মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫ | ১৭ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

১০ লাখ মানুষের গণপ্রার্থনায় নেতৃত্ব দিলেন পোপ ফ্রান্সিস

দশ লাখেরও বেশি ধর্মপ্রাণ কঙ্গোবাসী খ্রিস্টানদের প্রর্ধান ধমযাজক ও ভ্যাটিকানের প্রধান ধর্মাধ্যক্ষ পোপ ফ্রান্সিসের দেশটি সফরের শুরুতেই তাকে স্বাগত জানাতে ও প্রার্থনায় অংশ নিতে শামিল হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।

৯০ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি খ্রিস্টানের এই দেশটিতে মঙ্গলবার সকালে পোপ ফ্রান্সিস ও তার সফরসঙ্গী কার্ডিনালরা এসে পৌঁছেছেন। রাজধানী কিনসাসায় তার পোপাল বিমানটি অবতরণ করেছে।

তারা অবতরণ করেছেন এন’ডোলো বিমানবন্দরে। হাজার, হাজার কঙ্গোবাসী তাকে স্বাগত জানাতে লাইন ধরে অপেক্ষা করেছেন।

এ সময় সাড়ে সাত হাজার স্বেচ্ছাসেবক তাদের নিরাপত্তার কাজে যুক্ত হয়েছেন। বিপুল পুলিশ নিয়োগ করেছেন প্রেসিডেন্ট ফিলিক্স সিশেকেডি।

পোপ ফ্রান্সিস মধ্য ও পূব আফ্রিকার দুটি দেশ কঙ্গো এবং দক্ষিণ সুদান সফর করছেন। তখনই ‘ভিজিল (জাগরণ)’ নামের একটি বিশেষ প্রার্থনানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে পোপ ফ্রান্সিসের জন্য। সেখানে এই বিপুল পরিমাণ ক্যাথলিক খ্রিস্টান তাদের প্রধান ধর্মগুরুর সঙ্গে তার প্রার্থনায় মিলিত হয়েছেন ‘কনফেশন (স্বীকারোক্তি)’ এবং ধর্মগীত ও সুরের মাধ্যমে। এই গণপ্রার্থনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেছেন কঙ্গোর রাষ্ট্রপতি।

৩০ জানুয়ারি রাত থেকে এই ধর্মীয় বিপুল সম্মিলনে অংশগ্রহণের জন্য অনেকে বহু দূর থেকে যাত্রা করেছেন। তারা বিমানবন্দরের বাইরে খোলা আকাশের নিচে পরিবার নিয়ে বা একা অথবা বন্ধুদের সঙ্গে, পরিজনকে নিয়ে রাত কাটিয়েছেন। ঘন্টার পর ঘন্টা আগে থেকে মাঠে হাজির হয়েছেন তারা। পরদিন ভোর সকালে ‘পোপ ফ্রান্সিসের মাস’ অনুষ্ঠিত হয়েছে তাদের সকলের আনন্দচিত্তে।

৩১ জানুয়ারি স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টায় আয়োজিত হয়েছে তাদের সকলের গণপ্রার্থনা পোপ ফ্রান্সিসের নেতৃত্বে। ধমীয় গানগুলো, ইংরেজি ও তাদের আদিবাসীদের ভাষায় গেয়েছেন তারা। গানের তালে নেচেছেন। ধর্মীয় গীতের মধ্যে ‘মামান মারিয়া’ নামের কঙ্গোবাসীদের বিখ্যাত গানটিতে তারা নেচে, গেয়ে উন্মাতাল হয়েছেন। এই গানটিকে ফরাসি ভাষায় তারা বলেন ‘মামা মেরি’। আমাদের ভাষায় ‘মাতা মেরি’ বা ‘মা মেরি’। এই গানটি গেয়েই পোপ ফ্রান্সিসকে স্বাগত জানিয়েছেন তার ধমানুসারী নিষ্ঠাবান খ্রস্টানরা। এছাড়াও আরো অনেক বিখ্যাত ইংরেজি ও তাদের ভাষার খ্রিস্টধর্ম সংগীত গাওয়া হয়েছে।

পোপের দেশ ভ্যাটিকানের হলি সি অফিসের সূত্র মতে, তারা পরিসংখ্যান করেছেন ৫ কোটি ২০ লাখের বেশি ক্যাথলিকই আছেন ‘দ্য ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো’ বা ‘গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো’তে। তারাই ১০ কোটি ৫০ লাখের বেশি মানুষের এই দেশে প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী।

কঙ্গোর প্রাতিষ্ঠানিক বা অফিস আদালতের ভাষা ফরাসিতে পোপ ফ্রান্সিস তার অনুসারীদের সঙ্গে উদযাপন করেছেন তাদের ধর্মীয় সম্মেলন। এ ছাড়া, তিনি কথা বলেছেন ‘লিঙ্গালা’ নামের ভাষাতে। বান্টু নামের প্রাচীন খর্বকায় আদিবাসীদের ভাষা ও নিগ্রো এবং সাদা চামড়ার মানুষদের ভাষাটি হলো এই, তারা ক্রিওল বা মিশ্র জাতি হিসেবেও পরিচিত, দেশের কিছু অংশে তাদের এই ভাষা ব্যবহার করা হয়। এই ভাষায় মধ্য আফ্রিকার কয়েক মিলিয়ন মানুষ কথা বলেন।

পোপ ফ্রান্সিস তার ‘হমিলি’ বা ধর্মীয় হিতোপদেশ প্রদান করেছেন ভ্যাটিকানের ভাষা ইতালিতে। সেটি ফরাসিতে অনুবাদ করেছেন তার কার্ডিনালরা। সাধারণ রোমান রীতিতে তিনি ধর্মবাণী প্রদান করেছেন বলে জানানো হয়েছে।

জায়ার নামের আলাদা একটি দেশ আছে এখন। প্রার্থনা করেছেন জায়ার ভাষাভাষীদের জন্যও তিনি, ১৯৮৮ সালে সাবেক জায়ার প্রজাতন্ত্র, আজকের কঙ্গোর ডায়োসিসেসগুলোতে প্রতিটি বিশপের ধর্মীয় এলাকাগুলোতে ভাষাটি আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যবহারের জন্য ভ্যাটিকান থেকে অনুমোদন প্রদান করা হয়েছিল।

খ্রিস্টধর্মের এই বিপুল তীর্থযাত্রীরা ছাতা মাথায় দিয়ে এসেছেন। অনেকের মাথায় ছিল হ্যাট, পশ্চিমী কায়দায় বানানো টুপি। অনেকে মাথার ওপর রেখেছেন গরম থেকে বাঁচার জন্য কাগজ বা পত্রিকা। হয়েছিল খুব গরম।

এই গণপ্রার্থনায় পোপ ফ্রান্সিস তার ভাষণে বলেছেন, ‘ভাই ও বোনেরা, প্রভু যিশুর সঙ্গে কোনোদিন, কখনো শয়তান জয়ী হতে পারে না। আমাদের ভুবনে ‘শেষ’ বলে কোনো শব্দ নেই। এ কাজ আমাদের ‘শান্তি’র জন্য।

প্রভু যিশুর ভুবনে শান্তিই জয়লাভ করে। পাশাপাশি আমরা যারা খ্রিষ্টধমে বিশ্বাস করি ও ধারণ করি জীবনে এবং কর্মে, অবশ্যই আমাদের কখনো ‘কান্না’ উৎপাদন করা যাবে না। আমাদের অবশ্যই কখনো ‘পদত্যাগ’ অনুমোদন করা যাবে না কোনো ক্ষেত্রে, ‘নিয়তি’কে আমাদের মেনে নিতে হবে। এমনকী বিরুদ্ধ পরিবেশ আমাদের চারপাশে রাজত্ব করলেও সেটি অবশ্যই কখনো আমাদের জন্য হবে না।”

তিনি আরও বলেছেন, ‘হয়তো এখন একটি ভালো সময় তাদের সবার জন্য যারা নিজেদের ‘খ্রিস্টান’ বলে অভিহিত করো এবং বিশ্বাসী, তবে যুক্ত থাকো ‘সংঘাত’-এ। ঈশ্বর তোমাদের বলছেন, ‘তোমাদের অস্ত্রগুলোতে ফেলে দাও, শান্তিকে ও শান্তিতে আলিঙ্গন করো।’

তিনি অনুরোধ করেছেন ‘শান্তির জন্য মিশনারি’ হতে। তিনি সংঘষের চক্রটিকে ভেঙে ফেলার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। যাতে ভেঙে টুকরো, টুকরো করে ফেলা যায় কৌশলগত অপরাধ ও কুমন্ত্রণাগুলোকে এবং ঘৃণার বিরাট চক্রটিকে। আমাদের শান্তির মিশনারি হতে বলা হয়েছে, ডাক দেওয়া হয়েছে এবং এটি আমাদের কাছে শান্তিকে নিয়ে আসবে।

আমাদের প্রত্যেকের হৃদয়ে অন্য সকলের জন্য ঘর খুঁজে বের করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আমাদের বিশ্বাস করার দরকার রয়েছে যে, জাতিগত, আঞ্চলিক, সামাজিক, ব্যক্তিগত ও ধর্মীয় পাথক্যগুলো হলো দ্বিতীয় প্রধান এবং এগুলোর কোনোটিই কখনোই বাধা নয়। অন্যরা সবাই হলো আমাদের ‘ভাই’ ও ‘বোন’। আমরা সবাই একই ‘মানবিক’ সমাজের সদস্য।’

গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে সংঘাত, সহিংসতা ও যুদ্ধ এত বেশি বেড়ে গিয়েছিল যে মানবতার সংকট দেখা গিয়েছিল। ফলে ৫ কোটি ৫০ লাখ কঙ্গোবাসী তাদের বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ হয়ে গিয়েছেন। এটিই বিশ্বের তৃতীয় সবোচ্চ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা।

গতকাল বুধবার বিকালে পোপ ফান্সিস দেখা করেছেন পশ্চিম কঙ্গোর এই বাস্তুচ্যুত ও সংঘাতের বলি সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে। তিনি তাদের নিয়ে কাজ করা স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কথা বলেছেন।

চলমান সংঘাত, সংঘষ ও যুদ্ধ থেকে বেঁচে যাওয়া সব হারানো মানুষরা তাদের ভয়াবহ জীবনকাহিনীগুলো পোপ ফ্রান্সিসকে জানিয়েছেন এবং শান্তি লাভ করেছেন। এই দেশের যুদ্ধে গণহত্যা ও অঙ্গছেদ ঘটানো হয়েছে, অপহরণ করা হয়েছে, তারা তাদের পরিবার-পরিজনকে হারিয়েছেন, একের পর এক নারীকে ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে, যৌনদাসী হতে বাধ্য হয়েছেন কত নারী।

খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মযাজক পোপ ফ্রান্সিস নিন্দা জানিয়েছেন এই সকল ধরণের অন্যায় ও বর্বরতার। তিনি সকল ধরণের নৃশংসতা ও বর্বরতারই বিপক্ষে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘হত্যাকারীরা, দেশের সম্পদকে অবৈধভাবে লুটেরারা, দেশকে নিয়ন্ত্রণের জন্য যারা টুকরো, টুকরো করতে চেষ্টা করছেন আমি তাদের সকল ধরনের কমকান্ডের বিপক্ষে।’

পোপ ফ্রান্সিস বলেছেন, ‘যারা যুদ্ধ প্রদর্শণ করছেন তাদের সকলকে আমি জিজ্ঞাসা করি ও বলি যুদ্ধে সমাপ্তি টানুন। গরীবের টাকায় ধনী হওয়ার কাজ থামিয়ে দিন। সম্পদের উৎসগুলো লুট করে ধনী হওয়া এবং রক্ত লেগে থাকা টাকা উপার্জন থামিয়ে দিন। যারা কঙ্গোতে বসবাস করেন, তাদের প্রত্যেককে আমি কখনো হার না মেনে নেওয়ার জন্য ডাক দিচ্ছি। তাদের সবাইকে আমি একটি ভালো ও উন্নত ভবিষ্যত তৈরি করতে অনুরোধ করছি। শান্তিই সম্ভব। আসুন আমরা তাকে বিশ্বাস স্থাপন করি। আসুন আমরা প্রত্যেকে অন্যের হাতে অর্পণ না করে সেজন্য কাজ করি।’

পোপ ফ্রান্সিস এসময়ও শান্তির জন্য প্রার্থনা সভায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি কঙ্গোর অধিবাসীদের সকলকে দশকের পর দশক ধরে চলা সংঘাত ও যুদ্ধের বিপরীতে একে অন্যকে ক্ষমা করে দিতে অনুরোধ করেছেন, এজন্য ও তাদের হয়ে প্রার্থনা করেছেন ও যুদ্ধের সমাপ্তি টানতে কাতরভাবে অনুরোধ করেছেন।

আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে আসা তার কার্ডিলান, আর্চবিশপ, বিশপ, ফাদার, ব্রাদার ও সিস্টাররা পোপ ফ্রান্সিসের কঙ্গো ও দক্ষিণ সুদান সফরের অনুসারী হয়েছেন।
তাদের মধ্যে নাম করেছে গণমাধ্যমগুলোর কয়েকটিÑরুয়ান্ডার কার্ডিনাল অন্টন কামবান্ডা, মধ্য আফ্রিকান রিপাবলিকের কার্ডিনাল ডিওডোনে ইনজাপালিঙ্গা, চাদের আর্চবিশপ এডমন্ড ডিজিটাংগার ও নাইজেরিয়ার বিশপ ম্যাথু হাসান কুকাহ প্রমুখ।

ওএফএস/

Header Ad
Header Ad

বছর ঘুরে ফিরল গণঅভ্যুত্থানের জুলাই

ছবি: সংগৃহীত

আজ ১ জুলাই। দিনটি ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে ‘জুলাই গণ অভ্যুত্থান’-এর সূচনাদিবস হিসেবে। এক বছর আগে এই দিনে দেশের শিক্ষাঙ্গনে শুরু হয়েছিল কোটা সংস্কার আন্দোলনের নতুন ঢেউ, যা পরিণত হয়েছিল ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে।

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে রাজপথে নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)সহ দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

“কোটা না মেধা, মেধা মেধা” স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে শিক্ষাঙ্গন। আন্দোলনকারীরা সরকারকে তিন দিনের আলটিমেটাম দেন, যা পরবর্তীতে রূপ নেয় ৩৬ দিনের এক বিরল গণআন্দোলনে। ২০১৮ সালে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও, ২০২৪ সালের ৫ জুন হাইকোর্ট ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশ দেন। এই আদেশের বিরুদ্ধেই ১ জুলাই ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

সেদিন শিক্ষার্থীরা কলাভবন, শ্যাডো, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ ও হলগুলো ঘুরে ভিসিচত্বর হয়ে রাজু ভাস্কর্যে সমবেত হন। সেখানে তারা উত্থাপন করেন চার দফা দাবি: ১) ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন বহাল রাখা, ২) মেধাভিত্তিক নিয়োগ অব্যাহত রাখা, ৩) কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল, এবং ৪) কেবল সংবিধান অনুযায়ী অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্যই সুযোগ রাখার প্রস্তাব।

আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট বার্তা দেন, দাবি না মানা হলে আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে। ২ জুলাই ঢাবি থেকে গণপদযাত্রা এবং ৪ জুলাই পর্যন্ত ক্লাস ও পরীক্ষাবর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘৪ জুলাইয়ের মধ্যে সরকারের উচিত আমাদের দাবির চূড়ান্ত আইনি সমাধান ঘোষণা করা।’ তিনি জানান, একইসাথে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজেও গণপদযাত্রা কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ওইদিন আন্দোলনে সরব ছিলেন। তারা জানিয়ে দেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা বৃষ্টিতে ভিজে বিক্ষোভ-সমাবেশে অংশ নেন। তাদের বক্তব্য ছিল স্পষ্ট—"১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে, অথচ আজও আমাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে। চাকরিতে কোটা নয়, নিয়োগ হতে হবে মেধার ভিত্তিতে।"

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে জাবির প্রধান ফটকে গিয়ে প্রতীকী অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। ১০ মিনিট ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উভয় দিক বন্ধ রেখে সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি দেন তারা—৪ জুলাইয়ের মধ্যে রায় বাতিল না হলে এই মহাসড়ক পুরোপুরি অবরোধ করে রাজধানী অচল করে দেওয়া হবে।

একইসাথে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভে অংশ নেন। তারা রায়সাহেব বাজার হয়ে বিক্ষোভ মিছিল শেষে রফিক ভবনের সামনে এসে সমবেত হন। সেখান থেকে তারা ঘোষণা দেন, প্রয়োজনে রক্ত দিয়েও কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তিতে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি ঘোষণা করেছে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ নামের দেশব্যাপী কর্মসূচি। আজ সকালে রংপুরের পীরগঞ্জে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে শুরু হবে এ কর্মসূচি। এরপর গাইবান্ধা ও রংপুর সদরে পথসভায় অংশ নেবেন দলটির নেতারা।

অন্যদিকে বিকাল ৩টায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপির উদ্যোগে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে অংশ নেবেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এবং আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের পরিবার।

Header Ad
Header Ad

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকার বাজেট পাস

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের জন্য ৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ইউজিসি থেকে বরাদ্দ পাওয়া যাবে ৬৯ কোটি টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৭ কোটি ১০ লাখ টাকা।

সোমবার (৩০ জুন) প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স রুমে সিন্ডিকেট এর ১০৪তম সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান এই বাজেট উপস্থান করেন। একই সঙ্গে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের সরকারি বরাদ্দের ভিত্তিতে ৭৫ কোটি ৬৯ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেট অনুমোদন করা হয়।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত বাজেট চাহিদা ৯২ কোটি ৭০ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা হলেও প্রায় ১৬ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার বাজেট ঘাটতি নিয়েই পাশ হয়েছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট।

পাশকৃত বাজেটে গবেষণায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে দুই কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা যা মোট বাজেটের ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এই খাতে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে বরাদ্দ ছিল দুই কোটি ৬১ লক্ষ টাকা। এছাড়া মোট বাজেটের ৬২ দশমিক ৭৫ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে বেতন-ভাতা ও পেনশন বাবদ। পণ্য ও সেবা বাবদ সহায়তায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ, গবেষণা অনুদান খাতে ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে মূলধন খাতে।

বাজেট নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, '২০০৭-২০০৮ অর্থ বছরে বাজেট ছিল এক কোটি ১০ লক্ষ টাকা, সেখান হতে আজকের বাজেট বৃদ্ধি পেয়ে দাড়িয়েছে ৭৬ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। আশার কথা হলো গত বছরের তুলনায় নিজস্ব অর্থায়ন হ্রাস করে সরকারি অনুদান বৃদ্ধি করা গেছে। ভবিষ্যৎ-তে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক চাহিদা অনুযায়ী সর্বমোট বাজেট বৃদ্ধি পাবে।'

তিনি আরো বলেন, 'ইউজিসির বরাদ্দ চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত। তবে সংশোধিত বাজেটে ইউজিসির সাথে আলোচনা করে বাজেট আরও বৃদ্ধি করা হবে।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: হায়দার আলী বলেন, 'সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রেখে বাজেট ব্যয় করা হবে।'

Header Ad
Header Ad

সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ খালি

ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ৪ লাখ ৬৮ হাজার ২২০টি পদ খালি রয়েছে। সোমবার (৩০ জুন) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত ২০২৪ সালের সরকারি কর্মচারীদের পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সরকারি চাকরিতে বর্তমানে ১৯ লাখ ১৯ হাজার ১১১টি অনুমোদিত পদ রয়েছে। এর বিপরীতে ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৮৯১ জন কর্মরত আছেন; খালি আছে ৪ লাখ ৬৮ হাজার ২২০টি পদ।

সরকারি চাকরিতে ২০১৮ সালে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৭টি, ২০১৯ সালে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৩৩৮টি, ২০২০ সালে ৩ লাখ ৮০ হাজার ৯৫৫ এবং ২০২১ সালে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১২৫টি, ২০২২ সালে ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৯৭৬টি এবং ২০২৩ সালে ৪ লাখ ৭৩ হাজার একটি পদ ফাঁকা ছিল।

এখন সরকারি চাকরিতে প্রথম থেকে নবম গ্রেডের (আগের প্রথম শ্রেণি) ২ লাখ ৫৯ হাজার ৬৫৭টি অনুমোদিত পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন এক লাখ ৯০ হাজার ৭৭৩ জন। ফাঁকা আছে ৬৮ হাজার ৮৮৪টি পদ।

১০ থেকে ১২তম গ্রেডে (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) ৩ লাখ ৬২ হাজার ২৮৯টি পদের বিপরীতে কাজ করছেন ২ লাখ ৩৩ হাজার ৭২৬ জন। ফাঁকা রয়েছে এক লাখ ২৯ হাজার ১৬৬টি পদ।

১৩ থেকে ১৬তম গ্রেডে (আগের তৃতীয় শ্রেণি) ৭ লাখ ৬০ হাজার ৬৩৪টি পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৬ লাখ ১৩ হাজার ৮৩৫ জন। ফাঁকা আছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৭৯৯টি পদ।

অন্যদিকে ১৭ থেকে ২০তম গ্রেডে (আগের চতুর্থ শ্রেণি) ৫ লাখ ১৯ হাজার ৮১২টি পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৪ লাখ ৪ হাজার ৫৭৭ জন। ফাঁকা রয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার ২৩৫টি পদ।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সরকারি দপ্তরে নির্ধারিত ও অন্যান্য কাজের জন্য ১৬ হাজার ১১৬টি পদ থাকলেও এসব পদের বিপরীতে কাজ করছেন ৭ হাজার ৮৯০ জন। ফাঁকা রয়েছে ৮ হাজার ১৩৬টি পদ।

প্রথম থেকে ১২তম গ্রেডের গেজেটেড পদগুলোতে নিয়োগ দেয় সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। আর ১৩ থেকে ২০তম গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগ দেয় মন্ত্রণালয় ও বিভাগ।

সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ৬ হাজার ৬৪টি এবং অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরে ২ লাখ ৯৬ হাজার ১১২টি পদ ফাঁকা রয়েছে। আর বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ১৫ হাজার ২৯টি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনে ফাঁকা রয়েছে এক লাখ ৫১ হাজার ১৫টি পদ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বছর ঘুরে ফিরল গণঅভ্যুত্থানের জুলাই
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকার বাজেট পাস
সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ খালি
পুলিশ পরিচয়ে ব্যবহার করা যাবে না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম: আরপিএমপি কমিশনার
ভোলায় চাঁদা না পেয়ে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
টাঙ্গাইলের নির্ধারিত স্থানে মডেল মসজিদ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন (ভিডিও)
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ
চুয়াডাঙ্গায় ট্রেন থেকে ফেলে পাউবো কর্মচারীকে হত্যা, পরিবারের মামলা
দেশে নতুন করে আরও ২১ জনের করোনা শনাক্ত
ঢাকার প্রতিটি ভবনের ছাদে সৌর প্যানেল বসানোর নির্দেশ হাইকোর্টের
লুঙ্গি পরে রিকশায় প্যাডেল মেরে ঢাকা থেকে বিদায় নিলেন জার্মান রাষ্ট্রদূত
ইসরায়েলের ৩১ হাজারেরও বেশি ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইরান (ভিডিও)
ইরানের সাথে আলোচনা করছি না, তাদের কিছু দিচ্ছিও না: ট্রাম্প
আসিফ মাহমুদের অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে প্রশ্ন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বললেন ‘আইনটা দেখিনি’
নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছে চীন: মির্জা ফখরুল
বিপিএলে নোয়াখালীর অভিষেক, আসছে ‘নোয়াখালী রয়্যালস’
হোটেল থেকে সন্তানসহ স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার, ময়নাতদন্তে যা জানা গেল
আমাদের ডিভোর্স হয়নি, হিরো আলম অভিমান করেছিল: রিয়ামনি
সরকারি উদ্যোগেও কমেনি ইলিশের দাম, খালি হাতেই ফিরছেন ক্রেতারা
মঙ্গলবার ব্যাংক হলিডে, বন্ধ থাকবে সব লেনদেন