কৃষি সচিবের সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি, বাকৃবিতে ফের রেলপথ অবরোধ

রেলপথ অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
কৃষিবিদদের অধিকার রক্ষা ও পেশাগত বৈষম্য দূরীকরণে উত্থাপিত ছয় দফা দাবির বাস্তবায়ন না হওয়ায় ফের আন্দোলনে নেমেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা। কৃষি সচিবের সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ায় মঙ্গলবার (১৩ মে) সন্ধ্যায় ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ অবরোধ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে জব্বারের মোড়ে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা রেললাইন অবরোধ শুরু করেন। তবে এতে কোনো ট্রেন আটকে না পড়লেও সাময়িক সময়ের জন্য রেল যোগাযোগ ব্যাহত হয়। আন্দোলনে অংশ নেন কয়েকশ শিক্ষার্থী, যারা ‘তুমি কে আমি কে – কৃষিবিদ কৃষিবিদ’, ‘কৃষিবিদের একশন – ডাইরেক্ট একশন’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
রাত ৮টা ৫০ মিনিটে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম প্রিন্স এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুরোধে শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন, ফলে রেলপথে চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বাকৃবির কৃষি অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ওয়াসিম আকরাম বলেন, “এ দেশে ডিপ্লোমা পাস করলেই কেউ ইঞ্জিনিয়ার, নার্স ডাক্তার, আর কৃষি ডিপ্লোমাধারীও নিজেকে কৃষিবিদ দাবি করে। আমরা এই পেশাগত অনিয়ম ও অপমানের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। দাবি না মানলে দেশের সব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ শাটডাউনের দিকে যাব।”
এর আগে, ‘কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদ’ নামে একটি প্রতিনিধিদল কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ানের সঙ্গে বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বৈঠক করেন। বৈঠকে অংশ নেওয়া বাকৃবির শিক্ষার্থী ও সংগঠক নাজমুল আলম বলেন, “আলোচনা মোটেও ফলপ্রসূ হয়নি। আমরা সচিব বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। তিনি পরামর্শ দিয়েছেন কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি)-এর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে দাবি উত্থাপন করলে আলোচনা এগোতে পারে।”
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি-
১. কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই), বিএডিসিসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে ১০ম গ্রেডের পদগুলো কৃষিবিদদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
২. কৃষি অফিসে ৯ম গ্রেডসহ অন্যান্য উচ্চ পদে নিয়মিত পদোন্নতি ও পুনর্বিবেচনা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. শুধুমাত্র নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ৯ম গ্রেডে উন্নীত করার সুযোগ থাকতে হবে; বিএডিসি কোটা বাতিলের দাবি।
৪. ডিপ্লোমাধারীদের জন্য আলাদা কোনো কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা যাবে না।
৫. শুধুমাত্র কৃষি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারীরাই “কৃষিবিদ” পদবি ব্যবহার করতে পারবেন; সরকারি প্রজ্ঞাপন চাই।
৬. কৃষি ডিপ্লোমা বা কারিগরি শিক্ষাকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতায় রাখতে হবে।
