনগুলোর সঙ্গে তাদের বিরোধ চলমান এবং সুযোগ পেলেই তাদের নেতাদের টার্গেট করে হত্যা করা হচ্ছে।

নানা ঘটনা থেকে বোঝা যায় যে আরসা ও আল-ইয়াকিন রোহিঙ্গাদের স্বার্থ রক্ষাকারী পক্ষের শক্তি নয় বরং তারা মিয়ানমারের চলমান পরিকল্পনার পক্ষে। বাংলাদেশের ভেতরে এ ধরনের সশস্ত্র সংগঠনের অপতৎপরতা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। তারা মিয়ানমারের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ঠেকিয়ে রাখতে চায়। মিয়ানমার একদিকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের কথা বলছে অন্যদিকে সন্ত্রাসী দলগুলোকে মদদ দিয়ে পরিকল্পিতভাবে ক্যাম্পগুলোকে অশান্ত করে রাখছে এবং এ সব কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রোহিঙ্গাদেরকে সন্ত্রাসী হিসাবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে সন্ত্রাসী দলগুলো যে কোনো সময় গোলাগুলি, খুন, চাঁদাবাজি, মাদক পাচারসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। গত পাঁচ বছরের বেশি সময়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১৩৫টির বেশি খুনের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া মাদক, অস্ত্র, ছিনতাই, ডাকাতি, ধর্ষণ, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘাত, অপহরণ, হত্যাচেষ্টা, চাঁদাবাজি, মানব পাচার, সোনা চোরাচালানসহ ১৪ ধরনের অপরাধের অভিযোগে ৫ হাজার ২২৯টি মামলা হয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে খুনের শিকার হওয়া রোহিঙ্গাদের বেশিরভাগই বিভিন্ন ব্লকের মাঝি ও জিম্মাদার, এ খুনগুলোর জন্য মিয়ানমারভিত্তিক সংগঠন আরসাকে অভিযুক্ত করা হয়।

বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছোটবড় শতাধিক সন্ত্রাসী গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। সন্ত্রাসী রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়রাও নিরাপত্তা হুমকিতে রয়েছে। মিয়ানমারের সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলগুলোর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবাধ যাতায়াত ও সেখানে অপরাধের সাম্রাজ্য গড়ে তোলা দেশের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক। ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গা জনসংখ্যার ঘনত্বের কারণে ও এই সমস্যা সমাধান করা বেশ কষ্টসাধ্য। ক্যাম্প এলাকায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৭০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছে। সন্ত্রাসী রোহিঙ্গারা শনাক্ত এড়াতে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য ওয়াকিটকি এবং মিয়ানমার পোস্ট অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশনসের (এমপিটি) সিম ব্যবহার করে। এমপিটি ২০১৯ সালের আগস্টের পর বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তে ১২টি টাওয়ার স্থাপন করেছে। এর ফলে ক্যাম্পের যেকোনো ঘটনা মিয়ানমার সাথে সাথে জেনে যায় যা রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার জন্য উদ্বেগজনক।

এই পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে ক্যাম্প ও সীমান্তের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে ক্যাম্পে নজরদারি বাড়াতে হবে সেইসঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।

ক্যাম্পগুলোতে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বৃদ্ধি পাওয়ায় শরণার্থীদের মানবিক সেবায় নিয়োজিত দেশি ও আন্তর্জাতিক এনজিওর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আতঙ্কে আছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে এবং তা কাটিয়ে উঠতে প্রশাসন কাজ করছে। ক্যাম্প পরিচালনা ও শরণার্থীদের তদারকির জন্য মাঝিদের নেতৃত্বে ‘ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা কমিটি’ গঠিত হয়েছে। প্রতিটি ক্যাম্পে ৪০ থেকে ১২০ জন হেড মাঝি ও সাব-মাঝি নিয়ে এই ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩ ক্যাম্পে প্রায় আড়াই হাজার হেড মাঝি ও সাব-মাঝি রয়েছে। উখিয়ার ১১টি ক্যাম্প ৮ এপিবিএনের অধীনে এবং ১৪ এপিবিএনের অধীনে রয়েছে ১৫টি। প্রায় সোয়া ৯ লাখ রোহিঙ্গা এই ২৬টি ক্যাম্পে বসবাস করছে। আরও সাড়ে তিন লাখের বেশি রোহিঙ্গা টেকনাফের সাতটি ক্যাম্পে থাকে। ক্যাম্পগুলোতে একাধিক রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তৎপর রয়েছে এবং সন্ত্রাসীদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চলছে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে রাতের বেলায় নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা কষ্টসাধ্য হলে ও সামনের দিনগুলোতে ক্যাম্পে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আরসা ও আল-ইয়াকিনের সঙ্গে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা মিলে পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে। এই অবস্থা থেকে দ্রুত উত্তরণ জরুরি।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ক্যাম্পের চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেফতারের পাশাপাশি চেকপোস্ট ও টহল জোরদার করা হয়েছে। অপরাধ সংঘটনের সঙ্গে সঙ্গে সম্পৃক্তদের গ্রেফতারের আওতায় আনা হচ্ছে। রোহিঙ্গা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরাও হতাহত হচ্ছে। ক্যাম্পগুলোতে সন্ত্রাসীদের দমন ও শান্তিশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে যৌথ অভিযান চলার পরও সংঘর্ষ চলছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে না পারলে সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও সীমান্তের নিরাপত্তাহীনতা শুধু বাংলাদেশ নয়—গোটা দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের জন্য নিরাপত্তার হুমকি তৈরি করছে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বহু প্রতীক্ষিত মিয়ানমার বিষয়ক একটি প্রস্তাব পাস হওয়ার পরও মিয়ানমারের পরিস্থিতির তেমন কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক যেকোনো ধরনের আলোচনার জন্য প্রস্তুত এবং টেকসই কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে রোহিঙ্গা ইস্যুকে বাঁচিয়ে রেখেছে।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য সরকার প্রতিবছর ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় করছে। ২০২১ সালে এই খরচের পরিমাণ ছিল ১.২ বিলিয়ন ডলার। রোহিঙ্গা সংকটের উৎস মিয়ানমার এবং এর সমাধানও সেখানেই রয়েছে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা চায়। বাংলাদেশ সরকার এরপরও রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করে যাচ্ছে। মানবতার ক্ষেত্রে উদারতা দেখালেও নিরাপত্তা ইস্যুতে কোনো ছাড় দেবে না বাংলাদেশ। আরসা ও আরএসওর পারস্পরিক সংঘাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নতুন মাত্রা পাচ্ছে এবং দিন দিন তা আরও জটিলতার দিকে যাচ্ছে যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। রোহিঙ্গাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য সংগঠিত বৃহত্তর জোট আরাকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স (এআরএনএ) আরসা, আরএসও ও অন্যান্য দলগুলোকে সাথে নিয়ে দ্রুত এধরনের পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে এনে প্রত্যাবাসন কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার উদ্যোগ নিতে হবে। বাংলাদেশ তথা আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে রোহিঙ্গাদের যে কোনো অপরাধমূলক কার্যক্রম শক্ত হাতে দমন করতে হবে এবং কোনোভাবেই ক্যাম্পগুলো সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য হতে দেওয়া হবে না।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাসান মো. শামসুদ্দীন: এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, এম ফিল, মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা বিষয়ক গবেষক

আরএ/

Header Ad

কুড়িগ্রামে হিট স্ট্রোকে নারীর মৃত্যু

প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে হিট স্ট্রোকে ফাতেমা বেগম (৫৭) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এর আগে বুধবার রাত ১১টায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, বুধবার দুপুরে উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোরকমণ্ডল কৃষ্ণানন্দবকসী গ্রামে নিজ বাড়িতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন তাকে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। মৃত নারী ওই ওয়ার্ডের কপুর উদ্দিনের স্ত্রী।

গোরকমণ্ডল ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শ্যামল চন্দ্র মণ্ডল ও নিহতের স্বজন জাহের আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ইউপি সদস্য শ্যামল চন্দ্র মণ্ডল জানান, ওই নারী দীর্ঘদিন ধরে হাইপার টেনশনে ভুগছিলেন। প্রচণ্ড দাবদাহে তিনি হিট স্ট্রোক করেছেন। পরে পরিবারের লোকজন তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে বুধবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

রবিবার খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শনিবারও চলবে ক্লাস

রবিবার খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ফাইল ছবি

তাপপ্রবাহের কারণে এক সপ্তাহ ছুটির পর নতুন করে আর ছুটি না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। যার ফলে মাউশির আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে রবিবার (২৮ এপ্রিল) থেকেই পাঠদান কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। খোলার পর শনিবারও ক্লাস চালু থাকবে।

তবে, এ বিষয়ে কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে মাউশি। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পবিত্র ঈদুল-ফিতরের ছুটির ধারাবাহিকতায় তাপদাহের কারণে গত ২০ এপ্রিল মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর ঘোষিত ছুটি শেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রম চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হলো।

এতে বলা হয়, আগামী ২৮ এপ্রিল রোববার থেকে যথারীতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে এবং শ্রেণি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। তাপদাহ সহনীয় পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত অ্যাসেম্বলি বন্ধ থাকবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, শ্রেণি কার্যক্রমের যে অংশ শ্রেণিকক্ষের বাইরে পরিচালিত হয়ে থাকে এবং যেসব কার্যক্রমে সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসতে হয়, সেসব কার্যক্রম সীমিত থাকবে।

তাপদাহ এবং অন্যান্য কারণে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকার ফলে যে শিখন ঘাটতি তৈরি হয়েছে, তা পূরণ এবং নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিখন ফল অর্জনের জন্য পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত শনিবারও শ্রেণি কার্যক্রম চলবে।

এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে উপ-সচিব মোসাম্মৎ রহিমা আক্তারের সই করা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের উন্নতি দেখে এখন লজ্জিত হই: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। ছবি: সংগৃহীত

অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নতি করেছে, বাংলাদেশের দিকে তাকালে এখন লজ্জিত হই বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ।

দেশটির ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বুধবার (২৪ এপ্রিল) এক মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান তিনি। খবর ডন অনলাইনের।

১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ ভাগ হওয়ার পর বাঙালিদের এ ভূখণ্ড পাকিস্তানের একটি অংশ হয়ে শাসিত হতে থাকে। কিন্তু সবকিছুতে এ জনপদের মানুষের ওপর ছিল বৈষম্য। পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে একসময় মুক্তির সংগ্রাম শুরু হয়, যার ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে হয় স্বাধীনতার যুদ্ধ। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ শেষে বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে পাকিস্তানের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ।

মুক্তিযুদ্ধের আগের সময়ের প্রসঙ্গ টেনে শেহবাজ শরিফ বলেন, আমি তখন অনেক তরুণ ছিলাম...তখন আমাদের বলা হতো ওই অঞ্চল (বাংলাদেশ) আমাদের জন্য বোঝা। আজ আপনারা জানেন, সেই ‘বোঝা’ কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে (অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে)। তাদের দিকে তাকালে আমি এখন লজ্জিত হই।

অনুষ্ঠানে শেহবাজ শরিফ পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য সেদেশের ব্যবসায়ীদের রপ্তানি বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেন। এসময় তিনি ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের বিষয়েও কথা বলেন। এছাড়া দেশে ‘রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা’র জন্য পিটিআই প্রধান ইমরান খানের প্রতি তার নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গিও প্রকাশ করেন শেহবাজ।

উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে জিতে প্রধানমন্ত্রী হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই শেহবাজ। বেশ কিছু বছর ধরে পাকিস্তানের অর্থনীতি ধুঁকছে। মূল্যস্ফীতি, দারিদ্র্য বৃদ্ধি, দুর্নীতিসহ নানা সংকটের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন শেহবাজ শরিফ।

সর্বশেষ সংবাদ

কুড়িগ্রামে হিট স্ট্রোকে নারীর মৃত্যু
রবিবার খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শনিবারও চলবে ক্লাস
বাংলাদেশের উন্নতি দেখে এখন লজ্জিত হই: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী
মৌসুমের সর্বোচ্চ ৩৯.২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পুড়ছে নওগাঁ
চেন্নাইয়ের হয়ে খেলা সবসময় স্বপ্ন ছিল: মোস্তাফিজ
বৃষ্টি কামনায় টাঙ্গাইলে ইস্তিস্কার নামাজ আদায়
মোবাইল ইন্টারনেট গতিতে আরও ৬ ধাপ পেছালো বাংলাদেশ
বৃষ্টি কবে হবে, জানাল আবহাওয়া অফিস
এফডিসিতে ইউটিউবার প্রবেশ নিষিদ্ধ চাইলেন অঞ্জনা
অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট বন্ধ ঘোষণা, ক্ষোভে বাসে আগুন দিল শিক্ষার্থীরা
থাইল্যান্ডে হিট স্ট্রোকে ৩০ জনের মৃত্যু
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
প্রতিটি সংসদীয় এলাকায় ‘এমপিরাজ’ তৈরি হয়েছে: রিজভী
অনুমতি মিললে ঈদের আগেই গরু আমদানি সম্ভব: ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত
আবারও ঢাকাই সিনেমায় কলকাতার পাওলি দাম
ময়মনসিংহে সড়ক দুর্ঘটনায় সাবেক কৃষকলীগ নেতাসহ নিহত ২
গোবিন্দগঞ্জে বৃষ্টির জন্য ইস্তিসকার নামাজ আদায়
বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের নগদ অর্থের তথ্য চেয়ে চিঠি দুদকের
ভূমি মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, নেবে ২৩৮ জন
জয়কে আজীবন বয়কট, ২ জনকে সাময়িক বহিষ্কার