১৬ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ গণতন্ত্রকে বন্দি করে রেখেছিল: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান বলেছেন, আওয়ামী শাসনামলে বাংলাদেশে নাগরিক অধিকার পুরোপুরি দমন করা হয়েছিল। একনায়কদের দমননীতিতে বিরোধী মতাবলম্বীরা বছরের পর বছর গুম, খুন ও মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি থেকেছেন। বাংলাদেশে প্রায় ১৬ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ গণতন্ত্রকে বন্দি করে রেখেছিল।
২৬ জুন জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তারেক রহমান দাবি করেন, দেশে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল, তখন বাংলাদেশ এক ভয়ঙ্কর সর্বগ্রাসী রাষ্ট্রে রূপ নেয়। মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার কিংবা গণতান্ত্রিক চর্চা- সবই ছিল নিয়ন্ত্রিত।
তারেক রহমান বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিভিন্ন উপনিবেশ স্বাধীনতা পেলেও বিশ্বজুড়ে হিংসা-সংঘাত থামেনি। বরং রক্তপাত আর হানাহানি বহু দেশে মানুষের জীবনকে করে তুলেছে বিপন্ন। স্বৈরশাসকরা বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে নানাভাবে নির্যাতন চালাচ্ছে, অনেক জায়গায় নাগরিকদের নিরাপত্তা চরম হুমকির মুখে।
খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গ টেনে তারেক রহমান বলেন, ‘দেশের জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় দণ্ডিত করে দীর্ঘদিন ধরে আটকে রাখা হয়েছিল। অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসার সুযোগ থেকেও তাঁকে বঞ্চিত করা হয়। পুরো দেশের মানুষ ছিল আতঙ্ক ও ভয়ের মধ্যে। কেউ প্রতিবাদ করলেই সরকারের পক্ষ থেকে পেটোয়া বাহিনী লেলিয়ে দেওয়া হতো।’
তিনি অভিযোগ করেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার পেছনে সরকারি মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীদের ভূমিকা ছিল, যার ফলে নারী ও শিশুসহ সাধারণ মানুষের জীবনযাপন হয়ে পড়েছিল দুর্বিষহ।
তারেক রহমান বলেন, ‘গণতন্ত্রই মানুষের অধিকার রক্ষার একমাত্র ভিত্তি। কিন্তু আজও এই সমাজ ব্যবস্থার ভিত্তি দৃঢ়ভাবে গড়ে ওঠেনি। এখন ‘মবজাস্টিস’ নামের এক ভয়ংকর হিংসা মানবতার জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে।’
তিনি মনে করেন, গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা না করা হলে আবারও একমাত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা ফিরে আসতে পারে। তাই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, মানবতা, আইনের শাসন এবং অবাধ নির্বাচনের চর্চা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য তিনি গণতন্ত্রকামী সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
বিবৃতির শেষদিকে তারেক রহমান আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী দিবসে বাংলাদেশসহ বিশ্বের নির্যাতিত মানুষদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে বলেন, ‘আমরা চাই, তাদের ন্যায়বিচার পাওয়ার পথে যেন আর কোনো বাধা না থাকে। মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বৈরাচারী শক্তিকে প্রতিরোধ করতে বিশ্ববাসীকে এক কাতারে দাঁড়াতে হবে।’
