বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণ প্রক্রিয়া সফল ও সময়োপযোগীভাবে সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থা ও অংশীদারদের মধ্যে দ্রুত ও সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার (১১ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন কমিটির এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিনি এই আহ্বান জানান। বৈঠকে এলডিসি থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে অর্জিত অগ্রগতিগুলো পর্যালোচনা করা হয় এবং ভবিষ্যতের করণীয় নির্ধারণ করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী, দাতা সংস্থা ও উন্নয়ন অংশীদারদের মনোযোগ ও সমর্থন পেয়েছি। এখন আমাদের উচিত চলমান কর্মপ্রয়াসকে আরও শক্তিশালী করা এবং সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে দ্রুত অগ্রসর হওয়া।”
তিনি প্রাতিষ্ঠানিক প্রস্তুতির ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করে বলেন, “আমাদের এমন একটি সমন্বিত টিম প্রয়োজন যারা অগ্নিনির্বাপক দলের মতো সংকটে দ্রুত সাড়া দেবে—কার্যকর ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করবে যতক্ষণ না সমাধান আসে।” তিনি আরও জানান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এলডিসি উত্তরণ প্রক্রিয়ার সার্বক্ষণিক তদারকি চালানো হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ শুধুই একটি অর্থনৈতিক মাইলফলক নয়—এটি জাতীয় সক্ষমতা, আত্মনির্ভরতা ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য একটি ঐতিহাসিক সুযোগ।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফী সিদ্দিকীসহ উত্তরণ কমিটির অন্যান্য সদস্য ও নীতি উপদেষ্টারা।
সভায় এলডিসি উত্তরণ কমিটি পাঁচটি জরুরি ও অগ্রাধিকার ভিত্তিক পদক্ষেপ চিহ্নিত করে, যেগুলোর দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়:
১. জাতীয় একক জানালা (National Single Window) পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যকর করা, যাতে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়।
২. জাতীয় শুল্ক নীতি ২০২৩ বাস্তবায়নে একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা অনুসরণ করা।
৩. জাতীয় লজিস্টিক নীতি ২০২৪-এর আওতায় অবকাঠামোভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা।
৪. সাভারের ট্যানারি শিল্প এলাকায় বর্জ্য শোধনাগার (ETP) কার্যকরভাবে প্রস্তুত করা।
৫. গজারিয়ায় এপিআই (API) পার্ক-এর পূর্ণাঙ্গ কার্যকারিতা নিশ্চিত করা।