সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

বঙ্গবন্ধু: বাঙালি জাতিসত্তার প্রধান শিকড়

কিছু মানুষ থাকেন যারা ইতিহাসে উদ্ধৃত হন, কেউ কেউ আছেন যারা  ইতিহাসের অংশ হয়ে যান; আর এমন সামান্য কিছু মানুষ আছেন যাঁরা নিজেরাই ইতিহাসের স্রষ্টা হয়ে যান। বঙ্গবন্ধু এই শেষোক্ত পর্যায়েরই মানুষ। যাঁকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়েছে ইতিহাস, সৃষ্টি হয়েছে গাঙ্গেয় বদ্বীপের একটি বিশাল জাতির জন্মগাঁথা। এই একটি মানুষ যাঁর কর্মজীবনের প্রতিটি স্তরে রচিত হয়েছে এক মহান মুক্তিসংগ্রামের অমর পংক্তিমালা। বাঙালির হাজার হাজার বছরের ইতিহাসে কখনও তার আত্মপরিচয়ের সন্ধান ছিল না, কখনও তার আত্মপরিচয়ের ইতিহাস ছিল না। এই মহান মানুষটি এই জাতির অপ্রাপ্তির যাতনার অবসান ঘটিয়েছেন। এখন বাঙালি জাতির একটা ঠিকানা আছে, একটা জাতীয় সঙ্গীত আছে, একটা পতাকা আছে, একটা স্বাধীন সার্বভৌম ভূখণ্ড আছে। এসব কিছুর পেছনে যাঁর অখণ্ড অবদান, তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বিশ্বনন্দিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

আমরা ইতিহাসে অনেক রাষ্ট্রনায়কের রাষ্ট্র পরিচালনার কিংবা সিদ্ধান্ত নেয়ার অনেক কাহিনী শুনেছি। পাঠ করেছি অনেক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আন্তর্জাতিক নেতৃবৃন্দের নানা ধরনের নির্দেশ। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনবদ্য ভূমিকা সমস্ত তুলনার ঊর্ধ্বে। আমরা এমন একটা সময় নিয়ে আলোচনা করছি যে সময়টা একটি নতুন জাতির আবির্ভাবের পূর্বক্ষণ, একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থার মধ্যে নতুন শক্তির স্ফূরণের লগ্ন। পুরনো রাষ্ট্রব্যবস্থার অচলায়োতন চূর্ণবিচূর্ণ করে নতুন রাষ্ট্র নির্মাণের অসম সাহসী সন্ধিক্ষণ। ঠিক সেই মুহূর্তে অত্যন্ত নির্মোহভাবে যিনি নির্ণয় করতে পারেন ইতিহাসের গতিমুখ, তাঁকে আমরা কোন অভিধায় অভিষিক্ত করবো? তিনি তো মানুষের সাধারণ গুণাবলীর আরও ঊর্ধ্বে অসাধারণ মহিমায় উদ্ভাসিত এক মহামানব। যিনি সেই উত্তাল সময়ে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের অনবদ্য এক ভাষণের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের গতিমুখ নির্ণয় করলেন। যার ধারাবাহিকতায় বিশ্বের মানচিত্রে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম দেশের অভ্যুদয় ঘটলো।

বাঙালির ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা ৭ই মার্চ অবিস্মরণীয় একটি দিন। বাঙালি জাতির চরম ক্রান্তিকালে এদিন ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানের উত্তাল জনসমুদ্রে সভামঞ্চে ‘রাজনীতির কবি’ বঙ্গবন্ধু ‘দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়’ নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেদিন ১০ লক্ষাধিক মানুষের সামনে পাকিস্তানি দস্যুদের কামান-বন্দুক-মেশিনগানকে পরোয়া না করে বজ্রকণ্ঠে বাঙালি জাতির হাজার বছরের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা ও মুক্তির দাবি আদায়ের ঘোষণা করলেন। এরও আগে ২ মার্চ থেকেই বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে পুরো দেশজুড়ে পাকিস্তানি দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন চলছিল। তৎকালীন পাকিস্তানি জনগণই শুধু নয়, পুরো বিশ্ব তাকিয়ে ছিল বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে কী বলবেন সেই দিকে। পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্য এটি ছিল একটি অন্তিম মুহূর্ত। বস্তুত, ১৯৪৮ সালে ভাষার দাবিতে আন্দোলন শুরু করার সময়ই বঙ্গবন্ধু বুঝে গিয়েছিলেন স্বাধীনতা ব্যতীত এই জাতির চূড়ান্ত মুক্তি মিলবে না। আর তাই তিনি স্বাধীনতার চেতনায় প্রদীপ্ত বাঙালি জাতির জন্য এই ভাষণের মধ্যদিয়েই পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণের নাগপাশ ছিন্ন করে জাতীয় মুক্তি ও কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে চূড়ান্ত সংগ্রামের সূচনা করেছিলেন। পরবর্তীতে আমরা দেখেছি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালে এই ভাষণ রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কতটা অনুপ্রাণিত করেছে। এই একটি ভাষণই বিশ্বের বুকে একটি স্বাধীন জাতিরাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটায়; যা বিশ্বের ইতিহাসে একটি অনন্য নজিরবিহীন ঘটনা।

মাত্র ১৯ মিনিটের এক ভাষণ যেটি বিশ্ববাসীর কাছে বিশেষ করে বিশ্বের প্রতিটি মুক্তিকামী মানুষের কাছে এক আলোর দিশারী। বঙ্গবন্ধু তাঁর সংক্ষিপ্ত সেই তেজস্বী ভাষণে পাকিস্তানের ২৩ বছরের রাজনীতি ও বাঙালির বঞ্চনার ইতিহাস তুলে ধরেন, পাকিস্তান রাষ্ট্রের সঙ্গে বাঙালির দ্বন্দ্বের স্বরূপ উপস্থাপন করেন, অসহযোগ আন্দোলনের পটভূমি বিশ্লেষণ ও বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা করেন, শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যা সমাধানে তাঁর সর্বাত্মক প্রচেষ্টার কথাও ব্যক্ত করেন, পূর্ব বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে প্রতিরোধ গড়ে তোলার নির্দেশ প্রদান করেন। তিনি জানতেন এই প্রতিরোধ সংগ্রামই শেষাবধি মুক্তিযুদ্ধের রূপ পরিগ্রহ করবে। তাই তিনি শত্রুর মোকাবিলায় গেরিলাযুদ্ধের কৌশল অবলম্বনের কথাও বললেন তাঁর ভাষণে। যেকোনো উসকানির মুখে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার পরামর্শদান সহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরার পর ঘোষণা করলেন: ‘ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে। রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব, ইনশা আল্লাহ।......এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।’

রেসকোর্সের জনসমুদ্রে দেয়া জাতির পিতার এই কালজয়ী ভাষণেই ধ্বনিত হয়েছিল বাংলার গণমানুষের প্রাণের দাবি। বঙ্গবন্ধু তাঁর এই ভাষণে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার জন্য ঐক্যবদ্ধ করেন। একইসঙ্গে সশস্ত্র সংগ্রামের দিক-নিদের্শনাও দিয়ে যান। ২ মার্চের ডাকে ৭ মার্চ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ পাওয়ার জন্য জনসমুদ্রের ঢেউ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে ধাবিত হতে থাকে। তিনি তাদেরকে শত্রুর মোকাবিলার জন্য নির্দেশ দেন, ‘তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো।’

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বিশেষ বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। বস্তুত বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতারই ঘোষণা। তবে সরাসরি তা ঘোষণা না করে তিনি কৌশলের আশ্রয় গ্রহণ করেন। এই ভাষণই নিরস্ত্র বাঙালি জাতিকে রাতারাতি সশস্ত্র করে তোলে। একটি ভাষণকে অবলম্বন করে স্বাধীনতার জন্য ৩০ লাখ বাঙালি জীবন উৎসর্গ ও কয়েক লাখ মা–বোন সম্ভ্রম বিসর্জন দেন। বিশেষত ভাষণের শেষ পর্যায়ে তিনি ‘স্বাধীনতার’ কথা এমনভাবে উচ্চারণ করলেন যাতে স্বাধীনতা ঘোষণার কিছু বাকিও থাকল না; আবার তাঁর বিরুদ্ধে একতরফা স্বাধীনতা ঘোষণার অভিযোগ উত্থাপন করাও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর পক্ষে সম্ভব ছিল না।

আমরা ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখতে পাব, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে তখন বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এমন ছিল যে, কোনো কোনো বিদেশি পত্রিকাও তখন জানিয়েছিল, ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু হয়তো পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা করবেন। একাত্তরের ৫ মার্চ লন্ডনের গার্ডিয়ান, সানডে টাইমস, দি অবজারভার এবং ৬মার্চ ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় সেসময় ৭ই মার্চের স্বাধীনতা ঘোষণার পূর্বাভাস দেওয়া হয়। একাত্তরের ৬ মার্চ লন্ডনের ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় ছাপা হয়, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আগামীকাল (৭ই মার্চ) পূর্ব পাকিস্তানের একতরফা স্বাধীনতা ঘোষণা করতে পারেন।’ আমরা দেখেছি পরবর্তীকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু একাত্তরে ৭ই মার্চ সরাসরি কেন স্বাধীনতা ঘোষণা করেননি, তার ব্যাখ্যা তিনি নিজেই দিয়েছেন। ১৯৭২-এর ১৮ জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্টকে এনডব্লিউ টিভির জন্য দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ৭ই মার্চের ওই ঘটনা বর্ণনা করেন। ফ্রস্ট জাতির পিতার কাছে জানতে চান, ‘আপনার কি ইচ্ছা ছিল যে, তখন ৭ই মার্চ রেসকোর্সে আপনি স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ঘোষণা দেবেন?’ বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমি জানতাম এর পরিণতি কী হবে এবং সভায় আমি ঘোষণা করি যে এবারের সংগ্রাম মুক্তির, শৃঙ্খল মোচন এবং স্বাধীনতার।’ ফ্রস্ট আবার প্রশ্ন করেন, ‘আপনি যদি বলতেন, আজ আমি স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ঘোষণা করছি, তো কী ঘটত?’ বঙ্গবন্ধু উত্তর দেন, ‘বিশেষ করে ঐ দিনটিতে আমি এটা করতে চাইনি। কেননা, বিশ্বকে তাদের আমি এটা বলার সুযোগ দিতে চাইনি যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন এবং আঘাত হানা ছাড়া আমাদের আর কোনো বিকল্প ছিল না। আমি চাইছিলাম তারাই আগে আঘাত হানুক এবং জনগণ তা প্রতিরোধ করার জন্য প্রস্তুত ছিল।’ পরবর্তীতে পুরো বিশ্ব জানলো, ৭ই মার্চ সরাসরি স্বাধীনতা ঘোষণা না করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শতভাগ সঠিক কাজটিই করেছেন।

জাতির জনকের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ আজ   বিশ্ব ঐতিহ্য সম্পদ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ইউনেস্কোর মেমোরি অব ওয়ার্ল্ড রেজিস্ট্রারে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যচিত্রের ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত হয়ে এর মাহাত্ম্য আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্প্রতি জেকোভ এফ. ফিল্ডের গ্রন্থে প্রায় আড়াই হাজার বছরে মানবজাতির ইতিহাসে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নেতা, রাষ্ট্রনায়ক ও মিলিটারি জেনারেলদের উদ্দীপনামূলক বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এবং অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচিত হয়েছে। তার বিবেচনায় বিশ্বে শ্রেষ্ঠ ৪০টি ভাষণ এতে সংকলিত হয়েছে। গ্রন্থের নাম নির্বাচন করেছেন- ‌We Shall Fight on the Beaches: The Speeches that Inspired History. আমরা দেখেছি, নিউজ উইক সাময়িকী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘রাজনীতির কবি’ হিসেবে অভিহিত করেছে। এছাড়া, ইউনেস্কোর স্বীকৃতির আগেই বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় একাডেমিক স্বীকৃতি পায়। এসমস্ত তথ্যই পরিষ্কারভাবে ৭ই মার্চের মাহাত্মকেই তুলে ধরে। 

বাঙালির বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতার এই দিকনির্দেশনায় ছিল বজ্রকঠিন জাতীয় ঐক্যের মূলমন্ত্র। এ অঞ্চলের মানুষ যে ভাষায় কথা বলতো তা তাদের মাতৃভাষা। এই মাতৃভাষাকে তিনি আত্মপরিচয়ের ভাষায় পরিণত করার অসামান্য পারদর্শিতা দেখিয়েছেন। সবচেয়ে বড় কথা তিনি এই জাতিকে একটি ভৌগোলিক ঠিকানা দিয়েছেন। সার্বভৌমত্বের অধিকার নিশ্চিত করেছেন। পৃথিবীর মানুষকে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে এটা এমন একটি জাতিরাষ্ট্র যা কারও অনুগ্রহের ভেতর দিয়ে জন্ম লাভ করেনি। নিজস্ব শক্তিতে, নিজস্ব ক্ষমতায়, অনেক রক্ত-ঘাম এবং ত্যাগের বিনিময়ে তার নিজের অস্তিত্বকে প্রমাণ করেছে। আজ বাঙালির একটা নির্দিষ্ট রাষ্ট্রব্যবস্থা আছে, নিজের পরিচয় আছে, নিজের কৃষ্টি-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য রয়েছে-যা সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুর কীর্তিতে। তিনি এমনই একটি দেশ উপহার দিয়েছেন পৃথিবীকে, যেই পৃথিবীর প্রতিটি বাঙালি অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে উচ্চারণ করতে পারে-আমার একটি দেশ আছে, যে দেশের নাম বাংলাদেশ। আর সেই দেশটির অস্তিত্ব নির্মাণের চূড়ান্ত মুহূর্তই ছিল বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ। পৃথিবীর ইতিহাসে কালজয়ী এ ভাষণ নির্দ্বিধায় বিশ্বের শোষিত, বঞ্চিত ও মুক্তিকামী মানুষের কাছে পরাজয়ের শিকল ভাঙার চিরন্তন পাথেয় হয়ে থাকবে।

রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ ও বহু ত্যাগের বিনিমিয়ে আমরা ১৬ই ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করি। একটি ভাষণ কীভাবে গোটা জাতিকে জাগিয়ে তুলতে পারে; স্বাধীনতার জন্য জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্যে উৎসাহিত করতে পারে; বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ তারই এক উজ্জ্বল উদাহারণ। বঙ্গবন্ধু ১৯৬৬ সালের ‘ছয় দফায়’ বাঙালিকে স্বাধিকারের সাঁকো দিয়েছিলেন। ৭ মার্চের ভাষণের অমর বাণীতে বঙ্গবন্ধু সেই সাঁকোকে স্বাধীনতার স্বপ্নসেতুতে রূপান্তরিত করেছেন। পৃথিবীর যেকোনো শোষিত জাতির মুক্তির সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর অনাচার-নির্যাতন-শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে দীর্ঘ সংগ্রামী জীবন তাদের অনুপ্রেরণা জোগাবে। তাঁর দেশপ্রেম, তাঁর দূরদর্শিতা, তাঁর জাদুকরী সাংগঠনিক ক্ষমতা, তাঁর মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি অধিকতর ঔজ্জল্য নিয়ে পৃথিবীর সমস্ত জায়গায় পরিব্যাপ্ত হোক।

 

লেখক: প্রকাশক ও সম্পাদক, দৈনিক জাগরণ।

Header Ad

কারা বিক্রি করছে ফুটপাত, তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর ফুটপাত, অবৈধভাবে দখল ও বিক্রির সঙ্গে কারা কারা জড়িত তাদের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

ফুটপাত বিক্রি ও অবৈধ দখলকারীদের সঙ্গে কারা কারা জড়িত তা আগামী ১৩ মে অর্থাৎ ১৫ দিনের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনকে জানানোর জন্য বলেছেন আদালত।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে সোমবার (২৯ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এখনো উদ্ধার হয়নি লেকে ডুবে যাওয়া সেই শিশু

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মহাখালীর যক্ষ্মা হাসপাতালের (টিবি) গেট এলাকায় লেকের পানিতে পড়ে নিখোঁজ শিশু রিয়ার সন্ধান এখনো পাননি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তাই রাতে অভিযান স্থগিত করা হয়।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকল থেকে ফায়ার সার্ভিস আবারও অভিযান চালাবে বলে জানা গেছে। এর আগে, রোববার (২৮ এপ্রিল) রাত ৭টা ৫০ মিনিটে শিশুটির নিখোঁজের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। শিশুটির সন্ধান না পেয়ে রাত ১২টার অভিযান স্থগিত করা হয়। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান এ তথ্য জানান।

এ বিষয়ে বনানী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইদুল ইসলাম বলেন, ফাতেমা নামে আরেক শিশুর কাছে জানতে পারি তার সঙ্গে রিয়া নামের এক শিশু ছিল। তারা দুজনই ভিক্ষাবৃত্তি করে। রিয়া ব্রিজের ওপর থেকে লেকের পানিতে পড়ে যায়। তার বয়স আনুমানিক ছয় বছর। এর আগে, রোববার (২৮ এপ্রিল) রাত পৌনে ৮টার দিকে শিশু রিয়া পানিতে পড়ে যায়।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাকিবুল ইসলাম বলেন, তাদের ডুবুরি দলের সদস্যরা শিশুটিকে উদ্ধারে কাজ করছে। শিশুটির নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। রাত সাড়ে ১১টায় তল্লাশি স্থগিত করা হয়। আজ সকাল থেকে আবার তল্লাশি শুরু হবে।

বনানী থানার এসআই সাইদুল ইসলাম বলেন, ফাতেমা নামে আরেকটি শিশুর কাছে জানা যায় নিখোঁজ শিশুর পরনে ছোট প্যান্ট ও গেঞ্জি ছিল। তবে শিশুটির বাসা কোথায় তা জানে না ফাতেমা।

 

রাত ১১ টার পর চা-বিড়ির দোকান বন্ধের নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীতে রাত ১১টার পর রাস্তার পাশের বিড়ি, পান ও চায়ের দোকান বন্ধ করে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। গতকাল রোববার (২৮ এপ্রিল) রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে মার্চ মাসের অপরাধ পর্যালোচনা সভায় উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের এ নির্দেশ দেন তিনি।

সভায় ডিএমপি কমিশনার বলেন, ছিনতাই ও অপরাধ প্রতিরোধে রাতে রাস্তার মোড়ের দোকানগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় এসব অস্থায়ী দোকানে অপরাধীরা সারারাত আড্ডা দেয়, আর সুযোগ পেলেই ছিনতাই করে। রাস্তার পাশের বিড়ি, পান ও চায়ের দোকান রাত ১১টার পর বন্ধ করে দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, কোনো সন্ত্রাসী ও জঙ্গিগোষ্ঠী যেন কোনো প্রকার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে না পারে সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। এই ধরনের অপরাধ চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর থাকারও নির্দেশ দেন ডিএমপি কমিশনার।

ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান জানান, এবার রমজানে রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের সাথে ক্রাইম বিভাগও আন্তরিকতার সাথে কাজ করেছে।

সর্বশেষ সংবাদ

কারা বিক্রি করছে ফুটপাত, তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট
এখনো উদ্ধার হয়নি লেকে ডুবে যাওয়া সেই শিশু
রাত ১১ টার পর চা-বিড়ির দোকান বন্ধের নির্দেশ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে শিক্ষকদের উপর হামলার অভিযোগ উপাচার্যের বিরুদ্ধে
সোনাইমুড়ীতে নতুন গ্যাস কূপের সন্ধান, আজ থেকে খনন
আজ দেশে ফিরছেন প্রধানমন্ত্রী
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী হলেন ইসহাক দার
বিয়ের দাবি নিয়ে আসা তরুণীকে নিয়ে পালালেন ছাত্রলীগ নেতা
তীব্র গরমে ৫ জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে আজ
হিটস্ট্রোকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মৃত্যু, নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণা
ডাক্তার পাত্রীকে বিয়ে করছেন শাকিব খান !
পদত্যাগ করলেন থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গুদামে মিলল পুলিশের রেশনের ৩০০ বস্তা চাল, ব্যবসায়ীকে লাখ টাকা জরিমানা
নওগাঁয় মাদক মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন
ইরাকে সমকামিতায় জড়ালেই ১৫ বছরের জেল
আবারও বিএসইসির চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পেলেন শিবলী রুবাইয়াত
কোরবানির জন্য গরু আমদানি করবে না সরকার
আবু ধাবিতে উদ্বোধন হচ্ছে ৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত গির্জা
পাপ লুকাতে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার : রিজভী
রিকশাচালকদের মাঝে ডিএনসিসির ৩৩ হাজার ছাতা বিতরণ