রবিবার, ১১ মে ২০২৫ | ২৮ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

আত্মহত্যা

আত্মহনন নয়, জেগে উঠুন নতুন উদ্যমে

শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের একটি বিখ্যাত গান রয়েছে-
আলু বেচো, ছোলা বেচো, বেচো বাখরখানি
বেচোনা বেচোনা বন্ধু তোমার চোখের মনি।
ঝিঙে বেচো পাঁচ সিকেতে, হাজার টাকায় সোনা
বন্ধু তোমার লাল টুকটুকে স্বপ্ন বেচোনা।

অথচ আমাদের জগৎ জুড়ে স্বপ্ন বেচে দেওয়ার মেলা বসে রোজ। স্বপ্ন বেচে দেওয়ার কত শত গল্প আমাদের চারপাশে। বহু চেনা-অচেনা মানুষ রয়েছে যারা একটু একটু করে তাদের স্বপ্ন বেচে দিচ্ছে প্রতিটি দিন। বর্তমান বিশ্বে সম্পদ ও সফলতার অভাব নেই,যত অভাব কেবল শান্তির।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন-"মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে,মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই।" অথচ এই সুন্দর ভুবন ছেড়ে চলে যাবার কত তাড়া অনেকের।

কেন বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতাঃ সারা বিশ্বে দিন দিন আত্মহত্যার পরিমাণ বেড়েই চলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রিভেন্টিং সুইসাইড অ্যা সোর্স ফর মিডিয়া প্রফেশনালস ২০১৭ জরিপ বলছে, প্রতিবছর বিশ্বে ১০ লাখ মানুষ আত্মহত্যা করে। প্রতি ৪০ সেকেন্ডে ১ জন।

এবার বলা যাক বাংলাদেশের কথা, ঢাকার মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) দেশের আত্মহত্যার ঘটনার তথ্য রাখে। সে তথ্য অনুযায়ী ২০১৬ সালে দেশে আত্মহত্যা করে ১০ হাজার ৭৪৯ জন। অপরদিকে এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ২০১৮ সালে দেশে ১১ হাজারের বেশি আত্মহত্যা করে। সারা বিশ্বে আত্মহত্যায় বংলাদেশের অবস্থান দশম। যা ২০১১ তে ছিল ৩৪ তম।

নিশ্চিতভাবে প্রতি বছর বাড়ছে আত্মহত্যার পরিমাণ। আত্মহত্যার কারণ খুঁজতে গেলে প্রথমে সামনে আসে অধিক মানসিক অবসাদ, ব্যক্তি জীবনে অপ্রাপ্তি, অবহেলা, সম্পর্কের বিচ্ছেদ,  পারিবারিক দ্বন্দ্ব ও শারীরিক অসুস্থতা, যৌন হয়রানি, দাম্পত্য কলহ, জটিল রোগের দুঃসহ যন্ত্রণা, পরকালীন শাস্তির ভয়হীনতা, নৈতিক অবক্ষয় কিংবা আত্মহত্যার প্ররোচনায় ব্যক্তি আত্মহত্যা করে। তাছাড়া মানসিকভাবে দুর্বল প্রকৃতির মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। আত্মহত্যার পেছনে ব্যাক্তির পারিপার্শ্বিক অবস্থা অনেকাংশে দায়ী। যারা আত্মহত্যা করে তাদের ৯০ ভাগের মধ্যেই কোনও না কোনো মানসিক রোগ দেখা যায়। অধিক প্রযুক্তির ব্যবহারে বিষন্নতা, যা মানসিক রোগের অন্যতম একটি কারণ বলে মনে করে স্বাস্থ্য সংস্থা। তাছাড়া নিজেকে নিয়ন্ত্রণের অক্ষমতা ও অধিক আবেগ তো রয়েছেই। বিষন্নতার একটি পর্যায়ে ব্যক্তি নিজেকে সম্পূর্ণ  অযোগ্য মনে করে। অধিক মানসিক অবসাদগ্রস্ত ব্যক্তিরা আত্মহত্যাকে ওয়েলকাম রিলিজ হিসেবে বিশ্বাস  করে।


মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতামতঃ বিশেষজ্ঞরা মনে করে আত্মহত্যা দুই ধরনের। ইম্পালসিভ সুইসাইড (হঠাৎ আত্মহত্যা) আরেকটি ডিসিসিভ সুইসাইড (পূর্বপরিকল্পিত আত্মহত্যা)। আত্মহত্যার অন্যতম কারণ "সিজোফ্রেনিয়া ",যাকে গুরুতর মানসিক সমস্যা বলা হয়। এরমধ্যে পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার, কনটাক্ট ডিসঅর্ডার, মাদকাসক্তি, ডিপ্রেশন, পারিবারিক কলহ, বেকারত্ব, প্রেমে ব্যর্থতা তো রয়েছেই। শিশুদের ক্ষেত্রে আত্মহত্যাটি অবজারভেশন লার্নিং বা দেখে দেখে শেখা হিসেবে কাজ করে। এক্ষেত্রে অনেক মুভি, কার্টুন সিস্টেম এবং ইন্টারনেটের বিভিন্ন ভিডিও কন্টেন্ট দায়ী। কারণ এগুলোতে অনেক সময় আত্মহত্যাকে খোলামেলা উপস্থাপন, সমস্যা সমাধান বা মুক্তির পথ হিসেবে দেখানো হয়। কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই দৃশ্যগুলো এমনভাবে মাথায় প্রবেশ করে থাকে যে, কেউ সামান্য বকা দিলে কিংবা সমস্যা সমাধানে সহজেই সে এই পন্থাগুলো বেছে নেয়। এ বিষয়টি কিশোর-কিশোরীদের ক্ষেত্রে বেশি ঘটে। টেলিভিশন ও পত্রিকাগুলোতে আত্মহত্যার খবর প্রকাশের ক্ষেত্রে নীতিমালা মেনে না চলার বিষয়টিও রয়েছে।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে আত্মহত্যা করা যায় এমন উপাদানগুলোর সহজলভ্যতা। আত্মহত্যার উপকরণগুলো হাতের কাছে থাকলে কোনো কারণে অল্পতেই ব্যক্তি হুট করে আত্মহত্যা করে ফেলতে পারে। এক্ষেত্রে ব্যক্তির মধ্যে আত্মহত্যার কোনো উপসর্গ আগে থেকে পরিলক্ষিত হয় না।


বিশ্ব বিখ্যাত সাহিত্যিকদের আত্মহত্যাঃ বলা হয়ে থাকে সৃজনশীলতা, বিষন্নতা ও আত্মহত্যা এই তিনের মধ্যে আন্তসম্পর্ক রয়েছে। সৃজনশীলতার একটি অন্যতম অন্ধকার দিক হলো আত্মহনন। কারণ সৃষ্টিশীল মানুষ অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়ে থাকে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে,অনেক শিল্পী, কবি, লেখকদের মনোজগতের অন্যতম একটি প্রবণতা হলো বিষন্নতা, অরাজক ও মানসিক ভারসাম্যহীনতায় আক্রান্ত হওয়া। যাকে বলা হয় 'বাইপোলার ডিসঅর্ডার। এক গবেষণায় দেখা গেছে লেখালেখি, গবেষণা ও বিভিন্ন সৃজনশীল কাজে যারা লিপ্ত তারা সমাজের অন্য সকলের থেকে ৮ শতাংশ বেশি বিষন্নতা ও মানসিক ভারসাম্যহীনতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। তবে কবি-লেখকদের বেলায় এই ঝুঁকি অনেক বেশি। এবার আসা যাক আত্মহুতি দেওয়া বিশ্বখ্যাত সাহিত্যিকদের কথায়:

হান্টার এস থম্পসনঃ আমেরিকান বংশোদ্ভূত হান্টার এস থম্পসনকে বলা হয় বিশ্বখ্যাত অন্যতম সেরা ঔপন্যাসিক। তিনি নিজের শেষ লেখাটির নাম দিয়েছিলেন "ফুটফল খেলার মৌসুম শেষে। এটি তিনি লিখেছিলেন স্ত্রী অনিতাকে উদ্দেশ্য করে। তার লেখাটি ছিল এমন-"আর কোন খেলা নেই। আর কোন বোমা নেই। চলতে থাকা নেই। কোন মজা নেই। সাঁতার কাটা নেই। ৬৭,৫০ এর পরও ১৭ টি বছর। আমার চাওয়ার ও দরকারের চেয়েও ১৭ টি বাড়তি বছর, বিরক্তিকর। আমি সবসময়ই উদ্দাম। কারও জন্য কোনও আনন্দ নেই। ৬৭ তুমি লোভী হয়ে যাচ্ছো। বুড়োমী দেখাও। শান্ত হও এটা ব্যাথা দিবে না। এর চারদিন পরেই স্ত্রীর সাথে কথা বলতে বলতে গুলি করে আত্মহত্যা করেন তিনি। অনেকদিন ধরে শারীরিক বিকলাঙ্গতায় ভুগছিলেন । তাঁর শেষ লেখাটিতে যেন লেখাই ছিল আত্মহত্যার কথা।

ভার্জিনিয়া উল্ফঃ ইংরেজি ভাষার প্রখ্যাত কবি ভার্জিনিয়া উল্ফ ঊনিশ শতকে মডার্নিজম চর্চাকারী ব্রিটিশ লেখকদের মধ্যে অন্যতম। তার বিখ্যাত উক্তি ‘নারী যখন ফিকশন লেখে তখন তার একটি কক্ষ আর কিছু অর্থ প্রয়োজন।’ এই কবি একদিন তার ওভারকোটের পকেটে নুড়ি পাথর বোঝাই করে হেঁটে নেমে গিয়েছিলেন খরস্রোতা পাথুরে নদীতে। আর কখনও ফিরে আসেন নি। শেষ বিদায়ের আগে তিনি তার স্বামীকে একটি চিঠি লিখেন। তার এই চিঠিটি সম্ভবত সবচেয়ে বেশি পড়া সুইসাইড নোটগুলোর মধ্যে একটি। তার এই চিঠিটি  এখনও পড়েন বিশ্বের সাহিত্যপ্রেমীরা।
তার চিঠির কিছু অংশ:
প্রিয়তম
আমি বুঝতে পারছি আমি আবারও পাগল হয়ে যাচ্ছি। আমি বুঝতে পারছি এবার হয়তো এই কঠিন সময় অতিক্রান্ত হবে না। আমি নানা রকম স্বর শুনতে পাচ্ছি, কিছুতেই মনোসংযোগ করতে পারছি না। তাই যা সবচেয়ে ভালো মনে হচ্ছে সেটিই করতে যাচ্ছি।

ডেভিড ফস্টার ওয়ালেসঃ তিনি ছিলেন একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্প লেখক এবং ইংরেজির প্রভাষক। তার লেখা ‘ইনফিনিটি জাস্ট’ বইটি ইংরেজি ভাষার সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ১০০ বইয়ের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। হঠাৎ করে তিনি মেরি নামক এক কবির প্রেমে পড়েন। কিন্ত কবি মেরি এতে কোনো সারা দেন নি। মেরির ভালোবাসা না পেয়ে তিনি মাদকসহ বিভিন্ন নেশায় জড়িয়ে যান। দীর্ঘদিন হতাশাগ্রস্ত ডেভিড ফস্টার ২০০৮ সালে ৪৬ বছর বয়সে, দুইপাতার সুইসাইড নোট লিখে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন।


আরও অনেক বিখ্যাত সাহিত্যিকরা রয়েছেন যেমন-সিলভিয়া প্লাথ, আর্নেস্ট হেমিংওয়ে, অ্যান সেক্সটন, এডগার অ্যালান পো,জন কেনেডি টুল।

আত্মাহুতি থেকে ফিরে আসা কিছু বিখ্যাত ব্যক্তিত্বঃ 

বিশ্ব বিখ্যাত ‘হ্যারি পটার’ মুভি এবং বইটির কথা আমরা কম বেশি সকলেই শুনেছি, দেখেছি। বিশ্বের বিখ্যাত বইগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম একটি বই। যে বইটি  পৃথিবীর ৬৫টি  ভাষায় অনুবাদ করে সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। হ্যারি পটারের সফল এবং বিখ্যাত লেখক জে. কে রাউলিং। যিনি মানসিক অবসাদ এবং অর্থাভাবে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন। তার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। তার মনে হয়েছিল এ সমাজে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তিনি মনে করতেন তিনি চরমভাবে ব্যর্থ একজন মানুষ। নিজেকে প্রচণ্ড রকম ব্যর্থ মনে করা মানুষটিই আজ পৃথিবীর কাছে নিজেকে তুলে ধরেছেন অন্যতম একজন সফল মানুষ হিসেবে।


ওপার বাংলার কমেডি শো মিরাক্কেলের মীর আমাদের সকলের পরিচিত। যিনি কি-না ৪ বার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। কিছু একটার পেছনে ছুটতে থাকা বা হতাশা তাকে গ্রাস করে ফেলেছিল পুরোপুরি। তবে সেই মৃত্যু থেকে ফিরে এসেছেন তিনি। আজ সেই মানুষটিই অন্য সকল মানুষদের হাসিয়ে বেড়াচ্ছেন, মন ভালো করে দিচ্ছেন আনন্দের ফেরিওয়ালার মতো।


বিখ্যাত সিঙ্গার কৈলাশ খের হতাশার এক পর্যায় এসে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এক সময় তার মনে হলো সিদ্ধান্তটি ভুল ছিল এবং জীবনের অর্থবহতা খুঁজে বের করতে হবে। তার হতাশাকেই তিনি বেঁচে থাকার অস্ত্র হিসেবে ব্যাবহার করলেন। অনির্বচনীয় যন্ত্রণা এবং হতাশা থেকে নিজেকে নতুন করে পরিচালনা করেছেন।


এখন এরা অন্যদের অর্থবহ সার্থক জীবন যাপনে উদ্বুদ্ধ করেন। আমরা কেউ ব্যর্থ নই,কেবল সঠিক সময়ের অপেক্ষায়।


পরিবার প্রিয়জনের ভূমিকাঃ জীবনের সকল ক্ষেত্রে পরিবার বা প্রিয় মানুষটির ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। অন্য দেশগুলোতে বয়স্কদের আত্মহত্যার পরিমাণ বেশি। তবে আমদের দেশে কিশোর-কিশোরীদের আত্মহত্যার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। তাই পরিবারকে সন্তানের কাছে বন্ধুত্বপূর্ণ এবং সহজ হতে হবে। প্রায়ই দেখা যায় আমাদের দেশে যখন বড় ধরনের পাবলিক পরীক্ষাগুলোর ফলাফল দেওয়া হয়, তখন একসঙ্গে অনেকগুলো ছেলে-মেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। কারণ, হয়তো বাবা-মা পরিবার ও তার পরিবেশ থেকে সহানুভূতিশীল আচরণ সে পায়নি। তার ফলাফলের কারণে তাকে তীব্রভাবে সমালোচিত করা হয়েছে। যা সে গ্রহণ করতে পারেনি ফলে ঝোঁকের বশে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে।

শিশুদের এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে তারা সফলতার সঙ্গে ব্যর্থতাকেও মেনে নিতে পারে। আত্মহত্যার উপকরণগুলোর সহজলভ্যতাও কমানো জরুরি। পাশাপাশি পরিবারকে বুঝতে হবে বয়ঃসন্ধিকালের ছেলে -মেয়েরা অনেক আবেগপ্রবণ ও সংবেদনশীল হয়ে থাকে। মাত্রা বজায় রেখে সন্তানকে শাসন করুন। পরিবারের ছোট থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত কারও সমস্যাকে ছোট করে না দেখে সতর্ক হতে হবে। পরিবারের পাশে থেকে পরিবারকে সময় দিন। সকল সম্পর্ককে প্রাধান্য দিন, আগলে রাখুন। প্রিয়জন এবং আপনার পাশের মানুষটিকে শুনুন ও তার মনের যত্ন নিন। কেউ বিষন্নতায় ভুগলে ‘মন খারাপ করো না’, ‘ভালো খাবার খাও’, ‘আনন্দ করো’, ‘বেড়াও’, ‘বই পড়’ এসব না বলে তাকে অবশ্যই একজন মনোচিকিৎসকের শরণাপন্ন করা উচিত। তার মাধ্যমে সাইকোথেরাপি দিন। অবহেলা নয়, প্রতিটি মানুষের সচেতনতাই বাঁচিয়ে দিতে পারে অনেকগুলো জীবন।


আত্মহত্যার সমাধানঃ
Sometimes you win, sometimes you learn. অর্থাৎ আপনার হেরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সুযোগ আছে-জিতে যাওয়ার নয়তো শিখে যাওয়ার। অথচ শিখতে পারার সুযোগটাকে আমরা ভুল করে হেরে যাওয়া বলি। জীবনের মুখোমুখি হওয়ার ভয়ে আত্মহনন কোনো সমাধান নয়। চিন্তা করুন, সবাইকে কি একইসময়ে-একইসাথে গন্তব্যে পৌঁছাতে হবে? না, গন্তব্যে পৌঁছানোই আমাদের আসল উদ্দেশ্য। সবার সঙ্গে আপনি পৌঁছাতে পারছেন না তবে এটিকে বিরতি ভাবুন, বিশ্রাম নিন অতপর উঠে দাঁড়ান। হয়তো একদিন আপনিই হবেন অন্যতম একজন সফল ব্যক্তি।

বিশ্বখ্যাত মনোবিজ্ঞানী ও লেখক  জর্জ উইনবার্গের একটি বিখ্যাত উক্তি ‘আশা কখনও তোমাকে ছাড়ে না, বরং তুমিই তাকে ছেড়ে দাও।’ একটি আত্মহত্যার প্রভাব কেবল একজন ব্যক্তির জীবননাশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট পরিবার, ঘনিষ্ঠ জন, সমাজে এক ভয়াবহ বিপর্যয় বয়ে আনে।


আত্মহত্যা পুরোপুরি প্রতিরোধ করা না গেলেও অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। এর প্রতিরোধ করার দায়িত্ব শুধু রাষ্ট্রের, চিকিৎসকের কিংবা মনোবিজ্ঞানীর নয়। সমাজ, পরিবার, আপনার এবং প্রত্যেকটি মানুষের দায়িত্ব এটি। বিকল্প ভাবুন। মৃত্যু নয়, জীবনই হতে পারে আপনার সমাধান। আত্মহত্যা নয়, আপনি জীবনের পথকে বেছে নিন। আপনার শক্তি সফলতার পথকে খুঁজে বের করুন। আত্মহত্যা কেবল দুর্বল মানসিকতার উদাহরণ, সমাধান নয়।

আমরা মনে করি, কেবল শরীরের যত্ন নেওয়া উচিত। কিন্তু শরীর এবং মন দুটোরই যত্ন সমান গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রবণতা কমিয়ে আনতে শিশুকাল থেকে মা- বাবার আন্তরিক আচরণ বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। মা-বাবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ সন্তানের আত্মবিশ্বাস বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

জীবনে আনন্দ, ব্যর্থতা থাকবেই। সকল ব্যর্থতার গল্পকে উঠে দাঁড়ানোর গল্পতে পরিণত করুন। আর একটিও আত্মহনন নয় বরং ধৈর্য ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি সুস্থ, সুন্দর পৃথিবী গড়াই আমাদের কাম্য। বেঁচে থাকলে একদিন আলো ও আনন্দের উৎসবে আমরা সকলে যুক্ত হতে পারবো।

Header Ad
Header Ad

জুলাই ঘোষণাপত্র ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে

ছবি: সংগৃহীত

আগামী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জানানো হয়ছে।

শনিবার (১০ মে) রাতে উপদেষ্টা পরিষদের এক বিশেষ সভায় এ তথ্য জানান আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
উপদেষ্টা পরিষদের এই বিশেষ সভায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনী অনুমোদিত হয়েছে। সংশোধনী অনুযায়ী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কোনো রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবে।

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচার কার্যসম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগ এর যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

‘লীগ ধর, জেলে ভর’: হাসনাত আব্দুল্লাহ

ছবি: সংগৃহীত

সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হয়েছে রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের। এর মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেছেন, ‌‘লীগ ধর, জেলে ভর’।

রোববার (১১ মে) ভোরে তার ব্যক্তিগত ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক স্ট্যাটাসে এমন মন্তব্য করেন।

হাসনাত পোস্টে বলেন, ‌‘লীগ ধর, জেলে ভর’।

এর আগে শনিবার রাতে আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের খবরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় হাসনাত বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করাসহ ছাত্র-জনতা ঘোষিত তিন দফার একটি দফা বাকি থাকা পর্যন্তও ছাত্র-জনতা রাজপথ ছাড়বে না।

তিনি বলেন, ‌‘তিন দফার একটি দফাও বাস্তবায়ন না হলে আমরা এই রাজপথ ছাড়বো না। আমরা পাঁচ আগস্টের অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে এসেছি।’

হাসনাত বলেন, ‘এই দাবিগুলো আমাদের সংগ্রামের মূলমন্ত্র। এগুলো কোনো রাজনৈতিক ছক নয়, এটি শহীদের রক্তের বিনিময়ে গঠিত দাবি। প্রিয় সংগ্রামী সহযোদ্ধারা, আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকুন। কোনো ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দেবেন না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।’

Header Ad
Header Ad

যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ আলোচনার পর ভারত ও পাকিস্তানের মাঝে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়েছে। দীর্ঘ ৪৮ ঘণ্টার প্রচেষ্টায় এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরে ভারত ও পাকিস্তানও অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয়।

তবে ভারতের অভিযোগ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে পাকিস্তান। অন্যদিকে পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ভারতীয় এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশটি বলছে, তারা যুদ্ধবিরতি “বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ”।

একইসঙ্গে ভারতের বিরুদ্ধেও যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে পাকিস্তান। রোববার (১১ মে) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পাকিস্তান রোববার ভোরে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নে তারা “পূর্ণ নিষ্ঠার সঙ্গে অঙ্গীকারবদ্ধ”। এর আগেই ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে পাল্টা হামলার কথা জানায়।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ভারতের বিরুদ্ধেও যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে এবং জানায়, পাকিস্তানি বাহিনী দায়িত্বশীল ও সংযমীভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “যুদ্ধবিরতির সফল বাস্তবায়নে যেকোনও জটিলতা সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে যোগাযোগের মাধ্যমে সমাধান করা উচিত। একইসঙ্গে সীমান্তে অবস্থানরত সৈন্যদেরও সংযম প্রদর্শন করা জরুরি।”

এর আগে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফের উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে আন্তর্জাতিক সীমান্ত জুড়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে ভারত।

গভীর রাতে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এর তীব্র নিন্দা জানান ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। তিনি দাবি করেন, যুদ্ধবিরতির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তান “ফের গোলাগুলি” শুরু করেছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এর জন্য “সম্পূর্ণভাবে পাকিস্তান” দায়ী।

তিনি আরও দাবি করেন, ভারতীয় সেনারাও এর সমুচিত জবাব দিচ্ছে এবং পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ভারত আশা রাখে, পাকিস্তান পরিস্থিতির গুরুত্ব উপলব্ধি করে অবিলম্বে এই চুক্তিভঙ্গ বন্ধ করবে।

একইসঙ্গে তিনি বলেন, যেকোনও ধরনের অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘনের মোকাবিলায় ভারতীয় সেনাবাহিনীকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জুলাই ঘোষণাপত্র ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে
‘লীগ ধর, জেলে ভর’: হাসনাত আব্দুল্লাহ
যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
অবশেষে ছোট সাজ্জাদের আলোচিত স্ত্রী তামান্না গ্রেফতার
আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা
আমরা ফ্লাই করার ২০ মিনিট পর এয়ারপোর্টে মিসাইল পড়ে: রিশাদ
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি: এক ঘণ্টার মধ্যে কাশ্মীরে আবারও ড্রোন হামলা
ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিবৃতি
সিগারেটের দাম বাড়ানোর দাবি তরুণ চিকিৎসকদের
বেনাপোলে পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় যুবকের মৃত্যু
শেখ হাসিনার সহকারী প্রেস সচিব বিটু ও সাবেক এমপি শামীমা গ্রেপ্তার
জনগণ আর পলাতক অপশক্তির পুনর্বাসন চায় না: তারেক রহমান
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে এক ঘণ্টা সময় দিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
যুদ্ধবিরতির তথ্য নিশ্চিত করলো ভারত-পাকিস্তান, সামরিক অভিযান বন্ধ
জাতীয় পার্টি কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে নয়: জিএম কাদের
১৫ বছর পর দেশে ফিরলেন হানিফ এন্টারপ্রাইজের মালিক
আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করলেন শর্মিলা রহমান ও ডা. জুবাইদা রহমান
ভারত-পাকিস্তান ‘যুদ্ধবিরতিতে’ সম্মত হয়েছে: ট্রাম্প
মুন্সীগঞ্জে লঞ্চে ২ তরুণীকে বেল্ট দিয়ে পেটানো সেই যুবক আটক
চট্টগ্রামে বিএনপির তারুণ্য সমাবেশে উপস্থিত তামিম ইকবাল