শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫ | ১৪ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

কুমিল্লায় ধুলাবালিতে দুর্বিষহ হয়ে উঠছে জনজীবন

অস্বাস্থ্যকর বাতাসের শহরের তালিকায় নিয়মিত রাজধানী ঢাকাকে পেছনে ফেলছে কুমিল্লা। দেশের জনবহুল এই শহরের বাতাস মারাত্মক অস্বাস্থ্যকর বলে প্রতিবেদন দিচ্ছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা। স্থাপনা, রাস্তাঘাট ও উন্নয়ন প্রকল্পের চলমান নির্মাণ কাজের ইট-বালু-সিমেন্টসহ মাটি পরিবহনের সময় ধুলাবালি উড়ে দূষিত হচ্ছে কুমিল্লার বাতাস। সেই সাথে মাত্রাতিরিক্ত যানবাহনের ধোঁয়া। জেলার প্রধান নদী গোমতী থেকে অবাধে বালু ও মাটি কেটে ট্রাকে করে পরিবহন এবং ইটভাটার দৌড়াত্ম্য তো আছেই। সব মিলিয়ে ধূলায় কুমিল্লায় দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। বাড়ছে নানা রোগবালাই।

জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের দাবি, শুকনো মৌসুমে অতিরিক্ত ধুলাবালির কারণে বাতাস অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে কুমিল্লায়। ধুলাবালি আর ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়ায় মাত্রাতিরিক্ত দূষিত হচ্ছে কুমিল্লার বায়ু। আর চিকিৎসকরা বলছেন, খালি চোখে দেখা না গেলেও নিরবে নানা দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে কুমিল্লাবাসী। নিয়মিত দূষিত বাতাসে নিঃশ্বাস নেয়ার কারণে দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে লাখো মানুষ।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বৈশ্বিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের তথ্যে বলা হয়েছে, ঢাকার চেয়েও দূষিত হয়ে পড়েছে কুমিল্লার বাতাস। প্রতিষ্ঠানটির তথ্যমতে, সেদিন কুমিল্লার আইকিউ স্কোর ছিল ২৬৫ পিপিএম। এর একদিন পর ৬ ফেব্রুয়ারি তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৮১ পিপিএম। এরপর ১৮ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার আইকিউ স্কোর ছিল ২৮৯ পিপিএম এবং সর্বশেষ ১৮ মার্চ কুমিল্লার আইকিউ স্কোর দাঁড়ায় ১৭৩ পিপিএম। পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ুমান সূচক বলছে, কুমিল্লার এই স্কোর খুবই অস্বাস্থ্যকর।

এই জেলার বিশিষ্টজনরা বলছেন, অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ, ট্রাক্টরে করে মাটি-ইট সরবরাহ, সড়কে যেখানে-সেখানে ইট-বালু-সিমেন্ট ফেলে রাখা, যানবাহন ও ইটভাটার ধোঁয়ায় ক্রমেই দূষিত হচ্ছে কুমিল্লার বাতাস। এখানকার সড়ক-মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। এসব যানবাহনের কালো ধোঁয়া, জেলার ১৭ উপজেলার সাড়ে তিন শতাধিক ইটভাটার ধোঁয়া, গোমতীসহ অন্যান্য নদীগুলো থেকে অবাধে বালু ও মাটি তোলার কারণে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। বাতাসে ছড়াচ্ছে বালু, সিমেন্ট আর ইটের কণা। আর মূলত এসব কারণেই দুই মাসের মধ্যে চারবার দূষিত বাতাসের নগরীর তালিকায় নাম এসেছে কুমিল্লার। তাদের দাবি, এক সময়ের ‘ব্যাংক ও ট্যাংকের শহর’ কুমিল্লাকে বাসযোগ্য রাখতে এখনই নিতে হবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।

গত কয়েকদিনে কুমিল্লা শহর ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বায়ুদূষণের ভয়ানক চিত্র। বিভিন্ন এলাকায় সড়ক সংস্কার, স্থাপনা নির্মাণ ও বহুতল ভবনের ইট, বালু, পাথরসহ নির্মাণ সামগ্রী রাস্তার পাশে ফেলে রেখে চালানো হচ্ছে কর্মজজ্ঞ। বছরজুড়ে এসব কাজ চলে লাগাতার। এতে বাড়ছে ধুলার মাত্রা। আর এই ধূলাবালির আধিপত্যে সবুজ হারিয়ে কুমিল্লা পরিণত হয়েছে ধূসর নগরীতে। কেবল শহরেই নয়, একই অবস্থা আশপাশের গ্রামগুলোর প্রধান সড়কেও। যানবাহনের ঘূর্ণায়মান চাকার সঙ্গে কুন্ডলী পাকিয়ে উড়ছে সড়কের ধুলা। ধুলার স্তর পড়ে ঢেকে যাচ্ছে রাস্তার পাশের দোকানপাট। কোথাও কোথাও ধূলাবালির কারণে বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ রাখতে হচ্ছে।

বিশেষ করে কুমিল্লার কোলঘেঁষে বয়ে যাওয়া গোমতী নদীর দুই পাড়ের সড়কের চিত্র খুবই নাজুক। দিন-রাত অনবরত ধুলা উড়িয়ে আসা-যাওয়া করা মাটিবাহী ট্রাকের দাপটে জীবনযাপন অসহ্যকর হয়ে উঠেছে ওইসব এলাকার মানুষের। তারা বলছেন, অনবরত গোমতী নদীর মাটি কেটে ও বালু তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ট্রাকে করে। এতে করে ভেঙে যাচ্ছে সড়কগুলো আর বালুময় হয়ে যাচ্ছে পুরো আশপাশ।

জানা গেছে, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে মাটিবাহী ট্রাক দিনের চেয়ে রাতে চলাচল বেশি। যে কারণে কুমিল্লা শহরে দিনের বেলার চেয়ে রাতের বাতাস বেশি দূষিত।

গোমতী নদীর উত্তর পাড়ের সড়ক সংলগ্ন এলাকার দোকানদার আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এই সড়কটি দিয়ে প্রচুর পরিমাণে যানবাহন চলাচল করে। বিশেষ করে বালু ও মাটিবাহী ট্রাক্টরের আধিপত্য এখানে বেশি। এর ফলে প্রচুর পরিমাণে বালু উড়ে। নাক-মুখ চেপে বসে থাকতে হবে। পানি ছিটিয়েও বালু উড়া বন্ধ করা যায় না। ফলে বাধ্য হয়ে দোকান বন্ধ করে দিয়েছি।’

পাশের এলাকা ছত্রখিলের বাসিন্দা মোশারফ মিয়া বলেন, ‘ধুলার কারণে ঘরবাড়িতে থাকা যায় না। সারাক্ষণ ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখতে হয়। বালুর কারণে সারাক্ষণ চোখ ‘কচকচ’ করে। শান্তিতে ঘুমাইতে পারি না। দিনে-রাতে ২৪ ঘণ্টা মাটির ট্রাক চলে। এর ফলে রাস্তাটার অবস্থাও খারাপ হইয়া গেছে।’

কথা হয় নগরীর একটি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী জানে আলমের সাথে। সে জানায়, ‘ধুলাবালি আমাদের নাকে-মুখে ঢুকে বেশি সমস্যা করছে। কয়েকদিন ধরে আমার জ্বর। আজকে স্কুলে আসার সময় আবার এই বালুর ‘ঝরের’ মধ্যে পড়ছি। এখন নাক-চোখ জ্বলতাছে। তাই এক ঘণ্টা ক্লাস করে স্যারের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে বাসায় চলে যাচ্ছি।’

কুমিল্লা নগরীর ছোটরা এলাকার বাসিন্দা কলেজ শিক্ষক কোহিনুর আক্তার বলেন, ‘রাস্তাঘাটে যেভাবে ধুলাবালি পড়ে আছে তা খুবই দু:খজনক। রাস্তা ও ড্রেন সংস্কারের পাশাপাশি বাড়ি-ঘরও নির্মাণের সামগ্রী রাস্তার উপর ফেলে রাখার কারণে ধুলাবালি আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে আমাদের চলাটা কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে শ্বাস-প্রশ্বাসসহ নানা রোগে হচ্ছে নগরবাসীর। অনেকে ধুলাবালিজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালেও ভর্তিও হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী বলেন, ‘দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় কুমিল্লার নাম থাকাটা আমাদের জন্য অশনী সংকেত। বাতাস আমরা শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য ব্যবহার করি সেই শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে যদি ধুলাবালিও নিতে শুরু করি তাহলে আমাদের শ্বাসজনিত রোগগুলিই বেশি দেখা যাবে। এতে করে এজমা রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকবে। এ ছাড়াও বাতাসের মধ্যে অনেক ক্ষতিকারক পদার্থ থাকে বাতাসের মধ্যে। এগুলো যদি আমরা গ্রহণ করি তাহলে আমাদের শ্বাসযন্ত্রের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। শ্বাসযন্ত্রে ক্যান্সার হতে পারে। এ ছাড়া সাধারণভাবে যদি আমরা বলি তাহলে এই বায়ু গ্রহণের ফলে বদ হজম, পেটের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।’

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কুমিল্লা অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর মাসুম বলেন, ‘বায়ু দূষণের ভয়াবহতা পর্যায়ক্রমে প্রত্যেকটা সীমা অতিক্রম করছে। এটা আমাদের জন্য আতঙ্কের তথ্য যে ক্রমান্বয়ে একটা দূষিত বায়ুর মধ্যে আমাদের জীবনযাপন করতে হচ্ছে, দৈনন্দিন চলাফেরা করতে হচ্ছে। এটা কখনোই শরীর জন্য, মনের জন্য, স্বাস্থ্যের জন্য ভালো না। এ থেকে যে করেই হোক আমাদেরকে উত্তরণ ঘটাতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে আমরা জানতে পারলাম রাজধানী ঢাকা বায়ু দূষণের শীর্ষে, সেখানে প্রতিকারের কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় এর প্রভাব আশপাশের জেলাগুলোতে পড়ছে। স্থানীয়ভাবেও বায়ু দূষণ থেকে বাঁচতে আমাদের যে যে ভূমিকাগুলো থাকা উচিৎ সেগুলো নেই বলেই আমরা দিন দিন এই মাত্রার তীব্রতার মধ্যে পড়ছি। এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় হচ্ছে-আমরা আমাদের গাছপালা, পুকুর, নদী-জলাশয়গুলোকে যথাযথভাবে সুরক্ষা দিতে হবে। কিন্তু এগুলোর ক্ষেত্রে আমাদের কোনো উদ্যোগ নেই বললেই চলে। জেলা পর্যায়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন দায়িত্ব পালন করছে না, একইভাবে নাগরিক হিসেবে আমরাও যার যে ভূমিকা থাকার কথা সেটাও কিন্তু অনুপস্থিত। যার ফলে বায়ু দূষণের তীব্রতা এখন মারাত্মক অবস্থায় এসেছে। তা যদি বাড়তে থাকে তাহলে কিন্তু সব বয়সী মানুষকে তীব্র ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হবে। এ থেকে উত্তরণের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের যেমন সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে, একইভাবে ব্যক্তি পর্যায় থেকেও আমাদের সচেতন হতে হবে।’

এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মোসাব্বের হোসেন মোহাম্মদ রাজিব বলেন, ‘শুকনো মৌসুমে অতিরিক্ত ধুলাবালির কারণে বাতাস অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠে। কুমিল্লায় ধোঁয়াজনিত দূষণ দিনের চেয়ে রাতের বেলায় বেশি হচ্ছে। দূষণের পরিমাণ টেস্টের বিষয়টি আমাদের এখানে প্রক্রিয়াধীন আছে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘হাইওয়েতে প্রচুর পরিমাণে যানবাহন চলাচল করছে। এ কারণেও দূষণ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বায়ু দূষণের জন্য যারা দায়ী, যেমন- কনস্ট্রাকশনের কাজ করে, ডেভেলপমেন্টের কাজ করে এবং ইটভাটায় মাটি আনা-নেওয়া করে তাদেরকে বলেছি, তিন বেলা নিয়মিত পানি দেওয়ার জন্য। এ ছাড়াও মাটি ও বালি পরিবহনের সময় যেন সেগুলো সড়কে না পড়ে-এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি। যদি তারা তা না করে তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থায় যাব।’

পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ুমান সূচক বলছে, বায়ুমান শূন্য থেকে ৫০ পর্যন্ত ভালো, ৫১ থেকে ১০০ পর্যন্ত মোটামুটি, ১০১ থেকে ১৫০ পর্যন্ত সতর্কতা, ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর, ২০১ থেকে ৩০০ পর্যন্ত খুবই অস্বাস্থ্যকর, ৩০১-এর ওপরে দুর্যোগ‍পূর্ণ ও অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর।

একটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ‘২০১৯ সালের জুন মাসে পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ুমান মাত্রা মনিটরিং স্টেশনের তথ্যে বলা হয়েছিল দেশের সবচেয়ে কম বায়ু দূষণের জেলা কুমিল্লা।’ কিন্তু চার বছরের মধ্যেই নৈস্বর্গিক-নির্মল বাতাসের শহর কুমিল্লা পরিণত হয়েছে ‘বিষে’। কুমিল্লাবাসীর দাবি, সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে এই শহরকে ফের বাসযোগ্য করে তোলা।

Header Ad
Header Ad

গোলাপ জলে গোসল করে রাজনীতি ছাড়লেন আওয়ামী লীগ নেতা

ছবি: সংগৃহীত

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের চূড়াইন গ্রামে এক ব্যতিক্রমী ঘটনার সাক্ষী হলো এলাকাবাসী। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আলী হোসেন মৃধা (৪৮) গোলাপ জলে গোসল করে জনসমক্ষে ঘোষণা দিলেন— তিনি রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিচ্ছেন।

শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে নিজ বাড়ির উঠানে এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে এই ঘোষণা দেন তিনি। এই ঘোষণার মাধ্যমে একদিকে যেমন রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন, অন্যদিকে নিজ গ্রামে নানা প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

আলী হোসেন মৃধা ছিলেন বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এর আগে তিনি ওই ওয়ার্ডের নির্বাচিত ইউপি সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। চূড়াইন গ্রামের প্রয়াত আব্দুল খালেক মৃধার সন্তান আলী হোসেন মূলত পেশায় একজন ডেকোরেটিং ব্যবসায়ী।

তিনি জানান, ২০১৬ সালে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন এবং তখনই আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান।

গোলাপ জলে গোসল করে রাজনৈতিক জীবনের ইতি টেনে আলী হোসেন মৃধা বলেন, “আমি মূলত ব্যবসায়ী মানুষ। রাজনীতি আমাকে কখনো খুব টানেনি। তবে এলাকার মানুষের অনুরোধে ও সময়ের প্রেক্ষাপটে আমি যুক্ত হয়েছিলাম।”

তিনি আরও বলেন, “গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারের পতনের পর আমার ভেতরে একটি পরিবর্তন আসে। আমার মনে হয়েছে, রাজনীতি আমার পথ নয়। অনেকেই পালিয়ে গেছেন, কিন্তু আমি এলাকায় থেকে গেছি। আমি কখনো দুর্নীতি বা অনিয়মে জড়াইনি।”

আলী হোসেন মৃধার ভাষায়, এটি ছিল তাঁর ‘বোধোদয়’—একটি আত্মচিন্তার ফল। তিনি স্পষ্টভাবে জানান, “আমি আর রাজনীতি করবো না। আওয়ামী লীগও করবো না। এখন থেকে শুধু ব্যবসা নিয়েই থাকতে চাই।”

স্থানীয়ভাবে এই ঘোষণা বেশ আলোড়ন তুলেছে। কেউ কেউ বলছেন, এটি হয়তো রাজনৈতিক কৌশল, আবার কেউ বলছেন এটি একজন সাধারণ কর্মীর বিবেকের জাগরণ।

অনেকেই মনে করছেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ব্যক্তি পর্যায়ে এমন অবস্থান নতুন আলোচনার জন্ম দিতে পারে। গোলাপ জলে গোসল করে রাজনীতি ছাড়ার ঘটনা হয়তো বিরল, কিন্তু তা কেবল এক ব্যক্তির সিদ্ধান্ত নয়—বরং এটি একটি সময়ের প্রতিচ্ছবি, যেখানে রাজনীতি নিয়ে মানুষের দ্বিধা, আস্থা ও প্রত্যাশার জায়গাগুলো স্পষ্টভাবে প্রকাশ পাচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

সাগরতীরে বিলাসবহুল রিসোর্ট উদ্বোধন করলেন কিম জং উন

ছবি: সংগৃহীত

উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন ছয় বছর বিলম্বে উদ্বোধন করলেন দেশের অন্যতম বৃহৎ পর্যটন প্রকল্প— ওনসান কালমা সমুদ্র সৈকত রিসোর্ট। পূর্ব উপকূলে অবস্থিত এই বিলাসবহুল রিসোর্টটি আগামী জুলাই মাস থেকে দেশীয় পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ। তবে বিদেশি পর্যটকদের জন্য এটি কবে উন্মুক্ত হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।

গত ২৪ জুন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কিম জং উনের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন তার স্ত্রী রি সল জু এবং কন্যা কিম জু এ। ২০২৪ সালের শুরু থেকে এটি ছিল রি সল জুর প্রথম প্রকাশ্য উপস্থিতি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ম্যাটসেগোরাসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরাও, যা উত্তর কোরিয়ার কূটনৈতিক বার্তাও বহন করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এক সময় ওনসান শহরটি পরিচিত ছিল উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ঘাঁটি হিসেবে। কিন্তু কিম জং উন এখন সেই শহরকেই রূপ দিচ্ছেন পর্যটন নগরীতে। নিজের শৈশব কাটানো এলাকা ওনসানে অভিজাতদের ব্যক্তিগত বাড়ি থাকলেও এবার সাধারণ পর্যটকদের জন্যও খুলে দেওয়া হলো সমুদ্রতীরবর্তী বিলাসবহুল রিসোর্টটি।

কেসিএনএর দাবি অনুযায়ী, রিসোর্টটি দৈর্ঘ্যে প্রায় ৪ কিলোমিটার এবং এতে প্রতিদিন ২০ হাজার পর্যটক অবস্থান করতে পারবেন। এতে থাকছে হোটেল, রেস্তোরাঁ, ওয়াটার পার্ক, শপিং মলসহ নানা বিনোদন সুবিধা। তবে এই তথ্যগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ওনসান রিসোর্টের উদ্বোধন কিম সরকারের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের নতুন কৌশলের অংশ হতে পারে। যদিও উত্তর কোরিয়ায় পর্যটন নিয়ন্ত্রণের কড়াকড়ি রয়েছে, তবুও বিদেশি পর্যটক বিশেষ করে চীন ও রাশিয়া থেকে আসা পর্যটকদের নির্ভরযোগ্য উৎস হিসেবে বিবেচনা করছে দেশটি।

২০২০ সালে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার পর কঠোর সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে পিয়ংইয়ং। প্রায় তিন বছর পর, ২০২৩ সালে কিছুটা শিথিলতা আসে এবং ২০২৪ সালে রাশিয়ার পর্যটকদের জন্য সীমান্ত খোলা হয়। তবে ইউরোপীয় ও অস্ট্রেলিয়ান পর্যটকদের জন্য সীমান্ত খোলার ঘোষণা এলেও কিছু সপ্তাহ পরেই সেটি আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়, যা উত্তর কোরিয়ার পর্যটন নীতির অনিশ্চয়তা ও অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণের ইঙ্গিত দেয়।

কেসিএনএ জানিয়েছে, ওনসান রিসোর্ট উদ্বোধন “সমগ্র দেশের জন্য একটি মহান ও শুভ ঘটনা” এবং এটি উত্তর কোরিয়ার পর্যটনে “একটি নতুন যুগের সূচনা”।

প্রথমে ২০১৯ সালের অক্টোবরে এই রিসোর্ট খোলার কথা থাকলেও, নির্মাণে বিলম্ব ও কোভিডের অভিঘাতের কারণে তা সম্ভব হয়নি।

ওনসান কালমা রিসোর্টের উদ্বোধন কেবল পর্যটকদের জন্যই নয়, বরং আন্তর্জাতিক সমাজের দৃষ্টিতে উত্তর কোরিয়ার কৌশলগত অর্থনৈতিক মনোযোগেরও প্রতিফলন। বিদেশি পর্যটকদের জন্য এটি কতটা সহজলভ্য হবে এবং আদৌ কি তা বৈদেশিক রাজস্বে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে— তা সময়ই বলে দেবে। তবে রিসোর্টের ছায়ায় লুকিয়ে থাকা রাষ্ট্রীয় ‘নিয়ন্ত্রণ’ ও ‘গোপনতা’ এখনো উত্তর কোরিয়ার পর্যটনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে রয়ে গেছে।

সূত্র: ইনসাইডার, কেসিএনএ

Header Ad
Header Ad

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৬২

ছবি: সংগৃহীত

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ২৬২ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া একজন পুরুষ। আর আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ২১৪ জনই ঢাকার বাইরের।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৪১ জন, যাদের মধ্যে ২৩ জন পুরুষ ও ১৮ জন নারী।

এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন নয় হাজার ৪৮৪ জন, যার মধ্যে পাঁচ হাজার ৫৮৩ জন পুরুষ ও তিন হাজার ৯০১ জন নারী।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোলাপ জলে গোসল করে রাজনীতি ছাড়লেন আওয়ামী লীগ নেতা
সাগরতীরে বিলাসবহুল রিসোর্ট উদ্বোধন করলেন কিম জং উন
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৬২
কূটনৈতিক অস্ত্র পানি নিয়ে ভারতের কঠোর অবস্থান, শঙ্কায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তান
পশ্চিমবঙ্গে পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগে তোলপাড়
দুধ আমদানি করা লজ্জার বিষয়: উপদেষ্টা ফরিদা
পাকিস্তানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৩ সেনা নিহত
ছায়ানটের সভাপতি হলেন ডা. সারওয়ার আলী, কার্যনির্বাহী কমিটিতে নতুন মুখ
জুলাই যোদ্ধাদের যথাযথ মর্যাদা দিতে চাই: রিজভী
৮ অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস, নদীবন্দরে সতর্কতা
সিন্ধু পানি চুক্তি নিয়ে হেগে পাকিস্তানের আইনি জয়, রায় প্রত্যাখ্যান করল ভারত
আগস্টে ঢাকার ৩ এলাকায় চালু হবে ই-রিকশা
বিনিয়োগকারীদের জন্য বিডার নতুন ওয়েবসাইট চালু
টাঙ্গাইলে যৌনপল্লীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, ১২টি ঘর পুড়ে ছাই
আবাসিক হোটেল থেকে আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার
মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসাধারীদের খুশির খবর দিল সৌদি আরব
চীন সফর অত্যন্ত ‘সফল’ ও ‘ফলপ্রসূ’ হয়েছে: মির্জা ফখরুল
ইরানে আবারও বোমা হামলার হুমকি দিলেন ট্রাম্প
ইনিংস ব্যবধানে হারের পরই টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়লেন শান্ত
৩ হাজারের বেশি কবর খোঁড়া সেই মনু মিয়া মারা গেছেন (ভিডিও)