মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫ | ১৭ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

রেমিট্যান্সে প্রণোদনা বাড়া‌নোয় খু‌শি প্রবাসীরা

তিন বছ‌রের মাথায় প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের বিপরীতে প্রণোদনা/নগদ সহায়তা হার বাড়ি‌য়ে‌ছে বাংলা‌দেশ সরকার। রেমিট্যান্সের প্রণোদনা দুই থেকে বেড়ে আড়াই শতাংশ ক‌রে‌ছে সরকার। বছ‌রের শুরু‌তে এমন পদ‌ক্ষে‌পে খু‌শি যুক্তরা‌জ্যের প্রবাসীরা। আর মা‌নি ট্রান্সফার ব্যবসায়ীরা বল‌ছেন, প্রণোদনা বাড়ায় দে‌শে বৈধভা‌বে টাকা পাঠা‌নোর প‌রিমান আরও বাড়‌বে।

এ বছ‌রের শুরু‌তে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর গুরুত্ব দিয়ে বাড়ানো হয়েছে এর প্রণোদনা। দশমিক পাঁচ শতাংশ বেড়ে এবার রেমিট্যান্সের প্রণোদনা দুই থেকে বেড়ে আড়াই শতাংশে পৌঁছালো।

শনিবার (১ জানুয়ারি) অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলামের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, জনমানুষের সার্বিক জীবনমান উন্নয়ন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানো, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের গুরুত্ব বিবেচনায় বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমজীবী মানুষের কষ্টার্জিত বৈদেশিক আয় বৈধ উপায়ে দেশে প্রত্যাবাসন উৎসাহিত করার লক্ষ্যে রেমিট্যান্স পাঠানোর বিপরী‌তে সরকার ২ শতাংশ প্রণোদনা/নগদ সহায়তা দেওয়ার বিদ্যমান হার বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বর্ধিত এ হার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ১ জানুয়ারি শনিবার থেকেই কার্যকর হবে।

সরকা‌রের এমন উ‌দ্যে‌গে যুক্তরা‌জ্যের প্রবাসীরা অ‌নেক খু‌শি। তারা বল‌ছেন, স‌রকা‌রের এমন সিদ্বান্ত থে‌কে প্রবাসী‌দের গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়‌টি বুঝা যায়।

লন্ডন প্রবাসী আহ‌মেদ শরীফ ব‌লেন, আগে এক লাখ টাকা দে‌শে পাঠা‌লে ২ হাজার টাকা বোনাস পাওয়া যেত, এখন শুনলাম লা‌খে আড়াই হাজার টাকা পাওয়া যা‌বে। বিষয়টা আমা‌দের মত প্রবাসী‌দের খু‌শির খবর। প্রবাসীরা উৎসাহিত হ‌বেন বৈধভা‌বে দে‌শে টাকা পাঠা‌তে।
সান্ডারল্যা‌ন্ডের বা‌সিন্ধা ছরফ রাজ জু‌বের ব‌লেন, প্রবাসীরা কষ্ট ক‌রে এদে‌শে অর্থ উপ‌া‌র্জন করে। দে‌শে টাকা পাঠ‌া‌লে সরকা‌রের পক্ষ থেকে প্র‌ণোদনা দেয়া হয়, বিষয়‌টি আমার কা‌ছে খু‌শি ও সম্মা‌নের। পাশাপা‌শি হু‌ন্ডির মাধ্য‌মে টাকা পাঠা‌নোও অনেক কম‌বে। প্র‌ণোদনার হার বা‌ড়ি‌য়ে প্রবাসী‌দের গুরুত্ব দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থ মন্ত্রী লোটাস কামাল‌কে প্রবাসী‌দের পক্ষ থে‌কে ধন্যবাদ জানাই।

মা‌নি ট্রান্সফার ব্যবসায়ী ওয়াট‌নি এন্টারপ্রাই‌জের সত্বা‌ধিকা‌রি এমরান আহ‌মেদ ব‌লেন, যে সম‌য়ে প্র‌ণোদনা শুরু হ‌য়ে‌ছিল, সে সময়ে বৈধভা‌বে দে‌শে টাকা পাঠা‌তে অ‌নেক কাস্টমার উৎসা‌হিত হ‌য়ে‌ছি‌লেন। প্র‌ণোদনার হার বাড়া‌নোয় আশা কর‌ছি প্রবাসীরা আরও বে‌শি উৎসা‌হিত হ‌ইয়ে রেমিট্যান্স দে‌শে পাঠা‌বে। এমন উদ্যোগ নেওয়ায় ব্যবসায়ী‌দের পক্ষ থে‌কে আমরা সরক‌ার‌কে ধন্যবাদ জানাই। আমা‌দের দা‌বি, উদ্যোগটা যেন সব সময় চালু থা‌কে।

সোনালী ব্যাংক সুনামগঞ্জ শাখার ব্যবস্হাপক মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম জানান, পিন নাম্বার নিয়ে আসলে আমরা সাথে সাথে কাস্টমার‌দের প্র‌ণোদনার টাকা দিয়ে দেই। এছাড়া আমাদের শাখায় প্রবাসীদের জন্য আলাদা ডেস্ক রয়েছে। প্র‌ণোদনার পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রবাসীদের জন্য অনেক সুবিধা হবে। আমাদের এখানে রেমিট্যান্স প্রবাহ অনেক বাড়বে। যারা টাকা বাংলাদেশ পাঠান তিনিও চিন্তা করবেন তার স্বজন বাড়তি কিছু টাকা পাবেন। হুন্ডি বা অসৎ উপায়ে টাকা পাঠানোর প্রবণতা কমে আসবে।

উল্লেখ্য, ২০১৯-২০ অর্থবছর প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের বিপরীতে প্রথমবারের মতো ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা/নগদ সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেয় সরকার।

/এএস

Header Ad
Header Ad

আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ড. ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে আগামী বছরের শুরুতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে অবহিত করেছেন দেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (১ জুলাই) সন্ধ্যায় দুই নেতার মধ্যে এক সৌহার্দ্যপূর্ণ টেলিফোনালাপে এ বিষয়টি উঠে আসে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, মার্কো রুবিও বাংলাদেশের চলমান সংস্কার কর্মসূচি এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য ও রেমিট্যান্সের অন্যতম শীর্ষ উৎস, ফলে দুই দেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব আরও দৃঢ় করা সময়ের দাবি।

দুই নেতার মধ্যে এই টেলিফোন আলোচনা চলে প্রায় ১৫ মিনিট। আলোচনায় উঠে আসে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ প্রক্রিয়া, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, রোহিঙ্গা সংকট এবং নিরাপত্তা-সহ নানা বিষয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরও নিশ্চিত করেছে, ফোনালাপে উভয় পক্ষ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “নির্বাচন কমিশন বর্তমানে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে পুনর্গঠিত করতে নিরলসভাবে কাজ করছে, যা আগের সরকার সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দিয়েছিল। আগামী নির্বাচনে আমাদের অনেক তরুণই প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, নির্বাচনের আগে মার্কো রুবিওর বাংলাদেশ সফর তরুণদের অনুপ্রাণিত করবে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের স্পষ্ট বার্তা পৌঁছাবে।

তিনি আরও জানান, সম্প্রতি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যান্ডাউয়ের সঙ্গে সফল বৈঠক করেছেন। দুই দেশই সম্পর্ক আরও জোরদার করতে আগ্রহী। এছাড়া পারস্পরিক শুল্ক ব্যবস্থা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখার বিষয়ে সম্মত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা।

রোহিঙ্গা ইস্যুতেও যুক্তরাষ্ট্রের ধারাবাহিক মানবিক সহায়তার প্রশংসা করেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন, “২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের সহায়তায় সর্ববৃহৎ দাতা হিসেবে কাজ করছে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বাস্তব সম্ভাবনা এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে উজ্জ্বল।”

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা জোরদারে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। ফোনালাপের বিস্তারিত তথ্য আমাদের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে।”

এই সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনার মধ্য দিয়ে দুই দেশের গভীর সম্পর্ক ও পারস্পরিক আস্থার প্রতিফলন ঘটেছে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।

Header Ad
Header Ad

বিসিবি সভাপতির উপদেষ্টা পদে থাকছেন না সামি, জানালেন কারণ

বিসিবি সভাপতির উপদেষ্টার দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন সৈয়দ আবিদ হোসেন সামি। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির উপদেষ্টা পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ক্রীড়া সাংবাদিক ও উপস্থাপক সৈয়দ আবিদ হোসেন সামি। মঙ্গলবার (১ জুলাই) নিজের ফেসবুক পোস্টে এই দায়িত্ব পালন থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়ে আবেগঘন বক্তব্য দেন তিনি।

সামি জানান, তিনি নিজের উদ্যোগে নয়, বরং বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের আহ্বানে উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। এটি ছিল সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাসেবী পদ। কোনো সম্মানি বা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে নয়, শুধুমাত্র ক্রিকেটের উন্নয়নে সহযোগিতার উদ্দেশ্যেই এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন তিনি।

তবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একটি বিশেষ গোষ্ঠী তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করে। সামির ভাষায়, “সেদিনই (দায়িত্ব ঘোষণার দিন) থেকে একটা মহল আমার রেপুটেশন খারাপ করার জন্য সক্রিয় হয়ে ওঠে। কেন, তা আমি জানি না। আমি তো প্রেসিডেন্টের চাওয়াতেই এসেছিলাম।”

 

সামি জানান, দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই তিনি মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করেন। অনূর্ধ্ব-১২ ক্রিকেট কার্নিভাল নিয়ে প্রথম বৈঠকে অংশ নিয়ে বিভিন্ন উদ্ভাবনী প্রস্তাব দেন—যেমন পেসার হান্ট প্রতিযোগিতা, প্যারেন্টাল কোচিং গাইডলাইন, শিশুদের জন্য টেস্ট ক্রিকেটভিত্তিক চিত্রাঙ্কন ইত্যাদি। পরবর্তীতে দেশের চারটি বিভাগে ঘুরে গিয়ে মাঠ পর্যায়ের সমস্যা চিহ্নিত করে তা বিসিবির বিভিন্ন বিভাগে জমাও দেন।

তবে মাঠপর্যায়ের কাজের পাশাপাশি কনটেন্ট তৈরি করা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। সামি জানান, তার পেশা হচ্ছে কনটেন্ট তৈরি, আর সেটাই বিসিবি জানত। তবুও একটি গোষ্ঠী তার কাজকে ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’ বলে প্রচার করতে থাকে। অথচ, তিনি নিজ খরচে ক্যামেরাম্যানসহ কনটেন্ট তৈরি করেছেন এবং এর জন্য বিসিবির কোনো অর্থও গ্রহণ করেননি।

এই বিতর্কে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বিসিবি সভাপতি নিজেই—এমন মন্তব্য করে সামি বলেন, “একটা সফল কার্যক্রমের দিনশেষে প্রেসিডেন্টের মুখ থেকে হাসি উড়ে যাচ্ছে। শুধুমাত্র আমাকে ঘিরে গড়ে ওঠা একটি কৃত্রিম সংকট তাকে ডিস্ট্র্যাক্ট করছে।”

সামি আক্ষেপ করে লেখেন, “আমি রাজনীতিবিদ নই, বড় ব্যবসায়ী নই, বড় কোনো ব্যাকআপও নেই। ডার্টি পলিটিক্স আমার কাজ না। আমি শুধু কাজটাই করতে পারি—রিসার্চ, হোমওয়ার্ক, ডে রিপোর্ট, মাঠপর্যায়ে ঘুরে ঘুরে সমস্যা চিহ্নিত করা, সমাধানের চেষ্টা করা।”

তিনি বলেন, তার এই কাজের মনোভাবই গত ১০ বছর যমুনা টেলিভিশনে স্থিতিশীল ক্যারিয়ারের পেছনে মূল কারণ। সব টিভি চ্যানেল তাকে স্পোর্টস প্রোগ্রামে রাখে তার হোমওয়ার্ক ও এফোর্টের কারণে।

 

বিসিবি সভাপতির উপদেষ্টার দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন সৈয়দ আবিদ হোসেন সামি। ছবি: সংগৃহীত

নিজের সরে দাঁড়ানোর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে সামি দেখান বিসিবি সভাপতির স্বচ্ছ, দেশপ্রেমিক কর্মকাণ্ডে বাধা সৃষ্টি না করাই। তিনি বলেন, “বুলবুল ভাই দেশের ক্রিকেটে বড় পরিবর্তনের সূচনা করেছেন। আমি থাকলে হয়তো উনার পথ আরো কঠিন হয়ে যাবে। আমি বিতর্কের কারণ হতে চাই না।”

ফেসবুক পোস্টের শেষাংশে সামি লেখেন, “একটা বাস্তবতার শিক্ষা আমার স্ত্রী আমাকে বারবার দিতেন—‘বাংলাদেশে শুধু মেধা বা ট্যালেন্ট দিয়েই সব হয় না।’ আজ আবার মনে হলো, Wife is always right।”

Header Ad
Header Ad

বছর ঘুরে ফিরল গণঅভ্যুত্থানের জুলাই

ছবি: সংগৃহীত

আজ ১ জুলাই। দিনটি ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে ‘জুলাই গণ অভ্যুত্থান’-এর সূচনাদিবস হিসেবে। এক বছর আগে এই দিনে দেশের শিক্ষাঙ্গনে শুরু হয়েছিল কোটা সংস্কার আন্দোলনের নতুন ঢেউ, যা পরিণত হয়েছিল ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে।

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে রাজপথে নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)সহ দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

“কোটা না মেধা, মেধা মেধা” স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে শিক্ষাঙ্গন। আন্দোলনকারীরা সরকারকে তিন দিনের আলটিমেটাম দেন, যা পরবর্তীতে রূপ নেয় ৩৬ দিনের এক বিরল গণআন্দোলনে। ২০১৮ সালে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও, ২০২৪ সালের ৫ জুন হাইকোর্ট ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশ দেন। এই আদেশের বিরুদ্ধেই ১ জুলাই ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

সেদিন শিক্ষার্থীরা কলাভবন, শ্যাডো, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ ও হলগুলো ঘুরে ভিসিচত্বর হয়ে রাজু ভাস্কর্যে সমবেত হন। সেখানে তারা উত্থাপন করেন চার দফা দাবি: ১) ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন বহাল রাখা, ২) মেধাভিত্তিক নিয়োগ অব্যাহত রাখা, ৩) কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল, এবং ৪) কেবল সংবিধান অনুযায়ী অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্যই সুযোগ রাখার প্রস্তাব।

আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট বার্তা দেন, দাবি না মানা হলে আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে। ২ জুলাই ঢাবি থেকে গণপদযাত্রা এবং ৪ জুলাই পর্যন্ত ক্লাস ও পরীক্ষাবর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘৪ জুলাইয়ের মধ্যে সরকারের উচিত আমাদের দাবির চূড়ান্ত আইনি সমাধান ঘোষণা করা।’ তিনি জানান, একইসাথে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজেও গণপদযাত্রা কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ওইদিন আন্দোলনে সরব ছিলেন। তারা জানিয়ে দেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা বৃষ্টিতে ভিজে বিক্ষোভ-সমাবেশে অংশ নেন। তাদের বক্তব্য ছিল স্পষ্ট—"১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে, অথচ আজও আমাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে। চাকরিতে কোটা নয়, নিয়োগ হতে হবে মেধার ভিত্তিতে।"

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে জাবির প্রধান ফটকে গিয়ে প্রতীকী অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। ১০ মিনিট ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উভয় দিক বন্ধ রেখে সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি দেন তারা—৪ জুলাইয়ের মধ্যে রায় বাতিল না হলে এই মহাসড়ক পুরোপুরি অবরোধ করে রাজধানী অচল করে দেওয়া হবে।

একইসাথে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভে অংশ নেন। তারা রায়সাহেব বাজার হয়ে বিক্ষোভ মিছিল শেষে রফিক ভবনের সামনে এসে সমবেত হন। সেখান থেকে তারা ঘোষণা দেন, প্রয়োজনে রক্ত দিয়েও কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তিতে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি ঘোষণা করেছে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ নামের দেশব্যাপী কর্মসূচি। আজ সকালে রংপুরের পীরগঞ্জে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে শুরু হবে এ কর্মসূচি। এরপর গাইবান্ধা ও রংপুর সদরে পথসভায় অংশ নেবেন দলটির নেতারা।

অন্যদিকে বিকাল ৩টায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপির উদ্যোগে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে অংশ নেবেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এবং আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের পরিবার।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ড. ইউনূস
বিসিবি সভাপতির উপদেষ্টা পদে থাকছেন না সামি, জানালেন কারণ
বছর ঘুরে ফিরল গণঅভ্যুত্থানের জুলাই
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকার বাজেট পাস
সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ খালি
পুলিশ পরিচয়ে ব্যবহার করা যাবে না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম: আরপিএমপি কমিশনার
ভোলায় চাঁদা না পেয়ে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
টাঙ্গাইলের নির্ধারিত স্থানে মডেল মসজিদ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন (ভিডিও)
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ
চুয়াডাঙ্গায় ট্রেন থেকে ফেলে পাউবো কর্মচারীকে হত্যা, পরিবারের মামলা
দেশে নতুন করে আরও ২১ জনের করোনা শনাক্ত
ঢাকার প্রতিটি ভবনের ছাদে সৌর প্যানেল বসানোর নির্দেশ হাইকোর্টের
লুঙ্গি পরে রিকশায় প্যাডেল মেরে ঢাকা থেকে বিদায় নিলেন জার্মান রাষ্ট্রদূত
ইসরায়েলের ৩১ হাজারেরও বেশি ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইরান (ভিডিও)
ইরানের সাথে আলোচনা করছি না, তাদের কিছু দিচ্ছিও না: ট্রাম্প
আসিফ মাহমুদের অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে প্রশ্ন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বললেন ‘আইনটা দেখিনি’
নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছে চীন: মির্জা ফখরুল
বিপিএলে নোয়াখালীর অভিষেক, আসছে ‘নোয়াখালী রয়্যালস’
হোটেল থেকে সন্তানসহ স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার, ময়নাতদন্তে যা জানা গেল
আমাদের ডিভোর্স হয়নি, হিরো আলম অভিমান করেছিল: রিয়ামনি