শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০
Dhaka Prokash

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাপানের কার্যকরী সহায়তা

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। বর্তমানে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্যাম্পে অবস্থান করছে। জাপান সরকার ২০১৭ সালে এই সংকট শুরুর পর পরই রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা হিসাবে ৪ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করে। একই বছর রোহিঙ্গা শিশু, নারী এবং ঝুঁকিপূর্ণ স্থানীয়দের জরুরি মানবিক সহায়তার জন্য জাপান ১৫.৭ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছিল।

সংকটের প্রথম ৬ মাসে অতি প্রয়োজনীয় এই সহায়তা পাওয়ায় ইউনিসেফ তাদের কার্যক্রম সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা করতে পেরেছিল এবং এজন্য সংস্থাটি জাপান সরকার ও জনগণের কাছে সে সময় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিল। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো কোনো মিয়ানমারকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদেরকে দ্রুত ফিরিয়ে নিতে অনুরোধ জানায়।

জাপান সে সময় মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে জন্য ৩০ লাখ মার্কিন ডলার বরাদ্দ দেয়। রাখাইন রাজ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে জাপান মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত। জাপান সরকার এবং জনগণ রোহিঙ্গাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি নিরাপদ, স্বেচ্ছায় এবং মর্যাদাপূর্ণভাবে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে যাবে।২০১৯ সালে জাপান রোহিঙ্গা এবং স্থানীয় জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা হিসেবে ৯৯ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার দিয়েছিল।

জাপান সরকার সংকট সমাধানে সবসময় বাংলাদেশের পাশে আছে এবং জাপান বিশ্বাস করে যে রোহিঙ্গাদের রাখাইনে দ্রুত, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের মাধ্যমেই এই সংকটের সমাধান সম্ভব হবে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য রাখাইন রাজ্যে অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করা মিয়ানমারের জন্য অপরিহার্য। জাপান রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারকে ‘আরও জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানায় এবং এই সনসজা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত জাপান সরকার মিয়ানমারকে এই অনুরোধ জানিয়ে যাবে। ২০১৯ সালে, জাপান রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিল এবং দুই দেশের মধ্যে সংলাপ অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছিল। জাপান রোহিঙ্গা সমস্যার দ্রুত সমাধান চায় তাদের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান উদ্বেগজনক বলে মনে করে। জাপান বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে চলমান আলোচনায় সহায়তা করতে আগ্রহী যাতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত হয়।

জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয় দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। জাপান এই দুই দেশের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। জাপান উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে এই সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা করতে আগ্রহী। উভয় দেশে জাপানের ব্যাপক বিনিয়োগ রয়েছে। ৩১০টি জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তা দিয়ে করছে। দায়বদ্ধতা ও নৈতিকতাবোধ থেকে জাপান রোহিঙ্গা সমস্যার শুরু থেকে নীরবে কাজ করে যাচ্ছে এবং এর সমাধানের জন্য তৎপর রয়েছে। বাংলাদেশে কর্মরত জাপানের রাষ্ট্রদূতরা বিভিন্ন সময়ে বহুবার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছে।

জাপানিরা ব্যক্তি, সাংগাঠনিক ও সরকারি ইত্যাদি নানা পর্যায়ে সমস্যাটির একটি স্থায়ী ও টেকসই সমাধান খুঁজে বের করতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। জাপানের জনগণ, নানা সংগঠন ও জাপান সরকার অবিরত নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী ও সেবা দিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর সহায়তা চলমান রেখেছে। কূটনৈতিকভাবে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব, প্রত্যাবাসন ও বাস্তু সমস্যা সমাধানকল্পে জাপান সরকার মিয়ানমার সরকার, আসিয়ান ও জি-৭ ইত্যাদি নানা আন্তর্জাতিক সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখছে। জাপান প্রলম্বিত রোহিঙ্গা সমস্যার একটি টেকসই সমাধান চায় এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশকে যেকোন ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।

রোহিঙ্গাদের ব্যাপক উপস্থিতি কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণের জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করে জাপান। ‘অবাধ ও মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক’ বাস্তবায়ন করা গেলে এই অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক হবে। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাপান বাংলাদেশের পাশে থাকবে এবং মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য কাজ করে যাবে।

২০২২ সালের ২২ নভেম্বর, ভাসানচরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য জাপান ও জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপি) মধ্যে ৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি হয়েছে। ভাসানচরে আশ্রয় নেওয়া বিভিন্ন বয়সী নারীদের নিরাপত্তা এবং কিশোর ও যুবকদের ক্ষমতায়নের জন্য এই অর্থ ব্যয় করা হবে। জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তাকেই শুনসুকে জানিয়েছে যে রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। বর্তমানে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য একটি বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে, ক্যাম্পে নতুন শিশুর জন্মের ফলে তাদের সংখ্যা বাড়ছে। রোহিঙ্গাদের অনেকেই মাদক ও অস্ত্র পাচারের সঙ্গে জড়িত।

গত পাঁচ বছরে কোনো রোহিঙ্গাই দেশে ফিরে যেতে পারেননি। প্রত্যাবাসন চেষ্টা বারবার ব্যর্থ হলেও সরকার উন্নত দেশগুলোকে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদেরকে তৃতীয় কোনো দেশে স্থানান্তরের আহ্বান জানিয়ে আসছে। জাপান কিছু রোহিঙ্গাকে সেদেশে পুনর্বাসনের কথা ভাবছে বলে জানিয়েছে জাপানের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি। জাপান ২০২২ সালে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা ও স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য ২ কোটি ৭৮ লাখ মার্কিন ডলার দিয়েছে, ২০২১ সালে এই বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। জাপান, কক্সবাজার ও ভাসানচরে রোহিঙ্গা শিবিরের ভেতরে রোহিঙ্গাদের জীবনযাত্রার সংকট নিরসনের যথাসাধ্য চেষ্টা করছে।

রাখাইনের পরিস্থিতি নিরাপদ না হওয়াতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব হচ্ছে না। জাপানের ‘বিশেষ প্রতিনিধি’ নিপ্পন ফাউন্ডেশন ও সাসাকাওয়া পিস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইউহেই সাসাকাওয়ার মধ্যস্থতায় রাখাইনে ২০২২ সালের জুলাই থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে শুরু হওয়া যুদ্ধ বন্ধে রাজি হয় মিয়ানমার সেনাবাহিনী, এরপর যুদ্ধরত দুইপক্ষ যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয়। এর ফলে রাখাইন অঞ্চলে এখন আপাত শান্তি বিরাজ করছে। ইউহেই সাসাকাওয়া মিয়ানমার সরকার ও সেখানকার বিভিন্ন অঞ্চলের সশস্ত্র আন্দোলনকারীদের মধ্যে ‘জাতীয় ঐক্যের’ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৯ সালেও সাসাকাওয়ার মাধ্যমে আরাকানে যুদ্ধবিরতি হয়েছিল। ২০২০ সালে জাপান সরকার তাকে মিয়ামারে নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের প্রধান করে পাঠায়। সে সময় এনএলডির সঙ্গে আরাকান আর্মির সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল, তবে সাসাকাওয়ার মধ্যস্থতায় আরাকানে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বোঝা যায় যে রাখাইনের রাজনৈতিক অঙ্গনে এবং মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কাছে সাসাকাওয়ার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে জাপান বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রেখে মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতির জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাবে বলে জানিয়েছে।

বাংলাদেশে নবনিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে জাপানের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে।২০১৭ সালের পর থেকে, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং এনজিওগুলোর মাধ্যমে কক্সবাজারের পাশাপাশি ভাসান চরে বিভিন্ন সহযোগিতামূলক কার্যক্রমে ১৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে জাপান। এর মধ্যে খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা, পানি স্যানিটেশন স্বাস্থ্যবিধি (ওয়াশ), আশ্রয়, সুরক্ষা এবং লিঙ্গভিত্তিক সহায়তা রয়েছে। বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ও মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে জাপান সরকার ও ইউএনএইচসিআরের মধ্যে ২২ ফেব্রুয়ারি ৪.৫ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি সই হয়েছে। এ সহায়তা কক্সবাজার ও ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম বাড়বে এর ফলে রোহিঙ্গারা ক্রমহ্রাসমান মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে সক্ষম হবে। এর পাশাপাশি স্থানীয় সম্প্রদায়ের ঝুঁকিতে থাকা নারীরা বিভিন্ন কারুশিল্প তৈরির প্রশিক্ষণ ও নতুন আয়ের সুযোগ পাবে।

ভাসানচরে জাপানের এই সহায়তায় ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গাদের শিক্ষা ও জীবিকামূলক কার্যক্রম সম্প্রসারণে কাজ করবে। জাপান সরকার ইউএনএইচসিআর ও বাংলাদেশে জাতিসংঘের অন্য সংস্থা ও এনজিওগুলোকে এ পর্যন্ত ২০৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি সহায়তা দিয়েছে।
বাংলাদেশের কক্সবাজার ও ভাসান চরে রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দাতা জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার উন্নয়ন এবং আশ্রয়কেন্দ্রের উন্নয়নে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থায় (আইওএম) ৫ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাপান সরকার। জাপান রোহিঙ্গা ও স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য উন্নত জীবনযাত্রা নিশ্চিত করতে আইওএমসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করবে। জাপান সরকারের অব্যাহত সহায়তা আইওএমকে বাংলাদেশের কক্সবাজার এবং ভাসান চরের রোহিঙ্গা ও স্থানীয় সম্প্রদায়কে জীবন রক্ষাকারী সহায়তা দিতে সাহায্য করবে।

এই সহায়তা আরও ভালো বসতি, সুরক্ষা এবং জীবিকার সুযোগ প্রদান নিশ্চিত করবে। সাইট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড সাইট ডেভেলপমেন্ট (এসএমএসডি) প্রকল্পের মাধ্যমে ভাসান চরের রোহিঙ্গাদের জীবনযাত্রার অবস্থার উন্নয়ন হবে এবং উন্নত জীবিকার সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে রোহিঙ্গা নারী ও যুবকদের আত্মনির্ভরশীল করবে। জাপান আইওএম ও অন্যান্য জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশে এনজিওগুলোতে ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি সহায়তা করেছে। জাপান রাখাইনের আর্থ সামাজিক পরিস্থিতি উন্নয়নে কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে সহায়তা করতে পারে। এর ফলে দারিদ্র পীড়িত রাখাইনের জনগণের জীবনমান উন্নত হবে এবং ফলশ্রুতিতে রাখাইনে বসবাসকারী রোহিঙ্গা ও রাখাইনদের মধ্যে চলমান বৈষম্যে কমে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন হবে।জাপানের নিপ্পন ফাউন্ডেশন রাখাইনে সাফল্যের সাথে মানবিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় ভুমিকা রেখেছে। চিন ও রাখাইনদের কাছে এই সংস্থাটি এবং এর চেয়ারম্যানের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এই পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে তারা রোহিঙ্গা ও রাখাইনদের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন তৈরি করে চলমান পরিস্থিতির উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে। রাখাইনে উপযুক্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা গেলে চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির উন্নয়ন সম্ভব। এই লক্ষ্যে বাংলাদেশের ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদেরকে আত্মকর্মসংস্থানের প্রশিক্ষণ দিলে তারা ফিরে গিয়ে রাখাইনের উন্নয়নেও ভুমিকা রাখতে পারবে।

রোহিঙ্গা সমস্যা দীর্ঘায়িত হলে কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোর ক্রম অবনতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জাপান রোহিঙ্গাদের ভাসান চরে স্থানান্তরে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করতে পারে। আরও বেশি সংখ্যক রোহিঙ্গা ভাসান চরে স্থানান্তরের লক্ষ্যে জাপান ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো একত্রে নতুন অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোর উপর থেকে চাপ কমিয়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নয়নে ভুমিকা রাখতে পারে।রোহিঙ্গা সংকটের ষষ্ঠ বছরে চলছে, চলমান বৈশ্বিক সমস্যার কারনে এই নিপীড়িত জনগোষ্ঠী অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি, তাই জাপানের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা অব্যাহত রাখা উচিত। এ যাবতকাল জাপানের গৃহীত কার্যক্রম প্রশংসনীয় এবং ভবিষ্যতে জাপানের সক্রিয় অংশগ্রহণে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের পথে এগিয়ে যাবে এটাই প্রত্যাশা।

হাসান মো. শামসুদ্দীন: ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এবং মিয়ানমার ও রোহিঙ্গাবিষয়ক গবেষক

 

আজকের সেহরির শেষ সময় (ঢাকা)

0

ঘণ্টা

0

মিনিট

0

সেকেন্ড

ডিজিটাল হুন্ডির মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা পাচার, গ্রেপ্তার ৫

চক্রের পাঁচজন গ্রেপ্তার। ছবি: সংগৃহীত

দুবাইয়ে বসে ‘জেট রোবোটিক’ নামে একটি অ্যাপস ও নিজস্ব এজেন্টের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের চাহিদা অনুযায়ী রেমিট্যান্স পাঠানোর দায়িত্ব নিতেন কুমিল্লার শহিদুল ইসলাম ওরফে মামুন। ২০২০ সাল থেকে তিনি দুবাইয়ে থাকেন। গত তিন থেকে সাড়ে তিন মাসে জেট রোবোটিক অ্যাপসের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার সমমূল্যের রেমিট্যান্স ব্লক করেছেন মামুন।

তবে তিনি ঠিকই চাহিদা অনুযায়ী গন্তব্যে টাকা পাঠিয়েছেন। এজন্য ব্যবহার করা হয়েছে চট্টগ্রামের মোবাইল ব্যাংকিং ডিস্ট্রিবিউশন হাউজ তাসমিয়া অ্যাসোসিয়েটসকে। প্রতিষ্ঠানটির ৪৮টি মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট সিমে আগে থেকেই সমপরিমাণ বা বেশি অনলাইনে টাকা সংগ্রহ করে রাখা হয়। এরপর সংগ্রহ করা টাকা এজেন্ট সিম থেকে অ্যাপের ব্যবহার করে প্রবাসীদের আত্মীয়দের নম্বরে অর্থ পাঠিয়ে দিয়ে আসছিল সংঘবদ্ধ একটি চক্রটি বলে দাবি করেছে সিআইডি।

বুধবার (২৭ মার্চ) রাতে ঢাকা ও চট্টগ্রামে পৃথক অভিযান চালিয়ে এই চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে হুন্ডির কাজে ব্যবহৃত মুঠোফোন, সিমকার্ড ল্যাপটপ ও ২৮ লাখ ৫১ হাজার নগদ টাকা উদ্ধার করা হয় এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডি বলছে, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) প্রায় এক মাস ধরে অনুসন্ধান করে এই চক্রের সন্ধান পায়। এই চক্রের কারণে রেমিট্যান্স থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল দেশ। অনেকের অবৈধ উপার্জনের টাকা এই চক্রের মাধ্যমে বৈধ হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে মালিবাগে নিজ কার্যালয়ে সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নাসির আহমেদ (৬২), ফজলে রাব্বি সুমন (৩২), মো. কামরুজ্জামান (৩৩), খায়রুল ইসলাম (৩৪) ও জহির উদ্দিন (৩৭)। তাদের মধ্যে নাসির ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের মালিক। ফজলে রাব্বি ও মো. কামরুজ্জামান ডিস্ট্রিবিউশন হাউজে কাজ করেন। আর পরের দুজন দুবাই থেকে শহিদুলের পাঠানো প্রবাসীদের আত্মীয়স্বজনের অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে দিতেন।

সিআইডির প্রধান পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আলী মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, এই চক্র দুই ভাগে হুন্ডির কাজ পরিচালনা করে। দুবাইয়ে থাকা চক্রের সদস্যরা প্রবাসীদের কাছ থেকে বিদেশি মুদ্রা সংগ্রহ করেন। আর দেশে থাকা চক্রের সদস্যরা ওই প্রবাসীর দেশে থাকা আত্মীয়স্বজনদের এমএফএস অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেয়। এতে প্রবাসীদের মাধ্যমে যে রেমিট্যান্স আসত, সেটা ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি দেশের কালোটাকার মালিকেরা এই চক্রের মাধ্যমে তাদের অবৈধ উপার্জন বৈধ করছেন। আর এই পুরো কাজটি পরিচালিত হতো জেট রোবোটিকস অ্যাপের মাধ্যমে।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির প্রধান আরও বলেন, চক্রের সঙ্গে এমএফএস কোম্পানির চট্টগ্রামের তাসনিমা অ্যাসোসিয়েট নামের একটি ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের লোকজন জড়িত। তাদের কাছ থেকে কম লেনদেন হয় এমন এমএফএস এজেন্ট অ্যাকাউন্ট সংগ্রহ করতেন চক্রের সদস্যরা। বিনিময়ে ডিস্ট্রিবিউশন হাউজের লোকজন হুন্ডির লাভের টাকার একটি ভাগ পেতেন।

সিআইডির প্রধান ও অতিরিক্ত আইজি মোহাম্মদ আলী মিয়া। ছবি: সংগৃহীত 

 

মোহাম্মদ আলী বলেন, এই চক্রের মূলহোতা শহিদুল ইসলাম ওরফে মামুন। তিনি ২০২০ সাল থেকে দুবাই বসবাস করেন। মালয়েশিয়ান একটি সফটওয়্যার কোম্পানির মাধ্যমে অ্যাপটি তৈরি করে দুবাই বসে শহিদুল হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ করতেন। এই অ্যাপের সঙ্গে একটি এমএফএস কোম্পানির ৪১টি অ্যাকাউন্ট নম্বরের সংযোগ ছিল। গত তিন মাসে ওই ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের প্রায় ১৫০টি এজেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছে চক্রটি।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আলী বলেন, একটি ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের অধীন প্রায় ১ হাজার ১০০ এজেন্ট থাকে। যেসব এজেন্ট অ্যাকাউন্টে লেনদেন কম হয়, সেই সব অ্যাকাউন্ট হুন্ডির কাজে ব্যবহার করা হয়। এ ক্ষেত্রে এমএফএস কোম্পানির নজরদারির ঘাটতি রয়েছে।

নতুন নতুন অ্যাপসের মাধ্যমে কৌশলে এ ধরনের ডিজিটাল হুন্ডি কার্যক্রম চলতে পারে উল্লেখ করে সিআইডি প্রধান বলেন, এ ধরনের কার্যক্রমরোধে সিআইডিসহ সব দায়িত্বরত প্রতিষ্ঠানকে ইন্টেলিজেন্স, মনিটরিং আরও বাড়াতে হবে।

তিন মাস ধরে অস্বাভাবিক লেনদেন, রেমিট্যান্স ব্লক হলো অথচ বাংলাদেশ ব্যাংক টের পেল না? তাদের তো একটা শক্তিশালী মনিটরিং সেল আছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যর্থতা কি-না জানতে চাইলে সিআইডিপ্রধান বলেন, ব্যর্থতা বলবো না, সার্ভিলেন্স সিস্টেমকে কতটা পেট্রলিং করছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আমাদের পেট্রলিংয়ে এটা ধরতে পেরেছি। এর দায়িত্ব শুধু সিআইডি’র নয়, ডিবি, র‌্যাব, বাংলাদেশ ব্যাংকেরও।

হুন্ডি তো আগেও হতো, এটাকে ডিজিটাল হুন্ডি বলছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ সিস্টেম আসলেই ডিজিটাল হুন্ডি। আগে ফোন করে বলে দিতো অমুকের টাকা অমুককে দিয়ে দাও। এটা ম্যানুয়াল সিস্টেমে। কিন্তু এখন এসবের দরকার নেই। ফোন বা লোকাল এজেন্ট অথবা ডিস্টিবিশন হাউজ দরকার পড়ে না। অ্যাপস যেভাবে ইনস্ট্রাকশন দেবে সেভাবে নম্বরে নম্বরে টাকা চলে যায়।

দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু: বিশ্বব্যাংক

ছবি: সংগৃহীত

অনিরাপদ পানি, নিম্নমানের স্যানিটেশন, হাইজিন, বায়ু ও সীসা দূষণ বছরে বাংলাদেশে ২ লাখ ৭২ হাজারের বেশি অকালমৃত্যুর কারণ। এসব পরিবেশগত কারণে ২০১৯ সালে বাংলাদেশের জিডিপির ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ সমপরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে ঘরে ও বাইরের বায়ুদূষণ স্বাস্থ্যের ওপর সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, যা ৫৫ শতাংশ অকালমৃত্যুর জন্য দায়ী এবং যা ২০১৯ সালের জিডিপির ৮ দশমিক ৩২ শতাংশের সমপরিমাণ ক্ষতি করেছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ‘দ্য বাংলাদেশ কান্ট্রি এনভায়রনমেন্ট অ্যানালাইসিস (সিইএ)’ নামে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণ, অনিরাপদ পানি, নিম্নমানের স্যানিটেশন ও হাইজিন এবং সিসা দূষণ বছরে ২ লাখ ৭২ হাজারের বেশি মানুষের অকালমৃত্যুর কারণ। এর ফলে বছরে ৫.২ বিলিয়ন দিন অসুস্থতায় অতিবাহিত হয়। এসব পরিবেশগত কারণে ২০১৯ সালে বাংলাদেশের জিডিপির ১৭.৬ শতাংশ সমপরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। ঘরের এবং বাইরের বায়ুদূষণ স্বাস্থ্যের ওপর সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, যা ৫৫ শতাংশ অকালমৃত্যুর জন্য দায়ী এবং যা ২০১৯ সালের জিডিপির ৮.৩২ শতাংশের সমপরিমাণ।

এতে আরও বলা হয়েছে, পরিবেশদূষণ শিশুদের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। সিসা বিষক্রিয়া শিশুদের মস্তিকের বিকাশে অপরিবর্তনীয় ক্ষতি করছে। এর ফলে বছরে প্রাক্কলিত আইকিউ ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ২০ মিলিয়ন পয়েন্ট। গৃহস্থালিতে কঠিন জ্বালানির মাধ্যমে রান্না বায়ুদূষণের অন্যতম উৎস এবং তা নারী ও শিশুদের বেশি ক্ষতি করছে। শিল্পের বর্জ্য এবং অনিয়ন্ত্রিত প্লাষ্টিকসহ বিভিন্ন বর্জ্য এবং অন্যান্য উৎস থেকে আসা অপরিশোধিত ময়লাযুক্ত পানির কারণে বাংলাদেশের নদীগুলোর পানির গুণগত মানের মারাত্মক অবনতি ঘটেছে।

বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সময়মতো এবং জরুরি হস্তক্ষেপ, উন্নত পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) এবং সিসা দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রতি বছর ১ লাখ ৩৩ হাজারের বেশি অকালমৃত্যু ঠেকাতে পারে। সবুজ বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিনিয়োগ, রান্নায় সবুজ জ্বালানি ব্যবহার এবং শিল্প-কারখানা থেকে দূষণ রোধে কঠোর নিয়ন্ত্রণ বায়ুদূষণ কমাতে পারে।

এছাড়া পরিবেশগত ব্যবস্থাপনার জন্য সুশাসন জোরদার ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে এই রিপোর্টে পরিবেশগত অগ্রাধিকারসমূহ চিহ্নিত করা হয়েছে, বিভিন্ন পদক্ষেপের মূল্যায়ন এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা হয়েছে। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অগ্রাধিকার নির্ধারণ, পরিবেশ নীতি পদ্ধতিগুলোর বৈচিত্র্যকরণ ও জোরদারকরণ, সাংগঠনিক কাঠামো এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা জোরদারকরণ এবং সবুজ অর্থায়নের জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশ এর পরিবেশকে রক্ষা করতে পারে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ এবং ভুটানে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক বলেন, বাংলাদেশের জন্য পরিবেশের ঝুঁকি মোকাবিলা একই সঙ্গে উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রাধিকার। আমরা পৃথিবীর নানা দেশে দেখেছি যে, পরিবেশের ক্ষতি করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হলে তা টেকসই হতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির গতিপথ টেকসই রাখতে এবং শহর ও গ্রামাঞ্চলের মানুষের জীবনমানের উন্নতি করতে বাংলাদেশ কোনোভাবেই পরিবেশকে উপেক্ষা করতে পারবে না। উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য অর্জনে পরিবেশের ক্ষয় রোধ এবং জলবায়ু সহিষ্ণুতা নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এবং এই রিপোর্টের সহ-প্রণেতা আনা লুইসা গোমেজ লিমা বলেন, সময়মতো এবং সঠিক নীতি ও কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশ পরিবেশ দূষণের ধারা পাল্টে ফেলতে পারে। পরিবেশ সুরক্ষা জোরদারে পদক্ষেপ এবং রান্নায় সবুজ জ্বালানির জন্য বিনিয়োগ ও অন্যান্য প্রণোদনা, সবুজ অর্থায়ন বাড়ানো, কার্যকর কার্বন মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং সচেতনতা বাড়ানো দূষণ কমাতে পারে এবং এর ফলে সবুজ প্রবৃদ্ধি অর্জন হতে পারে।

বরিশালে নামাজ চলাকালে মসজিদে এসি বিস্ফোরণ

নামাজ চলাকালে মসজিদে এসি বিস্ফোরণ। ছবি: সংগৃহীত

যোহরের নামাজ চলাকালীন বরিশালে জামে এবায়দুল্লাহ মসজিদে এসি বিস্ফোরণ হয়েছে। বরিশাল নগরীর ব্যস্ততম সড়ক চকবাজার এলাকার জামে এবায়দুল্লাহ মসজিদের দ্বিতীয় তলায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে দ্রুত আগুন আনে তারা। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

মুসল্লিদের দাবি, এসি বিস্ফোরণ মধ্য দিয়ে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বিস্ফোরণের কথা নিশ্চিত না করলেও এসি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী মুসল্লিরা জানিয়েছেন, বেলা দেড়টার দিকে মুসলিরা জোহরের নামাজ আদায়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। আর তখন মসজিদের দোতলার একটি এসি চালুর জন্য মুয়াজ্জিন বৈদ্যুতিক সুইচ চালু করতেই স্পার্ক করে। পরে তিনি সেটি তাৎক্ষণিক বন্ধ করে দেন। এরপর সবাই নামাজে দাঁড়ালে কিছুক্ষণের মধ্যেই বিকট শব্দ হয়। পরে পাশের ইমামের কক্ষ থেকে ধোঁয়া বের হলে দেখা যায় সেখানে এসির কাছাকাছি আগুন জ্বলছে। তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিস ও থানায় বিষয়টি জানানো হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আমিন জানান, হতাহতের ঘটনা ছাড়াই স্থানীয়দের সহযোগিতায় মুসলিরা নিরাপদে মসজিদ থেকে নামিয়ে আনা হয় এবং বরিশাল সদর ফায়ার স্টেশনের চারটি ইউনিট অল্প সময়ের চেষ্টায় আগুন নেভানো হয়। আগুনে ইমাম সাহেবের রুম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে কিছু বই ও আসবাবপত্র আগুনে পুড়ে গেছে।

এদিকে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স বরিশাল সদর স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার রবিউল আল আমিন জানান, মুসল্লিদের তথ্যানুযায়ী একটি এসি থেকে বিকট শব্দ হওয়ার পরপরই আগুনের সূত্রপাত হয়। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, তবে এসি থেকেই আগুনের সূত্রপাত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস পাশে থাকায় ব্যস্ততম এই ব্যবসায়িক এলাকাটিতে বড় ধরনের বিপদ ঘটেনি, অল্পতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে।

রাস্তা সরু হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশে কিছুটা বেগ পেতে হয় জানিয়ে তিনি বলেন, চকবাজারের সব রাস্তাগুলো সব সময় চালু রাখা উচিত, কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকলে সেগুলো অপসারণের জন্য আমরা মসজিদ ও ব্যবসায়িক কমিটিকে অনুরোধ জানিয়েছি।

স্থানীয়রা বলছেন, চকবাজারের রাস্তা সরু হওয়ায় এখানে সব সময় যানজট লেগে থাকে, আর যেটুকু জায়গা খালি থাকে তা পার্কিং নয়তো হকরদের দখলে থাকে। এমনকি গোটা চকবাজারের ফুটপাতও দখলে রয়েছে বিভিন্ন পণ্যের পসরায়।

সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতোয়ালি) নাফিছুর রহমান জানান, ফায়ার সার্ভিস তাৎক্ষণিক সারা দেওয়ায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, এমনকি নামাজের সময় হওয়ায় মুসল্লিরা মসজিদের ভেতরে থাকলেও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

ডিজিটাল হুন্ডির মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা পাচার, গ্রেপ্তার ৫
দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু: বিশ্বব্যাংক
বরিশালে নামাজ চলাকালে মসজিদে এসি বিস্ফোরণ
নওগাঁয় পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
গুলি করে মারা হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেই সাপটিকে
দুঃসময় অতিক্রম করছি, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: মির্জা ফখরুল
মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় শিক্ষক কারাগারে
বাংলাদেশ থেকে আম-কাঁঠাল-আলু নিতে চায় চীন
ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় চার ইউনিটে প্রথম হলেন যারা
বাংলাদেশে আসছেন সংগীতশিল্পী আতিফ আসলাম
চট্টগ্রামে ফিশিং বোটে আগুন, দগ্ধ ৪
ঢাবি ভর্তি পরীক্ষার ৪ ইউনিটের ফল প্রকাশ, ৮৯ শতাংশই ফেল
ভারত থেকে ১ হাজার ৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে শুক্রবার!
৮ বছর পর বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা
‘নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, এটা তুলব, এটুক অন্যায় করবোই’
প্রথম বাংলাদেশি আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে শরফুদ্দৌলা
পাঁচ বছর আগে নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া ভারতীয় নাগরিককে হস্তান্তর
কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা ওয়াংচুক
শিগগিরই ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়ানো হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
রেলমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ