৮৩ লাখ মাদকাসক্ত দেশে, গাঁজা সেবনকারী সবচেয়ে বেশি

ছবি: এআই
দেশে বর্তমানে মাদকাসক্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৮৩ লাখ, যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৪.৮৯ শতাংশ। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) সাম্প্রতিক সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, মাদকাসক্তদের অধিকাংশই পুরুষ, যদিও নারী ও শিশু-কিশোর মধ্যেও মাদকাসক্তির হার রয়েছে।
মাদকাসক্তির মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসক্তি গাঁজায়—প্রায় ৬১ লাখ মানুষ গাঁজা সেবনে আসক্ত। এরপরে রয়েছে ইয়াবা (২৩ লাখ), মদ্যপান (২০ লাখ ২৪ হাজার), ফেনসিডিল ও সমজাতীয় মাদক (৩ লাখ ৪৬ হাজারের বেশি) এবং হেরোইন (৩ লাখ ২০ হাজার)। এছাড়া ঘুমের ওষুধ ও আঠার মতো অন্যান্য মাদকের প্রতি আসক্তিও কম নয়।
বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান এবং অরক্ষিত সীমান্তের কারণে দেশটি আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালানের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সীমান্ত দিয়ে প্রতিনিয়ত বিপুল পরিমাণ মাদক প্রবেশ করছে। মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য দেশীয় সংস্থাগুলো কাজ করলেও বড় মাদক ব্যবসায়ীদের ধরার ক্ষেত্রে এখনও বড় ফাঁক রয়েছে।
দেশে মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসনের জন্য সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে কিছু কেন্দ্র রয়েছে, কিন্তু চাহিদার তুলনায় তা খুবই সীমিত। নতুন করে আরও কয়েকটি পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাদকাসক্ত যুব সমাজের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য চিকিৎসা ও পুনর্বাসন অপরিহার্য।
মাদকাসক্তি শুধু ব্যক্তির জীবন ধ্বংস করছে না, এটি পরিবার ও সমাজের ওপরও মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মাদকাসক্তির কারণে অনেক তরুণ শিক্ষাজীবন অসম্পূর্ণ রেখে নানা সমস্যায় জড়িয়ে পড়ে।
দেশে প্রতিনিয়ত মাদকবিরোধী অভিযান চললেও গডফাদারদের ধরা না পড়া মাদক ব্যবসার বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাদক মামলার অধিকাংশ ক্ষেত্রে আসামিরা খালাস পেয়ে যান, যার ফলে মাদক ব্যবসায়ীদের দমন কার্যক্রম কার্যকর হয় না।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মাদকবিরোধী সচেতনতা ও প্রতিরোধে গুরুত্ব দিতে হবে। চিকিৎসা ব্যবস্থা জোরদার করা, সীমান্ত নিরাপত্তা শক্তিশালী করা এবং মাদক ব্যবসায়ীদের কঠোর আইনগত শাস্তি নিশ্চিত করাই এখন দেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
