অবশেষে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে মুখ খুললেন নেতানিয়াহু

বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ছবি: সংগৃহীত
মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে অবশেষে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিয়েছে ইসরায়েল। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার ভয়াবহ সংঘর্ষের একপর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র ২১ জুন ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়।
এরপর প্রতিশোধ হিসেবে সোমবার (২৩ জুন) রাতে কাতার ও ইরাকের মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোতে পাল্টা আঘাত হানে তেহরান।
এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, ইরান ও ইসরায়েল একটি "সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতিতে" সম্মত হয়েছে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে নাকচ করে দেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। এ সময় ইসরায়েল কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুর নাগাদ ইরান ও ইসরায়েলের গণমাধ্যমে যুদ্ধবিরতির খবর নিশ্চিত হলে, অল্প সময়ের ব্যবধানে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসে।
ইসরায়েলের বিবৃতিতে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতিতে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সম্মতি দিয়েছেন। তবে হুঁশিয়ার করে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘিত হলে ইসরায়েল এর কড়া জবাব দেবে।
বিবৃতিতে আরও দাবি করা হয়, ইরানে প্রায় দুই সপ্তাহের সামরিক অভিযানের মাধ্যমে ইসরায়েল তার "সমস্ত কৌশলগত লক্ষ্য অর্জন" করেছে। এতে বলা হয়, ইসরায়েল পারমাণবিক এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রজনিত হুমকি অনেকটাই দূর করেছে, পাশাপাশি তেহরানের আকাশপথে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং ইরানি সামরিক নেতৃত্বকে গুরুতর আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রকে সামরিক সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে ইসরায়েল।
প্রসঙ্গত, চলমান উত্তেজনার সূচনা হয় ১৩ জুন রাতে, যখন ইসরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে ইরানের রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় একযোগে হামলা চালায়। ওই হামলায় ইরানের উচ্চপর্যায়ের সামরিক নেতারা এবং ১০ জন পরমাণু বিজ্ঞানীসহ প্রায় ৫০০ জন নিহত হন বলে দাবি করেছে ইরান।
এর জবাবে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’ চালায় ইরান। ইরানি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে বেশ কয়েকটি কৌশলগত স্থাপনায় আঘাত হানে। হতাহতের পরিমাণ কম হলেও ইসরায়েল বড় ধরনের অবকাঠামোগত ক্ষতির মুখে পড়ে।
সবশেষে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ২১ জুন রাতে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালায়, তখন উত্তেজনা আরও তুঙ্গে ওঠে। পাল্টা জবাবে ইরান আবারও মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায়।
