ট্রাম্পের মন্তব্যে দিল্লিতে অস্বস্তি, যুদ্ধবিরতি নিয়ে কৃতিত্ব দাবি ঘিরে বিতর্ক

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদী। ছবি: সংগৃহীত
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সাম্প্রতিক সংঘাতের পর ১০ মে ঘোষিত যুদ্ধবিরতির কৃতিত্ব ঘিরে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক টানাপড়েন। বিষয়টির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি দাবি করেছেন, এই যুদ্ধবিরতি তার মধ্যস্থতায় সম্ভব হয়েছে। আর তার এই দাবিকে ঘিরেই দিল্লিতে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অস্বস্তি।
বুধবার (১৯ জুন) হোয়াইট হাউজে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল অসিম মুনিরকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানানো হয়। তার আগে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, “আমি একটা যুদ্ধ থামিয়ে দিলাম… আমি পাকিস্তানকে ভালোবাসি। আমার মনে হয় মোদী একজন অসাধারণ মানুষ। আমরা ভারতের মোদীর সঙ্গে একটা বাণিজ্য চুক্তি করতে চলেছি।” এর কিছু সময় আগেই নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ট্রাম্প।
তবে ট্রাম্পের এমন বক্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একাধিক বিবৃতিতে তারা ট্রাম্পের কৃতিত্ব দাবি নাকচ করে দিয়েছে এবং স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, যুদ্ধবিরতি সম্পূর্ণভাবে দুই দেশের কূটনৈতিক আলোচনার ফল।
এরপরও ট্রাম্প তার অবস্থানে অটল থেকে একাধিকবার কৃতিত্ব দাবি করে বিবৃতি দিয়েছেন। বিশেষ করে পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকের সময় ও পরে তার করা মন্তব্যে বিষয়টি আরও স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছে। ট্রাম্প বলেন, “অসিম মুনিরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমি সম্মানিত বোধ করছি। তিনি শান্তি আনয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক কিছুটা জটিল হয়ে উঠেছে। প্রথম মেয়াদে মোদী-ট্রাম্প সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ থাকলেও এখন রেসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ, অভিবাসন নীতি এবং অবৈধ অভিবাসীদের প্রত্যাবাসন নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।
ভারতীয় কূটনীতিক ও বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এ ধরনের মন্তব্য কেবল ভারতের মর্যাদার জন্য নয়, দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রেও হুমকি হয়ে উঠছে। বিশেষ করে পাকিস্তানের সঙ্গে মার্কিন ঘনিষ্ঠতা এবং যুদ্ধবিরতির কৃতিত্ব দাবি দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে।
বর্তমানে দিল্লিতে পররাষ্ট্র দপ্তরের পর্যবেক্ষণ চলছে, এবং এই ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভবিষ্যৎ আলোচনায় বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপন করা হতে পারে বলেও ইঙ্গিত মিলেছে।
